আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
“গাজার সাহায্য ও
পবিত্র আকসাকে স্বাধীন করা
প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয
” ।।মাওলানা মুহাম্মাদ মুসান্না হাসসান হাফিযাহুল্লাহ এরথেকে ||
===================
“গাজার সাহায্য ও
পবিত্র আকসাকে স্বাধীন করা
প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয
” ।।মাওলানা মুহাম্মাদ মুসান্না হাসসান হাফিযাহুল্লাহ এরথেকে ||
===================
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি।
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি মুসলিমদেরকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একত্রিত করেছেন। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার অপর মুসলিম ভাইকে সাহায্য করা ফরয করেছেন এবং নিজেদের পবিত্র স্থানের স্বাধীনতা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন।
দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় হাবীব, নবীদের ইমাম, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। তিনি এই উপর্যুক্ত বিষয়টিকে শক্তিশালী করেছেন এবং সকল মুসলিমকে তাঁর কর্ম দ্বারা শিখিয়েছেন। সেই সাথে রহমত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ও সাহাবীদের উপর, যাঁরা সর্বদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পথ অনুসরণ করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক এমন প্রত্যেকের উপর যারা কিয়ামত পর্যন্ত এই পথ অনুসরণ করবে।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি...আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। পৃথিবীতে বসবাসকারী সবাই তাদের সামনে এবং তাদের হাতে থাকা ডিভাইসের পর্দায় পরিস্থিতি দেখছেন। ইসরায়েলের আগ্রাসন ও জোরপূর্বক ফিলিস্তিন দখল করার বিষয়টি বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি লোকের দ্বারা স্বীকৃত। আর সেই আগ্রাসন ও জবরদখল প্রতিটি সূর্যোদয়ের সাথে বেড়েই চলেছে।
‘ইসরায়েল’ এমন এক অত্যাচারী, যার কাছে তার সমস্ত কর্মকাণ্ড বৈধ। চাই সে বেসামরিক লোকদের বোমাবর্ষণ করুক, বাড়ি-ঘর ও হাসপাতালে শিশুদের হত্যা করুক! চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত করে রোগীদের হত্যা করুক কিংবা নিরপরাধ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করুক। যদিও এই নিষ্ঠুরতা ও গণহত্যা নিয়ে গোটা বিশ্ব আজ চিৎকার করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হল সেই অত্যাচারী, যে কিনা ইসরায়েলের প্রতিটি অন্যায়কে ন্যায় এবং প্রতিটি মিথ্যাকে সত্য বলার জন্য নিজেকে বাধ্য করে নিয়েছে। কারণ নিষ্ঠুরতা ও গণহত্যার ইতিহাসের রচয়িতা আমেরিকা নিজেই। আমেরিকার নির্যাতন থেকে ফিলিস্তিন, ইরাক, আফগানিস্তান অথবা সোমালিয়ার নির্যাতিত মুসলিমরা রেহাই পায়নি। এমনকি জাপান, কিউবা কিংবা মেক্সিকোর অমুসলিমরাও ছাড় পায়নি।
‘আল-শিফা’ হাসপাতাল বিধ্বস্ত করা এবং উত্তর গাজায় ‘স্কুলে’ বোমা হামলার পর, সবাই এখন বুঝতে পারছে ইসরায়েলের লক্ষ্য কী। উত্তরের পর দক্ষিণ গাজায় আগামী দিনে ইসরায়েল কী করার পরিকল্পনা করছে, সেটাও তাদের এই কর্মকাণ্ড থেকে ধারণা করা যায়। এটা স্পষ্টত গণহত্যা ও বংশ শেষ করা। এটাকে অন্য কোনোভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই। আর আমেরিকা এই সকল নিষ্ঠুরতায় ইসরায়েলের সাথে জড়িত। প্রতিটি রাষ্ট্র এবং ব্যক্তি যারা এখনও ইসরায়েলকে সাহায্য ও সমর্থন করে যাচ্ছে, তারাও এসকল হামলায় সমানভাবে জড়িত।
একদিকে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা চলছে, অপরদিকে জাতি হিসেবে মুসলিম উম্মাহ গাজা ও ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন শুধু মুসলিমরাই নয়, বরং এই নিষ্ঠুরতা সব ন্যায়পরায়ণ মানুষের কাছে দৃশ্যমান হওয়ায়, সব জাতি ও ধর্মের মানুষ মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুধু ইহুদীবাদ এবং ক্রুসেডের নোংরামিতে নিমগ্ন অমানুষরাই এই প্রকাশ্য নিষ্ঠুরতা করছে বা নিষ্ঠুরতার সমর্থক।
কিন্তু ইসরায়েলের এই জঘন্য যুদ্ধের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অথবা নেওয়া হবে? যার দ্বারা ইসরায়েল ও তার সমর্থকরা এই বর্বরতা বন্ধ করবে? পনেরো হাজারেরও বেশি নির্যাতিত মানুষের মৃত্যুতে শুধু চোখের জল ফেলে এই নিষ্ঠুরতা কি থামানো যাবে? লাখ লাখ আহত ও গৃহহীন মানুষের ছবি ও ভিডিও দেখে এবং হৃদয়ে দুঃখ পেয়ে কি এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ হবে? ঘর থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ করে কি এই নিষ্ঠুরতা ঠেকানো সম্ভব? সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কথা বলার দ্বারা কি এই বর্বরতা বন্ধ হচ্ছে? এই অত্যাচার ও অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে লড়াই কিংবা অত্যাচার বন্ধ করার দায়িত্ব কি শুধু ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের?
এই প্রশ্নগুলো আমাদের প্রত্যেকের কাছে, বিশেষ করে মুসলিমদের কাছে। আর এখন এই প্রশ্নগুলোর ‘হ্যাঁ’ উত্তর দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বিষয়টি আজ খুবই সংকটময় হয়ে উঠেছে। আমরা আমাদের স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে আমাদের বাড়িতে শান্তিতে আছি, যখন আমাদের ভাই-বোনেরা ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে মারা যাচ্ছে। গাজার মুসলিমদের সাহায্য করা এবং আল-আকসার মুক্তির জন্য লড়াই করা মুসলিমদের দায়িত্ব। গাজার মুসলিমদের সাহায্য করা কি শুধু ফিলিস্তিন ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মুসলিমদের কর্তব্য? এটা কি শুধু মুসলিম দেশগুলোর শাসক ও বাহিনীর কর্তব্য?
আজ, সমস্যাটি কেবল ইসলামী আইনশাস্ত্রের বিষয় নয়। বরং এটি সম্মান ও মর্যাদার বিষয়। প্রশ্ন হল- গাজায় মারা যাওয়া মুসলিমদের চেয়ে আমার এবং আপনার জীবন কি বেশি মূল্যবান? কেন আমরা এখানে বাঁচার জন্য বসে আছি আর তারা সেখানে প্রাণ হারাচ্ছে?
আমাদের সমস্ত মুসলিমের প্রথম যে বিষয়টি বুঝতে হবে তা হলো- গাজা এবং ফিলিস্তিনের মুসলিমদের জীবন আপনার এবং আমার জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান। গাজার মুসলিমদের জীবন বাঁচাতে না পারলে, আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। ওখানকার মুসলিমদের জীবন যদি নষ্ট করা হয়, তাহলে আমরা কি আমাদের জীবন বাঁচিয়ে বাকি জীবনের জন্য আমাদের বিবেককে সন্তুষ্ট রাখতে পারব?
আমাদের প্রত্যেককে উপলব্ধি করতে হবে যে- গাজার মুসলিমরা যদি মারা যায়, আমি হয় তাদের জীবন বাঁচাবো, না হয় তাদের বাঁচাতে স্বীয় জীবনকে উৎসর্গ করব। তাদের হত্যা করা হবে আর আমি বেঁচে থাকব - এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।
দ্বিতীয়ত, এই সময়ে আসল ইস্যুটি হল- ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধ করা এবং গাজা ও ফিলিস্তিনের মুসলিমদের এই যুদ্ধে সফল করা। আর এই উদ্দেশ্যে, অশ্রু এবং মধ্যরাতের প্রার্থনা সাহায্য করবে। সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণাগুলোও সাহায্য করবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের বিক্ষোভও সাহায্য করবে। তবে সময়ের কার্যকর পদক্ষেপ হলো- ইসরায়েল এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে হাতিয়ার ব্যবহার করা। প্রকৃতপক্ষে, শুধু লোহাই লোহা কাটতে পারে। ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং বর্তমানে ইসরায়েলের যুদ্ধে তার সঙ্গে থাকা প্রতিটি শক্তিকে সামরিকভাবে আক্রমণ করতে হবে।
এই জিহাদ প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয। সেই ব্যক্তি ভ্রান্তির মধ্যে আছে যে বলে, এটি শুধু ফিলিস্তিন এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলির উপর ফরয অথবা শুধু মুসলিম দেশগুলির শাসক ও তাদের বাহিনীর উপর ফরয। ফকীহগণের বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয়, আমরা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি, সেখানে প্রাচ্য ও পশ্চিমের সকল মুসলিমদের উপর জিহাদ ফরয।
এখানে এটা উদ্দেশ্য নয় যে, আমরা প্রত্যেক মুসলিম গাজায় পৌঁছে যাবো এবং সেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে যুক্ত হবো। কেননা, এই আকাঙ্ক্ষাটি কর্মের জগতে কখনো কল্পনার গন্ডি পার হতে পারবে না। ব্যাপারটা এমনও নয় যে, এই দায়িত্ব কেবল মুসলিম দেশগুলোর শাসক ও বাহিনীর উপর বর্তায়, যাদেরকে মুসলিমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিয়ে লালন করে যাচ্ছে। তারা গিয়ে সেখানে জিহাদ করবে, এই আশা অবাস্তব। আমরা সবাই জানি যে, এই অবস্থা উসমানিয়া খিলাফত পতনের পূর্বেই শুরু হয়েছে। তখন থেকে আজ অবদি এসকল বাহিনী কখনো কাফেরদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়নি। আর যখনই তারা সংঘবদ্ধ হয়েছে, হয়তো তারা পরাজিত হয়েছে অথবা পলায়ন করেছে। তারা শুধু তাদের নিজ দেশের ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধেই সংঘবদ্ধ হতে পারে!
এই পরিস্থিতিতে উচিত হলো, মুসলিমগণ ইসরাঈল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিধিকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিবেন। প্রত্যেক মুসলিমদের উচিত এটাকে তার শরয়ী দায়িত্ব ও নৈতিক দায়িত্ব মনে করা। সেই আলোকে আমাদের কিছু করণীয়:
প্রথমতপশ্চিমা বিশ্ব ও যেসব দেশে ইসরায়েল কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে এবং যেখানে ইহুদীবাদীরা আছে সেখানে বসবাসরত মুসলিমদের উচিত, জায়নবাদীদের ওপর আক্রমণ করা। যার কাছে চাকু বা খঞ্জর আছে তার ব্যবহার করা উচিত। যার কাছে বন্দুক আছে, সে বন্দুক ব্যবহার করবে। এমনকি ইসরায়েলের বাইরেও, বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান ইহুদীবাদীদের উপর আক্রমণ করতে হবে, যাতে করে বিশ্বব্যাপী জায়নবাদীরা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই কাজটি প্রত্যেক সাধারণ মুসলিমের নাগালে। যখনই কেউ এই সুযোগ পাবে, সে সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। আর সুযোগ তো সেই পাবে, যে সুযোগ সন্ধানী।
দ্বিতীয়ত বিশ্বজুড়ে আমেরিকান কর্মকর্তাদের আক্রমণ করা উচিত। বিশ্বের সব দেশেই আমেরিকান কূটনৈতিক কর্মী রয়েছে। অনেক জায়গায় আমেরিকান ঘাঁটি রয়েছে। সেখানে থাকা প্রত্যেক সাধারণ মুসলিমের ‘আমেরিকান কর্মকর্তা ও সৈন্যদের’ টার্গেট করে হত্যা করার সুযোগ খুঁজে বের করা উচিত।
তৃতীয়ত সারা বিশ্বে বিদ্যমান জিহাদী দল এবং ফ্রন্টগুলির দায়িত্ব হলো- ইসরায়েলের যুদ্ধে গাজার মুজাহিদীনদের সমর্থন করার জন্য ইসরাঈল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করা। বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ একই সাথে তার সমস্ত শত্রুর সাথে লড়াই করছে। এটি অনেক পক্ষের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ, যেখানে বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধটি জায়নবাদী ক্রুসেডার শত্রুর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে হচ্ছে। তাই মুসলিম জনগণের বিজয়ের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জায়নবাদী ও আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা প্রয়োজন।
চতুর্থত সারা বিশ্বে যেসব কোম্পানি ইসরায়েলকে অর্থায়ন করছে তাদের পণ্য বয়কটের পাশাপাশি তাদের সম্পত্তিও টার্গেট করা উচিত। এই লোকেরাও এই যুদ্ধে সমান অংশগ্রহণকারী এবং তারা তাদের সম্পদের অভিলাষী। ফলে তারা যখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে, তখন ইসরায়েলকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করবে, ইনশাআল্লাহ। এটা স্পষ্ট হওয়া উচিত যে, এই কোম্পানিগুলি ইসরায়েলকে অর্থায়নকারীদের সম্পত্তি। তাই তাদের কর্মী বা দেশীয় কারোর ক্ষতি করা যাবে না। কিন্তু যদি কারো সম্পর্কে জানা যায় যে, সে জায়োনিস্ট বা ইহুদীবাদীদের সমর্থক, তাহলে ভিন্ন কথা অর্থাৎ তাকেও আঘাত করতে হবে।
পঞ্চমত বিশ্বের সকল দেশে, তা পাশ্চাত্য হোক বা ইসলামী, প্রতিবাদের উদ্দেশ্য হবে এমন, এমন কিছু করতে হবে যাতে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত চলমান প্রচেষ্টায় তা সম্ভব হয়নি। তাই এই বিক্ষোভগুলোর নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা জরুরি। সেই সাথে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি ইউরোপীয় দেশের দূতাবাসে বিক্ষোভের আকারে ঝড় তোলা উচিত। তাদের কর্মীদের হত্যা করতে হবে এবং তাদের বিল্ডিং জ্বালিয়ে দিতে হবে।
বিক্ষোভগুলি ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকে, যতক্ষণ তার মাধ্যমে উদ্দেশ্য পূরণ সম্ভব হয়। কিন্তু যখন বিক্ষোভ দ্বারা উদ্দেশ্য অর্জিত হয় না, তখনই তা অনিবার্যভাবে যুদ্ধে পরিণত হয়। যাই হোক, ইহুদীবাদী এবং ইহুদীবাদীদের সাহায্যকারী ব্যতীত অন্য কেউ যাতে প্রাণ বা অর্থের ক্ষতির সম্মুখীন না হয়, মুসলিম দেশগুলির সাধারণ সম্পত্তির কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর মুসলিম দেশগুলোর প্রশাসনের সাথে কেবল এতটুকু দ্বন্দ্ব জরুরি যতটুকু দ্বন্দ্বের মাধ্যমে জায়নবাদী ও আমেরিকান দূতাবাসে প্রবেশ করা সম্ভব।
এগুলি এমন বিষয় যা সাধারণ মুসলিমের ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। আমাদের জানা থাকা উচিত যে, গাজার মুসলিমদের সাহায্য করা এবং আল-আকসাকে ইহুদীবাদীদের নাপাক হাত থেকে মুক্ত করা আমাদের প্রত্যেক মুসলিমদের উপর ফরয। আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে বাধ্য। আর এই যুদ্ধে ইসলাম ও মুসলিমদের বিজয়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে- সামরিক ফ্রন্টে। যে বিষয়গুলো উপরে পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য। তাছাড়া উক্ত বিষয়গুলো আমাদের ভাই-বোনদের প্রতিশোধের আগুন নিবারণের কারণ হিসেবে গণ্য। তাই উল্লেখিত পাঁচটি বিষয়ের যে কোনোটি বাস্তবায়নের জন্য যে কেউ অগ্রসর হয়ে জীবন উৎসর্গের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি। অন্যদিকে অশ্রু, দোয়া, আহ্বানমূলক প্রচারণা, আর্থিক সাহায্য এবং শত্রুর অর্থনৈতিক বয়কট...এ সবই এই যুদ্ধে সাফল্যের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা বিশ্বাস করি, এই যুদ্ধই ইসরায়েলের শেষ যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধই সমস্ত ফিলিস্তিন এবং আল-আকসার স্বাধীনতার যুদ্ধ। শর্ত হলো, আমি, আপনি, আমাদের সবার এই যুদ্ধের যোদ্ধা হতে হবে। আল-আকসার পবিত্রতা, ফিলিস্তিন এবং বিশেষ করে গাজার মুসলিমদের জীবন রক্ষার জন্য স্বীয় জীবনের বিনিময়ে পরপারের সওদা ক্রয় করে নিতে হবে।
হে আল্লাহ! এই আকসা আপনার পবিত্র মসজিদ, আপনিই তা রক্ষা করবেন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে শুধু এর মাধ্যম বানান, আমীন।
হে আল্লাহ! ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দৃঢ়পদ রাখুন এবং তাদেরকে বিজয়ী করুন, আমীন।
হে আল্লাহ! আপনি গাজার নির্যাতিত মুসলিমদের ঢাল হয়ে যান এবং আপনার অদৃশ্য সাহায্যে তাদের উপর থেকে অত্যাচার বন্ধ করুন, আমীন।
হে আল্লাহ! আমাদের প্রত্যেক মুসলিমকে জাগিয়ে দিন এবং ইসলামের শত্রু ইহুদীবাদী ও ক্রুসেডারদের জন্য মুসলিমদেরকে অগ্নি ও ইস্পাতে পরিণত করুন, আমীন।
যতক্ষণ না আমরা সবাই মিলে আকসায় বিজয়ের সালাত আদায় করি, ততক্ষণ আমাদের দৃঢ়পদ রাখুন, আমীন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন,
وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ
অর্থঃ “অবশ্য যদি তারা ধর্মীয় ব্যাপারে তোমাদের সহায়তা কামনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য।” (সূরা আনফাল ০৮:৭২)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ ﴿٧﴾
অর্থঃ “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত করবেন।” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:০৭)
وَمَا النَّصْرُ إِلَّا مِنْ عِندِ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ
অর্থঃ “আর সাহায্য শুধু পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী আল্লাহরই পক্ষ থেকে।” (সূরা আলে ইমরান ০৩:১২৬)
أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ
অর্থঃ “তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্যে একান্তই নিকটবর্তী।” (সূরা বাকারা ০২:২১৪)
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين وصلى الله تعالى على نبينا الأمين.
Comment