ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতিঃ আমাদের উপলব্ধি,শিক্ষা ও করণীয়
আজ মুসলিম উম্মাহর করুণ দশা। সময় গড়িযে যাচ্ছে ৷ উম্মাহর অবস্থাও শোচনীয় হচ্ছে। পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে আজ মুসলিম উম্মাহ নির্যাতনের শিকার।
মাজলুমদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্বর ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনে লাগাতর বোমা হামলা করেই যাচ্ছে। এ হামলা নতুন নয়। বিগত দিনেও এমন অনেক হামলা করা হয়েছে । এ বছর রামাদান থেকে হামলা শুরু করেছে ৷ বর্তমানেও বোমা হামলা করেই যাচ্ছে। আমাদের অসহায় মুসলিম মা বোনেরা এবং নিষ্পাপ শিশুরা সবচেয়ে বেশি হত্যার শিকার হচ্ছে।
করোনার ভয়ের চেয়েও বড় ভয় এখন বোমা হামলা। এএফপির খবরে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা দিনকে দিন জোরদার করা হচ্ছে। বিমান হামলার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ঘর বাড়ি লক্ষ্য করে গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এই হামলায় ফিলিস্তিনিরে ঘর বাড়ি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হচ্ছে।
ফিলিস্তিনিরা এখন জীবন বাঁচাতে ভিটেমাটি ছাড়ছে।
শুধু কি ফিলিস্তিনে মুসলিম উম্মাহ জুলুমের শিকার! না,শুধু ফিলিস্তিনে নয়। বরং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আজ মুসলিম উম্মাহ নির্যাতনের শিকার।
ভারতের মুসলিমরা কি পরিমাণ মাজলুম তা আপনারা জানেন। আসাম,গুজরাট থেকে শুরু করে দিল্লী গণহত্যা। কাশ্মীরের কথা তো কারো অজানা নয়। এছাড়াও অনলাইনে চোখ রাখলে দেখা যায় প্রায়ই মুসলিম যুবকদের পিটিতে মারার খবর। বোনদের ধর্ষনের খবর।
কয়েকদিন আগে হরিয়ানায় আসিফকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে মুসলিম বিদ্বেষের জেরে।
আমরা বাংলাদেশে বসে কি নিরাপদে আছি। না ভাই! আমরাও নিরাপদে নেই। আমাদের সম্মানিত আলিমদের কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মুসলিম যুবকদের মিথ্যা মামলায় গ্রেতকার করা হচ্ছে। এছাড়া ভোলা থেকে শাপলা চত্বর এবং এর পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি এদেশের তাগুত সরকার হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। যখনই কোন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহ রাজপথে নেমেছে তখনই তাঁদের উপর গুলি চালানো হয়েছে। খালি করা হয়েছে অসংখ্য মায়ের বুক। আমাদের কোন দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি বা মেনে নেয়নি।
অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের কবলে পুরো দেশ জর্জোরিত। ইসকন নামক সন্ত্রাসী সংগঠন এদেশে তাঁদের প্রভাব অনেক বিস্তার করে ফেলেছে।
হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গঠন করে তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে হিন্দুরা আজ মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।
এদেশের তাগুত বাহিনীগুলো আজ কাফেরদের নিয়ন্ত্রণে। সরকারি চাকুরিতে আজ হিন্দুদের অগ্রাধিকার।
মোদি বিরোধী আন্দোলনে জীবন দিতে হয়েছে মুসলিমদেরকে। কারাবদ্ধ হতে হয়েছে অসংখ্য আলিম ও আম জনতাকে। এরপরও তাঁরা আলিমদের শানে বেয়াদবি করছে। মিথ্যা তোহমত আলিমদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। তিলকে তাল বানিয়ে ফেলছে।
এরপর কি আমাদের হুশ ফিরবে না!
আমরা যদি এখনো সতর্ক না হই,তবে সামনের অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।
কিন্তু আমরা বড়ো আবেগী। আবেগী কেন বললাম জানেন! কারণ হলো,আমরা মনে করি ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে কোন দ্বন্দ্ব-সংঘাত নেই।
কাফিরদের কয়েকটি মিষ্টি করা শুনে বা কাফিরদের মুখে হাদিসের কথা শুনে আমরা আবেগে অনেক কিছু বলে ফেলি। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসলাম নিয়ে কিছু কথা বলায়,হাদিসের কয়েকটি কথা বলায় আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে তাঁর কতইনা প্রশংসা করেছি। অথচ বর্তমান ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বারডেন ইসরাইলকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে মুসলিমদের বিরুদ্দে।
এমন দশা শুধু বারডেনের ক্ষেত্রে নয়। আমাদের বাংলাদেশেও কিছু মুসলিম নামধারী এমপি,মন্ত্রী ও ওসি,এসপির ক্ষেত্রেও এমন ঘটেছে। সরকার ও হিন্দু্ত্ববাদের দালাল এসব লোকেরা বিভিন্ন মাহফিলে কিছু ধর্মীয় কথা বলায় জনগন তো প্রশংসায় বিভোর হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু বাস্তবতা কি! তা কি আপনারা দেখেননি।
মুজিবের মূর্তি ইস্যুতে মুসলিম নামধারী এমপি,মন্ত্রী ও ওসি,এসপির আসল চেহারা আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। মোদির বাংলাদেশ সফর ইস্যুতে আমরা এদের কালো চেহারা দেখতে পেয়েছি।
আমরা শাসকদের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখাই। বর্তমান যামনায় বড় এক ফিতনা হলো এরদোগান। কিছু ইসলমি কথা বলার কারণে আর সংসদের মত নাপাক জায়গায় বসে কুরআন তিলাওয়াত করার কারণে আমরা অনেকে তাঁকে জামানার খলিফা মনে করি। অনেক অবুঝ আলিমও এমন মনে করেন। (আল্লাহ সকলকে সহিহ বুঝ দান করুন)।
বর্তমানে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশের শাসন প্রধানদের অবস্থান কোথায়! তাঁরা আজ চুপ কেন? শুধু চুপ নয়। বরং তাঁরা কাফিরদের পক্ষ নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের সাহায্য করছে। ন্যাটো জোটভুক্ত হয়ে মুসলিম দেশের শাসকবর্গ আফগানিস্তান,সোমালিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাফেরদের সাহায্য করছে। মুসলিমদের হত্যা করছে।
আমাদের দেশের মাফিয়া সরকারের কথাতো কারো অজানা নয়।
আমরা মুসলিম উম্মাহ। আমাদের রব আল্লাহ। আমাদের রব আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে,কাফেররা আমাদের শত্রু। ইবরাহিম আলাহহিস সাল্লাম এর আদর্শ হলো কাফেরদের প্রতি আমাদের বিদ্বেয় রাখতে হবে। আল্লাহর জন্য সকল মুসলিম উম্মাহকে ভালোবাসতে হবে। মুসলিম উম্মাহ একটা দেহের মত। মুসলিম উম্মাহর দুঃখে দুঃখী হতে হবে। বিপদে তাঁদের সাহায্য করতে হবে।
হে আমার মুজাহিদ ভাইয়েরা! আমরা প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সাধ্যমত কাজ চালিয়ে যাই। ধারাবহিকভাবে লেগে থাকি। আর আমাদের ইসলাহের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবো। যদি আমি আপনি অলসতা করে বসে থাকি বা কাজ না করি,তবে আল্লাহ অন্য জাতিকে দিয়ে কাজ করাবেন। আমরা তখন বঞ্চিত হয়ে যাব। আমাদের মা বাবা ও আত্মীয়দের রক্তের সম্পর্কের চেয়েও মজবুত দ্বীনের সম্পর্কের ভাইবোনদের আর কতকাল আমরা রক্তের সাগরে ভাগিয়ে রাখবো। দিন দিন ভারি হচ্ছে লাশের মিছিল। তাই আর দেরি নয়! এখনই সময় জেগে উঠার! অলসতা আর গাফিলতি ঝেড়ে ফেলে আমরা উচ্চ মনোবল নিয়ে কাজে লেগে যাই। আল্লাহ আমাদের জিহাদের পথে ইস্তিকামাত দান করুন।
আর মুসলিম উম্মাহর উচিত হলো জিহাদের পথে চলে আসা। এ পথ ছাড়া উম্মাহর মু্ক্তির আর কোন পথ নেই।
হে আল্লাহ! বিশ্বের সকল মাজলুম মুসলিমদের আপনি হেফাজত করুন। ফিলিস্তিনি মুসলিমদের আপনি হেফাজত করুন। ইসরাইলি বাহিনীকে আপনি ধ্বংস করে দিন। এদের হাত থেকে আমাদের ভাইবোনদেরকে হেফাজত করুন। আমিন। ইয়া রব্বাল আলামিন।
Comment