Important || অ্যাবোটাবাদ ডকুমেন্ট সিরিজ || নথি নং: SOCOM-2012-0000010 (পর্ব-০১) || শায়খ আতিয়াতুল্লাহকে পাঠানো শায়খ উসামা বিন লাদেনের চিঠি

[Munshi Abdur Rahman]

অ্যাবোটাবাদ ডকুমেন্ট সিরিজ

নথি নাম্বার: SOCOM-2012-0000010 (পর্ব-০১)

-শায়খ আতিয়াতুল্লাহকে পাঠানো শায়খ উসামা বিন লাদেনের চিঠি

নথি নং: SOCOM-2012-0000010
প্রাপক: শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ

সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং তাঁর সকল সাহাবীর ওপর।

সালাত ও সালামের পর, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আশা করি, আমার এই পত্র যখন আপনার হস্তগত হবে, তখন আপনি, আপনার পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততিসহ সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। অতঃপর সংবাদ হলো এই যে, আপনার প্রেরিত প্রথম ও দ্বিতীয়—উভয় চিঠিই আমার কাছে পৌঁছেছে। উভয় পত্রে আপনি যা কিছু উল্লেখ করেছেন, তার জন্য আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন।

তাগুত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উম্মাহর বৈপ্লবিক অভিযাত্রা:

শুরুতেই আমি আমাদের সমকালীন ইতিহাসের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করতে চাই। তা হচ্ছে—তাগুত বা স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উম্মাহর এই বৈপ্লবিক জাগরণ। মহান আল্লাহর দরবারে আমার একান্ত কামনা, এটি যেন উম্মাহর দ্বীনের হৃত মর্যাদা ও গৌরব পুনরুদ্ধারের শুভ সূচনা হয়। বর্তমান সময়ে আমরা যে ধারাবাহিক গণঅভ্যুত্থান ও বিপ্লব প্রত্যক্ষ করছি, তা এক বিশাল ও সুদূরপ্রসারী গুরুত্ববহ ঘটনা। ‘বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ ও ইতিহাসলব্ধ জ্ঞান’ থেকে নির্দ্বিধায় বলা যায়, এই ঘটনার তাৎপর্য আমাদের প্রচলিত কল্পনা ও ধারণার অতীত-

• ১. এই মহাজাগরণ আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলামী বিশ্বের এক বিশাল অংশকে প্লাবিত করেছে।
• ২. আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি ও অনুগ্রহে এই অভিযাত্রা মুসলিম দেশগুলোকে মার্কিন আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার পথে দুর্বার গতিতে দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছে।
• ৩. এতে মার্কিনিদের দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
• ৪. বলা যায়, এটি গোটা উম্মাহর জন্য এক নবযুগের সূচনা।
• ৫. ইতিহাস সাক্ষী, সর্বব্যাপী গণআন্দোলন সুনিশ্চিতভাবেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েমেন সফরকালে সেই উদ্বেগের কথাই প্রকাশ করেছিলেন। তার ভাষ্য ছিল: “আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, এই অঞ্চল সশস্ত্র ইসলামিস্টদের হাতে চলে যাবে।” আলী আব্দুল্লাহ সালেহ এবং এ অঞ্চলের অবশিষ্ট শাসকদের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সতর্কবার্তাটি এমন একসময়ে এসেছিল, যখন তিউনিসিয়ার বিপ্লব মাত্র চলছিল। এর কিছুদিন পরেই মিশরে হোসনি মোবারক সরকারের পতন-নির্ধারণী বিপ্লব শুরু হয়। এতে করে এ অঞ্চলের অবশিষ্ট তাগুত-গোষ্ঠীর পতন আল্লাহর ইচ্ছায় অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সত্যিকার অর্থেই গোটা উম্মাহর জন্য এক নবযুগের সূচনা।

এই যুগান্তকারী ঘটনাগুলো মুসলিম উম্মাহ আজ প্রত্যক্ষ করছে, যা গত কয়েক শতাব্দী যাবত তারা দেখেনি। বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ যে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে, তার পূর্বে দীর্ঘকাল তারা উম্মাহর পুনর্জাগরণে এমন সর্বব্যাপী কোনো আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেনি—যা আজ আল্লাহর অনুগ্রহে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। আর এটি সর্বজনবিদিত যে, সর্বব্যাপী গণআন্দোলন সুনিশ্চিতভাবেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়।

উম্মাহর পুনর্জাগরণের এই নবযুগে আমাদের করণীয়:

• ১. বর্তমানে আমাদের প্রধান মনোযোগ দিতে হবে মুসলিম জনসাধারণের সঙ্ঘবদ্ধতা, উন্নত শিক্ষা-দীক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ওপর।
• ২. আগ্রাসনবাদীদের দোসর ও দালালদের স্বরূপ উম্মাহর সামনে উন্মোচিত করার জন্য এবং তাদের ব্যাপারে সতর্ক করতে আমাদের প্রচেষ্টা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে হবে।

৩. সেই সঙ্গে তাদের প্রতি নিয়মিত উত্তম উপদেশ ও দিকনির্দেশনা পেশ করতে হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ, আমাদের পরবর্তী গন্তব্য হবে ইসলামের বিজয়ের মঞ্জিল।

*****

চলবে... ইনশাআল্লাহ