Announcement

Collapse
No announcement yet.

“দুর্বল চিত্তের কিছু লোক" _ উস্তাদ সায়্যিদ কুতুব

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • “দুর্বল চিত্তের কিছু লোক" _ উস্তাদ সায়্যিদ কুতুব

    “দুর্বল চিত্তের কিছু লোক আছে, যারা মর্যাদার অধিকারী হতে চায়, কিন্তু সে জন্যে ত্যাগ স্বীকার করতে চায় না। সম্মান কখনো বিনা কষ্টে অর্জিত হয় না, কিন্তু এ কষ্ট তাদের কাছে বোঝার মত ঠেকে। আর তাই তারা মাথা উঁচু করে না দাঁড়িয়ে, বেছে নেয় বশ্যতা স্বীকারের পথ।


    মূল্য মানুষকে দিতেই হবে, তা সে কেউ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক, কিংবা হার মেনে মাথা নীচু করে। বরং, হার মানার যে খেসারত, তা মুক্তির খেসারতের চাইতে বহুগুণে বেশি। যে মুক্তির পথে হাঁটে, যে মাথা উঁচু করে চলে, তাকে খেসারত দিতে হয় একবার, কিন্তু যে জালিমের কাছে মাথা নত করেছে, তাকে খেসারত দিতে হয় বারবার, কড়ায়-গণ্ডায়। তারা ভাবে, তারা নিরাপদে জীবন পার করছে, কিন্তু বস্তুত, তাদের এই “নিরাপদ” জীবন অর্জিত হয়েছে, নিজেদের আত্মাকে স্বল্প মূল্যে বিকিয়ে দিয়ে, আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে, হাঁটু গেড়ে, প্রভুর জুতোয় মুখ ঘষে। এ জীবন “নিরাপদ” হতে পারে, কিন্তু এ জীবন কাপুরুষের জীবন।
    তারা হতে পারতো মুক্ত-স্বাধীন, কিন্তু তারা বেছে নিয়েছে দাসত্বের পথ। তারা হতে পারতো দৃঢ়চেতা, কিন্তু তারা হয়েছে দুর্বল। তারা হতে পারতো শ্রদ্ধার পাত্র, কিন্তু তারা হয়েছে কাপুরুষ। তারা ভয় পেয়েছে, আর তাই সম্মান ও মর্যাদার পথ ছেড়ে দিয়েছে, কেননা, আত্মত্যাগ, রক্ত আর শ্রমের বিনিময়েই অর্জিত হয় গৌরব, আর এই কষ্টটুকু তারা স্বীকার করতে রাজি হয় নি বিধায়, বশ্যতার খেসারত তারা দিয়ে চলেছে বারবার। অথচ জান-মালের সামান্য মায়া ত্যাগ করলে আজ তারাই হত বিজয়ী। ভয় পেয়ে যে পিছু হটে, তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হয়, একবার নয়, বারবার। কিন্তু মুক্তির মূল্য কেবল একবারই দিতে হয়। অতীতে, ইহুদীরা তাদের নবীকে বলেছিল,
    “...হে মূসা, সেখানে একটি প্রবল পরাক্রান্ত জাতি রয়েছে। আমরা কখনও সেখানে যাব না, যে পর্যন্ত না তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়। তারা যদি সেখান থেকে বের হয়ে যায় তবে নিশ্চিতই আমরা প্রবেশ করবো...” (মায়িদা, ৫: ২২)
    কাজেই তারা শাস্তিস্বরূপ মরুভূমিতে উদভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়িয়েছিল চল্লিশ বছর ধরে, মরুভূমির বালি তাদের কুড়ে কুড়ে খেয়েছে, নির্বাসনের অবমাননা তাদের ভোগ করতে হয়েছে, ভয় তাদেরকে তাড়া করে বেরিয়েছে- এর সব কিছুই কেবল একটি কারণে, তারা মুক্তি আর মর্যাদার ত্যাগ স্বীকার করতে সাহস করে নি, আর তার বিপরীতে চল্লিশ বছর ধরে তারা লজ্জা আর অবমাননার জীবন ভোগ করেছে, নিঃসন্দেহে, ভীরুতার মূল্য অনেক চড়া।
    কাজেই, মূল্য সকলকে পরিশোধ করতেই হবে, প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রত্যেক দল এবং প্রত্যেক জাতি, হতে পারে সে মূল্য গৌরব অর্জনের মূল্য, অথবা শোষণ এবং দাসত্বের শেকলে আবদ্ধ হবার মূল্য। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নাও, এবং বাস্তবতা থেকেও। তোমাদের সামনে তাজা উদাহারণ রয়েছে -- যারা সাক্ষ্য দেয়, বশ্যতার খেসারত, মর্যাদার খেসারত থেকে বহুগুণ ভারি, আর মুক্তির মূল্য পরিশোধে তোমাকে সামান্যই মূল্য দিতে হবে, যতটা আজ তুমি দাসত্বের জালে আটকা পড়ে দিচ্ছ। যারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত তারা প্রকৃত জীবনের স্বাদ পায়, আর যারা দারিদ্রের পরোয়া করে না, দুনিয়া তাদের পায়ে এসে নত হয়। যারা ক্ষমতাসীন আর সরকারকে ভয় করে না, তাদের ভয়ে ক্ষমতাসীন ব্যক্তি আর সরকার তটস্থ থাকে! শত শত উদাহারণ আছে সেইসব আজ্ঞানুবাহী বশীভূত লোকের, যারা তাদের বিবেক বিকিয়ে দিয়েছিল, তাদের উপর অর্পিত বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল, সত্যকে পরিত্যাগ করেছিল, কাদার মাঝে গড়াগড়ি খেয়েছিল এবং একসময় তারা বিলীন হয়ে গেছে, কেউ তাদের মনে রাখে নি ... তাদের অভিশাপ দিয়ে গেছেন আল্লাহ, তাদের অভিশাপ দিয়ে গেছে মানুষ।
    অপরদিকে, আমাদের হাতে এমন দৃষ্টান্ত আছে, যদিও তারা সংখ্যায় অপ্রতুল, তবুও তারা বশ্যতা স্বীকার করতে প্রত্যাখ্যান করেছে, তারা বিশ্বাসঘাতকতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এবং নিজের পুরষত্বকে তারা বিসর্জন দেয় নি। তাদের যারা বেঁচে আছে তারা মাথা উঁচু করে বেঁচে আছে, আর যারা মরে গেছে তারা মরে গেছে মাথা উঁচু রেখেই ... ”

    - উস্তাদ সায়্যিদ কুতুব, বশ্যতার খেসারত

    Collected:
    Last edited by qasim; 04-02-2016, 11:11 PM. Reason: bolt

  • #2
    আল্লাহু আকবার !
    কথাগুলো যেন তিনি আমাকেই বলেছেন !
    কোন কিছুর পিছুটানই জিহাদের পথে আমাদের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
    نحن الذين بايعوا محمدا
    علي الجهاد ما بقينا ابدا


    আমরা তো হলাম- যারা মুহাম্মদ সা.এর নিকট শপথ করেছি,
    যতদিন জীবিত থাকব সর্বদা জিহাদ চালিয়ে যাব

    Comment


    • #3
      “কোরআনের ছায়াতলে জীবন অতিবাহিত করতে পারাটা এক বিশাল অনুগ্রহ। এ ব্যাপারটি কেবল তাদের দ্বারাই উপলব্ধি করা সম্ভব যারা এর অভিজ্ঞতা লাভ করতে পেরেছে। এ এক এমন সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা যা জীবনকে উদ্দেশ্যমন্ডিত করে এবং তাকে বাঁচার উপযোগী করে তোলে।”

      — উস্তায সাইয়্যিদ কুতুব

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ খাইর সুন্দর একটা লিখা শেয়ার করার জন্য

        Comment


        • #5
          শিয়ালের মতো হাজার দিন বাঁচার চাইতে সিংহের মত ১ দিন বাঁচাই উত্তম

          জাজাকুমুল্লাহ , শিয়ালের মতো হাজার দিন বাঁচার চাইতে সিংহের মত ১ দিন বাঁচাই উত্তম

          Comment


          • #6
            "মুমিন প্রকৃতপক্ষেই শ্রেষ্ঠ"



            মু’মিন প্রকৃতপক্ষেই শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা যেমন শ্রেষ্ঠ, তেমনি শ্রেষ্ঠ তাঁর আকীদা-বিশ্বাসের উৎস। বিশাল সাম্রাজ্য তার দৃষ্টিতে নগণ্য মাত্র। বিপুল শক্তির অধিকারী ব্যক্তিবর্গ তার নিকট তুচ্ছ। সমাজে প্রচলিত জনপ্রিয় সংখ্যক মানুষকে কোন বিষয় পছন্দ করতে দেখেই মু’মিন সে বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায় না। এদিক থেকে মু’মিনের স্থান সকলের শীর্ষে। সে সকল জ্ঞানের উৎস একমাত্র আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে পথের সন্ধান লাভ করেছে। প্রতিটি বিষয়ে সে মহান আল্লাহর নির্দেশ জানতে চায় এবং সেখান থেকে যখন যে বিষয়ে যেরূপ হেদায়াত লাভ করে, তা-ই সে মেনে চলে।

            — উস্তায সাইয়েদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

            [ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা, পৃষ্ঠা ১৯২]

            Comment


            • #7
              "মুজাহিদের আযান" শহীদ হাসান আল বান্না (রঃ)

              রবের প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে।

              Comment


              • #8
                "যে সমাজে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয়"



                “একমাত্র ইসলামী সমাজই আকীদা-বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষকে পরস্পরের সাথে অটুট ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে এবং ঐ আকীদা-বিশ্বাসের সূত্র ধরেই কালো ও সাদা, আরব ও গ্রীক, পারসী ও নিগ্রো এবং পৃথিবীতে বিদ্যমান শতধাবিভক্ত জাতিগুলোকে একই সারিতে দাঁড় করিয়ে একই উম্মাতে শামিল করে নেয়। এ সমাজের সর্বময় কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর এবং মানুষ শুধু তাঁরই সমীপে মাথা নত করে, অন্য কারো নিকট নয়। যে ব্যক্তির চরিত্র যত উন্নত এ সমাজে তার মর্যাদা ততই উচ্চ। আল্লাহ প্রদত্ত আইনের চোখে সমাজের সকল মানুষই সমান।

                যে সমাজে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয় এবং যেখানে মানুষের চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনই প্রাধান্য লাভ করে, সে সমাজই সত্যিকার অর্থে সভ্য সমাজ। অন্যান্য সমাজে প্রাধান্য লাভ করে বস্তুবাদ। অবশ্য বস্তুবাদ বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশ করে।.. ”

                — উস্তাদ সাইয়্যেদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

                [ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা, পৃষ্ঠা ১২৭]

                Comment


                • #9
                  যে সমাজে মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রাধান্য থাকে সে সমাজই সভ্য সমাজ



                  “যে সমাজে মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রাধান্য থাকে সে সমাজই সভ্য সমাজ। মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা রহস্যময় এবং ব্যাখ্যাতীত কোন বিষয় নয়, না তো তারা ইতিহাসের বস্তুতান্ত্রিক ব্যাখ্যাদানকারী বা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের দাবী অনুযায়ী ‘প্রগতিশীল’ এবং সদা পরিবর্তনশীল এমন কোন বিষয় যার কোন মূল এবং স্থিতিশীলতা নেই। এই মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা মানুষের মধ্যে সেসব গুণাবলীর জন্ম দেয় যা তাকে পশু থেকে আলাদা করে এবং মানুষের সেদিকের উপর বেশী জোর দেয় যা তাকে পশুত্বের উর্ধ্বে নিয়ে যায়। এই মানবীয় মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা এমন কোন বিষয় নয় যা মানুষের পাশবিক দিকগুলোর বিকাশ সাধন করে এবং সেগুলোর উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে”

                  — উস্তায সাইয়্যেদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

                  Comment


                  • #10
                    প্রভাত বেলার মৃদু সমীরণ ও গোধুলি বেলার স্নিগ্ধতা বয়ে আনে সৃষ্টিকর্তার স্নেহের পরশ,সুদূর নীল আকাশে তারকারাজির লুকোচুরি খেলে এবং স্থল ও পানি ভাগের অন্ধকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা গোপন রহস্য, মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্যে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ এবং মুষলধারে বৃষ্টি সিষ্ণিত ফসলের সমারোহ,গাছগাছালি ও পাকা পাকা ফলের দৃশ্য এসব কিছু লা শরীক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর একত্বের ঘোষনা দেয়,জানায় নিঃসন্দেহে তিনিই এগুলোর সৃষ্টিকারী।

                    — ওস্তাদ সাইয়েদ কুতুব (রহিমাহুল্লাহ)

                    Comment

                    Working...
                    X