তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের প্রথম সংবাদ সম্মেলন।
দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলো তিনটি মূলনীতি রক্ষা করে নিজেদের সকল প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারবে।
১.ইসলামী মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করতে হবে।
২.আফগানী মূল্যবোধ রক্ষা করতে হবে।
৩.পক্ষাপক্ষ পরিহার করে সর্বদা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতে হবে।
যদি কেউ এই তিনটি মূলনীতির কোনো একটি থেকেও সরে এসে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করে তাহলে তার অনুমতি আমরা দিচ্ছি না।
এই তিনটি মূলনীতিকে সামনে রেখে সকলেই স্বাধীনভাবে নিজেদের কাজ আঞ্জাম দিতে পারবে।
রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের রূপরেখা কী হবে? তা নিয়ে পরামর্শ চলছে। আমরা আশাবাদী যে, অতি শীঘ্রই জনগণকে একটি নতুন ও সার্বজনীন রাষ্ট্রব্যবস্থা উপহার দিতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।
আফগানিস্তানে নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা আমাদের নেই। ইমারাতে ইসলামিয়ার পক্ষ থেকে সকলের জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কারো বিরুদ্ধেই আমরা কোনো শত্রুতা পোষণ করিনা। আমরা বরং দীর্ঘ যুদ্ধের পর অর্জিত স্বাধীনতার জন্য মহান রবের দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
আমি জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে ইচ্ছুক-প্রতিটা নাগরিককেই সান্ত্বনা-বাণী শুনাচ্ছি যে,এ ক্ষেত্রে তারা ইমারাতে ইসলামিয়ার পূর্ণ সহযোগিতা লাভ করবে, এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। রাজধানী কাবুলের শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমাগত উন্নতির দিকেই যাবে, ইনশাআল্লাহ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আমাদের সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। শহরের নিরাপত্তা অটুট রাখতে এবং উত্তরোত্তর তা শক্তিশালী করতে তাদের প্রতি আমাদের কড়া নির্দেশ রয়েছে। তারা সেই নির্দেশনা মাথায় রেখেই কাজ করছে৷
বিশ্ববাসীকেও আমরা সান্ত্বনা-বাণী শুনাচ্ছি যে,অন্য কোনো দেশ বা জাতির বিরুদ্ধে-ই আফগানের ভূমি ব্যবহৃত হবে না। এমন অনুমতি আমরা কাউকেই দিবো না। সুতরাং আপনারা আমাদের উপর আস্থা রাখুন!
শরীয়াহর আলোকে নারীদের সম্পূর্ণ অধিকার সংরক্ষণ করার পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমরা। কলেজ-ভার্সিটি ও হাসপাতাল সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করছি। সুতরাং ইমারাতে ইসলামিয়া নারীদের প্রতি কোনোরূপ অন্যায় কঠোরতা না করার নিশ্চয়তা প্রদান করছে।
আমেরিকার পক্ষাবলম্বনকারী দেশীয় রাজাকারদেরকেও আমরা সান্ত্বনা-বাণী শুনাচ্ছি। তারা নির্বিঘ্নে এবং নির্ভয়ে দেশে বসবাস করতে পারবে। আমরা তাদেরকে শতভাগ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
এমনিভাবে যারা কাবুল এয়ার্পোরটে অবস্থান করছে, ইমারাতে ইসলামিয়া তাদেরও জান-মালের নিরাপত্তা দিচ্ছে৷ সুতরাং আপনারা নির্ভয়ে নিজেদের ঘরে ফিরে আসুন। এবং শঙ্কাহীন জীবন-যাপন করুন।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: অবৈধভাবে অস্ত্র আমদানি করার যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।
সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আমাদের সেনাবাহিনী কড়া পাহারায় নিযুক্ত রয়েছে। তবে, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা এড়াতে সাধারণ জনগণের কাছে থাকা সকল অস্ত্র জমা নেওয়া হবে।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: ইতিপূর্বে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসে যারা নিহত হয়েছে তাদের দায়ভার আমাদের উপর বর্তাবে না। সে জন্য আমরা কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য না। কারণ তারা নিজেরাই আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলো।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: পতাকা কোনো মূল বিষয় না। পতাকা কেমন হবে? কীভাবে উড্ডীন করা হবে? তা ভবিষ্যত রাষ্ট্রব্যবস্থাই নির্ধারণ করে দিবে৷
ভবিষ্যত আফগানিস্তান আফিম চাষের কেন্দ্র হবে না। এটাই আমাদের চূড়ান্ত সিন্ধান্ত। দিন দিন আফিম চাষ কমিয়ে আনা হবে৷ এবং মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই রাষ্ট্রীয়ভাবে আফিম চাষে নিষেধাজ্ঞা জারী করবে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান।
ইতিপূর্বে বাক স্বাধীনতার নামে, প্রিয় মাতৃভূমি আফগানিস্তানে অসংখ্য বোমা নিক্ষেপ করা হলেও বর্তমান অবস্থা হলো, আমাদের ছবি আপলোড দেওয়ার কারণে ফেইসবুক আইডি পর্যন্ত নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
আপনারা অল্পকিছুদিন ধৈর্যধারণ করুন! খুব দ্রুতই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা তৈরী করা হবে। রাষ্ট্র গঠনে আমাদের অভিপ্রায় হলো, রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করবো। রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগিতা করতে আগ্রহী, এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও রাখে - এমন ব্যক্তিদের উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে চাচ্ছিনা আমরা। কতক রাষ্ট্রীয় কার্যালয় ইতিমধ্যেই আমরা কাজে ফিরিয়ে এনেছি৷ অবশিষ্ট গুলোও খুব দ্রুত চালু করবো ইনশাআল্লাহ।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: বৈশ্বিক মূলনীতি রক্ষা করেই আমরা বহির্বিশ্বের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক করতে চাই। আমরা চাই, এই সম্পর্ক তৈরী করতে উভয় পক্ষই অপর পক্ষের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে কাজ করবে। এবং কোনো পক্ষই অপর পক্ষের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: আমরা অতিশীঘ্রই কাবুলের পরিপূর্ণ নেতৃত্ব গ্রহণ করবো। কাকে কোন পদে বসানো হবে? তা এখনো পরিকল্পনাধীন। অতিসত্বর ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ। মৌলিকভাবে আফগানিস্তান অবশ্যই একটি স্বাধীন ইসলামী রাষ্ট্র হবে। বহির্বিশ্বের যে কোনো দেশের প্রভাব ও কর্তৃত্ব থেকে শতভাগ মুক্ত হয়ে, ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে আপন মহিমায় এগিয়ে যাবে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান। তবে শাখাগত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে ইমারতে ইসলামিয়ার মন্ত্রীপরিষদ পরামর্শের ভিত্তিতে সমাধানের পথে আসার চেষ্টা করবে।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: আফগানের ভূমিকে অন্য যে কোনো দেশ বা জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অনুমতি আমরা কাউকেই দিচ্ছি না। এমনকি,এমন কোনো ব্যক্তিদেরকেও আমরা আফগানিস্তানে বসবাসের অনুমতি দিচ্ছি না, যারা আমাদের ভূমিকে অন্য কারো বিরুদ্ধে ব্যবহার করার ইচ্ছে পোষণ করে।
আপনারা অল্পকিছুদিন ধৈর্যধারণ করুন! খুব দ্রুতই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা তৈরী করা হবে। রাষ্ট্র গঠনে আমাদের অভিপ্রায় হলো, রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করবো। রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগিতা করতে আগ্রহী, এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও রাখে- এমন ব্যক্তিদের উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে চাচ্ছিনা আমরা। কতক রাষ্ট্রীয় কার্যালয়কে ইতিমধ্যেই আমরা ক্রিয়াশীল করেছি৷ অবশিষ্টগুলোকেও খুব দ্রুত ক্রিয়াশীল করবো ইনশাআল্লাহ।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: বৈশ্বিক মূলনীতি রক্ষা করেই আমরা বহির্বিশ্বের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক করতে চাই। আমরা চাই, এই সম্পর্ক তৈরী করতে উভয় পক্ষই অপর পক্ষের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে কাজ করবে। এবং কোনো পক্ষই অপর পক্ষের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ: আমরা অতিশীঘ্রই কাবুলের পরিপূর্ণ নেতৃত্ব গ্রহণ করবো। কাকে কোন পদে বসানো হবে? তা এখনো পরিকল্পনাধীন। অতিসত্বর ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ভাষান্তরঃ আব্দুল্লাহ মুনতাসির
Comment