এই ফোরামে দেওয়া আরেক ভাইয়ের দেয়া আনসার আল ইসলামের টুইটার লিঙ্ক থেকে প্রাপ্ত মুল বিবৃতির টেক্সট এখানে পোষ্ট করলাম।
সমকামিতার প্রচারক ‘জুলহাজ মান্নান’ ও ‘সামির মাহবুব তনয়’ হত্যাকান্ডের দায়ভার গ্রহণ
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লহ জানেন, তোমরা জান না।” (সুরা নুর, ২৪:১৯)
আলহামদুলিল্লাহ! মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহে আনসার আল ইসলাম (আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ, বাংলাদেশ শাখা) এর দুঃসাহসী মুজাহিদিনরা বাংলাদেশে সমকামিতা প্রসারের মূলহোতা, ‘রূপবান’ এর পরিচালক জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগী সামির মাহবুব তনয়কে হত্যা করেছেন। আমরা, আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ, এই হামলার সম্পূর্ণ দায়ভার গ্রহন করছি।
রুপবান একাধারে একটি সংগঠন এবং সমকামিতা প্রসারের উদ্দেশ্যে জুলহাজ মান্নান গং কর্তৃক প্রকাশিত ম্যাগাজিনেরও নাম।১
আলহামদুলিল্লাহ, এই দুই কুলাঙ্গারের অপরাধগুলো আমরা প্রকাশ করার আগেই তাদের সঙ্গী-সাথীরা এবং বৈশ্বিক অশ্লীলতার পৃষ্ঠপোষক আমেরিকান মিডিয়া সেগুলো সবার সামনে প্রকাশ করে দিয়েছে।২
হে মুসলিম উম্মাহ! লক্ষ্য করুন, আল্লাহর এই জমিনে প্রতিদিন গড়ে দশ জনেরও বেশী বনী-আদম নিহত হলে৩ কিংবা সরকারদলীয় ক্যাডারদের লোভ ও জুলুমের কারণে রানা-প্লাজা ধ্বসে শতাধিক মানুষ নিহত হলে,৪শাপলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে নিরীহ, নিরস্ত্র উলামায়ে কেরাম, মাদ্রাসার তালিবুল ই’লম ও ইসলামপ্রেমী জনতার উপর সরকার ও তাদের ভারতীয় দোসররা গণহত্যা চালালেও, ক্রুসেডার আমেরিকা ও তাদের সহযোগীরা কোন উচ্চবাচ্য করে না। অদক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ সরকারী ব্যবস্থাপনার কারণে লঞ্চ ডুবিতে শত শত মুসলিমের সলীল সমাধি হলেও তাদের গায়ে লাগে না।৫ দিনের পর দিন ক্রস-ফায়ার ও এনকাউন্টারের নামে সরকার গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালিয়ে গেলে, চোখ উপড়ে, হাত কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করলেও মানবতা ও মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার মানবতাবোধ তখন জাগ্রত হয় না। স্বল্প খরচে বেশী মুনাফা অর্জন করতে গিয়ে লোভী আমেরিকান কোম্পানীগুলো টেংরাটিলা ও অন্যান্য গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কোটি-কোটি টাকার পরিবেশের ক্ষতি করলেও তাদের কিছু যায় আসেনা।৬ কারণ এই কোম্পানীগুলো আমেরিকান রাজনীতিবিদদেরকে টাকা দিয়ে কিনে রেখেছে।৭
এদের মায়াকান্না শুরু হয় শুধুমাত্র ইসলামের কোন চরম দুশমন, মুসলিম সমাজে ইসলামবিদ্বেষ ও অশ্লীলতার প্রচারকারী কোন শয়তান নিহত হলে।
এই সেই আমেরিকা, যাদের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৩% পিতৃপরিচয়হীন।৮ এই সেই আমেরিকা যেখানে প্রতি ১০৭ সেকেন্ডে একটি করে ধর্ষণ সংঘটিত হয়।৯ এই সেই আমেরিকা যেখানে বানানো হয় পৃথিবীর মোট পর্নোগ্রাফির শতকরা ৮৫-৮৯ ভাগ। যেখান থেকে প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি করে নতুন পর্ণো ছবি ইন্টারনেটে আপলোড করা হয়।১০ এই সেই আমেরিকা যার সেনাবাহিনীতে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী ও পুরুষ সেনা সদস্য নিজ সহযোদ্ধাদের দ্বারাই ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।১১ এই সেই আমেরিকা যারা বিনা প্রয়োজনে১২ হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলে হত্যা করেছিল লক্ষ লক্ষ নিরীহ,বেসামরিক জনগণকে।১৩ এই সেই আমেরিকা যারা সকল মানবিক বিবেচনাবোধ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে উপেক্ষা করে ভিয়েতনামে রাসায়নিক অস্ত্র “এজেন্ট অরেঞ্জ” ব্যবহারের মাধ্যমে ধ্বংস করেছিল লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের জীবন।১৪ এই সেই আমেরিকা যারা উপসাগরীয় যুদ্ধের পর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে হত্যা করেছিল ১৫ লক্ষেরও বেশি ইরাকীকে।১৫এই সেই আমেরিকা, যারা বিগত বিশ বছরে পানির মত প্রবাহিত করেছে চল্লিশ লক্ষাধিক মুসলমানের রক্ত।১৬ এই সেই আমেরিকা, যারা মুসলিমদের পবিত্র ভূমি দখল করে রাখার স্বার্থে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে যুগ যুগ ধরে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে।১৭ এই সেই আমেরিকা যারা কওমে লুতের পাপাচারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দিয়েছে।১৮ সম্প্রতি বাংলাদেশের আমেরিকান রাষ্ট্রদূত এ সকল বিকৃতমস্তিষ্কের অধিকারী সমকামীদেরকে তাদের প্রাণের বন্ধু বলে দাবী করেছে।১৯ আল্লাহ তা’আলাই ওদের মুখ থেকে সত্যকে প্রকাশ করেছেন।
এই আমেরিকানদের নির্লজ্জতা দেখে আমরা হতবাক হই। এরাই ক্রমাগত নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ ও মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে জঘন্য সব অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এরাই সারা পৃথিবী জুড়ে পাপাচার, অশ্লীলতা, অনৈতিকতা ও বিকৃত যৌনাচারের প্রচার ও প্রসারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এরাই সমগ্র বিশ্বকে নিজেদের মতোই পাপ-পংকিলতা ও বিকৃতির মধ্যে নিমজ্জিত করার উদ্দেশ্যে অর্থ-সম্পদ ও শ্রম ব্যয় করছে। আর এরাই আজ নির্লজ্জের মত বাংলাদেশের মুসলিমদেরকে মানবতা ও সঠিক মূল্যবোধ শেখাতে চাচ্ছে?
এরাই গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য, গণতন্ত্র ও উদারনৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার নামে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো সংঘটন করেছে। অথচ পশুর চেয়েও অধম কিছু মানুষ যারা এই মুসলিম সমাজকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায়, আল্লাহর সৈনিকরা তাদেরকে হত্যা করলে পশ্চিমা কাফিরদের মায়াকান্না আর শেষ হতে চায় না। পুরো কাফির দুনিয়া উদ্ভ্রান্তের ন্যায় লম্ফঝম্ফ শুরু করে দেয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
“কাফিররা পর¯পরের আউলিয়া, বন্ধু”। (সুরা আনফাল, ৮:৭৩)
এখন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করছে, জুলহাজ মান্নান নাকি এদেশের মানুষের আদর্শ ধারণ করতো।২০ আমরা আল্লাহ্ তা’আলার কাছে এই রকম আদর্শ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِنَ الْعَالَمِينَ.إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ ۚ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ
“এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ? তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।” (সুরা আরাফ, ৭:৮০-৮১)
আমরা এই কাফির সরদারকে বলতে চাই,
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ. لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ. وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ. وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَا عَبَدْتُمْ. وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ. لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
“বলুন, হে কাফেরকূল, আমি ইবাদত করিনা, তোমরা যার ইবাদত কর। এবং তোমরাও ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। তোমরা ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য এবং আমার দ্বীন আমার জন্য”। (সুরা কাফিরুন, ১০৯:১-৬)
হে উম্মতের উলামায়ে কেরাম! হে মুসলিম সমাজ! এই কাফিরদের ¯পর্ধা দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। কওমে লুতের অশ্লীলতা ও মুনকার কি বাংলার মুসলমানদের আদর্শ? আপনারা বরাবরের মতই দৃঢ়তার সাথে এই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করুন। না হলে পুরো মুসলিম বিশ্ব এদেশের মুসলিমদের ব্যাপারে এই ধারণা পোষণ করলে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
হে মুসলিম উম্মাহ দেখুন, সমকামীতার সমর্থক এই সরকারের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই সমকামীদের অধিকারের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছিল।২১ এরই ধারাবাহিকতায় আজ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, এই জমিনে সমকামিতা প্রসারের মূল কারিগর এই মহিলারই আপন খালাতো ভাই। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এরা উভয়েই আমেরিকার ক্রীড়নক বৈ কিছুই না!২২
ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার মিত্রদের সাহায্য নিয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে এই ভূখন্ডের মুসলিমদের মাঝে সমকামিতার মত জঘন্য অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিল বেতনভোগী ভৃত্য জুলহাজ মান্নান।২৩ তার একান্ত সহযোগী ছিল সামির মাহবুব তনয়।২৪
বিদেশী প্রভুদের অর্থায়নে মুসলমানদের এই জমীনে সমকামিতার মত অশ্লীলতা ও জঘন্য বিকৃতি ছড়িয়ে দিতে জুলহাজ মান্নান ছিল বদ্ধপরিকর, যা সে গর্বের সাথে একাধিক জায়গায় উল্লে*খ করেছে। বাংলাদেশে সমকামিতার প্রচার-প্রসারের মূলহোতা হিসেবেআন্তর্জাতিক সমকামী অঙ্গনেও জুলহাজ মান্নানের স্বীকৃতি রয়েছে।২৫
বাংলাদেশে অশ্লীলতা ও সমকামিতার প্রচার-প্রসারে সরাসরি ভূমিকা রাখা ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন সমকামিতার প্রসার ও জনপ্রিয়তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে জুলহাজ মান্নানের সংগঠন রূপবান ও তার সহযোগীদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছে।২৬
এছাড়াও, সমকামীদের দিকনির্দেশনা দেয়া ও জনসাধারণের নিকট সমকামিতাকে আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংগঠন CREA’র সহযোগিতায় সমকামী যুবকদের নিয়ে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতেYouth Leadership Program নামক একটি গোপন কর্মশালা আয়োজন করে জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগীরা। এই কর্মশালায় সমকামী সংগঠকরা যুবসমাজকে সমকামিতার দিকে আকৃষ্ট করার নানাবিধ কর্মপন্থা তুলে ধরে! ‘রূপবান’ ম্যাগাজিনের পাশাপাশি তারা গত বছর ‘রুপংক্তি’ নামে একটি কবিতার বইও বের করেছে ইসলামবিদ্বেষী ‘শুদ্ধস্বর প্রকাশনী’ থেকে।২৭
‘রূপবান’ সমকামিতার প্রচারের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম ম্যগাজিন প্রকাশ করে। এই ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতকে রোল মডেল হিসেবে ধরে নিয়ে বাংলাদেশেও সমকামিতার প্রসার ঘটানো। উল্লেখ্য, ভারতেও সমকামিতার প্রচার-প্রসার শুরু হয়েছিল দুই/তিনটি ম্যাগাজিন দিয়ে। আজও ভারতে সমকামিতা প্রচারের মূল হাতিয়ার হচ্ছে ম্যাগাজিন।২৮
দীর্ঘ দুই যুগ যাবত সমকামিতায় লিপ্ত জুলহাজ মান্নান ও তার সমকামী সাথীরা এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশে সমকামিতার প্রসার ঘটানোর কাজ শুরু করে। সম্প্রতি জুলহাজ মান্নান গং চৌদ্দ মাস ব্যাপী একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এবং বাংলাদেশে সমকামিতার প্রচার-প্রসার বাড়ানোর লক্ষ্যে পাঁচ বছর ব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল।২৯ সহজেই অনুমেয়, এই নরাধমের মৃত্যুর পর যে দেশের সরকারী আমলাদের এখন ঘুম হারাম হয়ে গেছে, তারাই এই সমকামী-লানতপ্রাপ্ত গোষ্ঠীকে পিছন থেকে কল-কাঠি নেড়ে পরিচালিত করছিল। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে সমকামীতা ও অশ্লীলতার প্রচার ও প্রসারের এই চক্রান্ত মূলত: ইসলামের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও তার মিত্রদের ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিশ্বব্যাপী সামরিক ও আদর্শিক যুদ্ধেরই অংশ।
আর জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগিরা ছিল এ যুদ্ধে আমেরিকার পক্ষে কাজ করা এজেন্ট। সমকামিদের গড-ফাদার, যিনা-ফাহেশার কেন্দ্রভূমি আমেরিকান অর্থায়নে চলা এই প্রজেক্ট এখন মুখ থুবড়ে পরেছে। আর সকল প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর।
হে মুসলিম উম্মাহ, আপনারা কি নিজের সন্তানের নিরাপত্তার জন্য, দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচার জন্য এ রকম বিপদজনক একটা চক্রান্তকে রুখে দিবেন না? এই অন্ধকারের জীবদেরকে রুখে দেয়ার এখনই সময়। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যথাযথই বলেছেনঃ
وَلَا يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّىٰ يَرُدُّوكُمْ عَنْ دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُوا
“বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়”। (সূরা বাকারা, ২:২১৭)
এই জমিনের মুসলিমরা যুগে যুগে রক্ত দিয়েছে, যুদ্ধ করেছে। তারা বারংবার বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ একইভাবে এই এলাকার মুসলমানরা এদেশে আমেরিকান ও ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিবে।
হে উম্মতের উলামায়ে কেরামগণ! উম্মাহর বিরুদ্ধে এই ঘৃন্য চক্রান্তের ব্যাপারে কি আপনারা নিরব থাকবেন? সময় এসেছে আপনাদের উপর অর্পিত আমানতের হক্ক আদায় করার। উলামায়ে দেওবন্দের যোগ্য উত্তরসূরীদের জন্য সময় এসেছে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের পর এবার আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।
কুফরের কেন্দ্রভূমি আমেরিকাকে বলছিঃ
তোমরা ভিয়েতনামে মার খেয়েছো, পালিয়ে এসেছো। তোমাদের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও সেখানে যুদ্ধাপরাধ করেছেন। তোমরা ইরাকে মার খেয়েছো, পালিয়ে এসেছ। তোমরা আফগানিস্তানে মার খেয়েছো, পালিয়ে যাচ্ছো। এরপরও তোমরা মুসলিমদের ব্যাপারে নাক গলাতে আসো কেন?
তোমরা কি দেখছো না, তোমাদের ‘হলিউড সিনেমার’ মাধ্যমে তৈরী ‘অলীক সুপার পাওয়ার এর মূর্তি’কে দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় মুজাহিদীনরা ভেংগে দিয়েছেন? মিডিয়ার মাধ্যমে তিলে তিলে তোমরা নিজেদের যে অজেয় ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলে আজ তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে? এরই ফলশ্রুতিতে এমনকি এদেশের কুফরী মানব রচিত আইনের ধারক-বাহক মন্ত্রীরাও তোমাদেরকে ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে !! তোমাদের রাষ্ট্রদূতকে ‘কাজের মেয়ে মর্জিনা’ বলে হেয় করেছে।
তোমাদের রাষ্ট্রদূত পুরো সময়কালে একবারের জন্যও সাক্ষাত পায় নি এদেশের ত্বাগুত সরকার প্রধানের। তোমাদের পেইড এজেন্টকে হত্যার পর তোমাদের মায়াকান্নাকে ‘মায়াকান্না’ বলে উল্লেখ করার সৎ-সাহস দেখিয়েছে এদেশের তাগুত শাসকগোষ্ঠীর পাহারাদার পুলিশ প্রধান। এদেশের সেক্যুলার বুদ্ধিজীবিরা পর্যন্ত তোমাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিচ্ছে। তোমাদের বড় বড় কথার গোমর ফাস করে দিচ্ছে। আর আল্লাহর অনুমতিতে যখন মুজাহিদীনদের তরবারি তোমাদের ঘাড় পর্যন্ত পৌছাবে, তখন তোমরা পালাবে কোন দিকে?
দূর্নীতিবাজ সরকারগুলোর মন্ত্রী-আমলাদেরকে ঘুষ দিয়ে তোমরা হাত করে নিচ্ছ এ ভূখন্ডের মুসলিমদের সম্পদ।৩০ এভাবেই দশকের পর দশক এদেশের মন্ত্রী-আমলা-রাজনীতিবিদ আর তোমাদের কোম্পানীগুলোর যোগসাজশে এ ভূখন্ডের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ তোমরা নির্বিঘেœচুরি করে নিয়ে যাচ্ছো। গণতন্ত্রের মূর্তির আড়ালে, নতুন মোড়কে তোমরা সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছো। আজ এদেশের মুসলিম জনগণ এগুলো বুঝতে পারছে এবং তোমাদের এই লুন্ঠন রুখে দেয়ার জন্য তারা বদ্ধপরিকর। আজ সময় হয়েছে তোমাদের এই নব্য-ঔপনিবেশিক শোষণের, তোমাদের এই কোম্পানীগুলোর যুগ যুগ ধরে এদেশের উপর চালানো লুটপাট বন্ধ করার।
আদর্শ ভিন্ন হলেও এদেশের ঐ সকল সেক্যুলার ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবিদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই, যারা কাফের সর্দার আমেরিকার এই লুন্ঠনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছেন।
জেনো রাখো, তোমাদের বিকৃতি, অশ্লীলতা, ও অসভ্যতা বাংলাদেশে প্রচার ও ছড়িয়ে দেয়ার যে প্রচেষ্টা তোমরা হাতে নিয়েছো, তা আল্লাহর ইচ্ছায় সফল হবে না। হোক তা জুলহাজ মান্নানদের মতো খরিদকৃত গোলামের মাধ্যমে সমকামীতা ও বিকৃত যৌনাচার প্রসারের হীন প্রচেষ্টা কিংবা সরকারের মধ্যে থাকা তোমাদের দালাল ও ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিদের মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের পাঠ্যবইয়ে পরিববর্তন সাধনের মাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ, অনৈতিকতা ও অশ্লীলতা প্রসারের জঘন্য নীলনকশা। এ ভূমির উলামায়ে কেরাম এবং মুজাহিদিনগণ, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাদের এসব চক্রান্ত কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না।
আরো জেনে রাখো, যতোক্ষন পর্যন্ত তোমরা মুসলিম বিশ্বে তোমাদের আগ্রাসন বন্ধ না করছো, ইসলামের বিরুদ্ধে তোমাদের যুদ্ধ থেকে পিছু না হটছো ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ও তোমাদের এজেন্টরা এই ভূমিতে কিংবা পৃথিবীর অন্য যে কোন প্রান্তে নিরাপদ না। আমরা তোমাদের শহীদ শাইখ উসামা বিন লাদিনের রাহিমাহুল্লাহ এই কথাগুলো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি এবং তার পুনরাবৃত্তি করছি,
“আমি সেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর নামে শপথ করছি, যিনি আসমানকে স্তম্ভছাড়া সৃষ্টি করেছেন। যতদিন পর্যন্ত না ফিলিস্তিনীরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছে এবং কাফের সৈন্যরা মুহাম্মাদ ﷺ এর পবিত্র ভূমিকে পরিত্যাগ করছে ততদিন পর্যন্ত আমেরিকানরাও শান্তিতে থাকার স্বপ্ন দেখতে পারবে না”।
ইনশা-আল্লাহ শরীরের শেষ রক্তবিন্দু অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত এই শপথ বাস্তবায়নের জন্য মুজাহিদিনগণ কাজ করে যাবেন।
“দাউলাতুল ইসলামিয়া” (Islamic State) নামক দলটির কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, আপনারা এমন সব লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করুন যার ব্যাপারে শরীয়াতের অনুমোদন আছে। কোনো নও-মুসলিম কিংবা ইসলামবিদ্বেষ-কুফরীর প্রমাণ নেই এমন কোন টার্গেটকে আক্রমণ করা উচিত হবে না। মুসলিম হওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখতে হবেঃ ইসলামি শরীয়াতে একজন মুসলিমের রক্ত ঝরানো অনেক বড় ব্যাপার।
ভুলেও যেন একজন মুসলমানের রক্তও প্রবাহিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা অবশ্য কর্তব্য। এদেশে তো দীর্ঘদিন থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কাজ করে চলেছে। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের জঘন্য অপরাধসমূহের ব্যাপারে সাধারণ মুসলিম ও মুজাহিদগণ সকলেই অবগত। এসকল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে আক্রমণ করে মুসলিম জনগণকে জিহাদের চেতনায় উজ্জীবিত করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা আপনাদেরকে হাকিমুল উম্মাহ শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি (আল্লাহ্ তা’আলা তাকে রক্ষা করুন) এর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইঃ
“আমরা বাগদাদীর খিলাফাতকে স্বীকৃতি দেই না এবং এটা নবুয়্যতের আদলে খিলাফাহ মনে করি না। এর অর্থ এই নয় যে, তার সমুদয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ আমরা অবৈধ মনে করি। তার যেমন রয়েছে পাহাড়সম ভুল তেমনি রয়েছে যথার্থ কিছু পদক্ষেপও।
তার ভুলের ফিরিস্তি যতই বড় হোক না কেন আমি যদি ইরাক বা শামে উপস্থিত থাকতাম; খৃষ্টান, ধর্মনিরেপেক্ষতাবাদী, সাফাবী ও নুসাইরীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তার দিকে সাহায্যের হাত প্রসারিত করতাম। কারণ, বিষয়টি এসবের অনেক উর্ধ্বে। এটি হচ্ছে খৃস্টানদের হামলার মুখোমুখি মুসলিম উম্মাহর সমস্যা। তাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই হামলার মোকাবেলা করা সকল মুজাহিদের অপরিহার্য দায়িত্ব।” (ইসলামী বসন্ত সিরিজ, ১ম পর্ব।)
ক্রুসেডার আমেরিকান ও ভারতীয়দের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে যে সকল সংবাদমাধ্যম মুসলমানদের এই জমিনে সমকামিতার মতো জঘন্য পাপাচারের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির কাজ করে যাচ্ছে, ইসলামবিদ্বেষ-অশ্লীলতা ও সমকামিতাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে আমরা আহবান জানাই এই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য। নতুবা এদেশের তৌহিদী জনতা আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না।
হে ইসলামের শত্রুরা! আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় আমরা আমাদের অঙ্গীকারে অবিচল আছি। অবশ্যই আমরা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্র বিস্তৃত করিনি। আমরা যাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র তাদের ব্যাপারেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।৩১ অতএব, ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ইস্তফা দেয়াই হবে তোমাদের নিজেদের চারপাশে সবচেয়ে শক্তিশালী নিরাপত্তাবলয়। তবেই কেবল মুজাহিদিনদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে পারবে। নতুবা আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় সিসি টিভি ক্যামেরা কিংবা ভাড়াটে গান-ম্যানের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহপ্রাপ্ত মুজাহিদিনদের হাত থেকে এবং আল্লাহ তা’আলার গজব থেকে তোমরা নিরাপদ থাকতে পারবে না।
পরিশেষে, আমরা এই অপারেশনে আহত নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লার প্রতি সমবেদনা জানাই। তাকে আক্রমণের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমাদের ছিলনা। শুধুমাত্র আÍরক্ষার খাতিরেই তাকে প্রতিহত করতে হয়েছে। আমরা মনে করি, তিনি কুলাঙ্গার জুলহাজ মান্নানের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল না থাকার কারণেই মুজাহিদদেরকে বাধা দিয়েছিলেন। নিরাপত্তাজনিত কারণ জড়িত না থাকলে আমরা অবশ্যই তার কাছে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দিতাম।
এবং আল্লাহ্ তা’আলাই সমস্ত প্রশংসার মালিক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মুজাহিদিনদের ইমাম সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ, তাঁর সঙ্গী ও পরিবারবর্গের উপর।
মুফতি আবদুল্লাহ আশরাফ,
মুখপাত্র,
আনসার আল ইসলাম।
—————————————————
cnn.com/2016/04/25/asia/bangladesh-u-s-embassy-worker-killed/
nydailynews.com/news/world/u-s-government-employee-friend-hacked-death-bangladesh-article-1.2614107
সমকামিতার প্রচারক ‘জুলহাজ মান্নান’ ও ‘সামির মাহবুব তনয়’ হত্যাকান্ডের দায়ভার গ্রহণ
إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লহ জানেন, তোমরা জান না।” (সুরা নুর, ২৪:১৯)
আলহামদুলিল্লাহ! মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহে আনসার আল ইসলাম (আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ, বাংলাদেশ শাখা) এর দুঃসাহসী মুজাহিদিনরা বাংলাদেশে সমকামিতা প্রসারের মূলহোতা, ‘রূপবান’ এর পরিচালক জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগী সামির মাহবুব তনয়কে হত্যা করেছেন। আমরা, আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ, এই হামলার সম্পূর্ণ দায়ভার গ্রহন করছি।
রুপবান একাধারে একটি সংগঠন এবং সমকামিতা প্রসারের উদ্দেশ্যে জুলহাজ মান্নান গং কর্তৃক প্রকাশিত ম্যাগাজিনেরও নাম।১
আলহামদুলিল্লাহ, এই দুই কুলাঙ্গারের অপরাধগুলো আমরা প্রকাশ করার আগেই তাদের সঙ্গী-সাথীরা এবং বৈশ্বিক অশ্লীলতার পৃষ্ঠপোষক আমেরিকান মিডিয়া সেগুলো সবার সামনে প্রকাশ করে দিয়েছে।২
হে মুসলিম উম্মাহ! লক্ষ্য করুন, আল্লাহর এই জমিনে প্রতিদিন গড়ে দশ জনেরও বেশী বনী-আদম নিহত হলে৩ কিংবা সরকারদলীয় ক্যাডারদের লোভ ও জুলুমের কারণে রানা-প্লাজা ধ্বসে শতাধিক মানুষ নিহত হলে,৪শাপলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে নিরীহ, নিরস্ত্র উলামায়ে কেরাম, মাদ্রাসার তালিবুল ই’লম ও ইসলামপ্রেমী জনতার উপর সরকার ও তাদের ভারতীয় দোসররা গণহত্যা চালালেও, ক্রুসেডার আমেরিকা ও তাদের সহযোগীরা কোন উচ্চবাচ্য করে না। অদক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ সরকারী ব্যবস্থাপনার কারণে লঞ্চ ডুবিতে শত শত মুসলিমের সলীল সমাধি হলেও তাদের গায়ে লাগে না।৫ দিনের পর দিন ক্রস-ফায়ার ও এনকাউন্টারের নামে সরকার গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালিয়ে গেলে, চোখ উপড়ে, হাত কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করলেও মানবতা ও মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার মানবতাবোধ তখন জাগ্রত হয় না। স্বল্প খরচে বেশী মুনাফা অর্জন করতে গিয়ে লোভী আমেরিকান কোম্পানীগুলো টেংরাটিলা ও অন্যান্য গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কোটি-কোটি টাকার পরিবেশের ক্ষতি করলেও তাদের কিছু যায় আসেনা।৬ কারণ এই কোম্পানীগুলো আমেরিকান রাজনীতিবিদদেরকে টাকা দিয়ে কিনে রেখেছে।৭
এদের মায়াকান্না শুরু হয় শুধুমাত্র ইসলামের কোন চরম দুশমন, মুসলিম সমাজে ইসলামবিদ্বেষ ও অশ্লীলতার প্রচারকারী কোন শয়তান নিহত হলে।
এই সেই আমেরিকা, যাদের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৩% পিতৃপরিচয়হীন।৮ এই সেই আমেরিকা যেখানে প্রতি ১০৭ সেকেন্ডে একটি করে ধর্ষণ সংঘটিত হয়।৯ এই সেই আমেরিকা যেখানে বানানো হয় পৃথিবীর মোট পর্নোগ্রাফির শতকরা ৮৫-৮৯ ভাগ। যেখান থেকে প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি করে নতুন পর্ণো ছবি ইন্টারনেটে আপলোড করা হয়।১০ এই সেই আমেরিকা যার সেনাবাহিনীতে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী ও পুরুষ সেনা সদস্য নিজ সহযোদ্ধাদের দ্বারাই ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।১১ এই সেই আমেরিকা যারা বিনা প্রয়োজনে১২ হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আণবিক বোমা ফেলে হত্যা করেছিল লক্ষ লক্ষ নিরীহ,বেসামরিক জনগণকে।১৩ এই সেই আমেরিকা যারা সকল মানবিক বিবেচনাবোধ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে উপেক্ষা করে ভিয়েতনামে রাসায়নিক অস্ত্র “এজেন্ট অরেঞ্জ” ব্যবহারের মাধ্যমে ধ্বংস করেছিল লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের জীবন।১৪ এই সেই আমেরিকা যারা উপসাগরীয় যুদ্ধের পর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে হত্যা করেছিল ১৫ লক্ষেরও বেশি ইরাকীকে।১৫এই সেই আমেরিকা, যারা বিগত বিশ বছরে পানির মত প্রবাহিত করেছে চল্লিশ লক্ষাধিক মুসলমানের রক্ত।১৬ এই সেই আমেরিকা, যারা মুসলিমদের পবিত্র ভূমি দখল করে রাখার স্বার্থে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে যুগ যুগ ধরে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে।১৭ এই সেই আমেরিকা যারা কওমে লুতের পাপাচারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দিয়েছে।১৮ সম্প্রতি বাংলাদেশের আমেরিকান রাষ্ট্রদূত এ সকল বিকৃতমস্তিষ্কের অধিকারী সমকামীদেরকে তাদের প্রাণের বন্ধু বলে দাবী করেছে।১৯ আল্লাহ তা’আলাই ওদের মুখ থেকে সত্যকে প্রকাশ করেছেন।
এই আমেরিকানদের নির্লজ্জতা দেখে আমরা হতবাক হই। এরাই ক্রমাগত নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ ও মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে জঘন্য সব অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এরাই সারা পৃথিবী জুড়ে পাপাচার, অশ্লীলতা, অনৈতিকতা ও বিকৃত যৌনাচারের প্রচার ও প্রসারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এরাই সমগ্র বিশ্বকে নিজেদের মতোই পাপ-পংকিলতা ও বিকৃতির মধ্যে নিমজ্জিত করার উদ্দেশ্যে অর্থ-সম্পদ ও শ্রম ব্যয় করছে। আর এরাই আজ নির্লজ্জের মত বাংলাদেশের মুসলিমদেরকে মানবতা ও সঠিক মূল্যবোধ শেখাতে চাচ্ছে?
এরাই গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য, গণতন্ত্র ও উদারনৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার নামে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো সংঘটন করেছে। অথচ পশুর চেয়েও অধম কিছু মানুষ যারা এই মুসলিম সমাজকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায়, আল্লাহর সৈনিকরা তাদেরকে হত্যা করলে পশ্চিমা কাফিরদের মায়াকান্না আর শেষ হতে চায় না। পুরো কাফির দুনিয়া উদ্ভ্রান্তের ন্যায় লম্ফঝম্ফ শুরু করে দেয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
“কাফিররা পর¯পরের আউলিয়া, বন্ধু”। (সুরা আনফাল, ৮:৭৩)
এখন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করছে, জুলহাজ মান্নান নাকি এদেশের মানুষের আদর্শ ধারণ করতো।২০ আমরা আল্লাহ্ তা’আলার কাছে এই রকম আদর্শ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِنَ الْعَالَمِينَ.إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ ۚ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ
“এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ? তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।” (সুরা আরাফ, ৭:৮০-৮১)
আমরা এই কাফির সরদারকে বলতে চাই,
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ. لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ. وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ. وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَا عَبَدْتُمْ. وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ. لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
“বলুন, হে কাফেরকূল, আমি ইবাদত করিনা, তোমরা যার ইবাদত কর। এবং তোমরাও ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। তোমরা ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য এবং আমার দ্বীন আমার জন্য”। (সুরা কাফিরুন, ১০৯:১-৬)
হে উম্মতের উলামায়ে কেরাম! হে মুসলিম সমাজ! এই কাফিরদের ¯পর্ধা দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। কওমে লুতের অশ্লীলতা ও মুনকার কি বাংলার মুসলমানদের আদর্শ? আপনারা বরাবরের মতই দৃঢ়তার সাথে এই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করুন। না হলে পুরো মুসলিম বিশ্ব এদেশের মুসলিমদের ব্যাপারে এই ধারণা পোষণ করলে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আমাদের কিছুই করার থাকবে না।
হে মুসলিম উম্মাহ দেখুন, সমকামীতার সমর্থক এই সরকারের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই সমকামীদের অধিকারের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছিল।২১ এরই ধারাবাহিকতায় আজ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, এই জমিনে সমকামিতা প্রসারের মূল কারিগর এই মহিলারই আপন খালাতো ভাই। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এরা উভয়েই আমেরিকার ক্রীড়নক বৈ কিছুই না!২২
ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার মিত্রদের সাহায্য নিয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে এই ভূখন্ডের মুসলিমদের মাঝে সমকামিতার মত জঘন্য অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিল বেতনভোগী ভৃত্য জুলহাজ মান্নান।২৩ তার একান্ত সহযোগী ছিল সামির মাহবুব তনয়।২৪
বিদেশী প্রভুদের অর্থায়নে মুসলমানদের এই জমীনে সমকামিতার মত অশ্লীলতা ও জঘন্য বিকৃতি ছড়িয়ে দিতে জুলহাজ মান্নান ছিল বদ্ধপরিকর, যা সে গর্বের সাথে একাধিক জায়গায় উল্লে*খ করেছে। বাংলাদেশে সমকামিতার প্রচার-প্রসারের মূলহোতা হিসেবেআন্তর্জাতিক সমকামী অঙ্গনেও জুলহাজ মান্নানের স্বীকৃতি রয়েছে।২৫
বাংলাদেশে অশ্লীলতা ও সমকামিতার প্রচার-প্রসারে সরাসরি ভূমিকা রাখা ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন সমকামিতার প্রসার ও জনপ্রিয়তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে জুলহাজ মান্নানের সংগঠন রূপবান ও তার সহযোগীদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছে।২৬
এছাড়াও, সমকামীদের দিকনির্দেশনা দেয়া ও জনসাধারণের নিকট সমকামিতাকে আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংগঠন CREA’র সহযোগিতায় সমকামী যুবকদের নিয়ে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতেYouth Leadership Program নামক একটি গোপন কর্মশালা আয়োজন করে জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগীরা। এই কর্মশালায় সমকামী সংগঠকরা যুবসমাজকে সমকামিতার দিকে আকৃষ্ট করার নানাবিধ কর্মপন্থা তুলে ধরে! ‘রূপবান’ ম্যাগাজিনের পাশাপাশি তারা গত বছর ‘রুপংক্তি’ নামে একটি কবিতার বইও বের করেছে ইসলামবিদ্বেষী ‘শুদ্ধস্বর প্রকাশনী’ থেকে।২৭
‘রূপবান’ সমকামিতার প্রচারের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম ম্যগাজিন প্রকাশ করে। এই ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতকে রোল মডেল হিসেবে ধরে নিয়ে বাংলাদেশেও সমকামিতার প্রসার ঘটানো। উল্লেখ্য, ভারতেও সমকামিতার প্রচার-প্রসার শুরু হয়েছিল দুই/তিনটি ম্যাগাজিন দিয়ে। আজও ভারতে সমকামিতা প্রচারের মূল হাতিয়ার হচ্ছে ম্যাগাজিন।২৮
দীর্ঘ দুই যুগ যাবত সমকামিতায় লিপ্ত জুলহাজ মান্নান ও তার সমকামী সাথীরা এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশে সমকামিতার প্রসার ঘটানোর কাজ শুরু করে। সম্প্রতি জুলহাজ মান্নান গং চৌদ্দ মাস ব্যাপী একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এবং বাংলাদেশে সমকামিতার প্রচার-প্রসার বাড়ানোর লক্ষ্যে পাঁচ বছর ব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল।২৯ সহজেই অনুমেয়, এই নরাধমের মৃত্যুর পর যে দেশের সরকারী আমলাদের এখন ঘুম হারাম হয়ে গেছে, তারাই এই সমকামী-লানতপ্রাপ্ত গোষ্ঠীকে পিছন থেকে কল-কাঠি নেড়ে পরিচালিত করছিল। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে সমকামীতা ও অশ্লীলতার প্রচার ও প্রসারের এই চক্রান্ত মূলত: ইসলামের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও তার মিত্রদের ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিশ্বব্যাপী সামরিক ও আদর্শিক যুদ্ধেরই অংশ।
আর জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগিরা ছিল এ যুদ্ধে আমেরিকার পক্ষে কাজ করা এজেন্ট। সমকামিদের গড-ফাদার, যিনা-ফাহেশার কেন্দ্রভূমি আমেরিকান অর্থায়নে চলা এই প্রজেক্ট এখন মুখ থুবড়ে পরেছে। আর সকল প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর।
হে মুসলিম উম্মাহ, আপনারা কি নিজের সন্তানের নিরাপত্তার জন্য, দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচার জন্য এ রকম বিপদজনক একটা চক্রান্তকে রুখে দিবেন না? এই অন্ধকারের জীবদেরকে রুখে দেয়ার এখনই সময়। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যথাযথই বলেছেনঃ
وَلَا يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّىٰ يَرُدُّوكُمْ عَنْ دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُوا
“বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়”। (সূরা বাকারা, ২:২১৭)
এই জমিনের মুসলিমরা যুগে যুগে রক্ত দিয়েছে, যুদ্ধ করেছে। তারা বারংবার বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ একইভাবে এই এলাকার মুসলমানরা এদেশে আমেরিকান ও ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিবে।
হে উম্মতের উলামায়ে কেরামগণ! উম্মাহর বিরুদ্ধে এই ঘৃন্য চক্রান্তের ব্যাপারে কি আপনারা নিরব থাকবেন? সময় এসেছে আপনাদের উপর অর্পিত আমানতের হক্ক আদায় করার। উলামায়ে দেওবন্দের যোগ্য উত্তরসূরীদের জন্য সময় এসেছে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের পর এবার আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।
কুফরের কেন্দ্রভূমি আমেরিকাকে বলছিঃ
তোমরা ভিয়েতনামে মার খেয়েছো, পালিয়ে এসেছো। তোমাদের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও সেখানে যুদ্ধাপরাধ করেছেন। তোমরা ইরাকে মার খেয়েছো, পালিয়ে এসেছ। তোমরা আফগানিস্তানে মার খেয়েছো, পালিয়ে যাচ্ছো। এরপরও তোমরা মুসলিমদের ব্যাপারে নাক গলাতে আসো কেন?
তোমরা কি দেখছো না, তোমাদের ‘হলিউড সিনেমার’ মাধ্যমে তৈরী ‘অলীক সুপার পাওয়ার এর মূর্তি’কে দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় মুজাহিদীনরা ভেংগে দিয়েছেন? মিডিয়ার মাধ্যমে তিলে তিলে তোমরা নিজেদের যে অজেয় ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলে আজ তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে? এরই ফলশ্রুতিতে এমনকি এদেশের কুফরী মানব রচিত আইনের ধারক-বাহক মন্ত্রীরাও তোমাদেরকে ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে !! তোমাদের রাষ্ট্রদূতকে ‘কাজের মেয়ে মর্জিনা’ বলে হেয় করেছে।
তোমাদের রাষ্ট্রদূত পুরো সময়কালে একবারের জন্যও সাক্ষাত পায় নি এদেশের ত্বাগুত সরকার প্রধানের। তোমাদের পেইড এজেন্টকে হত্যার পর তোমাদের মায়াকান্নাকে ‘মায়াকান্না’ বলে উল্লেখ করার সৎ-সাহস দেখিয়েছে এদেশের তাগুত শাসকগোষ্ঠীর পাহারাদার পুলিশ প্রধান। এদেশের সেক্যুলার বুদ্ধিজীবিরা পর্যন্ত তোমাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিচ্ছে। তোমাদের বড় বড় কথার গোমর ফাস করে দিচ্ছে। আর আল্লাহর অনুমতিতে যখন মুজাহিদীনদের তরবারি তোমাদের ঘাড় পর্যন্ত পৌছাবে, তখন তোমরা পালাবে কোন দিকে?
দূর্নীতিবাজ সরকারগুলোর মন্ত্রী-আমলাদেরকে ঘুষ দিয়ে তোমরা হাত করে নিচ্ছ এ ভূখন্ডের মুসলিমদের সম্পদ।৩০ এভাবেই দশকের পর দশক এদেশের মন্ত্রী-আমলা-রাজনীতিবিদ আর তোমাদের কোম্পানীগুলোর যোগসাজশে এ ভূখন্ডের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ তোমরা নির্বিঘেœচুরি করে নিয়ে যাচ্ছো। গণতন্ত্রের মূর্তির আড়ালে, নতুন মোড়কে তোমরা সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছো। আজ এদেশের মুসলিম জনগণ এগুলো বুঝতে পারছে এবং তোমাদের এই লুন্ঠন রুখে দেয়ার জন্য তারা বদ্ধপরিকর। আজ সময় হয়েছে তোমাদের এই নব্য-ঔপনিবেশিক শোষণের, তোমাদের এই কোম্পানীগুলোর যুগ যুগ ধরে এদেশের উপর চালানো লুটপাট বন্ধ করার।
আদর্শ ভিন্ন হলেও এদেশের ঐ সকল সেক্যুলার ও বামপন্থী বুদ্ধিজীবিদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই, যারা কাফের সর্দার আমেরিকার এই লুন্ঠনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছেন।
জেনো রাখো, তোমাদের বিকৃতি, অশ্লীলতা, ও অসভ্যতা বাংলাদেশে প্রচার ও ছড়িয়ে দেয়ার যে প্রচেষ্টা তোমরা হাতে নিয়েছো, তা আল্লাহর ইচ্ছায় সফল হবে না। হোক তা জুলহাজ মান্নানদের মতো খরিদকৃত গোলামের মাধ্যমে সমকামীতা ও বিকৃত যৌনাচার প্রসারের হীন প্রচেষ্টা কিংবা সরকারের মধ্যে থাকা তোমাদের দালাল ও ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিদের মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের পাঠ্যবইয়ে পরিববর্তন সাধনের মাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ, অনৈতিকতা ও অশ্লীলতা প্রসারের জঘন্য নীলনকশা। এ ভূমির উলামায়ে কেরাম এবং মুজাহিদিনগণ, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাদের এসব চক্রান্ত কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না।
আরো জেনে রাখো, যতোক্ষন পর্যন্ত তোমরা মুসলিম বিশ্বে তোমাদের আগ্রাসন বন্ধ না করছো, ইসলামের বিরুদ্ধে তোমাদের যুদ্ধ থেকে পিছু না হটছো ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ও তোমাদের এজেন্টরা এই ভূমিতে কিংবা পৃথিবীর অন্য যে কোন প্রান্তে নিরাপদ না। আমরা তোমাদের শহীদ শাইখ উসামা বিন লাদিনের রাহিমাহুল্লাহ এই কথাগুলো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি এবং তার পুনরাবৃত্তি করছি,
“আমি সেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর নামে শপথ করছি, যিনি আসমানকে স্তম্ভছাড়া সৃষ্টি করেছেন। যতদিন পর্যন্ত না ফিলিস্তিনীরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছে এবং কাফের সৈন্যরা মুহাম্মাদ ﷺ এর পবিত্র ভূমিকে পরিত্যাগ করছে ততদিন পর্যন্ত আমেরিকানরাও শান্তিতে থাকার স্বপ্ন দেখতে পারবে না”।
ইনশা-আল্লাহ শরীরের শেষ রক্তবিন্দু অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত এই শপথ বাস্তবায়নের জন্য মুজাহিদিনগণ কাজ করে যাবেন।
“দাউলাতুল ইসলামিয়া” (Islamic State) নামক দলটির কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, আপনারা এমন সব লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করুন যার ব্যাপারে শরীয়াতের অনুমোদন আছে। কোনো নও-মুসলিম কিংবা ইসলামবিদ্বেষ-কুফরীর প্রমাণ নেই এমন কোন টার্গেটকে আক্রমণ করা উচিত হবে না। মুসলিম হওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখতে হবেঃ ইসলামি শরীয়াতে একজন মুসলিমের রক্ত ঝরানো অনেক বড় ব্যাপার।
ভুলেও যেন একজন মুসলমানের রক্তও প্রবাহিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা অবশ্য কর্তব্য। এদেশে তো দীর্ঘদিন থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কাজ করে চলেছে। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের জঘন্য অপরাধসমূহের ব্যাপারে সাধারণ মুসলিম ও মুজাহিদগণ সকলেই অবগত। এসকল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে আক্রমণ করে মুসলিম জনগণকে জিহাদের চেতনায় উজ্জীবিত করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা আপনাদেরকে হাকিমুল উম্মাহ শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি (আল্লাহ্ তা’আলা তাকে রক্ষা করুন) এর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইঃ
“আমরা বাগদাদীর খিলাফাতকে স্বীকৃতি দেই না এবং এটা নবুয়্যতের আদলে খিলাফাহ মনে করি না। এর অর্থ এই নয় যে, তার সমুদয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ আমরা অবৈধ মনে করি। তার যেমন রয়েছে পাহাড়সম ভুল তেমনি রয়েছে যথার্থ কিছু পদক্ষেপও।
তার ভুলের ফিরিস্তি যতই বড় হোক না কেন আমি যদি ইরাক বা শামে উপস্থিত থাকতাম; খৃষ্টান, ধর্মনিরেপেক্ষতাবাদী, সাফাবী ও নুসাইরীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তার দিকে সাহায্যের হাত প্রসারিত করতাম। কারণ, বিষয়টি এসবের অনেক উর্ধ্বে। এটি হচ্ছে খৃস্টানদের হামলার মুখোমুখি মুসলিম উম্মাহর সমস্যা। তাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই হামলার মোকাবেলা করা সকল মুজাহিদের অপরিহার্য দায়িত্ব।” (ইসলামী বসন্ত সিরিজ, ১ম পর্ব।)
ক্রুসেডার আমেরিকান ও ভারতীয়দের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে যে সকল সংবাদমাধ্যম মুসলমানদের এই জমিনে সমকামিতার মতো জঘন্য পাপাচারের গ্রহণযোগ্যতা তৈরির কাজ করে যাচ্ছে, ইসলামবিদ্বেষ-অশ্লীলতা ও সমকামিতাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে আমরা আহবান জানাই এই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য। নতুবা এদেশের তৌহিদী জনতা আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না।
হে ইসলামের শত্রুরা! আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় আমরা আমাদের অঙ্গীকারে অবিচল আছি। অবশ্যই আমরা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্র বিস্তৃত করিনি। আমরা যাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র তাদের ব্যাপারেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।৩১ অতএব, ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ইস্তফা দেয়াই হবে তোমাদের নিজেদের চারপাশে সবচেয়ে শক্তিশালী নিরাপত্তাবলয়। তবেই কেবল মুজাহিদিনদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হওয়া থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে পারবে। নতুবা আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছায় সিসি টিভি ক্যামেরা কিংবা ভাড়াটে গান-ম্যানের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহপ্রাপ্ত মুজাহিদিনদের হাত থেকে এবং আল্লাহ তা’আলার গজব থেকে তোমরা নিরাপদ থাকতে পারবে না।
পরিশেষে, আমরা এই অপারেশনে আহত নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লার প্রতি সমবেদনা জানাই। তাকে আক্রমণের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমাদের ছিলনা। শুধুমাত্র আÍরক্ষার খাতিরেই তাকে প্রতিহত করতে হয়েছে। আমরা মনে করি, তিনি কুলাঙ্গার জুলহাজ মান্নানের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল না থাকার কারণেই মুজাহিদদেরকে বাধা দিয়েছিলেন। নিরাপত্তাজনিত কারণ জড়িত না থাকলে আমরা অবশ্যই তার কাছে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দিতাম।
এবং আল্লাহ্ তা’আলাই সমস্ত প্রশংসার মালিক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মুজাহিদিনদের ইমাম সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ, তাঁর সঙ্গী ও পরিবারবর্গের উপর।
মুফতি আবদুল্লাহ আশরাফ,
মুখপাত্র,
আনসার আল ইসলাম।
—————————————————
cnn.com/2016/04/25/asia/bangladesh-u-s-embassy-worker-killed/
nydailynews.com/news/world/u-s-government-employee-friend-hacked-death-bangladesh-article-1.2614107
Comment