আমরা যেনো মৌমাছির মতো হই......!
উস্তাদ আহমদ ফারুক –রঃ
সম্প্রতি বিভিন্ন জিহাদাঙ্গনে চলিত ফিতনা এবং পরীক্ষার ব্যাপারে মুজাহিদ ভাইদের প্রতি অন্তরের কথা ।
আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ অতঃপর...
ওইসব প্রিয় ভাইদের প্রতি যারা জিহাদ ও রিবাতের ময়দানে অটল আছেন, যারা যুদ্ধ-বিগ্রহ ও কঠিন-দুর্দিনে ধৈর্যশীল আছেন, যারা নিজেদের অন্তরকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করছেন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু...
হাসান হাদীসে নবী কারীম –সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণিত হয়েছে, যে তিনি বলেন,
“মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে একটি মৌমাছির মতো, যদি সে খায় তাহলে উত্তম খায়, যদি সে বর্জ্য দেয় তাহলে সে ভালো দেয়, যদি সে কোনো নরম গাছে বসে তাহলে তা ভাঙ্গে না...(বায়হাকি বর্ণনা করেছেন, এবং আলবানি হাসান বলেছেন, হাদীস নম্বরঃ ১০৭৮৫)
আমাদের নবী ও হাবীবের উপর সহস্রাধিক দরুদ সালাম পেশ করি... অধিক অর্থপুর্ণ সংক্ষিপ্ত হাদীসের এই ইবারত মুমিনের অনেক বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই হাদীসে আমাদেরকে যে গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে সতর্ক করেছে তা হচ্ছে প্রকৃত মুমিন –যার মধ্যে অনেক উত্তম চরিত্রের সমন্বয় হবে- সংশোধন এবং কল্যাণলিপ্সু হবে, অধিক উপকারকারী, স্বল্প কষ্টদাতা হবে, তার ভেতর বাহির থেকে একমাত্র উত্তম কাজ এবং উপযুক্ত কাজই বের হবে, তার উপস্থিতি হবে এই পার্থিব জগতের জন্যে রহমতস্বরূপ এবং সৃষ্টিকুলের জন্যে উপকারী।
একজন মুমিন মৌমাছির সাথে কয়েকভাবে সাদৃশ্য রাখেঃ
* সে নিচুমনা এবং নোংড়া কাজ থেকে বিরত থাকবে যেভাবে একটি মৌমাছি আবর্জনা থেকে মুক্ত থাকে,
* মুমিন কঠোর প্রচেষ্টা চালাবে যাতে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে একমাত্র উত্তম ব্যতীত কোনো কিছু প্রকাশ পাবে না – যেমনিভাবে মৌমাছির পেট থেকে উপকারী রং-বেরংয়ের মানুষের জন্যে ঔষধ পানীয় ব্যতীত অন্যকিছু বের হয় না।– এটা এজন্য যে মুমিন জানে সে হচ্ছে এমন উম্মতের একজন যাদেরকে মানুষের জন্যে বের করা হয়েছে, অর্থাৎ হেদায়াতের পথে মানুষকে পরিচালনের জন্যে, তাদেরকে এমন পথে নির্দেশনা দেওয়ার জন্যে যাদের দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে এবং তাদেরকে জাহিলিয়্যাতের অন্ধকার থেকে আল্লাহর শরীয়তের আলোকিত পথে নিয়ে আসার জন্যে,
* সে নিজের বিনয়ত ও মানুষকে কম কষ্ট দেওয়ার ক্ষেত্রেও মৌমাছির সাদৃশ্য রাখে, যেমনিভাবে মৌমাছি যদি নরম গাছে বসে তা ভাঙ্গে না, এমনভাবে হবে একজন মুমিন... নিজ মুমিন ভাইদের প্রতি নরম কোমল অন্তরঙ্গ অমায়িক, তাদেরকে কোনো কিছু দ্বারা কষ্ট দিবে না এবং তাদেরকে স্পর্শের আঘাত করবে না, তাদের প্রতি বিনম্র, তাদের প্রতি দয়াশীল, তাদের জন্যে কল্যাণকামী হবে প্রতারক নয়!
আসুন হে প্রিয় ভায়েরা! আমরা হই একটি মৌমাছির মতো, যদি এটা আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে না হয় তাহলে মৌমাছির থেকে কম যেনো না হই, মৌমাছি তার কাজ তো বিস্ময়কর! সহীহ হাদীসে আব্দুল্লাহ বিন উমর রাজি আল্লাহু থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রিয় হাবীব মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরেকটি উদাহরণ টানলেন – যার কোমলতা প্রথমটি থেকে কম হবে না- মুমিনের অবস্থা বর্ণনার জন্যে, তিনি সেথায় বলেন,
মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে একটি খেজুরের ন্যায়। তুমি তার থেকে যতটুকু নিবে তা তোমার কল্যাণে আসবে। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহীহাহ/ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি রাহঃ/ হাদীস নম্বরঃ ২২৮৫)
মৌমাছি অন্যান্যদের চেয়ে গাছ চয়নের ক্ষেত্রেও বিশেষ বৈশিষ্ট্য অবলম্বন করে, যাতে তার ফলসমুহ খাওয়া যায় এবং জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে উপকার লাভ করা যায় –তার খোসা থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে শুষ্ক হওয়া পর্যন্ত- যাতে তার কাঠ, পাতা, ডাল এবং মুকুল প্রত্যেকটি কোনো না কোনো অবস্থায় উপকার দেয়, অতঃপর তার উত্তম উতপাদন, সুন্দর ফল এবং তার স্থির ছায়া যা সময়ে সময়ে বেশি উপকার পৌছাতে থাকে... একজন মুমিনকে এমনই হওয়া চাই ... যিনি হবেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথার বাস্তব উদাহরণ এবং জীবন্ত নমুনাঃ
আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে ওই ব্যক্তি যে মানুষকে অধিক উপকার পৌছায়, আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম আমল হচ্ছে ওই প্রফুল্ল যা অন্য মুমিনের অন্তরে প্রবেশ করে অথবা তার থেকে দুঃখ দূর করে অথবা তার ঋণ শোধ করে অথবা তার ক্ষুধা নিবারণ করে। কোনো ভায়ের প্রয়োজন পুর্ণ করার জন্যে বের হওয়া আমার কাছে এই মসজিদে (অর্থাৎ মসজিদে নববীতে) এক মাস এতেকাফ করার চেয়ে উত্তম। যে তার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করবে আল্লাহ তার গোপনীয় বিষয়সমূহ লুকিয়ে রাখবেন, এবং যে তার ক্রোধকে উপশম করবে -যদিও সে এটা প্রয়োগ চায় তাহলে প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে- আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার আশা পূরণ করে অন্তর পূর্ণ করে দিবেন, এবং যে ব্যক্তি তার ভায়ের কোনো প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্যে বের হবে এমনকি তা তার জন্যে প্রস্তুত করে দিবে আল্লাহ সেদিন তার পদ দৃঢ় রাখবেন যেদিন অনেক পদের স্খলন ঘটবে। নিশ্চয় দুচ্চরিত্র মানুষের আমলকে এমনভাবে নষ্ট করে দেয় যেভাবে সিরকা মধুকে নষ্ট করে দেয়। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহীহাহ/ শায়খ আলবানি রাহ,/ হাদীস নম্বরঃ ৯০৬)
আল্লাহ আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে এসব উত্তম গুণাবলি এবং মহান চরিত্র দ্বারা পরিপুষ্ট করুন, আমীন।
আমার প্রিয় ভায়েরা!
এখানে মুজাহিদদের তুলনায় অন্য কেউ এসব গুণাবলির জন্যে অধিক উপযুক্ত নয়, তারা হচ্ছেন এসব ব্যক্তিরা যারা এই কালেমার ঝান্ডার জন্যে দাড়িয়েছেন যার জন্যে সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করা হয়েছে, যার জন্যে রাসুলগণ প্রেরিত হয়েছেন এবং যার জন্যে কিতাবসমুহ অবতীর্ণ হয়েছে, তারা ওইসব বিষয়ের জন্যে প্রতিরোধে দাঁড়িয়েছেন যা হচ্ছে পার্থিবজগতের সবচেয়ে মুল্যবান, এই দ্বীনের সবচেয়ে মহান বিষয়ের জন্যে বরং সব আসমানি শরীয়তের মধ্যে, তারা এমন এক ইবাদতের মধ্যে অবস্থানরত আছেন যার ব্যাপারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইসলামের সম্মানের চূড়া... সুতরাং সবাইকে এই দায়িত্বের গুরুত্ব, কাজের মহত্ব এবং বিষয়ের বড়ত্ব বোঝা আবশ্যক, এবং তাদের চারিত্রিক উন্নতি এমন একটি উপযুক্ত স্তর পর্যন্ত পৌছা আবশ্যক যা অবস্থার সাথে মিলে... তারা এই গুরুত্বপুর্ণ নববী কাজে দৃঢ় আছেন... সৃষ্টিজগতকে হক্বের দিকে দাওয়াতের কাজ... তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান... এই গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত যথাযথ আদায় হবে না যতক্ষণ না আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই অনুপম আদর্শকে নিজের জীবনে বাস্তবে রূপ দিতে পারবো যার উপর আল্লাহ তাঁর প্রশংসা করেছেন, আল্লাহ এভাবে বলেছেন, নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী... আল্লাহ অন্য আয়াতে তাঁর প্রশংসা এভাবে করেছেন, তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসুল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়। (সুরা-তাওবাহঃ ১২৮) সৃষ্টিকুলের অবস্থায় তাঁর মনের ব্যাকুলতা এবং মানুষের হেদায়তের জন্যে তার অস্থিরতা অন্য আয়াতে এভাবে চিত্রায়িত করেছেন
ত্বা-সীন-মীম। এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্মঘাতী হবেন। (সুরা-শুআরাঃ ১-৩)
মুজাহিদদের জন্যে এভাবে হওয়া আবশ্যক... মৌমাছির মতো অথবা খেজুর গাছের মতো... সৃষ্টির কল্যাণ এবং সফলতার অধিক মর্মব্যাথী... তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে একমাত্র উত্তম ব্যতীত কিছুই বের হবে না... তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন... এবং এই হাদীস হবে তাদের মানদণ্ড যে হাদীসের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচাত ভাই বীরদের শিরোমণি হযরত আলী রাজি আল্লাহু আনহুকে খাইবরে ইয়াহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রক্কালে অসিয়ত করেছেনঃ আল্লাহর কসম! তোমার দ্বারা একজন মানুষ হেদায়তপ্রাপ্ত হওয়া তোমার জন্যে গর্ভবতী উষ্ট্রীয় চেয়ে উত্তম। (ইমাম বুখারী রাহ তাঁর সহীহে বর্ণনা করেছেন) হ্যা, তাদের আবশ্যক এভাবে হওয়া... তাদের জীবন হচ্ছে রক্ত, আহত ব্যক্তি এবং তরবারীর সাথে, তাদের জীবন হবে অমসৃন পাহাড় ও গর্তে, কিন্তু তাদের অন্তর হবে সবার্ধিক কোমল, যা আহত উম্মতের জন্যে ব্যথিত হবে এবং তাদের অবস্থার উপর দয়াদ্র হবে... বরং তাদের প্রতি উপকার পৌছানোর ব্যাপারে অত্যধিক আগ্রহী হবে এমনকি কাফেরদের পর্যন্ত যাতে করে তাদেরকে হক্বের পথে নিয়ে আসা যায় এবং কল্যাণের পথে প্রদর্শন করা যায়। তাদেরকে অপরাধীদের ভয়ানক পরিণতি থেকে সতর্ক করা যায়।
এটা হচ্ছে আমাদের ওই দ্বীন যা আমরা কুরআন ও সুন্নাহ, সাহাবায়ে কেরামের জীবন এবং সালাফে সালেহীনদের গ্রন্থ থেকে চিনতে পেরেছি, এটাই আমরা পেয়েছি চলমান জিহাদী সংগঠনের শায়খ, শীর্ষনেতা ও আলেমদের কাছ থেকে। আমি এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করছি হারিয়ে যাওয়া এই ফরজের মুজাদ্দিদ শায়খ শহীদ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহঃ, আমীরুল মুমিনীন, উম্মতের সম্মান ও শৌর্যের প্রতীক মোল্লা উমর মুজাহিদ –আল্লাহ তাঁকে সাহায্য করুন-, শহীদে উম্মাহ আমেরিকাসংহারক শায়খ উসামা বিন লাদেন রাহ, হাকীমুল উম্মাহ শায়খ আইমান আজ-জাওয়াহিরি হাফিযাহুল্লাহ, দুনিয়াবিমুখ ইবাদতগোজার শহীদ শায়খ মুস্তফা আবু ইয়াজিদ রাহিমাহুল্লাহ, বিশিষ্ট দায়ী মুজাহিদ শায়খ আবু ইয়াহইয়া লিব্বি রাহিমাহুল্লাহ, বিজ্ঞ আলেম অভিজ্ঞ নেতা শায়খ আতিয়াতুল্লাহ লিব্বি রাহিমাহুল্লাহ, শায়খ আলেম মুজাহিদ আবুল লাইছ আল-কাসেমি রাহিমাহুল্লাহ, সত্যপথে পাহাড়ের মত অটল অবিচল শায়খ আবু কাতাদাহ –আল্লাহ তাঁকে মুক্ত করুন-, সত্যপ্রকাশে আপোসহীন কারানির্যাতিত শায়খ আবু মুহাম্মদ আল-মাকদিসি -আল্লাহ তাঁকে মুক্ত করুন-, মুজাহিদ শায়খ হৃদয়স্পর্শী বক্তা অনন্য দায়ী’ উস্তাদ মুহাম্মদ ইয়াসির আফগানি রাহিমাহুল্লাহ, মুজাহিদ শায়খ বিচিত্রপ্রতিভার অধিকারী আবু মুসআব আসসুরি আল্লাহ -তাঁকে মুক্ত করুন-, শায়খ ফকীহ আবুল ওয়ালিদ ফিলিস্তিনি হাফিযাহুল্লাহ, বিশিষ্ট দায়ী’ শায়খ আনওয়ার আল-আওলাকি রাহিমাহুল্লাহ এবং অন্যান্য আরো শায়খগণ আল্লাহ আমাদেরকে যাঁদের সাথে থাকার এবং গ্রন্থাদি, লিখনী, বক্তব্য এবং নির্দেশনা দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত হওয়ার দ্বারা সম্মানিত করেছেন, ... আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে এবং মুসলমানদের পক্ষ থেকে উত্তম বদলা দান করুন... কেননা তারা আমাদের পথকে জ্যোতির্ময় করেছেন... আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন চল্লিশ বছর বা ততোধিক বছরের জিহাদি প্রচেষ্টা এবং দাওয়াতের অভিজ্ঞতা যার মাধ্যমে আধুনিক জিহাদী সংগঠনসমূহ সারাবিশ্বের প্রতিটি কোনায় কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে, আমাদেরকে একাধিকবার ভুল করা থেকে সতর্ক করেছেন যা পুর্বে সংগঠিত হয়েছিলো এবং আমাদেরকে ভয়ংকর পরিণাম দেখিয়েছেন, আমাদেরকে প্রদর্শণ করেছেন সফলতা-কামিয়াবির রাস্তা এবং দেখিয়ে দিয়েছেন ব্যর্থতা এবং অকৃতকার্যের পথ... তাদের কথার পুর্বে তাদের কাজই হচ্ছে আমাদের জন্যে সবক... আমরা তাঁদের প্রচেষ্টার মধ্যে, জিহাদের মধ্যে, দাওয়াতের মধ্যে, কিতাবাদি এবং সংকলনের মধ্যে দেখতেছি ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বোধ... ইসলামি শিক্ষার আলোকিত প্রকৃত চিত্র... ইসলামকে পেয়েছি তার পূর্ণ শক্তিরূপে, স্পষ্টরূপে, অবিচলতার রূপে, সাচ্ছন্দ্যে মধ্যপন্থা ও সৌন্দর্যের সাথে... কতই না উত্তম তাঁদের সংস্পর্শ... কতই প্রশংসনীয় তাঁদের সাহচর্য... আল্লাহ তাঁদের নিহতদেরকে এবং মুসলমানদের নিহতদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন... এবং জীবতদের অটল অবিচল রাখুন এবং আমাদের উত্তম সমাপ্তি করুন।
কিন্ত হে আমার প্রিয় ভায়েরা, আমরা আছি প্রতারণার বছরসমূহে, যেখানে মানূষকে তার গুণসমূহের নিন্দা করা হয় এবং দোষ সমূহের প্রশংসা করা হয়... অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে, এটাই আমাদের বাস্তবতা। অথচ জাতি আমাদের মধ্যে আমাদের নেতাদের মধ্যে এবং আমাদের নেতাদের মধ্যে কোনো দোষ পায় না একমাত্র এইগুলো ছাড়াঃ
উস্তাদ আহমদ ফারুক –রঃ
সম্প্রতি বিভিন্ন জিহাদাঙ্গনে চলিত ফিতনা এবং পরীক্ষার ব্যাপারে মুজাহিদ ভাইদের প্রতি অন্তরের কথা ।
আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ অতঃপর...
ওইসব প্রিয় ভাইদের প্রতি যারা জিহাদ ও রিবাতের ময়দানে অটল আছেন, যারা যুদ্ধ-বিগ্রহ ও কঠিন-দুর্দিনে ধৈর্যশীল আছেন, যারা নিজেদের অন্তরকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করছেন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু...
হাসান হাদীসে নবী কারীম –সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- থেকে বর্ণিত হয়েছে, যে তিনি বলেন,
“মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে একটি মৌমাছির মতো, যদি সে খায় তাহলে উত্তম খায়, যদি সে বর্জ্য দেয় তাহলে সে ভালো দেয়, যদি সে কোনো নরম গাছে বসে তাহলে তা ভাঙ্গে না...(বায়হাকি বর্ণনা করেছেন, এবং আলবানি হাসান বলেছেন, হাদীস নম্বরঃ ১০৭৮৫)
আমাদের নবী ও হাবীবের উপর সহস্রাধিক দরুদ সালাম পেশ করি... অধিক অর্থপুর্ণ সংক্ষিপ্ত হাদীসের এই ইবারত মুমিনের অনেক বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই হাদীসে আমাদেরকে যে গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে সতর্ক করেছে তা হচ্ছে প্রকৃত মুমিন –যার মধ্যে অনেক উত্তম চরিত্রের সমন্বয় হবে- সংশোধন এবং কল্যাণলিপ্সু হবে, অধিক উপকারকারী, স্বল্প কষ্টদাতা হবে, তার ভেতর বাহির থেকে একমাত্র উত্তম কাজ এবং উপযুক্ত কাজই বের হবে, তার উপস্থিতি হবে এই পার্থিব জগতের জন্যে রহমতস্বরূপ এবং সৃষ্টিকুলের জন্যে উপকারী।
একজন মুমিন মৌমাছির সাথে কয়েকভাবে সাদৃশ্য রাখেঃ
* সে নিচুমনা এবং নোংড়া কাজ থেকে বিরত থাকবে যেভাবে একটি মৌমাছি আবর্জনা থেকে মুক্ত থাকে,
* মুমিন কঠোর প্রচেষ্টা চালাবে যাতে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে একমাত্র উত্তম ব্যতীত কোনো কিছু প্রকাশ পাবে না – যেমনিভাবে মৌমাছির পেট থেকে উপকারী রং-বেরংয়ের মানুষের জন্যে ঔষধ পানীয় ব্যতীত অন্যকিছু বের হয় না।– এটা এজন্য যে মুমিন জানে সে হচ্ছে এমন উম্মতের একজন যাদেরকে মানুষের জন্যে বের করা হয়েছে, অর্থাৎ হেদায়াতের পথে মানুষকে পরিচালনের জন্যে, তাদেরকে এমন পথে নির্দেশনা দেওয়ার জন্যে যাদের দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে এবং তাদেরকে জাহিলিয়্যাতের অন্ধকার থেকে আল্লাহর শরীয়তের আলোকিত পথে নিয়ে আসার জন্যে,
* সে নিজের বিনয়ত ও মানুষকে কম কষ্ট দেওয়ার ক্ষেত্রেও মৌমাছির সাদৃশ্য রাখে, যেমনিভাবে মৌমাছি যদি নরম গাছে বসে তা ভাঙ্গে না, এমনভাবে হবে একজন মুমিন... নিজ মুমিন ভাইদের প্রতি নরম কোমল অন্তরঙ্গ অমায়িক, তাদেরকে কোনো কিছু দ্বারা কষ্ট দিবে না এবং তাদেরকে স্পর্শের আঘাত করবে না, তাদের প্রতি বিনম্র, তাদের প্রতি দয়াশীল, তাদের জন্যে কল্যাণকামী হবে প্রতারক নয়!
আসুন হে প্রিয় ভায়েরা! আমরা হই একটি মৌমাছির মতো, যদি এটা আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে না হয় তাহলে মৌমাছির থেকে কম যেনো না হই, মৌমাছি তার কাজ তো বিস্ময়কর! সহীহ হাদীসে আব্দুল্লাহ বিন উমর রাজি আল্লাহু থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রিয় হাবীব মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরেকটি উদাহরণ টানলেন – যার কোমলতা প্রথমটি থেকে কম হবে না- মুমিনের অবস্থা বর্ণনার জন্যে, তিনি সেথায় বলেন,
মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে একটি খেজুরের ন্যায়। তুমি তার থেকে যতটুকু নিবে তা তোমার কল্যাণে আসবে। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহীহাহ/ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি রাহঃ/ হাদীস নম্বরঃ ২২৮৫)
মৌমাছি অন্যান্যদের চেয়ে গাছ চয়নের ক্ষেত্রেও বিশেষ বৈশিষ্ট্য অবলম্বন করে, যাতে তার ফলসমুহ খাওয়া যায় এবং জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে উপকার লাভ করা যায় –তার খোসা থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে শুষ্ক হওয়া পর্যন্ত- যাতে তার কাঠ, পাতা, ডাল এবং মুকুল প্রত্যেকটি কোনো না কোনো অবস্থায় উপকার দেয়, অতঃপর তার উত্তম উতপাদন, সুন্দর ফল এবং তার স্থির ছায়া যা সময়ে সময়ে বেশি উপকার পৌছাতে থাকে... একজন মুমিনকে এমনই হওয়া চাই ... যিনি হবেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথার বাস্তব উদাহরণ এবং জীবন্ত নমুনাঃ
আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে ওই ব্যক্তি যে মানুষকে অধিক উপকার পৌছায়, আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম আমল হচ্ছে ওই প্রফুল্ল যা অন্য মুমিনের অন্তরে প্রবেশ করে অথবা তার থেকে দুঃখ দূর করে অথবা তার ঋণ শোধ করে অথবা তার ক্ষুধা নিবারণ করে। কোনো ভায়ের প্রয়োজন পুর্ণ করার জন্যে বের হওয়া আমার কাছে এই মসজিদে (অর্থাৎ মসজিদে নববীতে) এক মাস এতেকাফ করার চেয়ে উত্তম। যে তার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করবে আল্লাহ তার গোপনীয় বিষয়সমূহ লুকিয়ে রাখবেন, এবং যে তার ক্রোধকে উপশম করবে -যদিও সে এটা প্রয়োগ চায় তাহলে প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে- আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার আশা পূরণ করে অন্তর পূর্ণ করে দিবেন, এবং যে ব্যক্তি তার ভায়ের কোনো প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্যে বের হবে এমনকি তা তার জন্যে প্রস্তুত করে দিবে আল্লাহ সেদিন তার পদ দৃঢ় রাখবেন যেদিন অনেক পদের স্খলন ঘটবে। নিশ্চয় দুচ্চরিত্র মানুষের আমলকে এমনভাবে নষ্ট করে দেয় যেভাবে সিরকা মধুকে নষ্ট করে দেয়। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহীহাহ/ শায়খ আলবানি রাহ,/ হাদীস নম্বরঃ ৯০৬)
আল্লাহ আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে এসব উত্তম গুণাবলি এবং মহান চরিত্র দ্বারা পরিপুষ্ট করুন, আমীন।
আমার প্রিয় ভায়েরা!
এখানে মুজাহিদদের তুলনায় অন্য কেউ এসব গুণাবলির জন্যে অধিক উপযুক্ত নয়, তারা হচ্ছেন এসব ব্যক্তিরা যারা এই কালেমার ঝান্ডার জন্যে দাড়িয়েছেন যার জন্যে সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করা হয়েছে, যার জন্যে রাসুলগণ প্রেরিত হয়েছেন এবং যার জন্যে কিতাবসমুহ অবতীর্ণ হয়েছে, তারা ওইসব বিষয়ের জন্যে প্রতিরোধে দাঁড়িয়েছেন যা হচ্ছে পার্থিবজগতের সবচেয়ে মুল্যবান, এই দ্বীনের সবচেয়ে মহান বিষয়ের জন্যে বরং সব আসমানি শরীয়তের মধ্যে, তারা এমন এক ইবাদতের মধ্যে অবস্থানরত আছেন যার ব্যাপারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইসলামের সম্মানের চূড়া... সুতরাং সবাইকে এই দায়িত্বের গুরুত্ব, কাজের মহত্ব এবং বিষয়ের বড়ত্ব বোঝা আবশ্যক, এবং তাদের চারিত্রিক উন্নতি এমন একটি উপযুক্ত স্তর পর্যন্ত পৌছা আবশ্যক যা অবস্থার সাথে মিলে... তারা এই গুরুত্বপুর্ণ নববী কাজে দৃঢ় আছেন... সৃষ্টিজগতকে হক্বের দিকে দাওয়াতের কাজ... তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান... এই গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত যথাযথ আদায় হবে না যতক্ষণ না আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই অনুপম আদর্শকে নিজের জীবনে বাস্তবে রূপ দিতে পারবো যার উপর আল্লাহ তাঁর প্রশংসা করেছেন, আল্লাহ এভাবে বলেছেন, নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী... আল্লাহ অন্য আয়াতে তাঁর প্রশংসা এভাবে করেছেন, তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসুল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়। (সুরা-তাওবাহঃ ১২৮) সৃষ্টিকুলের অবস্থায় তাঁর মনের ব্যাকুলতা এবং মানুষের হেদায়তের জন্যে তার অস্থিরতা অন্য আয়াতে এভাবে চিত্রায়িত করেছেন
ত্বা-সীন-মীম। এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্মঘাতী হবেন। (সুরা-শুআরাঃ ১-৩)
মুজাহিদদের জন্যে এভাবে হওয়া আবশ্যক... মৌমাছির মতো অথবা খেজুর গাছের মতো... সৃষ্টির কল্যাণ এবং সফলতার অধিক মর্মব্যাথী... তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে একমাত্র উত্তম ব্যতীত কিছুই বের হবে না... তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন... এবং এই হাদীস হবে তাদের মানদণ্ড যে হাদীসের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচাত ভাই বীরদের শিরোমণি হযরত আলী রাজি আল্লাহু আনহুকে খাইবরে ইয়াহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রক্কালে অসিয়ত করেছেনঃ আল্লাহর কসম! তোমার দ্বারা একজন মানুষ হেদায়তপ্রাপ্ত হওয়া তোমার জন্যে গর্ভবতী উষ্ট্রীয় চেয়ে উত্তম। (ইমাম বুখারী রাহ তাঁর সহীহে বর্ণনা করেছেন) হ্যা, তাদের আবশ্যক এভাবে হওয়া... তাদের জীবন হচ্ছে রক্ত, আহত ব্যক্তি এবং তরবারীর সাথে, তাদের জীবন হবে অমসৃন পাহাড় ও গর্তে, কিন্তু তাদের অন্তর হবে সবার্ধিক কোমল, যা আহত উম্মতের জন্যে ব্যথিত হবে এবং তাদের অবস্থার উপর দয়াদ্র হবে... বরং তাদের প্রতি উপকার পৌছানোর ব্যাপারে অত্যধিক আগ্রহী হবে এমনকি কাফেরদের পর্যন্ত যাতে করে তাদেরকে হক্বের পথে নিয়ে আসা যায় এবং কল্যাণের পথে প্রদর্শন করা যায়। তাদেরকে অপরাধীদের ভয়ানক পরিণতি থেকে সতর্ক করা যায়।
এটা হচ্ছে আমাদের ওই দ্বীন যা আমরা কুরআন ও সুন্নাহ, সাহাবায়ে কেরামের জীবন এবং সালাফে সালেহীনদের গ্রন্থ থেকে চিনতে পেরেছি, এটাই আমরা পেয়েছি চলমান জিহাদী সংগঠনের শায়খ, শীর্ষনেতা ও আলেমদের কাছ থেকে। আমি এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করছি হারিয়ে যাওয়া এই ফরজের মুজাদ্দিদ শায়খ শহীদ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহঃ, আমীরুল মুমিনীন, উম্মতের সম্মান ও শৌর্যের প্রতীক মোল্লা উমর মুজাহিদ –আল্লাহ তাঁকে সাহায্য করুন-, শহীদে উম্মাহ আমেরিকাসংহারক শায়খ উসামা বিন লাদেন রাহ, হাকীমুল উম্মাহ শায়খ আইমান আজ-জাওয়াহিরি হাফিযাহুল্লাহ, দুনিয়াবিমুখ ইবাদতগোজার শহীদ শায়খ মুস্তফা আবু ইয়াজিদ রাহিমাহুল্লাহ, বিশিষ্ট দায়ী মুজাহিদ শায়খ আবু ইয়াহইয়া লিব্বি রাহিমাহুল্লাহ, বিজ্ঞ আলেম অভিজ্ঞ নেতা শায়খ আতিয়াতুল্লাহ লিব্বি রাহিমাহুল্লাহ, শায়খ আলেম মুজাহিদ আবুল লাইছ আল-কাসেমি রাহিমাহুল্লাহ, সত্যপথে পাহাড়ের মত অটল অবিচল শায়খ আবু কাতাদাহ –আল্লাহ তাঁকে মুক্ত করুন-, সত্যপ্রকাশে আপোসহীন কারানির্যাতিত শায়খ আবু মুহাম্মদ আল-মাকদিসি -আল্লাহ তাঁকে মুক্ত করুন-, মুজাহিদ শায়খ হৃদয়স্পর্শী বক্তা অনন্য দায়ী’ উস্তাদ মুহাম্মদ ইয়াসির আফগানি রাহিমাহুল্লাহ, মুজাহিদ শায়খ বিচিত্রপ্রতিভার অধিকারী আবু মুসআব আসসুরি আল্লাহ -তাঁকে মুক্ত করুন-, শায়খ ফকীহ আবুল ওয়ালিদ ফিলিস্তিনি হাফিযাহুল্লাহ, বিশিষ্ট দায়ী’ শায়খ আনওয়ার আল-আওলাকি রাহিমাহুল্লাহ এবং অন্যান্য আরো শায়খগণ আল্লাহ আমাদেরকে যাঁদের সাথে থাকার এবং গ্রন্থাদি, লিখনী, বক্তব্য এবং নির্দেশনা দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত হওয়ার দ্বারা সম্মানিত করেছেন, ... আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে এবং মুসলমানদের পক্ষ থেকে উত্তম বদলা দান করুন... কেননা তারা আমাদের পথকে জ্যোতির্ময় করেছেন... আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন চল্লিশ বছর বা ততোধিক বছরের জিহাদি প্রচেষ্টা এবং দাওয়াতের অভিজ্ঞতা যার মাধ্যমে আধুনিক জিহাদী সংগঠনসমূহ সারাবিশ্বের প্রতিটি কোনায় কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে, আমাদেরকে একাধিকবার ভুল করা থেকে সতর্ক করেছেন যা পুর্বে সংগঠিত হয়েছিলো এবং আমাদেরকে ভয়ংকর পরিণাম দেখিয়েছেন, আমাদেরকে প্রদর্শণ করেছেন সফলতা-কামিয়াবির রাস্তা এবং দেখিয়ে দিয়েছেন ব্যর্থতা এবং অকৃতকার্যের পথ... তাদের কথার পুর্বে তাদের কাজই হচ্ছে আমাদের জন্যে সবক... আমরা তাঁদের প্রচেষ্টার মধ্যে, জিহাদের মধ্যে, দাওয়াতের মধ্যে, কিতাবাদি এবং সংকলনের মধ্যে দেখতেছি ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বোধ... ইসলামি শিক্ষার আলোকিত প্রকৃত চিত্র... ইসলামকে পেয়েছি তার পূর্ণ শক্তিরূপে, স্পষ্টরূপে, অবিচলতার রূপে, সাচ্ছন্দ্যে মধ্যপন্থা ও সৌন্দর্যের সাথে... কতই না উত্তম তাঁদের সংস্পর্শ... কতই প্রশংসনীয় তাঁদের সাহচর্য... আল্লাহ তাঁদের নিহতদেরকে এবং মুসলমানদের নিহতদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন... এবং জীবতদের অটল অবিচল রাখুন এবং আমাদের উত্তম সমাপ্তি করুন।
কিন্ত হে আমার প্রিয় ভায়েরা, আমরা আছি প্রতারণার বছরসমূহে, যেখানে মানূষকে তার গুণসমূহের নিন্দা করা হয় এবং দোষ সমূহের প্রশংসা করা হয়... অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে, এটাই আমাদের বাস্তবতা। অথচ জাতি আমাদের মধ্যে আমাদের নেতাদের মধ্যে এবং আমাদের নেতাদের মধ্যে কোনো দোষ পায় না একমাত্র এইগুলো ছাড়াঃ
Comment