মুসলিম উম্মাহর সম্মানিত দীনি আলেমদের প্রতি
ইমারাতে ইসলামী আফগানিস্তানের অনুরোধ
আগস্ট ২১, ২০১৬
কাবুলের তথাকথিত শান্তি পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে যে তাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে ইসলামী দেশগুলোর দীনি আলেমদের নিয়ে একটি সম্মেলন করা হবে। তারা বলছে এই সম্মেলন আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতি প্রতিষ্ঠা করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এবং সশস্ত্র বিরোধীদের লড়াই থেকে বিরত থাকতে প্ররোচিত করবে।
বাস্তবে এই প্রতারণাপূর্ণ প্রচেষ্টা ২০১০-২০১১ সালে থাকা আফগানিস্তানে আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীর চিফ কমান্ডার জেনারেল প্যাত্রেয়াসের সাজানো পরিকল্পনা। সে বিশ্বাস করতো যে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী থেকে যদি এই প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয় ও সশস্ত্র যোদ্ধাদের যদি এই বুঝানো যায় যে বর্তমান যুদ্ধ আসলে জিহাদ নয় বরং ক্ষমতার লড়াই, তাহলে বর্তমান প্রতিরোধ শেষ হয়ে যাবে। এই লক্ষ্যে সে আমেরিকান ঘাটিগুলোতে রেডিও স্টেশন স্থাপন করে এবং গ্রামবাসীকে বিনা মূল্যে রেডিও বিতরন করে। তারপর সবসময় এই রেডিও স্টেশনগুলো থেকে জিহাদ ও মুজাহিদিনদের অপবাদস্বরূপ প্রোপাগান্ডা ছড়াতে থাকে এবং এ সংক্রান্ত দীনি মাসায়েলও জারি করতে থাকে। যাহোক, আলহামদুলিল্লাহ্*, তার এই চেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে যায়।
এখন দখলদার দেশগুলো ও তাদের অভ্যন্তরীণ দোসরেরা যখন বেশ অনেকখানি জায়গার নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে ফেলেছে এবং রণাঙ্গনেও মনোবল হারিয়ে ফেলেছে, তারা দীনি আলেমদের নিয়ে তাদের সাম্রাজ্যবাদী কুট উদ্দেশ্যের জন্য ব্যবহার করতে চাচ্ছে, যেখানে আলেমরা সর্বদা সত্যের জন্য অনবরত আওয়াজ দিয়ে যাচ্ছেন ও এর জন্য তাদের জান কোরবান করে যাচ্ছেন। কিন্তু দখলদারেরা ও তাদের দোসরেরা ভুলে গেছে যে আফগানিস্তান একটি দখলকৃত দেশ। এর মাটি ও বাতাস, সামরিক ও রাজনৈতিক সবকিছুই দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। তাই ১৫০০ আলেম এই বর্তমান দখলের বিরুদ্ধে জিহাদের পক্ষে ফরমান জারি করেছেন।
মুসলিম উম্মাহর সম্মানিত দীনি আলেমগণ অবশ্যই আফগানিস্তানের বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে অবগত। নয়তো তাদের বুঝতে হবে বরতমানে দেশটির অবস্থা এমন যে হানাদার বাহিনী অন্ধের মত আফগান মুসলিম জনগনের উপর বোমা হামলা করে চলছে ও রাতে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে, শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু তাদের জীবন দিচ্ছে কিন্তু কেউ তাদের জিজ্ঞেস করতে পারবে না (কেন?)। তারা দেশের জেলখানাগুলো সাধারণ মানুষ দিয়ে ভড়ে রেখেছে, যাতে এই মুহূর্তে প্রায় ৩৫০০০ হাজতি হয়েছে। এর মধ্যে ১২০০০ জনকে তালেবানের নামে অথবা তাদের সাথে যোগাযোগ আছে বলে অথবা তাদের কোন আত্মীয়তা আছে এই কারনে বন্দি করেছে। এর মধ্যে ৯০ বছরের বৃদ্ধও আছে। তারা তাদের পরিণতির ব্যাপারে অনিশ্চিত অবস্থায় কারাগারে বছরের পর বছর যন্ত্রণায় কাটাতে থাকে। কারন তারা বিচারকদের হাতে তেল দিতে পারছেনা বলে। তার উপর তারা এই প্রয়াসও নিয়েছে যাতে আমাদের মাতৃভূমি থেকে ইসলামী সংস্কৃতি মুছে যায়। অন্যদিকে অনৈতিক ভ্রষ্টাচারের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রশাসনের মন্ত্রি ও গভর্নরেরা বিদেশী জাতীয়তা নিয়ে আছে এবং দখলদারদের সুপারিশে মনোনীত হয়। এটা আফগানিস্তানের আসল (বর্তমান) চিত্র।
আফগানরা তাদের দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ও তাদের ইসলামী ঈমান রক্ষার্থে জেগে উঠেছে, এই পথে কুরবানির সাথে। তাই আমরা মুসলিম উম্মাহর আলেমদের সম্মানের সাথে অনুরোধ করছি যে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি জটিল। এইখানে দখলদার বাহিনীর গোয়েন্দারা প্রতিনিয়ত গোয়েন্দা প্রকল্পনা করে চলছে। আমরা আশা করি সম্মানিত আলেমগণ আফগানিস্তানের বাস্তবতা বুঝবে যাতে তারা অনিচ্ছাকৃত ভাবে আমেরিকা ও তাদের অভ্যন্তরীণ দোসরদের ষড়যন্ত্রের শিকার না হয় অথবা এই পবিত্র সতর্কবাণীর জন্য প্রাপ্য না হয়।
“আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুকবেনা, নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই, না তোমরা কোথাও সাহায্য পাবে।“
এটা বলা দরকার যে ইসলামী ইমারাহ শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই দখলদারিত্ব শেষ করার ও স্বাধীনতা অর্জনের রাস্তা খোলা রেখেছে কিন্তু দখলদার দেশগুলো (এবং তাদের দোসররাই) দুনিয়ার ও দেশের জনগণকে ছলনাময় পরিকল্পনা উদ্ভাবনের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে চাচ্ছে।
পিডিএফ
http://document.li/0v9T
https://justpaste.it/xuby
প্রকাশনা ও পরিবেশনা
প্রকাশকাল
৩০ আগস্ট ২০১৬ ইংরেজি
আপনাদের নেক দুয়ায় আমাদের ভুলবেননা!
Comment