Announcement

Collapse
No announcement yet.

কাঁটাতারের বেড়া

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কাঁটাতারের বেড়া

    বি.দ্র: এই কাহিনীতে কিছু ভাইয়ের সফরের অভিজ্ঞতা গল্পাকারে যুক্ত করা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাও (যেগুলো বাস্তবে ঘটেছে)। তবে ঘটনার ৯০ শতাংশ কল্পনায় আঁকা যা অদূর ভবিষ্যতে ঘটবে ইনশাআল্লাহ। লেখনীতে উল্লেখিত সব ব্যক্তির নাম, জায়গার নাম এবং রুট সম্পূর্ণ কাল্পনিক। লেখার সঠিক গতি-প্রকৃতি বজায় রাখার জন্য ভবিষ্যৎ সময়কালকে কখনো অতীত এবং কখনো বর্তমানের আঁচরে চিত্রায়িত করা হয়েছে।


    ১.
    ষ্টেশান মাষ্টারের রুম থেকে বের হয়ে আসলো আব্দুল্লাহ । মাঝারি উচ্চতার গড়ে তোলা বলিষ্ঠ শরীরের এক নওজোয়ান, যার মুখে সবসময় লেগে থাকে এক কোমলতা যা দেখে বোঝা যায় না অন্তরে প্রতিশোধের ভয়ঙ্কর এক দাবানল লালন করছে সে । ইসলামের জন্য বন্ধুর পথে পা বাড়ানো এক পথিক । যে পথে পদে পদে হাতছানি দেয় মৃত্যুদূত । কিন্তু এই মৃত্যু থেকে পালিয়ে বেড়ানো লোকদের কাতারে নাম লিখাতে পারেনি এই নওজোয়ান। কারণ সে খুব ভালো করেই জানে আজ মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে। বার্মার অত্যাচারিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের আর্তচিৎকার সব সময় ওর কানে বাজে। গুজরাট রায়টে পুড়িয়ে মারা মুসলিমদের বীভৎস দৃশ্য যেন ওর চোখে ভাসে সববময়। মুসলিম মা-বোনদের সম্ভ্রম হারানোর জিগোর ফাটানো আওয়াজ ওর মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে অনেকদিন আগে। আজ পাকিস্থানের ওয়াজিরিস্থান, আযাদ কাশ্মীর, ফিলিস্থিন, চেচনিয়া, বসনিয়া, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, চীনের জিংজিয়াং প্রদেশ, বাংলাদেশ এমনকি প্রত্যেকটি মুসলিম জনপদ তার হৃদয়ে অঙ্কিত করেছে এক বেদনার মানচিত্র। তাই যারা মুত্যু থেকে পালিয়ে বেড়ায় তাদের কাতারে নাম লিখাতে পারেনি সে। মৃত্যুর আকাঙ্খাই আজ ওকে ঘড় থেকে বেড় করে এনেছে। কিন্তু, মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর কাছে ওর আকুল আবেদন, মুসলিম উম্মাহর বিজয়ের তোড়ন সে দেখে যেতে চায় এবং হতে চায় সেই বিজয় ছিনিয়ে আনা গর্বিত সৈনিকদের একজন ।


    নিজের সব দুখ-কষ্ট সে চাপা দিয়েছে সেইদিন যেদিন পাকিস্থানের বোন ড. আফিয়া সিদ্দিকী, ইরাকের বোন ফাতিমার হৃদয় ফুড়ে ফেলা চিঠি পড়েছিলো। চিঠি পড়ে নিজেকে কোন ভাবেই ধরে রাখতে পারেনি সে। কেউ যেন শুনতে না পায় এই জন্য মুখে কাপড় চাপা দিয়ে কেঁদেছিলো অনেকক্ষণ। আজ মুসলিম উম্মাহ হাসলেই সে হাসে, আজ উম্মাহ কাঁদলেই সে কাঁদে। আজ সে এক আব্দুল্লাহ যে নিজেকে উমার বিন খাত্তাব (রা), খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) থেকে শুরু করে তারেক বিন জিয়াদ, সালাহউদ্দীন আয়ুবী, টিপু সুলতান, মুহাম্মাদ বিন কাসিম, উসামা বিন লাদেন এই সব বরেণ্য মুসলিম বীরের উত্তরসূরী মনে করে। হ্যাঁ ওর নাম আব্দুল্লাহ, আব্দুল্লাহ উমায়ের।


    নির্ধারিত সময়ের আধাঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো ট্রেন আসার কোন নাম-গন্ধ নেই। টিকেট কনফার্ম করে তাই একটা চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল আব্দুল্লাহ। হঠাৎ ওর মনে পড়লো আজ সকালে বাড়িতে ফোন দেয়ার কথা ছিলো। তাই, চায়ের দোকানের দিকে না গিয়ে প্লাটফর্মের পূর্ব দিকের ফাঁকা জায়গায় চলে গেলো সে। নির্ধারিত সেট ও সিম ব্যবহার করে ফোন করলো ওর মেজ ভাইকে।

    - আসসালামুআলাইকুম...

    - ওয়ালাইকুমুস্সালাম, কে আব্দুল্লাহ?

    - জ্বী আমি আব্দুল্লাহ, কেমন আছেন?

    - আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?

    - আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি, বাড়ির খবর সব ভালো?

    - বাড়ির সবাই ভালো আছে, তবে তোর শ্বশুড় বাড়ি থেকে একটা রেজিষ্টার্ড চিঠি এসেছে, ফারহানা পাঠিয়েছে....হ্যালো.....তুই শুনতে পাচ্ছিস?

    - কিসের চিঠি বলে মনে হয়? কিছুক্ষন চুপ থেকে প্রশ্ন করলো আব্দুল্লাহ

    - চিঠি পাওয়ার পরে আমি ফারহানাকে ফোন করেছিলাম, ও বলেছে দুনিয়ার জীবন যে উপভোগ করতে জানে না তার সাথে দুনিয়াতে একসাথে চলার খাহেস কারো থাকতে পারে না। ও আরো বলেছে, চিঠিতে তোর স্বাক্ষর লাগবে..... আমরা ধারণা করছি তোর ডিভোর্স লেটার.... আব্দুল্লাহ.....ফারহানা এটা করতে পারলো!

    কিছুক্ষণের জন্য স্তম্ভিত হয়ে গেলো আব্দুল্লাহ... আজ আশঙ্কা বাস্তবে রুপ নিয়ে যেন উপহাস করছে তাকে... হায়! পৃথিবীটা এতো নির্দয় হয়ে উঠলো কেন? এত বিশাল পৃথিবী তার পরেও চারপাশ এত সংর্কীণ হয়ে আসছে কেন? কোন সে আপনজন যে আজকে তাকে এই পথে চলতে অনুপ্রেরণা জোগাবে? কোন সে আপনজন যে তার পথের যন্ত্রণায় সঙ্গী হয়েও মুখে হাসি ধরে রাখবে?.....

    - হ্যালো, আব্দুল্লাহ.....?

    - ট্রেন চলে এসেছে, আমি আর কথা বলতে পারছি না। আপনি এক কাজ করেন, স্বাক্ষর ছাড়াই এ চিঠি ফেরত পাঠিয়ে দেন। এর আর কোন প্রয়োজন নেই। যে মুক্তি চায় তাকে অনেক আগেই মুক্তি দেয়া হয়েছে।

    ধীরে ধীরে ট্রেন আবার চলতে শুরু করলো....আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে আছে ট্রেনের দরজায়। বাতাসের ঝাপটায় ওর মাথার চুল বাঁধ না মানা আনন্দে নাচানাচি করছে যেন। ট্রেন এগিয়ে চলেছে পরবর্তী ষ্টেশনে আর আব্দুল্লাহও এগিয়ে চলছে তার গন্তব্যে.... গন্তব্য পাটগ্রাম জেলার অঙ্গারপোতা দহগ্রাম...


    to be continue inshaaAllaah...
    Last edited by Mujaheed of Hind; 04-10-2017, 11:27 AM.

  • #2
    হে প্রিয় পথের অচেনা পথিক! আপনার লিখিত বাস্তবতার সাথে কাল্পনিকতার অনন্য সংমিশ্রন আমার শুষ্ক আঁখিযুগলকে অশ্রুর বন্যায়............।। সত্যি অসাধারণ; এবং অনেকের ক্ষেত্রে বাস্তবতা এমনই।
    Last edited by Abdullah Ibnu Usamah; 11-17-2016, 06:39 AM.
    سبيلنا سبيلنا الجهاد الجهاد
    طريقنا طريقنا الجهاد الجهاد

    Comment


    • #3
      @ Abdullah ibnu Usama


      ব্যক্তি জীবনের এই দুর্দশাগুলো একটা কারণেই নীরবে সহ্য করতে হয়েছে, তা হচ্ছে অাল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার জন্য জিহাদ-ফি-সাবিলিল্লাহ এর পথ বেছে নেয়া....
      Last edited by Mujaheed of Hind; 04-08-2017, 04:32 PM.

      Comment


      • #4
        Originally posted by Mujaheed of Hind View Post
        @ Abdullah ibnu Usama


        এই লেখনীতে ঘটে যাওয়া ব্যক্তি জীবনের ঘটনাগুলো কাল্পনিক নয়, বাস্তব.....
        যেমনটি অাব্দুল্লাহ এর ক্ষেত্রে ঘটেছে...

        অার ব্যক্তি জীবনের এই দুর্দশাগুলো একটা কারণেই নীরবে সহ্য করতে হয়েছে, তা হচ্ছে অাল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার জন্য জিহাদ-ফি-সাবিলিল্লাহ এর পথ বেছে নেয়া....
        ...আখি কাল্পনিকতা বলে, এমনটি যে হয় নি বা হচ্ছে না; তা বুঝাই নি। বরং এমন অবস্থা অনেক ভাইয়ের জীবনে ঘটে যাচ্ছে। আপনি যেহেতু লিখেছেন... "বি.দ্র: এই কাহিনীতে কিছু ভাইয়ের সফরের অভিজ্ঞতা গল্পাকারে যুক্ত করা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে ব্যক্তিগত জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাও। তবে ঘটনার ৯০ শতাংশ কল্পনায় আঁকা যা অদূর ভবিষ্যতে ঘটবে ইনশাআল্লাহ। লেখনীতে উল্লেখিত সব ব্যক্তির নাম, জায়গার নাম এবং রুট সম্পূর্ণ কাল্পনিক।"
        .........তাই লিখলাম।
        سبيلنا سبيلنا الجهاد الجهاد
        طريقنا طريقنا الجهاد الجهاد

        Comment


        • #5
          বার্মার অত্যাচারিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের আর্তচিৎকার সব সময় ওর কানে বাজে। গুজরাট রায়টে পুড়িয়ে মারা মুসলিমদের বীভৎস দৃশ্য যেন ওর চোখে ভাসে সববময়। মুসলিম মা-বোনদের সম্ভ্রম হারানোর জিগোর ফাটানো আওয়াজ ওর মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে অনেকদিন আগে......

          Comment


          • #6
            সামনে এমন একটি কাহিনী আমিও লিখব।

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ

              Comment


              • #8
                ভাই এভাবে লিখুন-

                سبيلنا سبيلنا الجهاد الجهاد
                طريقنا طريقنا القتال القتال

                Comment

                Working...
                X