প্রশ্নঃ ভাই আতিয়া মহলের ব্যাপারে আপনার মত কি? এটা কি নাটক নাকি বাস্তব, আমরা তো কিছু বুঝতে পারছি না। নাকি এটা ভারতের সাথে আসন্ন সামরিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা ঢাকার একটা চেষ্টা? প্লিজ কিছু বলেন? [নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক]
উত্তরঃ সিলেটে আতিয়া মহলের “১১১ ঘন্টার” জঙ্গিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে মোটামুটি সবাই জানেন। তাই এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার দরকার মনে করছি না। এই পুরো ঘটনাটি বিভিন্ন জল্পনা কল্পনার জন্ম দিয়েছে। সাধারন মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের তত্ত্ব ঘুরপাক খাচ্ছে। কাজ করছে সন্দেহ, শঙ্কা, সংশয়।
.
মোটা দাগে আতিয়া মহলের ব্যাপারে জনমনে বিরাজমান ধারণাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় –
.
১) আতিয়া মহলের ঘটনা একটি একটি আইএসের জঙ্গি হামলা।
২) এটা বিরোধীদের দমনের জন্য সরকারের নাটক। জঙ্গি নামক জুজুর ভয় দেখিয়ে সরকার সব বিরোধীকে দমন করতে চায়।
৩) এটা ভারতের সাথে সামরিক চুক্তির ব্যাপার আড়াল করার জন্য সরকারের নাটক। জঙ্গি নামক জুজুর ভয় দেখিয়ে... (মূলত এটা ২ নং এর একটি ভেরিয়েশন)
এই তিনটি মতই আংশিক ঠিক, এবং আংশিক ভুল। ব্যাখ্যা করছি।
না আতিয়া মহলের ঘটনা “আইএস” – এর কোন জঙ্গি হামলা না। আতিয়া মহল ছিল বাংলাদেশে যারা আইএস এর কাজ করছে তাদের একটি গুরুত্বপূর্ন সেফ হাউফ এবং সম্ভবত তাদের উচ্চ পদস্থ কোন নেতা সেখানে অবস্থান করছিল।
র*্যাব-ডিবি এরা কোন ভাবে এই সেফ হাউসের খোজ পাবার পর একে ঘেরাও করে এবং অভিযানের চেষ্টা চালায়। ঘটনার শুরু এভাবে। সুতরাং এই ঘটনার শুরুটা আইএস –এর কোন অপারেশনের মাধ্যমে না। বরং আইএস বিরোধি অপারেশনের মাধ্যমে।
পরবর্তীতে দেখা গেল বাংলাদেশের “বীর” পুলিশ-আর্মি- সোয়াট (নাকি “সোয়াত”!) ইত্যাদি বাহিনী হাতেগোনা কয়েকজন জঙ্গিকে কাবু করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। শতশত লোক, লক্ষ লক্ষ টাকার অস্ত্র, যন্ত্রপাতি নিয়ে কয়েকজন জঙ্গির মোকাবেলা করার সাহস পেল না।
এটাই অবশ্য স্বাভাবিক। আমেরিকা, ভারত, হাসিনাকে নিজেদের রব বানিয়ে নেওয়া তাগুতের (মিথ্যা ইলাহ) অনুগত এসব মুরতাদ বাহিনীর সদস্যরা কাপুরুষই হয়ে থাকে। এদের বীরত্ব এরা দেখায় বন্দী মুসলিম ভাই ও বোনদের উপর। বাকি সময় এরা ধেড়ে ইঁদুরের মত বীর। আতিয়া মহল এই বাস্তবতার জ্বলন্ত প্রমান।
বাংলাদেশের “বীর” বাহিনীরা তাদের বীরত্বের ঠেলায় সরাসরি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে যেতে সাহস পাচ্ছিলো না। এটাও তাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। যেহেতু তারা অনেক বীর তাই তারা, ৪/৫ জন জঙ্গির বিরুদ্ধে অ্যাকশানে না গিয়ে সমস্ত এলাকা কর্ডন করে অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো।
মিডিয়া আনলো। বিবৃতি দিলো, ক্যামেরায় চেহারা দেখালো। খোঁজ নিলে হয়তো দেখা যাবে সানি সানোয়ারের মত কয়েকজন নতুন ফেসবুক স্ট্যাটাস কি দিবে এই নিয়ে চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেল। আর উৎসুক জনতার ভীরও বাড়তে থাকলো।
এই সুযোগটাকে কাজে লাগালো আইএস। তারা এই কর্ডন করা এলাকার মধ্যে বোমা বিস্ফোরন ঘটালো। যদিও বাংলাদেশের মিডিয়া এটাকে আত্মঘাতী হামলা বলেছে, কিন্তু আইএস এর পক্ষ থেকে “আমাক্ব” (আইএস এর একটি অফিশিয়াল নিউজ আউটলেট) যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেখানে এই হামলাকে আত্বঘাতি হামলা বলা হয় নি। আমাক্বের বিবৃতিতে শুধু “বিস্ফোরন” – এর উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আশকোনা ও বিমানবন্দরের হামলাগুলোকে আমাক্বের বিবৃতিতে “ইশতিশাদী বা শহীদি” হামলা বলা হয়েছিল।
এই হামলার ফলে পুলিশ-র*্যাব ইত্যাদি মুরতাদ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য মারা যায়। ছাত্রলীগের এক নেতাও মারা যায়। সাথে মারা যায় সাধারন মানুষ। যদিও মুরতাদদের মৃত্যু একটি আনন্দজনক ফলাফল কিন্তু এই জন্য সাধারন মানুষদের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
এবং এই কারনেই বাংলাদেশের মতো মুসলিম জনবহুল দেশে জনসাধারনের জমায়েতে এভাবে বোমা হামলা করাকে আল-ক্বায়েদা সমর্থন করে না, যদিও সেখানে সাধারন জনগণের মাঝে মুরতাদ বাহিনীর নেতা ও সদস্যরা থাকে।
তবে আইএস নিয়মিতই পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় এধরনের হামলা করে আসে। আর এটা তাদের বিকৃত কর্মপদ্ধতি ও চিন্তার ফসল।
অল্প কোথায় এই হল আতিয়া মহল। যদিও মুরতাদ বাহিনীগুলো যতোগুলো অভিযান গ্রেফতার, ইত্যাদির সংবাদ প্রকাশ করে তার একটা বড় অংশ আসলে সাজানো হয় তথাপি এই ক্ষেত্রে এটা সাজানো নাটক ছিল না বলেই মনে হয়। যার প্রমান মুরতাদ বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যু ও আহত হওয়া এবং আমাক্ব থেকে আসা বিবৃতি।
তবে একই সাথে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন ঠিক যেমনি ভাবে পূর্বপরিকল্পিত না হলেও উদ্ভূত প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগিয়ে আইএস বিস্ফোরনের মাধ্যমে ফায়দা নিয়েছে, তেমনি ভাবে ডিবি-র*্যাব-‘সোয়াত’-সরকারের মুরতাদরাও উদ্ভুত পরিস্থিতিকে তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। আর তার এটা করছে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে জঙ্গিবাদকে উপস্থাপন করার মাধ্যমে।
কারন যখন মানুষ মনে করবে দেশের জন্য জঙ্গিবাদই সবচেয়ে বড় সমস্যা তখন স্বাভাবিক ভাবে মানুষ এর সমাধান খুজবে। আর সমাধান হল রাষ্ট্রের শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিদের হত্যা করা। আর এই কাজ করার জন্য মানুষ সরকারের কাছেই যাবে।
আর এর মাধ্যমে সরকার ম্যান্ডেট পাবে ভারতের প্রক্সি শাসন চালিয়ে যাওয়ার জন্য। অর্থাৎ জঙ্গিবাদ ইস্যু থেকে সরকারের সাময়িক সুবিধা নেওয়ার সুযোগ আছে, এবং তারা সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং করবে।
তবে এর অর্থ এই না যে জঙ্গিরা সরকারের সৃষ্টি – বা সবই সরকারের নাটক। যারা এধরনের চিন্তা করেন তাদের মধ্যে একধরনের কল্পনাবিলাস কাজ করে যা দিয়ে তারা বাস্তবতাকে চেপে রাখতে চান। আর যদি বলা হয় জঙ্গিবাদ ইস্যু দিয়ে অন্য ইসুকে চাপা দেয়ার কথা, তাহলে এই কথাগুলো খুব ভালোভাবে অন্তঃস্থ করে নিন –
বাংলাদেশে বর্তমানে বিরোধী দল, ইসলামপন্থী দল, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ, সুশীল সমাজ, মিডিয়ার যে অবস্থা, এবং বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভারতীয় ও দেশীয় মালাউনদের যে সর্বময় কর্তৃত্ব তাতে ভারতের সাথে একটা কেন ৫০টা সামরিক চুক্তি করা হলেও বিরোধী দল, ইসলামপন্থী দল, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ, সুশীল সমাজ,কারোরই কোন কিছু করার নেই। এটাই বাস্তবতা।
যতোই বাগাড়ম্বর করা হোক না কেন, এই গোষ্ঠীগুলোর কেউই সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং সামরিক চুক্তি করার জন্য, মূর্তি বিরোধী আন্দোলন থামানোর জন্য, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের লূট গোপন করার জন্য সরকারের জঙ্গি নাটকের প্রয়োজন নেই। তাগুত এই সরকার এমনিতেই তা পারে।
সরকার এটা জানে। এবং এটাও জানে যদি কোন গোষ্ঠী আসলে তাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারে, সীমিত সামর্থ্য সত্ত্বেও - সেটা হল মুসলিমদের মধ্যে ঐ অংশটা যারা ইসলামের সাথে বিন্দুমাত্র আপোষে রাজি নেই। আর এদেরকেই এই সরকার, এবং সারা বিশ্বের মুশরিক-কুফফার জঙ্গি বলে।
সুতরাং জনসাধারনের প্রতি এই জঙ্গির নসীহত হল –
জঙ্গিরা আপনার জন্য হুমকি না। সাধারন মানুষকে জঙ্গিরা পরিকল্পনা করে মারে না। জঙ্গিরা সেটা চায় না। এমনকি আইএস এর মতো উন্মাদ জঙ্গিরাও মূলত সবসময় এটা চায় না। তবে তাদের মোটাবুদ্ধি এবং বিকৃত আদর্শের কারণে তারা সাধারন মানুষদের হত্যা করে। যদি জঙ্গিরা চাইতো তাহলে শত শত সাধারন মানুষকে মারতো পারতো।
যেমন পুলিশ বছরে শত শত মানুষকে মেরে ফেলে। অন্যদিকে হিসেব করে দেখুন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, র*্যাব, পুলিশ, সরকার-বিরোধীদলীয় নেতা ও সন্ত্রাসীদের হাতে বাংলাদেশে কতো সাধারন মানুষ এখনো পর্যন্ত মারা গেছে। যার বিবেচনা শক্তি আছে, বোধবুদ্ধি আছে, তার জন্য এটা যথেষ্ট হবার কথা।
তাই বুঝুন আপনি যদি জঙ্গিদের সমর্থন নাও করেন তবুও তারা আপনার শত্রু না। আপনার জন্য হুমকি না। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে সাধারন মুসলিমদের টার্গেট করে কোন হামলাই হয় নি। অথচ এমন হামলা করা কঠিন না। আর সঠিক আক্বিদা বিশ্বাস ও কর্মপদ্ধতির উপর থাকা জঙ্গিরা অর্থাৎ মুজাহিদিনরা কখনো এমন হামলা করবেও না বি’ইযনিল্লাহ।
সাধারন মুসলিমদের ক্ষতির কারন হবার চেয়ে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়াও উত্তম। তবে আইএস এর ব্যাপার ভিন্ন। তারা তাদের বিকৃতি ও উন্মাদনার কারণে অনেক সময় সাধারন মানুষের ক্ষতির কারন হয়। আর ক্ষমতাসীন হবার পর যারাই তাদের আনুগত্য মেনে নেয় না তাদের কাফির আখ্যা দিয়ে হত্যা করে।
তাই চোখ খুলুন। ক্রিকেট, হলুদ মিডিয়া, সুলতান সোলেমান, জি বাংলা, স্টা জলসা, এসবের নেশা থেকে বের হয়ে আসুন। আর আপনার ভবিষ্যৎ আর বর্তমানকে যে মালাউনরা লুটে নিচ্ছে তার ব্যাপারে সতর্ক হোন। মালাউন মোদির ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে মুশরিকরা আজ বেপরোয়া। আর ভারতের ঐতিহাসিক দালাল আওয়ামী লীগ ও হাসিনার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সর্বত্র আজ এদের নিয়ন্ত্রন।
হিন্দুত্ববাদের এই আগ্রাসন, মালাউনদের এই উত্থান হল সেই বাস্তবতা যা প্রতিনিয়ত আপনাকে ভুলিয়ে রাখা হচ্ছে। আর আপনি ভুলে থাকছেন। সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। চোখ থেকে মিডিয়া আর দলিয় চশমা খুলে, জঙ্গিবাদের ব্যাপারে তাগুতের প্রপাগান্ডায় না ভুলে আপনার প্রকৃত শত্রুকে চিনে নিন।
আতিয়া মহল নিয়ে আপনার চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু এই দেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা চলছে। সেটা নিয়ে চিন্তিত হোন।
জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ - "জঙ্গির সাথে কথোপকথন" থেকে গৃহীত!
উত্তরঃ সিলেটে আতিয়া মহলের “১১১ ঘন্টার” জঙ্গিবিরোধী অভিযান সম্পর্কে মোটামুটি সবাই জানেন। তাই এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার দরকার মনে করছি না। এই পুরো ঘটনাটি বিভিন্ন জল্পনা কল্পনার জন্ম দিয়েছে। সাধারন মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের তত্ত্ব ঘুরপাক খাচ্ছে। কাজ করছে সন্দেহ, শঙ্কা, সংশয়।
.
মোটা দাগে আতিয়া মহলের ব্যাপারে জনমনে বিরাজমান ধারণাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় –
.
১) আতিয়া মহলের ঘটনা একটি একটি আইএসের জঙ্গি হামলা।
২) এটা বিরোধীদের দমনের জন্য সরকারের নাটক। জঙ্গি নামক জুজুর ভয় দেখিয়ে সরকার সব বিরোধীকে দমন করতে চায়।
৩) এটা ভারতের সাথে সামরিক চুক্তির ব্যাপার আড়াল করার জন্য সরকারের নাটক। জঙ্গি নামক জুজুর ভয় দেখিয়ে... (মূলত এটা ২ নং এর একটি ভেরিয়েশন)
এই তিনটি মতই আংশিক ঠিক, এবং আংশিক ভুল। ব্যাখ্যা করছি।
না আতিয়া মহলের ঘটনা “আইএস” – এর কোন জঙ্গি হামলা না। আতিয়া মহল ছিল বাংলাদেশে যারা আইএস এর কাজ করছে তাদের একটি গুরুত্বপূর্ন সেফ হাউফ এবং সম্ভবত তাদের উচ্চ পদস্থ কোন নেতা সেখানে অবস্থান করছিল।
র*্যাব-ডিবি এরা কোন ভাবে এই সেফ হাউসের খোজ পাবার পর একে ঘেরাও করে এবং অভিযানের চেষ্টা চালায়। ঘটনার শুরু এভাবে। সুতরাং এই ঘটনার শুরুটা আইএস –এর কোন অপারেশনের মাধ্যমে না। বরং আইএস বিরোধি অপারেশনের মাধ্যমে।
পরবর্তীতে দেখা গেল বাংলাদেশের “বীর” পুলিশ-আর্মি- সোয়াট (নাকি “সোয়াত”!) ইত্যাদি বাহিনী হাতেগোনা কয়েকজন জঙ্গিকে কাবু করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। শতশত লোক, লক্ষ লক্ষ টাকার অস্ত্র, যন্ত্রপাতি নিয়ে কয়েকজন জঙ্গির মোকাবেলা করার সাহস পেল না।
এটাই অবশ্য স্বাভাবিক। আমেরিকা, ভারত, হাসিনাকে নিজেদের রব বানিয়ে নেওয়া তাগুতের (মিথ্যা ইলাহ) অনুগত এসব মুরতাদ বাহিনীর সদস্যরা কাপুরুষই হয়ে থাকে। এদের বীরত্ব এরা দেখায় বন্দী মুসলিম ভাই ও বোনদের উপর। বাকি সময় এরা ধেড়ে ইঁদুরের মত বীর। আতিয়া মহল এই বাস্তবতার জ্বলন্ত প্রমান।
বাংলাদেশের “বীর” বাহিনীরা তাদের বীরত্বের ঠেলায় সরাসরি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে যেতে সাহস পাচ্ছিলো না। এটাও তাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। যেহেতু তারা অনেক বীর তাই তারা, ৪/৫ জন জঙ্গির বিরুদ্ধে অ্যাকশানে না গিয়ে সমস্ত এলাকা কর্ডন করে অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো।
মিডিয়া আনলো। বিবৃতি দিলো, ক্যামেরায় চেহারা দেখালো। খোঁজ নিলে হয়তো দেখা যাবে সানি সানোয়ারের মত কয়েকজন নতুন ফেসবুক স্ট্যাটাস কি দিবে এই নিয়ে চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেল। আর উৎসুক জনতার ভীরও বাড়তে থাকলো।
এই সুযোগটাকে কাজে লাগালো আইএস। তারা এই কর্ডন করা এলাকার মধ্যে বোমা বিস্ফোরন ঘটালো। যদিও বাংলাদেশের মিডিয়া এটাকে আত্মঘাতী হামলা বলেছে, কিন্তু আইএস এর পক্ষ থেকে “আমাক্ব” (আইএস এর একটি অফিশিয়াল নিউজ আউটলেট) যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেখানে এই হামলাকে আত্বঘাতি হামলা বলা হয় নি। আমাক্বের বিবৃতিতে শুধু “বিস্ফোরন” – এর উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আশকোনা ও বিমানবন্দরের হামলাগুলোকে আমাক্বের বিবৃতিতে “ইশতিশাদী বা শহীদি” হামলা বলা হয়েছিল।
এই হামলার ফলে পুলিশ-র*্যাব ইত্যাদি মুরতাদ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য মারা যায়। ছাত্রলীগের এক নেতাও মারা যায়। সাথে মারা যায় সাধারন মানুষ। যদিও মুরতাদদের মৃত্যু একটি আনন্দজনক ফলাফল কিন্তু এই জন্য সাধারন মানুষদের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।
এবং এই কারনেই বাংলাদেশের মতো মুসলিম জনবহুল দেশে জনসাধারনের জমায়েতে এভাবে বোমা হামলা করাকে আল-ক্বায়েদা সমর্থন করে না, যদিও সেখানে সাধারন জনগণের মাঝে মুরতাদ বাহিনীর নেতা ও সদস্যরা থাকে।
তবে আইএস নিয়মিতই পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় এধরনের হামলা করে আসে। আর এটা তাদের বিকৃত কর্মপদ্ধতি ও চিন্তার ফসল।
অল্প কোথায় এই হল আতিয়া মহল। যদিও মুরতাদ বাহিনীগুলো যতোগুলো অভিযান গ্রেফতার, ইত্যাদির সংবাদ প্রকাশ করে তার একটা বড় অংশ আসলে সাজানো হয় তথাপি এই ক্ষেত্রে এটা সাজানো নাটক ছিল না বলেই মনে হয়। যার প্রমান মুরতাদ বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যু ও আহত হওয়া এবং আমাক্ব থেকে আসা বিবৃতি।
তবে একই সাথে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন ঠিক যেমনি ভাবে পূর্বপরিকল্পিত না হলেও উদ্ভূত প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগিয়ে আইএস বিস্ফোরনের মাধ্যমে ফায়দা নিয়েছে, তেমনি ভাবে ডিবি-র*্যাব-‘সোয়াত’-সরকারের মুরতাদরাও উদ্ভুত পরিস্থিতিকে তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। আর তার এটা করছে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে জঙ্গিবাদকে উপস্থাপন করার মাধ্যমে।
কারন যখন মানুষ মনে করবে দেশের জন্য জঙ্গিবাদই সবচেয়ে বড় সমস্যা তখন স্বাভাবিক ভাবে মানুষ এর সমাধান খুজবে। আর সমাধান হল রাষ্ট্রের শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিদের হত্যা করা। আর এই কাজ করার জন্য মানুষ সরকারের কাছেই যাবে।
আর এর মাধ্যমে সরকার ম্যান্ডেট পাবে ভারতের প্রক্সি শাসন চালিয়ে যাওয়ার জন্য। অর্থাৎ জঙ্গিবাদ ইস্যু থেকে সরকারের সাময়িক সুবিধা নেওয়ার সুযোগ আছে, এবং তারা সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং করবে।
তবে এর অর্থ এই না যে জঙ্গিরা সরকারের সৃষ্টি – বা সবই সরকারের নাটক। যারা এধরনের চিন্তা করেন তাদের মধ্যে একধরনের কল্পনাবিলাস কাজ করে যা দিয়ে তারা বাস্তবতাকে চেপে রাখতে চান। আর যদি বলা হয় জঙ্গিবাদ ইস্যু দিয়ে অন্য ইসুকে চাপা দেয়ার কথা, তাহলে এই কথাগুলো খুব ভালোভাবে অন্তঃস্থ করে নিন –
বাংলাদেশে বর্তমানে বিরোধী দল, ইসলামপন্থী দল, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ, সুশীল সমাজ, মিডিয়ার যে অবস্থা, এবং বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভারতীয় ও দেশীয় মালাউনদের যে সর্বময় কর্তৃত্ব তাতে ভারতের সাথে একটা কেন ৫০টা সামরিক চুক্তি করা হলেও বিরোধী দল, ইসলামপন্থী দল, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ, সুশীল সমাজ,কারোরই কোন কিছু করার নেই। এটাই বাস্তবতা।
যতোই বাগাড়ম্বর করা হোক না কেন, এই গোষ্ঠীগুলোর কেউই সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং সামরিক চুক্তি করার জন্য, মূর্তি বিরোধী আন্দোলন থামানোর জন্য, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের লূট গোপন করার জন্য সরকারের জঙ্গি নাটকের প্রয়োজন নেই। তাগুত এই সরকার এমনিতেই তা পারে।
সরকার এটা জানে। এবং এটাও জানে যদি কোন গোষ্ঠী আসলে তাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারে, সীমিত সামর্থ্য সত্ত্বেও - সেটা হল মুসলিমদের মধ্যে ঐ অংশটা যারা ইসলামের সাথে বিন্দুমাত্র আপোষে রাজি নেই। আর এদেরকেই এই সরকার, এবং সারা বিশ্বের মুশরিক-কুফফার জঙ্গি বলে।
সুতরাং জনসাধারনের প্রতি এই জঙ্গির নসীহত হল –
জঙ্গিরা আপনার জন্য হুমকি না। সাধারন মানুষকে জঙ্গিরা পরিকল্পনা করে মারে না। জঙ্গিরা সেটা চায় না। এমনকি আইএস এর মতো উন্মাদ জঙ্গিরাও মূলত সবসময় এটা চায় না। তবে তাদের মোটাবুদ্ধি এবং বিকৃত আদর্শের কারণে তারা সাধারন মানুষদের হত্যা করে। যদি জঙ্গিরা চাইতো তাহলে শত শত সাধারন মানুষকে মারতো পারতো।
যেমন পুলিশ বছরে শত শত মানুষকে মেরে ফেলে। অন্যদিকে হিসেব করে দেখুন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, র*্যাব, পুলিশ, সরকার-বিরোধীদলীয় নেতা ও সন্ত্রাসীদের হাতে বাংলাদেশে কতো সাধারন মানুষ এখনো পর্যন্ত মারা গেছে। যার বিবেচনা শক্তি আছে, বোধবুদ্ধি আছে, তার জন্য এটা যথেষ্ট হবার কথা।
তাই বুঝুন আপনি যদি জঙ্গিদের সমর্থন নাও করেন তবুও তারা আপনার শত্রু না। আপনার জন্য হুমকি না। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে সাধারন মুসলিমদের টার্গেট করে কোন হামলাই হয় নি। অথচ এমন হামলা করা কঠিন না। আর সঠিক আক্বিদা বিশ্বাস ও কর্মপদ্ধতির উপর থাকা জঙ্গিরা অর্থাৎ মুজাহিদিনরা কখনো এমন হামলা করবেও না বি’ইযনিল্লাহ।
সাধারন মুসলিমদের ক্ষতির কারন হবার চেয়ে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়াও উত্তম। তবে আইএস এর ব্যাপার ভিন্ন। তারা তাদের বিকৃতি ও উন্মাদনার কারণে অনেক সময় সাধারন মানুষের ক্ষতির কারন হয়। আর ক্ষমতাসীন হবার পর যারাই তাদের আনুগত্য মেনে নেয় না তাদের কাফির আখ্যা দিয়ে হত্যা করে।
তাই চোখ খুলুন। ক্রিকেট, হলুদ মিডিয়া, সুলতান সোলেমান, জি বাংলা, স্টা জলসা, এসবের নেশা থেকে বের হয়ে আসুন। আর আপনার ভবিষ্যৎ আর বর্তমানকে যে মালাউনরা লুটে নিচ্ছে তার ব্যাপারে সতর্ক হোন। মালাউন মোদির ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে মুশরিকরা আজ বেপরোয়া। আর ভারতের ঐতিহাসিক দালাল আওয়ামী লীগ ও হাসিনার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সর্বত্র আজ এদের নিয়ন্ত্রন।
হিন্দুত্ববাদের এই আগ্রাসন, মালাউনদের এই উত্থান হল সেই বাস্তবতা যা প্রতিনিয়ত আপনাকে ভুলিয়ে রাখা হচ্ছে। আর আপনি ভুলে থাকছেন। সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। চোখ থেকে মিডিয়া আর দলিয় চশমা খুলে, জঙ্গিবাদের ব্যাপারে তাগুতের প্রপাগান্ডায় না ভুলে আপনার প্রকৃত শত্রুকে চিনে নিন।
আতিয়া মহল নিয়ে আপনার চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু এই দেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা চলছে। সেটা নিয়ে চিন্তিত হোন।
জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ - "জঙ্গির সাথে কথোপকথন" থেকে গৃহীত!
Comment