Announcement

Collapse
No announcement yet.

এক জঙ্গির প্রতি মায়ের ঈমানজাগানিয়া চিঠি!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • এক জঙ্গির প্রতি মায়ের ঈমানজাগানিয়া চিঠি!!

    তাগুতরা বানিয়ে বানিয়ে মুসলিম উম্মাহর মায়েদের নামে কলঙ্কজনক চিঠি প্রচার করছে। বাস্তবে মুসলিম উম্মাহর মায়েরা কেমন দেখুন।


    শহীদ মুজাহিদ আবুল আইনা আল-মুহাজির রহ. এর প্রতি তাঁর মা উম্মে আম্মারা’র চিঠি।
    হে আমার পুত্র!
    তুমি এমন নও যে, তোমার জন্য ব্যথা পাওয়ার কেউ নেই। তবে তোমার প্রতি আক্ষেপে কিছুতেই আমার চক্ষু অশ্রু বিসর্জন দেবে না। বরং তুমি যে পথে আছ আমি তার কারণে আনন্দিত।

    হে আমার পুত্র!
    জেনে রাখ! চলেছ তুমি আনন্দের সাথে। হয়েছ সৌভাগ্যশীল।

    হে আমার পুত্র!
    ঘটনার প্রবাহ যতই চলছিল। যতই দেখছিলাম এমনসব কিছু যা অন্তরে রক্তক্ষরণ ঘটায়; চক্ষুকে করে অশ্রুসিক্ত। ততই দেখতাম তোমার চোখে আক্ষেপ। তোমার অন্তরে দেখতাম ব্যথা। তোমার মাঝে অনুভব করতাম ক্রোধ আর রোষ। তোমার অনুভুতি-অনুভব; তোমার জ্বলন আমি অনুভব করতাম। আমি জানতাম, অচিরেই আসবে এমন একদিন যখন এ সবকিছু বাস্তবায়িত হবে। আমি জানতাম সেই দিন অতিশীঘ্রই আসবে। অবশ্যই আসবে। তবে আমি তোমার নিকট গোপন করবো না যে, আমি নির্বাক হয়ে গেছি। হতভম্ব হয়ে পড়েছি। কেননা, তা যে অতি তাড়াতাড়িই চলে এসেছে। যদি আল্লাহ তাআলার উপর মহা ঈমান আমার না থাকত, তবে দৃঢ়চিত্ত থাকতে পারতাম না। অটল-অবিচল থাকতে পারতাম না। করতে পারতাম না সওয়াবের আশা। সন্তুষ্ট হতে পারতাম না আল্লাহ তাআলার ফয়সালার প্রতি । হতে পারতাম না তাঁর পরীক্ষার উপর প্রশংসামুখর আর শোকর গোজার ।

    হে আমার পুত্র!
    ব্যক্ত করার ভাষা আসছে না, তবুও আমি ব্যক্ত করছি। লেখার মত শব্দ খোঁজে পাচ্ছি না, তবুও আমি লিখছি। অনুভব অনুভুতি আমার আসছে না, তবুও অনুভব করছি। অনুভব করছি শূন্যতা। হৃদয়ের শূন্যতা। অনুভব করছি বিচ্ছেদ কি জিনিস। হায়রে বিচ্ছেদ! মনে হচ্ছে যেন আমার নাড়িভুঁড়ি ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। যেন আমার দিলটা টেনে বের করে ফেলা হচ্ছে। যেন আমার প্রাণ কেড়ে নেয়া হচ্ছে। আমার দেহটা কি যেন বলতে চাচ্ছে। কিন্তু না! সে স্থবির হয়ে পড়েছে।

    হে আমার পুত্র!
    আমার উজর গ্রহণ কর হে বৎস। তুমি বলেছিলে তোমার ঝরানো রক্তে যেন আমি একটি নাশীদ লিখি। কিন্তু আমি তোমার অগ্রে বেড়ে গেছি। আমার আপন রক্তে লিখেছি কাহিনী। লিখেছি তোমার জন্য । তোমার ব্যথিত মা জননীর রক্তে।

    হে আমার পুত্র!
    তুমি ছিলে আমার নেক সন্তান। বাধ্যগত। আমার আদরের ছেলে। তোমাকে মনে পড়ে। যখনই মনে পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। শীরা উপশীরাগুলো কম্পিত হয়ে উঠে। তোমার চেহারাটা ভেসে উঠে। আহা কি যে চেহারা!! মুচকি হাসি। উৎফুল্ল। আনন্দ মাখা। আশাদ্যীপ্ত। মহব্বত মাখা। অন্যের প্রতি ভালবাসা সিক্ত। আবেদ। যাহেদ। মসজিদ প্রেমী। রোযাদার। ইবাদত গোজার। খায়র পছন্দী।

    হে আমার পুত্র!
    আল্লাহ জানেন, আমার কাছে তোমার মত প্রিয় আর কেউ নেই। তুমিই আমার একমাত্র প্রিয় পুত্র। নেক সন্তান। মহব্বতের পাত্র। আল্লাহ জানেন, তুমি আমার কাছে আমার রুহের ন্যায়।

    হে আমার পুত্র!
    আমি তোমার কথা শুনতাম। তোমাকে সমর্থন করতাম। তোমাকে উৎসাহ দিতাম। আকাঙ্খা করতাম যেন তুমি যেতে পার। তোমার জন্য দিগন্ত খুলে দিতাম। তোমার রাস্তা নিষ্কণ্টক করে দিতাম। তোমার যাবতীয় বিষয় সহজ করে দিতাম। আকাঙ্খায় থাকতাম যেন তোমার কাঙ্খিত উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়। আহা! কতই না মর্যাদাপূর্ণ উদ্দেশ্য। কিন্তু আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমি একজন মা। আর তুমি আমার কলিজার টুকরা। আমারই অংশ।

    তোমার বিচ্ছেদে আমার যে আক্ষেপ লাগবে, যে কষ্ট ও ব্যথা অনুভব হবে তা ভুলে থাকার ভান ধরেছি। একজন মা হিসেবে যে অনুভব অনুভুতি আমার ছিল তা না জানার ভান ধরেছি। শুধু আমার আকল দিয়ে তোমাকে পাঠিয়েছি। ঈমানের তাড়নায় তোমাকে উৎসাহিত করেছি। দৃঢ়চিত্ততার সাথে নাছোঁড়বান্দার মত তোমার উপর কঠোরতা করেছি। আর হৃদয় দিয়ে তোমাকে ভুলেছি। বরং আমি ভুলে গেছি আমার হৃদয়কেই । যে হৃদয় অশ্রুসিক্ত। ব্যথিত। জ্বলে-পোড়ে ছারখার। তোমার বিচ্ছেদে রক্তক্ষরিত। হ্যাঁ, আমার পুত্র। এটাই বাস্তব। আকল দিয়ে তোমায় সম্বোধন করেছি। আর হৃদয় দিয়ে তোমাকে ভুলেছি।

    ওহে বাহাদুর!
    তুমি আপন অবস্থায় চলে গেছো একা। আল্লাহ তোমার সঙ্গী। আর তিনি কতই না উত্তম সঙ্গী! তাওহীদ তোমার কালিমা । ঈমান তোমার শিআ’র । হক তোমার পতাকা । জান্নাত তোমার মাকসাদ। … শুভ হোক হে বাহাদুর তোমার বীরত্ব। শুভ হোক তোমার অগ্রগামিতা। শুভ হোক তোমার ঈমান। শুভ হোক আল্লাহর উপর তোমার ভরসা। …

    হে আমার পুত্র!
    চল তুমি জিহাদের পথে খুশির সাথে। চল তুমি জিহাদের পথে প্রতিদানের আশায়। তোমার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত কর। পূর্ণ কর তোমার মাকসাদ । চল তুমি। বি-ইযনিল্লাহ তুমি হকের উপর আছ। চল তুমি। কিছুতেই আল্লাহ তাআলা তোমাকে ব্যর্থ করবেন না।

    হে আমার পুত্র! আমার কলিজার টুকরা! আমার চোখের মণি! … তোমার প্রতি আক্ষেপে কিছুতেই আমি অশ্রু বিসর্জন দেব না। বরং তুমি যে পথে আছ তার কারণে আমি আনন্দিত। এগিয়ে চল হে বৎস। তোমার মত ছেলের কারণে কাঁদা উচিৎ নয় হে বাহাদুর! তুমি ঐসব সুপুরুষদের অন্তর্ভুক্ত যারা তাদের দায়িত্ব পূর্ণ আদায় করেছে। যারা আল্লাহ ও রাসূলের সাথে কৃত অঙ্গীকারে সত্যবাদিতার পরিচয় দিয়েছে। এগিয়ে চল হে বৎস। আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হন। তোমাকেও সন্তুষ্ট করেন।

    এগিয়ে চল হে বৎস জিহাদের পথে নিরাপদে। প্রার্থনা করি ঐ সত্বার কাছে যার কুদরত অসীম। যার শান সুউচ্চ। যার ইহসান অপরিসীম। যার রহমত সর্বব্যাপী। এই সত্বার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন তোমার উপর তার অফুরন্ত রহমত বর্ষণ করেন। তোমার আকাঙ্খা থেকে তোমাকে যেন মাহরুম না করেন। তোমাকে যেন জন্নাতের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেন। তোমার জন্য যেন ফেরেশতা নিযুক্ত করেন। ফিরদাউসে আ’লাতে যেন তোমার সাথে আমাকে একত্রিত করেন।

    হে বৎস!
    আমি তোমাকে বিদায় দেব না কিছুতেই। বরং আমি তোমাকে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করব। এই আশা নিয়ে যেন আখিরাতে ফিরদাউসে আ’লাতে তোমার সাথে সাক্ষাৎ হয়। খুশির সাথে। আনন্দের সাথে। আল্লাহ তাআলা যে নিয়ামত ও রিযিক দেবেন তা পেয়ে।

    মুহাম্মাদ! আমি কিছুতেই বলবো না ‘বিদায়’। বরং আমি বলবো ‘সাক্ষাতের অপেক্ষায় থাকলাম।’


    ইতি
    তোমার মা।

    ***





  • #2
    আমাদের শহীদ ভাই মুজাহিদ তাওয়াকের মায়ের বিষয়টাই দেখুন না ,
    আমি বারবার পীড়াপীড়ি করতে থাকলাম...। আব্বা আমাকে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে থামাতে চেষ্টা করলেন...। তিনি আমাকে একটি উজ্জল ভবিষ্যতের কথা বলছিলেন, যেভাবে বাবারা ছেলেদের বলে...। কিন্তু কোন ভাবেই তিনি আমাকে টলাতে পারলেন না...। অবশেষে আমাকে বললেন আগে আম্মাকে রাজি করাতে।

    আম্মার ইন্দ্রিয়গুলো যেন সব সময় আমার সাথেই থাকে...। আমি আম্মার কাছে গেলাম। হাত ধরে হাতে একটা চুমু খেলাম। আমি কোন কথা বলার আগেই তিনি বলে দিলেন আমার আসার কারণ। তার হৃদয় যেন আমার হৃদয়ের সাথেই স্পন্দিত হয়।

    আমি তাকে একজন সত্যিকার ইমানদার নারী মনে করি...। আমার ইচ্ছার বিরোধিতা করেন নি। বরং আমার কাছে তার চাওয়া এটাই ছিল। তার হৃদয়টা কেবল তার ছিল না বরং পুরো উম্মাহর ছিল। তাই তিনি আবেগ ও অনুভূতিকে পদদলিত করে রবের নির্দেশকে সামনে রেখেছিলেন।

    আম্মার সাথে অনেক কথা বললাম...। এটাই ছিল বিদায়ী আলাপ...। আমি আবেদন করলাম আম্মা যেন স্পষ্ট ভাষায় সম্মতি দেন। আম্মা মাথা নিচু করে ফেললেন। বললেন, 'আমার একথা মুখে বলার শক্তি নেই, বাবা!' আমি তার মাথায় চুমু খেয়ে আব্বার কাছে ফিরে এলাম।

    আব্বাকে জানালাম, আম্মা রাজি আছেন। আব্বা খুব অবাক হলেন। দীর্ঘ সময় চুপ থাকলেন। একটু পরে আবার অসম্মতি প্রকাশ করলেন। তিনি বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার কী হবে? ভবিষ্যত কী হবে? বিয়ে শাদির কী হবে?...'

    আম্মা আমার সাথে ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছিলেন। আর আমি দীর্ঘ সময় ধরে আব্বাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছিলাম...। প্লেনের টিকেট কাটা হয়ে গেছে। ফ্লাইটের আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি।

    সেদিন সকালে আব্বাকে রাজি করাবার শেষ চেষ্টা করছিলাম। আমি বারবার অনুরোধ করছিলাম। খুব পীড়াপীড়ি করছিলাম। কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমার মন তার ভালোবাসায় কাঁদছিল। অবশেষে আল্লাহ আব্বার মনকে ঘুরিয়ে দিলেন। তিনি দীর্ঘ এক নিরবতা দিয়ে কথা শেষ করলেন।

    যখন আমি প্রায় হতাশ হয়ে পড়েছি সেই মু্হূর্তে আব্বার মৌন সম্মতি পেয়ে গেলাম। আব্বার মাথায় চুমু খেয়ে ব্যাগটা গাড়িতে নিয়ে রাখলাম...। মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। এক ফোটা অশ্রুও ঝরে নি তখন তার চোখ থেকে।

    Comment


    • #3
      হেফাজতে ইসলামের ৫ই মের সময়ের অনেক মায়ের ঘটনা এমন যে , তিনি তার সন্তানকে পালিয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করার কারণে তিরস্কার করে বলেছিলেন , তুই পালিয়ে এলি কেন ? সেখানেই শহিদ হয়ে জেতি ?

      Comment

      Working...
      X