পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
আন-নাফির বুলেটিন
ইস্যু ৯
জুমাদাল উলা ১৪৩৮ হিজরী
মুসলিম উম্মাহর প্রতি অসিয়ত
শায়েখ উমর আব্দুর রহমান[১] (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
ওহে পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছড়িয়ে থাকা মুসলমানগণ...
আমেরিকান সরকার আমার উপস্থিতি এবং কারাদণ্ডকে একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে ধরে নিচ্ছে এবং এই সুযোগ নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে মুসলিমদের গর্ব-গরিমাকে ধ্বংস করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
অতএব, ওরা আমাকে অত্যাচার করছে, শুধুমাত্র মানসিকভাবে তাই নয় বরং নৈতিকভাবেও। তাঁরা আমাকে কোন প্রকার অনুবাদক, পরে শুনানোর মতো কেউ, রেডিও, রেকর্ডার এই সব কিছু থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে যার কারণে আমি অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃবিশ্বের কোন খবর জানতে পারছি না।
ওরা আমাকে অত্যাচার করেছে নির্জন নিরব কয়েদখানায়, আরবি জানা এমন কেউ নেই এখানে, যে আমার সাথে কথা বলতে পারে, এভাবে আমার পুরো দিন... মাস... বছর... অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু আমি কারও সাথে কথা বলার সুযোগ পাইনি। যদি আমি কুরআন তিলাওয়াত করতে না পারতাম, তাহলে নানাবিধ মানসিক ও আত্মিক রোগে আক্রান্ত হয়ে যেতাম।
আরেক ধরণের নির্মম অত্যাচার ওরা আমাকে করছে, সেটি হল আমার সম্মুখে সকাল-রাত্র সব সময় একটি ক্যামেরা সচল থাকে, যখন আমি বাথরুমে গোসল এবং প্রয়োজনের জন্যে নগ্ন অবস্থায় থাকি তখনও এই ক্যামেরা সচল থাকে। তারপরও তাঁরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারে না। অফিসাররা প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
তারা তাদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমার দৃষ্টি শক্তি নষ্ট করার জন্য জঘন্য ও ঘৃণিত পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। ওরা আমাকে নগ্ন করে তল্লাশি নেয়, সুতরাং যতক্ষণ এই তল্লাশি চলে ততক্ষন আমি নগ্ন থাকি যেমন ছিলাম আমার মা আমাকে যখন প্রসব করেছিলেন। ওরা আমার সামনে এবং পিছনের ব্যক্তিগত অংশগুলোতেও তল্লাশি করে... ওরা কিসের প্রত্যাশা করে?? মাদকের নাকি বোমার? নাকি এই ধরণের কিছুর? প্রতিবারই ওরা এসে এভাবে তল্লাশি করে, এটা
আমাকে ভীষণ অপমানিত করে এবং মনে হয় পৃথিবীটা যদি বিভক্ত হয়ে যেত আর আমি তার ভিতরে চলে যেতে পারতাম তাহলে তাঁরা আমার সাথে এমন করতে পারতো না।
তবে আমি পূর্বেই বলেছি ওরা এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে যাতে দুনিয়ার চোখে ওরা মুসলিম জাতিকে কলঙ্কিত করে ভঙ্গুর করে দিতে পারে।
ওরা আমাকে জুমআ’ এবং জামাতের সাথে সালাত আদায়সহ ধর্মীয় উৎসবগুলো পালন এবং অন্য মুসলিমদের সাথে সাক্ষাত করতে দেয় না। এই ধরণের নানা বাঁধা আমাকে দেয়া হচ্ছে শুধু মাত্র মিথ্যা বানোয়াট বিচার আর অজুহাতের ভিত্তিতে।
আমি এই পরিস্থিতির গভীরতাও বেশ অনুভব করতে পারছি, ওরা আমাকে সন্দেহাতীত ভাবে হত্যা করবে... ওরা নিশ্চই আমাকে হত্যা করে ক্ষান্ত হবে। বিশেষ করে আমি যখন দুনিয়া থেকে এখন সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে আছি। কেউই সঠিকভাবে বলতে পারবে না ওরা আমার খাবার এবং পানীয়তে কি মিশ্রিত করছে! তাঁরা সম্ভবত আমাকে ধীর প্রক্রিয়ায় হত্যা করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেখানে তাঁরা খাদ্যে এবং ইনজেকশনে বিষ দিচ্ছে এবং আমাকে নষ্ট ও ক্ষতিকারক ঔষধ দিচ্ছে অথবা প্রাণঘাতী ঔষধ অথবা পাগল বানানোর ইনজেকশন দিচ্ছে।
বিশেষ আরেকটি বিষয় যে, মেঝে থেকে একটি অদ্ভুত এবং বাজে গন্ধ আমার নাকে আসে। পাশাপাশি একটি শব্দ অব্যাহত ভাবে হতে থাকে। শব্দটা অনেকটা “ভুশ” এর মত যেমন পুরনো এয়ার কন্ডিশনারে হয়ে থাকে। এর সাথে গ্রেনেডের আওয়াজের ন্যায় টোকা, গোলমাল এবং হাতুড়ি পিটানোর শব্দ প্রতিটি ঘণ্টা, দিন ও রাতে হতেই থাকে।
ওরা আমাকে মিথ্যা এবং বানোয়াট অজুহাত লাগিয়েছে। সুতরাং ওরা যা বলে তাতে তোমরা কিছুই বিশ্বাস করো না! ওরা মিথ্যায় খুব পারদর্শী এবং এই চেহারা এবং আচরণ ওরা জন্মগতভাবে লালন করে। এই সব কিছুই ওদের থেকে আশা করা যায়।
আমেরিকা চায় ওই সকল উলামাদেরকে হত্যা করতে, যারা সত্যের বানী সব জায়গায় পৌঁছে দেয়। আর এই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে ওদেরই একনিষ্ঠ সমর্থক সৌদি আরব। তারা শাইখ সাফার আল হাওয়ালি[২], শাইখ সালমান আল আওদাহ[৩] সহ ওই সকল আলেমকে কারারুদ্ধ করলো যারা সত্যের বানী পৌঁছে দিতেন সর্বত্র, মিশরেও সৃষ্টি করা হল একই অবস্থা।
পবিত্র কুরআনে এই সকল ইহুদি এবং খৃস্টান সম্পর্কে বেশ কিছু আয়াত নাজিল হয়েছে যা এখন আমরা সম্পূর্ণ ভুলে গেছি অথবা আমরা ভুলে যাওয়ার ভান ধরেছি...
قال الله تعالى: {ولا يزالون يقاتلونكم حتى يردوكم عن دينكم إن استطاعوا}
বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়। (সুরা বাকারা ২:২১৭)
{ولن ترضى عنك اليهود ولا النصارى حتى تتبع ملتهم}
আপনি ইহুদি নাসারাদের কখনোই সন্তুষ্ট করতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনি তাদের ধর্ম অবলম্বী হচ্ছেন। (সুরা বাকারাঃ- ১২০)
{كيف وإن يظهروا عليكم لا رقبوا فيكم إلا ولا ذمة يرضونكم بأفواههم وتأبى قلوبهم وأكثرهم فاسقون}
কিরূপে? তারা তোমাদের উপর জয়ী হলে তোমাদের আত্নীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না। তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট করে, কিন্তু তাদের অন্তরসমূহ তা অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী। (সুরা তাওবা ৯:৮)
{لا يرقبون في مؤمن إلا ولا ذمة وأولائك هم المعتدون}
তারা মর্যাদা দেয় না কোন মুসলমানের ক্ষেত্রে আত্নীয়তার, আর না অঙ্গীকারের। আর তারাই সীমালংঘনকারী। (সুরা তাওবা ৯:১০)
{إن يثقفوكم يكونوا لكم أعداءً ويبسطوا إليكم أيديهم وألسنتهم بالسوء وودوا لو تكفرون}
তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও। (সুরা মুমতাহিনা ৬০:২)
এরা তারাই যারা বিশ্বের যেখানেই ইসলামী জাগরণ সৃষ্টি হয় সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ওরা জিনা-ব্যভিচার ও সুদ সহ পৃথিবীর মাঝে যত দুর্নীতি আছে তা ছড়াতে সব সময় তৎপর।
ও আমার ভাইরা!
ওরা যদি আমাক হত্যা করে ফেলে, এবং অবধারিতভাবে ওরা তাই করবে, তাহলে আপনারা আমার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করবেন এবং আমার লাশ আমার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন। আপনারা আমার রক্তকে ভুলে যাবেন না এবং এটি বৃথা যেতে দিবেন না! এর পরিবর্তে নিয়ম হিসেবে তোমরা ভয়াবহ শক্তিশালী প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন! আপনাদের মাঝে থেকে আরেকজনকে দলভুক্ত করে নিবেন, যিনি কিনা সত্য বলতে পারেন এবং নিজের জীবন আল্লাহ্*র রাস্তায় দিয়ে দিতে পারেন।
এই কিছু কথা ছিল আমার অন্তরে যা আপনাদের শুনানোর খুব ইচ্ছা ছিল।
আল্লাহ্* আপনাদের উপর রহম করুন এবং কাজে বরকত দান করুন।
আল্লাহ্* আপনাদের নিরাপদে রাখুন এবং যত্নে রাখুন এবং আপনাদের শক্তি দান করুন।
আপনাদের উপর আল্লাহ তাআলার রহমত, বরকত ও পরিপূর্ণ শান্তি বর্ষিত হোক।
-আপনাদের ভাই, উমর আব্দুর রহমান।
আন-নাফির বুলেটিন
ইস্যু ৯
জুমাদাল উলা ১৪৩৮ হিজরী
মুসলিম উম্মাহর প্রতি অসিয়ত
শায়েখ উমর আব্দুর রহমান[১] (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
ওহে পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছড়িয়ে থাকা মুসলমানগণ...
আমেরিকান সরকার আমার উপস্থিতি এবং কারাদণ্ডকে একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে ধরে নিচ্ছে এবং এই সুযোগ নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে মুসলিমদের গর্ব-গরিমাকে ধ্বংস করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
অতএব, ওরা আমাকে অত্যাচার করছে, শুধুমাত্র মানসিকভাবে তাই নয় বরং নৈতিকভাবেও। তাঁরা আমাকে কোন প্রকার অনুবাদক, পরে শুনানোর মতো কেউ, রেডিও, রেকর্ডার এই সব কিছু থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে যার কারণে আমি অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃবিশ্বের কোন খবর জানতে পারছি না।
ওরা আমাকে অত্যাচার করেছে নির্জন নিরব কয়েদখানায়, আরবি জানা এমন কেউ নেই এখানে, যে আমার সাথে কথা বলতে পারে, এভাবে আমার পুরো দিন... মাস... বছর... অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু আমি কারও সাথে কথা বলার সুযোগ পাইনি। যদি আমি কুরআন তিলাওয়াত করতে না পারতাম, তাহলে নানাবিধ মানসিক ও আত্মিক রোগে আক্রান্ত হয়ে যেতাম।
আরেক ধরণের নির্মম অত্যাচার ওরা আমাকে করছে, সেটি হল আমার সম্মুখে সকাল-রাত্র সব সময় একটি ক্যামেরা সচল থাকে, যখন আমি বাথরুমে গোসল এবং প্রয়োজনের জন্যে নগ্ন অবস্থায় থাকি তখনও এই ক্যামেরা সচল থাকে। তারপরও তাঁরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারে না। অফিসাররা প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
তারা তাদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমার দৃষ্টি শক্তি নষ্ট করার জন্য জঘন্য ও ঘৃণিত পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। ওরা আমাকে নগ্ন করে তল্লাশি নেয়, সুতরাং যতক্ষণ এই তল্লাশি চলে ততক্ষন আমি নগ্ন থাকি যেমন ছিলাম আমার মা আমাকে যখন প্রসব করেছিলেন। ওরা আমার সামনে এবং পিছনের ব্যক্তিগত অংশগুলোতেও তল্লাশি করে... ওরা কিসের প্রত্যাশা করে?? মাদকের নাকি বোমার? নাকি এই ধরণের কিছুর? প্রতিবারই ওরা এসে এভাবে তল্লাশি করে, এটা
আমাকে ভীষণ অপমানিত করে এবং মনে হয় পৃথিবীটা যদি বিভক্ত হয়ে যেত আর আমি তার ভিতরে চলে যেতে পারতাম তাহলে তাঁরা আমার সাথে এমন করতে পারতো না।
তবে আমি পূর্বেই বলেছি ওরা এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে যাতে দুনিয়ার চোখে ওরা মুসলিম জাতিকে কলঙ্কিত করে ভঙ্গুর করে দিতে পারে।
ওরা আমাকে জুমআ’ এবং জামাতের সাথে সালাত আদায়সহ ধর্মীয় উৎসবগুলো পালন এবং অন্য মুসলিমদের সাথে সাক্ষাত করতে দেয় না। এই ধরণের নানা বাঁধা আমাকে দেয়া হচ্ছে শুধু মাত্র মিথ্যা বানোয়াট বিচার আর অজুহাতের ভিত্তিতে।
আমি এই পরিস্থিতির গভীরতাও বেশ অনুভব করতে পারছি, ওরা আমাকে সন্দেহাতীত ভাবে হত্যা করবে... ওরা নিশ্চই আমাকে হত্যা করে ক্ষান্ত হবে। বিশেষ করে আমি যখন দুনিয়া থেকে এখন সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে আছি। কেউই সঠিকভাবে বলতে পারবে না ওরা আমার খাবার এবং পানীয়তে কি মিশ্রিত করছে! তাঁরা সম্ভবত আমাকে ধীর প্রক্রিয়ায় হত্যা করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেখানে তাঁরা খাদ্যে এবং ইনজেকশনে বিষ দিচ্ছে এবং আমাকে নষ্ট ও ক্ষতিকারক ঔষধ দিচ্ছে অথবা প্রাণঘাতী ঔষধ অথবা পাগল বানানোর ইনজেকশন দিচ্ছে।
বিশেষ আরেকটি বিষয় যে, মেঝে থেকে একটি অদ্ভুত এবং বাজে গন্ধ আমার নাকে আসে। পাশাপাশি একটি শব্দ অব্যাহত ভাবে হতে থাকে। শব্দটা অনেকটা “ভুশ” এর মত যেমন পুরনো এয়ার কন্ডিশনারে হয়ে থাকে। এর সাথে গ্রেনেডের আওয়াজের ন্যায় টোকা, গোলমাল এবং হাতুড়ি পিটানোর শব্দ প্রতিটি ঘণ্টা, দিন ও রাতে হতেই থাকে।
ওরা আমাকে মিথ্যা এবং বানোয়াট অজুহাত লাগিয়েছে। সুতরাং ওরা যা বলে তাতে তোমরা কিছুই বিশ্বাস করো না! ওরা মিথ্যায় খুব পারদর্শী এবং এই চেহারা এবং আচরণ ওরা জন্মগতভাবে লালন করে। এই সব কিছুই ওদের থেকে আশা করা যায়।
আমেরিকা চায় ওই সকল উলামাদেরকে হত্যা করতে, যারা সত্যের বানী সব জায়গায় পৌঁছে দেয়। আর এই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে ওদেরই একনিষ্ঠ সমর্থক সৌদি আরব। তারা শাইখ সাফার আল হাওয়ালি[২], শাইখ সালমান আল আওদাহ[৩] সহ ওই সকল আলেমকে কারারুদ্ধ করলো যারা সত্যের বানী পৌঁছে দিতেন সর্বত্র, মিশরেও সৃষ্টি করা হল একই অবস্থা।
পবিত্র কুরআনে এই সকল ইহুদি এবং খৃস্টান সম্পর্কে বেশ কিছু আয়াত নাজিল হয়েছে যা এখন আমরা সম্পূর্ণ ভুলে গেছি অথবা আমরা ভুলে যাওয়ার ভান ধরেছি...
قال الله تعالى: {ولا يزالون يقاتلونكم حتى يردوكم عن دينكم إن استطاعوا}
বস্তুতঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদিগকে দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে যদি সম্ভব হয়। (সুরা বাকারা ২:২১৭)
{ولن ترضى عنك اليهود ولا النصارى حتى تتبع ملتهم}
আপনি ইহুদি নাসারাদের কখনোই সন্তুষ্ট করতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনি তাদের ধর্ম অবলম্বী হচ্ছেন। (সুরা বাকারাঃ- ১২০)
{كيف وإن يظهروا عليكم لا رقبوا فيكم إلا ولا ذمة يرضونكم بأفواههم وتأبى قلوبهم وأكثرهم فاسقون}
কিরূপে? তারা তোমাদের উপর জয়ী হলে তোমাদের আত্নীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না। তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট করে, কিন্তু তাদের অন্তরসমূহ তা অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী। (সুরা তাওবা ৯:৮)
{لا يرقبون في مؤمن إلا ولا ذمة وأولائك هم المعتدون}
তারা মর্যাদা দেয় না কোন মুসলমানের ক্ষেত্রে আত্নীয়তার, আর না অঙ্গীকারের। আর তারাই সীমালংঘনকারী। (সুরা তাওবা ৯:১০)
{إن يثقفوكم يكونوا لكم أعداءً ويبسطوا إليكم أيديهم وألسنتهم بالسوء وودوا لو تكفرون}
তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরা ও কাফের হয়ে যাও। (সুরা মুমতাহিনা ৬০:২)
এরা তারাই যারা বিশ্বের যেখানেই ইসলামী জাগরণ সৃষ্টি হয় সেখানেই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ওরা জিনা-ব্যভিচার ও সুদ সহ পৃথিবীর মাঝে যত দুর্নীতি আছে তা ছড়াতে সব সময় তৎপর।
ও আমার ভাইরা!
ওরা যদি আমাক হত্যা করে ফেলে, এবং অবধারিতভাবে ওরা তাই করবে, তাহলে আপনারা আমার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করবেন এবং আমার লাশ আমার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন। আপনারা আমার রক্তকে ভুলে যাবেন না এবং এটি বৃথা যেতে দিবেন না! এর পরিবর্তে নিয়ম হিসেবে তোমরা ভয়াবহ শক্তিশালী প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন! আপনাদের মাঝে থেকে আরেকজনকে দলভুক্ত করে নিবেন, যিনি কিনা সত্য বলতে পারেন এবং নিজের জীবন আল্লাহ্*র রাস্তায় দিয়ে দিতে পারেন।
এই কিছু কথা ছিল আমার অন্তরে যা আপনাদের শুনানোর খুব ইচ্ছা ছিল।
আল্লাহ্* আপনাদের উপর রহম করুন এবং কাজে বরকত দান করুন।
আল্লাহ্* আপনাদের নিরাপদে রাখুন এবং যত্নে রাখুন এবং আপনাদের শক্তি দান করুন।
আপনাদের উপর আল্লাহ তাআলার রহমত, বরকত ও পরিপূর্ণ শান্তি বর্ষিত হোক।
-আপনাদের ভাই, উমর আব্দুর রহমান।
__________________________________________________ __________________
[১] তাওহীদ ও জিহাদের আলেম, মুসলিম জাতির প্রাণপ্রিয় শায়েখ উমর আবদুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি গত ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সলিট্যারি কনফেনমেন্টে যাবজ্জীবন কারাভোগরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। আল্লাহ উনার খেদমতকে কবুল করেন! তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করেন!
তিনি ১৯৩৮ সালে মিশরে জন্ম গ্রহণ করেন। শায়েখ উমর আবদুর রহমান ছিলেন আমাদের সময়কার অন্যতম কিংবদন্তী। তিনি ১১ বছর বয়সে কুরআনের হিফয শেষ করেন, যদিও জন্মের ১০ মাস বয়সে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। তিনি শরিয়াহ বিভাগের উপর তার স্নাতকোত্তর পড়াশুনা শেষ করেন। শায়েখ পরবর্তীতে আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাফসীরের উপর ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।
জামাল আব্দুন নাসেরর পাশবিক সরকারের বিরুদ্ধাচারণে তিনি ছিলেন অন্যতম। তিনি নির্ভয়ে মুসলিমদেরকে বলেছিলেন এই অত্যাচারী মুরতাদের মৃত্যুর পর তার জানাযা না পড়তে। তার ঐতিহাসিক ফতোয়ায় ইসলামের তৎকালীন শত্রু মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে মুজাহিদ খালিদ ইসলাম্বুলী (রহঃ) হত্যা করেন। বিচারকালীন সময়ে তিনি বজ্রকন্ঠে সত্যের ঘোষণা দেন এবং শরিয়াহ কায়েমের জন্য কোর্টে সরাসরি আহ্বান জানান। অতঃপর তাকে কারারুদ্ধ করে তার উপর কঠিন নির্যাতন চালায় মিশরের সরকার।
শায়েখ মিসরীয় সাবেক জিহাদি সংগঠন “আল জামাআতুল ইসলামিয়্যাহ” এর আমীর ছিলেন, আল কায়েদার বর্তমান জিম্মাদার শায়েখ আইমানও এই জামাআতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে উনারা সারা বিশ্বের মুজাহিদ ও নির্যাতিত মুসলমানদের বৃহৎ স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য করে আল কায়েদাতে যোগদান করেন।
আমেরিকার ভিসা পাওয়ার পর এবং আমেরিকায় ইসলাম প্রচারের ইমাম হয়ে শায়খ তার দাওয়াতি মেহনত অব্যহত রাখেন। তার দীপ্ত দাওয়াতি প্রচারণা অনেক মুজাহিদদের চোখ খুলে দিয়ে আল্লাহর শত্রুকে আক্রমণের প্রেরণা যুগিয়েছিল। কুফরের ইমাম আমেরিকা ১৯৯৩ সালে তাকে গ্রেফতার করে তাকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে।
শায়খ আইমান আয যাওয়াহিরি (আল্লাহ তাকে হেফাজত করেন) সহ আরো অনেক মুজাহিদিন শায়েখরা তার মুক্তির দাবি জানায়, যখন সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ছিল নিশ্চুপ।
শায়েখের একটি ঐতিহাসিক বক্তব্য হচ্ছে-
“যদি কেউ তাদের ন্যায্য দাবি প্রাপ্তির অধিকার রেখে হয় জঙ্গি, তাহলে আমরা জঙ্গিই, আর আমরা জঙ্গি হওয়াকে স্বাগত জানাই। কুরআনই এই জঙ্গিবাদ তৈরী করে। আল্লাহর পথে জিহাদ করার অন্যতম মাধ্যম হল আল্লাহর শত্রুদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করা”।
- শায়েখ উমর আবদুল রহমান (রহঃ)
শায়েখ ডঃ উমর আবদুর রহমানের মেয়ে আসমা তার বাবার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেন। তিনি ১৯৯৩ সাল থেকে আমেরিকার কারাগারে যাবজ্জীবন কয়েদী হিসেবে বন্দী ছিলেন।
শায়েখের শাহাদাতে তাঁর পরিবার ও মুসলিম উম্মাহকে জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ ও তাঁর অঙ্গসংগঠনসমূহ শোঁক বার্তা জানিয়েছে। মুসলিম উম্মাহকে শায়েখের হত্যার বদলা নিতে আহবান করেছে। এছাড়াও মুসলিম বিশ্বের বড় বড় জ্ঞানী ব্যক্তিরা সমবেদনা জানিয়ে বার্তা প্রদান করেছেন, যাদের অন্যতম হচ্ছেন আরব বিশ্বের প্রখ্যাত আলেম শায়েখ আবু মুহাম্মাদ আসেম আল মাকদিসি দাঃবাঃ।
শায়েখ অনেকগুলো কিতাব লিখেছেন, যার মধ্যে (الشريعة الإسلامية شريعة شاملة كاملة) “আশ শরিয়াতুল ইসলামিয়্যাহ শারিয়াহ শামিলাহ ওয়া কামিলাহ” অন্যতম। আন নাফির বুলেটিন হিসেবে প্রকাশিত এই নসিহতটি শায়েখ কারাগারে বসে লিখেছিলেন। সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাগণ নিচের লিংক থেকে দেখে নিতে পারেন।
এছাড়াও শায়েখের অন্যান্য রচনাবলী ও সাক্ষাৎকারসমূহ, অডিও ও ভিডিওসমূহ নিচের লিংক এ পাবেন ইনশা আল্লাহ।
[২] শায়েখ সাফার বিন আব্দুর রহমান আল হাওয়ালী হচ্ছেন সৌদি আরবে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের একজন বিদগ্ধ আলেম। ১৩৭৫ হিজরি মোতাবেক ১৯৫৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। শায়েখ সৌদি আরবের পূর্ব-দক্ষিণের বাহিয়াহ অঞ্চলের আজদ’ এর অধিবাসী।
শায়েখ আরবের প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান জামেয়া উম্মুল কুরার “আকিদা বিভাগ”এর প্রধান ছিলেন। শায়েখ আরব বিশ্বের বড় বড় শায়েখদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সাড়া জাগানো অনেক কিতাব ও প্রবন্ধ নিবন্ধ লিখেছিলেন। তাঁর অনেক অডিও ও ভিডিও বয়ান রয়েছে। যা এখনো ইলম পিপাসুদের তৃষ্ণা নিবারণ করে।
শায়েখে সত্যকথনে ক্রুসেডর আমেরিকা, সৌদি শাসকবর্গ ও তার সহযোগীদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে যাওয়ায় শায়েখকে তারা কারারুদ্ধ করেছে। শায়েখের একটি ঐতিহাসিক ফাতাওয়া হচ্ছে “পশ্চিমাদের সামরিক যুদ্ধ হচ্ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড যুদ্ধ”
ফাতাওয়ার লিংক-
নিচের লিংকে শায়েখের সকল কিতাব ও বয়ানসমূহ পাওয়া যাবে।
[৩] শায়েখ সালমান বিন ফাহাদ বিন আব্দুল্লাহ আল আউদাহ হচ্ছেন ইসলামের একজন নিবেদিত প্রাণ দাঈ। বিদগ্ধ আলেমে দ্বীন ও সৌদি চিন্তাবিদ।
শায়েখ ১৩৭৬ হিজরির জুমাদাল উলা মোতাবেক ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে সৌদি আরবের আল কাসিম অঞ্চলের বারিদা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আল বাসর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
জুমার খুতবায় সৌদি শাসকের বিরুদ্ধে হক কথা বলায় ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ সরকার তাকে বন্দি করে। শায়েখ এখনো রিয়াদের একটি রাজনৈতিক কারাগারে রয়েছেন।
শায়েখ অসংখ্য কিতাব লিখেছেন, যা এখনো আরব বিশ্বের ইলম পিপাসুদের ইলমের তৃষ্ণা নিবারণ করে যাচ্ছে।
নিচের লিংক থেকে শায়েখের সকল কিতাব, জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও অডিও-ভিডিও সংগ্রহ করা যাবে।
http://www.islamtoday.net/salman/index.htm
WORD
প্রকাশনা ও পরিবেশনা
প্রকাশকাল
শনিবার, ২৮ জুমাদাল উলা ১৪৩৮ হিজরি, ১৩ ফাল্গুন ১৪২৩ বাংলা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইংরেজি
----------------------------------------------------
ওয়ার্ডপ্রেস
ফেসবুক
টুইটার
আপনাদের নেক দুয়ায় আমাদের ভুলবেন না!
Comment