৭
---------------------------
আনসার আল ইসলামের সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলীয় কেন্দ্র রংপুর।
সাউন্ডপ্রুফ আন্ডারগ্রাউন্ড কনফারেন্স রুমে বসে আছে তাওহীদের পতাকাবাহী দুঃসাহসী কয়েকজন যুবক। এরাই সেই গুরাবা যাদের বিষয়ে আজ থেকে চৌদ্দশ’ বছর আগে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন রসুলে আরাবী সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম। এরা সেই বাহিনীরই অংশ যারা হিন্দের জালিম শাসকদেরকে লোহার শিকলে শৃঙ্খলিত করে বায়তুল আকসার দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে, এরা সেই বাহিনীরই অংশ যারা অভিশপ্ত ইহুদীদের হাত থেকে বায়তুল আকসাকে পুনরুদ্ধার করতে বইয়ে দেবে রক্তের বন্যা, এরা সেই বাহিনীরই অংশ যারা খোরাসান থেকে প্রেরণ করবে ইমাম মাহদীর সাহায্যকারী বাহিনী, এরা সেই বাহিনীরই অংশ যাদের আল্লাহুআকবার তাকবীর ধ্বনিতে ভেঙ্গে পড়বে কন্সট্যান্টিনোপোলের প্রাচীর, এরা সেই বাহিনীরই অংশ যারা ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. এর সাথে যুক্ত হয়ে দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।
কিন্তু এ পথ বড়ই কন্টকাকীর্ণ, বড়ই কষ্টের। ক্ষুধার যন্ত্রণা, পিপাসায় কাতর হয়ে ছটফট করা, বিনিদ্র রাত্রি যাপন, বৈরী আবহাওয়ার সাথে যুদ্ধ করা, প্রখর রৌদ্রে বা তুমুল বরষায় কিংবা মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীতে মাইলের পর মাইল হেঁটে চলা। তাগুতের রোষানলে পতিত হওয়া, দুঃসহ কারাজীবন ভোগ করা, শত্রুর ছোঁড়া বুলেটের আঘাতে যন্ত্রণায় চিৎকার করা এসবই নিত্যদিনের সঙ্গী এ পথের পথিকের। কিন্তু এ পথিকও খুব দুর্দম। সে উত্তাল তরঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে নির্দ্বিধায়, সুউচ্চ পাহাড় ডিঙ্গাতে বুক কেঁপে ওঠে না তার, শত্রুর রাইফেল থেকে বৃষ্টির মত ছুটে আসা বুলেটের দেয়াল ভেদ করে যে দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে যায়, কঠিনতম পরিস্থিতিতেও যার মুখে লেগে থাকে একটুকরো হাসি, নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও দুঃচিন্তার ছাপ পড়ে না তার কপালে।
আজ এই পথেরই পথিক এরা। আব্দুল্লাহ, হায়দার, সালমান, আসাদ এবং আরমান।
টেবিলের চারপাশে বসে আছে নিশ্চুপ হয়ে। কারো মুখে রা নেই। চোখ ছলছল করছে সবার। কেউ কারো দিকে তাকাতে পারছে না পর্যন্ত। বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে যেন সবাই। কিছুক্ষণ আগে উত্তরাঞ্চীয় গোয়েন্দা প্রধান পারভেজ তাদেরকে শুনিয়ে গেছে কুচলীবাড়ির হৃদয়বিদারক ঘটনা। বেদনায় বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেছে ওদের। কিন্তু কেউ জানে না, মুশরিকদের হাত থেকে এই নির্যাতিত জনপদের মুসলিমদেরকে পুনরুদ্ধার করার আগে আরও কতোবার তাদেরকে নিগৃত হতে হবে!
অশ্রুসিক্ত নয়নে মাথা তুলে তাকালো আব্দুল্লাহ। একে একে দৃষ্টি ফেরালো সবার উপর। সবার দৃষ্টিই টেবিলের উপর নিবদ্ধ হয়ে আছে। অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠেছে প্রত্যেকের চোখ। আর ওদের হৃদয়ে যে ক্ষরণ চলছে তা মনুষ্যত্বহীন কোন কুলাঙ্গার ছাড়া যে কেউ উপলব্ধি করতে পারবে। বেদনায় ভারী হয়ে ওঠা এই পরিবেশে দুঃখ ভারাক্রান্ত কন্ঠে হঠাৎ-ই নীরবতা ভাঙ্গলো আব্দুল্লাহ।
- প্রিয় ভাইয়েরা আমার, ঘটনার প্রেক্ষিতে হয়তো আজ আমাদের কলিজা ফেটে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। হয়তো নিজেদের অক্ষমতার জন্য নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে আমাদের অথবা এমন অনেক ভাবনাই হয়তো ভীড় করছে মনে... কিন্তু তারপরেও জেনে রাখুন, আরশের অধিপতি আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে অবগত আছেন। তিনি বধির নন এবং তিনি এই নির্যাতিত উম্মাহ থেকে দৃষ্টিও ফিরিয়ে নেননি।
এ কথা সত্য যে, আমাদের উপর দিয়ে সে ঝড় বয়ে যায়নি যা কয়েক ঘন্টা পূর্বে কুচলীবাড়ীর মুসলিমদের উপর নেমে এসেছিলো কিন্তু তাদের ব্যথায় আমাদের হৃদয়ে যে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে সে সম্পর্কেও অন্তর্যামী রব বেখবর নন।
ভাইয়েরা আমার, আমার প্রিয় বন্ধুরা, আজ আমার প্রশ্ন হচ্ছে – কুচলীবাড়ীর মা-বোন’রা কি আমাদের মা-বোন নয়? তাদের শরীরের রক্ত কি আমাদের শরীরের রক্ত নয়? তাদের সম্মান কি আমাদের সম্মান নয়? তাদের যন্ত্রণা কি আমাদের যন্ত্রণা নয়? আমরা কি তাদের ভাই নই?
যদি এগুলোর উত্তর হয় “হ্যাঁ” তাহলে শুধু অশ্রু নয় বন্ধুরা এবার রক্ত ঝড়াতে হবে। বুকের তাজা খুন ঝড়াতে হবে। তিন বিঘা করিডোর ধুলোয় মিশিয়ে দিতেই এসেছি আমরা। ওয়াল্লহি, আমাদের মিশনের পর মানচিত্রে তিন বিঘা করিডোর বলে কিছু থাকবে না। এখানকার একটা মালাউনের বাচ্চাকেও জীবিত রাখবো না আমরা। আর যদি পথে ওদের কোন সহযোগী বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তাকেও উড়িয়ে দেবো আমরা, যদি সে আমাদের রক্তের ভাইও হয়।
আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করুন, বেশি বেশি ইস্তিগফার পড়ুন, ইনশাআল্লাহ এবার আমরা আমাদের মা-বোনদের জন্য বদলা নেবোই আর তাদের উদ্ধার করবো মুশরিকদের কবল থেকে।
ঈমানদীপ্ত কথার উজ্জীবন শক্তিতে আপনা আপনি মুষ্টিবদ্ধ হয়ে গেলো প্রত্যেকের হাতের আঙ্গুলগুলো। প্রতিশোধের নেশায় হৃদয় খাক হতে শুরু করলো যেন। দাঁতের উপর দাঁত পিষতে লাগলো সবাই। অশ্রুসিক্ত নয়নে জ্বলে উঠলো আগুন। কেউ জানে না, একদিন এই আগুনেই ভস্ম হয়ে যাবো সমগ্র ভারতবর্ষ!
টেবিলের উপর দু’টি ম্যাপ মেলে ধরলো আব্দুল্লাহ। সবাই ঝুঁকে পড়লো ম্যাপের উপর। একটা ম্যাপ দহগ্রাম, তিনবিঘা করিডোর এবং এর পাশ্ববর্তী অঞ্চলের। অন্য ম্যাপটি হচ্ছে তিন বিঘা করিডোরে তাদের আক্রমণ পরিকল্পনার।
- বন্ধুগণ, মূল পরিকল্পনা নিয়ে কথা শুরুর আগে আমি সামগ্রিক বিষয়ের উপর আরেকবার আলোকপাত করতে চাই। বলে আলোচনা শুরু করলো আব্দুল্লাহ। আপনারা জানেন যে তাগুত সরকারের একজন ল্যান্স নায়েক আফতাব উদ্দীনকে আল্লাহ তার দ্বীনের সহযোগী বানিয়েছেন। যিনি বর্তমানে তিনবিঘা করিডোরের সামনের এবং পিছনের দু’টি বিডিআর ক্যাম্পের দায়িত্বে আছেন। তার সহযোগীতায় আজ থেকে ছয় মাস আগে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে এই মিশনের পরিকল্পনা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে আপনারা আপনাদের টিমগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। ইতিমধ্যে মুজাহিদ ভাইদেরকে নিয়ে আমরা মহড়াও সম্পন্ন করেছি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
- মুহতারাম ভাই, আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই অবগত আছি। তবে যেহেতু মিশন সম্পন্ন হওয়ার পর ল্যান্স নায়েক আফতাব উদ্দীনের পরিচয় সরকারের কাছে প্রকাশিত হয়ে যাবে সেহেতু আমরা জানতে চাচ্ছি উনার এবং উনার পরিবারের বিষয়ে কি ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে? প্রশ্ন করলেন উত্তরাঞ্চলীয় অ্যাসল্ট টিমের কমান্ডার হায়দার।
- জ্বী ভাই, আপনি খুব ভালো একটি প্রশ্ন করেছেন। আমরা অবশ্যই আমাদের সাথে সম্পৃক্ত ভাইদের নিরাপত্তার বিষয়কে সবসময় গুরুত্ব দেবো। আফতাব উদ্দীনের বিষয়ে ইমারাহ কিছু কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করে ফেলেছে। প্রথমত, উনাকে উনার খিঁলাগাস্থ বাড়ি বিক্রি করতে সহায়তা করা হয়েছে। এরপর আনসার আল ইসলাম কর্তৃক ঢাকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে উনার জন্য একটি বাড়ি ক্রয় করা হয়েছে এবং উনার পরিবারকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ এই কাজগুলো গোপনীয়তার সাথে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয়নি। এখন যে বিষয়টি সামনে থাকছে সেটা হলো, মিশনের পরে আফতাব উদ্দীনকে প্রধান কার্যালয়ে নেয়া হবে এবং সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে উনাকে কোন কাজে কোন অঞ্চলে প্রেরণ করা হবে। এই বিষয়টা আমাদের আলোচনায় আসার কোন প্রয়োজন নেই, কারণ তা ইমারাহ’র উপর ন্যস্ত একটি দায়িত্ব। হতে পারে উনাকে উত্তরাঞ্চলেই রাখা হবে যেহেতু উনি এ অঞ্চলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। তবে সেরকম কিছু হলে অবশ্যই তা আপনাদের মাধ্যমেই করা হবে। এখন আমি আপনাদের সামনে মিশনের পুরো পরিকল্পনা তুলে ধরছি।
আফতাব উদ্দীনের কাছ থেকে গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার পর রংপুর কেন্দ্র থেকে আরো একশ’ সদস্যের ইউনিট পাটগ্রামে পৌঁছে যাবে। পাটগ্রামে থাকা একশ’ মুজাহিদের মধ্যে চল্লিশ জনকে আমরা সেখানকার দু’টি প্রধান ক্যাম্পে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রাখবো। বাকি ষাট জনকে তিনটি আলাদা আলাদা টিমে ভাগ করা হবে। করিডোরে প্রবেশের রাস্তা থেকে ডান পাশ দিয়ে দু’শ মিটার ব্যবধান রেখে আমি বিশ জনকে নিয়ে এগুতে থাকবো। একই সময় করিডোরে প্রবেশের রাস্তা থেকে বাম পাশ দিয়ে দু’শ মিটার ব্যবধান রেখে হায়দার ভাই আরো বিশজনকে নিয়ে এগুতে থাকবে। মনে রাখতে হবে, আমার এবং হায়দার ভাইয়ের টিমের দূরত্ব সমসময় একই রেন্জের মধ্যে থাকবে। আর আমাদের থেকে একশ’ মিটার পিছনে মূল রাস্তা ধরে এগিয়ে যাবে বিশ সদস্যের আরেকটি টিম। এই টিমের দায়িত্বে থাকবেন সালমান ভাই। সবার পিছনে রংপুর থেকে আগত একশ’ মুজাহিদের ইউনিট নিয়ে প্রস্তুত থাকবেন আসাদ ভাই এবং আরমান ভাই। উনাদের সাথে থাকবে মালবাহী বড় বড় দশটি লড়ি। আমরা কমান্ড করার সাথে সাথে উনারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিশ সদস্যের একটি ইউনিট এবং চারটি লড়ি নিয়ে চলে যাবেন কুচলীবাড়ি ছিটমহলে এবং বাকি ছয়টি লড়ি নিয়ে ষাট সদস্যের অন্য ইউনিট চলে যাবেন দহগ্রামে। মিশনের কয়েকদিন আগেই এই দু’টি অঞ্চলে বিশ্বস্থ মাধ্যমে আমরা তাদেরকে প্রস্তুত থাকার জন্য খবর পাঠিয়ে দেবো। যাতে করে উদ্ধারকার্য সম্পন্ন হওয়ার সময় কোন ধরনের বিলম্ব না হয়। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে সেটা হলো, উদ্ধারকার্যে ব্যবহৃত লড়িগুলোতে শুধুমাত্র নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ব্যক্তিরাই সুযোগ পাবে। বাকি সমস্ত পুরুষকে মুজাহিদ ভাইদের সাথে হেঁটে হেঁটে তিন বিঘা করিডোর পর্যন্ত আনতে হবে। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত পরিবারগুলোকে রংপুর এবং পার্শ্ববর্তী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে সুবিধামত স্থানান্তর করা হবে।
মিশন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত করিডোরের উভয় পার্শ্বস্থ বিডিআর ক্যাম্পের জোয়ানরা নিস্ক্রিয় থাকবে। তবে তিনবিঘা করিডোর আমাদের আয়ত্ত্বে নিয়ে নেয়ার সাথে সাথে আফতাব উদ্দীন তার বিশ্বস্থ দশজন জোয়ানকে করিডোরের উত্তরপার্শ্বস্থ ট্রানজিট রুটে উত্তর-পূর্ব দিকে তিনশ’ মিটার সামনে এবং আরো দশজন জোয়ানকে উত্তর-পশ্চিম দিকে একই দূরত্বে নিযুক্ত করবেন যাতে করে ভারত থেকে স্থল পথে কোন সহায়তা এদিকে আসতে না পারে। আর এই অবস্থানে রংপুর থেকে আগত ভাইদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট বিশ জন মুজাহিদ ভাই বিডিআর জোয়ানদের সাথে অবস্থান করবে। আমরা জানি যে, যেকোন অবস্থান থেকে আকাশ পথে সহায়তা আসতে কমপক্ষে চার ঘন্টা সময় লাগবে। একারণে আমাদের প্রধান টার্গেট থাকবে আড়াই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে মিশন সম্পন্ন করা। এখানে একটি বিষয় বলে রাখি তা হচ্ছে, বিডিআর জোয়ানদের কয়েকজন আমাদের সাথে মিশনে থাকার আগ্রহ পোষণ করেছিলো, কিন্তু আমরা আফতাব উদ্দীনকে এই প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ, তাদের নিশ্চুপ থাকাই আমাদের জন্য যথেষ্ঠ হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা আমাদের মত মিশন পরিচালনা করবো।
- মুহতারাম ভাই, দহগ্রামের একেবারে পূর্বদিকে গ্রামের কোল ঘেঁষে বেশ কয়েকটি ওয়াচটাওয়ার এবং বিএসএফ জোয়ানদের টহল ইউনিট থাকবে। এবং উত্তর-পশ্চিম কোণ বরাবর ভারতীয় সীমানায় একটি বড় বিএসএফ ক্যাম্প আছে। তবে গ্রামের সীমানা থেকে এটার দূরত্ব রাইফেল রেন্জের মধ্যে। এই দুইটা ক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনা কি? প্রশ্ন করলো ব্যাক আপ টিম প্রধান সালমান।
- ধন্যবাদ ভাই, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করার জন্য। সম্ভবত এ বিষয়টিই আমাদের পরিকল্পনার সর্বশেষ অংশ। আবার বলতে শুরু করলো আব্দুল্লাহ। সত্তর সদস্য বিশিষ্ট যে টিমটি দহগ্রামে প্রবেশ করবে তারা পরবর্তী বিডিআর ক্যাম্পের জায়গা থেকে তিনটি আলাদা আলাদা ইউনিটে ভাগ হয়ে যাবে। একটি টিম গ্রামবাসীদেরকে সংগঠিত করে তিনবিঘা করিডোরের দিকে নিয়ে রওনা দেবে এবং এ কাজে তাদেরকে সহায়তা করবে ঐ ক্যাম্পের দশজন বিডিআর জোয়ান। আর বাকি দুইটা টিম প্রত্যেকটি ওয়াচম্যানকে এবং রেন্জের মধ্যে থাকা বিএসএফ এর প্রত্যেক টহল ইউনিটের উপর আক্রমন করবে। তবে উত্তর-পশ্চিমাংশে ভারতীয় সীমানার মধ্যে অবস্থিত বিএসএফ ক্যাম্পে আমরা কোন হামলাই করবো না। কারণ তা কাঁটাতার দিয়ে পরিবেষ্টিত অংশের মধ্যে। আর ওই ক্যাম্প থেকেও ওরা আমাদের কিছু করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। যদি কিছু করতেই চায় তাহলে ওদেরকে করিডোর সংলগ্ন ট্রানজিট রুটটিই ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু সেটা তারা পারবে না। কারণ, ট্রানজিট রুটের উভয় পাশে বিডিআর জোয়ানদের সাথে আমাদের ভাইদের দুইটা ইউনিট আগে থেকেই প্রস্তুত থাকবে। তাছাড়া নাপাক মালাউনদের এতো সাহস নেই যে মুজাহিদরা হামলা করেছে জেনে পাল্টা হামলা করতে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে!
আলোচনার শেষ পর্যায়ে উত্তরাঞ্চলীয় গোয়েন্দা প্রধান পারভেজকে ডেকে পাঠানো হলো। আসন্ন মিশনকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা ইউনিটের কার্যপরিকল্পনা নেয়া হলো তার থেকে এবং কিছু পরিকল্পনাও দেয়া হলো তাকে। পাটগ্রাম রুটের প্রত্যেকটি অবস্থানে মোতায়েন করা হলো অতিরিক্ত গোয়েন্দা ইউনিট। তৈরি করা হলো নিছিদ্র বেষ্টনী। চিহ্নিত দেশীয় দালালদেরকে এমনভাবে নজরবন্দী করা হলো যে ভয়ে তারা কোনভাবেই ঘর থেকে বেরুতে পারছিলো না। উপরন্তু সমস্ত কাজ এমনভাবে চলতে থাকলো যাতে করে মূল মিশন সম্পর্কে পারভেজসহ এই ছয় জন ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ কিছু জানতে না পারে, এমনকি মিশনে অংশগ্রহণ করা অন্য মুজাহিদ ভাইয়েরাও না।
শুধু সবাই প্রস্তুত থাকলো এবং প্রতীক্ষায় থাকলো একটি মাত্র ডাকের।
বি.দ্র: এই পর্বে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার জন্য ৫ম পর্বে কিছুটা পরিমার্জন করা হয়েছে
৬ষ্ঠ পর্বের লিঙ্ক: https://dawahilallah.com/showthread....6%AC-%E0%A7%AC
Comment