বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
১৭ই আগস্টের আহবান
১৭ই আগষ্ট ২০০৫।
সারাদেশের ৬৩টি জেলায় বোমা ফাটিয়ে কি জানাতে চেয়েছিল জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ?
কেউ কি তার ৩য় চোখ দ্বারা সেটা বুঝতে চেয়েছেন?
নাকি চোখে হলুদ মিডিয়ার চশমা পড়ে তাদের বলা বুলি আওড়াচ্ছেন?
হে উম্মাতে মুহাম্মাদী !
চোখ খুলুন। ৩য় চোখ মানে আপনার বিবেকের চোখ খুলুন।
একবার চিন্তা করুন,
কেন এই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এর আমীর সহ শীর্ষস্থানীয় ভাইয়েরা তাদের জীবন বিলিয়ে গেলেন?
কেন তারা মানব রচিত আইনের কাছে মাথা নত করলেন না?
সরকার তো বলেছিল, তারা যদি ভুল স্বীকার করে প্রাণ ভিক্ষা চায়, তবে তাদের মাফ করে দেয়া হবে? তবে কেন তারা রাজি হন নি?
আসুন একটু জেনে নিই, কি লিখা ছিল দুই পৃষ্ঠার ঐ কাগজে? যার জন্য তাদেরকে ফাঁসীতে ঝুলানো হল?
যার জন্য তাগুতের মাসনাদ নড়ে গেল?
কেন তারা আমেরিকায় যেয়ে তাদের সাহায্য ভিক্ষা চাইল?
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ -এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আহবান !
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। অতঃপর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কারো বিধান দেয়ার অধিকার নাই। (সূরা ইউসুফ : ৪০)
أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ
অর্থ : শুনে রাখ ! তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। (সূরা আ’রাফ : ৫৪)
অর্থ : আল্লাহর আইনকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমার উম্মতের মধ্যে একটি ইছাবা (দল) সব সময় সশস্ত্র জিহাদ করে যাবে। তারা তাদের শত্রুদের প্রতি কঠোর হবে, যারা তাদের বিরোধীতা করবে, তারা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা কিয়ামাত পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, ই. সে. হা : ৪৮০৫)
জনগণের প্রতি আহবান !
প্রিয় দেশবাসী মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি রূপে এবং শুধুই তাঁর ইবাদাতের জন্য যাতে থাকবে না কোন অংশীদার। আমাদের মাঝে শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করেছেন এই শিক্ষা দেয়ার জন্য যে আমরা কিভাবে আমাদের বিশ্বাস ও কাজ কর্মে ত্বাগুতকে বর্জন করতে পারি। আল্লাহ তা’আলা বলেন-
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
অর্থ : প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই আমি রাসূল পাঠিয়েছি এ দায়িত্ব দিয়ে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত কর এবং সকল প্রকার তাগুতকে বর্জন কর। (সূরা নাহল : ৩৬)
তাগুতঃ মানুষ যদি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ইলাহ বা উপাস্যের আসনে বসিয়ে তার ইবাদাত বা আনুগত্য করে এবং কোন ব্যাপারে তাকে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তবে অংশীদার ইলাহকে বলা হয় “তাগুত”।
ক্ষমতাসীন তাগুতঃ আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী জালিম শাসক, অর্থাৎ যে শাসক আইনের বলে হারামকে হালাল করে। যেমনঃ যিনা, সুদ, মদ্যপান বা অশ্লীলতার অনুমোদন দেয়, কিংবা হালালকে হারাম করে। যেমনঃ জিহাদ-ক্বিতালে বাধা দেয়। অনুরূপভাবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজেদের তৈরিকৃত অথবা কাফির-মুশরিকদের বিধান অনুযায়ী শাসন করে সে হলো ক্ষমতাসীন তাগুত”।
কোন মুসলিম ভূখন্ডে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কারো বিধান চলতে পারে না। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয়, শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম বাস করা সত্ত্বেও আমাদের দেশে আল্লাহর বিধান কার্যকর নেই। উপরন্তু দেশের জেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নিম্ন ও উচ্চ আদালত গঠন করে যে বিচারকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে তার মূল ভিত্তি হচ্ছে মনুষ্য রচিত সংবিধান। যে সংবিধান প্রণয়ন করেছে কিছু জ্ঞানপাপী মানুষ। কথা ছিল মানুষ হিসেবে একজন মানুষের কাজ হবে আল্লাহর দাসত্ব করা ও আল্লাহর বিধানের আনুগত্য করা। কিন্তু সে মানুষ আজ নিজেই সংবিধান রচনা করে আল্লাহর বিধানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে আছে আল্লাহ বিরোধী শক্তি। কারণ যে প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র প্রধান কিংবা রাষ্ট্রের অন্যান্য পরিচালকবর্গ নির্বাচিত হচ্ছেন তা একটি সম্পূর্ণ অনৈসলামিক পদ্ধতি। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে কোথাও প্রচলিত কাফির-মুশরিক বিরচিত গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি পদ্ধতির স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। এসব প্রত্যেকটি পদ্ধতিই হচ্ছে আল্লাহর বিধানের প্রতিপক্ষ এক একটি ব্যবস্থা। এবং কাফির-মুশরিক ও ইহুদী মস্তিষ্ক প্রসূত এসব বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে শুধুমাত্র মুসলিম আক্বীদা ও বিশ্বাসকে ধ্বংস করার মানসে। কাজেই এদেশের মুসলিম জনতার আজ ভাবার সময় এসেছে।
তাই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ আল্লাহর হুকুম ও ঈমানের দাবীকে সামনে রেখে এই প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে। পাশাপাশি যে সংবিধানকে ভিত্তি করে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, তা আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক; বিধায় এ ব্যবস্থা ও তথাকথিত নির্বাচন পদ্ধতি পরিহার করে আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের তরীকায় দেশ পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছে। অন্যথায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য আল্লাহ নির্দেশিত ক্বিতাল পদ্ধতির সামগ্রিক বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর।
অতএব যতদিন পর্যন্ত দেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত তাগুতের বিচারালয়ে যাওয়া বন্ধ রাখুন। আপনাদের যেকোন বিচার ফয়সালার জন্য মাসজিদের খতিব, মাদরাসার মুহাদ্দিস ও অভিজ্ঞ আলেমে দ্বীনের কাছে গিয়ে আল্লাহর আইনের ফয়সালা প্রার্থনা করুন। তাগুত সরকারের আইন উপেক্ষা করে আল্লাহর আইনের বিচার ফয়সালা নিন।
আল্লাহ বলেন-
أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
অর্থ : তারা কি জাহেলী বিধানের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা ঈমানদারদের জন্য উত্তম ফয়সালাকারী কে? (সূরা মায়েদাহ : ৫০)
أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا
অর্থ : তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন বিচারকের অনুসন্ধান করবো? (সূরা আন’আম : ১১৪)
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ
অর্থ : আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে আমরা ঈমান এনেছি, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল। তারা তাগুতকে বিধান দানকারী বানাতে চায়, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, তারা যেন তাকে অমান্য করে। (সূরা নিসা : ৬০)।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান !
যারা হিদায়াতের অনুসারী তাদের প্রতি সালাম। হিদায়াত প্রাপ্তির পর গোমরাহী ও অন্ধকারের দিকে ফিরে আসা উচিত নয়। আল্লাহ তাঁর রাসূল কে সত্য দ্বীন সহকারে সৃষ্টির প্রতি প্রেরণ করেছেন সুসংবাদ বহনকারী ও সতর্ককারী হিসাবে। যারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছে, আল্লাহ তাদের সঠিক ভাবে হিদায়াত দিয়েছেন। আর যারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন। অতঃপর তারা ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, ইসলামের আনুগত্য করেছে।
অতএব বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান !
আপনারা এদেশে আল্লাহর আইন চালু করুন। আমরা আপনাদের সহযোগীতা করব। আমরা ক্ষমতা চাই না, আমরা দেশে তাগুতী শাসনের পরিবর্তে আল্লাহর আইন চাই।
[এ ছিল ১ম পৃষ্টার লিখা। নীচে ২য় পৃষ্টা ও তাতে কি লিখা ছিল তা দেয়া হল।]
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এর কর্মীরা আল্লাহর সৈনিক। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করার জন্য এরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে। যেমন নিয়েছিলেন নবী-রাসূল, সাহাবী ও যুগে যুগে বীর মুজাহিদগণ। জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এদেশ থেকে সমস্ত শিরক-বিদআতের অবসান ঘটিয়ে খালিছ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায়। এবং এর মাধ্যমে জনগণকে দুনিয়া ও আখিরাতে সুখী দেখতে চায়।
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ লিফলেট ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে সরকারকে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিপূর্বে দু’বার আহবান জানিয়েছে। প্রতিবারেই সরকার তাদের কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। জামা’আতুল মুজাহিদীন তার কোন পাল্টা এ্যাকশন নেয়নি। কিন্তু এবারের আহবান জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ -এর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠার ৩য় আহবান। এই আহবানের পর সরকার যদি এদেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা না করে, বরং আল্লাহর আইন চাওয়ার অপরাধে কোন মুসলিমকে গ্রেফতার করে, অথবা আলেম ওলামাগণের উপর নির্যাতন চালায়, তাহলে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পাল্টা এ্যাকশন নিবে ইনশাআল্লাহ।
জাতীয় সংসদের সরকারী ও বিরোধীদলের প্রতি আহবান !
কাফের রচিত গণতান্ত্রিক এই পদ্ধতিটি সরকারী ও বিরোধী দল নামে দুটি পক্ষ সৃষ্টি করে জাতিকে দলে দলে বিভক্ত করে দেয়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হরতাল, অবরোধ করে জনগণের ক্ষতি সাধন করার অধিকার দেয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির অপরাধের জন্য জনগণকে অবরুদ্ধ করে রাখা, সারা দেশ অচল করে দেয়াও গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধান সম্মত।
এদেশে যারা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চায় তারা ইসলামের শত্রু। অতএব, আল্লাহর হিদায়াত পেতে চাইলে দলাদলি বাদ দিয়ে সরকারী ও বিরোধীদল মিলে অবিলম্বে দেশে ইসলামী আইন চালু করুন। তাগুতী সংবিধান পরিত্যাগ করে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে সমুদয় শিরক-বিদআত, অশ্লীলতা দূর করে জনগণকে সঠিক ভাবে ইসলাম পালন করতে দিন। আর আপনারা যদি বুশ-ব্লেয়ার চক্রের ভয়ে দেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করার সাহস না পান, তাহলে গণতন্ত্রের তাগুতি রাজনীতি ছেড়ে দিন। আলেম-ওলামা, মাশায়েখ ও ইসলামী চিন্তাবিদগণের সমন্বয়ে শুরাই পদ্ধতিতে তৌহিদী জনতা এদেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করবে ইনশা-আল্লাহ।
সরকারী আমলা ও বিচারকগণের প্রতি আহবান !
সরকার দেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা না করলে আপনারা প্রশাসনিক কাজকর্ম ও তাগুতী আইনে বিচারকার্য পরিচালনা বন্ধ করুন। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্নক সহযোগীতা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন ধন্য করুন।
সেই সাথে আর্মি, বিডিআর, পুলিশ ও র*্যাব সহ সকল সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণের প্রতি আহবান !
আপনারা তাগুতি আইন হিফাযতের পরিবর্তে আল্লাহর আইন হিফাযতে সচেষ্ট হোন। তাগুতের আদেশ মানবেন না, আল্লাহর আদেশ মানুন। তাগুতের নির্দেশে আল্লাহর সৈনিকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না। তাগুতের গুলামী ছেড়ে, আল্লাহর সৈনিকদের দলে যোগ দিন। তাগুতের সৈনিক হওয়ার পরিবর্তে আল্লাহর সৈনিক হয়ে যান। আর যারা তাগুতের গোলামী না ছাড়বে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা’আলা বলেন-
الَّذِينَ آَمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا
অর্থ : যারা ঈমানদার তারা লড়াই (সশন্ত্র জিহাদ) করে আল্লাহর রাহে, পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা লড়াই করে তাগুতের পক্ষে। সুতরাং তোমরা লড়াই (সশস্ত্র জিহাদ) করতে থাক শাইত্বনের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে- (দেখবে) শাইত্বনের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল (সূরা নিসা : ৭৬)
বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহবান !
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হচ্ছে জর্জ ডব্লিউ বুশ (এটি ২০০৫ সালের লিখা)। সে সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ* মুসলিমদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং জোর করে সকল মুসলিম দেশে কুফরি সংবিধান চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে ঈমানহারা করতে চায়। সমগ্র পৃথিবীতে গণতন্ত্রের কুফরী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে New World Order এর মাধ্যমে গোটা পৃথিবীকেই তার নির্দেশের আওতায় আনতে চায়। এ যেন এক নব্য ফেরাউনী অভিলাষ। কিন্তু আল্লাহর সৈনিকরা তার এ অভিলাষ পূর্ণ হতে দিবে না এবং গণতন্ত্রের কুফরী মতবাদও প্রতিষ্ঠা হতে দিবে না। গণতন্ত্র হচ্ছে তাগুতের উদ্ভাবিত পদ্ধতি। পৃথিবীতে তাগুতী শক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য এটা তাদের প্রধান অস্ত্র। তাগুতী বিধান আল্লাহর পথের মুজাহিদদেরকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য যারা অস্ত্র ধরে তাদেরকে বলে জঙ্গী, সন্ত্রাসী। অথচ আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا خُذُوا حِذْرَكُمْ فَانْفِرُوا ثُبَاتٍ أَوِ انْفِرُوا جَمِيعًا
অর্থ : হে ঈমানদারগণ ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। (সূরা নিসা : ৭১)
অতএব বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহবান, আপনারা প্রতিটি মুসলিম দেশে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে বাধ্য করুন। সকল মুসলিম দেশ হতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে তাগুতী শাসকদের উৎখাত করে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করুন। কুফরি জাতিসংঘ পরিত্যাগ করুন। ইসলামী দেশ মিলে মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করে মুসলিম উম্মাহকে শক্তিশালী করুন।
কাফির মুশরিকদের প্রতি হুশিয়ারী !
বুশ-ব্লেয়ার সহ সমস্ত জালিম শাসকদেরকে হুশিয়ার করা যাচ্ছে যে, তোমরা মুসলিম দেশের দখলদারীত্ব ছেড়ে দাও। মুসলিম দেশে আর মোড়লীপনা করার চেষ্টা করো না। সারা বিশ্বে মুসলিমরা জেগে উঠছে। এখনো যদি মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ না কর, তাহলে তোমাদেরকে পৃথিবীর কোথাও নিরাপদে থাকতে দেয়া হবে না। ইসলামদ্রোহী NGO দেরকে সতর্ক করা যাচ্ছে যে, তোমরা মুসলিম দেশে ইসলাম বিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ কর। তা না হলে তোমাদেরকে সমূলে উৎপাটন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ওয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা ‘আলা খাইরি খালকিহী মুহাম্মাদিও ওয়া’আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন।
আহবানেঃ জামা‘আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ।
পরিবেশনায়
১৭ই আগস্টের আহবান
১৭ই আগষ্ট ২০০৫।
সারাদেশের ৬৩টি জেলায় বোমা ফাটিয়ে কি জানাতে চেয়েছিল জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ?
কেউ কি তার ৩য় চোখ দ্বারা সেটা বুঝতে চেয়েছেন?
নাকি চোখে হলুদ মিডিয়ার চশমা পড়ে তাদের বলা বুলি আওড়াচ্ছেন?
হে উম্মাতে মুহাম্মাদী !
চোখ খুলুন। ৩য় চোখ মানে আপনার বিবেকের চোখ খুলুন।
একবার চিন্তা করুন,
কেন এই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এর আমীর সহ শীর্ষস্থানীয় ভাইয়েরা তাদের জীবন বিলিয়ে গেলেন?
কেন তারা মানব রচিত আইনের কাছে মাথা নত করলেন না?
সরকার তো বলেছিল, তারা যদি ভুল স্বীকার করে প্রাণ ভিক্ষা চায়, তবে তাদের মাফ করে দেয়া হবে? তবে কেন তারা রাজি হন নি?
আসুন একটু জেনে নিই, কি লিখা ছিল দুই পৃষ্ঠার ঐ কাগজে? যার জন্য তাদেরকে ফাঁসীতে ঝুলানো হল?
যার জন্য তাগুতের মাসনাদ নড়ে গেল?
কেন তারা আমেরিকায় যেয়ে তাদের সাহায্য ভিক্ষা চাইল?
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ -এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আহবান !
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। অতঃপর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কারো বিধান দেয়ার অধিকার নাই। (সূরা ইউসুফ : ৪০)
أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ
অর্থ : শুনে রাখ ! তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। (সূরা আ’রাফ : ৫৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَا تَزَالُ عِصَابَةٌ مِّنْ أُمَّتِيْ يُقَاتِلُوْنَ عَلَى أَمْرِ اللّٰهِ قَاهِرِيْنَ لِعَدُوِّهِمْ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتّٰى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ وَهُمْ عَلَى ذَالِكَঅর্থ : আল্লাহর আইনকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমার উম্মতের মধ্যে একটি ইছাবা (দল) সব সময় সশস্ত্র জিহাদ করে যাবে। তারা তাদের শত্রুদের প্রতি কঠোর হবে, যারা তাদের বিরোধীতা করবে, তারা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা কিয়ামাত পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, ই. সে. হা : ৪৮০৫)
জনগণের প্রতি আহবান !
প্রিয় দেশবাসী মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি রূপে এবং শুধুই তাঁর ইবাদাতের জন্য যাতে থাকবে না কোন অংশীদার। আমাদের মাঝে শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করেছেন এই শিক্ষা দেয়ার জন্য যে আমরা কিভাবে আমাদের বিশ্বাস ও কাজ কর্মে ত্বাগুতকে বর্জন করতে পারি। আল্লাহ তা’আলা বলেন-
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
অর্থ : প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই আমি রাসূল পাঠিয়েছি এ দায়িত্ব দিয়ে যে, তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত কর এবং সকল প্রকার তাগুতকে বর্জন কর। (সূরা নাহল : ৩৬)
তাগুতঃ মানুষ যদি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ইলাহ বা উপাস্যের আসনে বসিয়ে তার ইবাদাত বা আনুগত্য করে এবং কোন ব্যাপারে তাকে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তবে অংশীদার ইলাহকে বলা হয় “তাগুত”।
ক্ষমতাসীন তাগুতঃ আল্লাহর বিধান পরিবর্তনকারী জালিম শাসক, অর্থাৎ যে শাসক আইনের বলে হারামকে হালাল করে। যেমনঃ যিনা, সুদ, মদ্যপান বা অশ্লীলতার অনুমোদন দেয়, কিংবা হালালকে হারাম করে। যেমনঃ জিহাদ-ক্বিতালে বাধা দেয়। অনুরূপভাবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজেদের তৈরিকৃত অথবা কাফির-মুশরিকদের বিধান অনুযায়ী শাসন করে সে হলো ক্ষমতাসীন তাগুত”।
কোন মুসলিম ভূখন্ডে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কারো বিধান চলতে পারে না। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয়, শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম বাস করা সত্ত্বেও আমাদের দেশে আল্লাহর বিধান কার্যকর নেই। উপরন্তু দেশের জেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নিম্ন ও উচ্চ আদালত গঠন করে যে বিচারকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে তার মূল ভিত্তি হচ্ছে মনুষ্য রচিত সংবিধান। যে সংবিধান প্রণয়ন করেছে কিছু জ্ঞানপাপী মানুষ। কথা ছিল মানুষ হিসেবে একজন মানুষের কাজ হবে আল্লাহর দাসত্ব করা ও আল্লাহর বিধানের আনুগত্য করা। কিন্তু সে মানুষ আজ নিজেই সংবিধান রচনা করে আল্লাহর বিধানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে আছে আল্লাহ বিরোধী শক্তি। কারণ যে প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র প্রধান কিংবা রাষ্ট্রের অন্যান্য পরিচালকবর্গ নির্বাচিত হচ্ছেন তা একটি সম্পূর্ণ অনৈসলামিক পদ্ধতি। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে কোথাও প্রচলিত কাফির-মুশরিক বিরচিত গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি পদ্ধতির স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। এসব প্রত্যেকটি পদ্ধতিই হচ্ছে আল্লাহর বিধানের প্রতিপক্ষ এক একটি ব্যবস্থা। এবং কাফির-মুশরিক ও ইহুদী মস্তিষ্ক প্রসূত এসব বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে শুধুমাত্র মুসলিম আক্বীদা ও বিশ্বাসকে ধ্বংস করার মানসে। কাজেই এদেশের মুসলিম জনতার আজ ভাবার সময় এসেছে।
তাই জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ আল্লাহর হুকুম ও ঈমানের দাবীকে সামনে রেখে এই প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে। পাশাপাশি যে সংবিধানকে ভিত্তি করে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, তা আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক; বিধায় এ ব্যবস্থা ও তথাকথিত নির্বাচন পদ্ধতি পরিহার করে আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের তরীকায় দেশ পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছে। অন্যথায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য আল্লাহ নির্দেশিত ক্বিতাল পদ্ধতির সামগ্রিক বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর।
অতএব যতদিন পর্যন্ত দেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত তাগুতের বিচারালয়ে যাওয়া বন্ধ রাখুন। আপনাদের যেকোন বিচার ফয়সালার জন্য মাসজিদের খতিব, মাদরাসার মুহাদ্দিস ও অভিজ্ঞ আলেমে দ্বীনের কাছে গিয়ে আল্লাহর আইনের ফয়সালা প্রার্থনা করুন। তাগুত সরকারের আইন উপেক্ষা করে আল্লাহর আইনের বিচার ফয়সালা নিন।
আল্লাহ বলেন-
أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
অর্থ : তারা কি জাহেলী বিধানের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা ঈমানদারদের জন্য উত্তম ফয়সালাকারী কে? (সূরা মায়েদাহ : ৫০)
أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا
অর্থ : তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন বিচারকের অনুসন্ধান করবো? (সূরা আন’আম : ১১৪)
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ
অর্থ : আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে আমরা ঈমান এনেছি, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল। তারা তাগুতকে বিধান দানকারী বানাতে চায়, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, তারা যেন তাকে অমান্য করে। (সূরা নিসা : ৬০)।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান !
যারা হিদায়াতের অনুসারী তাদের প্রতি সালাম। হিদায়াত প্রাপ্তির পর গোমরাহী ও অন্ধকারের দিকে ফিরে আসা উচিত নয়। আল্লাহ তাঁর রাসূল কে সত্য দ্বীন সহকারে সৃষ্টির প্রতি প্রেরণ করেছেন সুসংবাদ বহনকারী ও সতর্ককারী হিসাবে। যারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছে, আল্লাহ তাদের সঠিক ভাবে হিদায়াত দিয়েছেন। আর যারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছেন। অতঃপর তারা ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, ইসলামের আনুগত্য করেছে।
অতএব বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান !
আপনারা এদেশে আল্লাহর আইন চালু করুন। আমরা আপনাদের সহযোগীতা করব। আমরা ক্ষমতা চাই না, আমরা দেশে তাগুতী শাসনের পরিবর্তে আল্লাহর আইন চাই।
[এ ছিল ১ম পৃষ্টার লিখা। নীচে ২য় পৃষ্টা ও তাতে কি লিখা ছিল তা দেয়া হল।]
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এর কর্মীরা আল্লাহর সৈনিক। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করার জন্য এরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে। যেমন নিয়েছিলেন নবী-রাসূল, সাহাবী ও যুগে যুগে বীর মুজাহিদগণ। জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ এদেশ থেকে সমস্ত শিরক-বিদআতের অবসান ঘটিয়ে খালিছ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায়। এবং এর মাধ্যমে জনগণকে দুনিয়া ও আখিরাতে সুখী দেখতে চায়।
জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ লিফলেট ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে সরকারকে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিপূর্বে দু’বার আহবান জানিয়েছে। প্রতিবারেই সরকার তাদের কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। জামা’আতুল মুজাহিদীন তার কোন পাল্টা এ্যাকশন নেয়নি। কিন্তু এবারের আহবান জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ -এর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠার ৩য় আহবান। এই আহবানের পর সরকার যদি এদেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা না করে, বরং আল্লাহর আইন চাওয়ার অপরাধে কোন মুসলিমকে গ্রেফতার করে, অথবা আলেম ওলামাগণের উপর নির্যাতন চালায়, তাহলে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পাল্টা এ্যাকশন নিবে ইনশাআল্লাহ।
জাতীয় সংসদের সরকারী ও বিরোধীদলের প্রতি আহবান !
কাফের রচিত গণতান্ত্রিক এই পদ্ধতিটি সরকারী ও বিরোধী দল নামে দুটি পক্ষ সৃষ্টি করে জাতিকে দলে দলে বিভক্ত করে দেয়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হরতাল, অবরোধ করে জনগণের ক্ষতি সাধন করার অধিকার দেয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির অপরাধের জন্য জনগণকে অবরুদ্ধ করে রাখা, সারা দেশ অচল করে দেয়াও গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধান সম্মত।
এদেশে যারা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চায় তারা ইসলামের শত্রু। অতএব, আল্লাহর হিদায়াত পেতে চাইলে দলাদলি বাদ দিয়ে সরকারী ও বিরোধীদল মিলে অবিলম্বে দেশে ইসলামী আইন চালু করুন। তাগুতী সংবিধান পরিত্যাগ করে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে সমুদয় শিরক-বিদআত, অশ্লীলতা দূর করে জনগণকে সঠিক ভাবে ইসলাম পালন করতে দিন। আর আপনারা যদি বুশ-ব্লেয়ার চক্রের ভয়ে দেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করার সাহস না পান, তাহলে গণতন্ত্রের তাগুতি রাজনীতি ছেড়ে দিন। আলেম-ওলামা, মাশায়েখ ও ইসলামী চিন্তাবিদগণের সমন্বয়ে শুরাই পদ্ধতিতে তৌহিদী জনতা এদেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করবে ইনশা-আল্লাহ।
সরকারী আমলা ও বিচারকগণের প্রতি আহবান !
সরকার দেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা না করলে আপনারা প্রশাসনিক কাজকর্ম ও তাগুতী আইনে বিচারকার্য পরিচালনা বন্ধ করুন। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্নক সহযোগীতা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন ধন্য করুন।
সেই সাথে আর্মি, বিডিআর, পুলিশ ও র*্যাব সহ সকল সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণের প্রতি আহবান !
আপনারা তাগুতি আইন হিফাযতের পরিবর্তে আল্লাহর আইন হিফাযতে সচেষ্ট হোন। তাগুতের আদেশ মানবেন না, আল্লাহর আদেশ মানুন। তাগুতের নির্দেশে আল্লাহর সৈনিকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবেন না। তাগুতের গুলামী ছেড়ে, আল্লাহর সৈনিকদের দলে যোগ দিন। তাগুতের সৈনিক হওয়ার পরিবর্তে আল্লাহর সৈনিক হয়ে যান। আর যারা তাগুতের গোলামী না ছাড়বে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা’আলা বলেন-
الَّذِينَ آَمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا
অর্থ : যারা ঈমানদার তারা লড়াই (সশন্ত্র জিহাদ) করে আল্লাহর রাহে, পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা লড়াই করে তাগুতের পক্ষে। সুতরাং তোমরা লড়াই (সশস্ত্র জিহাদ) করতে থাক শাইত্বনের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে- (দেখবে) শাইত্বনের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল (সূরা নিসা : ৭৬)
বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহবান !
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হচ্ছে জর্জ ডব্লিউ বুশ (এটি ২০০৫ সালের লিখা)। সে সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ* মুসলিমদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং জোর করে সকল মুসলিম দেশে কুফরি সংবিধান চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে ঈমানহারা করতে চায়। সমগ্র পৃথিবীতে গণতন্ত্রের কুফরী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে New World Order এর মাধ্যমে গোটা পৃথিবীকেই তার নির্দেশের আওতায় আনতে চায়। এ যেন এক নব্য ফেরাউনী অভিলাষ। কিন্তু আল্লাহর সৈনিকরা তার এ অভিলাষ পূর্ণ হতে দিবে না এবং গণতন্ত্রের কুফরী মতবাদও প্রতিষ্ঠা হতে দিবে না। গণতন্ত্র হচ্ছে তাগুতের উদ্ভাবিত পদ্ধতি। পৃথিবীতে তাগুতী শক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য এটা তাদের প্রধান অস্ত্র। তাগুতী বিধান আল্লাহর পথের মুজাহিদদেরকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য যারা অস্ত্র ধরে তাদেরকে বলে জঙ্গী, সন্ত্রাসী। অথচ আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا خُذُوا حِذْرَكُمْ فَانْفِرُوا ثُبَاتٍ أَوِ انْفِرُوا جَمِيعًا
অর্থ : হে ঈমানদারগণ ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। (সূরা নিসা : ৭১)
অতএব বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহবান, আপনারা প্রতিটি মুসলিম দেশে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে বাধ্য করুন। সকল মুসলিম দেশ হতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে তাগুতী শাসকদের উৎখাত করে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করুন। কুফরি জাতিসংঘ পরিত্যাগ করুন। ইসলামী দেশ মিলে মুসলিম জাতিসংঘ গঠন করে মুসলিম উম্মাহকে শক্তিশালী করুন।
কাফির মুশরিকদের প্রতি হুশিয়ারী !
বুশ-ব্লেয়ার সহ সমস্ত জালিম শাসকদেরকে হুশিয়ার করা যাচ্ছে যে, তোমরা মুসলিম দেশের দখলদারীত্ব ছেড়ে দাও। মুসলিম দেশে আর মোড়লীপনা করার চেষ্টা করো না। সারা বিশ্বে মুসলিমরা জেগে উঠছে। এখনো যদি মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ না কর, তাহলে তোমাদেরকে পৃথিবীর কোথাও নিরাপদে থাকতে দেয়া হবে না। ইসলামদ্রোহী NGO দেরকে সতর্ক করা যাচ্ছে যে, তোমরা মুসলিম দেশে ইসলাম বিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ কর। তা না হলে তোমাদেরকে সমূলে উৎপাটন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ওয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা ‘আলা খাইরি খালকিহী মুহাম্মাদিও ওয়া’আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন।
আহবানেঃ জামা‘আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ।
পরিবেশনায়
Comment