আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
ইহুদী জালিম স্বৈরশাসকেরা আবারও রক্তস্রোতের ধারা দিয়ে পবিত্র মহিমান্বিত কুদস এর ভূমি প্রবাহিত করে দিলো।
ইহুদী সেনা ও তাদের মিত্র ইহুদিবাদীদের দল- কামান, ট্যাংক, ভারী গোলা দ্বারা ভুমিস্থল ও আকাশপথ হতে আক্রমণ চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। লুঠ করে চলেছে। তারা অসভ্য পাষণ্ড, তাদের হাতে নবীন মুসলমানেরা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং ইসলামী বিশ্ব তা শুধু পর্যবেক্ষণ করে চলেছে, দর্শনার্থীরা দর্শনই করে চলেছে, দর্শনার্থীর শেষ নেই। এমনই এক ক্ষতিকারক শয়তানের দল দর্শন করে চলেছে, যাদের অমানুষিক অত্যাচারের শেকলে বন্দী, অত্যাচার নিপীড়িত ফিলিস্তিনী ভাইদের সেই শেকল হতে মুক্ত করা সহজ নয়।
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
আমাদের ক্ষমা করো! আমরা তোমার মহিমান্বিত নামটি উল্লেখ করতে, এবং তোমার সেই শিশুদের বিরুদ্ধে যা সংঘটিত হয়ে চলেছে, তার বর্ণনা দিতে সুগভীর লজ্জায় আমরা নিমজ্জিত, এই অনুভূতি হচ্ছে যে আমরা পক্ষাঘাতরোগাক্রান্ত। আমি বুঝে উঠতে পারছিনা, সম্ভবত আমরা এমন সময় বসবাস করছি, যখন এই বর্তমানকার মুসলমান ও তার বয়স এই অবস্থায় প্রত্যক্ষ ও অশ্রু ত্যাগ ব্যতীত অন্য সকল কাজে অক্ষম। এবং আমরা যখন অশ্রু ঝড়াই, তা বরঞ্চ আমরা দুটি কারণে করে থাকিঃ আত্মিক ধর্মীয় ঘাটতির কারণে এবং নিজের বাচ্চার চোখে রক্ত সিক্ত সেই অশ্রু ত্যাগ দেখে। ওহে জননী আকসা, আমাদের জবান এঁটে দেওয়া হয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে।
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
আমরা গভীর লজ্জায় নিমজ্জিত, এ উপলব্ধি করে যে, কীভাবে এই ইসলামের উম্মতে তরুণী সেই বীরযোদ্ধা বর্তমানের এই হায়েনা শকুনদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে, বুক উঁচিয়ে তারা সামনে এগিয়ে চলেছে সেই শত্রুদের যুদ্ধ ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে, এবং তাদের আক্রমণ চালানোর বস্তু হিসাবে কিছুই নেই, বরঞ্চ আছে ইট ও কঙ্কর। তাদের কণ্ঠে উচ্চধ্বনিতে শুধু সেই তাকবীর এবং তারা এটি ভেবে বিস্মিত হচ্ছে যে “তাদের সম্মান রক্ষার্থে এই বিশ্বভুবনে কি কোন মুসলিম পুরুষত্ব বিদ্যমান নেই?” এই হায়েনা, নেকড়ে শকুনদের ধারালো ও দাঁতালো কামড় ও ছোবল থেকে ধর্ম পরিচয় ও হিজাব রক্ষার্থে, সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে সর্বক্ষমতা দ্বারা শত্রুদের মোকাবেলা করতে, তাদেরকে বাধ্য করেছে।
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
ফিলিস্তিনে আমাদের সেই আহত হওয়া শিশু বাচ্চাদের প্রতি আমাদের অজস্র অশ্রু ও রক্তিম বেদনা ছাড়া আর কোন বক্তব্য নেই । আফসোস হয়, ইসলাম বিশ্বের সেই সব নেতারা ফিলিস্তিনী জাতির সেই সাহস, তাদের অনুপ্রেরণা এবং তাদের জাগিয়ে তুলতে সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত ও অক্ষম। হায়! তারা অন্তত পবিত্র ফিলিস্তিনের ভূমিটুকু রক্ষার্থে আহবান জানাতো। কিন্তু না, মাতৃগত তারা এই টুকুও দাবি করতে অক্ষম “ফিলিস্তিন আমাদের, এবং এ ভূমি হতে সমুদ্র রক্ষার্থে আমাদের মধ্যে বিচ্ছেদ অসম্ভব, আমাদের বন্ধন অটুট”। দুর্ভাগ্যবশত দৃষ্টিহীন, ও কাপুরুষতায় আচ্ছন্ন হয়ে ইহুদীদের উপদ্রব লক্ষ্য করা ছাড়া, তারা তাদের হারানো সম্মান ও লুণ্ঠিত মর্যাদার পুনরুদ্ধার বা পুনরদাবি জানাতে অক্ষম।
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
দখলদার ইহুদীদের আগ্রাসন ও ছোবল হতে রক্ষার্থে কুদসের পবিত্র ভূমিই শুধু মুসলমান বিশ্বকে আহবান করছে না, বরঞ্চ ফিলিস্তিনের- প্রতিটি মা ও বোনেরা, শিশু ও গুরুজনেরা, ভূমির সমস্ত নির্যাতিতরা আহবান জানাচ্ছেঃ কে আমাদের সহযোগী হবে, কে হবে আমাদের রক্ষক! কোথায় সেই খালিদ, কোথায় সেই উমর, কোথায় সেই সালাউদ্দিন, কোথায় মোহাম্মদ বীন কাসেম? তৎসত্ত্বেও, বিশ্বের লক্ষ্য কোটিরও বেশি মুসলমানদের এই আহবানের প্রতি তাদের জবাবটা কি জানেন?
নিশ্চুপ থাকো নিশ্চুপ থাকো নিশ্চুপ থাকো!!!
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
এই ইহুদী, গুন্ডাবাজদের হাতে অসহায় যে সাধারণেরা, শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া সমূহ এই দৃশ্য সম্প্রচার করছে, উপহাস করছে এই বলে যে ‘দেখো দেখো ফিলিস্তিনের এই জমিনে মোহাম্মদ এর সেই উম্মতের অবস্থা”-তাঁর উপর শান্তি ও রহমতের অফুরন্ত ধারা বর্ষিত হোক। তৎসত্ত্বেও অনুধাবন করা যাচ্ছে, ক্রন্দন ও প্রত্যক্ষ করা ছাড়া আমাদের আর কোন শক্তি বা সামর্থ্য নেই, যেন অনুশোচনা ও অনুতাপ ব্যতীত আমাদের আর কোন উপায়ের পথ নেই। কিন্তু আল্লাহ্* প্রত্যক্ষদর্শী ও মহান জ্ঞানী। ওহে ফিলিস্তিন! বিশ্ব ইসলামের মুসলমানেরা তোমার এই হালতে অত্যাচারিত হচ্ছে, তারা অস্রুতে সিক্ত, কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। আপনি যদি ইহুদীদের জালে চির বন্দী হয়ে থাকেন, তবে- হে প্রিয়জনেরা, আপনারা জানুন, ইসলাম বিশ্বের অন্যান্য মুসলমানেরা চিরস্থায়ি সেই বিষাক্ত সাপ খৃস্টানদের (শইতান অ্যামেরিকা) ফাদে থেকে- তাদের আগ্রাসন, স্বার্থবাজদের বিরুদ্ধে, কোরআন ও ধর্মের চরম শত্রুদের বিরুদ্ধে, তারা তাদের সকল প্রচেষ্টা দিয়ে এই ইহুদিবাজদের সহায়ক ও মিত্রদের সাথে যুদ্ধ করছে, নিজেদেরকে বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছে।
আমাদের ক্ষমা করো হে ফিলিস্তিন!
আমাদের এ ছাড়া অধিক কোন বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ্* তায়ালার নিকট আমাদের সর্বজনীন দোয়ায়- নির্যাতিত তোমাদের সেই আত্মচিৎকার বহন করি। আমরা নিরুপায়, দুর্বল, আল্লাহ্* তায়ালার কাছে লজ্জিত “ হে আল্লাহ্*, আমাদের প্রতিটা দৃষ্টি, প্রতিটা হৃদয়, তোমার সহযোগিতা ও কারুনার প্রতিক্ষায় রয়েছে। তোমার শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করো। কেনোনা অবশ্যই আমাদের মুসলমানদের তুমি ছাড়া আর কেউ সহায়ক নেই। আমাদের একমাত্র আত্মকান্নাঃ “আমরা আমাদের অভিযোগ একমাত্র আল্লাহ্*র নিকটই ব্যক্ত করি”।
ইসলামী ইমারাহ আফগানিস্তান
অনুবাদে ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে শুধরে দিবেন।
Comment