Announcement

Collapse
No announcement yet.

আন নাফির বুলেটিন ইস্যু-১৯ || “আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেও না” || রবিউস সানী - ১৪৩৯ হি&

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আন নাফির বুলেটিন ইস্যু-১৯ || “আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেও না” || রবিউস সানী - ১৪৩৯ হি&

    আন নাফির বুলেটিন ইস্যু-১৯
    “আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেও না”
    রবিউস সানী || ১৪৩৯ হিজরী

    আস সাহাব মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত ও আন নাসর মিডিয়া কর্তৃক বাংলায় অনূদিত






    অনালাইনে পড়ুন



    ডাউনলোড করুন
    pdf






    word





    image








    আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

  • #2
    আন নাফির বুলেটিন ইস্যু-১৯
    “আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেও না”
    রবিউস সানী || ১৪৩৯ হিজরী

    আস সাহাব মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত ও আন নাসর মিডিয়া কর্তৃক বাংলায় অনূদিত


    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন-
    وَلَا تَنْسَوُا الْفَضْلَ بَيْنَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
    “আর পারস্পরিক সহানুভূতির কথা বিস্মৃত হয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সেসবই অত্যন্ত ভাল করে দেখেন”। (সূরা বাকারা-২৩৭)
    ইচ্ছাধীন বিষয়সমূহে মতভেদ এবং বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আর মতভেদ থাকাটাই মূলত চিন্তা-ভাবনার পরিপক্বতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের একটি নিদর্শন। যতদিন পর্যন্ত অনুমানের তুলনায় নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণকে, আঘাতের তুলনায় উপকারের পরিমাণকে এবং বৈধ স্বার্থসমূহকে অগ্রাধিকার দেওয়ার উপর এই মতপার্থক্যগুলো নির্ভরশীল থাকবে, আর যতদিন পর্যন্ত ইজতিহাদ করতে সক্ষম (অর্থাৎ জ্ঞানের অধিকারী লোক) ব্যক্তিরাই কেবল ইজতিহাদ করবে, তাদের অভিমত ব্যক্ত করবে, উপলব্ধি এবং গবেষণা করবে, ততদিন পর্যন্ত এটি (মতভেদ) স্বাভাবিক থাকবে, ততদিন এটি নিদর্শন হয়ে থাকবে।
    ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেছেন-
    “যদি সুন্নাহ থেকে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকে, অথবা আলেমগণের ঐক্যমত্য না থাকে এবং কোরআন ও সুন্নাহর স্বাধীন ব্যাখ্যার মাধ্যমে আসমানি বিধানের কোনো নিয়মকে আহরিত করার সুযোগ না থাকে, তবে যে তার বিচারবুদ্ধিসম্পন্নতা চর্চা করে (অর্থাৎ ইজতিহাদ করে) অথবা এমন কোনো আলেমের (যিনি ইজতিহাদ করেছেন) অভিমতকে অনুসরণ করে, তাহলে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না।”
    অতএব, আমরা পরস্পরকে ক্ষমা করতে শিখব; বিশেষভাবে যদি ইজতিহাদ হয় অথবা এমন আলেমগণের প্রকাশিত অভিমত হয়, যাদের গুণাবলী এবং দাওয়াত ও জিহাদের ময়দানে যাদের কুরবানী ও আত্মত্যাগ সুপরিচিত, একটি বিশেষ প্রসঙ্গে যদি তাদের অভিমত সঠিক অবস্থানের সাথে ঐক্যমতে না পৌঁছায়, তবে এমন বলা যাবে না যে, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ অভিমত গ্রহণ করেছেন। বরং ঐ পরিস্থিতিতে তাদের চিন্তা হতে পারে অপূর্ণ ছিল, যা তাদেরকে একটি ভুল সিদ্ধান্তের দিকে পরিচালিত করেছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাসম্ভব পরামর্শ দেওয়া, তাদের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ভদ্র ও উপযুক্ত কথা পছন্দ করা, এগুলো হলো তাদের অধিকার।
    আমাদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তাদের অভিমতগুলোকে ইতিবাচকভাবে ব্যাখ্যা করা এবং অদ্ভুদভাবে অন্যকে বেদআতী, পাপী এবং মূর্খ বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মনীতিসমূহের সুস্পষ্ট ধারণা থাকা। এরূপ অভিযোগ অত্যন্ত অনুপযুক্ত যখন সাধারণ জনতাকে নির্দেশ করা হয়- ‘লোকজনের সাথে এই অপ্রীতিকর দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা মেনে নাও।’
    আরে ভাই! এরা তো সেসব লোক যারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে ধর্মের প্রতিরক্ষায়, যারা কারাগারের ছোট কক্ষের মুখোমুখি হয়েছে, আর আজকের দিনে যাদের অবস্থান তাদের গুণ এবং সততার একটি সাক্ষী।
    আলেমগণের গৃহীত অভিমত হলো, ‘মতপার্থক্য গ্রহণযোগ্য এবং যতদিন পর্যন্ত শরিয়ত যাদেরকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলেছে তাদের মাঝে এ সকল মতপার্থক্য বিদ্যমান থাকবে, ততদিন পর্যন্ত মতপার্থক্যের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক, বিরোধিতা বা অপবাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
    ন্যায়নিষ্ঠ পূর্ববর্তী সালাফগণও পরস্পরের সাথে ভিন্নমত ছিলেন, তখন তারা মতপার্থক্যের মূলনীতি এবং আচরণের ব্যাপারটিকে মেনে নিয়েছিলেন। যারা এই মূলনীতিকে উপেক্ষা করেছিল এবং এর বিরুদ্ধে কাজ করেছিল, তাদের জ্ঞান পবিত্র ছিল না, আর বিরোধী পক্ষের মোকাবেলায় তাদের নির্দয়তার কারণে জনগণও তাদের প্রশংসায় আগ্রহী ছিল না।
    ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেছেন-
    “লোকজনের মধ্যে আগ্রহের ভিন্নতা থাকার কারণে, বোধশক্তি এবং উপলব্ধির স্তরে ভিন্নতা থাকার কারণে মতপার্থক্য অবশ্যম্ভাবী (অর্থাৎ মতের অমিল হবেই)। যাইহোক, এসকল মতপার্থক্যকে শত্রুতা এবং অবিচারের কাঠগড়ায় বিচার করা নিন্দনীয়।”
    অতএব, আমাদের সাথে ভিন্নতার কারণেই কেবল তাদেরকে অবিশ্বাস করা, তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো বা তাদের মর্যাদাহানি করতে তাদের ভুলগুলোর পেছনে পড়া আমাদের জন্য কোনো ক্রমেই উচিত নয়। যদি আমরা বিরোধিতা করতে শুরু করি, প্রত্যেককে বিদআতী হিসেবে ঘোষণা দিই, তাদেরকে নিয়ে উপহাস করি যারা একটি স্বেচ্ছাধীন বিষয়ে গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের করা ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে; আর সিদ্ধান্ত বা অভিমতে (ইজতিহাদে) ভুল করা, এটা এমন ভুল যার জন্য আল্লাহ তা‘আলা ভুলকারীকে শুধু ক্ষমাই করবেন না বরং পুরস্কারও দেবেন, তাহলে আমাদের কেউ এর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
    লোকজনের সত্য বা মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য প্রত্যেক বিষয়ই লিটমাস টেস্ট নয়। এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলোতে মতপার্থক্যের সুযোগ আছে। যেমন- প্রত্যেক দল পরস্পরের সাথে ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সত্যকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যেভাবে বনু কুরাইযার যুদ্ধের দিন এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণের সাথে। আমাদের পূর্ববর্তীগণের ইতিহাস এমন উজ্জ্বলময় দৃষ্টান্তে ভরপুর।
    ইউনুস আল সাদাফি এই কথা বলে একটি উক্তি দিয়েছেন, “শাফেয়ী-এর চেয়ে অধিক বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন আমি আর কাউকে দেখিনি। আমি একটি বিষয়ে তাঁর সাথে বিতর্ক করেছিলাম, আর তারপর আমরা পরস্পর ভিন্ন পথ অবলম্বন করি। পরবর্তীতে যখন তিনি আমার সাথে আবারও সাক্ষাত করলেন, তখন তিনি আমার হাত ধরলেন এবং বললেন, “হে মূসা! এটি কি চমৎকার হতো না যদি আমরা ভাই ভাই হয়ে থাকতাম, এমনকি যদিও একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আমরা একমত নই।” (সিয়ারু আ’লা মিন নুবালা)
    যাহাবি এই ঘটনার উপর মন্তব্য করে বলেছেন-
    “এটি ছিল ইমামের চিন্তা-ভাবনার পরিপক্বতার প্রমাণ এবং তার নিজের গভীর বোধশক্তির প্রমাণ। লোকজন অন্তর্দৃষ্টিতে সবসময় পরস্পর থেকে পৃথক।”
    আহমদ বিন হাফস আস সা’দী বলেছেন, তিনি আহমদ বিন হাম্বলকে বলতে শুনেছেন-
    “আমরা ইসহাক ইবনে রাহওয়া এর মতো আর কাউকে খোরাসান থেকে আসতে দেখিনি, যদিও তিনি কিছু বিষয়ে আমাদের বিরোধিতা করেছিলেন। লোকজন সবসময়ই একে অন্যের সাথে তাদের অভিমতে ভিন্ন হবে।” (সিয়ারু আ’লা মিন নুবালা)
    আহমদ এবং আলী বিন আল-মাদিনী তাদের কণ্ঠস্বর উঁচু হয়ে যাওয়ার (অর্থাৎ জোরে কথা বলাবলি) পূর্ব পর্যন্ত একে অপরের সাথে ভিন্নমত ছিলেন। যখন আলী চলে যেতে চেয়েছিলেন, আহমদ গতিরোধ করে দাঁড়ান এবং তার ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরেন (তাকে থাকার জন্য অনুরোধ করেন)। (জামি বয়ানুল ইলম ওয়া ফাদলিহী, ইবনু আব্দিল বার)
    আহলুল রায় এবং আহলুল হাদিসের মাযহাবের মধ্যকার ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও আমরা ইমাম শাফেয়ীকে এই কথাগুলো বলে ইমাম আবু হানিফার প্রশংসা করতে দেখি-
    “লোকজন ফিকাহ’র ক্ষেত্রে বিপুলভাবে আবু হানিফার কাছে ঋনী।” (তাহযীবুল কামাল)
    এটাই ছিল আমাদের ন্যায়নিষ্ঠ পূর্ববর্তী সালাফদের পথ। আমাদের জন্য তাদের রেখে যাওয়া দৃষ্টান্তের সমকক্ষ হতে এবং তাদের দিকনির্দেশনার অনুসরণ করতে আমরা কতটাই না পিছিয়ে আছি! পরস্পরের সামাজিক ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রক্ষা করা দ্বীনের মূলনীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা আমাদেরকে কাজের প্রতিটি ধাপে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। কেবল মতপার্থক্যের কারণে আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দুর্বল করে ফেলা আমাদের জন্য উচিত নয়। যখন আমরা ভিন্নমত পোষণকারী হব, তখন আমাদেরকে অবশ্যই পরস্পরকে ক্ষমা করা শিখতে হবে। পরস্পরের প্রতি ঘৃণা এবং অবিশ্বাসের দরজাগুলো বন্ধ করতে এটি সাহায্য করবে।
    মহিমান্বিত আল্লাহ বলেছেন-
    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
    وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ ۖ وَاصْبِرُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
    “হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা শত্রুদলের মুখোমুখি হও, তখন তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় থাক এবং অধিক পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করতে থাক, যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য কর। তাছাড়া তোমরা পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব শেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সূরা আনফাল- ৪৫-৪৬)
    হে আল্লাহ! দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদেরকে আপনার রহমত দ্বারা বেষ্টন করে রাখুন, আর জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন।
    শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর। হে আল্লাহ! তাঁর সাহাবাগণের প্রতি এবং কিয়ামতের পূর্বপর্যন্ত যারা তাঁদের অনুসরণ করবে তাদের সকলের প্রতি আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যান। আমীন!
    আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

    Comment

    Working...
    X