বিবাহচ্ছুক যুবকদের জন্য উসমানী সাম্রাজ্যের অদ্ভূত আইন।
যুব সমাজের চারিত্রিক স্খলন আর নৈতিক অবক্ষয় ঠেকানোর একমাত্র মহৌষধ ‘বিয়ে’র ব্যাপারে ওসমানি খিলাফাহর বিবেকসম্মত কতগুলো চমৎকার আইন। আইনগুলো পড়ুন আর চিন্তা করুন- বর্তমান সময়ে এই আইনগুলো বলবৎ থাকলে আমাদের সমাজে কি অবৈধ প্রেম-ভালবাসা, পরকীয়া, নারীর শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, ইভটিজিং ইত্যাদি নৈতিক রোগ-বালাই জন্ম নিত? যুবতীরা কি আইবুড়োত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবেতর জীবনাতিপাত করত? বিয়ের বাজারে মন্দা দেখা দিত? পতিতাবৃত্তি রমরমা হয়ে উঠত?
(খেলাফত সময় কাল ১৩০০-১৯২৪ এর সময়)
(এক) ঐচ্ছিক বিয়ের বয়েস শুরু হত আঠার থেকে। শেষ হত পঁচিশে। এর মধ্যে বিয়ে না করলে, তাকে বাধ্য করে বিয়ে করানো হত।
(দুই) যদি কেউ অসুস্থতার অজুহাত দেখাত, তদন্ত করে দেখা হত, বক্তব্যটা সঠিক কি না। রোগটা নিরাময়যোগ্য হলে, সুস্থ্য হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় চাপ স্থগিত রাখা হত। আর দুরারোগ্য ব্যধি হলে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই বিয়ে করতে বাধা দেয়া হত।
(তিন) পঁচিশ হয়ে যাওয়ার পরও যদি কেউ বিনা কারণে বিয়ে না করে থাকত, তার আয়/ব্যবসা বা সম্পদের এক চতুর্থাংশ কেটে রাখা হত। জব্দকৃত অর্থ নিয়ে বিবাহোচ্ছুক গরীবদের বিয়ের বন্দোবস্ত করা হত।
(চার) পঁচিশের পরও বিয়ে না করলে, তাকে রাষ্ট্রীয় কোনও চাকুরিতে নেয়া হত না। কোনও সংগঠনেও ভুক্তি দেয়া হত না। আর চাকুরিতে থাকলে, ইস্তেফা দেয়া হত।
(পাঁচ) কোনও ব্যক্তির বয়স যদি পঞ্চাশ হয়ে যায়, ঘরে স্ত্রী থাকে একটা, কিন্তু তার আর্থিক সঙ্গতি ভাল, তখন তাকে সামাজিক কোন কাজে অর্থ দিয়ে অংশগ্রহণ করতে বলা হত। গ্রহণযোগ্য কোনও কারণ দেখিয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে, সামর্থ্য অনুসারে অন্তত এক থেকে তিনজন এতীমের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে বাধ্য করা হত।
(ছয়) আঠার থেকে পঁচিশের মধ্যে যদি কোনও গরীব যুবক বিয়ে করত, তাকে হুকুমতের পক্ষ থেকে ১৫৯ থেকে শুরু করে ৩০০ দুনমা পরিমাণের জমির বন্দোবস্তি দেয়া হত। চেষ্টা করা হত জমিটা যেন তার বাড়ির কাছাকাছি কোথাও হয়। এক দুনমা সমান: ৯০০ মিটার।
(সাত) গরীব বর যদি কারিগর বা ব্যবসায়ী হয়, তাকে পূঁজিপাট্টা দেয়া হত। কোনও বিনিময় ছাড়াই। তিন বছর মেয়াদে।
(আট) ছেলে বিয়ে করার পর, বাবা মায়ের সেবা করার জন্যে আর কোনও ভাই না থাকলে, বরকে বাধ্যতামূলক সেনাকার্যক্রম থেকে রেহাই দেয়া হত। তদ্রুপ মেয়ের বিয়ের পর যদি বাবা মায়ের সেবার জন্যে ঘরে কেউ না থাকে, মেয়ের জামাইকেও বাধ্যতামূলক সেনা কার্যক্রম থেকে রেহাই দেয়া হত।
(নয়) পঁচিশের আগেই বিয়ে করে তিনসন্তানের বাবা হলে, নৈশস্কুলে বিনামূল্যে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হত। সন্তান তিনজনের বেশি হলে, তিনজনের লেখাপড়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হত। বাকী সন্তানদের জন্যে দশ টাকা করে বরাদ্দ করা হত। তের বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত।
কোনও মহিলার ঘরে চার বা তার চেয়ে বেশি ছেলে সন্তান থাকত, তাকে মাথাপিছু ২০ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হত।
(দশ) কোন ছাত্র লেখাপড়ার কাজে ব্যস্ত থাকলে, লেখাপড়া শেষ হওয়া পর্যন্ত বিয়ে স্থগিত রাখার অনুমতি দেয়া হত।
(এগার) কোনও কারণে স্বামীকে অন্য এলাকায় থাকতে হলে, বাধ্য করা হত সাথে করে স্ত্রীকেও নিয়ে যেতে! যুক্তিসঙ্গত কোনও কারণে স্ত্রীকে সাথে নিতে না পারলে, স্বামীর যদি আরেক বিয়ে করার সামর্থ থাকত, তাকে কর্মস্থলে আরেক বিয়ে করতে বাধ্য করা হতো। তারপর চাকুরি শেষে নিজের এলাকায় ফিরলে, দুই স্ত্রীকেই সমান অধিকারে রাখতে বাধ্য করা হত।
যুব সমাজের চারিত্রিক স্খলন আর নৈতিক অবক্ষয় ঠেকানোর একমাত্র মহৌষধ ‘বিয়ে’র ব্যাপারে ওসমানি খিলাফাহর বিবেকসম্মত কতগুলো চমৎকার আইন। আইনগুলো পড়ুন আর চিন্তা করুন- বর্তমান সময়ে এই আইনগুলো বলবৎ থাকলে আমাদের সমাজে কি অবৈধ প্রেম-ভালবাসা, পরকীয়া, নারীর শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, ইভটিজিং ইত্যাদি নৈতিক রোগ-বালাই জন্ম নিত? যুবতীরা কি আইবুড়োত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবেতর জীবনাতিপাত করত? বিয়ের বাজারে মন্দা দেখা দিত? পতিতাবৃত্তি রমরমা হয়ে উঠত?
(খেলাফত সময় কাল ১৩০০-১৯২৪ এর সময়)
(এক) ঐচ্ছিক বিয়ের বয়েস শুরু হত আঠার থেকে। শেষ হত পঁচিশে। এর মধ্যে বিয়ে না করলে, তাকে বাধ্য করে বিয়ে করানো হত।
(দুই) যদি কেউ অসুস্থতার অজুহাত দেখাত, তদন্ত করে দেখা হত, বক্তব্যটা সঠিক কি না। রোগটা নিরাময়যোগ্য হলে, সুস্থ্য হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় চাপ স্থগিত রাখা হত। আর দুরারোগ্য ব্যধি হলে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই বিয়ে করতে বাধা দেয়া হত।
(তিন) পঁচিশ হয়ে যাওয়ার পরও যদি কেউ বিনা কারণে বিয়ে না করে থাকত, তার আয়/ব্যবসা বা সম্পদের এক চতুর্থাংশ কেটে রাখা হত। জব্দকৃত অর্থ নিয়ে বিবাহোচ্ছুক গরীবদের বিয়ের বন্দোবস্ত করা হত।
(চার) পঁচিশের পরও বিয়ে না করলে, তাকে রাষ্ট্রীয় কোনও চাকুরিতে নেয়া হত না। কোনও সংগঠনেও ভুক্তি দেয়া হত না। আর চাকুরিতে থাকলে, ইস্তেফা দেয়া হত।
(পাঁচ) কোনও ব্যক্তির বয়স যদি পঞ্চাশ হয়ে যায়, ঘরে স্ত্রী থাকে একটা, কিন্তু তার আর্থিক সঙ্গতি ভাল, তখন তাকে সামাজিক কোন কাজে অর্থ দিয়ে অংশগ্রহণ করতে বলা হত। গ্রহণযোগ্য কোনও কারণ দেখিয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে, সামর্থ্য অনুসারে অন্তত এক থেকে তিনজন এতীমের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে বাধ্য করা হত।
(ছয়) আঠার থেকে পঁচিশের মধ্যে যদি কোনও গরীব যুবক বিয়ে করত, তাকে হুকুমতের পক্ষ থেকে ১৫৯ থেকে শুরু করে ৩০০ দুনমা পরিমাণের জমির বন্দোবস্তি দেয়া হত। চেষ্টা করা হত জমিটা যেন তার বাড়ির কাছাকাছি কোথাও হয়। এক দুনমা সমান: ৯০০ মিটার।
(সাত) গরীব বর যদি কারিগর বা ব্যবসায়ী হয়, তাকে পূঁজিপাট্টা দেয়া হত। কোনও বিনিময় ছাড়াই। তিন বছর মেয়াদে।
(আট) ছেলে বিয়ে করার পর, বাবা মায়ের সেবা করার জন্যে আর কোনও ভাই না থাকলে, বরকে বাধ্যতামূলক সেনাকার্যক্রম থেকে রেহাই দেয়া হত। তদ্রুপ মেয়ের বিয়ের পর যদি বাবা মায়ের সেবার জন্যে ঘরে কেউ না থাকে, মেয়ের জামাইকেও বাধ্যতামূলক সেনা কার্যক্রম থেকে রেহাই দেয়া হত।
(নয়) পঁচিশের আগেই বিয়ে করে তিনসন্তানের বাবা হলে, নৈশস্কুলে বিনামূল্যে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হত। সন্তান তিনজনের বেশি হলে, তিনজনের লেখাপড়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হত। বাকী সন্তানদের জন্যে দশ টাকা করে বরাদ্দ করা হত। তের বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত।
কোনও মহিলার ঘরে চার বা তার চেয়ে বেশি ছেলে সন্তান থাকত, তাকে মাথাপিছু ২০ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হত।
(দশ) কোন ছাত্র লেখাপড়ার কাজে ব্যস্ত থাকলে, লেখাপড়া শেষ হওয়া পর্যন্ত বিয়ে স্থগিত রাখার অনুমতি দেয়া হত।
(এগার) কোনও কারণে স্বামীকে অন্য এলাকায় থাকতে হলে, বাধ্য করা হত সাথে করে স্ত্রীকেও নিয়ে যেতে! যুক্তিসঙ্গত কোনও কারণে স্ত্রীকে সাথে নিতে না পারলে, স্বামীর যদি আরেক বিয়ে করার সামর্থ থাকত, তাকে কর্মস্থলে আরেক বিয়ে করতে বাধ্য করা হতো। তারপর চাকুরি শেষে নিজের এলাকায় ফিরলে, দুই স্ত্রীকেই সমান অধিকারে রাখতে বাধ্য করা হত।
Comment