মির্জা ইয়াওয়ার বেগ তার জার্নি অফ ফেইথ বইটিতে চমৎকার একটি কথা বলেছেন। কথাটি হলো:
“আপনি সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর দাস। হয় তাঁর প্রিয় ও অনুগত দাস; অথবা অবাধ্যচারী অপ্রিয় দাস”।
“আপনি সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর দাস। হয় তাঁর প্রিয় ও অনুগত দাস; অথবা অবাধ্যচারী অপ্রিয় দাস”।
আসলেই তাই। প্রতিটি জিনিসেরই কিছু সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য আছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোর মধ্যে ভালো গুণ যেমন আছে তেমনি খারাপ দোষও আছে।
এগুলোকে কখনো একেবারে মুছে দেওয়া যায় না; দেওয়াটা শোভনীয়ও নয়। মুছে দিলে সে আর সে থাকে না, অন্যকিছু হয়ে যায়। তাই এই বৈশিষ্টগুলোকে পরিশিলীত করতে হয়। যেমন রাগ-ক্ষোভ, হিংসা-বিদ্বেষ, ভালোবাসা-মমতা, লোভ-লালসা ইত্যাদি। আপনার মনে হতে পারে যে, আহ আমার মধ্যে যদি রাগ, হিংসা না থাকতো কতোই না ভালো হতো! কিন্তু এটা একটা ভুল ধারণা। ঘরের টয়লেটটাকে আপনি যতোই খারাপ স্থান মনে করেন না কেন, ওটা না থাকলে আপনার ঘরটাই বসবাসের অযোগ্য। আপনার পেটের ভেতর নোংরা যা কিছু আছে, আপনার নাক দিয়ে দিয়ে যে ময়লা, চোখ দিয়ে যে পিচুটি বের হয় তারও অনেক প্রয়োজনীয়তা আছে। এগুলো না থাকলে আপনি হয়তো বাঁচতেই পারতেন না। এধরনের ছোটখাটো কোনো বিষয় নয়, আমি বলতে চাচ্ছি ইয়াওয়ার বেগের বলা দাসত্বের কথা; যা আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে বিল্ট-ইন বা সৃষ্টিগতভাবেই আছে। সত্যিই; দাসত্ববোধ বা গোলামি করা আমাদের স্বভাব। আমরা সৃষ্টিগতভাবেই গোলাম, দাস। এই দাসত্ব থেকে আমাদের আসলে কখনোই মুক্তি নেই। আমরা দাসত্ব করবই।
দাসত্ব ছাড়া আমরা বাঁচতেই পারব না।
এখন আমাদেরকে শুধু সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কার দাসত্ব করব?
কীসের দাসত্ব করব?
আমি কি আমার নাফসের দাসত্ব করব, শয়তানের দাসত্ব করব, অর্থ-বিত্তের দাসত্ব করব, ক্ষমতা প্রতিপত্তির দাসত্ব করব,যশ-খ্যাতির দাসত্ব করব, স্ত্রী-পরিবারের দাসত্ব করব,
সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের দাসত্ব করব?
নাকি বিশ্বজাহানের প্রভু প্রতিপালক, এক ও একচ্ছত্র মালিক মহান আল্লাহর দাসত্ব করব?
সচেতনভাবে আল্লাহর দাসত্ব গ্রহণ করে নিলে আমরা এই সবরকমের গোলামির জিঞ্জির থেকে মুক্তি পাব। কিন্তু আল্লাহর দাসত্ব বাদ দিয়ে অন্য কিছুর দাসত্ব গ্রহণ করে নিলে তা আমাদেরকে নাকে দড়ি বেঁধে ঘোরাবে; অপমানিত করবে, লাঞ্ছিত করবে, হেয় প্রতিপন্ন করবে। কিন্তু
তারপরও আল্লাহর দাসত্ব থেকে কিন্তু আমরা বেরিয়ে যেতে পারব না। কেবল হবো অবাধ্য দাস। সৃষ্টির সকলেই আল্লাহর দাস, সে হোক ইচ্ছায়
কিংবা অনিচ্ছায়। পার্থক্য কেবল এতোটুকুই যে, কেউ তাঁর অনুগত, প্রিয় ও বাধ্যগত দাস; আর কেউ তার অবাধ্য, বিদ্রোহী ও অপ্রিয় দাস।
SEAN Publication
Comment