মুরতাদ এরদোগানের মুখোশ উন্মোচনঃ সোমালিয়ায় তুরস্কের প্রশিক্ষিত ‘গরগর’ ফোর্স
বর্তমান যামানার ভয়ংকার এক ফিতনার নাম এরদোগান। যে সকল বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে সকল মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে, তার মধ্যে অন্যতম হল এরদোগান। কেউ তার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে তাকে যুগের বাদশা ও যামানার খলিফা বানিয়ে ফেলেছে। তার মাঝে দেখতে পেয়েছে মুসলমানদের শক্তি ও সম্মান।
মুসলিম উম্মাহ এমন ভাবার কারণ কী?
কারণ হলো এরদোগান বাহ্যিক কিছু ভালো কাজ করে। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-
১.আয়া সোফিয়া আর তাকসিম স্কয়ারের আলোচিত মসজিদ উদ্বোধন করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
২.এরদোগান কুরআন তিলাওয়াত করে।
৩.নামায পড়ে।
৪.ইসলামের পক্ষে কথা বলে।
৫.কাফিরদের হুমকি দেয়।
৬.মাজলুম মুসলিমদের পক্ষে কথা বলে।
এমন কিছু পয়েন্ট সামনে আসার কারণে মুসলিম উম্মাহর বড় এক অংশ এরদোগানকে জামানার সবচেয়ে বড় অভিভাবক ভেবে বসে আছে।
কিন্তু আসলে বাস্তবতা কি?
বাস্তবতা হলো এই মুসলিম নামধারী মুনাফিক আদৌ ইসলামের পক্ষে নেই। কি মনে হয়! আমি বানিয়ে বললাম। না ভাই! আমি বানিয়ে বলছি না।
ভালোভাবে গবেষণা করলে বিষয়টি আপনিও উপলব্ধি করতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ
আজ সংক্ষেপে মূল কয়েকটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করছি-
সহজে বুঝার জন্য আমি শাইখ ড. তারিক আবদুল হালিম হাফিযাহুল্লাহর একটি গবেষণার জরিপ তুলে ধরছি।
কোন ব্যক্তির মাঝে ইসলাম অনেক মৌলিক বিষয় পাওয়া যেতে পারে। যেমনটা তুর্কি জনগণের সাধারণ অবস্থা। তাদের অধিকাংশই মুসলিম জনগণ। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও যে কারো থেকে প্রকাশ্য ধর্মীয় বিষয়াদি প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে এমন কিছু প্রকাশ পেতে পারে, যা সুনিশ্চিতভাবে ঈমান নষ্ট করে দেয়। যেমন কারো মধ্যে নামায ও ইসলামের সবগুলো স্তত্ত আছে। পর্দা সে পালন করে। কুরআন তিলাওয়াত করে। এগুলো সবই ইসলামের সুস্পষ্ট নিদর্শন। আবার তার থেকেই একই সাথে এমন কিছুও প্রকাশ পেতে পারে, যা সুনিশ্চিতভাবে ঈমান নষ্ট করে দিবে। এটা সাধারণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে হতে পারে। দেশের প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী কারো ক্ষেত্রে হতে পারে। দলীয় প্রধানের ক্ষেত্রে হতে পারে। আবার রাষ্ট্র প্রধানের বেলায়ও হতে পারে। এরদোগানের ব্যাপারটা ঠিক এমনই।
এখানে কয়েকটা উদারহণ তুলে ধরছি:
১. তার দলের মূলনীতি হল ধর্মনিরপেক্ষতা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় যা তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন। যেমন এরদোগান ড. মুরিসির শাসনামলে মিশর সফরে মিশরের পার্লামেন্ট ঘোষণা করেছে। মিশরবাসীকে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণ করার উপদেশ দিয়েছে। কারণ এটার মাধ্যমেই নাকি সুশাসন বাস্তবায়ন করা যায়, এটাই স্বার্থক শাসনব্যবস্থা! এমনটা তিনি একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন।
২. তিনি এমন দেশের শাসক, ধর্মনিরপেক্ষতা যে দেশের শাসনকার্য মূল উৎস। যার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। যার মৌলিক ভিত্তির সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র কতগুলো ব্যক্তিগত পালনীয় বিধি-বিধান ব্যতিত। রাষ্ট্রীয় ইসলামের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।
৩. ন্যাটের সদস্য হওয়া। আর ন্যাটো এমন একটা জোট, আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, কেউ-ই তাতে ইসলামের কোন সমর্থক খুঁজে পাবে না। সামরিক বিমান ঘাটিগুলোকে তিনি আমেরিকান বিমানের জন্য অবাধে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।
(আমেরিকার পক্ষ নিয়ে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠিয়ে সে আমেরিকাকে শক্তিশালী করছে। যুগ যুগ ধরে এ সাহায্যের ধারা অব্যহত আছে-পোস্টকারী)
৪. ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা। যেন তার জনগণের জন্য অর্থনৈতিক উৎস সৃষ্টি করতে পারে। শরীয়ত বিরোধী আইন প্রণয়ন করা। যেমন বিচ্ছিন্নতাবাদকে বৈধ করা। “চোখের পরিবর্তে চোখ” এই শান্তিকে নিষিদ্ধ করা। এছাড়া সমস্ত ইসলামী শরীয়তকে নিষিদ্ধ করা তো আছেই।
৫. রাবেয়া চন্তরের শহীদদের জন্য কাঁদেন। আবার বৃটেনের সাথে সমঝোতা করেন। সিরিয়ান মুসলিমদের হত্যাকারী পুতিনের সাথে আলোচনায় বসলেন। আলোচনা শেষে যৌথ বিবৃতি দিলেন, সন্ত্রাস (জিহাদ) মোকাবেলায় তারা একমত।
৬. বিভিন্ন সংলাপ ও পরিকল্পনায় ইসরাইলের সাথে ঐক্যমত পোষণ করা। যেটা তার অবস্থান স্পষ্ট করার ক্ষেত্রে “পায়ের ওপর পা তুলে, বীরপুরুষের মতো বসার” চেয়ে থেকে অধিক শক্তিশালী।
৭. মুহাজিরদের জন্য দেশের বর্ডার খুলে দেয়া নিয়ে কথা হল, এক দিক থেকে এটা মহানুভতা ও সাহসী ভূমিকা। আরেকদিক থেকে এটা পশ্চিমা দেশগুলোতে উদ্বান্তদের ঢল থামানোর জন্য ইউরোপীয়ানদের সাথে সমঝোতা চুক্তি। আর প্রথমটির চেয়ে
দ্বিতীয়টিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা আবারো বলছি, এ কাজের সাথে ইসলাম বা কুফরের কোন সম্পর্ক নেই।
৮. ইসরাঈলের ভেতর যখন আল্লাহর অনুগ্রহে যে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল, তার মোকাবেলার জন্য ইসরাঈলের উদ্দেশ্যে অগ্রিনির্বাপক বিমান প্রেরণ করেছেন। অপরদিকে আলেপ্পোবাসীকে সাহায্যবিহীন ফেলে রেখেছেন!
আমাদের এটা ভুলে গেলে হবে না যে, একজন মানুষের মনে কী আছে, তা বুঝার কোনো উপায় নেই। মানুষের অন্তরের কী আছে এ ব্যাপারে কোন
প্রমাণ নেই। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমাদের দেখার বিষয় হল প্রকাশ্য অবস্থা। অন্তরের বিষয়ের দায়িত্ব
আল্লাহর হাতে”। তাহলে তার অন্তরে কি আছে সেটা কিভাবে বলা যাবে বা কিভাবে জানা যাবে? তাই এরদোগানের মনে কী আছে, তা নিশ্চিত করে
বলার বা জানার কোনো উপায় নেই। এ নিয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা বিভ্রম ও ভষ্টতা বৈকি। যার গুনাহ এ সকল লোকদের গুনাহের ন্যায়, যারা নিজ হাতে
কিতাব লিখে বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। এরদোগান শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন মানুষ। তিনি তার দেশ ও জাতিকে ভালোবাসেন। নিজ দেশের উন্নতির জন্য কাজ করেন। নিজের ও নিজের জাতির সম্মান বুঝেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত কিছু বিধি-বিধানকেও
ভালবাসেন, যেগুলোকে এক সময় তার দেশ আইনের উৎস হিসাবে গ্রহণ করেছিল। খেলাফতের যামানায় যেগুলোর দ্বারা তার দেশের জনগণকে
পরিচালিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বরং আরো একটু আগে বেড়ে বলা যায়, তার অন্তরে মুসলমানদের ভালোবাসা রয়েছে, যা তার কিছু কিছু কাজের
দ্বারা প্রকাশ পায়। বরং তার পায়ের জুতা সকল আরব শাসকের মাথার ওপর হতে পারে। কিন্তু আমরা তাকে মুসলিম বলতে পারি না
তিনি মুসলিম নন। তিনি এ সকল শাসকদের মতই, যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান ব্যতিত ভিন্ন বিধান দিয়ে শাসন করে, পরিষ্কার ধর্মনিরপেক্ষতা দিয়ে শাসন করে এবং তার প্রতি আহ্বান করে। এটা ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় যা ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। তিনি যতই নামায পড়েন না কেন, রোজা রাখেন না কেন বা তার প্রেমিকরা তাকে মুসলিম বলে ধারণা করুক না কেন।
আর এখানে তার ওপর বলপ্রয়োগ বা তার অনন্যোপায় হবার মতো কিছু নেই। এখানে ইকরাহ বা জরুরুত খুঁজে পাবেন না, তবে প্রবৃত্তির অনুসারী বা সিরিয়ান ট্রাজেডির প্রেক্ষাপটে তার কাছ থেকে অস্ত্র ও সাহায্য লাভের নগদ স্বার্থকে প্রাধান্য দিল, খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। কিন্ত কোন আলিম ও
মুফতির নিকট এগুলো গ্রহণযোগ্য না যে শুধুমাত্র শরয়ী দলিলের দিকে তাকায়। দলিল ছাড়া কোন মুসলিমকেও কাফির বলা যাবে না এবং কোন কাফিরকেও মুসলিম বলা যাবে না। এখনো পর্যন্ত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত ইসলাম থেকে সে অনেক দূরেই আছেন ।
আল্লাহ জানেন যে, তুর্কিরা একটি শাসনব্যবস্থা হিসাবে ইসলামী অনুশাসনের দিকে ফিরে আসুক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে আল্লাহর শরীয়ত নিশ্চিহ করার মোকাবেলায় দাড়িয়ে যাক এটা আমাদের আকাঙক্ষা না। বরং এটা প্রথম দিন থেকেই আবশ্যক ছিল এবং আজও আবশ্যক, যতক্ষণ না আমরা তা দেখতে পাই। কারণ আল্লাহর হুকুম নিয়ে খেলা করা জায়েয নেই এবং কোন কারণেই আল্লাহর হুকুম পরিবর্তন করাও জায়েয নয়।
আর নির্দিষ্ট কোন স্বার্থের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী শাসনের সাথে সহযোগীতামূলক অংশগ্রহণ করার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের এ ধরণের কোন কাজ জায়েয করার জন্য শরীয়তের কোন হুকুমকে পবির্তন করার অনুমোদন নেই।
সোমলিয়ায় হারাকাতুশ শাবাল মুজাহিদিনের উত্থান রুখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের সকল কুফুরি শক্তি। সোমালিয়ায় হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিনের অগ্রগতি রুখতে তুরস্ক এবং কাতার যৌথ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছিল ‘গরগর ফোর্স’ নামের এক বিশেষায়িত সামরিক ইউনিট। তবে তাদের দেয়া এত অর্থ, সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নত প্রশিক্ষণের পেয়েও নিজেদের অকেজো এবং অথর্ব হিসেবে বরাবরের মত প্রমাণ করে এসেছে এই গরগর ফোর্স।
অল্প কিছুদিন আগে এই ফোর্সের ৭ম ব্যাটালিয়ন অন্যান্য ব্যাটালিয়নগুলোর মত এরদোগানের সেক্যূলার তুরস্কে সামরিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে এসেছে। সব মিলিয়ে এই ফোর্সের সদস্য সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজারে । কিন্তু এত লোকবল এবং উন্নত প্রশিক্ষণ পাওয়া স্বত্তেও মুজাহিদীনদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত একটি অঞ্চলও দখল করতে পারেনি তুরষ্কের প্রশিক্ষিত মুরতাদ এই বাহিনী।
ন্যাটো বাহিনীর সাথে মিলে যুগ যুগ ধরে আফগানিস্তানে মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তুরস্কের এরগানের বাহিনী। এটা কার না জানা!
আর মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য করলে, সে আর মুসলিম থাকে না। এ ব্যাপারে উম্মাহর আলিমদের ফাতওয়া আজো আমাদের সামনে আছে।
আমাদের উচিত হলো এ সকল মুরতাদ শাসকের অবস্থান শরয়ি দলিলের আলোকে উম্মাহর কাছে স্পষ্ট করা।
বর্তমান যামানার ভয়ংকার এক ফিতনার নাম এরদোগান। যে সকল বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে সকল মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে, তার মধ্যে অন্যতম হল এরদোগান। কেউ তার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে তাকে যুগের বাদশা ও যামানার খলিফা বানিয়ে ফেলেছে। তার মাঝে দেখতে পেয়েছে মুসলমানদের শক্তি ও সম্মান।
মুসলিম উম্মাহ এমন ভাবার কারণ কী?
কারণ হলো এরদোগান বাহ্যিক কিছু ভালো কাজ করে। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-
১.আয়া সোফিয়া আর তাকসিম স্কয়ারের আলোচিত মসজিদ উদ্বোধন করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
২.এরদোগান কুরআন তিলাওয়াত করে।
৩.নামায পড়ে।
৪.ইসলামের পক্ষে কথা বলে।
৫.কাফিরদের হুমকি দেয়।
৬.মাজলুম মুসলিমদের পক্ষে কথা বলে।
এমন কিছু পয়েন্ট সামনে আসার কারণে মুসলিম উম্মাহর বড় এক অংশ এরদোগানকে জামানার সবচেয়ে বড় অভিভাবক ভেবে বসে আছে।
কিন্তু আসলে বাস্তবতা কি?
বাস্তবতা হলো এই মুসলিম নামধারী মুনাফিক আদৌ ইসলামের পক্ষে নেই। কি মনে হয়! আমি বানিয়ে বললাম। না ভাই! আমি বানিয়ে বলছি না।
ভালোভাবে গবেষণা করলে বিষয়টি আপনিও উপলব্ধি করতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ
আজ সংক্ষেপে মূল কয়েকটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করছি-
সহজে বুঝার জন্য আমি শাইখ ড. তারিক আবদুল হালিম হাফিযাহুল্লাহর একটি গবেষণার জরিপ তুলে ধরছি।
কোন ব্যক্তির মাঝে ইসলাম অনেক মৌলিক বিষয় পাওয়া যেতে পারে। যেমনটা তুর্কি জনগণের সাধারণ অবস্থা। তাদের অধিকাংশই মুসলিম জনগণ। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও যে কারো থেকে প্রকাশ্য ধর্মীয় বিষয়াদি প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে এমন কিছু প্রকাশ পেতে পারে, যা সুনিশ্চিতভাবে ঈমান নষ্ট করে দেয়। যেমন কারো মধ্যে নামায ও ইসলামের সবগুলো স্তত্ত আছে। পর্দা সে পালন করে। কুরআন তিলাওয়াত করে। এগুলো সবই ইসলামের সুস্পষ্ট নিদর্শন। আবার তার থেকেই একই সাথে এমন কিছুও প্রকাশ পেতে পারে, যা সুনিশ্চিতভাবে ঈমান নষ্ট করে দিবে। এটা সাধারণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে হতে পারে। দেশের প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী কারো ক্ষেত্রে হতে পারে। দলীয় প্রধানের ক্ষেত্রে হতে পারে। আবার রাষ্ট্র প্রধানের বেলায়ও হতে পারে। এরদোগানের ব্যাপারটা ঠিক এমনই।
এখানে কয়েকটা উদারহণ তুলে ধরছি:
১. তার দলের মূলনীতি হল ধর্মনিরপেক্ষতা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় যা তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন। যেমন এরদোগান ড. মুরিসির শাসনামলে মিশর সফরে মিশরের পার্লামেন্ট ঘোষণা করেছে। মিশরবাসীকে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণ করার উপদেশ দিয়েছে। কারণ এটার মাধ্যমেই নাকি সুশাসন বাস্তবায়ন করা যায়, এটাই স্বার্থক শাসনব্যবস্থা! এমনটা তিনি একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন।
২. তিনি এমন দেশের শাসক, ধর্মনিরপেক্ষতা যে দেশের শাসনকার্য মূল উৎস। যার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। যার মৌলিক ভিত্তির সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র কতগুলো ব্যক্তিগত পালনীয় বিধি-বিধান ব্যতিত। রাষ্ট্রীয় ইসলামের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।
৩. ন্যাটের সদস্য হওয়া। আর ন্যাটো এমন একটা জোট, আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, কেউ-ই তাতে ইসলামের কোন সমর্থক খুঁজে পাবে না। সামরিক বিমান ঘাটিগুলোকে তিনি আমেরিকান বিমানের জন্য অবাধে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।
(আমেরিকার পক্ষ নিয়ে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠিয়ে সে আমেরিকাকে শক্তিশালী করছে। যুগ যুগ ধরে এ সাহায্যের ধারা অব্যহত আছে-পোস্টকারী)
৪. ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা। যেন তার জনগণের জন্য অর্থনৈতিক উৎস সৃষ্টি করতে পারে। শরীয়ত বিরোধী আইন প্রণয়ন করা। যেমন বিচ্ছিন্নতাবাদকে বৈধ করা। “চোখের পরিবর্তে চোখ” এই শান্তিকে নিষিদ্ধ করা। এছাড়া সমস্ত ইসলামী শরীয়তকে নিষিদ্ধ করা তো আছেই।
৫. রাবেয়া চন্তরের শহীদদের জন্য কাঁদেন। আবার বৃটেনের সাথে সমঝোতা করেন। সিরিয়ান মুসলিমদের হত্যাকারী পুতিনের সাথে আলোচনায় বসলেন। আলোচনা শেষে যৌথ বিবৃতি দিলেন, সন্ত্রাস (জিহাদ) মোকাবেলায় তারা একমত।
৬. বিভিন্ন সংলাপ ও পরিকল্পনায় ইসরাইলের সাথে ঐক্যমত পোষণ করা। যেটা তার অবস্থান স্পষ্ট করার ক্ষেত্রে “পায়ের ওপর পা তুলে, বীরপুরুষের মতো বসার” চেয়ে থেকে অধিক শক্তিশালী।
৭. মুহাজিরদের জন্য দেশের বর্ডার খুলে দেয়া নিয়ে কথা হল, এক দিক থেকে এটা মহানুভতা ও সাহসী ভূমিকা। আরেকদিক থেকে এটা পশ্চিমা দেশগুলোতে উদ্বান্তদের ঢল থামানোর জন্য ইউরোপীয়ানদের সাথে সমঝোতা চুক্তি। আর প্রথমটির চেয়ে
দ্বিতীয়টিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা আবারো বলছি, এ কাজের সাথে ইসলাম বা কুফরের কোন সম্পর্ক নেই।
৮. ইসরাঈলের ভেতর যখন আল্লাহর অনুগ্রহে যে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল, তার মোকাবেলার জন্য ইসরাঈলের উদ্দেশ্যে অগ্রিনির্বাপক বিমান প্রেরণ করেছেন। অপরদিকে আলেপ্পোবাসীকে সাহায্যবিহীন ফেলে রেখেছেন!
আমাদের এটা ভুলে গেলে হবে না যে, একজন মানুষের মনে কী আছে, তা বুঝার কোনো উপায় নেই। মানুষের অন্তরের কী আছে এ ব্যাপারে কোন
প্রমাণ নেই। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমাদের দেখার বিষয় হল প্রকাশ্য অবস্থা। অন্তরের বিষয়ের দায়িত্ব
আল্লাহর হাতে”। তাহলে তার অন্তরে কি আছে সেটা কিভাবে বলা যাবে বা কিভাবে জানা যাবে? তাই এরদোগানের মনে কী আছে, তা নিশ্চিত করে
বলার বা জানার কোনো উপায় নেই। এ নিয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা বিভ্রম ও ভষ্টতা বৈকি। যার গুনাহ এ সকল লোকদের গুনাহের ন্যায়, যারা নিজ হাতে
কিতাব লিখে বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। এরদোগান শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন মানুষ। তিনি তার দেশ ও জাতিকে ভালোবাসেন। নিজ দেশের উন্নতির জন্য কাজ করেন। নিজের ও নিজের জাতির সম্মান বুঝেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত কিছু বিধি-বিধানকেও
ভালবাসেন, যেগুলোকে এক সময় তার দেশ আইনের উৎস হিসাবে গ্রহণ করেছিল। খেলাফতের যামানায় যেগুলোর দ্বারা তার দেশের জনগণকে
পরিচালিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বরং আরো একটু আগে বেড়ে বলা যায়, তার অন্তরে মুসলমানদের ভালোবাসা রয়েছে, যা তার কিছু কিছু কাজের
দ্বারা প্রকাশ পায়। বরং তার পায়ের জুতা সকল আরব শাসকের মাথার ওপর হতে পারে। কিন্তু আমরা তাকে মুসলিম বলতে পারি না
তিনি মুসলিম নন। তিনি এ সকল শাসকদের মতই, যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান ব্যতিত ভিন্ন বিধান দিয়ে শাসন করে, পরিষ্কার ধর্মনিরপেক্ষতা দিয়ে শাসন করে এবং তার প্রতি আহ্বান করে। এটা ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় যা ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। তিনি যতই নামায পড়েন না কেন, রোজা রাখেন না কেন বা তার প্রেমিকরা তাকে মুসলিম বলে ধারণা করুক না কেন।
আর এখানে তার ওপর বলপ্রয়োগ বা তার অনন্যোপায় হবার মতো কিছু নেই। এখানে ইকরাহ বা জরুরুত খুঁজে পাবেন না, তবে প্রবৃত্তির অনুসারী বা সিরিয়ান ট্রাজেডির প্রেক্ষাপটে তার কাছ থেকে অস্ত্র ও সাহায্য লাভের নগদ স্বার্থকে প্রাধান্য দিল, খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। কিন্ত কোন আলিম ও
মুফতির নিকট এগুলো গ্রহণযোগ্য না যে শুধুমাত্র শরয়ী দলিলের দিকে তাকায়। দলিল ছাড়া কোন মুসলিমকেও কাফির বলা যাবে না এবং কোন কাফিরকেও মুসলিম বলা যাবে না। এখনো পর্যন্ত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত ইসলাম থেকে সে অনেক দূরেই আছেন ।
আল্লাহ জানেন যে, তুর্কিরা একটি শাসনব্যবস্থা হিসাবে ইসলামী অনুশাসনের দিকে ফিরে আসুক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে আল্লাহর শরীয়ত নিশ্চিহ করার মোকাবেলায় দাড়িয়ে যাক এটা আমাদের আকাঙক্ষা না। বরং এটা প্রথম দিন থেকেই আবশ্যক ছিল এবং আজও আবশ্যক, যতক্ষণ না আমরা তা দেখতে পাই। কারণ আল্লাহর হুকুম নিয়ে খেলা করা জায়েয নেই এবং কোন কারণেই আল্লাহর হুকুম পরিবর্তন করাও জায়েয নয়।
আর নির্দিষ্ট কোন স্বার্থের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী শাসনের সাথে সহযোগীতামূলক অংশগ্রহণ করার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের এ ধরণের কোন কাজ জায়েয করার জন্য শরীয়তের কোন হুকুমকে পবির্তন করার অনুমোদন নেই।
প্রিয় পাঠক!
সোমালিয়ায় এরদোগানের মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে অবস্থানঃ
সোমালিয়ায় এরদোগানের মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে অবস্থানঃ
সোমলিয়ায় হারাকাতুশ শাবাল মুজাহিদিনের উত্থান রুখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের সকল কুফুরি শক্তি। সোমালিয়ায় হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিনের অগ্রগতি রুখতে তুরস্ক এবং কাতার যৌথ প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছিল ‘গরগর ফোর্স’ নামের এক বিশেষায়িত সামরিক ইউনিট। তবে তাদের দেয়া এত অর্থ, সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নত প্রশিক্ষণের পেয়েও নিজেদের অকেজো এবং অথর্ব হিসেবে বরাবরের মত প্রমাণ করে এসেছে এই গরগর ফোর্স।
অল্প কিছুদিন আগে এই ফোর্সের ৭ম ব্যাটালিয়ন অন্যান্য ব্যাটালিয়নগুলোর মত এরদোগানের সেক্যূলার তুরস্কে সামরিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে এসেছে। সব মিলিয়ে এই ফোর্সের সদস্য সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজারে । কিন্তু এত লোকবল এবং উন্নত প্রশিক্ষণ পাওয়া স্বত্তেও মুজাহিদীনদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত একটি অঞ্চলও দখল করতে পারেনি তুরষ্কের প্রশিক্ষিত মুরতাদ এই বাহিনী।
আফগানিস্তানে এরদোগানের মুজাহিদদের বিরুদ্ধে অবস্থানঃ
ন্যাটো বাহিনীর সাথে মিলে যুগ যুগ ধরে আফগানিস্তানে মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তুরস্কের এরগানের বাহিনী। এটা কার না জানা!
আর মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য করলে, সে আর মুসলিম থাকে না। এ ব্যাপারে উম্মাহর আলিমদের ফাতওয়া আজো আমাদের সামনে আছে।
আমাদের উচিত হলো এ সকল মুরতাদ শাসকের অবস্থান শরয়ি দলিলের আলোকে উম্মাহর কাছে স্পষ্ট করা।
Comment