আমীরুল মুমিনীন মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মানসুর শহীদ রহি, এর মিশন
যদি আমেরিকা এবং তার এজেন্ডদের এই খিয়াল হয় যে, ইমারাতে ইসলামিয়ার আমীর মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মানসুর শহীদ রহিমাহুল্লাহ্*র শাহাদাতে সংগ্রাম এবং জিহাদী চিন্তা-গবেষণায় ক্ষতি পৌঁছুবে, এবং আফগানিস্তানে দূষিত সেকুলার শাসনব্যব্যস্থার ধ্বজাধারীদের বিজয় অর্জিত হবে, তাহলে এটা হবে তাদের নির্বুদ্ধিতা এবং লাঞ্চণাকর ভুল। কেননা, ইমারাতে ইসলামিয়ার সাংগঠনিক কাঠামো লোকবল ও ব্যাক্তিত্বের উপর সীমাবদ্ধ নয়। যদি এমনই হতো, তাহলে আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ (নাওয়ারাল্লাহু মারক্বাদাহু)-এর ইন্তেকালের পর ইমারাতে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠিত না থাকা উচিৎ ছিলো। কিন্তু, সকলে দেখেছেন যে, আমীরুল মু’মিনীনের ইন্তেকালের পর মুজাহিদীনের দুঃসাহসী হিম্মতে কমতি এসেছে আর না জিহাদী অপারেশনগুলোর উপর কোনো ধরণের বিরূপ প্রভাব পড়েছে? বরং, আল্লাহ্*র সাহায্যে এক অভিজ্ঞ, দূরদর্শী এবং মোল্লা মুহাম্মাদ উমরের রহ. এক আস্থাভাজন সাথী আমীর মনোনীত হয়েছেন। যিনি খুবই অল্প সময়ে সামরিক, রাজনৈতিক এবং আরো বিভিন্ন স্পটে গুরুত্বপূর্ণ সফলতা অর্জন করে পৃথিবীকে বিস্ময়কর গোলকধাঁধায় ফেলে দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে মহান আল্লাহ্* তায়ালা বিজয়ের নতুন দিগন্ত উম্নোচন করে দিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দান থেকে নিয়ে রাজনৈতিক ময়দান পর্যন্ত স্বল্প পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ কামিয়াবি অর্জিত হয়েছে। অ্যামেরিকা এবং অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর ১৪ বছরের প্লান, ভবিষ্যতের নতুন পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন।
আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মানসূর শহীদ রহিমাহুল্লাহ্*র দূরদর্শী নেতৃত্ব কাবুল সরকারের অস্ত্র আর ডলারের সামনে বিক্রিত চার লক্ষ সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে ‘আযম’ এবং ‘উমরি’ অপারেশনের অধীনে পুরো আফগানিস্তানজুড়ে বিভিন্ন অপারেশনের মাধ্যমে পরাজিত করেছে। আফগানিস্তানের ৮০% এলাকায় পুতুল সরকার কে হটিয়ে সেখানে ইসলামের ইনসাফভিত্তিক শাসনব্যবস্থার ‘শ্বেত পতাকা’ উড্ডীন করেছেন। রাজনৈতিক ময়দানে আমীরুল মু’মিনীন মানসুর শহীদ রহি. বিরামহীন চেষ্টা-প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইমারাতে ইসলামিয়ার পয়গাম সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন। ইমারাতের মজবুত ও অকাট্য পলিসিকে বিশ্বের সামনে আরো স্পষ্ট করে তুলেছেন। বৈশ্বিক সাধারণ জনমত-এর বিকৃত রূপকে সুন্দর ও সঠিক রূপে ফিরিয়ে আনতে তিনি সফল হয়েছেন। কাতারের রাজনৈতিক দফতরের আনুকূল্যে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে পরিভ্রমণ করেছেন এবং তিনিও রাজনৈতিক দফতেরর প্রতিনিধিদের সাথে যথাযথ সম্পর্ক বহাল রেখেছেন, যা কূটনৈতিক ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাববিস্তারকারী ও সফলতা হিসাবে পরিগণিত হয়। মানসুর শহীদ রহিমাহুল্লাহ্* খোদাপ্রদত্ত নিজের সমস্ত যোগ্যতা ব্যবহার করে ইমারাতে ইসলামিয়াকে বিশ্ব দরবারে অত্যন্ত উঁচুতে তুলে ধরেছেন। বহির্বিশ্বের সাথে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আরো এগিয়ে ইমারাতে ইসলামিয়ার সাংগঠনিক কাঠামো দৃঢ় ও মজবুত করন এবং ইসলামের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন।
এভাবে আরো অনেক সফলতা অর্জিত হয়েছে, যার কারনে অ্যামেরিকা এবং সাম্রাজ্যবাদীদের জন্য আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা আখতার মানসুর শহীদ পথের কাঁটা হয়ে গিয়েছিলেন। তারা নিজেদের দুষ্ট ও অনিষ্ট পরিকল্পনার জন্য বড় হুমকি মনে করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য অত্যন্ত কাপুরুষিত পন্থায় তাঁকে শহীদ করে দিলো। আল্লাহ্* তা’য়ালা তাঁর এই সম্মানজনক মহান এই কোরবানিকে কবুল করুন!
আমরা অ্যামেরিকা এবং তার জোটবাহিনীর কাছে স্পষ্ট করতে চাই যে, যদিও মানসুর সাহেব আমাদের মাঝে নেই, এবং তিনি তার হাকিকী মালিকের সাথে একত্রিত হয়েছেন। কিন্তু, তাঁর পিছনে এক দুঃসাহসী ও মুজাহিদ জাতি বিদ্যমান আছে যাঁদের অন্তর প্রতিশোধের অগ্নিশিখায় প্রজ্বলিত। যারা তাঁদের পথপ্রদর্শকের (আমীরের) পদচিহ্ন অনুসরণ করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। যাঁদের উদ্যম ও উদ্দিপনাপূর্ণ আশা হলো যে, এখন থেকে এই মুজাহিদ জাতির প্রতিজন ব্যাক্তি ‘মানসুর’ হয়ে লড়াই করবে! এবং ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরো সংকীর্ণ করা হবে।
অ্যামেরিকা এবং তার এজেন্ডরা এই বাস্তবতা স্বীকার করে নিলো যে, মানসুর শহীদ রহি. এর শাহাদাতের পর নতুন আমীর নির্ধারণের সময় কোনো ধরণের মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়নি। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এবং পশ্চিমা মিডিয়া অনেক চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু তারা নিজেদের হীন উদ্দ্যেশ্য সাধনে আরেকবার ব্যর্থ হলো। ইমারাতে ইসলামিয়ার সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ অত্যন্ত দূরদর্শিতার সাথে স্বল্প সময়ে ভাল ও উপযোক্ত নেতৃত্ব মনোনীত করেছেন, যেটা আল্লাহ্* তায়ালার মেহেরবানীতে মানসুর শহীদ রহি. এর সকল আশা ভরসা, পরিকল্পনা এবং জিহাদী সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ যোগ্যতা রাখেন।
ইমারাতে ইসলামিয়া একটি আন্দোলনের নাম। কোনো ব্যাক্তির শাহাদাতে এই আন্দোলন দূর্বল হয়ে পড়বে আর না এর উপর কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে? বরং, যিনিই নেতৃত্বের মসনদে অধিষ্ঠিত হবেন, তিনি দূর্বল হয়ে যাবেন না যে, দুশমনের হুমকিতে ভীত হয়ে তথাকথিত শান্তি আলোচনায় অংশ নিবেন? নিজের ক্ষমতা বলে সমঝোতা করে নিজের মহান লক্ষ্য থেকে সরে আসবেন? আমাদের অগ্রজ এবং আত্মত্যাগী সাথীরা ইসলামী নিযামের বাস্তবায়ন এবং ইসলামী ভূখন্ডগুলোর স্বাধীনতা পর্যন্ত পবিত্র জিহাদ চালিয়ে যাবেন। এবং একদিন অব্যশই সফলতা অর্জন করবেন, ইনশাআল্লাহ্*।
PDF downloud: https://www.sendspace.com/file/4uonp2
(সুত্রঃ ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের একমাত্র উর্দূ ম্যাগাজিন মাহ্*নামা শরীয়ত।)
অনুবাদঃ মুসান্না আল-হারিস
Comment