গ্লোবাল জিহাদ থেকে আইএসের বিচ্ছিন্নতা ও বিপথগামীতার টাইমলাইন । (সিরিয়ার জিহাদকে কেন্দ্র করে আইএসের পথভ্রষ্টতার একটি সারাংশ।)
সারা দুনিয়ার প্রায়সব মুজাহিদরা আল-কায়েদার অধীনস্ত এবং শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর বাই'আত গ্রহণ করেছিলো। আর শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ তালিবানদের প্রধান আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমার রাহিঃ এর প্রতি বাই’আত প্রদান করেছিলেন। এভাবে পুরো গ্লোবাল জিহাদ ঐক্যবদ্ধ ছিলো। বর্তমান আইএসের পূর্বের আইএসআাই অর্থাৎ ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকও আল-কায়েদার অধীনস্ত ছিলো।
শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর শাহাদাতের পর আবু বকর আল-বাগদাদী শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে বাই'আত দেন এবং উনার নির্দেশ মানার ওয়াদা করেন,যে ব্যাপারে আবু বকর আল-বাগদাদী কর্তৃক শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে পাঠানো চিঠি রয়েছে। আর সেই চিঠির অকাট্যতা স্বয়ং দাওলার মুখপাত্র সত্ত্বায়ন করেছে।
অতঃপর সিরিয়ার জিহাদ শুরু হলে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর নির্দেশে জাবহাতুন নুসরার আমীরসহ কিছু মুজাহিদকে ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকের পক্ষ থেকে সিরিয়ায় পাঠানো হয়।
অতঃপর জাবহাতুন নুসরাহ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকের সাথে সুসম্পর্ক রেখে কাজ করতে থাকে। কিন্তু জাবহাতুন নুসরাহ কার সাথে সম্পর্ক রাখে তা কৌশলগত কারণে গোপন রাখা হয়।
অতঃপর আইএস গোপনে আল-কায়েদার তথা শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর প্রতি আইএস প্রধানের বাই'আত ভঙ্গ করে জাবহাতুন নুসরাহকে সিরিয়াতে তাদের শাখা হিসেবে ঘোষণা দেয়,যার কোনো অনুমতি শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ থেকে নেওয়া হয়নি। অতঃপর জাবহাতুন নুসরাহ আইএসের একতরফা এধরণের সিদ্ধান্তের মুখে তারা মূল আল-কায়েদার সাথে যুক্ত হওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয় এবং শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। শাইখ আইমান যাওয়াহিরী হাফিঃ এর পক্ষ থেকে সিরিয়ায় আল-কায়েদার উপস্থিতির বিষয়টি প্রকাশ করার ব্যাপারে নিষেধ ছিলো,যাতে মার্কিন কুফফার ও তার দোসরদের ‘আল-কায়েদা’ থাকার অজুহাতে শামের মুসলিমদের উপর আগ্রাসন চালানোর অজুহাত দেখাতে না পারে। কিন্তু আইএসের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে জাবহাতুন নুসরার আল-কায়েদার সাথে সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।
মূলত আইএসের নেতারা আল-কায়েদার অধীন থেকে গোপনে বের হয়ে গেছে,যা তারা প্রকাশ করেনি। সিরিয়াতে তাদের শাখা ঘোষণার পর নুসরাহ থেকে অনেক মুহাজির মুজাহিদ আইএসের সাথে যোগ দেয়। এই বিভক্তির পরও সবাই মিলেমিশে আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে।
কিন্তু আইএস তাদের একক আধিপত্য পাকাপোক্ত করার জন্য বিভিন্ন বিদ্রোহী দলের অনেক নেতাকে গোপনে হত্যা করে। প্রথমদিকে কেউ বুঝতো না। যখন দুয়েকটা প্রকাশ পেয়েছে,তখন তারা এটা ভুলক্রমে হয়েছে বলে দাবী করেছিলো। কিন্তু বার বার হওয়ার পর এবং অন্যান্য আসাদ বিরোধী দলগুলোর উপর আইএস হামলা করার কারণে একপর্যায়ে সিরিয়ার বিভিন্ন দল মিলে আইএসের উপর হামলা চালায়। কিন্তু জাবহাতুন নুসরাহ এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে এবং আইএসের ভাইদের সহায়তা করে,যা আইএসের শামের শার’য়ী তার অফিসিয়াল বার্তায় স্বীকার করেছেন ।
একপর্যায়ে আইএস জাবহাতুন নুসরার বেশ কিছু মুজাহিদকেও হত্যা করে। অতঃপর জাবহাতুন নুসরার আমীর অফিসিয়াল বার্তা দেন, সবাই যেনো নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করে মীমাংসার দিকে অগ্রসর হন। এক্ষেত্রে সব গ্রুপ রাজী হলেও আইএস রাজী হয়নি। উল্টো আইএস বিভিন্ন জায়গায় সিরিয়ার বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপের উপর গাড়ী বোমা হামলা চালাতে শুরু করে।
জাবহাতুন নুসরার রাক্কার আমীরকে মুরতাদ বলে আইএস হত্যা করেছে ২০১৪ সালের শুরুতেই। এছাড়া রাক্কাসহ সিরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় জাবহাতুন নুসরার বহু মুজাহিদকে আইএস হত্যা করলো। আর অন্যান্য দলগুলোর সাথেতো আইএসের যুদ্ধ চলতেই লাগলো। ইতোমধ্যে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর পক্ষ থেকে নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করার জন্য কত অনুরোধ করে বার্তা দেয়া হলো ! সবাই রাজী হয় কিন্তু আইএস রাজী হয়নি ।
আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তার মধ্যে আমেরিকার মদদপুষ্ট কিছু দলও ছিলো,যাদেরকে জাবহাতুন নুসরা পরে ঠেঙ্গানী দিয়েছে এবং অনেককে নির্মূল করেছে। যেমনঃ জামাল মারুফের এসআরএফ(সিরিয়ান রেভ্যুলুশনারি আর্মি),হাযম মুভমেন্ট এবং জর্ডানে মার্কিন তদারকীতে প্রশিক্ষণ নেয়া কিছু মার্কিন তাবেদার ভাড়াটে।
তারপর জাবহাতুন নুসরার আমীর আইএসকে লক্ষ্য করে মীমাংসায় আসার জন্য ৫ দিনের আল্টিমেটাম দেন কিন্তু আইএস এবারও রাজী হয়নি।
আইএস এবারও কোনো মীমাংসায় সাড়া দেয়নি। এরপর আইএস জাবহাতুন নুসরাসহ অন্যান্য দলকে আস্তে আস্তে তাকফীর অর্থাৎ মুরতাদ আখ্যা দিয়ে যুদ্ধ করতে থাকে। কিন্তু আইএস যে অন্যান্য দলকে তাকফীর করে প্রথমদিকে স্বীকার করতো না। বলতো, না, “আমরা তাকফীর করিনা”। যেমন আহরার আশ-শামের ক্ষেত্রেই বলতো। এব্যাপারে তাদের অফিসিয়াল বার্তাও আছে। এছাড়া তালিবানদের ক্ষেত্রেও আইএস তাকফীর করে না এমন অফিসিয়াল বার্তা আছে ! অথচ পরবর্তীতে আইএস স্পষ্টভাবে তালিবানকে তাকফীর করেছে !
আল-কায়েদার সেন্ট্রাল কমান্ড ২০১৪ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি আইএসের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে। কারণ তারা মুসলিমদের রক্ত প্রবাহিত করছে এজন্য। অতঃপর আইএস ইরাকে মসূলসহ বিভিন্ন শহর দখল করে নিয়ে খিলাফাহ ঘোষণা করে দেয় ২০১৪ সালের ২৯ জুন।
এবার তারা আস্তে আস্তে প্রকাশ্যে সিরিয়ার বিভিন্ন দলকে মুরতাদ বলতে থাকে। একপর্যায়ে জাবহাতুন নুসরাহকে মুরতাদ আখ্যা দেয় আইএস, তাও অফিসিয়ালি,তাদের পত্রিকা দাবিক্বের মাধ্যমে।
তারপর আইএস একে একে বিভিন্ন দেশে যেখানে আল-কায়েদা আছে,সেখানে তাদের শাখা খোলার ঘোষণা দেয় এবং সেসব দেশ থেকে কিছু মুজাহিদ আইএসের সাথে যোগও দেয়। এবার আইএস আফগানিস্তান ও পাকিস্তানেও তাদের শাখা ঘোষণা দেয়। অতঃপর আইএস তালিবানদের সাথে ঝামেলা বাঁধায়।
তালিবানদের পক্ষ থেকে আবু বকর আল-বাগদাদীর প্রতি একটি বিরাট চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে আফগানিস্তানে আইএসের শাখা না খুলে ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের অধীনে কুফফারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার বিশেষ অনুরোধ জানানো হয় এবং আইএসের পক্ষ থেকে এই চিঠির জবাবের জন্য অপেক্ষা করা হয়।
আইএসের মুখপাত্র তালিবানদের এই চিঠির জবাবে আফগানিস্তানে শাখা না খোলা দূরের কথা বরং তালিবানদেরকে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বলে আখ্যা দেয় এবং উল্টো তালিবানদেরকে আইএসে যোগ দেয়ার আহবান জানিয়ে হুমকি দেয়।
অতঃপর আইএস তালিবানদেরকেও মুরতাদ ও পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট আখ্যা দিয়ে তালিবানদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকে এবং তালিবানদের অনেক মুজাহিদ ও সমর্থকদেরকে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করে আইএস অফিসিয়াল ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে।
অতঃপর তারা তালিবান প্রধানকে ত্বগুত আখ্যা দেয়। একপর্যায়ে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে আইএস মুরতাদ বলে ঘোষণা দেয় এবং আল-কায়েদার সব মুজাহিদকে সাহাওয়াত অর্থাৎ মুরতাদ বলে ঘোষণা দেয় আইএস।
আইএসের মুখপাত্র এক অডিও বার্তায় দুনিয়ার সব মুজাহিদদেরকে হুমকি দেয় এবং সকলকে তাদের মতবাদ গ্রহণ করার আহবান করে। অন্যথায় প্রত্যেকের সাথে সেই আচরণ করার হুমকি দেয়,যা মুরতাদদের সাথে করা হয়।
এভাবেই এই দলটি তাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা খাওয়ারিজদের আক্বীদা প্রকাশ করে ।
এই হচ্ছে আইএস নামক ভ্রান্ত দলটির সিরিয়া কেন্দ্রিক ভ্রষ্টতার মোটামুটি সারাংশ।
আইএসের গোমরাহী নিয়ে ইতোমধ্যে আমি একটি বড় নোট লিখেছি,যা তাদের ভ্রষ্টতা বুঝতে সহায়তা করবে ইনশাআল্লাহ্*।
আমার নোটঃ তাকফীরের ক্ষেত্রে আইএসের ভয়াবহ বিচ্যুতি......... https://justpaste.it/takfir_is
এছাড়া শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর মানহাজ থেকে আইএস না আল-কায়েদা দূরে সরে গেছে,তার অকাট্য প্রমাণসহ গ্লোবাল জিহাদের বিভিন্ন বিষয় এবং দাওলার ভ্রান্ত আকীদা বুঝতে বাংলায় অনূদিত এই কিতাবটি সবাই পড়ুন।
কিতাবঃ “আইসিস ও আল-ক্বা’ইদার মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য”
সরাসরি পিডিএফ ডাউনলোড....... http://tinyurl.com/manhaz
ওয়ার্ড ফাইলে সরাসরি ডাউনলোড...... http://tinyurl.com/gtjfz7j
বিঃদ্রঃ উপরোক্ত প্রতিটি কথা অকাট্য প্রমাণ সাপেক্ষে বলেছি। সব কথার প্রমাণের সূত্র দিতে গেলে এই পোস্টটিই একটি পুস্তিকায় রুপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং কারো মনগড়া বক্তব্য কিংবা দাবীর সাথে এই কথাগুলোর তুলনা করার সুযোগ নেই। আর আমি যেহেতু সেসময় দাওলার সপক্ষে এদেশে ফেইসবুকে সবচেয়ে জোরালোভাবে লেখালেখি করেছি,তাই দাওলার বিষয়গুলো আমার ভালোভাবে জানা আছে, আলহামদুলিল্লাহ্* । আল্লাহ্* তা’আলা চাহেনতো আইএসের বাতিল আকীদাগুলো বিস্তারিতভাবে অনলাইনে রেখে যাওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ্*।
https://www.facebook.com/permalink.p...00011204868334
সারা দুনিয়ার প্রায়সব মুজাহিদরা আল-কায়েদার অধীনস্ত এবং শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর বাই'আত গ্রহণ করেছিলো। আর শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ তালিবানদের প্রধান আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমার রাহিঃ এর প্রতি বাই’আত প্রদান করেছিলেন। এভাবে পুরো গ্লোবাল জিহাদ ঐক্যবদ্ধ ছিলো। বর্তমান আইএসের পূর্বের আইএসআাই অর্থাৎ ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকও আল-কায়েদার অধীনস্ত ছিলো।
শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর শাহাদাতের পর আবু বকর আল-বাগদাদী শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে বাই'আত দেন এবং উনার নির্দেশ মানার ওয়াদা করেন,যে ব্যাপারে আবু বকর আল-বাগদাদী কর্তৃক শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে পাঠানো চিঠি রয়েছে। আর সেই চিঠির অকাট্যতা স্বয়ং দাওলার মুখপাত্র সত্ত্বায়ন করেছে।
অতঃপর সিরিয়ার জিহাদ শুরু হলে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর নির্দেশে জাবহাতুন নুসরার আমীরসহ কিছু মুজাহিদকে ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকের পক্ষ থেকে সিরিয়ায় পাঠানো হয়।
অতঃপর জাবহাতুন নুসরাহ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেইট ইন ইরাকের সাথে সুসম্পর্ক রেখে কাজ করতে থাকে। কিন্তু জাবহাতুন নুসরাহ কার সাথে সম্পর্ক রাখে তা কৌশলগত কারণে গোপন রাখা হয়।
অতঃপর আইএস গোপনে আল-কায়েদার তথা শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর প্রতি আইএস প্রধানের বাই'আত ভঙ্গ করে জাবহাতুন নুসরাহকে সিরিয়াতে তাদের শাখা হিসেবে ঘোষণা দেয়,যার কোনো অনুমতি শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ থেকে নেওয়া হয়নি। অতঃপর জাবহাতুন নুসরাহ আইএসের একতরফা এধরণের সিদ্ধান্তের মুখে তারা মূল আল-কায়েদার সাথে যুক্ত হওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয় এবং শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। শাইখ আইমান যাওয়াহিরী হাফিঃ এর পক্ষ থেকে সিরিয়ায় আল-কায়েদার উপস্থিতির বিষয়টি প্রকাশ করার ব্যাপারে নিষেধ ছিলো,যাতে মার্কিন কুফফার ও তার দোসরদের ‘আল-কায়েদা’ থাকার অজুহাতে শামের মুসলিমদের উপর আগ্রাসন চালানোর অজুহাত দেখাতে না পারে। কিন্তু আইএসের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে জাবহাতুন নুসরার আল-কায়েদার সাথে সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।
মূলত আইএসের নেতারা আল-কায়েদার অধীন থেকে গোপনে বের হয়ে গেছে,যা তারা প্রকাশ করেনি। সিরিয়াতে তাদের শাখা ঘোষণার পর নুসরাহ থেকে অনেক মুহাজির মুজাহিদ আইএসের সাথে যোগ দেয়। এই বিভক্তির পরও সবাই মিলেমিশে আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে।
কিন্তু আইএস তাদের একক আধিপত্য পাকাপোক্ত করার জন্য বিভিন্ন বিদ্রোহী দলের অনেক নেতাকে গোপনে হত্যা করে। প্রথমদিকে কেউ বুঝতো না। যখন দুয়েকটা প্রকাশ পেয়েছে,তখন তারা এটা ভুলক্রমে হয়েছে বলে দাবী করেছিলো। কিন্তু বার বার হওয়ার পর এবং অন্যান্য আসাদ বিরোধী দলগুলোর উপর আইএস হামলা করার কারণে একপর্যায়ে সিরিয়ার বিভিন্ন দল মিলে আইএসের উপর হামলা চালায়। কিন্তু জাবহাতুন নুসরাহ এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে এবং আইএসের ভাইদের সহায়তা করে,যা আইএসের শামের শার’য়ী তার অফিসিয়াল বার্তায় স্বীকার করেছেন ।
একপর্যায়ে আইএস জাবহাতুন নুসরার বেশ কিছু মুজাহিদকেও হত্যা করে। অতঃপর জাবহাতুন নুসরার আমীর অফিসিয়াল বার্তা দেন, সবাই যেনো নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করে মীমাংসার দিকে অগ্রসর হন। এক্ষেত্রে সব গ্রুপ রাজী হলেও আইএস রাজী হয়নি। উল্টো আইএস বিভিন্ন জায়গায় সিরিয়ার বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপের উপর গাড়ী বোমা হামলা চালাতে শুরু করে।
জাবহাতুন নুসরার রাক্কার আমীরকে মুরতাদ বলে আইএস হত্যা করেছে ২০১৪ সালের শুরুতেই। এছাড়া রাক্কাসহ সিরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় জাবহাতুন নুসরার বহু মুজাহিদকে আইএস হত্যা করলো। আর অন্যান্য দলগুলোর সাথেতো আইএসের যুদ্ধ চলতেই লাগলো। ইতোমধ্যে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর পক্ষ থেকে নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করার জন্য কত অনুরোধ করে বার্তা দেয়া হলো ! সবাই রাজী হয় কিন্তু আইএস রাজী হয়নি ।
আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তার মধ্যে আমেরিকার মদদপুষ্ট কিছু দলও ছিলো,যাদেরকে জাবহাতুন নুসরা পরে ঠেঙ্গানী দিয়েছে এবং অনেককে নির্মূল করেছে। যেমনঃ জামাল মারুফের এসআরএফ(সিরিয়ান রেভ্যুলুশনারি আর্মি),হাযম মুভমেন্ট এবং জর্ডানে মার্কিন তদারকীতে প্রশিক্ষণ নেয়া কিছু মার্কিন তাবেদার ভাড়াটে।
তারপর জাবহাতুন নুসরার আমীর আইএসকে লক্ষ্য করে মীমাংসায় আসার জন্য ৫ দিনের আল্টিমেটাম দেন কিন্তু আইএস এবারও রাজী হয়নি।
আইএস এবারও কোনো মীমাংসায় সাড়া দেয়নি। এরপর আইএস জাবহাতুন নুসরাসহ অন্যান্য দলকে আস্তে আস্তে তাকফীর অর্থাৎ মুরতাদ আখ্যা দিয়ে যুদ্ধ করতে থাকে। কিন্তু আইএস যে অন্যান্য দলকে তাকফীর করে প্রথমদিকে স্বীকার করতো না। বলতো, না, “আমরা তাকফীর করিনা”। যেমন আহরার আশ-শামের ক্ষেত্রেই বলতো। এব্যাপারে তাদের অফিসিয়াল বার্তাও আছে। এছাড়া তালিবানদের ক্ষেত্রেও আইএস তাকফীর করে না এমন অফিসিয়াল বার্তা আছে ! অথচ পরবর্তীতে আইএস স্পষ্টভাবে তালিবানকে তাকফীর করেছে !
আল-কায়েদার সেন্ট্রাল কমান্ড ২০১৪ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি আইএসের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে। কারণ তারা মুসলিমদের রক্ত প্রবাহিত করছে এজন্য। অতঃপর আইএস ইরাকে মসূলসহ বিভিন্ন শহর দখল করে নিয়ে খিলাফাহ ঘোষণা করে দেয় ২০১৪ সালের ২৯ জুন।
এবার তারা আস্তে আস্তে প্রকাশ্যে সিরিয়ার বিভিন্ন দলকে মুরতাদ বলতে থাকে। একপর্যায়ে জাবহাতুন নুসরাহকে মুরতাদ আখ্যা দেয় আইএস, তাও অফিসিয়ালি,তাদের পত্রিকা দাবিক্বের মাধ্যমে।
তারপর আইএস একে একে বিভিন্ন দেশে যেখানে আল-কায়েদা আছে,সেখানে তাদের শাখা খোলার ঘোষণা দেয় এবং সেসব দেশ থেকে কিছু মুজাহিদ আইএসের সাথে যোগও দেয়। এবার আইএস আফগানিস্তান ও পাকিস্তানেও তাদের শাখা ঘোষণা দেয়। অতঃপর আইএস তালিবানদের সাথে ঝামেলা বাঁধায়।
তালিবানদের পক্ষ থেকে আবু বকর আল-বাগদাদীর প্রতি একটি বিরাট চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে আফগানিস্তানে আইএসের শাখা না খুলে ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের অধীনে কুফফারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার বিশেষ অনুরোধ জানানো হয় এবং আইএসের পক্ষ থেকে এই চিঠির জবাবের জন্য অপেক্ষা করা হয়।
আইএসের মুখপাত্র তালিবানদের এই চিঠির জবাবে আফগানিস্তানে শাখা না খোলা দূরের কথা বরং তালিবানদেরকে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বলে আখ্যা দেয় এবং উল্টো তালিবানদেরকে আইএসে যোগ দেয়ার আহবান জানিয়ে হুমকি দেয়।
অতঃপর আইএস তালিবানদেরকেও মুরতাদ ও পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট আখ্যা দিয়ে তালিবানদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকে এবং তালিবানদের অনেক মুজাহিদ ও সমর্থকদেরকে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করে আইএস অফিসিয়াল ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে।
অতঃপর তারা তালিবান প্রধানকে ত্বগুত আখ্যা দেয়। একপর্যায়ে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে আইএস মুরতাদ বলে ঘোষণা দেয় এবং আল-কায়েদার সব মুজাহিদকে সাহাওয়াত অর্থাৎ মুরতাদ বলে ঘোষণা দেয় আইএস।
আইএসের মুখপাত্র এক অডিও বার্তায় দুনিয়ার সব মুজাহিদদেরকে হুমকি দেয় এবং সকলকে তাদের মতবাদ গ্রহণ করার আহবান করে। অন্যথায় প্রত্যেকের সাথে সেই আচরণ করার হুমকি দেয়,যা মুরতাদদের সাথে করা হয়।
এভাবেই এই দলটি তাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা খাওয়ারিজদের আক্বীদা প্রকাশ করে ।
এই হচ্ছে আইএস নামক ভ্রান্ত দলটির সিরিয়া কেন্দ্রিক ভ্রষ্টতার মোটামুটি সারাংশ।
আইএসের গোমরাহী নিয়ে ইতোমধ্যে আমি একটি বড় নোট লিখেছি,যা তাদের ভ্রষ্টতা বুঝতে সহায়তা করবে ইনশাআল্লাহ্*।
আমার নোটঃ তাকফীরের ক্ষেত্রে আইএসের ভয়াবহ বিচ্যুতি......... https://justpaste.it/takfir_is
এছাড়া শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ এর মানহাজ থেকে আইএস না আল-কায়েদা দূরে সরে গেছে,তার অকাট্য প্রমাণসহ গ্লোবাল জিহাদের বিভিন্ন বিষয় এবং দাওলার ভ্রান্ত আকীদা বুঝতে বাংলায় অনূদিত এই কিতাবটি সবাই পড়ুন।
কিতাবঃ “আইসিস ও আল-ক্বা’ইদার মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য”
সরাসরি পিডিএফ ডাউনলোড....... http://tinyurl.com/manhaz
ওয়ার্ড ফাইলে সরাসরি ডাউনলোড...... http://tinyurl.com/gtjfz7j
বিঃদ্রঃ উপরোক্ত প্রতিটি কথা অকাট্য প্রমাণ সাপেক্ষে বলেছি। সব কথার প্রমাণের সূত্র দিতে গেলে এই পোস্টটিই একটি পুস্তিকায় রুপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং কারো মনগড়া বক্তব্য কিংবা দাবীর সাথে এই কথাগুলোর তুলনা করার সুযোগ নেই। আর আমি যেহেতু সেসময় দাওলার সপক্ষে এদেশে ফেইসবুকে সবচেয়ে জোরালোভাবে লেখালেখি করেছি,তাই দাওলার বিষয়গুলো আমার ভালোভাবে জানা আছে, আলহামদুলিল্লাহ্* । আল্লাহ্* তা’আলা চাহেনতো আইএসের বাতিল আকীদাগুলো বিস্তারিতভাবে অনলাইনে রেখে যাওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ্*।
https://www.facebook.com/permalink.p...00011204868334
Comment