Announcement

Collapse
No announcement yet.

বদরের মহিমায় স্মৃতিময় মাহে রমজান.....মুসাল্লাহ কাতিব

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বদরের মহিমায় স্মৃতিময় মাহে রমজান.....মুসাল্লাহ কাতিব

    রমজান একটি তাৎপর্যপূর্ণ পবিত্রতম মাস। ইসলামে রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে অনেক উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এই মাসে যেমনি সিয়াম সাধনা, আত্মশুদ্ধি ও সংযম তথা প্রবৃত্তির দমন চর্চা হয়; তেমনি অশ্লীলতা, বেহায়াপনা এবং কুফফারদের সীমালঙ্ঘনকেও বরদাশত করা হয় না। এটি যেমনি কুরআন নাযিলের মাস, ঠিক তেমনি কুরআনের সম্মান রক্ষা করারও মাস। জিহাদ ও শাহাদাতের মাস। যেই বছর রমজানে সিয়াম পালনের প্রথম আদেশ দেয়া হয় ঠিক সেই বছরই রমজান মাসে বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সুসংঘটিত যুদ্ধ। মুলতঃ এটি ছিল মুসলমানদের ভাগ্য নির্ধারণকারী এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী যুদ্ধ। যেহেতু এই মাস একটি বরকতপূর্ণ পবিত্র মাস, তাই এই মাসে বেশি বেশি নেক আমলের প্রতিযোগিতা করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এর নৈকট্য লাভ করা উচিত। আর জিহাদ এমন এক আমল, যা আল্লাহর নৈকট্য লাভের সহজ উপায়। কেননা এটি দ্বীনের সর্বোচ্চ চূড়া এবং মুমিনদের প্রিয় আমল। তাই এই মাসে আমাদের পূর্বসূরিরা বেশি বেশি অভিযানে বের হতেন।

    দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসের ঘটনা। কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলা নিরাপদে শক্তি ও মাল সংগ্রহ করে মুসলিম ভূখণ্ডের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করে যাবে, এটি মেনে নেয়া যায় না। যারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং ইসলামকে ধ্বংস করে দিতে চায়; তাদের দাম্ভিকতাকে ভেঙ্গে চুরমার করতে হলে তাদের কাফেলা রুখে দিতে হবে। ধ্বংস করে দিতে হবে তাদের শক্তির উৎস। এই প্রত্যয় নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরাইশ বাণিজ্য কাফেলাকে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ৩১৩ জন সাহাবী সহ বের হলেন। কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এমন এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন, যার তাৎপর্য ক্ষুদ্র মানব জ্ঞান দ্বারা বুঝা অসম্ভব। তিনি তার প্রতিশ্রুত দুই দলের মধ্য থেকে এমন দলকে বাছাই করলেন যেটি তিনি চান। অতঃপর এমন এক ঘটনা সংঘটিত হলো, যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মাত্র ৩১৩ জন দুর্বল নিরস্ত্র মুজাহিদদের এক হাজার সুসজ্জিত মুশরিক বাহিনীর মোকাবেলায় বিজয় দান করেন। আর অহংকারী কাফেরদের লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করে দেন।
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, “স্মরণ কর! যখন আল্লাহ তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, দুটি দলের মধ্যে একটি তোমাদের আয়ত্ত্বে আসবে। তোমরা চেয়েছিলে যে, দুর্বল দলটি তোমাদের সম্মুখীন হোক; কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এর ইচ্ছা ছিল তার বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে সত্যরূপে প্রতিভাত করে দেখাবেন এবং কাফেরদের শিকড় কেটে দিবেন। যেন সত্য সত্য হয়ে ভেসে ওঠে এবং বাতিল বাতিল হিসেবে প্রমাণিত হয়; পাপী লোকেরা যতই অপছন্দ করুক”। -সূরা আনফাল: ৭-৮

    আজ কাফের-মুশরিকদের কত বাণিজ্য কাফেলা মুসলিম ভূখণ্ডের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে! একের পর এক রমাজানও অতিবাহিত হয়ে যায় আমাদের অজান্তে; কিন্তু আর কোনো বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয় না! তাদের কাফেলাকে রুখে দিতে শির তুলে আর কেউ দাঁড়ায় না! কত আবু জেহেল, উতবা আর উমাইয়া ইবনে খালাফ এর উত্থান হচ্ছে; কিন্তু তাদের উদ্ধত মস্তক কাটার জন্য হামজা, আলী, আর মাআজ-মুয়াজদের তৎপরতা দেখা যায় না! এর কারণও স্পষ্ট, আমরা আজ রমজানের তাৎপর্যপূর্ণ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেই না। কুরআনের নির্দেশ থেকে বিমুখ হয়ে আছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ থেকে দূরে সরে গেছি। তাই আমাদের ওপর লাঞ্ছনার পাহাড় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ইসলাম যখন অনেক দুর্বল ছিল, তখনও কুফফারদের প্রভাব ও হুমকিকে বরদাশত করা হয়নি। অথচ আজ ইসলাম ও মুসলমানদের শক্তি ও সংখ্যাধিক্য থাকার পরও কুফরি শক্তির সামনে নতজানু, লাঞ্ছিত ও পরাভূত।

    গত রমজানের শেষের দিকে বেনজির নামক জালেম তাগুত বলেছিল, (আল্লাহ তার শেষ পরিণতিকেও বেনজির! করে দিন) “রমজান মাসে আরব দেশেও কখনো যুদ্ধ হতো না। আগে যুদ্ধ চলতে থাকলেও রমজান মাসে বিরত রাখা হতো। অথচ জঙ্গিরা এ মাসেই এমন একটি ঘটনা ঘটাল।” তার এই কথাটি যে প্রেক্ষাপটেই বলুক, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরোধিতা করতে গিয়ে সে মূলতঃ এরকম মিথ্যাচার ও অজ্ঞতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিল। অথচ এটি নিষিদ্ধ মাস সমূহের অন্তর্ভুক্তও নয়। ইসলামের ইতিহাসে রমজান মাসে এমন অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে এবং বিজয় অর্জিত হয়েছে, তার হিসাব রাখা মুশকিল। যেমন; বদর যুদ্ধ, মক্কা বিজয়, জেরুজালেম বিজয়, স্পেন বিজয়, হিন্দ বিজয় সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ এই রমজান মাসে সংঘটিত হয়েছে। আজও হচ্ছে।
    আফসোসের বিষয় হলো, আজ দেখা যায় তাগুত সম্প্রদায় আলেম সমাজকে সঠিক ইসলাম (!) শিখাতে চায়; জিহাদের আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা (!) দিয়ে কিতাব রচনা করে ইসলামের সুপ্রতিষ্ঠিত বিধানসমূহকে রহিত করে নব্য জাহিলিয়াতের বিধান কায়েম করে যাচ্ছে। মুরতাদরা এমনকি হিন্দু মুশরিকদল পর্যন্ত ফতওয়া প্রদান করতে সংকোচবোধ করে না। ইসলামের এই লাঞ্ছনা ও অপমানকে কথিত উত্তরসূরিরা হজম করে যাচ্ছেন হিকমার (!) আড়ালে। আজ রমজান আসলে কেবল আত্মশুদ্ধি আর সংযমের উপদেশ দেয়া হয়; কিন্তু বাতিলকে প্রতিরোধের শিক্ষা দেয়া হয় না। বদরের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষা দেয়া হয় না।
    সুতরাং আবার যখন রমজানে বদর সংঘটিত হওয়া শুরু করবে। কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলা লুণ্ঠিত হতে থাকবে। আবু জেহেলদের মাথা মাটিতে লুটোপুটি খাবে। তখনি বিজয় ও সাহায্য আসবে। তখনি হক্বের বিজয় হবে এবং বাতিল পরাভূত ও লাঞ্ছিত হবে। আর আল্লাহর কালেমা সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত হবে। সর্বোপরি, বদরের ছোঁয়া পেয়ে রমজানের মহিমা ও তাৎপর্য বিকশিত হবে বিশ্বময়।

    অবশেষে আমি মুমিন ভাইদের আহবান করবো, আপনারা রমজান মাসকে মূল্যায়ন করুন। এই মাসে ‘গাজওয়া-য়ে বদর’ এর সুন্নাহকে পুনরায় বাস্তবায়ন করুন। জিহাদ ও মুজাহিদদের সাহায্য করুন। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’তে আপনার প্রিয় মাল থেকে ব্যয় করুন। সাদাকাহ-যাকাত সহ সকল প্রকার সহযোগিতার মাধ্যমে এই ফযীলতপূর্ণ মাসে, ফযীলতপূর্ণ আমল দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করুন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে বদরের চেতনা নিয়ে রমজান অতিবাহিত করার তাওফীক দান করুন। আমীন!

    ...al-balagh 1438 |2017| issue 5...

  • #2
    কেউ যদি সত্তিকার অর্থেই আল্লাহর সাথে বেবসা করতে চায় তাহলে তো সে রামাদান কে পুরোপুরি ভাবে কাজে লাগানোর জন্য খুব তৎপর হয়ে উঠবে , কেননা এ মাস যে হচ্ছে আল্লাহর সাথে বেবসায়িদের জন্য সিজন মাস । ধরুন কোন বেবসায়ি সাড়া বছরে মাল বিক্রি করে এক পরিমাণ মুনাফা অর্জন করে , আর একটি মাসে এসে তার বেবসা এত বাড়া বাড়ে যে , এ মাসের মুনাফা তার সাড়া বছরের চাইতেও অত্তাধিক হয়ে উঠে । তাহলে বুদ্ধিমান বেবসায়ি কি করবে ?? সাড়া বছরে সে তার বেবসায়ে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতো , তার বেবসায়ের সিজন মাসেও কি সে একি পরিমাণ বিনিয়োগ করবে ?? নাকি তা বহু পরিমাণে বাড়িয়ে দিবে ??

    অতয়েব , রামাদান মাস যেহেতু আমাদের জন্য বেবসার সিজন মাস , সেহেতু এ মাসে আমাদের আল্লাহর পথে দান -সাদাকা প্রচুর পরিমানে বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ , জিহাদি কাজে বেশি বেশি সময় এবং শ্রম দেওয়া উচিত , ফিল্ড এ প্রচুর মেহনত এবং কুরবানি করা প্রয়োজন ।।
    আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করে দিন ......
    আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। (আলে ইমরান ১৪৬)

    Comment


    • #3
      Zajakumullah

      Comment


      • #4
        আজ কাফের-মুশরিকদের কত বাণিজ্য কাফেলা মুসলিম ভূখণ্ডের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে! একের পর এক রমাজানও অতিবাহিত হয়ে যায় আমাদের অজান্তে; কিন্তু আর কোনো বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয় না! তাদের কাফেলাকে রুখে দিতে শির তুলে আর কেউ দাঁড়ায় না! কত আবু জেহেল, উতবা আর উমাইয়া ইবনে খালাফ এর উত্থান হচ্ছে; কিন্তু তাদের উদ্ধত মস্তক কাটার জন্য হামজা, আলী, আর মাআজ-মুয়াজদের তৎপরতা দেখা যায় না!
        জাযাকাল্লাহ, মুহতারাম ভাই মুসাল্লাহ কাতিব! সত্যি আপনার প্রতিটি প্রবন্ধ অনেক চমৎকার এবং শিক্ষণীয়। আল্লাহ আপনাকে আরও তাওফীক দান করুন! আমীন!
        বর্বর হিংস্র হায়েনার বিষাক্ত থাবায় আমাদের মা-বোন আর ভাইদের রক্তে ভেসে যাচ্ছে আমাদেরই নিজ ভূমি। আর তুমি........তবুও তুমি বসে থাকবে ? জেনে রেখো! তোমাকে অবশ্যই এ নির্যাতিত উম্মার রবের সামনে দাঁড়াতে হবে।

        Comment


        • #5
          সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা আবার আমাদেরকে বদরী বানিয়ে দিন।
          মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
          রোম- ৪৭

          Comment


          • #6
            রমাদানুল মুবারকে কত আলোচনাই মাসজিদের মিম্বারে মিম্বারে শোনা যায়; কিন্তু বদরের মাসে, মক্কা বিজয়ের এ মাসে খুব বেশি শোনা যায় না বদরের আলোচনা!! শোনা যায় না মক্কা বিজয়ের আলোচনা!!
            আফসোস লাগে যখন দেখি, আহলে ইলমগণ ইফতার মাহফিল, দুয়া মাহফিল, মিলাদ মাহফিল, ওয়াজ মাগফিল ইত্যাদি পরিচালনাকেই অনেক বড় কিছু করে যাচ্ছি, ভাবতে থাকেন। এমনও মাসজিদ আছে যেখানে এই পবিত্র রমাদানুল মুবারকে মাগরিবের জামাআতে মুছল্লী পাওয়া যায় না; এমনকি ইমাম ছাহেবও থাকতে পারেন না!!!! কারণ কোথাও ইফাতার ও মিলাদ এর আয়োজন আছে!!! অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, মিলাদ পরিচালনা করতে পারাকেই তারা বিশাল কিছু ভাবছেন!!!!! আবার কেউ কেউ হুবহু এই মিলাদ মাহফিলকেই দুয়া মাহফিল বলে চালিয়ে দেয়। সুর-স্বর, আয়োজনের ঢং কিন্তু একই...
            Last edited by Abdullah Ibnu Usamah; 06-05-2017, 10:39 AM.
            سبيلنا سبيلنا الجهاد الجهاد
            طريقنا طريقنا الجهاد الجهاد

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহ।

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা আবার আমাদেরকে বদরী বানিয়ে দিন।

                Comment


                • #9
                  ইসলামের এই লাঞ্ছনা ও অপমানকে কথিত উত্তরসূরিরা হজম করে যাচ্ছেন হিকমার (!) আড়ালে। আজ রমজান আসলে কেবল আত্মশুদ্ধি আর সংযমের উপদেশ দেয়া হয়; কিন্তু বাতিলকে প্রতিরোধের শিক্ষা দেয়া হয় না। বদরের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষা দেয়া হয় না।
                  সুতরাং আবার যখন রমজানে বদর সংঘটিত হওয়া শুরু করবে। কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলা লুণ্ঠিত হতে থাকবে। আবু জেহেলদের মাথা মাটিতে লুটোপুটি খাবে। তখনি বিজয় ও সাহায্য আসবে। তখনি হক্বের বিজয় হবে এবং বাতিল পরাভূত ও লাঞ্ছিত হবে। আর আল্লাহর কালেমা সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত হবে। সর্বোপরি, বদরের ছোঁয়া পেয়ে রমজানের মহিমা ও তাৎপর্য বিকশিত হবে বিশ্বময়।
                  মাশাআল্লাহ , আল্লাহ আমাদের আবার সেই সুনালি ইতিহাসে ফিরে যাবার তাওফীক দিন ।
                  Last edited by murabit; 06-06-2017, 04:11 PM.

                  Comment

                  Working...
                  X