দ্বীন কায়েমে গণতান্ত্রিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টা বনাম বিশ্বব্যাপী পরিচালিত
জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ!
...আবু উবাইদাহ আল-হাফিয
জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ!
...আবু উবাইদাহ আল-হাফিয
১...আরব বসন্তের ঝড়ো হাওয়া বইছে। স্বৈরাচারী দুর্নীতিবাজ তাগুত শাসকদের একে একে পতন ঘটতে লাগল। পশ্চিমা কুফুরী বিশ্ব এটিকে গণতান্ত্রিক হাওয়া মনে করে বিজয়ের হাসি হাসতে লাগল। অন্যদিকে গ্লোবাল জিহাদের আলিম ও নেতৃবৃন্দ উম্মাহর সচেতন অংশকে তাগুত বিরোধী এই আন্দোলনে ঢুকে পড়ার নির্দেশনা প্রদান করলেন। এটিকে তাগুত বিরোধী দাওয়াতের মওকা হিসেবে গ্রহণ করলেন।
এই যখন পরিস্থিতি, তখন পশ্চিমা গবেষকরা গণতন্ত্রের বিজয় দেখে হাততালি দেওয়া শুরু করল। গণতান্ত্রিক আরব বসন্তের হাওয়ায় আল-কায়েদার পরিচালিত গ্লোবাল জিহাদ আদর্শিকভাবে পরাজিত ও নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখতে লাগল। গণতান্ত্রিক ইসলামের অনুসারী মডারেট মুসলিমরা তাদের বিভ্রান্ত পথের গণতান্ত্রিক বিজয় দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ল। জিহাদীদের জিহাদকে তারা চ্যালেঞ্জ জানাতে লাগল! দুর্বল ঈমানের অধিকারী হিসেবে মাঝে মাঝে খুব মন খারাপ হতো! তাহলে কী গ্লোবাল জিহাদ আদর্শিকভাবে হোঁচট খাবে! গণতান্ত্রিক বসন্তের কাছে মুখ থুবড়ে পড়বে! পরক্ষণেই আবার মুহাম্মাদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস মনে পড়ে যেতো, “এই দ্বীন সর্বদাই কায়েম থাকবে এবং একদল লোক কিয়ামত পর্যন্ত কিতাল করে যাবে।” (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ)
এরপরের কথা সবারই জানা। গণতন্ত্রের ডানায় ভর করে ক্ষমতায় যাওয়া তিউনিসিয়ার আন-নাহদা, মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড এখন রীতিমত অতীত ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবার পথে রয়েছে। আদর্শ আর ক্ষমতারোহণ উভয় ক্ষেত্রে আজ তারা চরম দেউলিয়াত্বের শিকার। আর গ্লোবাল জিহাদ! সেটাও সবারই চোখের সামনে। আজ গোটা দুনিয়াতে আল-কায়েদার গ্লোবাল জিহাদ ছড়িয়ে পড়েছে। কোথায় নেই? মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি দেশে আল-কায়েদার জিহাদ বটবৃক্ষের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আরব বসন্তের হাওয়া লাগা দেশগুলোতে আল-কায়েদা রীতিমত নিয়ন্ত্রকের আসনে, আলহামদুলিল্লাহ। মাঝখানে বিপথগামী খারিজী আইসিস কিছুটা ঝামেলা পাকালেও সময়ের ঘূর্ণাবর্তে এটি অতীত হতে বাধ্য ইনশাআল্লাহ।
যারা আরব বসন্তকে আল-কায়েদার গ্লোবাল জিহাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চেয়েছিল; তারা নিজেরাই আজ বিলুপ্তির পথে। যারা আরব বসন্তের মাধ্যমে গ্লোবাল জিহাদকে কিতাবের পাতায় স্থান দিতে চেয়েছিল; তারাই আজ কিতাবের পাতায় স্থান নিতে চলেছে।
কারণ তারা রব্বুল আলামীনের সুন্নাতকে ভুলে গিয়েছিল। ভুলে গিয়েছিল রাহমাতুল্লিল আলামীনের চিরন্তন সত্য হাদীসগুলোকে।
২...প্রখর যুক্তির অধিকারী ডা. জাকির নায়েক মিডিয়ার মাধ্যমে রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়ে ফেললেন। স্থূল চিন্তার অধিকারী একশ্রেণীর মানুষ ডা. জাকির নায়েকের দাওয়াতী মিশনকে জিহাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর নিষ্ফল চেষ্টা চালাল। এই উম্মাহর সর্বাধিক কল্যাণকামী মুজাহিদ আলিম ও উমারাগণ জাকির নায়েকের বহু বক্তব্য ও ব্যাখ্যার সাথে মোটা দাগে দ্বিমত রাখার পরেও এ ব্যাপারে নেতিবাচক কোনো কথা বলেননি। কারণ উম্মাহর সামান্য কল্যাণ যেখানে হয়, আল-কায়েদা সে ব্যাপারে নেতিবাচক কোনো কথা বলে না; যতক্ষণ না ইসলামের শত্রুতে পরিণত না হয়।
সময়ের ব্যবধানে ডা. জাকির নায়েকের টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হলো। যারা ডা. জাকির নায়েকের মাধ্যমে জিহাদী মানহাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার নিষ্ফল অপচেষ্টা করতো, তারা নিশ্চয়ই সফল হয়নি; বরং ডা. জাকির নায়েকের শান্তিবাদী বক্তব্যের পরও তাগুত-মালউন চক্র ঠিকই তার চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে! হিসাব করলে দেখা যাবে আল-কায়েদাই লাভবান হয়েছে। জাকির নায়েকের শান্তিবাদী মানহাজে যারা বিশ্বাস করতেন; তাদের অনেকেও এখন হয়তো বুঝতে শুরু করেছেন যে, আল-কায়েদার মানহাজই সঠিক। কারণ দুনিয়ার কুফফার শক্তি যুক্তি ও আলোচনার পথে নেই; বরং তারা যুদ্ধের ময়দানে। তারা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত। তারা যদি যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক পথে থাকতো; তাহলে ‘পিস টিভি’ বন্ধ করার কথা ছিল না ।
৩...২০১০ সালে আমেরিকার গোপন তথ্যভাণ্ডার প্রকাশ করে দিয়ে গোটা দুনিয়াতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ। গোটা দুনিয়া আমেরিকার কুৎসিত চেহারা দেখতে পেল। পৃথিবীর একটি বিরাট অংশ অ্যাসেঞ্জকে প্রযুক্তি ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মহানায়ক আখ্যা দিতে থাকল। বিশ্ব-সন্ত্রাসের হোতা আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রযুক্তির যুদ্ধে অ্যাসেঞ্জকে সেনাপতির আসনে স্থান দিল। প্রথম আলোর পতিত বামপন্থী কলামিস্ট ফারুক ওয়াসিফ অ্যাসেঞ্জের আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রযুক্তির এই যুদ্ধকে গ্লোবাল জিহাদের মহানায়ক শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর পরিচালিত সুমহান জিহাদের চাইতে অধিক কার্যকর দাবী করে একটি কলাম লিখে তাতে বলেছিল, “লাদেন ছিলেন জুজু আর জুলিয়ান বাস্তব। সন্ত্রাসবাদের ভয় দেখানোই ছিল বুশের রাজনীতি, আর ওবামার ভয় উইকিলিকসের প্রকাশ করা সত্যে। আল-কায়েদা মিথ্যার কাকতাড়ুয়া, উইকিলিকস সত্যের সৈনিক। আল-কায়েদা আমেরিকাকে শক্তিশালী করেছে; কিন্তু উইকিলিকসের কাজে সাম্রাজ্য দুর্বল হয়েছে। ঘটনাটি এতই নতুন ধরনের যে, লাদেন বা চে-এর তুলনা তাই বেমানান।”
কলামের লিংক.... http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-15/news/115843
কলামটি পড়ে তার বুদ্ধির স্থূলতা দেখে খুবই হেসেছি। আল্লাহ তাআলা এ অধমের সে সময়ের হাসির মর্যাদা রক্ষা করেছেন। ফাল্লাহু খাইরুন হাফিজা। কোথায় আজ সেই অ্যাসেঞ্জ আর কোথায় বা উইকিলিকস! আমেরিকার বিরুদ্ধে এসব তথ্য ফাঁস করে আমেরিকার কী-ই বা ক্ষতি করা গেছে? আমেরিকা কি মান-ইজ্জতের পরোয়া করে এসব করে? একসময় কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে অ্যাসেঞ্জ, বিস্মৃত হয়ে যাবে উইকিলিকস। কিন্তু শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর পরিচালিত গ্লোবাল জিহাদ! বলার অবকাশ রাখে না! পূর্বেই ধারণা দিয়েছি। এই জিহাদ চলতে থাকবে কিয়ামত অবধি। বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে শুধু সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াইয়ের বিচারে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অ্যাসেঞ্জ না উসামা বিন লাদেন রহ. এর পথ কোনটি কার্যকর; তা বোঝতে বেগ পাওয়ার কথা নয়।
৪...বঙ্গভূমিতে নাস্তিকদের উৎপাত অতঃপর তাদের জন্য আল-কায়েদার শাখা আনসার আল-ইসলামের শাতিম নিধন মহৌষধের প্রেক্ষাপটে নাস্তিকদের স্থূল মতবাদের যৌক্তিক জবাব প্রদান করে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক বই উপহার দিলেন ভাই আরিফ আজাদ। ইসলাম ও কুরআনের বিরুদ্ধে নাস্তিকদের অযৌক্তিক ও বেহুদা ক্যাচালের যৌক্তিক জবাবে তিনি সাজিয়ে তুললেন ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’। গ্রন্থটি ও তার রচয়িতাকে আল্লাহ তাআলা ইসলামের জন্যে কবুল করুন।
এই ভূমির মুসলিমদের মতো আল-কায়েদার মানহাজের হিসেবে আমরাও আনন্দিত হয়েছি। কারণ ইসলাম ও মুসলিমদের কল্যাণে যে কোনো কাজ আল-কায়েদার নেতৃত্ব ও সমর্থকদের আনন্দিত করে। আল-কায়েদার উমারাদের থেকে আমরা ‘আদ-দ্বীনুল ক্বাইয়্যিম’ এর এই নীতিই পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। ইসলামের শত্রুতায় লিপ্ত না হলে আল-কায়েদা সাধারণত কাউকে শত্রু মনে করে না। আমরা মনে করি, ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ পুস্তকের মাধ্যমে ১ জন মানুষও যদি নাস্তিকতাবাদের এই অশুভ আস্ফালন থেকে মুক্তি পায় কিংবা সন্দেহবাদ নামক অসুস্থতা থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় শেফা লাভ করে; তাহলে এটিও বিরাট কল্যাণকর নিঃসন্দেহে। একজন ব্যক্তির হিদায়াত লাভকে আমরা গোটা দুনিয়ার চেয়ে অধিক মূল্যবান মনে করি।
আল-কায়েদা নিজেদেরকে উম্মাহর চেয়ে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর কিছু ভাবে না; বরং নিজেদেরকে উম্মাহর অংশ মনে করে। উম্মাহর আনন্দে আনন্দিত হয়, ব্যথায় ব্যথিত হয়। উম্মাহর কষ্টগুলোকে রক্তের নযরানার মাধ্যমে দূর করার চেষ্টা করে। রব্বুল আলামীনের নির্দেশকে সবকিছুর ওপর প্রাধান্য দেয়। নিজেদের জামাআহ নিয়ে ‘আসাবিয়্যাত’ ও কূপমণ্ডুকতার সংকীর্ণ গলিতে আটকে থাকে না; বরং আসমানী উদারতায় গোটা উম্মাহকে আপন করে নেয়। যার মাধ্যমেই এই দ্বীনের কল্যাণ হয়, তাকেই মুবারকবাদ জানায়। দ্বীনের কল্যাণে আনন্দিত হয়, যদিও সবকিছু আল-কায়েদার মানহাজের আওতায় না হয়।
‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ এর বহুল প্রচার ও জনপ্রিয়তা দেখে কেউ যদি বুদ্ধিবৃত্তিক এই মেহনতকে গ্লোবাল জিহাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চায়; তাহলে তার জন্যেও অতীতের মতোই করুণা হবে, এই আর কী! তার বুদ্ধির জড়তা দেখে এক চিলতে হাসির উদ্রেক হবে মাত্র।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নাস্তিক্যবাদীদের মোকাবেলায় এই বইটি বরং আল-কায়েদার শাতিমুর-রাসূল তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গালি-গালাজকারীদের হত্যা করার এই মিশনের যৌক্তিকতাকে আরো সুদৃঢ় করবে ইনশাআল্লাহ। যুক্তি, বুদ্ধি-বিবেক বর্জিত এই ভুয়া নাস্তিক আবর্জনাগুলো আসলে ইসলাম, আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে তাদের আক্রোশ প্রকাশ করে মাত্র। তারা যদি সত্যিই যুক্তি-বুদ্ধির আলোকে ইসলামকে যাচাই-বাছাই এবং তাদের মতবাদকে পরখ করতো; তাহলে ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ পড়ার মাধ্যমে তারা সত্যের সন্ধান পেতে পারতো। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি ! ‘আসিফ মহিউদ্দিন’ নামক শাহবাগী আবর্জনা সে তার ফেসবুক পোস্টে ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ পড়বেই না বলে জানিয়ে দিয়েছে! এটি নাকি ধর্মীয় আবহে লেখা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি!
এ ধরনের আবর্জনাগুলো ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ প্রকাশিত হওয়ার পর ইসলামের বিরুদ্ধে অধিক আক্রোশ প্রকাশ করছে। কারণ তাদের যুক্তি, বুদ্ধি-বিবেক বর্জিত শত্রুতা কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে!
সুতরাং প্রত্যেক আকলবান মানুষ বুঝবেন, এই শাহবাগী আবর্জনাগুলো বুদ্ধিবৃত্তিক যৌক্তিকতার ধার ধারে না; বরং ইসলামের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক শত্রুতা প্রকাশ করাই তাদের প্রভু মনোনীত চাকরি। আর তাই তাদের জন্যে ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ এর ঝাড়ফুঁক প্রযোজ্য নয়; বরং ক্যান্সার নির্মূলের পথ্য হিসেবে সার্জারী আবশ্যক। আর সেই কাজটিই আল-কায়েদার শাখা আনসার আল-ইসলামের মুজাহিদরা করেছে, আলহামদুলিল্লাহ। প্রয়োজনে আবারও করবে ইনশাআল্লাহ।
আর কারো কাছে যদি মনে হয়, শুধুমাত্র এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক মাধ্যম ব্যবহার করে সর্বগ্রাসী কুফরের মোকাবেলা করবে; তাহলে সে আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন বুঝতে পারেনি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ২৩ বছরের জিন্দেগীকে অনুধাবন করতে তার মস্তিষ্ক ব্যর্থ হয়েছে। সে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাপারে খুবই নীচু ধারণা করেছে। আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীনের ব্যাপারে তার এই নিরতিশয় নীচু ধারণা অচিরেই ব্যর্থ হয়ে তার দিকে মুখ থুবড়ে পড়বে। জিহাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো বুদ্ধিবৃত্তিক সওদা সদা-পরিবর্তনশীল বুদ্ধিবৃত্তির পেছনের পাতায় স্থান নিবে। আর কিয়ামত অবধি চালু থাকা কিতাল তথা সশস্ত্র জিহাদ প্রভাব বিস্তারকারী হিসেবে ছুটে যাবে বিজয়ের পানে, গোটা দুনিয়াব্যাপী আল্লাহর শরীআহ বাস্তবায়নের পানে, প্রতিশ্রুত মাহদী আ. এর কালো পতাকাবাহী ঝাণ্ডার ছায়াতলে।
হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
“আমার উম্মতের একটি দল সর্বদাই হক্বের ওপর কায়েম থেকে কিতাল (সশস্ত্র যুদ্ধ) করতে থাকবে এবং তাদের শত্রুদের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী হবে। এমনকি এই দলেরই সর্বশেষ অংশ মাসীহ দাজ্জালের বিরুদ্ধে কিতাল করবে।”
(আবু দাউদ, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস নং-২৪৭৬; মিশকাতুল মাসাবীহ, কিতাবুল জিহাদ, ২য় পরিচ্ছেদের ১ম হাদীস। এছাড়া সহীহ মুসলিমের ‘কিতাবুল ইমারাহ’ বা নেতৃত্ব অধ্যায়ে কাছাকাছি অর্থের কমপক্ষে ৫ টি হাদীস রয়েছে।)
পরিশেষে একটি জরুরী কথা বলে রাখা আবশ্যক মনে করছি। শুধুমাত্র মানব যুক্তি-বুদ্ধির আলোকে দ্বীনের কোনো বিষয়কে অনুধাবন করতে চাওয়ার প্রবণতার একটি মারাত্মক ও ভয়াবহ নেতিবাচক দিক আছে। কারণ ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত একটি দ্বীন। ফলে এমন হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, আজ হয়তো ইসলামের কোনো বিধান কিংবা কুরআনের কোনো আয়াত আমাদের যুক্তি-বুদ্ধির আওতায় বুঝা সম্ভব হচ্ছে না। হয়তো কখনো কারো যুক্তিতে আসতেও পারে, আবার নাও আসতে পারে। যুক্তি-বুদ্ধির সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে বুঝে আসুক কিংবা না আসুক অসীম জ্ঞান ও ক্ষমতাসম্পন্ন রব্বুল আলামীনের বিধানের কাছে নিজের সীমাবদ্ধ ও সামান্য যুক্তি-বুদ্ধিকে সমর্পণ করে দেওয়ার নামই ইসলাম।
কিন্তু কেউ যদি শুধু যুক্তি-বুদ্ধির মাধ্যমে ইসলামের কোনো আহকামকে বুঝতে চায়, অতঃপর বিষয়টি যদি তার যুক্তি-বুদ্ধিতে না আসে; তাহলে পরিণতিতে সে সন্দেহবাদী মানসিকতার হয়ে যেতে পারে। এরই ধারাবাহিকতায় মুসলিম ঘরের সন্তান হয়েও এক সময় সে সন্দেহগ্রস্ত, অবিশ্বাসী বা নাস্তিকে পরিণত হয়! মাআযাল্লাহ!
সুতরাং দ্বীনের ব্যাপারে আমরা আমাদের সীমাবদ্ধ ও সামান্য যুক্তি-বুদ্ধির পেছনে না দৌড়ে বরং আহকামুল হাকিমীন ও ‘ওয়াসিউন আলীম’ এর অধিকারী রব্বুল ইযযতের নির্দেশের দিকে মনোনিবেশ করি। তবেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত মানযিলে পৌঁছতে পারবো। পৌঁছতে পারবো সুপ্রশস্ত জান্নাতের বাগানে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সত্য বুঝবার তাউফীক দান করুন এবং এই সুমহান দ্বীনের জন্যে কবুল করুন।
...al-balagh 1438 |2017| issue 5...
Comment