Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহ দ্রোহিদের নতুন কৌশল

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহ দ্রোহিদের নতুন কৌশল

    মুসলিম বিশ্বে আমেরিকার নতুন স্ট্র্যাটিজি ও আল-কা’য়িদা এবং আই এস এর ভবিষ্যতের উপর তার প্রভাব (প্রথম পর্ব)

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম


    প্রথম পর্ব

    ৯/১১ এর পর আমেরিকা তার সেনাবাহিনী এবং যুদ্ধ বিমানগুলো নিয়ে মুসলিম বিশ্ব আক্রমণ করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে জিহাদ এবং প্রতিরোধের আগুন প্রজ্বলিত করে দেয়। তোরাবোরা পাহাড়ের সেই বিখ্যাত অবরোধের পর, শত শত মুজাহিদিনগণ সেখান (আফগানিস্তান) থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আফগানিস্তানের পাশাপাশি, পাকিস্তান, ইরাক, ইয়েমেন, মরক্কো এবং সোমালিয়ায় জিহাদের আগুন জ্বালানোর মাধ্যমে আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্যে জাহান্নামের দরজা খুলে দেন।



    মার্কিনিদের অব্যহত প্রচেস্টার পরও জিহাদের এই শিখাকে নিভিয়ে ফেলা, এই জোয়ারকে দমিয়ে রাখার চেস্টা সফল হয় নি। যতোবার মুসলিম বিশ্বে তারা তাদের সামরিক হস্তক্ষেপ বাড়িয়েছে, ততোবারই তা শুধু তাদের অর্থনীতির রক্তক্ষরণকেই বৃদ্ধি করেছে। একদশক ধরে এই যুদ্ধ চালাতে গিয়ে তাদের অর্থনীতি প্রায় ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হল, এবং তাঁরা এমন এক অবস্থায় পৌছলো যে এধরণের সামরিক অভিযান এবং কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া তাদের জন্য অত্যন্ত কস্টসাধ্য হয়ে উঠলো। এই অবস্থায় আমেরিকার রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকার অবশিস্ট শক্তিটুকু সংরক্ষণ করার জন্য মুসলিম বিশ্ব থেকে সেনা প্রত্যাহার করা জরুরী।


    ওবামা নির্বাচিত হল। তার মিশনই ছিল যেকোন ভাবে দ্রুত একটি বিজয় অর্জন করা। এমনকি যদি এটি শুধুমাত্র একটা “মিডিয়া বিজয়” হয় তাও, যাতে করে আমেরিকা ইরাক এবং আফগান থেকে সরে আসার একটা সম্মানজনক অযুহাত নিজেদের জন্য তৈরী করতে পারে। ওবামা প্রশাসন সৈন্য সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে একটি সামরিক জয়ের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। অতঃপর তারা তাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে জেতার চেস্টা চালায় কিন্তু এ চেস্টাও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।



    বছরের পর বছর চেষ্টার পর তাদের গোয়েন্দারা অবশেষে শাইখ উসামার অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়, এবং তারা তাকে অ্যাবোটাবাদে হত্যা করে। মার্কিনরা এই ঘটনাকে মিডিয়াতে তাদের বিজয় এবং আল-কা’য়িদার পতন বলে প্রচার করার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে আফগান থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য একটি অজুহাত তৈরী করে। কিন্তু শাইখ উসামার মৃত্যুর এতো বছর পরেও কুফফার বিশ্বের প্রতি আল-কা’য়িদার হুমকি শেষ হয়ে যায় নি।



    বরং আরব বসন্তের পর থেকে আমেরিকা তথা পাশ্চাত্যের কুফর শক্তির প্রতি আল-কা’য়িদার হুমকি আরো বেড়েই চলল। কারণ গণমানুষের এই বিপ্লবকে আল-কায়িদা নিজেদের তৈরী স্ট্র্যাটিজি এবং লক্ষ্যে অনুযায়ী পরিচালিত করতে সক্ষম হয়েছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই বিশৃঙ্খলাকে কাজে লাগিয়ে আল-কা’য়িদা, লিবিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া এবং সিরিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে এবং নৈতিক অঙ্গনে বিজয় লাভ করেছিল। এর ফলে আমেরিকা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে, এবং বুঝতে পারে এই যুদ্ধ এতো সহজে শেষ হবে না। এই উভয় সঙ্কট থেকে বাঁচতে আমেরিকা বাধ্য হল নতুন এক স্ট্র্যাটিজি নিয়ে ভাবতে।



    আল-কা’য়িদাকে নিয়ে মার্কিনিদের এরকম সঙ্কটে পড়ার কারণ হল, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে আল-কা’য়িদার যুদ্ধের স্ট্র্যাটিজিই হচ্ছে, “সাপের মাথায় আঘাত কর” আর এই সাপ হল আন্তর্জাতিক কুফর শক্তি এবং যার মাথা – অর্থাৎ কেন্দ্র আমেরিকা!!



    আল-কা’য়িদার মতে মুসলিম বিশ্বের জালিম শাসকদের টিকে থাকার জন্য আমেরিকাই দায়ী, কারণ এই জালিমদের সিংহাসনের পেছনের অবলম্বন আমেরিকাই। আমেরিকাই ইস্রাইল কে রক্ষা করে আসছে, এবং একটি ইসলামি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র করে চলছে। তাই এযুগের হুবাল আমেরিকার পতন ছাড়া মুসলিম বিশ্বকে ক্রুসেইডরদের হাত থেকে স্বাধীন করা সম্ভব না। এ কারণে আমেরিকার পতনের আগে তাগুত শাসকদের বিরুদ্ধু যুদ্ধ করা শুধু মাত্র সময় এবং ক্ষমতার অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়, কেননা এটি শুধু পশ্চিমাদের আধিপত্যকেই দীর্ঘায়িত করবে। যতদিন পর্যন্ত আমেরিকার আধিপত্য থাকবে ততোদিন তারা এক তাগুতের পতনের পর আরেক তাগুতকে সিংহাসনে বসাবে, তাই বুদ্ধিমানের কাজ হল আমেরিকার পতন ঘটানো, যেন এক তাগুতের পরে আরেক তাগুতকে বসানোর আর কেউ না থাকে।
    বিশেষ করে সাধারণ মুসলিনম জনগণ এখনো তাগুত শাসকদের প্রতারণা এবং এই শাসকদের আক্রমণ করার কনসেপ্ট ঠিকমতো অনুধাবন করতে পারে না, হোক সেটা তাঁদের অজ্ঞতার কারণে অথবা দাওয়াহ-র ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতার কারণে। এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে আল-কা’য়িদা সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় তাগুতদের (প্রশাসন, শিয়া রাফিজী, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী) বিরুদ্ধে লড়াই আপাতত স্থগিত করে, সব শক্তি ও মনোযোগ আমেরিকার পতনের দিকেই নিবদ্ধ করতে।



    তাই একান্ত প্রয়োজন না হলে আল-কা’য়িদা এই পার্শ্ব যুদ্ধে জড়াবে না, কারণ আল-কা’য়িদা বিশ্বাস করে যে এই স্থানীয় তাগুতগুলো আমেরিকার হাতের পুতুল ছাড়া আর কিছুই নয়। আমেরিকা যেমন চায় এই শাসকরা তেমনটাই করে। আমেরিকা যখন ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা, তাকে সরিয়ে নিজের পছন্দ মতো আরেকজনকে বসায়। তাই একমাত্র মুসলিম বিশ্বে আমেরিকার প্রভাবকে ধ্বংস করতে পারলেই কেবল তাদের স্থানীয় দালালদের সম্পূর্ণ ভাবে খতম করা যাবে। এই স্ট্র্যাটিজির কারণেই আমেরিকা আল-কা’য়িদার প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও ভিত্তি ধ্বংসে খুব তৎপর, এবং যারাই এই স্ট্র্যাটিজি গ্রহণ করেছে, তাদেরকে আমেরিকা তার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে লিস্ট ও টার্গেট করেছে এবং করছে।



    আমেরিকার উদ্দেশ্য হল আল-কা’য়িদার নেতৃত্ববৃন্দকে শেষ করার মাধ্যমে আল-কা’য়িদাকে এই স্ট্র্যাটিজি থেকে সরিয়ে তাদেরকে আমেরিকার ইন্টেলিজেন্স বাহিনী প্রণীত নতুন স্ট্র্যাটিজি গ্রহণে বাধ্য করা।



    বর্তমানে, পশ্চিমারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ সময় অতিক্রম করছে। এর কারণ হল যে যুদ্ধ পশ্চিমারা মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল আল-কা’য়িদা সেই যুদ্ধটিকে পশ্চিমা দেশগুলোতে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। আল-কা’য়িদা, হত্যা এবং ধ্বংসের এই খেলাকে পশ্চিমাদের দিকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।



    আফগানিস্তান এবং ইরাকের রাস্তা থেকে ওয়াশিংটন, লন্ডন, মাদ্রিদ এবং প্যারিসের রাস্তায় এই যুদ্ধকে আল-কা’য়িদা স্থানান্তরিত করেছে। আল-কা’য়িদা মুসলিম নারী এবং শিশুদের অন্তর থাকা আতঙ্ককে ক্রুসেইডারদের নারী এবং সন্তানদের অন্তরে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে আমাদের শিশুরা বোমার আঘাতে নিহত হচ্ছিলো অথচ পশ্চিমাদের শিশুরা ছিল নিরাপদ, সেখানে এখন উভয়েই হত্যা, সন্ত্রাস আর বিশৃঙ্খলার মধ্যে বসবাস করছে। এই স্ট্র্যাটিজি আমেরিকা ইউরোপকে এতোটাই উৎকন্ঠায় ফেলে দিয়েছিল যার ফলে তারা মরিয়া হয়ে জিহাদী আন্দোলন থেকে এই চিন্তাধারা ও স্ট্র্যাটিজি মুছে ফেলতে সচেস্ট হল।



    আমেরিকা এবং তাদের সহযোগীরা জানে যে মুজাহিদদের সাথে এই যুদ্ধ অব্যাহত রাখলে তারা অর্থনৈতিক ভাবে প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখীন হবে যা বিশ্বব্যাপী তাদের প্রভাবকে কমিয়ে দিতে থাকবে, এবং তাদেরকে পতনের দিকে নিয়ে যাবে । এবং তারা এও জানে যে আল-কা’য়িদাকে ধ্বংস না করে, বিশেষ করে আল-কা’য়িদার এই স্ট্র্যাটিজিকে ধ্বংস না করে মুসলিম বিশ্ব থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে সেটা আরো ভয়ংকর হবে, এবং মুসলিম বিশ্বে তারা চিরতরে তাদের সকল আধিপত্য হারিয়ে বসবে। তাই ভালোয় ভালোয় এই অঞ্চল থেকে বের হতে এবং এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে তারা জরুরী ভিত্তিতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করল।



    মার্কিনিদের নতুন পরিকল্পনার মধ্যে ছিল: মুসলিম রাস্ট্রগুলোর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, শিয়া রাফেযীদের সাথে সুন্নীদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়া এবং যেখানে শিয়া নেই সেখানে বিভিন্ন ইসলামি আন্দোলন এবং দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু করিয়ে দেয়া – যেন মুজাহিদদরা এই সব যুদ্ধে জড়িয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে কিছু করার ফুরসাত না পায়। [লিবিয়াতে এই ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। লিবিয়াতে আইএস পশ্চিমাদের মদদপুস্ট হাফতারের সেক্যুলার বাহিনীর সাথে লড়াই করার পরিবর্তে মুজাহেদীন দলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে]

    এই ষড়যন্ত্র ইয়েমেনে সফল হয়েছে। যখন মার্কিনিরা প্রথমে হুথিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিল, এবং আল-কা’য়িদা বাধ্য হল তার মূল লক্ষ্যের পাশাপাশি হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। তবে যাতে এই যুদ্ধ পুরোপুরি একটি সাম্প্রদায়িক যুদ্ধে পরিণত না হয় সেই উদ্দেশ্যে আল-কা’য়িদা পুরো যায়িদী সম্প্রদায়ের পরিবর্তে শুধুমাত্র হুথি সৈন্যদের আক্রমণ করে। যদিও এই যুদ্ধকে সর্বগ্রাসী এক সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ পর্যন্ত নিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আমেরিকা থামবে না। আমেরিকার তাদেরকে পরিচলিত করে যাবে যারা সাধারণ যায়িদীদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানায়। [ আইএস সানা’তে যায়িদীদের মাসজিদে বোমা হামলা চালানো শুরু করেছে যার ফলে শত শত যায়িদী নিহত হয়েছে]

    তবে প্রশ্ন হল আল-কা’য়িদা এবং সত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যুদ্ধ এবং তাদের নতুন স্ট্র্যাটিজির মধ্যে কি সম্পর্ক আছে?

    সম্পর্কটি হচ্ছে, আমেরিকা নিজেদের সামরিক শক্তি মুসলিম বিশ্ব থেকে সরিয়ে নিতে চায়, কিন্তু তারা জানে সেটা (মুসলিম বিশ্বে তাদের সামরিক অনুপস্থিতি) তাদের এবং ইসরাইলের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। তাই তার আগে তারা চায় আল-কা’য়িদার হুমকিকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে।

    প্রথমত: এই লক্ষ্যে তারা মুজাহিদদের শিয়াদের বিরুদ্ধে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে রাখতে চায়, যেটা মুজাহেদীনের শক্তি এবং ক্ষমতাকে দূর্বল করে দেবে এবং আমেরিকা এবং ইসরাইলকে নিয়ে চিন্তা করা থেকে তাদের বিরত রাখবে।

    দ্বিতীয়ত: আল-কা’য়িদা এবং নতুন মুজাহিদদের সাপের মাথাকে আঘাত করার পুরোনো স্ট্র্যাটিজি থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করা। অর্থাৎ সাপের মাথায় আঘাত করার স্ট্র্যাটিজি থেকে সরিয়ে এবে নতুন স্ট্র্যাটিজি গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করা যেটা মার্কিনদের এই অঞ্চল থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাবার সুযোগ দেবে।

    প্রথম লক্ষ্যে সফল হবার জন্য আমেরিকার দরকার শিয়াদের বিরুদ্ধে মুজাহিদদের একটি ভয়ংকর যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলা। এটা জন্য দুইটি ভয়ংকর পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়:

    ১. শিয়া রাখিজীদেরকে সুন্নী দেশগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সমর্থন এবং সাহায্য করা, বিশেষ করে সৌদি আরব, ইয়েমেনের মতো দেশগুলোতে, যেখানে শিয়ারা সম্প্রদায় আছে। ইরাকে রাফেযিদের ক্ষমতায় বসানোর পর সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়ার সফল প্ল্যানের পুনরাবৃত্তি করা। [আইএস এরই মধ্যে সাউদী আরবের কা’তিফে শিয়া মাজারে বোমা হামলা চালিয়েছে]

    ২. শিয়াদের উপাসনালয়গুলো এবং বাজারে ভাড়াটে বাহিনী ব্ল্যাক ওয়াটারের মাধ্যমে হামলা করা, বম্বিং করা এবং মুজাহিদদের অভিযুক্ত করা, যেরকমট তারা ইরাক এবং পাকিস্তানে করেছে।





    এ কৌশলে বোকা বনে যখন মুজাহিদরা ভুল করে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেরাই এরকম হামলা করা শুরু করবে, তখন তারা ব্ল্যাক ওয়াটারকে ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবে। কারণ তখন ব্ল্যাক ওয়াটারের কাজ বিপথগামী সাদাসিধে মুসলিম যুবকরাই করবে। আমরা লক্ষ্য করছি ইতিমধ্যে আমেরিকা ইয়েমেনে এই স্ট্র্যাটিজির বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছে। তারা হুথিদের ক্ষমতায় রেখেছে, আল-কা’য়িদাকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে, এবং আমেরিকায় আঘাত হানার মূল পরিকল্পনা ও কাজ থেকে তাদের (আল-কা’য়িদা) বিরত রাখছে। হুথিদের মাসজিদ এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার পর থেকে ইয়েমেন সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে, কারণ এই হামলার ফলে পুরো যায়িদী গোষ্ঠি হুথিদের ব্যানারে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে ।







    দ্বিতীয় পদক্ষেপটির জন্য: আমেরিকা আল-কা’য়িদা এবং জিহাদী আন্দোলনের সদস্যদের বিশ্বাসে চিড় ধরাতে চেষ্টা করছে। আমেরিকা চাচ্ছে মুজাহেদীনকে বোঝাতে যে সাপের মাথায় আঘাত করার স্ট্র্যাটিজিটি পুরোনো এবং ব্যর্থ। যাতে করে মুজাহেদীন আমেরিকার জন্য ক্ষতিকর এই স্ট্র্যাটিজি ছেড়ে এমন কোন নতুন স্ট্র্যাটিজি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয় যা আমেরিকার উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করবে। এটাই মূলত এই লেখার এবং বিশ্লেষণের সারাংশ এবং এই কারণে আর্টিকেলে উল্লেখিত সবগুলো ব্যাপারই দৃষ্টি আকর্ষণের দাবী রাখে।

    “মুসলিম বিশ্ব থেকে নিরাপদে প্রস্থান এবং একই সাথে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখা- এই মূল লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমেরিকা যেই নতুন স্ট্র্যাটিজি জিহাদি আন্দোলনের মধ্যে ঢোকাতে চাচ্ছে, সেটা তাহলে কি? এ ব্যাপারে বলার আগে, এটা স্পষ্ট হওয়া জরুরী যে শায়খ উসামা ও আল-কা’য়িদা “সাপের মাথায় আঘাত করা”-র এই স্ট্র্যাটিজি কোন ভিত্তি, বিশ্লেষণ এবং অভিজ্ঞতা ছাড়া এমনি এমনি গ্রহণ করে নি। বরং এটা স্থানীয় দখলদারদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের প্রতিরোধ, যুদ্ধ এবং এই পদ্ধতিতে (স্থানীয় দখলদার এবং তাগুতকে উৎখাতের মাধ্যমে) ইসলামী রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য করা সংগ্রাম থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৈরী। দীর্ঘদিনের এই সংগ্রামের ভিত্তিতেই এ ব্যাপারটি শাইখ উসামা এবং তার মুজাহেদীনের কাছে স্পষ্ট হয় যে, আমেরিকা তার অর্থনৈতিক, সামরিক এবং রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রত্যেক ইসলামী কার্যক্রমের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাড়িয়ে আছে।

    তারা এটাও উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমেরিকার কাছে এই বিপুল ক্ষমতা এবং অর্থ আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শরীয়াহ দ্বারা পরিচালিত একটি স্থায়ী স্বাধীন ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে না, যার প্রমাণ পাওয়া গেছে সুদান, আলজেরিয়া, সোমালিয়া, মালি, ইয়েমেন, ওয়াজিরিস্তান, আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি সরকার এবং ইমারাতের বেলায়। এসবগুলো ক্ষেত্রেই সারাবিশ্বের কুফফার শক্তি আমেরিকার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক এবং সামরিক যুদ্ধ চালিয়েছিল যেন এই ইসলামী শক্তিগুলো টিকে থাকতে না পারে। এভাবে এই ইসলামী কার্যক্রমগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং মুজাহিদরা গেরিলা যুদ্ধে ফেরত যেতে বাধ্য হন।

    এ জন্যই আল-কা’য়িদার নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি হল আমেরিকার পতন এবং বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব নস্ট করা ছাড়া স্থায়ী ইসলামিক রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব না।তাই আমেরিকার প্রভাব নস্ট করা ছাড়া, তাদের পতন ঘটানোর ছাড়া স্থায়ীভাবেইসলামী রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার চেস্টা আযৌক্তিক এবং মুল্যবান সম্পদ ও শক্তির অপচয়। তাই আল-কায়িদা আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করেএবং বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তাদের টার্গেট করে, যাতে করে বিশ্বব্যাপী আমেরিকার যে প্রভাব আছে তা নস্ট হয়, আর আল কা’য়িদা এটাকেই মানহাজ হিসেবে গ্রহণ করেছে।

    এর উদ্দেশ্য আমেরিকাকে অর্থনৈতিক এবং সামরিক ভাবে ক্রমান্বয়ে বিপর্যস্ত করা তাদের যতক্ষণ না সোভিয়েত ইউনিয়নের মত তাদেরও পতন ঘটে। অথবা কমপক্ষে মুসলিম বিশ্বে তাদের প্রভাব ধ্বংস হয়ে যায়। এই স্ট্র্যাটিজির কারণেই আমেরিকা তার ইতিহাসের সবচাইতে ব্যাপক ও ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার শিকার হয়েছে। এই অর্থনৈতিক ধসের কারণে তারা পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গিয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ্* আযযা ওয়া জালের ইচ্ছা ছিল অন্যরকম। সারা বিশ্ব আমেরিকার পেছনে দাড়িয়ে তাদেরকে এই অর্থনৈতিক মন্দার কবল থেকে রক্ষা করে।

    আমেরিকার এই দেউলিয়াত্ব ও অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারলেও একই গর্তে আবার দংশিত হবার অপেক্ষায় হাত গুঁটিয়ে থাকবে না। তারা জানে বিশ্ব বার বার তাদের রক্ষা করবে না। পরের বার হয়তো বিপদের সময় তাদের পাশে কেউ থাকবে না। তাই আমেরিকা আল-কা’য়িদার এই বিপদজনক স্ট্র্যাটিজিকে পরিবর্তন করে তার জায়গায় তাদের পছন্দ মতো অন্য একটি নতুন স্ট্র্যাটিজি বসানোর উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে। এটা এমন এক স্ট্রাটিজি যা মুসলিম বিশ্বে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবে।

    সহজ ভাষায় তাদের এই নতুন স্ট্র্যাটিজী হল: শারীয়াহ দ্বারা পরিচালিত একটি ইসলামি রাস্ট্র তৈরি হতে দেয়া বা তৈরি হবার সম্ভাবনা তৈরি করা এবং রাস্ট্রকে আমেরিকার হাতের নাগালের ভেতর বিস্তার করতে দেয়া। এমন একটি রাস্ট্র তৈরি হতে দেওয়া যেটাকে আমেরিকা যখন ইচ্ছা ধ্বংস করে দিতে পারবে। তাহলে আমেরিকার পতন ঘটানোর জন্য শক্তি, সময় ও সম্পদ ব্যয় করাটা অনর্থক হয়ে যাবে, কারণ রাস্ট্র তো প্রতিষ্ঠা হয়েই গেছে!! অর্থাৎ যা এখনো বাস্তবে অর্জিত হয় নি সেটাকে জোর করে বাস্তব বলে প্রমাণ করা – বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তবতার সাথে সমান্তরাল একটা প্রহেলিকা সৃষ্টি করা।

    [যারা টুইটারে নিয়মিত তারা জানেন আইএসআইএস এর ইলেক্ট্রনিক আর্মি নিমোক্ত বক্তব্য এবং স্লোগানগুলোকে সবচাইতে বেশী জোরেশোরে প্রচার করেঃ “ (আইএস)স্থায়ী এবং ক্রমবর্ধমান!/বাকী’য়্যাহ!” ও “ আল-কা’য়িদার স্ট্র্যাটিজি ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে” এবং “আল-কা’য়িদা ১৫ বছরে কিছুই অর্জন করতে পারে নি” এবং “আইএসআইএস এর স্ট্র্যাটিজি সফল ও সার্থক প্রমাণিত হয়েছে”। এখানে ইঙ্গিত পাওয়া যায় কিভাবে আইএসআইএসের স্লোগানগুলো গ্লোবাল জিহাদের স্ট্র্যাটিজিকে পরিবর্তন করার কুফফার গোয়েন্দাদের যে লক্ষ্য তার সাথে খাপে খাপে মিলে যায়]

    এই স্ট্র্যাটিজিটি প্রোমোট করার উদ্দেশ্য হচ্ছে:

    ১. জিহাদী আন্দোলনগুলোকে এই বুঝ দেয়া যে, এখন আর আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কোন দরকার নেই, স্থানীয় শত্রু যেমন: ত্বাগুত শাসক, রাফিজী এবং বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর দিকে ফোকাস করাটাই যথেষ্ঠ। [যারা টুইটারে নিয়মিত তারা জানেন আইএসআইএস এর ইলেক্ট্রনিক আর্মি অব্যহতভাবে সুরুরী, ইখওয়ানুল মুসলিমীন, আল-কা’য়িদা এবং তালিবানের বিরুদ্ধে তীব্রভাবে উস্কানি দিতে থাকে। তারা মুসলিম এবং মুসলিম দলগুলোকে তাকফীরের ক্ষেত্রে উযর-বিল-জাহল (“excusing due to ignorance” /কোন দল/ব্যক্তির অজ্ঞানতার কারণে তাকে তার কাজ/কথার জন্য তাকফীর না করে ভুল শোধরানোর সুযোগ দেয়ার প্রতিষ্ঠিত নীতি] –এর নীতি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে এবং ইসলামী দলগুলোর ক্ষেত্রে তারা তাকফীর করাকেই তাদের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। যাতে করে এই দলগুলোকে আক্রমণ করার সহজ অজুহাত তৈরি হয়।

    ২. বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিহাদিদের এই ইসলামী রাস্ট্রে হিজরত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেন তারা নতুন রাস্ট্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে অবদান রাখতে পারে। এভাবে আমেরিকা এবং ইউরোপ “lone wolves”/একাকী মুজাহিদদের [যেমন বোস্টন বম্বিং এর সাথে যুক্ত সারনায়েভ ভাতৃদ্বয় অথবা প্যারিসে “শার্লি এবদো”-তে হামলা চালানো কোয়াশী ভাতৃদ্বয় ] হুমকি থেকে নিস্তার পাবে।

    ৩. আল কা’য়িদা এবং এর স্ট্র্যাটিজিকে নতুন ইসলামি রাস্ট্রের স্ট্র্যাটিজীর সাথে তুলনা করে এটি আর আমেরিকার সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম নয় বলে প্রচার করা। এবং এর দ্বারা আল কা’য়িদার স্ট্র্যাটিজিকে ভুল ও ব্যর্থ বলে প্রচার করার মাধ্যমে আল-কা’য়িদা এবং এর অঙ্গ সংগঠন গুলোকে ধ্বংস করা।

    ৪. বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের সবচাইতে ভয়ঙ্করে জিহাদি ব্যক্তিত্ব এবং সবচাইতে চৌকস মুজাহিদদের ক্ষুদ্র একটি স্থানে জড়ো করা, যাতে করে যেকোন সময়ে তাদের নিশ্চিহ্ন করা আমেরিকার জন্য সহজ হয়ে যায়।

    এই নতুন স্ট্র্যাটিজিটি বাস্তবায়ন করতে, জিহাদি দলগুলোর মধ্যে এমন একটি চরমপন্থী দলকে উসকে দেয়া যাদের ভেতর সফলভাবে কুফফার এবং তাগুতের এজেন্টদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এবং ইরাক এবং সিরিয়ার ময়দানে এই দলকে কিছু বিজয় অর্জন করতে দেয়া যাতে করে এই ইসলামী রাস্ট্র ইরাক ও সিরিয়ার তেলক্ষেত্র গুলোর নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে পারে।

    তেল ক্ষেত্র গুলো নিয়ন্ত্রনে থাকার ফলে এই দলটি জিহাদী বিশ্বে আল-কায়িদার স্ট্র্যাটিজির বিপরীতে তাদের নতুন স্ট্র্যাটিজি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রচার করতে পারবে এবং এর জন্য যথেষ্ঠ অর্থ খরচ করতে পারবে। এবং তাদের জন্য বিপুল পরিমাণে ভারী এবং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও জমা করতে দেয়া হবে যেন তারা সামরিক ভাবে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, যাতে করে তারা জিহাদি বিশ্বে আল-কায়িদার স্ট্র্যাটিজি গ্রহণকারী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং এর মাধ্যমে আমেরিকারউদ্দেশ্য পূরণ হবে এবং তারা মুসলিম বিশ্ব থেকে নিরাপদে প্রস্থান করতে পারবে।

    এই দল আমেরিকার এই নতুন স্ট্র্যাটিজিকে নিজদের স্ট্র্যাটিজি হিসেবে গ্রহণ করবে এবং নতুন নতুন কথা বলে সেগুলোকে ক্রমেই জিহাদি সমাজে বৈধতা দেয়ার চেস্টা চালাবে যেন এগুলোই ইসলামি শরীয়াহর প্রতি আনুগত্যের প্রতিচ্ছবি। আমেরিকার এই স্ট্র্যাটিজির ভিত্তি পাকাপোক্ত করার জন্য এই দলের ভেতর একদল চরমপন্থীকে বসানো হলো। এই চরমপন্থীরা তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কিছু নির্দিষ্ট শারীয়াহ ভিত্তিক কনসেপ্ট হাইলাইট করে যাবে। এই রকম কিছু ধারণা যেগুলো এই দলটি সবচেয়ে বেশি প্রচার করবে, সেগুলো হল:

    ১. দূরের শত্রুর চেয়ে কাছের শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

    ২. ক্রুসেইডারদের আগে মুরতাদের সাথে যুদ্ধ করাই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

    ৩. ক্রুসেইডারদের আগে শিয়াদের মত কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

    ৪. মুসলিম বিশ্বে আগ্রাসন চালানো বহিরাগত শত্রুদের বিরুদ্ধে রূখে দাড়ানোর চেয়ে ইসলামিক রাস্ট্র এবং ইসলামী রাস্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের প্রয়োজনীতা বেশি।

    ৫. বহিরাগত আগ্রাসী শত্রুদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর আগে সকলকে খিলাফাহর অধীনে, একটি নেতৃত্বের অধীনে আসতে হবে- এরকম শর্তারোপ। [বাইয়াহ-এর মাধ্যমে একটি রাস্ট্রের অন্তুরভুক্ত হতে হবে আগে, তার আগে আগ্রাসী শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করা যাবে না]

    জিহাদি আন্দোলনের অনেক সন্তানদের মাঝেই এই মহাপরিকল্পনা ও প্রতারণার ব্যাপক ভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং প্রসার লাভ করেছে। এর মাধ্যমে জিহাদি আন্দোলনের অনেক সন্তান আল-কা’য়িদার গঠন, কার্যাবলী, কাঠামো ও স্ট্রাটিজিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা শুরু করেছে। তাদের নিজেদের হাত ও কথা দ্বারা আল-কা’য়িদার ক্ষতি করার চেস্টা করছে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের অজান্তেই ক্রুসেইডার আমেরিকার স্ট্র্যাটিজি বাস্তবায়নের ঘুটিতে পরিণত হচ্ছে।

    এই মিসকিনরা বুঝতে পারছে না আমেরিকা চাচ্ছে মুজাহেদীনকে অন্তঃর্ঘাতী সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলতে এবং জড়িয়ে রাখতে, কারণ এই অন্তর্ঘাতী সংঘাত মুজাহেদীন এবং মুসলিম উম্মাহকে বিজয় বা সম্মান কোনটাই এনে দিতে পারবে না। আইএস-এর “এইচ ডি” হলিউড বিজয়গুলো দেখে উচ্ছসিত আবেগপ্রবণ অতিউৎসাহী যুবকদের তাকফীর, হঠকারী কাজ ও কথাবার্তা আমেরিকার এই মহাপরিকল্পনার তিক্ততার প্রথম স্বাদ মাত্র। একবার আমেরিকার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পর তারা ইরাক এবং সিরিয়ায় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে একটি গ্লোবাল যুদ্ধ শুরু করবে, যেমনটা তারা ২০০৬ এ ইরাকে করেছিল। এবং ইমারাতে ইসলামিয়্যা আফগানিস্তান, আবিয়ান (ইয়েমেন), মালি, সোমালিয়ার ক্ষেত্রে পূর্বে যেরকম করা হয়েছিল।

    যদি কেউ মনে করে যে আইএস-এর বাস্তবতা পূর্বোক্ত উদাহরণ গুলোর চেয়ে ভিন্ন, তাহলে আমরা তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, কিছু দিন আগেই রাক্কার তেল ক্ষেত্রে আমেরিকার আক্রমণে আইএস নেতা আবু সাইয়্যাফ এবং আরো কিছু নেতা নিহত হয়। আবু সাইয়্যাফের স্ত্রীকে অপহরণ করে ইরাকের একটি আমেরিকান কারাগারে বন্দী করা হয়। এবং তারপরে মার্কিন বাহিনী কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই নির্বিঘ্নে সেখান থেকে চলে আসে। এটাই প্রমাণ করে যে আমেরিকা তাদের (আইএস) দ্বারা নিজেদের লক্ষ্য পূরণ করিয়ে নিচ্ছে, আর যদি তাদের মধ্যে থেকে কেউ আমেরিকার ছক অনুযায়ী না চলে, তবে তাকে তারা চিরতরে শেষ করে দেয়।

    এই সব কিছুই প্রমাণ যে, আমেরিকা তাদের এই নতুন স্ট্র্যাটিজি বাস্তবায়নে ও সফল করতে আইএসআইএসের সাফল্য, ক্ষমতা এবং আমেরিকার প্রতি তাদের হুমকিকে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে দেখিয়েছে এবং এখনো দেখাচ্ছে। যাতে এর দ্বারা আল-কা’য়িদার পতন ঘটানো যায়, এবং সাম্প্রাদায়িক যুদ্ধের আগুন উসকে দেয়া যায়। যখন আইএসআইএসের মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে, তখন তারা এটিকে ধ্বংস করে ফেলবে আর আধুনিক ইতিহাস সাক্ষী হবে ইসলামের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জঘণ্য ষড়যন্ত্রের।

    ইনশা’আল্লাহ, দ্বিতীয় পর্বে এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


    সূত্রঃ http://justpaste.it/new_strategy_bangla


    (collceted)
    "নিশ্চয়ই আমার সৈন্যরাই বিজয়ই হবে" (সূরা আস-সাফফাত ৩৭:১৭৩)


  • #2
    মাশাআল্লাহ। সুন্দর কালেকশন।

    Comment


    • #3
      ভাল কিছু পয়েন্ট ও চিন্তার বিষয় আসছে।

      জাযাকাআল্লাহু খাইরান

      Comment


      • #4
        মাশাল্লাহ আখি,
        এই রকম কিছুরই ধারনা করা হচ্ছিল, যা কিছুটা স্পষ্ট করেদিলেন।

        আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম যাজা দান করুন।

        Comment


        • #5
          একধম বাস্তাব...
          আই এস এর ফিতনায় আমেরিকাই সবচেয়ে বেশি লাভবান... ও খুশি হয়েছে।

          অচিরেই আই এস এর মুখোস উম্মোচন করে পোষ্ট দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।

          আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আই এস এর ধোঁকা থেকে হেফজত করুন।

          Comment

          Working...
          X