Announcement

Collapse
No announcement yet.

জাতীয়তাবাদের ব্যাধি।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জাতীয়তাবাদের ব্যাধি।

    জাতীয়তাবাদের ব্যাধি

    মুসলিম জাতির আজ এতোটা অপমানিত কেন? মুসলিমদের এতো দুর্দশা কেন?
    প্রশ্নটা কমবেশি সবাইকে ভাবায়। নানা জন নানা ভাবে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন। এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে আজ অবধি অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণই তুলে ধরা হয়েছে। কথাগুলো চেনা জানা। আমাদের সবার শোনা কথা। উম্মাহর এ দশার কারণ –
    .
    মুসলিমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত না তাই
    মুসলিমরা ইহুদীদের দেখে শিক্ষা নেয়নি তাই
    মুসলিমরা এখনো ১৪০০ বছর আগের ধ্যানধারণা নিয়ে পড়ে আছে তাই
    বিশ্ব এগিয়ে গেছে মুসলিমরা তাল মেলাতে পারেনি তাই
    .
    কথাগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আছে আমাদের সমাজে। অনেকের কাছে হয়তো যৌক্তিকও। কিন্তু ইতিহাস থেকে এধরনের বিশ্লেষণের পক্ষে প্রমাণ দাড় করানো দুঃসাধ্য। এ বিশ্লেষণগুলো দুর্বলের পরাজিত মানসিকতার দ্বারা প্রভাবিত। অনেকটা গরীব মানুষ মনে মনে, ধনীর প্রতিটি আচার-আচরণকে তার সম্পদ অর্জনের কারণ মনে করার মতো। অনেক সময় খুব সূক্ষ্মভাবে তাকাতে গিয়ে মানুষের চোখে অনেক খুঁটিনাটি ধরা পড়লেও মূল ব্যাপারটা আড়ালে থেকে যায়। অনেক সময় গাছের দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে বনের সৌন্দর্য উপভোগ করা হয় না। একটু দূরে সরে এসে চিন্তা করলে কেমন হয়?
    .
    দিগ্বিজয়ী অ্যালেক্স্যান্ডারের বিশাল সাম্রাজ্য কেন তার মৃত্যুর পর মাত্র একটি শতাব্দীও টিকে থাকতে পারলো না? কেন মধ্য আর উত্তর এশিয়ার বিস্তীর্ণ স্তেপ ভূমি থেকে পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসা একদা অপ্রতিরোধ্য মঙ্গোল বাহিনী হালাকু খানের মৃত্যুর একশো বছরের মধ্যেই নিজ পূর্বপুরুষদের হাজার বছরের প্রকৃতি পূজার ধর্ম ত্যাগ করে দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করলো? কেন বিজয়ী বিজিতের ধর্মে দীক্ষিত হল? পারস্য সম্রাট হরমুজান যাদেরকে মরুভূমিতে ছুটোছুটি করা লক্ষ্যহীন কুকুরের পাল বলে তাচ্ছিল্য করেছিলো, কোন শক্তিবলে সেই আরবরাই হাজার বছরের পার্সিয়ান সাম্রাজ্যকে মাত্র কয়েক বছরে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ধ্বংস করেছিলো? কেন নিযুত সদস্য বিশিষ্ট নাৎসি ওয়্যারম্যাখট (প্রতিরক্ষা বাহিনী) এর কোন ছিটেফোঁটা আজ মাত্র সাত দশক পর খুঁজে পাওয়া যায় না? কেন ককেশাসের দুর্গম তুষারাচ্ছন্ন পাহাড়ের বুকে বসবাস করা লোকবল,আর্থিক আর সামরিক দিক দিয়ে দুর্বল, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু গোত্রের বিরুদ্ধে যারিস্ট, তারপর সোশ্যালিস্ট এবং শেষপর্যন্ত পুতিনের আজকের অভিজাততান্ত্রিক পুঁজিবাদী (Oligarchical Capitalism) রাশিয়া শতাব্দীর পর শতাব্দী যুদ্ধ চালানোর পরও বিজয়ী হতে পারে না? আর কেনই বা প্রথমে সোভিয়েত রাশিয়া আর তারপর ন্যাটো নেতৃত্বাধীন প্রায় ৬০ টি দেশের সামরিক জোট বারবার অসম যুদ্ধে আফগানিস্তানে পরাজিত হয়? কিভাবে পৃথিবীর সবচাইতে দরিদ্র দেশগুলোর একটি বিশ বছরের ব্যবধানে বিশ্বের দুটো পরাশক্তিকে পরাজিত করে?
    .

    এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তরে ঘুরেফিরে বারবার যে কথাটা উচ্চারিত হবে সেটা হল – আদর্শিক শক্তি। আদর্শের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই সামরিক,অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি এবং জনবলের দিক দিয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে থাকার পরও বারবার ক্ষুদ্র প্রতিপক্ষ পরাশক্তিকে পরাজিত করে। আর আদর্শিক দৈন্যতার কারণেই বিপুল অর্থ-বিত্ত-শক্তি এবং সাময়িক সাফল্যের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও একদা প্রবল পরাক্রান্ত মেসিডোনিয়ান, পার্সিয়ান, রোমান, মঙ্গোল, কমিউনিস্ট এবং নাৎসি সাম্রাজ্য আজ বিলুপ্ত। এবং নিঃসন্দেহে পুঁজি ও ভোগবাদী অ্যামেরিকান সাম্রাজ্যের জন্যও অপেক্ষা করছে এই একই পরিণতি। শক্তি প্রয়োগে সাম্রাজ্য বিস্তার করে সাময়িক সাফল্য অর্জন পাওয়া গেলেও দুর্বল আদর্শ কখনোই স্থায়ী হয় না। তাই পার্থিব বিভিন্ন দিক যেমন; সামরিক, অর্থনৈতিক,রাষ্ট্রীয় শক্তিমত্তা কিম্বা জনবল ও জনসমর্থন দিয়ে আদর্শের শক্তিমত্তা কিম্বা ইতিহাসের গতিপথ পরিমাপ করা যায় না। বিশুদ্ধ ও পূর্ণাঙ্গ আদর্শিক গাঁথুনি ছাড়া ইতিহাসের ১০০ মিটার রেইস হয়তোবা জেতা সম্ভব, কিন্তু ম্যারাথনে গিয়ে; দীর্ঘমেয়াদে – শেষ পর্যন্ত বিজয় হয় শক্তিশালী আদর্শেরই।
    .
    প্রশ্ন হল, মুসলিমদের আদর্শিক শক্তির উৎস কী? চারটা অপশান দিলাম –
    .
    ১) দ্বিজাতি তত্ত্ব
    ২) বিজ্ঞান
    ৩) জাতীয়তাবাদ
    ৪) ইসলাম
    .
    উত্তরটা সহজ হবার কথা। তাই না? সমস্যা হল সহজ উত্তরটা আমরা মেনে নিতে পারি না। সত্য যখন আমাদের চিরচেনা মিথ্যার সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তখন আমরা সেটা মেনে নিতে চাই না। অভ্যস্ততার খাতিরে বাস্তবতা ভুলে থেকে, আমরা জেদ ধরে চোখ বন্ধ করে স্বপ্ন দেখা চালিয়ে যেতে চাই।
    .

  • #2
    সুন্দর লেখা!! বারাকাল্লাহু ফিকা!

    Comment


    • #3
      জায়াকাল্লাহ।আল্লাহ আপনাকে লেখার আরো তৌফিক দান করুক।
      Last edited by আল জিহাদ; 12-15-2017, 10:03 PM.
      আমি সেই ভাইকে ভাই মনে করি না,যে নিজ ধর্মের শত্রুকে বন্ধু মনে করে।

      Comment


      • #4
        মানুষের জন্য ইসলাম হলো একটি অনন্য নিয়ামত। ইসলাম আসার পর আল্লাহর আদেশের পূর্ণতা লাভ করে। আল্লাহ তালা বলেন, আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম, সেই সাথে তোমাদের জন্য আমার নিয়ামতকেও পূর্ণ করে দিলাম। পৃথিবীতে যত জাতী এসেছে সবার থেকে সৌভাগ্যবান হচ্ছে মুসলিমরা, এর কারণ কী? তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব দেয়া, ২তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল দেয়া হয়েছে। এবং তাদের দ্বারাই রিসালতের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছেন। এবং তাদের দ্বারাই মানব জাতীর পরিসমাপ্তি ঘটাইবেন।
        Last edited by Muhammad bin maslama; 12-16-2017, 06:44 PM.

        Comment

        Working...
        X