Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || চতুর্থ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || চতুর্থ পর্ব

    ফিলিস্তিনের স্মৃতি
    ।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
    এর থেকে– চতুর্থ পর্ব




    হ্যাঁ, সত্যিই আমরা সে-দিনগুলোতে প্রচণ্ড ক্ষুধা সহ্য করেছি; কিন্তু সে-দিনগুলো ছিলো উপভোগ্য; বরং এই জীবনের সবচেয়ে উপভোগ্য দিন ছিলো সেগুলো। আমাদের প্রত্যেকের ভেতর এই অনুভূতি কাজ করতো যে পৃথিবীর সব মানুষের কর্তৃত্ব আমাদের হাতে রয়েছে এবং আমরা সবার সেরা। প্রত্যেকে মনে করতো সে সব ব্যাপারে স্বাধীন; তার ওপর কর্তৃত্ব ফলাবার কেউ নেই। তাছাড়া আল্লাহপাকের সন্তুষ্টিপ্রাপ্তির অনুভূতি সবাইকে সুখ ও স্বস্তি দিতো। সেখানে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা এতো বেশি ছিলো যে তার দৃষ্টান্ত খুব বিরল। সে এলাকায় আমরা ছাড়া আর কেউ ছিলো না। সেখানে মুসলমানদের একই মনোভাবের লোক ছিলো এবং কেউ কারো ক্ষতি করার চিন্তাও করতো না। কেউ কাউকে বলতো না যে তোমার বিশ্বাস এ-রকম, তোমার মনোভাব ঐ রকম বা তোমার সংস্কার এ-রকম। আলহামদুলিল্লাহ, সেখানে মুসলমানদের অন্যকোনো দল ছিলো না, ফলে সবসময় আমরা স্বস্তি বোধ করতাম। তবে একটি বিষয় আমাদের বিরক্তিতে ডুবিয়ে রাখতো। সেটি ছিলো আমাদের চারপাশের লোকদের ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব ও নিয়মনীতি। তারা গণতান্ত্রিক দল ও জাতীয়তাবাদী জোটের সদস্য ছিলো।

    সেটা ছিলো পূর্বর্তীরবর্তী এলাকা। পূর্বতীরের অধিবাসীরা হলো এই এলাকার [শায়খ যেখানে বক্তৃতা করছেন] অধিবাসীদের মতো। বিভিন্ন গোত্রের এলাকা। আফগান জাতির মতোই তাদের ভেতর কৌলীন্যবোধ, অহংকার, পৌরুষ ও আঞ্চলিকতাবোধ ছিলো। তারা আমাদের সাদরে গ্রহণ করলো এবং তাদের বাগান আমাদের জন্যে উন্মুক্ত করে দিলো। কারণ আমাদের ঘাঁটি তাদের তেমন বিঘ্ন ঘটায় নি। আমরা গেরিলা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতাম এবং গেরিলাদের মতোই থাকতাম। আমরা ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে গর্তে বসবাস করতাম। আমরা যখন গর্তে প্রবেশ করতাম তখন আমার কুরআনের এই আয়াত মনে পড়তো এবং আমি তাদের পাঠ করে শোনাতাম
    فأؤوا إلى الكهف ينشر لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ رَحْميهِ وَيُهَيّئ لَكُمْ مِنْ أَمْرَكُمْ مِرْفقًا

    তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করো। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে তাঁর অনুগ্রহ বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজকর্মকে ফলপ্রসূ করবার ব্যবস্থা করবেন।'[সুরা কাহফ : আয়াত ১৬]

    জর্ডানের সীমান্তবর্তী সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মতো আমাদের চিনতো। তারা আমাদের শায়খ বলে সম্বোধন করতো এবং আমাদের ঘাঁটিকে বলতো শায়খদের ঘাঁটি। তাদের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের কথা আমার মনে পড়ে। সেখানে তিনটি ব্যাটালিয়ন ছিলো। তারা সেখানকার নিম্নভূমি পাহারা দিতো। সেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের নাম ছিলো খালফ রাফে। তিনি বেদুইন ছিলেন। তাঁর ভেতরে আঞ্চলিকতাবোধ ছিলো এবং আঞ্চলিকতার পৌরুষ ও গর্ব ছিলো। তিনি যখন আমাদের কাউকে সামনে পেতেন তাঁর গাড়ি থামাতেন। জিজ্ঞেস করতেন, কী খবর শায়খ? কোনো খেদমত? আমাদের তরুণতম যুবকটিও বলতো, আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। তারপর হেঁটে চলে আসতো। জর্ডানের সেনাবাহিনী আমাদের সম্মান করতো; অন্য লোকদের প্রতি তেমন সম্মান দেখাতো না। সত্যি কথা বলতে, অন্য লোকেরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে খুব দুর্ব্যবহার করতো। সেনাবাহিনী পূর্বতীরের সীমান্তবর্তী এলাকায় কাজ করতো। কেউ এদিকে এলে ব্যাটালিয়ন-প্রধান তাকে বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করতেন এই যুবক, কোথায় যাচ্ছো, কী করছো ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে ব্যাটালিয়ন-প্রধানকে যে সহযোগিতা করতো সে ছিলো ফিলিস্তিনি। সে বেচারা পড়তো বিপদে। কারণ সে চাইতো ফিলিস্তিনে জিহাদ হোক। সেনাবাহিনী যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতো তারা সাধারণত থাকতো তালিযুক্ত আলখাল্লা পরা। তারা সেসব আলখাল্লার নিচে কালাশনিকভ লুকিয়ে রাখতো। কেউ কেউ আবার গাড়িতে করেও রাশিয়ান অস্ত্র, এনএসভি হেভি মেশিনগান, গোলাবারুদ ও রকেটলাঞ্চার বহন করে নিয়ে যেতো। ব্যাটালিয়ন-প্রধান তাদের জিজ্ঞেস করতেন, কোথায় যাচ্ছো যুবকেরা? তারা বলতো, আমাদের কাজ আছে। তারা আসলে জর্ডান নদীর তীর থেকে ইসরাইলে হামলা করার চেষ্টা করতো। ব্যাটালিয়ন-প্রধান তাদের বলতেন, যদি তোমরা নদীর এ পাড় থেকে তোমাদের কাজ না করে নদী পার হয়ে গিয়ে ও-পাড় থেকে করো তাহলে সুবিধা হয়। যুবকেরা বলতো, কী সুবিধা? ব্যাটালিয়ন-প্রধান বলতেন, আমরা তোমাদের সহযোগিতা করবো। তোমাদের রক্ষা করার চেষ্টা করবো। হামলা করার সময় কামানের গোলা নিক্ষেপ করে তোমাদের সাপোর্ট দেবো, যাতে তোমার পিছু হটে পালিয়ে আসতে পারো। প্রয়োজনে তোমাদের অস্ত্র, বোমা ও গোলাবারুদ দেবো। তোমরা যদি নদীর এ-পাড় থেকে বাতাসে হামলা করো এবং বাতাস পোড়াও তাহলে আমাদের জন্যে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আজ রাতে তোমরা হামলা চালাবে আর পরদিন সকালে ইসরাইলি বিমানবাহিনী এসে আমাদের ওপর হামলা করবে এবং আমাদেরকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে। এটা তো আমরা মেনে নিতে পারবো না।

    কোনো কোনো তরুণ—যে ইসলাম বা আদব কোনোটাই জানতো না——এগিয়ে এসে বলতো, তুমি সরকারের কর্মচারী, তুমি সরকারের পক্ষেই কথা বলছো। এখানে আমাদের ওপর তোমাদের সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, তোমরা এখানে কী নিয়ন্ত্রণ করবে? আমরা এখানে ইসলামের জন্যে কাজ করছি। আমরা নোংরা কথাবার্তা বলতে বা মানুষের প্রতি বাড়াবাড়ি করতে পছন্দ করি না। ইসলাম আমাদেরকে এ-ব্যাপারে বিরত থাকতে বলেছে। ব্যাটালিয়ন-প্রধান কথা বেশি বাড়ালে সেই তরুণ তাঁর মুখে থুথু ছিটিয়ে দিতো। ভাবা যায়, এক সামান্য তরুণ ব্যাটালিয়ন-প্রধানের মুখে থুথু ছিটিয়ে দিয়েছে! ব্যাটালিয়ন-প্রধান আর কিছু বলতে চাইলে তরুণ তাড়াতাড়ি মাটিতে শুয়ে পজিশন নিয়ে তাঁর দিকে অস্ত্র তাক করে গুলি চালাতো এবং তাঁকে হত্যা করতো। এরপর আর কী?

    আসলে সরকারের নীরব ভূমিকায় সেখানকার তরুণেরা অস্থির ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছিলো। ইসরাইল সে এলাকায় হামলা চালিয়ে সবকিছু তছনছ করে দিয়েছিলো। তাছাড়া সেনাসদস্যরা সেসব তরুণদের সন্দেহের চোখে দেখতো এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতো। অবশ্য আমাদের প্রতি তাদের ব্যবহার ছিলো ভিন্ন। আমাদের কেউ যখন কোথাও যেতো, তারা জিজ্ঞেস করতো, কোথায় যাচ্ছেন শায়খ? আমরা বলতাম 'কাজ' আছে। তারা জিজ্ঞেস করতো, নদীর পূর্বতীরে না-কি নদীর পশ্চিমতীরে? আমরা আমাদের কাজের কথা তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতাম। তারা বলতো, আপনারা সত্য বলেছেন, আপনারা যান। তারা আমাদের খুব সম্মান করতো এবং সম্মানের সঙ্গে কথা বলতো।

    একটি ঘটনা আমার খুব মনে পড়ে। আমরা আমাদের একটি অপারেশন নদীর পূর্বতীর থেকে পরিচালনা করেছিলাম। নদীর পশ্চিম দিকে একটি একটি ইসরাইলি বিমান টহল দিচ্ছিলো। আমরা নদীর পূর্বতীরে ওত পেতে থেকে বিমানটি রেঞ্জের ভেতরে এলে হামলা করলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা বিমানটি ভূপাতিত করতে পারলাম। যারা বিমানে ছিলো তারাও মারা পড়লো। ইসরাইলি বিমানবাহিনী টের পেয়ে মুহুর্মুহু হামলা শুরু করলো। তারা একই সঙ্গে বিমান থেকে বোমা এবং কামান থেকে গোলা বর্ষণ করছিলো। আমরা নদীর পূর্বতীরে টিকেও থাকতে পারছিলাম না আবার সরেও আসতে পারছিলাম না। অনবরত বিমান ও কামান হামলা চলছিলো। আমরা একটি ছোটো পুলের নিচে সন্ধ্যা পর্যন্ত লুকিয়ে রইলাম। যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের দুজন এবং সিরিয়ার দুজন আহত হলো। আল্লাহপাক তাদের উত্তম বিনিময় দান করুন।

    ব্যাটালিয়ন-প্রধান বোমা ও গোলা বর্ষণের মধ্যেই আমাদের দিকে এগিয়ে এলেন এবং আমাদের এক আহত ভাইকে তাঁর গাড়িতে তুলে নিলেন। তিনি নিজেও আহত হলেন। আমাদের খুব বিস্ময়কর লাগছিলো, তিনি কীভাবে আমাদের দিকে এগিয়ে এলেন এবং নিজেকে আহত করে আমাদের এক ভাইকে তার গাড়িতে তুলে নিলেন। তিনি তাকে নিয়ে সরাসরি শহরের হাসপাতালে চলে গেলেন।

    আমার মনে পড়ে, একদিন সেনাসদস্যরা এগিয়ে এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলো। তারা যখন আমাদের দেখতে পেলো চমকে উঠলো। আমরা কাঁধে করে আমাদের আহত ভাইদের ও অস্ত্রশস্ত্র বহন করে নিয়ে আসছিলাম। আমরা ক্লান্তিতে ও বোঝার ভারে ন্যুব্জ ছিলাম। আমরা না আহতদের না অস্ত্রশস্ত্র কোনোটাই ঠিকমত বহন করতে পারছিলাম না। সেনারা আমাদের দিকে এগিয়ে এলো। আমাদের আহত ভাইদের ও অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের কাঁধে তুলে নিলো। তারা সেদিন রাতে আমাদের জন্যে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছিলো। সত্যি কথা বলতে, আমি আমার জীবনে কখনো সেনাছাউনিতে বা যুদ্ধফ্রন্টে এমন সুস্বাদু খাবার খাই নি। অবশেষে তারা আমাদেরকে তাদের গাড়িতে চড়িয়ে আমাদের ঘাঁটিতে নিয়ে গেলো।

    স্বভাবতই সেনাসদস্যরা সেখানকার বিদ্রোহী তরুণ ও আত্মোৎসর্গকারী গেরিলাদের দমন করার চেষ্টা করছিলো। আরব রাষ্ট্রগুলো গেরিলা আক্রমণ পছন্দ করে না। তাছাড়া সংবাদপত্রগুলো এ-ব্যাপারে ভুল ও মিথ্যা খবর ছাপছিলো। গেরিলাদের ভুলত্রুটিগুলো বড়ো করে প্রকাশ করছিলো। সেনাদের সঙ্গে গেরিলাদের সংঘর্ষ বেড়ে যাচ্ছিলো। তারা সেনাসদস্যদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো এবং আটকে রাখছিলো। সেনাকমান্ডাররা লিখে দিতো অমুক সেনাকে তুলে নেয়া হয়েছে। নিখোঁজ সেনার জন্যে তারা একটি নম্বর নির্ধারণ করে দিতো এবং বিভিন্ন ডিভিশনের মধ্যে সমন্বয় করে নিতো।

    শেষে সেনাসদস্যদের সঙ্গে বিদ্রোহী তরুণ ও গেরিলা যোদ্ধাদের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। সেনাসদস্যরা কোনো কোনো গেরিলাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো আবার গেরিলা যোদ্ধারাও কোনো কোনো সেনাসদস্যকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু ওখানকার গেরিলাদের সুশৃঙ্খল নিয়মনীতি ছিলো না। তারা সেনাসদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের নাক-কান কেটে দিতো। সেনারা তাদের কাটাকান কাটানাক নিয়ে তাদের স্ত্রীদের কাছে যেতো, পরিবার-পরিজনের কাছে যেতো বা সেনাবাহিনীতে ফিরে আসতো। কর্তৃপক্ষ লিখে দিতো, অমুক সেনার নাক-কান কেটে দেয়া হয়েছে এবং সে অমুক ডিভিশনের সেনা।

    অবশেষে সেনাবাহিনী ক্রোধে ফুঁসে উঠলো। তারা প্রেসিডেন্টের কাছে অভিযোগ করলো। প্রেসিডেন্টকে তারা জানালো, এ-অবস্থা আমরা আর সহ্য করবো না। আমরা পদত্যাগ করবো এবং নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে আত্মসম্মান বাঁচাবার চেষ্টা করবো। সেনা অফিসারদের অনেকেই তাঁদের ব্যাজ ত্যাগ করলেন। তাঁদের ক্রোধ বুক চিরে কণ্ঠনালী পর্যন্ত উঠে এসেছিলো বা তার কিছুটা নিচে ছিলো। তাঁরা এই ক্রোধকে কন্ঠনালীর ওপরে তুলে আনতে চাইছিলেন। প্রেসিডেন্ট তাঁদের ক্রোধ সংবরণ করতে এবং শান্ত থাকতে বললেন। সেনাবাহিনী প্রতিশোধ নেয়ার কথা বললো। প্রেসিডেন্ট তখন বললেন, 'না, আমরা সবাই আত্মোৎসর্গকারী আর এরা আমাদের ভাই... ইত্যাদি ইত্যাদি।'

    তার কিছুদিন পরে সেনাবাহিনীর এক সমাবেশে—যেখানে প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনীর অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালফ রাফে প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বললেন, 'আপনারা যদি গেরিলাদের হত্যা করতে চান তাহলে আমাদের মুসলমান ভাইদেরকেই হত্যা করবেন। আপনারা মুসলমান ভাইদের হত্যা করবেন না। তারা তো ভালো মানুষ।'

    তারপর পানি যেখানে গড়িয়ে যাওয়ার সেখানেই গড়ালো। প্রেসিডেন্টের রহস্যময় কথার অর্থ পরিষ্কার হয়ে উঠলো। সরকার কুরআন ছেপে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করলো। সরকার ঘোষণা করলো, এইসব গেরিলারা কাফের ও শিয়া। ওরা দেশটাকে শিয়ায় পরিপূর্ণ করে ফেলতে চায়। এরা মা-বোন ও অন্যদের মধ্যে কেনো পার্থক্য করে না। সবাই এদের কাছে সমান। এরা শিয়াদের নিয়ম অনুযায়ী মাকেও বিয়ে করে, বোনকেও বিয়ে করে।

    আমি আগেই বলেছি, এই এলাকার লোকদের মধ্যে তীব্র অহংকারবোধ ছিলো, কৌলীন্যবোধ ছিলো। তাদের জন্যে এই ইশারাই যথেষ্ট ছিলো। তারপর সেনাসদস্যরা যখনই কোনো গেরিলাকে পেয়েছে তাকে হত্যা করেছে।

    সেনাবাহিনী ট্যাঙ্কবহর নিয়ে তাদের ঘাঁটিতে ফিরে গেলো। তারা প্রধান ঘাঁটিতে গিয়ে জনসংযোগ শুরু করলো। সাধারণ লোকেরা বললো, গেরিলারা তো ভালো মানুষ। এরা আমাদের দীন শেখায় এবং বিভিন্ন আক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করে। ট্যাঙ্কবহরের প্রধান বললেন, 'আমি তাদের কোনো ক্ষতি করবো না। তারা আমাদের দুজনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো কিন্তু তাদের কোনো ক্ষতি না করে সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি শুনেছি তারা নামায পড়ে।' আসলে সেনাসদস্যরা বিশ্বাসই করতে পারতো না যে কোনো গেরিলা যোদ্ধা নামায পড়তে পারে। তারা এক গেরিলা যোদ্ধাকে নামায পড়তে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। 'তুমি গেরিলা আবার নামায পড়ছো—আমাদের তো বিশ্বাসই হচ্ছে না। তুমি নামায পড়ছো আবার গেরিলা—কী করে বিশ্বাস করি।' যুবক জবাব দিলো, 'কোনো সন্দেহ নেই আমি গেরিলা। আর গেরিলারা শিয়া নয়। তারা তাদের মাকেও বিয়ে করে না, বোনকেও বিয়ে করে না। সরকার এসব মিথ্যা ছড়িয়েছে।'

    তারপরও সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশে গেরিলাদের ওপর হামলা চালিয়ে সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে।কেনো? একমাত্র কারণ ভয় ।​




    আরও পড়ুন​

  • #2
    আসলে সরকারের নীরব ভূমিকায় সেখানকার তরুণেরা অস্থির ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছিলো।
    আরব রাষ্ট্রগুলো গেরিলা আক্রমণ পছন্দ করে না। তাছাড়া সংবাদপত্রগুলো এ-ব্যাপারে ভুল ও মিথ্যা খবর ছাপছিলো। গেরিলাদের ভুলত্রুটিগুলো বড়ো করে প্রকাশ করছিলো।
    সরকার কুরআন ছেপে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করলো। সরকার ঘোষণা করলো, এইসব গেরিলারা কাফের ও শিয়া। ওরা দেশটাকে শিয়ায় পরিপূর্ণ করে ফেলতে চায়। এরা মা-বোন ও অন্যদের মধ্যে কেনো পার্থক্য করে না। সবাই এদের কাছে সমান। এরা শিয়াদের নিয়ম অনুযায়ী মাকেও বিয়ে করে, বোনকেও বিয়ে করে।
    আমি আগেই বলেছি, এই এলাকার লোকদের মধ্যে তীব্র অহংকারবোধ ছিলো, কৌলীন্যবোধ ছিলো। তাদের জন্যে এই ইশারাই যথেষ্ট ছিলো। তারপর সেনাসদস্যরা যখনই কোনো গেরিলাকে পেয়েছে তাকে হত্যা করেছে।​
    আল্লাহ তাআলা এই উম্মাহকে হিফাজত করুন, ঐক্যবদ্ধ করে দিন, আমীন
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment

    Working...
    X