“ফিলিস্তিনের স্মৃতি ”
।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
এর থেকে– ষষ্ঠ পর্ব
জিহাদের আবশ্যকতা হজের আবশ্যকতা থেকে অগ্রবর্তী
আলেমগণ বলেন, যে পাথেয় ও সওয়ারির অধিকারী হলো এবং হজকে এক বছর পিছিয়ে দিলো সে যদি সেই বছর মারা যায় তাহলে সে হজ আদায় না করার গুনাহগার হয়ে মারা যাবে। হজ করতে যাওয়ার জন্যে টিকেট কেনার সামর্থ্য যার থাকবে তাকে সে বছরেই হজ করতে হবে। সে যদি বিলম্ব করে এবং মারা যায় তাহলে সে গুনাহগার হবে। আবার কোন কোন আলেম বলেন, হজ বিলম্বে আদায় করাও জায়েয আছে। তাড়াহুড়ো না করলেও চলবে। কিন্তু জিহাদ ফরজ হলে তাৎক্ষণিকভাবে জিহাদে যোগদান করতে হবে। এখানে বিলম্বের অবকাশ নেই। এটা এমন নয় যে, আজ জিহাদ শুরু হলো, দশ বছর চলতে থাকবে, আমি দশ বছর পরে যোগ দেবো। জিহাদ থেকে বঞ্চিত হলে, এর চেয়ে বঞ্চনা ও এর চেয়ে বিপদ আর কিছু নেই। এর চেয়ে নাফরমানি, এর চেয়ে পাপের কাজ আর কিছুই হতে পারে না।
অনেকে অনেক অজুহাত পেশ করে, অনেক কারণ দর্শায়। প্রতিকূল অবস্থার কথা বলে। তারাই আবার যারা জিহাদে যোগ দেয় তাদেরকে অবিবেচক, আবেগপ্রবণ, অপরিণামদর্শী বলে থাকে। তারা আবার জ্ঞানী ও হুকুমদাতা। অবশ্য বর্তমানে জ্ঞানের ভিন্ন অর্থ দাঁড়িয়েছে। কবি আবু তায়্যিব আল- মুতানাব্বির ভাষায়—
يرى الجبناء أن الجبن عقل وتلك خديعة الطبع اللئيم
‘ভীরুরা মনে করে ভীরুতাই জ্ঞান; অথচ তা নিকৃষ্ট স্বভাবের প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।[1]
হয়তো তারা ভাবছে তারা সঠিক কাজ করছে এবং পুণ্যের কাজ করছে। কিন্তু তারা নিজেদেরকেই ধোঁকা দিচ্ছে। তারা যা করে তাতে হয়তো স্বস্তি বা তৃপ্তি পায় না। অতৃপ্তি নিয়েই তারা তাদের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে এবং ভাবে তারা বিরাট সোয়াবের কাজ করে যাচ্ছে। আমি বলতে চাই, এ- ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বা না-করা, কারো সমালোচনা করা বা কোন ব্যাপারে ভারসাম্য রক্ষা করা সাহাবি এবং তাবেয়িদের অনুসরণেই করতে হবে। নিজেদের মর্জি মতো কাজ করতে গেলে আমরা ভ্রান্তির শিকার হবো এবং সাফল্য ও কল্যাণ অর্জন করতে পারবো না। সাহাবিরা কখন কিভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তা আমরা জানি। তারা সর্বাত্মকভাবে কতোগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাও আমাদের নিকট সুস্পষ্ট। ইতিহাসে সাহাবিদের বর্ণনাতেই রয়েছে, তাঁদের অনেকেই প্রায় সব যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেছেন।
সাহাবিদের কেউ কেউ গর্ব করে বলেছেন, আমি রাসুল সা.-এর সঙ্গে সব যুদ্ধেই উপস্থিত ছিলাম। এমন হয় নি যে জিহাদের ডাক এসেছে আর তাঁরা ঘরে বসে আছেন। যারা বেশি বোঝে তাদের চোখে আজ জিহাদ দোষের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ মিসকিন ছাড়া আর কেউ জিহাদে অংশগ্রহণ করে না। ১৯৬৭ সালে এমনই ঘটেছিলো। মুসলমানরা ঘরে বসেছিলো। আরব বিশ্বে দুইবছরব্যাপী ইসলামি আন্দোলন হয়েছিলো। 'হে মুসলমানরা, তোমরা জেগে ওঠো। হে মুসলমানরা, তোমরা ফিলিস্তিনে আসো। হে মুসলমানরা, তোমরা পবিত্র ভূমিতে আসো। হে মুসলমানরা, তোমরা মসজিদুল আকসায় আসো, তোমরা পশ্চিম তীরে আসো।' মুসলমানরা সাড়া দেয় নি। হয়তো মুসলমানদের সাড়া না দেয়ার ফলেই আজ মক্কা-মদিনার পথ ষড়যন্ত্রকারীদের জন্যে উন্মুক্ত হয়েছে। কবির ভাষায়- -
لقد أسمعت لو ناديت حيا و لكن لا حياة لمن تنادي
যদি তুমি কোনো জীবিতকে ডাকতে তাহলে সে তোমার ডাকে সাড়া দিতো; কিন্তু তুমি যাকে ডাকছো তার তো জীবন নেই।[2]
আল কুরআনের ভাষায়
إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتَى وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ
'তুমি তো মৃতকে শোনাতে পারবে না এবং বধিরকে শোনাতে পারবে না তোমার আহ্বান, যখন তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পশ্চাদ্ধাবন করেছে।' [সুরা নামল : আয়াত ৮০]
কবির ভাষায়:
'যে মারা গেছে সে তো মৃত নয়, সে বিশ্রামে আছে; প্রকৃত মৃত সেই যে জীবনস্মৃত।[3]
মুসলিম বিশ্বের কাছে দাবি
আমি পাকিস্তানে আসার পর তিনবছরব্যাপী বিশ্বভ্রমণ করেছি এবং তাদেরকে আফগানিস্তানের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না, একটি মুসলিম জাতি যুদ্ধের ময়দানে রয়েছে; তারা একটি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং জিহাদের মর্যাদা লাভ করার চেষ্টা করছে আর আরব মুসলমানরা ঘুমিয়ে রয়েছে। তারা ভাবছে, তারা আল্লাহর দীনের খেদমত করে যাচ্ছে। আমি সৌদি আরবে গেলাম, জর্ডানে গেলাম, আমেরিকা ও ব্রিটেনে গেলাম। আমি মুসলমানদেরকে বললাম, একটি সম্পূর্ণ জাতি অস্ত্র বহন করছে এবং ইসলামি আন্দোলন তাদেরকে পরিচালনা করছে। ইসলামি আন্দোলনের নেতারা এবং ইসলামি দাওয়াতের সন্তানেরা তাদের শেকড় থেকেই ইসলামের উপর রয়েছেন। তারা একটি জাতিকে পরিচালনা করছেন এবং একটি দুষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের সঙ্গে রয়েছেন। আপনারা কি বিশ্বাস করছেন? তারা বললো, আরে, এই মিসকিন শায়খ আবদুল্লাহ বলে কী? মনে হয় সে উত্তেজিত না হয় বোঝে বেশি। আমি মিসকিন বলেই হয়তো আমার চেহারা রক্তিম হয়ে ওঠে নি এবং ক্রোধে আমার চেহারা পাল্টে যায় নি।
কবিতা
أتسبى المسلمات بكل ثغر وعيش المسلمين إذا يطيب
أما لله والإسلام حق يدافع عنه شبان وشيب
فقل لذوي البصائر حيث كانوا أجيبوا الله ويحكموا أجيبوا
'সীমান্তে ও উপসাগরে মুসলিম নারীদের বন্দি করে রাখা হবে আর মুসলমানরা সুখে বাস করবে? শুনে রাখো, তোমাদের ওপর আল্লাহ ও ইসলামের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার রক্ষা করা যুবক-বৃদ্ধ সবার দায়িত্ব। তুমি চক্ষুষ্মানদের বলো—তারা যেখানেই আছে এবং যে-দায়িত্বেই আছে—তোমরা সাড়া দাও, তোমরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দাও।[4]
এই তিন বছরে আমি পেশোয়ারের নেতাদেরও বোঝানোর চেষ্টা করেছি। অবশ্য এখানে একটি সংগঠন ছিলো। সংগঠনটির নাম ছিলো। الإتحاد الإسلامي لمجاهدي أفغانستان"আফগান মুজাহিদদের ইসলামি জোট। আমি মুসলমানদের আহ্বান জানালাম তারা যেনো এই সংগঠনে যোগ দেয় এবং সংগঠনটিকে বাঁচিয়ে রাখে। কেউ কেউ হয়তো আমার ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং এই সংগঠনে যোগ দিয়ে কাজ করে গেছে।
[1] এটি একটি দীর্ঘ কবিতার পক্তি; ভীরুদের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করে রচিত।
[2] কবিতার দ্বিতীয় পক্তি : (وَلَوْ نَارًا نَفَخْتَ بها أضائتْ + ولكن أنْتَ تَنْفُخُ في رَمَادِ ) 'তুমি যদি আগুনে ফুঁ দিতে তাহলে তা জ্বলে উঠতো; কিন্তু তুমি তো ফুঁ দিচ্ছো ছাইয়ে।
[3] কবিতার দ্বিতীয় পক্তি (إنما الميت من يعيش كئيباً + كاسف باله قليل الرجاء ) 'মৃত তো সেই যে যাপন করে নিরাশার জীবন; যার হৃদয় হতাশাগ্রস্ত এবং যার আশা তুচ্ছ।' পক্তিদুটি ইবনুর রাগা আদ-দাবাবির কবিতার অংশ। বিস্তরিত: দেখুন আত-তারিখ, ইবনুল আসির, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩২৬।
[4] এই কবিতায় রচয়িতা অজ্ঞাত। এই পক্তি তিনটি কবিতার শেষ অংশের শুরুর পঙ্ক্তিগুলো এমন
أحل الكفر بالإسلام ضيماً + يطول عليه للدين النحيب
فحق ضائع وحمى مباح + وسيف قاطع ودم صبيب
وكم من مسلم أمسى سليباً + ومسلمة لها حرم سليب
وكم من مسجد جعلوه ديراً + على محرابه نصب الصليب
دم الخنزير فيه لهم خلوق + وتحريق المصاحف فيه طيب
أمور لو تأملهن طفل + لطفل في عوارضه المشيب
।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
এর থেকে– ষষ্ঠ পর্ব
জিহাদের আবশ্যকতা হজের আবশ্যকতা থেকে অগ্রবর্তী
আলেমগণ বলেন, যে পাথেয় ও সওয়ারির অধিকারী হলো এবং হজকে এক বছর পিছিয়ে দিলো সে যদি সেই বছর মারা যায় তাহলে সে হজ আদায় না করার গুনাহগার হয়ে মারা যাবে। হজ করতে যাওয়ার জন্যে টিকেট কেনার সামর্থ্য যার থাকবে তাকে সে বছরেই হজ করতে হবে। সে যদি বিলম্ব করে এবং মারা যায় তাহলে সে গুনাহগার হবে। আবার কোন কোন আলেম বলেন, হজ বিলম্বে আদায় করাও জায়েয আছে। তাড়াহুড়ো না করলেও চলবে। কিন্তু জিহাদ ফরজ হলে তাৎক্ষণিকভাবে জিহাদে যোগদান করতে হবে। এখানে বিলম্বের অবকাশ নেই। এটা এমন নয় যে, আজ জিহাদ শুরু হলো, দশ বছর চলতে থাকবে, আমি দশ বছর পরে যোগ দেবো। জিহাদ থেকে বঞ্চিত হলে, এর চেয়ে বঞ্চনা ও এর চেয়ে বিপদ আর কিছু নেই। এর চেয়ে নাফরমানি, এর চেয়ে পাপের কাজ আর কিছুই হতে পারে না।
অনেকে অনেক অজুহাত পেশ করে, অনেক কারণ দর্শায়। প্রতিকূল অবস্থার কথা বলে। তারাই আবার যারা জিহাদে যোগ দেয় তাদেরকে অবিবেচক, আবেগপ্রবণ, অপরিণামদর্শী বলে থাকে। তারা আবার জ্ঞানী ও হুকুমদাতা। অবশ্য বর্তমানে জ্ঞানের ভিন্ন অর্থ দাঁড়িয়েছে। কবি আবু তায়্যিব আল- মুতানাব্বির ভাষায়—
يرى الجبناء أن الجبن عقل وتلك خديعة الطبع اللئيم
‘ভীরুরা মনে করে ভীরুতাই জ্ঞান; অথচ তা নিকৃষ্ট স্বভাবের প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।[1]
হয়তো তারা ভাবছে তারা সঠিক কাজ করছে এবং পুণ্যের কাজ করছে। কিন্তু তারা নিজেদেরকেই ধোঁকা দিচ্ছে। তারা যা করে তাতে হয়তো স্বস্তি বা তৃপ্তি পায় না। অতৃপ্তি নিয়েই তারা তাদের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে এবং ভাবে তারা বিরাট সোয়াবের কাজ করে যাচ্ছে। আমি বলতে চাই, এ- ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বা না-করা, কারো সমালোচনা করা বা কোন ব্যাপারে ভারসাম্য রক্ষা করা সাহাবি এবং তাবেয়িদের অনুসরণেই করতে হবে। নিজেদের মর্জি মতো কাজ করতে গেলে আমরা ভ্রান্তির শিকার হবো এবং সাফল্য ও কল্যাণ অর্জন করতে পারবো না। সাহাবিরা কখন কিভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তা আমরা জানি। তারা সর্বাত্মকভাবে কতোগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাও আমাদের নিকট সুস্পষ্ট। ইতিহাসে সাহাবিদের বর্ণনাতেই রয়েছে, তাঁদের অনেকেই প্রায় সব যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেছেন।
সাহাবিদের কেউ কেউ গর্ব করে বলেছেন, আমি রাসুল সা.-এর সঙ্গে সব যুদ্ধেই উপস্থিত ছিলাম। এমন হয় নি যে জিহাদের ডাক এসেছে আর তাঁরা ঘরে বসে আছেন। যারা বেশি বোঝে তাদের চোখে আজ জিহাদ দোষের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ মিসকিন ছাড়া আর কেউ জিহাদে অংশগ্রহণ করে না। ১৯৬৭ সালে এমনই ঘটেছিলো। মুসলমানরা ঘরে বসেছিলো। আরব বিশ্বে দুইবছরব্যাপী ইসলামি আন্দোলন হয়েছিলো। 'হে মুসলমানরা, তোমরা জেগে ওঠো। হে মুসলমানরা, তোমরা ফিলিস্তিনে আসো। হে মুসলমানরা, তোমরা পবিত্র ভূমিতে আসো। হে মুসলমানরা, তোমরা মসজিদুল আকসায় আসো, তোমরা পশ্চিম তীরে আসো।' মুসলমানরা সাড়া দেয় নি। হয়তো মুসলমানদের সাড়া না দেয়ার ফলেই আজ মক্কা-মদিনার পথ ষড়যন্ত্রকারীদের জন্যে উন্মুক্ত হয়েছে। কবির ভাষায়- -
لقد أسمعت لو ناديت حيا و لكن لا حياة لمن تنادي
যদি তুমি কোনো জীবিতকে ডাকতে তাহলে সে তোমার ডাকে সাড়া দিতো; কিন্তু তুমি যাকে ডাকছো তার তো জীবন নেই।[2]
আল কুরআনের ভাষায়
إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتَى وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ
'তুমি তো মৃতকে শোনাতে পারবে না এবং বধিরকে শোনাতে পারবে না তোমার আহ্বান, যখন তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পশ্চাদ্ধাবন করেছে।' [সুরা নামল : আয়াত ৮০]
কবির ভাষায়:
ليس من مات فاستراح بميت إنما الميت ميت الأحياء
'যে মারা গেছে সে তো মৃত নয়, সে বিশ্রামে আছে; প্রকৃত মৃত সেই যে জীবনস্মৃত।[3]
মুসলিম বিশ্বের কাছে দাবি
আমি পাকিস্তানে আসার পর তিনবছরব্যাপী বিশ্বভ্রমণ করেছি এবং তাদেরকে আফগানিস্তানের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না, একটি মুসলিম জাতি যুদ্ধের ময়দানে রয়েছে; তারা একটি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং জিহাদের মর্যাদা লাভ করার চেষ্টা করছে আর আরব মুসলমানরা ঘুমিয়ে রয়েছে। তারা ভাবছে, তারা আল্লাহর দীনের খেদমত করে যাচ্ছে। আমি সৌদি আরবে গেলাম, জর্ডানে গেলাম, আমেরিকা ও ব্রিটেনে গেলাম। আমি মুসলমানদেরকে বললাম, একটি সম্পূর্ণ জাতি অস্ত্র বহন করছে এবং ইসলামি আন্দোলন তাদেরকে পরিচালনা করছে। ইসলামি আন্দোলনের নেতারা এবং ইসলামি দাওয়াতের সন্তানেরা তাদের শেকড় থেকেই ইসলামের উপর রয়েছেন। তারা একটি জাতিকে পরিচালনা করছেন এবং একটি দুষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের সঙ্গে রয়েছেন। আপনারা কি বিশ্বাস করছেন? তারা বললো, আরে, এই মিসকিন শায়খ আবদুল্লাহ বলে কী? মনে হয় সে উত্তেজিত না হয় বোঝে বেশি। আমি মিসকিন বলেই হয়তো আমার চেহারা রক্তিম হয়ে ওঠে নি এবং ক্রোধে আমার চেহারা পাল্টে যায় নি।
কবিতা
أتسبى المسلمات بكل ثغر وعيش المسلمين إذا يطيب
أما لله والإسلام حق يدافع عنه شبان وشيب
فقل لذوي البصائر حيث كانوا أجيبوا الله ويحكموا أجيبوا
'সীমান্তে ও উপসাগরে মুসলিম নারীদের বন্দি করে রাখা হবে আর মুসলমানরা সুখে বাস করবে? শুনে রাখো, তোমাদের ওপর আল্লাহ ও ইসলামের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার রক্ষা করা যুবক-বৃদ্ধ সবার দায়িত্ব। তুমি চক্ষুষ্মানদের বলো—তারা যেখানেই আছে এবং যে-দায়িত্বেই আছে—তোমরা সাড়া দাও, তোমরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দাও।[4]
এই তিন বছরে আমি পেশোয়ারের নেতাদেরও বোঝানোর চেষ্টা করেছি। অবশ্য এখানে একটি সংগঠন ছিলো। সংগঠনটির নাম ছিলো। الإتحاد الإسلامي لمجاهدي أفغانستان"আফগান মুজাহিদদের ইসলামি জোট। আমি মুসলমানদের আহ্বান জানালাম তারা যেনো এই সংগঠনে যোগ দেয় এবং সংগঠনটিকে বাঁচিয়ে রাখে। কেউ কেউ হয়তো আমার ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং এই সংগঠনে যোগ দিয়ে কাজ করে গেছে।
[1] এটি একটি দীর্ঘ কবিতার পক্তি; ভীরুদের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করে রচিত।
[2] কবিতার দ্বিতীয় পক্তি : (وَلَوْ نَارًا نَفَخْتَ بها أضائتْ + ولكن أنْتَ تَنْفُخُ في رَمَادِ ) 'তুমি যদি আগুনে ফুঁ দিতে তাহলে তা জ্বলে উঠতো; কিন্তু তুমি তো ফুঁ দিচ্ছো ছাইয়ে।
[3] কবিতার দ্বিতীয় পক্তি (إنما الميت من يعيش كئيباً + كاسف باله قليل الرجاء ) 'মৃত তো সেই যে যাপন করে নিরাশার জীবন; যার হৃদয় হতাশাগ্রস্ত এবং যার আশা তুচ্ছ।' পক্তিদুটি ইবনুর রাগা আদ-দাবাবির কবিতার অংশ। বিস্তরিত: দেখুন আত-তারিখ, ইবনুল আসির, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩২৬।
[4] এই কবিতায় রচয়িতা অজ্ঞাত। এই পক্তি তিনটি কবিতার শেষ অংশের শুরুর পঙ্ক্তিগুলো এমন
أحل الكفر بالإسلام ضيماً + يطول عليه للدين النحيب
فحق ضائع وحمى مباح + وسيف قاطع ودم صبيب
وكم من مسلم أمسى سليباً + ومسلمة لها حرم سليب
وكم من مسجد جعلوه ديراً + على محرابه نصب الصليب
دم الخنزير فيه لهم خلوق + وتحريق المصاحف فيه طيب
أمور لو تأملهن طفل + لطفل في عوارضه المشيب
আরও পড়ুন
পঞ্চম পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------- সপ্তম পর্ব