Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || পঞ্চদশ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || পঞ্চদশ পর্ব

    ফিলিস্তিনের স্মৃতি
    ।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
    এর থেকে– পঞ্চদশ পর্ব


    আমার জাতি আমাকে ত্যাগ করে নি এবং নিজেদের ভর্ৎসনাও করে নি

    আমরা ফিলিস্তিনে ফিরে যাবো। আমরা এখন, শুধু এখন নয়, আফগানিস্তানে প্রবেশের পর থেকেই আমরা ফিলিস্তিনের কথা চিন্তা করেছি। আমার ইচ্ছা ছিলো, উপমহাসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরব ও কুয়েতে যেসব ফিলিস্তিনি যুবক কাজ করে তাদেরকে ধরে এখানে নিয়ে আসি। এখানে তারা জিহাদ দেখুক, যুদ্ধ দেখুক। তারা জিহাদের তরবিয়ত গ্রহণ করুক, যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিক। তারা ভয়ের আগল ভেঙ্গে ফেলুক এবং যুদ্ধক্ষেত্রের শিক্ষা গ্রহণ করুক। তারা হবে ফিলিস্তিনের রক্ষিত সম্পদ। যখন ফিলিস্তিনের জন্যে ভয়াবহ দুর্যোগপূর্ণ দিন আসবে, তারা ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। কিন্তু হায় আফসোস! আমার জাতি আমাকে ত্যাগ করে নি বটে, তবে আমার কথা না শোনার জন্যে নিজেদের ভর্ৎসনাও করে নি। বরং আমি জিহাদে এসেছি বলে আমাকেই ভর্ৎসনা করেছে। তারা নিজেদেরকে এই বলে সন্তুষ্ট রাখছে যে, তারা ফিলিস্তিনের জন্যেই কাজ করছে। যেসব যুবক এখানে আফগানিস্তানে এসেছে আমি তাদেরকে ফিলিস্তিনের সম্পদ ভেবেছি। বাস্তবিকপক্ষে তাদের হাতেই ফিলিস্তিনের মুক্তির সূচনা হতে পারতো। তা ছিলো একটা সুযোগ, কিন্তু সে সুযোগ আর নেই। চুক্তির বাজারে তা শেষ হয়ে গেছে। তাতে যা লাভ হওয়ার হয়েছে এবং যা ক্ষতি হওয়ার তাও হয়েছে। ইহুদিরা যখন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলো, তারা কোনো সুযোগ ব্যবহার করে তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে নি। তারা কখনো গোলকধাঁধায় চক্কর খায় নি এবং বিভ্রান্তি তে পড়ে হোঁচট খায় নি। তারা যা করেছে বাস্তবের নিরিখেই করেছে। কার্যত সেটাই যুক্তিযুক্ত ছিলো। তারা প্রস্তুতি নিয়েছে, অপেক্ষা করেছে, ধৈর্য এবং ক্লান্তিবোধ করেছে।

    যাঁরা মনে করেন পশ্চিমারা ইহুদিদের জন্যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে তাঁরা কল্পনার আকাশে আছেন। এটা তাঁদের ভ্রান্তি। আসলে ইহুদিরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছে এবং ধীরে ধীরে তাদের গন্তব্যের দিকে এগিয়েছে। ফিলিস্তিনের ভূমিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো আমেরিকা ও রাশিয়া তাদেরকে কেবল সহায়তা করেছে। তারা সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে এবং নিহতও হয়েছে। প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা লাভের লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তারা ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে তারা বের হয়ে আসে। যুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে।] এরপর তারা নতুন সংকল্প, শক্তি ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আবির্ভূত হয়। দুইতিন বছর পর তারা এই শক্তি ও অভিজ্ঞতাকে ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে কাজে লাগায়। খাটের ওপর যেমন সাঁতার কাটা যায় না, তেমনি শুধু কাগজ-কলম দিয়ে জিহাদ করা যায় না। যে খাটের ওপর সাঁতার শিখেছে, তারপর বন্ধুদেরকে দেখাতে নিয়ে গেছে কীভাবে সে সাঁতার শিখেছে, এটা বই সঙ্গে নিয়ে হাত-পা ছোঁড়ার বিষয়টি বইয়ের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে নেয়ার মতোই; সে সাগরে নামবে আর ফিরে আসবে না।

    ১৯৪৭ সালে ইহুদিরা যখন ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে তখন তাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র সৈন্যসংখ্যা ছিলো ৭৫ হাজার। ফিলিস্তিন এবং যেসব আরব দেশ এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো তাদের সব সৈন্য মিলিয়েও ৭৫ হাজার ছিলো না। তারা এই ৭৫ হাজার সৈন্যকে আরো সংহত করেছে, আধুনিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ করেছে ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং নতুন সৈন্য যোগ করেছে। গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা তাদের ভিত্তি সংহত করে যাচ্ছে। সুতরাং এটা বলা যাবে না যে, তারা সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশবাদের ফল। তারা নিজেরাই নিজেদের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং তা সংহত করেছে। পঞ্চাশ বছর তারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়িয়েছে, সম্পদ ব্যয় করেছে, রক্ত ঝরিয়েছে, তারপর সফল হয়েছে। বাতিল যখন শক্তি অর্জন করে এবং সহয়তা পায়, বিজয় লাভ করে। সত্য যখন তার সৈনিকদের হারিয়ে ফেলে, পরাজিত হয়। তবে হ্যাঁ, তখন অনেক অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো যেগুলো ইহুদিদেরকে তাদের রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে। এক্ষেত্রে আপনি যদি বিশ্বষড়যন্ত্রের কথা বলেন, আমি আপনার সঙ্গে একমত; আপনি যদি ফিলিস্তিনি জাতির ধোঁকাবাজির কথা বলেন, আমি আপনার সঙ্গে একমত; আরব রাষ্ট্রগুলোর দায়সারা ভাব এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের প্রতারণার কথা যদি আপনি বলেন, আমি আপনার সঙ্গে একমত। এই পরিস্থিতিগুলো ইহুদিদেরকে তাদের রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে। তবে একথা বলতেই হবে, এসবের তুলনায় প্রশিক্ষিত বিশাল সেনাবাহিনীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। তারা মানেপ্রাণে বিশ্বাস করে যে তারা তাদের পিতৃপুরুষের ভিটায় প্রত্যাবর্তনের জন্যে যুদ্ধ করছে। কতিপয় নষ্ট ভিখিরি বুদ্ধিজীবী বলে থাকেন যে সম্মানিত ইহুদিদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ করা ঠিক হবে না। আমরা কেবল জায়নিস্টদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। অর্থাৎ কোনো ইহুদিকে বুলেট ছোঁড়ার আগে আমরা তার রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নেবো যে তার রক্তে কতো ভাগ জায়নবাদ (Zionism ) আছে। যদি তার রক্তে ৫৫ ভাগ জায়নবাদ থাকে তবে তাকে হত্যা করবো, কেননা সে জায়নিস্ট; আর যদি ৪৫ ভাগ থাকে তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না, কেননা সে সম্মানিত ইহুদি। আসলে ইহুদি ও জায়নবাদী ( صهيوني/ Zionist)-এর মধ্যে পার্থক্য কী? হায় আফসোস! হে দার্শনিকেরা, তোমরা যদি আমাদের জানিয়ে দিতে কীভাবে আমরা ইহুদি ও জায়নিস্টদের মাঝে পার্থক্য করবো! তাঁরা বলেন, صهيوني / Zionism হচ্ছে আদি ইহুদিবাদের দিকে প্রত্যাবর্তন। অর্থাৎ যারা আদি ইহুদিবাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে চায় তারা صهيوني / Zionist আর বাকিরা সম্মানিত ইহুদি ( (يهودي شريف জায়নিজম যে আদি ইহুদিবাদের দিকে প্রত্যাবর্তন, Chaim Weizmann[1]- ও এমনটি বলেছেন। একই কথা বলেছেন Theodore Herz[2]-ও। তিনি ১৮৯৭ সালে জায়নবাদ (صهيوني / Zionism) প্রবর্তন করেন।

    কিন্তু কীভাবে তা হবে? আমরা তো দেখতে পাই সবাই আদি ইহুদিবাদের দিকে প্রত্যাবর্তনে বিশ্বাসী। তারা মার্কিন হওয়া সত্ত্বেও ব্রুকলিন, নিউইয়র্ক, শিকাগো, নিউমেক্সিকো, টেক্সাস ও ভিলার আবাসস্থল ত্যাগ করে কেন জেরুজালেমে এসেছে। তারা এখানে কি এসেছে কেবল একারণে যে তারা জায়নিস্ট? তারা কি ফিলিস্তিনের ভূমিতে রক্ত, বুলেট আর বারুদের ভেতর বাস করছে একারণে যে তারা কেবল জায়নিস্ট? না-কি তারা সেই রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে বসে দাউদ আ.-এর বংশধরের কোনো সন্তান পৃথিবী শাসন করবে? Moshe Dayan যখন ১৯৬৭ সালে মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করেছিলেন, তিনি কী বলেছিলেন? Dayan বলেছিলেন, ‘জেরুজালেম থেকে ইয়াসরিব পর্যন্ত যে-রাজ্য শাসন করা হয়েছিলো আমি এখানে দাঁড়িয়ে তার ঘ্রাণ পাচ্ছি।’ তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আমি খায়বার থেকে আমার পিতৃপুরুষদের ঘ্রাণ পাচ্ছি।’ David Ben Guerin যখন ১৯৬৭ সালে পশ্চিমতীরে প্রবেশ করেন আমি তাদের বলতে শুনেছি পশ্চিমতীর দখলের সময় আমি সেখানে ছিলাম—ইসরাইলি সৈনিকরা মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করে এবং বলতে থাকে, ‘মারা গেছে..., হ্যাঁ মারা গেছে..., মুহাম্মদ মারা গেছে আর কিছু অবলা তার উত্তরসূরি হয়েছে।’ ইসরাইলি রেডিওতে আমি তাদের বলতে শুনেছি, ডেভিড বেন গুয়েরিন ঘোষণা করেন, “ফিলিস্তিনে প্রবেশের পরে আজকের দিনটি আমাদের কাছে সবচেয়ে মহিমাময়। পবিত্র রাজধানীর দুই প্রান্ত আজ একত্র হয়েছে। জেরুজালেম ব্যতীত ইসরাইলের কোনো অর্থ থাকতে পারে না। আর আদি ইহুদি রাজ্য ব্যতীত জেরুজালেমের কোনো অর্থ থাকতে পারে না। ডেভিড বেন গুয়েরিন এভাবেই বলেছিলেন। আরেকবার তিনি টেলিভিশনে পশ্চিমতীর এবং সেখান থেকে তাদের ফিরে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বক্তৃতা করার সময় মুসলিম নেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। আপনাদের যেমন হাসানুল বান্না[3] রয়েছেন এবং তিনি সাইয়িদ কুতুবকে দীক্ষা দিয়েছেন তেমনি আমাকে দীক্ষা দিয়েছেন আমাদের আত্মিক পিতা Jabinski (الأب الروحي جابينسكي)। পশ্চিমতীর থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা তাওরাতকে অস্বীকার করার নামান্তর মনে করি।'

    আসলে বিষয়টি হচ্ছে বিশ্বাস ও আকিদার। সিনাই যুদ্ধে ইসরাইলের যেসব ট্যাঙ্ক অংশগ্রহণ করে সেগুলোর ওপর তাওরাতের বাণী লেখা ছিলো। আর মিশরের পক্ষে যেসব ট্যাঙ্ক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সেগুলোর গায়ে লেখা ছিলো ناصرنا عبد الناصر ‘আবদুন নাসের আমাদের সাহায্যকারী।’ এই ব্যাপারগুলো বিশ্বাস ও আকিদার জায়গা থেকে হয়েছে। Moshe Dayan-এর কন্যা Yaël Dayan তাঁর Israel Journal : June 1967[4] লিখেছেন, 'যখন যুদ্ধের দক্ষিণ ফ্রন্ট—মিসরীয় ফ্রন্ট থেকে আমাদের কাছে শত্রুর তীব্র আক্রমণের খবর এলো যে, আমাদের সৈনিকরা শত্রুর ভয়ে কম্পিত, তার এক ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের কাছে রাব্বি এলেন (ইহুদিদের ধর্মগুরুকে ইংরেজিতে বলে Rabbi, আরবিতে বলে حاخام) এবং তাওরাতের কিছু অংশ পাঠ করে শুনালেন। তওরাতের পাঠ শুনে আমাদের শঙ্কা শান্তিতে এবং ভয় প্রশান্তিতে পরিণত হলো।’ ১৯৬৭ সালে মোশে দায়ান ও ডেভিড বেন ওয়েরিন যখন জেরুজালেমে প্রবেশ করেন তখন রাব্বি তাঁদের সামনে সামনে হেঁটে যাচ্ছিলেন। (এতে তাদের বিশ্বাস ও আকিদার বিষয়টি প্রমাণিত হয়।


    [1] Chaim Azriel Weizmann 29 শে নভেম্বর ১৮৭৪ সালে বেলারুশের পিন্স্ক এলাকার নিকটে মোটাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জায়নিস্ট অরগানাইজেশন-এর সভাপতি ও ইসরাইলের প্রথম প্রেসিডেন্ট। ১লা ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ১৯৫২ সালের ৯ই নভেম্বর মৃত্যু পর্যন্ত একই পদে বহাল থাকেন। তিনি রসায়নবিদ ছিলেন এবং আইনস্টাইনের সঙ্গে মিলে গবেষণা করেন। তাঁর রচিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Trial and Error: The Autobiography of Chaim Weizmann.

    [2] ১৮৬০ সালে ২রা মে হাঙ্গেরির পেস্টে এক ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পুরো নাম বেনজামিন জি ইড হার্জেল। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। লেখক, সাংবাদিক, নাট্যকার ও রাজনৈতিক কর্মী। আধুনিক রাজনৈতিক ইহুদিবাদের জনক হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠায় ইহুদিবাদ প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাঁর দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ The Jews State এবং The Old New Land । তিনি পনেরোটিরও বেশি নাটক রচনা করেন। ৩রা জুলাই ১৯০৪ সালে ৪৪ বছর বয়সে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির ইডলাকে তাঁর মৃত মৃত্যু হয়। ১৯৪৯ পর্যন্ত তাঁর কবর ছিলো ভিয়েনার ডাবলিঙ্গার ফ্রেডহোক-এ। ইসরাইলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর তাঁর দেহ উঠিয়ে এনে জেরুজালেমে সমাধিস্থ করা হয়। আভনার ফক রচিত হার্জেলের জীবনীগ্রন্থ Herzl, King of the Jews: A Psychoanalytic Biography of Theodor Herzl ১৯৯৩ সালে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
    [3]
    পুরো নাম হাসান বিন আহমদ বিন আবদুর রহমান আল বান্না। আরব ও ইসলামি বিশ্বের 80 ইখওয়ানুল মুসলিমিনের প্রতিষ্ঠাতা। মিসরের কুরুশ শায়খ জেলার ফুহ এলাকায় ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই পরিবারের সঙ্গে বুহায়রা জেলার মাহমুদিয়া এলাকায় চলে যান। মাদরাতুর রাশাদ আদ-দীনিয়্যাতে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এ সময় তিনি শায়খ মুহাম্মদ যাহরানের চিন্তাধারায় দারুণ প্রভাবিত হন। একই সময়ে তিনি স্থানীয় কয়েকটি সংস্কারপন্থী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯২০ সালে দামনাহুরের মাদরাসাতুল মুআল্লিমিনে ভর্তি হন। এখানে তিনি সুফিবাদী দর্শনে বুৎপত্তি অর্জন করেন। ১৯২৩ সালে কায়রোর দারুল উলুম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯২৭ সালে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। কায়রো থেকেই তিনি ইখওয়ানুল মুসলিমিন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন এবং পত্রপত্রিকায় লেখালেখি ও জনসম্মুখে ভাষণের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য প্রচার করতে থাকেন। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও চমৎকার প্রকাশভঙ্গির ফলে অল্প সময়ের মধ্যে সংগঠনটিকে দাঁড় করিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। হাসানুল বান্না তৎকালীন রাজা ফারুকের রোষানলে পড়েন এবং ১৯৪৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন। 'রিসালাতু হাসান আল-বান্না' নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়েছে। ইখওয়ানুল মুসলিমিন মিসরের রাজনীতিতে সাত দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং বর্তমানে স্বৈরাচারী হুসনি মুবারকের পতন ঘটিয়ে সরকার গঠন করে। ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সিসির অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুহাম্মদ মুরসির সরকারের পতন ঘটে।
    [4] Israel Journal: June 1967 (also known as A Soldier's Diary) -1967






    আরও পড়ুন

    চতুর্দশ পর্ব -------------------------------------------------------------------------------------------- ষষ্ঠাদশ পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 22 hours ago.
Working...
X