مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
هذه غزة...
غزة التي فضحت اللحن الممجوج لحقوق الإنسان-٢
بقلم: سالم الشريف
এই তো গাজা...
যা মানবাধিকারের লজ্জাজনক সুর তুলে ধরেছে
[দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহ]
মূল: সালেম আল শরীফ
This is Gaza...
Which raised the shameful tone of human rights
[Week two and three]
Author: Salem Al Sharif
এই তো গাজা...
যা মানবাধিকারের লজ্জাজনক সুর তুলে ধরেছে
[দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহ]
মূল: সালেম আল শরীফ
بسم الله الرحمن الرحيم
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
এই তো গাজা... যা মানবাধিকারের লজ্জাজনক সুর তুলে ধরেছে
ক্রোধান্বিত উম্মাহর অপ্রতিরোধ্য জাগরণ:
ক্রোধ... হ্যাঁ... উম্মাহ আজ অনেক বেশি ক্রোধান্বিত। এই ক্রোধ সর্বোচ্চ মাত্রা ছুঁয়েছে। অপ্রতিরোধ্য ক্রোধ গোটা আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে, ভূমি জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি আচ্ছন্ন করে দিয়েছে। সেই ক্রোধ প্রিয়জন হারানো প্রতিটি ঘর কালো চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। উম্মাহর সন্তানদের সঙ্গে শত্রুদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে এই ক্রোধ। উম্মাহর সম্পদ ও মূল্যবান বিষয় শত্রুরা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দীন-ধর্ম, আকীদা-বিশ্বাস, সম্মান ও গৌরবের প্রতীক এবং পবিত্র বস্তুগুলো নিয়ে শত্রুরা ঠাট্টা করছে। অন্যায়, মূর্খতা, বর্বরতা, অজ্ঞতা এবং ইহুদী ও ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমা বিশ্বের ঔদ্ধত্য দেখে উম্মাহ আজ রাগান্বিত।
দেশে-বিদেশে, প্রতিটি নর-নারী, যুবক ও বৃদ্ধের হৃদয়ে বসতি স্থাপন করে নিয়েছে সেই ক্রোধ। তাদের বক্ষের একবিন্দু জায়গা ক্রোধ থেকে শূন্য নয়। রাগে ক্ষোভে তারা ফেটে পড়ছে। ঠাট্টার বস্তু হতে থাকা দীন ইসলামের জন্য তাদের ক্রোধ। বাবা, ছেলে, মা, মেয়ে, ভাই-বোন, চাচা, খালা, দাদা, নাতি — সকলের প্রবাহিত রক্তের জন্য এই ক্রোধ। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং তাদের আজেবাজে কথার প্রতি এই ক্রোধ। পৃথিবীকে দুর্গন্ধময় করে তোলা মিথ্যা ও নাস্তিকতার ধারক বাহকদের প্রতি এই ক্ষোভ। কি ভীষণ তীব্র সেই ক্রোধ! আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণে অপসংস্কৃতির ধারক-বাহকদের জন্য আফসোস!
কাফেরদের মতবাদ ও ধ্যান-ধারণার প্রতি এই ক্রোধ। নিজেদের মতবাদ তারা প্রচার করেছে। সেই মতবাদ রক্ষার বুলি আওডিয়ে তারা ফায়দা লুটেছে। এরপর যখন তাদের স্বার্থ ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে, তখন তারা নিজেদের প্রচারিত সেই মতবাদের বিরোধিতা করতে আরম্ভ করেছে। এই ক্রোধ যখন ফুঁসে উঠেছে, তখন তা সকল লাগাম ছিঁড়ে যুদ্ধাঙ্গনে উপস্থিত হয়েছে। কোনো ধৈর্য, দয়া, মমতা, সহনশীলতা এই ক্রোধকে প্রতিরোধ করতে পারেনি। কেমন করেই বা পারবে? এখন তো সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে।
ক্রোধান্বিত উম্মাহ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য অগ্রসর হচ্ছে। তারা নিজেদের পাওনা বুঝে নেওয়ার জন্য আসছে। প্রতিদিন তারা আশা করছে তোমাদের দেশে কোনো একটি বিস্ফোরণের। তারা প্রত্যাশা করছে তোমাদের ওখানে কোনো হত্যাকাণ্ড, আঘাত বা হামলা সংঘটিত হবার। এ প্রত্যাশার মধ্য দিয়েই এমন একদিন আসবে, যেদিন আমাদের বাহিনী তোমাদের উপর সবদিক থেকে হামলে পড়বে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
فَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِ رُسُلَهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ
অর্থ: “অতএব আল্লাহর প্রতি ধারণা করো না যে, তিনি রাসূলগণের সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।” [সূরা ইবরাহীম 14: ৪৭]
***
গাজাকে সমর্থন করার জন্য উম্মাহর মাঝে সচেতনতা ও জাগরণমূলক কিছু মূল্যায়ন আমরা পেশ করে আসছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায়-
পঞ্চম মূল্যায়ন: আইনি ও ধর্মীয় অবস্থান:
এ মূল্যায়নটি আমাদের কাছে স্পষ্ট করে দেয়, জায়নিস্ট-ক্রুসেডাররা কত বেশি প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে— এমনকি তাদের নিজেদের তৈরি আইন-কানুনের ক্ষেত্রেও। এই অবস্থান আমাদের কাছে আরো স্পষ্ট করে দেয়, জায়নবাদীরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আদেশ-নিষেধের বিরুদ্ধে গিয়ে কত দূর অবস্থান নিয়েছে।
বস্তুত নিজেদের রীতি-নীতি, আইন-কানুন ও ধর্ম যখন এই ইহুদীবাদীদের এবং পশ্চিমা বিশ্বের—প্রোটেস্ট্যান্ট হোক অথবা ক্যাথলিক হোক- উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমলে না নেয়, তখন তারা কতটা বক্র পথ অবলম্বন করতে পারে, সে বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। আর কেনই বা তারা বাঁকা পথ ধরবে না? তারা তো এর চাইতেও বড় বিষয়ের প্রতি কুফরী করেছে এবং বক্রতা অবলম্বন করেছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
ثُمَّ أَنتُمْ هَٰؤُلَاءِ تَقْتُلُونَ أَنفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقًا مِّنكُم مِّن دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِم بِالْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِن يَأْتُوكُمْ أُسَارَىٰ تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ ۚ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
অর্থ: “অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছো এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করছো। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছো। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছো। অথচ তাদের বহিষ্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দুগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনোই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।” [সূরা আল বাকারা ০২: ৮৫]
আমেরিকার দ্বিমুখী আচরণ বা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড:
এটাকে কূটনৈতিকভাবে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান মুজাহিদীনের জন্য হোয়াইট হাউস খুলে দিয়েছিল- যখন আফগানরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিলেন। তখন আমেরিকার কথা ছিল, এই আফগানরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শুরুতে ঐ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই আফগান মুজাহিদীনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে বর্ণনা করতে আরম্ভ করে। অথচ তখনও আফগানরা সেই একই উদ্দেশ্যে লড়াই করে যাচ্ছিলেন- যে উদ্দেশ্যে তারা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল: নিজেদের ভূমিকে মুক্ত করা এবং ইসলামী ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
আমেরিকার এমন দ্বিমুখী আচরণের অর্থ হল: যেকোনো জনপ্রিয় মুক্তি সংগঠন নিজ ভূমিকে ঔপনিবেশিকদের হাত থেকে মুক্ত করতে এবং নিজেদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য লড়াই করে, তা পশ্চিমাদের স্বার্থের অনুকূল হলে তারা স্বাধীনতাকামী ও মুক্তিবাহিনী; পক্ষান্তরে পশ্চিমাদের স্বার্থের বিপরীত হলে তারা সন্ত্রাসী বা কট্টরপন্থি।
এক্ষেত্রে কোনো ইস্যু নিরপেক্ষভাবে বাস্তবতা ও সত্যতার ভিত্তিতে বিচার করা হয় না। ফিলিস্তিনে জায়নবাদীদের টিকে থাকা পশ্চিমা স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। শুধু তাই নয়; বরং পশ্চিমারাই এই বিষবৃক্ষ রোপণ করেছে। এমনকি যদি ইতিপূর্বে তারা এ কাজ নাও করতো, তাহলে ভবিষ্যতে অবশ্যই এ কাজ তাদের করতেই হতো- এমন অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেছে আমেরিকান ভীমরতিগ্রস্ত বাইডেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা ইহুদীবাদীদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। যদিও পশ্চিমারা ভালো করেই জানে এই ইহুদীবাদীরা নিপীড়ক, নৃশংস, মানবাধিকারের সমস্ত সীমা অতিক্রমকারী, তবুও তারা তাদের পাশেই দাঁড়াবে। অথচ এতকাল এই পশ্চিমা গোষ্ঠীই মানবাধিকার নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে এসেছে। কত রকমের বুলি তারা আওড়িয়ে এসেছে। পশ্চিমাদের ইনসাফ ও ন্যায়বিচার শুধু তখনই দেখা যায়, যখন তাদের স্বার্থের অনুকূল হয়।
আমরা আবার পেছনের মূল আলোচনায় ফিরে যাই।
আমেরিকা ও ইসরাঈল কর্তৃক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন:
প্রথম সমস্যাটি হলো- আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ান প্রতিনিধি আমেরিকান পাঠ্যের উপর মন্তব্য করে বলেছেন:
“খসড়া পাঠ্যের আরেকটি বড় আইনি সমস্যা হল আত্মরক্ষার অধিকারের উল্লেখ। তারা (ইসরাঈল) কেবল একটি জিনিসই করতে পারে; আর তা হলো ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কথিত অধিকার সম্পর্কে অবিরত ঘোষণা দেওয়া। যদিও একটি দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের সেই ক্ষমতা নেই। কারণ ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত উপদেষ্টা মতামতের মাধ্যমে ইসরায়েলের সেই ক্ষমতা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফিলিস্তিনি ভূমির বিষয়ে ইসরাঈল ইতিমধ্যেই দখলদার আমরা সবাই জানি। আমরা এমন কোনো দলীলকে সমর্থন করার কোন কারণ দেখি না, যা শুধু একটা জিনিসের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে; আর তা হল: নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে শুধু এক সদস্যের ভূ-রাজনৈতিক সকল স্বার্থ রক্ষা। এই সদস্য ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধ করতে অক্ষম। তারা তো কেবল সহিংসতার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দিতে জানে।”
একইভাবে চীনের রাষ্ট্রদূত মার্কিন পাঠ্যের অসারতা এবং আমেরিকানদের মানসিক সংকীর্ণতা সম্পর্কে আরো অধিক সুস্পষ্টভাবে নিজ বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
আন্তর্জাতিক আদালতের অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘের আইনের পাঠ্য অনুসারে ৭ই অক্টোবরে মুজাহিদীনের অপারেশন হল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব থেকে তাদের ভূমি মুক্ত করার লক্ষ্যে তাদের ন্যায্য অধিকার। আর তাই সেই অপারেশনের প্রতিক্রিয়ায় দখলদারদের কার্যক্রমকে আত্মরক্ষা বলা যায় না; বরং এই প্রতিক্রিয়া নিপীড়িতদের উপর আরো অধিক নিপীড়ন, হামলা হিসেবে বিবেচিত।
এ বিষয়টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর এ দায়িত্ব আরোপ করে যে, তারা যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেবে, ইহুদীবাদীদের বিচারের মুখোমুখি করবে এবং তাদের শাস্তি বিধানে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে— যেমন করে রাশিয়াকে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার কথা বলছে। তাহলেই তাদের ন্যায়বিচার ও ইনসাফের পরিচয় পাওয়া যাবে! কিন্তু তাদের ন্যায়বিচার শুধু তাদের নিজেদের জন্য এবং তাদের সমর্থকদের জন্য। যেমন ইউক্রেনের ক্ষেত্রে তাদের ন্যায়বিচার, যার নেতৃত্বে আছেন ইহুদী জেলেনস্কি। সে কারণেই বাইডেন সেখানে তার অর্থ বিনিয়োগ করেন!
ইসরাঈল কর্তৃক ধর্মীয় আইন লঙ্ঘন:
দ্বিতীয় সমস্যাটি হলো- ধর্মীয়: ইহুদীদের মতবাদ, যা নিয়ে জায়নবাদীরা কান্নাকাটি করে অর্থাৎ একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা— প্রভুর আদেশ ইহুদীদের জন্য এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয় না। কারণ প্রভু আদেশ দিয়েছিলেন যে, তারা পৃথিবীর নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টা ইহুদী ধর্মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, তাহলে কোন ধর্ম নিয়ে তারা চিৎকার চেঁচামেচি করছে?
আসলে পাঠ্যের বিকৃতি এবং প্রতারণার মাধ্যমে মূল অর্থের বিপরীত অর্থ গ্রহণ এমন এক শিল্প, যা ইহুদীরা প্রাচীনকালে আবিষ্কার করেছিল। ইতিহাস জুড়ে এটা তারা চর্চা ও আয়ত্ত করেছে। তাদের থেকে বিদ্বেষী পৌত্তলিক পশ্চিমারা এ বিষয়টা শিখেছে এবং নিজেদের মাঝে এর চর্চা অব্যাহত রেখেছে।
মুনাফিকদের দৌঁড়ঝাঁপ:
ইহুদীদের অস্ত্রের ভয়ে, তাদের হীন আত্মার নীচতার কারণে, ভিন্নমতের প্রতি ইহুদীদের অসহনশীলতা ও সহিংস মনোভাব এবং ইহুদীদের কাছে থাকা স্বর্ণের লোভে অনেকেই তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমন ব্যক্তিদের মাঝে আমরা দেখতে পাই আলবেনিয়ার প্রতিনিধি সহ আরো বেশ কিছু ব্যক্তিকে তাদের দিকে ছুটে আসতে। যারা ফিলিস্তিনের মুজাহিদীনকে একটি জনপ্রিয় স্বাধীনতাকামী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে দেখে না; ফিলিস্তিনের মুজাহিদীনকে —তাদের ভাষায়— ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবেও তারা বিবেচনা করে না। ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের নিজেদের দেশ স্বাধীন করার অধিকার রয়েছে বলেও তারা মনে করে না।
নিকৃষ্টতা ও তুচ্ছতা হিসেবে এতোটুকুই যথেষ্ট। কারণ আমরা (মুসলিমরা) তোমাদেরকে বিশ্বাস করি না। তোমাদের ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলিতেও বিশ্বাস করি না, যেগুলি শুধু ক্ষমতাবানদের জন্য তৈরি। তোমরা ভালো করেই জানো যে, আমরা তোমাদেরকে এমন একটি শাসক শ্রেণি হিসেবে স্বীকৃতি দিই না, যারা বিশ্বকে ন্যায়ের সঙ্গে শাসন করে। তোমাদের আইনি অসার বিষয়গুলোর প্রতিও আমাদের কোনো আস্থা নেই। কারণ এই আইনগুলো দিয়ে তোমরা অন্যদের অধিকার বিনষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করো। এই আইন ব্যবহার করে তোমরা অন্যদের সম্পদ লুণ্ঠন করো।
এসব কিছুর পর তোমরা নিজেদের এই জুলুম-অত্যাচারকে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ হিসেবে প্রচার করো। কারণ তোমাদের বিশ্বাস শুধু বাস্তব শক্তির প্রতি, যা তোমাদের হাতে রয়েছে। তোমরা কসাই, খুনি ও লুটেরা। তোমরা অন্য কোনো ভাষা বোঝো না। নিপীড়িতদের প্রয়োজনের সময় বা তাদের অনুভূতিকে প্রশমিত করার জন্য বা তাদের নিরপেক্ষ করার জন্য তোমাদের মিষ্টি কথা ছাড়া বেশি কিছু তোমাদের কাছে আশা করা যায় না।
আমাদের ব্যাপারে বলবো: আমরা সত্যের শক্তিতে বিশ্বাস করি, যা আমাদের সাথে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কল্যাণ একদিন এই পৃথিবীতে রাজত্ব করবে- অকল্যাণ অত্যাচারীর যুগ যতই দীর্ঘ হোক না কেন। তোমাদের শাস্তি অবশ্যই তোমরা পেয়ে যাবে; দুনিয়াতে এবং আখিরাতে।
আমরা (মুসলিমরা) এমন এক জাতি, যারা তোমাদের সাথে কঠোর আচরণ করি না। তবে যতটুকু করি তা এই জন্যই, তা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত রাখে। তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং তোমাদের অন্তরকে ঈমানের জন্য উন্মুক্ত করে। কারণ আমরা এমন এক জাতি, যাদের মনে এই প্রত্যাশা রয়েছে যে, তোমরা আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে আমাদের দীনি ভাই হিসেবে আখিরাতে মুক্তি লাভ করবে। উম্মাহ হিসেবে এটা আমাদের বিশ্বাসের আভিজাত্য, পরিশীলিত দৃষ্টিভঙ্গি, কল্যাণমুখী লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং হৃদয়ের সততা।
তোমাদের মধ্যে যাদের অন্তর কঠোর হয়ে গিয়েছে; যারা সীমা অতিক্রম করেছে, প্রতিশ্রুতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, নিপীড়িতদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, নিরপরাধদের রক্তের জন্য যারা আগ্রহী ও পিপাসার্ত, তাদের ঘাড়ে আমাদের তলোয়ার ছাড়া আর কিছুই নেই।
মুসলিম উম্মাহ হিসেবে আমরা সবকিছু এড়িয়ে ক্ষমা করে দিতেও জানি। কিন্তু একথাও মনে রাখতে হবে, আমরা এমন এক উম্মাহ, যারা খুব ভালোভাবে প্রতিশোধ নিতে জানি। আমাদের ক্ষমাশীল অনুগ্রহশীল রব আমাদেরকে এই প্রতিশোধ নেয়া শিখিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পরাক্রমশালী; তিনিও প্রতিশোধ গ্রহণকারী। ইতিহাস সাক্ষী! এই উম্মাহর শত্রুদের কাছ থেকে কেমন করে প্রতিশোধ নেয়া হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
فَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِ رُسُلَهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ
অর্থ: “অতএব আল্লাহর প্রতি ধারণা করো না যে, তিনি রাসূলগণের সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।” [সূরা ইবরাহীম 14: ৪৭]
পঞ্চম মূল্যায়ন: আইনি ও ধর্মীয় অবস্থান:
এ মূল্যায়নটি আমাদের কাছে স্পষ্ট করে দেয়, জায়নিস্ট-ক্রুসেডাররা কত বেশি প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে— এমনকি তাদের নিজেদের তৈরি আইন-কানুনের ক্ষেত্রেও। এই অবস্থান আমাদের কাছে আরো স্পষ্ট করে দেয়, জায়নবাদীরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আদেশ-নিষেধের বিরুদ্ধে গিয়ে কত দূর অবস্থান নিয়েছে।
বস্তুত নিজেদের রীতি-নীতি, আইন-কানুন ও ধর্ম যখন এই ইহুদীবাদীদের এবং পশ্চিমা বিশ্বের—প্রোটেস্ট্যান্ট হোক অথবা ক্যাথলিক হোক- উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমলে না নেয়, তখন তারা কতটা বক্র পথ অবলম্বন করতে পারে, সে বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। আর কেনই বা তারা বাঁকা পথ ধরবে না? তারা তো এর চাইতেও বড় বিষয়ের প্রতি কুফরী করেছে এবং বক্রতা অবলম্বন করেছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
ثُمَّ أَنتُمْ هَٰؤُلَاءِ تَقْتُلُونَ أَنفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقًا مِّنكُم مِّن دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِم بِالْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِن يَأْتُوكُمْ أُسَارَىٰ تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ ۚ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
অর্থ: “অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছো এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করছো। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছো। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছো। অথচ তাদের বহিষ্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দুগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনোই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।” [সূরা আল বাকারা ০২: ৮৫]
আমেরিকার দ্বিমুখী আচরণ বা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড:
এটাকে কূটনৈতিকভাবে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান মুজাহিদীনের জন্য হোয়াইট হাউস খুলে দিয়েছিল- যখন আফগানরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিলেন। তখন আমেরিকার কথা ছিল, এই আফগানরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শুরুতে ঐ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই আফগান মুজাহিদীনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে বর্ণনা করতে আরম্ভ করে। অথচ তখনও আফগানরা সেই একই উদ্দেশ্যে লড়াই করে যাচ্ছিলেন- যে উদ্দেশ্যে তারা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল: নিজেদের ভূমিকে মুক্ত করা এবং ইসলামী ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
আমেরিকার এমন দ্বিমুখী আচরণের অর্থ হল: যেকোনো জনপ্রিয় মুক্তি সংগঠন নিজ ভূমিকে ঔপনিবেশিকদের হাত থেকে মুক্ত করতে এবং নিজেদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য লড়াই করে, তা পশ্চিমাদের স্বার্থের অনুকূল হলে তারা স্বাধীনতাকামী ও মুক্তিবাহিনী; পক্ষান্তরে পশ্চিমাদের স্বার্থের বিপরীত হলে তারা সন্ত্রাসী বা কট্টরপন্থি।
এক্ষেত্রে কোনো ইস্যু নিরপেক্ষভাবে বাস্তবতা ও সত্যতার ভিত্তিতে বিচার করা হয় না। ফিলিস্তিনে জায়নবাদীদের টিকে থাকা পশ্চিমা স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। শুধু তাই নয়; বরং পশ্চিমারাই এই বিষবৃক্ষ রোপণ করেছে। এমনকি যদি ইতিপূর্বে তারা এ কাজ নাও করতো, তাহলে ভবিষ্যতে অবশ্যই এ কাজ তাদের করতেই হতো- এমন অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেছে আমেরিকান ভীমরতিগ্রস্ত বাইডেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা ইহুদীবাদীদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। যদিও পশ্চিমারা ভালো করেই জানে এই ইহুদীবাদীরা নিপীড়ক, নৃশংস, মানবাধিকারের সমস্ত সীমা অতিক্রমকারী, তবুও তারা তাদের পাশেই দাঁড়াবে। অথচ এতকাল এই পশ্চিমা গোষ্ঠীই মানবাধিকার নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে এসেছে। কত রকমের বুলি তারা আওড়িয়ে এসেছে। পশ্চিমাদের ইনসাফ ও ন্যায়বিচার শুধু তখনই দেখা যায়, যখন তাদের স্বার্থের অনুকূল হয়।
আমরা আবার পেছনের মূল আলোচনায় ফিরে যাই।
আমেরিকা ও ইসরাঈল কর্তৃক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন:
প্রথম সমস্যাটি হলো- আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ান প্রতিনিধি আমেরিকান পাঠ্যের উপর মন্তব্য করে বলেছেন:
“খসড়া পাঠ্যের আরেকটি বড় আইনি সমস্যা হল আত্মরক্ষার অধিকারের উল্লেখ। তারা (ইসরাঈল) কেবল একটি জিনিসই করতে পারে; আর তা হলো ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কথিত অধিকার সম্পর্কে অবিরত ঘোষণা দেওয়া। যদিও একটি দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের সেই ক্ষমতা নেই। কারণ ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত উপদেষ্টা মতামতের মাধ্যমে ইসরায়েলের সেই ক্ষমতা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফিলিস্তিনি ভূমির বিষয়ে ইসরাঈল ইতিমধ্যেই দখলদার আমরা সবাই জানি। আমরা এমন কোনো দলীলকে সমর্থন করার কোন কারণ দেখি না, যা শুধু একটা জিনিসের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে; আর তা হল: নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে শুধু এক সদস্যের ভূ-রাজনৈতিক সকল স্বার্থ রক্ষা। এই সদস্য ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধ করতে অক্ষম। তারা তো কেবল সহিংসতার জন্য গ্রিন সিগন্যাল দিতে জানে।”
একইভাবে চীনের রাষ্ট্রদূত মার্কিন পাঠ্যের অসারতা এবং আমেরিকানদের মানসিক সংকীর্ণতা সম্পর্কে আরো অধিক সুস্পষ্টভাবে নিজ বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
আন্তর্জাতিক আদালতের অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘের আইনের পাঠ্য অনুসারে ৭ই অক্টোবরে মুজাহিদীনের অপারেশন হল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব থেকে তাদের ভূমি মুক্ত করার লক্ষ্যে তাদের ন্যায্য অধিকার। আর তাই সেই অপারেশনের প্রতিক্রিয়ায় দখলদারদের কার্যক্রমকে আত্মরক্ষা বলা যায় না; বরং এই প্রতিক্রিয়া নিপীড়িতদের উপর আরো অধিক নিপীড়ন, হামলা হিসেবে বিবেচিত।
এ বিষয়টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর এ দায়িত্ব আরোপ করে যে, তারা যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেবে, ইহুদীবাদীদের বিচারের মুখোমুখি করবে এবং তাদের শাস্তি বিধানে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে— যেমন করে রাশিয়াকে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার কথা বলছে। তাহলেই তাদের ন্যায়বিচার ও ইনসাফের পরিচয় পাওয়া যাবে! কিন্তু তাদের ন্যায়বিচার শুধু তাদের নিজেদের জন্য এবং তাদের সমর্থকদের জন্য। যেমন ইউক্রেনের ক্ষেত্রে তাদের ন্যায়বিচার, যার নেতৃত্বে আছেন ইহুদী জেলেনস্কি। সে কারণেই বাইডেন সেখানে তার অর্থ বিনিয়োগ করেন!
ইসরাঈল কর্তৃক ধর্মীয় আইন লঙ্ঘন:
দ্বিতীয় সমস্যাটি হলো- ধর্মীয়: ইহুদীদের মতবাদ, যা নিয়ে জায়নবাদীরা কান্নাকাটি করে অর্থাৎ একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা— প্রভুর আদেশ ইহুদীদের জন্য এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয় না। কারণ প্রভু আদেশ দিয়েছিলেন যে, তারা পৃথিবীর নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টা ইহুদী ধর্মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, তাহলে কোন ধর্ম নিয়ে তারা চিৎকার চেঁচামেচি করছে?
আসলে পাঠ্যের বিকৃতি এবং প্রতারণার মাধ্যমে মূল অর্থের বিপরীত অর্থ গ্রহণ এমন এক শিল্প, যা ইহুদীরা প্রাচীনকালে আবিষ্কার করেছিল। ইতিহাস জুড়ে এটা তারা চর্চা ও আয়ত্ত করেছে। তাদের থেকে বিদ্বেষী পৌত্তলিক পশ্চিমারা এ বিষয়টা শিখেছে এবং নিজেদের মাঝে এর চর্চা অব্যাহত রেখেছে।
মুনাফিকদের দৌঁড়ঝাঁপ:
ইহুদীদের অস্ত্রের ভয়ে, তাদের হীন আত্মার নীচতার কারণে, ভিন্নমতের প্রতি ইহুদীদের অসহনশীলতা ও সহিংস মনোভাব এবং ইহুদীদের কাছে থাকা স্বর্ণের লোভে অনেকেই তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমন ব্যক্তিদের মাঝে আমরা দেখতে পাই আলবেনিয়ার প্রতিনিধি সহ আরো বেশ কিছু ব্যক্তিকে তাদের দিকে ছুটে আসতে। যারা ফিলিস্তিনের মুজাহিদীনকে একটি জনপ্রিয় স্বাধীনতাকামী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে দেখে না; ফিলিস্তিনের মুজাহিদীনকে —তাদের ভাষায়— ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবেও তারা বিবেচনা করে না। ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের নিজেদের দেশ স্বাধীন করার অধিকার রয়েছে বলেও তারা মনে করে না।
নিকৃষ্টতা ও তুচ্ছতা হিসেবে এতোটুকুই যথেষ্ট। কারণ আমরা (মুসলিমরা) তোমাদেরকে বিশ্বাস করি না। তোমাদের ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলিতেও বিশ্বাস করি না, যেগুলি শুধু ক্ষমতাবানদের জন্য তৈরি। তোমরা ভালো করেই জানো যে, আমরা তোমাদেরকে এমন একটি শাসক শ্রেণি হিসেবে স্বীকৃতি দিই না, যারা বিশ্বকে ন্যায়ের সঙ্গে শাসন করে। তোমাদের আইনি অসার বিষয়গুলোর প্রতিও আমাদের কোনো আস্থা নেই। কারণ এই আইনগুলো দিয়ে তোমরা অন্যদের অধিকার বিনষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করো। এই আইন ব্যবহার করে তোমরা অন্যদের সম্পদ লুণ্ঠন করো।
এসব কিছুর পর তোমরা নিজেদের এই জুলুম-অত্যাচারকে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ হিসেবে প্রচার করো। কারণ তোমাদের বিশ্বাস শুধু বাস্তব শক্তির প্রতি, যা তোমাদের হাতে রয়েছে। তোমরা কসাই, খুনি ও লুটেরা। তোমরা অন্য কোনো ভাষা বোঝো না। নিপীড়িতদের প্রয়োজনের সময় বা তাদের অনুভূতিকে প্রশমিত করার জন্য বা তাদের নিরপেক্ষ করার জন্য তোমাদের মিষ্টি কথা ছাড়া বেশি কিছু তোমাদের কাছে আশা করা যায় না।
আমাদের ব্যাপারে বলবো: আমরা সত্যের শক্তিতে বিশ্বাস করি, যা আমাদের সাথে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কল্যাণ একদিন এই পৃথিবীতে রাজত্ব করবে- অকল্যাণ অত্যাচারীর যুগ যতই দীর্ঘ হোক না কেন। তোমাদের শাস্তি অবশ্যই তোমরা পেয়ে যাবে; দুনিয়াতে এবং আখিরাতে।
আমরা (মুসলিমরা) এমন এক জাতি, যারা তোমাদের সাথে কঠোর আচরণ করি না। তবে যতটুকু করি তা এই জন্যই, তা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত রাখে। তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং তোমাদের অন্তরকে ঈমানের জন্য উন্মুক্ত করে। কারণ আমরা এমন এক জাতি, যাদের মনে এই প্রত্যাশা রয়েছে যে, তোমরা আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে আমাদের দীনি ভাই হিসেবে আখিরাতে মুক্তি লাভ করবে। উম্মাহ হিসেবে এটা আমাদের বিশ্বাসের আভিজাত্য, পরিশীলিত দৃষ্টিভঙ্গি, কল্যাণমুখী লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং হৃদয়ের সততা।
তোমাদের মধ্যে যাদের অন্তর কঠোর হয়ে গিয়েছে; যারা সীমা অতিক্রম করেছে, প্রতিশ্রুতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, নিপীড়িতদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, নিরপরাধদের রক্তের জন্য যারা আগ্রহী ও পিপাসার্ত, তাদের ঘাড়ে আমাদের তলোয়ার ছাড়া আর কিছুই নেই।
মুসলিম উম্মাহ হিসেবে আমরা সবকিছু এড়িয়ে ক্ষমা করে দিতেও জানি। কিন্তু একথাও মনে রাখতে হবে, আমরা এমন এক উম্মাহ, যারা খুব ভালোভাবে প্রতিশোধ নিতে জানি। আমাদের ক্ষমাশীল অনুগ্রহশীল রব আমাদেরকে এই প্রতিশোধ নেয়া শিখিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পরাক্রমশালী; তিনিও প্রতিশোধ গ্রহণকারী। ইতিহাস সাক্ষী! এই উম্মাহর শত্রুদের কাছ থেকে কেমন করে প্রতিশোধ নেয়া হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
فَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِ رُسُلَهُ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ
অর্থ: “অতএব আল্লাহর প্রতি ধারণা করো না যে, তিনি রাসূলগণের সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।” [সূরা ইবরাহীম 14: ৪৭]
***
ষষ্ঠ মূল্যায়ন: বাইডেনের সফর এবং তার সীমাহীন সমর্থন:
আমি আগে লিখেছিলাম যে, বাইডেন আমেরিকান জনগণের অর্থের কোষাগার জায়নিস্টদের জন্য খুলে দিয়েছে। গাজার মুসলিম জনগণের উপর বোমা ফেলার ক্ষেত্রে ইহুদীবাদীরা যা ব্যয় করেছে, তার চেয়েও বেশি অর্থ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইহুদীবাদীদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। সে দুটি বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে। এর পরপরই আবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে ইহুদীদের কাছে পাঠিয়েছে। সে ইউরোপে তার অনুসারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছে, ইহুদীদের সমর্থনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
আমেরিকার বিশেষ ইউনিটের দুই হাজার যোদ্ধা, যারা আফগানিস্তান থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে এসেছিল, তাদেরকে ইহুদীদের সাহায্যের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। মুসলিমদেরকে হত্যা করার জন্য, ইহুদীদেরকে রাজনৈতিক সাপোর্ট ও ব্যাকআপ দিয়েছে। বাইডেন তার ভেটো প্রদানের ক্ষমতা ব্যবহার করে জায়নবাদীদের গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়েছে। তাই আমাদের বুঝতে হবে, আমেরিকা প্রথম মুহূর্ত থেকেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধে পুরোপুরি অংশগ্রহণ বলতে যা বোঝায়, পুরোটাই করে দেখিয়েছে আমেরিকা। এরপরেও স্বয়ং প্রেসিডেন্টের কেন আসতে হবে ইহুদীদের কাছে?
এর কিছু কারণ নিচে বলা হচ্ছে:
প্রথমত, তিনি সিয়োনের সন্তানদের (জায়নবাদীদের) বাছুরের প্রতি তার আনুগত্য নিশ্চিত করতে এসেছে। সে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, এ কারণেই তার আসতেই হত। এছাড়াও তার একটা স্বপ্ন রয়েছে, যা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা হিসেবেও সে ছুটে এসেছে। তার স্বপ্ন ছিল রক্তে, মাংসে আকীদা ও মতবাদে সে একজন ইহুদী হবে। যেহেতু স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তাই তার পরিবর্তে সে বিভ্রমের ছায়ায় জায়নবাদী হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য এসেছে।
দ্বিতীয়ত, - কী লজ্জাজনক! – সে নিজে সরাসরি এ কথায় জোর দিতে চেয়েছে, মুসলিমদের মাঝে আরও বেশি রক্তপাত ঘটালেও ‘নেতানিয়াহু’র কোনো ক্ষতি হবে না। কেউ তাকে কিছু বলতে পারবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিতে চেয়েছে এ বিষয়ের উপর যে, ফিলিস্তিনি মুজাহিদীনের নামে যারা সন্ত্রাসবাদ (!) চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার ইহুদীবাদীদের রয়েছে।
হে পশ্চিমারা! তোমাদেরকে আমরা ঘৃণা করি, এটা শুনলে কেন তোমাদের চেহারার রং বদলে যায়?
হে মার্কিন বুদ্ধিজীবীরা! তোমাদের দেশের অপরাধের তালিকা এত দীর্ঘ হওয়া সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ মঙ্গলবার দিনের ঘটনায় কেন তোমরা আশ্চর্যবোধ কর? ধ্বংস তোমাদের জন্য!
তৃতীয়ত, হোয়াইট হাউসে থাকার প্রচারাভিযানে নিজের প্রতি ইহুদীদের সমর্থন নিশ্চিত করা। এ সফরের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন -ট্রাম্পের সাথে প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, ইহুদীরা মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ইহুদী স্বার্থের প্রতি অনুগত দাস আর কাউকে খুঁজে পাবে না। বাইডেন ইহুদীদের এমন অনুগত দাস, যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে ইহুদীদের স্বার্থে কাজ করতে পারে। সম্ভবত বাইডেনের কিছু উপদেষ্টা তার বিবেককে জাগ্রত করেছে এবং তাকে বলেছে: আপনার গাল মুছুন, কেননা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের রক্ত গালের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
হে আমেরিকান জনগণ!
ফিলিস্তিন ও নিপীড়িতদের পক্ষে যেকোনো জায়গায় তোমাদের বিক্ষোভ আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা তোমাদেরকে রাজপথে এবং হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভরত অবস্থায় দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমরা তোমাদের এই অবস্থান থেকে কিছুই পাইনি, কিংবা নিজেদের এই অবস্থান দিয়ে তোমরাও কিছু হাসিল করতে পারনি।
এখন ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তোমাদের যা করা উচিত, তাই তোমরা কর! ক্ষমতাসীনেরা ডেমোক্র্যাট ব্লকের হোক কিংবা রিপাবলিকান ব্লকের, তাদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। যা করার তোমরা নিজেরাই কর। আরো একবার আমেরিকার মাটিতে মুজাহিদীনের হাত পৌঁছে যাবার আগেই তোমরা কিছু কর!
মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায় - নিরুপায় অসহায় নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও নিপীড়িতদের রক্ত মাংসের উপর বসবাসকারী আবর্জনা-খেকো প্রাণী হল মার্কিন শাসক এবং তাদের সমর্থকেরা। এখন তাদেরকে বর্তমান রূপ ও চরিত্র থেকে বের করার প্রয়াস হিসেবে এবং তাদেরকে সুসভ্য বিশুদ্ধ মানুষে রূপান্তরিত করার জন্য আমেরিকায় একটি নতুন গৃহযুদ্ধের প্রয়োজন, যেন মানুষ হিসেবে তাদের পাশে থেকে বসবাস করা যায়। তাহলে তারা সুস্থ মস্তিষ্ক ও বিশুদ্ধ বিবেকবোধের ডাকে সাড়া দেবে এবং ইসলামী দাওয়াতের সৌন্দর্য ও মাধুর্যতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে। এছাড়া কিয়ামত পর্যন্ত লড়াই বন্ধ হবে না।
হে আমেরিকান অধিবাসীরা!
যদি তোমরা গৃহযুদ্ধের পথ প্রস্তুত না কর, তাহলে এভাবেই চলতে থাকবে। আর এক সময় ইহুদীদের বিলুপ্তি তোমরা দেখতে পাবে। অচিরেই হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী পাথর ও বৃক্ষের ডাকে সাড়া দিয়ে মুসলিমরা ইহুদীদেরকে হত্যা করবে। কারণ ইহুদীরা চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে, এমনকি জড়বস্তুও যেন তাদের অনাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চিৎকার করে উঠেছে।
ঋষি সুনাক ও অন্যদের প্রতিক্রিয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই!
আমি ঋষি সুনাকের কাজ এবং কথায় অবাক হবো না; যদি এটা সত্য হয় যে, সে এমন বিশ্বাসঘাতকদের পৌত্র, যারা ব্রিটিশদের সেবা ও সমর্থন করতে গিয়ে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ভারতবর্ষকে ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।
আমি জাতিসংঘে আমেরিকান প্রতিনিধির নিষ্ঠুরতায় বিস্মিত হই না। কারণ আমি মজলুমদের নেতা ম্যালকম অ্যাক্সের (আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি রহম করুন!) বলা খুব পুরানো একটা কথা শুনেছি। তিনি গোলাম ও দাস ব্যবসায়ীর সহকারী দাস সম্পর্কে বলেছেন, “সে তো খোদ দাস ব্যবসায়ীর চেয়ে তার শ্রেণির লোকদের উপর আরো বেশি জুলুমকারী এবং আরো বেশি কঠোরতা আরোপকারী।” আমরাও ধরে নিচ্ছি, জাতিসংঘে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ওরকমই নিপীড়ক দাসদের একজন পৌত্রী।
আমি ওই ব্যক্তির ব্যাপারেও অবাক হবো না, যার দেশে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা আঘাত হেনেছিল। পারমাণবিক আঘাতপ্রাপ্ত সেই জাপানকেও দমন করা হয়েছে, যেমন করে জার্মানিকে দমন করা হয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলবেনিয়ার রাষ্ট্রদূতের তাড়াহুড়ার ব্যাপারে (তাড়াহুড়ো করে ছুটে গিয়ে ইসরাঈলিদের পক্ষাবলম্বন)।
হে আত্মমর্যাদাশীল মুসলিম পাইলটরা!
আমি সীমাহীন আশ্চর্যবোধ করি মুসলিম পাইলটদের বিষয়ে, যারা গাজায় তাদের ভাইদের বিরুদ্ধে আমেরিকান-ইহুদী সংহতি নীরব দর্শকের মত দেখে যান। তারা ধ্বংসযজ্ঞ, তাণ্ডব, নারী শিশুদের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, রক্তপাত ও প্রাণ কেড়ে নেওয়ার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন, কিন্তু তাদের কেউই নিজের দীন ও উম্মাহর ব্যাপারে আবেগ অনুভব করেন না। অথচ এই ভাবাবেগ তাদের মাঝে থাকলে তারা বিমানে চড়ে শাহাদাত-মিশনে যাত্রা শুরু করে দিতেন। ইহুদীদের সামরিক নীতিনির্ধারক মহলের উপর হামলে পড়তেন! তাদেরকে পরাজিত করার পর তারা প্যারাসুট নিয়ে গর্বিত গাজায় সহযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তেন।
কোথায় জর্ডানের সাহসী পুরুষেরা, কোথায় মিশরের ঈগলরা? কোথায় জাযীরাতের মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামরিক ঘাঁটির আত্মমর্যাদাবোধ-সম্পন্ন ব্যক্তিরা?
তানযীম আল-কায়েদার পাইলট (আশ-শিহরী)-কে আল্লাহ রহম করুন, যিনি আমেরিকার বক্ষের অভ্যন্তরে এবং সামরিক ঘাঁটির ভেতরে নিজের সাধ্যমত আল্লাহ, দীন ও উম্মাহর শত্রুদেরকে ধ্বংস করেছিলেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহ সর্ব মহান। আমরা (মুসলিমরা) যখন লড়াইয়ের সংকল্প করি, তখন কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। (ইনশাআল্লাহ)
আমি আগে লিখেছিলাম যে, বাইডেন আমেরিকান জনগণের অর্থের কোষাগার জায়নিস্টদের জন্য খুলে দিয়েছে। গাজার মুসলিম জনগণের উপর বোমা ফেলার ক্ষেত্রে ইহুদীবাদীরা যা ব্যয় করেছে, তার চেয়েও বেশি অর্থ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইহুদীবাদীদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। সে দুটি বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে। এর পরপরই আবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে ইহুদীদের কাছে পাঠিয়েছে। সে ইউরোপে তার অনুসারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছে, ইহুদীদের সমর্থনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
আমেরিকার বিশেষ ইউনিটের দুই হাজার যোদ্ধা, যারা আফগানিস্তান থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে এসেছিল, তাদেরকে ইহুদীদের সাহায্যের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। মুসলিমদেরকে হত্যা করার জন্য, ইহুদীদেরকে রাজনৈতিক সাপোর্ট ও ব্যাকআপ দিয়েছে। বাইডেন তার ভেটো প্রদানের ক্ষমতা ব্যবহার করে জায়নবাদীদের গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়েছে। তাই আমাদের বুঝতে হবে, আমেরিকা প্রথম মুহূর্ত থেকেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধে পুরোপুরি অংশগ্রহণ বলতে যা বোঝায়, পুরোটাই করে দেখিয়েছে আমেরিকা। এরপরেও স্বয়ং প্রেসিডেন্টের কেন আসতে হবে ইহুদীদের কাছে?
এর কিছু কারণ নিচে বলা হচ্ছে:
প্রথমত, তিনি সিয়োনের সন্তানদের (জায়নবাদীদের) বাছুরের প্রতি তার আনুগত্য নিশ্চিত করতে এসেছে। সে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, এ কারণেই তার আসতেই হত। এছাড়াও তার একটা স্বপ্ন রয়েছে, যা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা হিসেবেও সে ছুটে এসেছে। তার স্বপ্ন ছিল রক্তে, মাংসে আকীদা ও মতবাদে সে একজন ইহুদী হবে। যেহেতু স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তাই তার পরিবর্তে সে বিভ্রমের ছায়ায় জায়নবাদী হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য এসেছে।
দ্বিতীয়ত, - কী লজ্জাজনক! – সে নিজে সরাসরি এ কথায় জোর দিতে চেয়েছে, মুসলিমদের মাঝে আরও বেশি রক্তপাত ঘটালেও ‘নেতানিয়াহু’র কোনো ক্ষতি হবে না। কেউ তাকে কিছু বলতে পারবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিতে চেয়েছে এ বিষয়ের উপর যে, ফিলিস্তিনি মুজাহিদীনের নামে যারা সন্ত্রাসবাদ (!) চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার ইহুদীবাদীদের রয়েছে।
হে পশ্চিমারা! তোমাদেরকে আমরা ঘৃণা করি, এটা শুনলে কেন তোমাদের চেহারার রং বদলে যায়?
হে মার্কিন বুদ্ধিজীবীরা! তোমাদের দেশের অপরাধের তালিকা এত দীর্ঘ হওয়া সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ মঙ্গলবার দিনের ঘটনায় কেন তোমরা আশ্চর্যবোধ কর? ধ্বংস তোমাদের জন্য!
তৃতীয়ত, হোয়াইট হাউসে থাকার প্রচারাভিযানে নিজের প্রতি ইহুদীদের সমর্থন নিশ্চিত করা। এ সফরের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন -ট্রাম্পের সাথে প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, ইহুদীরা মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ইহুদী স্বার্থের প্রতি অনুগত দাস আর কাউকে খুঁজে পাবে না। বাইডেন ইহুদীদের এমন অনুগত দাস, যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে ইহুদীদের স্বার্থে কাজ করতে পারে। সম্ভবত বাইডেনের কিছু উপদেষ্টা তার বিবেককে জাগ্রত করেছে এবং তাকে বলেছে: আপনার গাল মুছুন, কেননা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের রক্ত গালের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
হে আমেরিকান জনগণ!
ফিলিস্তিন ও নিপীড়িতদের পক্ষে যেকোনো জায়গায় তোমাদের বিক্ষোভ আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা তোমাদেরকে রাজপথে এবং হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভরত অবস্থায় দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমরা তোমাদের এই অবস্থান থেকে কিছুই পাইনি, কিংবা নিজেদের এই অবস্থান দিয়ে তোমরাও কিছু হাসিল করতে পারনি।
এখন ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তোমাদের যা করা উচিত, তাই তোমরা কর! ক্ষমতাসীনেরা ডেমোক্র্যাট ব্লকের হোক কিংবা রিপাবলিকান ব্লকের, তাদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। যা করার তোমরা নিজেরাই কর। আরো একবার আমেরিকার মাটিতে মুজাহিদীনের হাত পৌঁছে যাবার আগেই তোমরা কিছু কর!
মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায় - নিরুপায় অসহায় নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও নিপীড়িতদের রক্ত মাংসের উপর বসবাসকারী আবর্জনা-খেকো প্রাণী হল মার্কিন শাসক এবং তাদের সমর্থকেরা। এখন তাদেরকে বর্তমান রূপ ও চরিত্র থেকে বের করার প্রয়াস হিসেবে এবং তাদেরকে সুসভ্য বিশুদ্ধ মানুষে রূপান্তরিত করার জন্য আমেরিকায় একটি নতুন গৃহযুদ্ধের প্রয়োজন, যেন মানুষ হিসেবে তাদের পাশে থেকে বসবাস করা যায়। তাহলে তারা সুস্থ মস্তিষ্ক ও বিশুদ্ধ বিবেকবোধের ডাকে সাড়া দেবে এবং ইসলামী দাওয়াতের সৌন্দর্য ও মাধুর্যতা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে। এছাড়া কিয়ামত পর্যন্ত লড়াই বন্ধ হবে না।
হে আমেরিকান অধিবাসীরা!
যদি তোমরা গৃহযুদ্ধের পথ প্রস্তুত না কর, তাহলে এভাবেই চলতে থাকবে। আর এক সময় ইহুদীদের বিলুপ্তি তোমরা দেখতে পাবে। অচিরেই হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী পাথর ও বৃক্ষের ডাকে সাড়া দিয়ে মুসলিমরা ইহুদীদেরকে হত্যা করবে। কারণ ইহুদীরা চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে, এমনকি জড়বস্তুও যেন তাদের অনাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চিৎকার করে উঠেছে।
ঋষি সুনাক ও অন্যদের প্রতিক্রিয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই!
আমি ঋষি সুনাকের কাজ এবং কথায় অবাক হবো না; যদি এটা সত্য হয় যে, সে এমন বিশ্বাসঘাতকদের পৌত্র, যারা ব্রিটিশদের সেবা ও সমর্থন করতে গিয়ে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ভারতবর্ষকে ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।
আমি জাতিসংঘে আমেরিকান প্রতিনিধির নিষ্ঠুরতায় বিস্মিত হই না। কারণ আমি মজলুমদের নেতা ম্যালকম অ্যাক্সের (আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি রহম করুন!) বলা খুব পুরানো একটা কথা শুনেছি। তিনি গোলাম ও দাস ব্যবসায়ীর সহকারী দাস সম্পর্কে বলেছেন, “সে তো খোদ দাস ব্যবসায়ীর চেয়ে তার শ্রেণির লোকদের উপর আরো বেশি জুলুমকারী এবং আরো বেশি কঠোরতা আরোপকারী।” আমরাও ধরে নিচ্ছি, জাতিসংঘে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ওরকমই নিপীড়ক দাসদের একজন পৌত্রী।
আমি ওই ব্যক্তির ব্যাপারেও অবাক হবো না, যার দেশে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা আঘাত হেনেছিল। পারমাণবিক আঘাতপ্রাপ্ত সেই জাপানকেও দমন করা হয়েছে, যেমন করে জার্মানিকে দমন করা হয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলবেনিয়ার রাষ্ট্রদূতের তাড়াহুড়ার ব্যাপারে (তাড়াহুড়ো করে ছুটে গিয়ে ইসরাঈলিদের পক্ষাবলম্বন)।
হে আত্মমর্যাদাশীল মুসলিম পাইলটরা!
আমি সীমাহীন আশ্চর্যবোধ করি মুসলিম পাইলটদের বিষয়ে, যারা গাজায় তাদের ভাইদের বিরুদ্ধে আমেরিকান-ইহুদী সংহতি নীরব দর্শকের মত দেখে যান। তারা ধ্বংসযজ্ঞ, তাণ্ডব, নারী শিশুদের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, রক্তপাত ও প্রাণ কেড়ে নেওয়ার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন, কিন্তু তাদের কেউই নিজের দীন ও উম্মাহর ব্যাপারে আবেগ অনুভব করেন না। অথচ এই ভাবাবেগ তাদের মাঝে থাকলে তারা বিমানে চড়ে শাহাদাত-মিশনে যাত্রা শুরু করে দিতেন। ইহুদীদের সামরিক নীতিনির্ধারক মহলের উপর হামলে পড়তেন! তাদেরকে পরাজিত করার পর তারা প্যারাসুট নিয়ে গর্বিত গাজায় সহযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তেন।
কোথায় জর্ডানের সাহসী পুরুষেরা, কোথায় মিশরের ঈগলরা? কোথায় জাযীরাতের মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামরিক ঘাঁটির আত্মমর্যাদাবোধ-সম্পন্ন ব্যক্তিরা?
তানযীম আল-কায়েদার পাইলট (আশ-শিহরী)-কে আল্লাহ রহম করুন, যিনি আমেরিকার বক্ষের অভ্যন্তরে এবং সামরিক ঘাঁটির ভেতরে নিজের সাধ্যমত আল্লাহ, দীন ও উম্মাহর শত্রুদেরকে ধ্বংস করেছিলেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহ সর্ব মহান। আমরা (মুসলিমরা) যখন লড়াইয়ের সংকল্প করি, তখন কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। (ইনশাআল্লাহ)
***
সপ্তম মূল্যায়ন: জায়নবাদীদের টার্গেট ব্যাংক (সামরিক লক্ষ্যবস্তুর তালিকা) এবং মুজাহিদীনের টার্গেট ব্যাংকের বিষয়ে:
পূর্ববর্তী নিবন্ধে আমি উইকিপিডিয়া বিশ্বকোষ থেকে ২০০৮ - ২০০৯ সালের ঘটনাগুলি এবং সেখান থেকে ইহুদী লক্ষ্যবস্তুর তালিকা উদ্ধৃত করেছিলাম। সেগুলি আবার এখানে পুনরায় উল্লেখ করতে চাচ্ছি, যাতে পাঠক নিশ্চিত হতে পারেন যে, ইহুদীদের কোনো সামরিক লক্ষ্য নেই। তাদের টার্গেট হচ্ছে শুধু সাধারণ মুসলিম, নারী, শিশু, পুরুষদের হতাহত করা, তাদের সম্পদ ধ্বংস করা, তাদের পৃথিবী নষ্ট করা এবং তাদের বাস্তুচ্যুত করা, এই লক্ষ্যে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা।
ইহুদীদের ব্যর্থ যুদ্ধ-কৌশল বিভিন্ন পর্যায়ের উপর নির্ভরশীল:
প্রথমত, (কার্পেট বোমা হামলার পর্যায়) ইহুদী শত্রু তিনটি সমান্তরাল পথে কাজ করে: বোমাবর্ষণ, অবরোধ এবং তথ্য সংগ্রহ। এই পর্যায়ের শেষে একটা স্থল ইউনিট পাঠায় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য।
দ্বিতীয়ত, (স্থল যুদ্ধের পর্যায়):
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সীমিত পর্যায়ে স্থল হামলা শুরু করে তারা। স্থল বাহিনী কখনই তাদের তথ্য ও ইনফরমেশনের বাইরে অগ্রসর হয় না। কারণ তারা যদি এই কাজ করে, তবে পরবর্তীতে যা ঘটবে তাতে তাদের সেনাবাহিনী হাসির পাত্রে পরিণত হবে। এ কারণেই তারা ইনফরমেশনের বাইরে অগ্রসর হয় না।
যাই হোক, আমরা শত্রুপক্ষের সীমিত স্থল অভিযানের কথা অনুমান করতে পারি। অর্থাৎ তারা আক্রমণ পরিচালনার পর দ্রুত সরে আসবে; আক্রমণের ভূমিতে মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে না। এর পরের অবস্থা আমরা এমনটা অনুমান করতে পারি যে, একটা যুদ্ধ বিরতি এবং নতুন বোঝাপড়ার জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক মহল হস্তক্ষেপ করবে। এদিকে যেহেতু শত্রু মানসিকভাবে পরাজিত, সে স্থল অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে আশ্বস্ত ও সন্তুষ্ট নয়, তাই যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
ইহুদীবাদী টার্গেটের তালিকা:
বোমা হামলা:
শত্রুরা ফিলিস্তিনি মুসলিম জনগণ, পুরুষ, মহিলা ও শিশুদেরকে টার্গেট করেছে। এছাড়াও তারা বাড়িঘর এবং টাওয়ারগুলিকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এ পর্যন্ত (৩১টি) মসজিদ, দাতব্য ও সামাজিক সংগঠন, স্যাটেলাইট চ্যানেল, সাংবাদিক, মিডিয়া ও গণমাধ্যম কর্মী, ওষুধের গুদাম, হাসপাতালের আশেপাশে, সীমান্ত ক্রসিং, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি স্থাপনা, তাঁবু টার্গেট করে বোমা হামলা হয়েছে।
ইহুদীবাদীরা খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায়ও বোমা হামলা করেছে। তারা (৩টি) গীর্জা ধ্বংস করেছে। গ্যাস স্টেশন, পাওয়ার স্টেশনে বোমাবর্ষণ, ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেয়া, স্কুল ও বেকারিকে টার্গেট করে হামলা, সাদা ফসফরাস বোমা দিয়ে মানুষের সমাবেশে আঘাত এবং সিভিল ডিফেন্স ক্রুদের উপর বোমাবর্ষণ করেছে। মৃতরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। তাদের বাড়িতেও হামলা করেছে... শত্রুরা একের পর এক গণহত্যা চালিয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালের আশেপাশে হামলা। আমেরিকা এখনও ইসরাঈলকে ভেটো ক্ষমতা দিয়ে সমর্থন করে যাচ্ছে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
অবরোধ:
ইহুদী বাহিনী গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করে। পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ এবং জীবন-উপকরণ সরবরাহ থেকে শহরের নাগরিকদেরকে বঞ্চিত করে। শেষ পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জাতিসংঘের মহাসচিব তাদের কঠোরতা থেকে মুক্তির আহ্বান জানায়।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
এতক্ষণে লক্ষ্য করেছেন যে, তাদের তালিকায় একটিও সামরিক টার্গেট নেই, যা তারা বলতে পারে। এগুলি সবই ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধ, যার অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয় এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে—কঠোরতম শাস্তি। ‘আল-বশির’কে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল যেভাবে, সেভাবে কি ‘নেতানিয়াহ এবং তার যুদ্ধ-হায়েনাদের বিচার করা হবে?
মুসলিমদের পক্ষ হতে টার্গেট হওয়ার যোগ্য বিষয়সমূহের তালিকা:
লড়াই ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে মুসলিমদের কৌশল বর্ণবাদী ইহুদীদের তালিকার চেয়ে বড় ও বৃহত্তর। মুসলিম সামরিক স্ট্র্যাটেজি সম্পূর্ণরূপে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার উপর নির্ভর করে। এটা কারও কাছে গোপন নয় যে, অধিকৃত ফিলিস্তিনের সমস্ত বাসিন্দা— ইহুদী হোক বা অন্য জাতীয়তার— ১৮ বছর বয়স থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকলেই সামরিক দলের অন্তর্ভুক্ত। যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি, তারা সামরিক শিল্প বিষয়ক প্রশিক্ষক। তারা যেকোনো সময় যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত।
অধিকৃত ফিলিস্তিনের সমস্ত ইহুদী বাড়ি ও বসতিতে বিভিন্ন ধরনের হালকা অস্ত্র রয়েছে। তাদের বাসিন্দারা যেকোনো সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ইহুদীদের প্রতিরক্ষা দর্শন ও পলিসি কোনো রাখঢাক ছাড়াই প্রকাশ্যভাবে জনগণকে সশস্ত্রকরণের কৌশলের উপর ভিত্তিশীল।
তালিকার প্রথম বিষয়: এটি একটি বিশেষ তালিকা; যা অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদী ও আমেরিকান বিমান বাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করে। অতএব, গাজার মুজাহিদীনের অবশ্যই তাদের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ফিদায়ী তথা আত্নউৎসর্গীকৃত শহীদি হামলা ইহুদী বিমানবন্দর টার্গেট করে করা উচিত। সেখানে পাইলটদের আবাসন, জ্বালানি ও গোলাবারুদের মজুদ, ড্রোন ও ককপিট টার্গেট করে হামলা করা উচিত৷
অধিকৃত ফিলিস্তিনের মুসলিমদের অবশ্যই পাইলট, বিমান রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী, গোলাবারুদ লোডার এবং ড্রোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে একটা কিলিং অপারেশন চালাতে হবে৷
বিমান বাহিনীর সকল কর্মচারীকে লক্ষ্যবস্তু করতে হবে— সবচেয়ে সিনিয়র অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল থেকে সর্বকনিষ্ঠ সক্রিয় সৈনিক পর্যন্ত সকলকেই, যাতে এই বিভাগে কাজ করা তাদের জন্য একটা অভিশাপ হয়ে ওঠে।
এ পর্যায়ে আমরা আফগানিস্তান এবং অন্যত্র মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পশ্চিমা দেশগুলির বিমান বাহিনীর সেনাদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযান চালানোর জন্য উম্মাহর সন্তান এবং ‘একাকী শিকারি’ তথা লোন উলফ বীর মুজাহিদদেরকে নির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়ার কথা ভুলে থাকতে পারি না। এই পশ্চিমা দেশগুলোই আজ ইহুদীদেরকে সামরিক, রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে হ্যারির মত একজন অপরাধী ঘৃণ্য ইংরেজ গুপ্তচর— যে তার নিজের স্বীকারোক্তিতে ২৫ জন আফগান মুসলিমকে হত্যা করার বিষয়টি জানিয়েছে—এমন ব্যক্তিদেরকে গুপ্তহত্যা করা, মুসলিম উম্মাহকে আনন্দিত করার মতো ব্যাপার হবে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, এ ব্যাপারটা তার পিতা এবং ভাইদেরকেও খুশি করবে। এভাবেই কোনো পূর্ব ঘটনাক্রম ছাড়াই শত্রুপক্ষের স্বার্থগুলো এলোমেলো ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
টার্গেট-তালিকার দ্বিতীয় বিষয়: ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূমিতে ইহুদী ও আমেরিকানদের সামরিক সবকিছু। এটারই অনুশীলন মুজাহিদীন করেছিলেন। প্রথম আক্রমণ ছিল ৭ অক্টোবর (২০২৩) দক্ষিণ বিভাগকে ধ্বংস করা, এটা দখল করা, সৈনিকদেরকে এবং সেনা কর্মকর্তাদের একটা অংশকে বন্দী করা।
প্রিয় মুজাহিদীন ভাইয়েরা!
আমি বিশ্বাস করি, শত্রুর স্থল অভিযানে আসার ক্ষেত্রে মুজাহিদীন তাদের ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যানগুলি শিকার করা এবং তাতে থাকা জীবিত সৈন্যদেরকে আটক করার ব্যাপারটা উপভোগ করবেন। তবে তার অর্থ এই নয়, স্থল ও নৌপথের সুগভীর ট্যাকটিক ও কৌশলগত টার্গেটগুলোতে শত্রুপক্ষের একেবারে মর্মমূলে আঘাত করা হবে না। বরং সেগুলোর ব্যাপারেও যত্নবান থাকতে হবে। আকাশ পথেও শত্রুকে গভীরভাবে চমকে দিতে হবে। একইভাবে হত্যাকাণ্ড, তাদের সম্পত্তি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ধ্বংস সাধন ও নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অসুবিধার কিছু নেই, কারণ তারা সবাই রিজার্ভ বাহিনীর সৈন্য।
আমি মুজাহিদীনের কাছে আরো আশাবাদী —তারা যেই শত্রুর মোকাবেলা করছেন, সে সম্পর্কে আমার চেয়ে বেশি জানেন এবং তাদের সুবিধে-অসুবিধা সম্পর্কে তারাই অধিক জ্ঞাত। আমি শুধু রায় পেশ করছি— তারা প্রথম ২০০ মিটারে স্থল বাহিনীকে প্রতিহত করতে শুরু করবেন না। তাদের আরও এগোতে দেবেন। এরপর যখন তাদের উপর গুলি নিক্ষেপ আরম্ভ হবে, তখন জীবিত সৈন্যরা সীমান্তের দিকে পালাবার সুযোগ পাবে না।
মুজাহিদীনের প্রতি আরো আহ্বান থাকবে, তারা শত্রুদের নিহত ব্যক্তিদের লাশ জড়ো করবেন, যেন সময় হলে সেগুলো কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করা যায়। কারণ সব কিছুরই একটা মার্কেট আছে।
ইহুদীদেরকে রাজনৈতিক, সামরিক ও আর্থিকভাবে সমর্থনকারী পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত উম্মাহর বীর সন্তান ও লোন উলফ মুজাহিদদের প্রতি আহ্বান জানাই:
উপরে যা কিছু বলা হলো এ জাতীয় লক্ষ্যবস্তুতে তারাও যেন হামলার চেষ্টা করেন।
পাশাপাশি (যেসব পশ্চিমারা) গাজার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে ইহুদীদেরকে স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে চায়, অর্থ ও জীবন দিয়ে ইহুদীদের পাশে থাকতে চায়; এমনকি যারা (ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে) নেতিবাচক বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং ইসলামের প্রতি অবমাননামূলক; মুসলমানদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে ইহুদীদের সাহায্য করছে এমন প্রত্যেককে হত্যার উদ্দেশ্যে এবং এদের স্বার্থে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে হামলা করা আপনাদের টার্গেটের অংশ হতে পারে।
এক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদক্ষেপ—যা তিনি কাব ইবনে আশরাফ, আবদুল্লাহ ইবনে খাতাল এবং তার গায়িকাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেছিলেন।
এই শ্রেণিটির প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছে বর্তমান সময়ের মুনাফিকেরা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইসলাম, মুসলিম ও মুজাহিদীন বিরোধী অনুষ্ঠান সম্প্রচারকারী আরব দেশগুলোর (লিবারেল) স্যাটেলাইট চ্যানেল; এমনকি পশ্চিমা স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোও।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, পবিত্র আল কুরআন পুড়িয়েছে কিংবা পোড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করে; এমন প্রত্যেককে হত্যা করা মুসলিম উম্মাহর প্রাণের দাবি পূরণ করবে এবং উম্মাহকে আনন্দিত করবে।
তালিকার তৃতীয় বিষয়: সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী অনুসারে ইহুদীদেরও সেই একই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে, যা আমাদের উপর করা হয়েছে:
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ ۖ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرِينَ
অর্থ: “আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম।” [সূরা নাহল 16: ১২৬]
হে একাকী শিকারি তথা লোন উলফ বীর মুজাহিদ ভাইয়েরা! ইহুদীবাদী স্বার্থের উপর সর্বত্র আক্রমণ করুন!
ইহুদীদের কর্মকাণ্ড অনুযায়ী উম্মাহর সন্তানদের অধিকার আছে নিজেদের ভূখণ্ডে ইহুদীবাদী স্বার্থের উপর আক্রমণ করার। বিশেষ করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাযীরাতুল আরবে। একইভাবে ফিলিস্তিন, আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে। এই ইউরোপ ইহুদীদের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ। এদের নেতৃত্বে রয়েছে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানি।
আমরা তিউনিসিয়ার জনগণকে তাদের সন্তান ‘সাইফুল্লাহ’ রহিমাহুল্লাহুর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তিনি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও একটি সীমিত বাজেটের মাধ্যমে আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে জারবা’র মন্দির উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ইহুদী সেনাবাহিনীর অবকাঠামোতে আক্রমণ করাও আমাদের টার্গেটের অন্তর্ভুক্ত। তালিকাটি ইহুদীদের ব্যাপারে উন্মুক্ত।
উপরে উল্লেখিত সবই তানযীম আল-কায়েদা ও তাদের শাখাগুলির জন্য এবং সাধারণভাবে যেকোনো অঞ্চলের উম্মাহর সন্তান মুজাহিদীনের জন্য বৈধ টার্গেট। অধিকৃত ফিলিস্তিনে নিজেদের ভাইদের সাহায্যে মুজাহিদীনের অবশ্যই অবদান থাকা উচিত। আমি তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, তাদের সামনে এমন কিছু অপারেশন রয়েছে, যেগুলোর জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতির দরকার। আবার সীমিত খরচে সহজ ও দ্রুত অপারেশনও তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে।
সাময়িকভাবে যে সব ভূখণ্ড ও অঞ্চলে আক্রমণ না করা কাম্য:
যুদ্ধের ব্যবস্থাপনাগত কৌশল ও প্রজ্ঞা, ইনসাফ ও উত্তম সচেতনতার দাবি হচ্ছে: যে সমস্ত দেশ ইহুদীবাদী সত্তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে এবং ফিলিস্তিনের জনগণের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে, সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযান না চালানো। একইভাবে যে সমস্ত অঞ্চলের জনগণ ফিলিস্তিনে ইহুদীদের পক্ষে অবস্থানকারী নিজেদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে, সে সমস্ত অঞ্চলেও কোনো সুনির্দিষ্ট আক্রমণ না করা। যুদ্ধের চতুর্থ সপ্তাহের শুরুতে ও কিছুক্ষণ আগে একটি আমেরিকান শহর (রিচমন্ড) গাজার জনগণের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে। এ জাতীয় শহরগুলো মুজাহিদীনের আক্রমণ-সীমার বাইরে থাকা উচিত। কারণ আল্লাহর রহমতে ইহুদীবাদী টার্গেটই তো অনেক বেশি। তাই সেগুলোর উপর মনোযোগ নিবদ্ধ করা উচিত।
অভ্যন্তরীণ স্ট্র্যাটেজির প্রতিও মনোনিবেশ করুন!
আমি ভাবছি, বোমা হামলায় নিহত বন্দীদের সংখ্যা উল্লেখ করার মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ না রাখা, যদি আমার মুজাহিদ ভাইদের কল্যাণে এসে থাকে। বরং প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ হবে- অভ্যন্তরীণ শত্রু ফ্রন্টকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে স্বার্থসিদ্ধি করা। সৈন্যদেরকে তাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া। জনসাধারণ, রাজনীতিবিদ ও সেনাবাহিনীর মাঝে ফাটলের বীজ বপন করা। এই কৌশলের আলোকে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় নিহত কয়েকজনের ছবি ও নাম প্রকাশ করলে উদ্দেশ্য পূরণ হবে। তখন নিহত ব্যক্তিদের পরিবার জানতে পারবে ‘নেতানিয়াহু’ এবং তার ঘৃণ্য হায়েনারা তাদের সন্তানদের সাথে কী করেছে। হ্যানিবল আইন (Hannibal Directive) এবং এটার খসড়া তৈরিকারীদেরকে পরিবারগুলো অভিশাপ দেবে।
পূর্ববর্তী নিবন্ধে আমি উইকিপিডিয়া বিশ্বকোষ থেকে ২০০৮ - ২০০৯ সালের ঘটনাগুলি এবং সেখান থেকে ইহুদী লক্ষ্যবস্তুর তালিকা উদ্ধৃত করেছিলাম। সেগুলি আবার এখানে পুনরায় উল্লেখ করতে চাচ্ছি, যাতে পাঠক নিশ্চিত হতে পারেন যে, ইহুদীদের কোনো সামরিক লক্ষ্য নেই। তাদের টার্গেট হচ্ছে শুধু সাধারণ মুসলিম, নারী, শিশু, পুরুষদের হতাহত করা, তাদের সম্পদ ধ্বংস করা, তাদের পৃথিবী নষ্ট করা এবং তাদের বাস্তুচ্যুত করা, এই লক্ষ্যে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা।
ইহুদীদের ব্যর্থ যুদ্ধ-কৌশল বিভিন্ন পর্যায়ের উপর নির্ভরশীল:
প্রথমত, (কার্পেট বোমা হামলার পর্যায়) ইহুদী শত্রু তিনটি সমান্তরাল পথে কাজ করে: বোমাবর্ষণ, অবরোধ এবং তথ্য সংগ্রহ। এই পর্যায়ের শেষে একটা স্থল ইউনিট পাঠায় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য।
দ্বিতীয়ত, (স্থল যুদ্ধের পর্যায়):
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সীমিত পর্যায়ে স্থল হামলা শুরু করে তারা। স্থল বাহিনী কখনই তাদের তথ্য ও ইনফরমেশনের বাইরে অগ্রসর হয় না। কারণ তারা যদি এই কাজ করে, তবে পরবর্তীতে যা ঘটবে তাতে তাদের সেনাবাহিনী হাসির পাত্রে পরিণত হবে। এ কারণেই তারা ইনফরমেশনের বাইরে অগ্রসর হয় না।
যাই হোক, আমরা শত্রুপক্ষের সীমিত স্থল অভিযানের কথা অনুমান করতে পারি। অর্থাৎ তারা আক্রমণ পরিচালনার পর দ্রুত সরে আসবে; আক্রমণের ভূমিতে মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে না। এর পরের অবস্থা আমরা এমনটা অনুমান করতে পারি যে, একটা যুদ্ধ বিরতি এবং নতুন বোঝাপড়ার জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক মহল হস্তক্ষেপ করবে। এদিকে যেহেতু শত্রু মানসিকভাবে পরাজিত, সে স্থল অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে আশ্বস্ত ও সন্তুষ্ট নয়, তাই যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
ইহুদীবাদী টার্গেটের তালিকা:
বোমা হামলা:
শত্রুরা ফিলিস্তিনি মুসলিম জনগণ, পুরুষ, মহিলা ও শিশুদেরকে টার্গেট করেছে। এছাড়াও তারা বাড়িঘর এবং টাওয়ারগুলিকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। এ পর্যন্ত (৩১টি) মসজিদ, দাতব্য ও সামাজিক সংগঠন, স্যাটেলাইট চ্যানেল, সাংবাদিক, মিডিয়া ও গণমাধ্যম কর্মী, ওষুধের গুদাম, হাসপাতালের আশেপাশে, সীমান্ত ক্রসিং, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি স্থাপনা, তাঁবু টার্গেট করে বোমা হামলা হয়েছে।
ইহুদীবাদীরা খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায়ও বোমা হামলা করেছে। তারা (৩টি) গীর্জা ধ্বংস করেছে। গ্যাস স্টেশন, পাওয়ার স্টেশনে বোমাবর্ষণ, ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেয়া, স্কুল ও বেকারিকে টার্গেট করে হামলা, সাদা ফসফরাস বোমা দিয়ে মানুষের সমাবেশে আঘাত এবং সিভিল ডিফেন্স ক্রুদের উপর বোমাবর্ষণ করেছে। মৃতরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। তাদের বাড়িতেও হামলা করেছে... শত্রুরা একের পর এক গণহত্যা চালিয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালের আশেপাশে হামলা। আমেরিকা এখনও ইসরাঈলকে ভেটো ক্ষমতা দিয়ে সমর্থন করে যাচ্ছে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
অবরোধ:
ইহুদী বাহিনী গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করে। পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ এবং জীবন-উপকরণ সরবরাহ থেকে শহরের নাগরিকদেরকে বঞ্চিত করে। শেষ পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জাতিসংঘের মহাসচিব তাদের কঠোরতা থেকে মুক্তির আহ্বান জানায়।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
এতক্ষণে লক্ষ্য করেছেন যে, তাদের তালিকায় একটিও সামরিক টার্গেট নেই, যা তারা বলতে পারে। এগুলি সবই ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধ, যার অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয় এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে—কঠোরতম শাস্তি। ‘আল-বশির’কে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল যেভাবে, সেভাবে কি ‘নেতানিয়াহ এবং তার যুদ্ধ-হায়েনাদের বিচার করা হবে?
মুসলিমদের পক্ষ হতে টার্গেট হওয়ার যোগ্য বিষয়সমূহের তালিকা:
লড়াই ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে মুসলিমদের কৌশল বর্ণবাদী ইহুদীদের তালিকার চেয়ে বড় ও বৃহত্তর। মুসলিম সামরিক স্ট্র্যাটেজি সম্পূর্ণরূপে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার উপর নির্ভর করে। এটা কারও কাছে গোপন নয় যে, অধিকৃত ফিলিস্তিনের সমস্ত বাসিন্দা— ইহুদী হোক বা অন্য জাতীয়তার— ১৮ বছর বয়স থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকলেই সামরিক দলের অন্তর্ভুক্ত। যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি, তারা সামরিক শিল্প বিষয়ক প্রশিক্ষক। তারা যেকোনো সময় যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত।
অধিকৃত ফিলিস্তিনের সমস্ত ইহুদী বাড়ি ও বসতিতে বিভিন্ন ধরনের হালকা অস্ত্র রয়েছে। তাদের বাসিন্দারা যেকোনো সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ইহুদীদের প্রতিরক্ষা দর্শন ও পলিসি কোনো রাখঢাক ছাড়াই প্রকাশ্যভাবে জনগণকে সশস্ত্রকরণের কৌশলের উপর ভিত্তিশীল।
তালিকার প্রথম বিষয়: এটি একটি বিশেষ তালিকা; যা অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদী ও আমেরিকান বিমান বাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করে। অতএব, গাজার মুজাহিদীনের অবশ্যই তাদের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ফিদায়ী তথা আত্নউৎসর্গীকৃত শহীদি হামলা ইহুদী বিমানবন্দর টার্গেট করে করা উচিত। সেখানে পাইলটদের আবাসন, জ্বালানি ও গোলাবারুদের মজুদ, ড্রোন ও ককপিট টার্গেট করে হামলা করা উচিত৷
অধিকৃত ফিলিস্তিনের মুসলিমদের অবশ্যই পাইলট, বিমান রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী, গোলাবারুদ লোডার এবং ড্রোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে একটা কিলিং অপারেশন চালাতে হবে৷
বিমান বাহিনীর সকল কর্মচারীকে লক্ষ্যবস্তু করতে হবে— সবচেয়ে সিনিয়র অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল থেকে সর্বকনিষ্ঠ সক্রিয় সৈনিক পর্যন্ত সকলকেই, যাতে এই বিভাগে কাজ করা তাদের জন্য একটা অভিশাপ হয়ে ওঠে।
এ পর্যায়ে আমরা আফগানিস্তান এবং অন্যত্র মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পশ্চিমা দেশগুলির বিমান বাহিনীর সেনাদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযান চালানোর জন্য উম্মাহর সন্তান এবং ‘একাকী শিকারি’ তথা লোন উলফ বীর মুজাহিদদেরকে নির্দেশনা ও পরামর্শ দেয়ার কথা ভুলে থাকতে পারি না। এই পশ্চিমা দেশগুলোই আজ ইহুদীদেরকে সামরিক, রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে হ্যারির মত একজন অপরাধী ঘৃণ্য ইংরেজ গুপ্তচর— যে তার নিজের স্বীকারোক্তিতে ২৫ জন আফগান মুসলিমকে হত্যা করার বিষয়টি জানিয়েছে—এমন ব্যক্তিদেরকে গুপ্তহত্যা করা, মুসলিম উম্মাহকে আনন্দিত করার মতো ব্যাপার হবে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, এ ব্যাপারটা তার পিতা এবং ভাইদেরকেও খুশি করবে। এভাবেই কোনো পূর্ব ঘটনাক্রম ছাড়াই শত্রুপক্ষের স্বার্থগুলো এলোমেলো ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
টার্গেট-তালিকার দ্বিতীয় বিষয়: ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূমিতে ইহুদী ও আমেরিকানদের সামরিক সবকিছু। এটারই অনুশীলন মুজাহিদীন করেছিলেন। প্রথম আক্রমণ ছিল ৭ অক্টোবর (২০২৩) দক্ষিণ বিভাগকে ধ্বংস করা, এটা দখল করা, সৈনিকদেরকে এবং সেনা কর্মকর্তাদের একটা অংশকে বন্দী করা।
প্রিয় মুজাহিদীন ভাইয়েরা!
আমি বিশ্বাস করি, শত্রুর স্থল অভিযানে আসার ক্ষেত্রে মুজাহিদীন তাদের ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যানগুলি শিকার করা এবং তাতে থাকা জীবিত সৈন্যদেরকে আটক করার ব্যাপারটা উপভোগ করবেন। তবে তার অর্থ এই নয়, স্থল ও নৌপথের সুগভীর ট্যাকটিক ও কৌশলগত টার্গেটগুলোতে শত্রুপক্ষের একেবারে মর্মমূলে আঘাত করা হবে না। বরং সেগুলোর ব্যাপারেও যত্নবান থাকতে হবে। আকাশ পথেও শত্রুকে গভীরভাবে চমকে দিতে হবে। একইভাবে হত্যাকাণ্ড, তাদের সম্পত্তি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ধ্বংস সাধন ও নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অসুবিধার কিছু নেই, কারণ তারা সবাই রিজার্ভ বাহিনীর সৈন্য।
আমি মুজাহিদীনের কাছে আরো আশাবাদী —তারা যেই শত্রুর মোকাবেলা করছেন, সে সম্পর্কে আমার চেয়ে বেশি জানেন এবং তাদের সুবিধে-অসুবিধা সম্পর্কে তারাই অধিক জ্ঞাত। আমি শুধু রায় পেশ করছি— তারা প্রথম ২০০ মিটারে স্থল বাহিনীকে প্রতিহত করতে শুরু করবেন না। তাদের আরও এগোতে দেবেন। এরপর যখন তাদের উপর গুলি নিক্ষেপ আরম্ভ হবে, তখন জীবিত সৈন্যরা সীমান্তের দিকে পালাবার সুযোগ পাবে না।
মুজাহিদীনের প্রতি আরো আহ্বান থাকবে, তারা শত্রুদের নিহত ব্যক্তিদের লাশ জড়ো করবেন, যেন সময় হলে সেগুলো কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করা যায়। কারণ সব কিছুরই একটা মার্কেট আছে।
ইহুদীদেরকে রাজনৈতিক, সামরিক ও আর্থিকভাবে সমর্থনকারী পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত উম্মাহর বীর সন্তান ও লোন উলফ মুজাহিদদের প্রতি আহ্বান জানাই:
উপরে যা কিছু বলা হলো এ জাতীয় লক্ষ্যবস্তুতে তারাও যেন হামলার চেষ্টা করেন।
পাশাপাশি (যেসব পশ্চিমারা) গাজার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে ইহুদীদেরকে স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে চায়, অর্থ ও জীবন দিয়ে ইহুদীদের পাশে থাকতে চায়; এমনকি যারা (ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে) নেতিবাচক বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং ইসলামের প্রতি অবমাননামূলক; মুসলমানদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে ইহুদীদের সাহায্য করছে এমন প্রত্যেককে হত্যার উদ্দেশ্যে এবং এদের স্বার্থে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে হামলা করা আপনাদের টার্গেটের অংশ হতে পারে।
এক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদক্ষেপ—যা তিনি কাব ইবনে আশরাফ, আবদুল্লাহ ইবনে খাতাল এবং তার গায়িকাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেছিলেন।
এই শ্রেণিটির প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছে বর্তমান সময়ের মুনাফিকেরা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইসলাম, মুসলিম ও মুজাহিদীন বিরোধী অনুষ্ঠান সম্প্রচারকারী আরব দেশগুলোর (লিবারেল) স্যাটেলাইট চ্যানেল; এমনকি পশ্চিমা স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোও।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, পবিত্র আল কুরআন পুড়িয়েছে কিংবা পোড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করে; এমন প্রত্যেককে হত্যা করা মুসলিম উম্মাহর প্রাণের দাবি পূরণ করবে এবং উম্মাহকে আনন্দিত করবে।
তালিকার তৃতীয় বিষয়: সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী অনুসারে ইহুদীদেরও সেই একই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে, যা আমাদের উপর করা হয়েছে:
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ ۖ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرِينَ
অর্থ: “আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম।” [সূরা নাহল 16: ১২৬]
হে একাকী শিকারি তথা লোন উলফ বীর মুজাহিদ ভাইয়েরা! ইহুদীবাদী স্বার্থের উপর সর্বত্র আক্রমণ করুন!
ইহুদীদের কর্মকাণ্ড অনুযায়ী উম্মাহর সন্তানদের অধিকার আছে নিজেদের ভূখণ্ডে ইহুদীবাদী স্বার্থের উপর আক্রমণ করার। বিশেষ করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাযীরাতুল আরবে। একইভাবে ফিলিস্তিন, আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে। এই ইউরোপ ইহুদীদের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ। এদের নেতৃত্বে রয়েছে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানি।
আমরা তিউনিসিয়ার জনগণকে তাদের সন্তান ‘সাইফুল্লাহ’ রহিমাহুল্লাহুর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তিনি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও একটি সীমিত বাজেটের মাধ্যমে আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে জারবা’র মন্দির উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ইহুদী সেনাবাহিনীর অবকাঠামোতে আক্রমণ করাও আমাদের টার্গেটের অন্তর্ভুক্ত। তালিকাটি ইহুদীদের ব্যাপারে উন্মুক্ত।
উপরে উল্লেখিত সবই তানযীম আল-কায়েদা ও তাদের শাখাগুলির জন্য এবং সাধারণভাবে যেকোনো অঞ্চলের উম্মাহর সন্তান মুজাহিদীনের জন্য বৈধ টার্গেট। অধিকৃত ফিলিস্তিনে নিজেদের ভাইদের সাহায্যে মুজাহিদীনের অবশ্যই অবদান থাকা উচিত। আমি তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, তাদের সামনে এমন কিছু অপারেশন রয়েছে, যেগুলোর জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতির দরকার। আবার সীমিত খরচে সহজ ও দ্রুত অপারেশনও তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে।
সাময়িকভাবে যে সব ভূখণ্ড ও অঞ্চলে আক্রমণ না করা কাম্য:
যুদ্ধের ব্যবস্থাপনাগত কৌশল ও প্রজ্ঞা, ইনসাফ ও উত্তম সচেতনতার দাবি হচ্ছে: যে সমস্ত দেশ ইহুদীবাদী সত্তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে এবং ফিলিস্তিনের জনগণের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে, সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযান না চালানো। একইভাবে যে সমস্ত অঞ্চলের জনগণ ফিলিস্তিনে ইহুদীদের পক্ষে অবস্থানকারী নিজেদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে, সে সমস্ত অঞ্চলেও কোনো সুনির্দিষ্ট আক্রমণ না করা। যুদ্ধের চতুর্থ সপ্তাহের শুরুতে ও কিছুক্ষণ আগে একটি আমেরিকান শহর (রিচমন্ড) গাজার জনগণের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে। এ জাতীয় শহরগুলো মুজাহিদীনের আক্রমণ-সীমার বাইরে থাকা উচিত। কারণ আল্লাহর রহমতে ইহুদীবাদী টার্গেটই তো অনেক বেশি। তাই সেগুলোর উপর মনোযোগ নিবদ্ধ করা উচিত।
অভ্যন্তরীণ স্ট্র্যাটেজির প্রতিও মনোনিবেশ করুন!
আমি ভাবছি, বোমা হামলায় নিহত বন্দীদের সংখ্যা উল্লেখ করার মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ না রাখা, যদি আমার মুজাহিদ ভাইদের কল্যাণে এসে থাকে। বরং প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ হবে- অভ্যন্তরীণ শত্রু ফ্রন্টকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে স্বার্থসিদ্ধি করা। সৈন্যদেরকে তাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া। জনসাধারণ, রাজনীতিবিদ ও সেনাবাহিনীর মাঝে ফাটলের বীজ বপন করা। এই কৌশলের আলোকে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় নিহত কয়েকজনের ছবি ও নাম প্রকাশ করলে উদ্দেশ্য পূরণ হবে। তখন নিহত ব্যক্তিদের পরিবার জানতে পারবে ‘নেতানিয়াহু’ এবং তার ঘৃণ্য হায়েনারা তাদের সন্তানদের সাথে কী করেছে। হ্যানিবল আইন (Hannibal Directive) এবং এটার খসড়া তৈরিকারীদেরকে পরিবারগুলো অভিশাপ দেবে।
***
অষ্টম মূল্যায়ন: পশ্চিমা মিডিয়া, পেশাদার সংশয়বাদী গোষ্ঠী, বাজিমাতের অভিলাষ এবং হিংসার গোলক ধাঁধা প্রসঙ্গে:
পেশাদার অপরাধী জায়নবাদী-ক্রুসেডার প্রোপাগান্ডা প্রচারকারীরা মানুষকে সত্য দেখতে দেবে—তা কেমন করে হতে পারে? তাই এরা সর্বদা সন্দেহ উত্থাপন করে এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীদের সম্বোধন করে। অতঃপর তাদের বিভ্রমকে সুড়সুড়ি দেয় এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ অবারিত করে দেয়। এভাবেই তারা কন্সপিরেসি থিওরি আরও অধিক প্রচার প্রসারের পথ প্রস্তুত করে। হে আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহর আপনি একমাত্র সহায়।
আমেরিকার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ফাঁস:
সংশয় ছড়াবার সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই আমেরিকানরা আজ গাজায় বোমা হামলায় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। আল্লাহর শোকর! ডাক্তাররা আমেরিকানদের জন্য বিব্রতকর তালিকা প্রকাশ করে, তাদেরকে বিব্রত করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমরা জানি যে, আমেরিকানদের মুখ মলিন হয়ে গিয়েছে; লজ্জায় এমন লাল হয়েছে, যা বলার মতো নয়। আমাদের কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ নয় যে, তারা এ কথা মেনে নিয়েছে কি নেয়নি। কিন্তু উম্মাহ তাদের সংশয় মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিল এটাই বড় কথা।
আমি আশা করি, আল্লাহ্ আমাদের বাকি সদস্যদের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজেদের দায়িত্ব পালনের জন্য এভাবেই প্রস্তুত থাকার তাওফীক দান করবেন। তাদের জন্য হৃদয় থেকে অভিবাদন, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা! জীবন উৎসর্গকারীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
উদ্ধার কাজে যে সমস্ত ব্যক্তি ও সংস্থা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে, নাগরিক প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা খাতে যারা শ্রম ব্যয় করছে— যাদের মধ্যে প্যারামেডিকস, ড্রাইভার, নার্স, রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, প্রশাসক, ডাক্তার এবং রক্তের ডোনার- আপনারা সবাই যুদ্ধাঙ্গনের প্রাণমূলে এক একটি শক্তিশালী দালানের মতো। আপনারা দুর্ভেদ্য এক প্রাচীর। আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করি, যেন তিনি আপনাদেরকে পুরোপুরি প্রতিদান দান করেন এবং বিনা হিসাব ও বিনা শাস্তিতে আপনাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান!
হরেক রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ব্যাপারে সচেতনতা কাম্য:
আগামী দিনে ইহুদীরা ঘটনার গতিপথ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলবে যে, মুজাহিদীন ৭ই অক্টোবরে যা করেছিলেন, সে সম্পর্কে তারা আগেই জানতো। তারা এ কাজ করার সুযোগ দিয়েছে যেন পরবর্তীতে ফিলিস্তিনিদেরকে নির্মূল করতে পারে। এটা কি অতীতে ১১ই সেপ্টেম্বরের পরে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে আচ্ছন্ন একদল মানুষের বিশ্লেষণ ও প্রচারণার পুনরাবৃত্তি নয়?
এবারও সেই শ্রেণির মানুষেরা নিজেদের বিশ্লেষণ দিয়ে বিশ্ববাসীকে বলতে চেষ্টা করবে, ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী সরকার হামাসকে নির্মূল করতে এবং ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করতে সক্ষম। কিন্তু তাদের সেটা করার ইচ্ছা নেই। তারা শুধু হামাস ও ফিলিস্তিনিদেরকে দুর্বল করে রাখতে চায়। কারণ হামাসের উপস্থিতি ইহুদী ব্যবস্থার ঐক্য নিশ্চিত করে(!) ঠিক যেমন বিশ্বের বাকি সংস্থা ও সরকারগুলো শত্রুর ব্যাপারে বিভ্রম তৈরি করে তাদের জনগণের বশ্যতা নিশ্চিত করে। এগুলোর মাধ্যমেই তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে। বাস্তবতা হল, শত্রুদের যদি আসলেই সব কিছু করার ক্ষমতা থাকতো, তবে তারা অনেক আগেই তা করে ফেলত। কিন্তু তারা বিভ্রম তৈরি করে তাদের ব্যর্থতা ঢেকে রাখে।
তারা উম্মাহর সংকল্পকে দুর্বল করার জন্য সন্দেহের বীজ বপনের কৌশল অবলম্বন করে। তারা বোঝাতে চায়, ইহুদীবাদী ও পশ্চিমারা সবসময় উম্মাহর চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। এক কথায়, তারা বিভ্রম তৈরি করে সেগুলো বাজারজাত করে। দুর্ভাগ্যবশত কিছু মুসলিম লেখক, বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীও তাদের পেছনে দৌঁড়ে হাঁপাতে থাকেন। সেই জায়গায় ইহুদীবাদী সদস্য ও এজেন্টদের অবস্থা কি হবে তা তো বলাই বাহুল্য।
এ জাতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু সেলিব্রেটিকে ব্যবহার করা হয়। সেলিব্রেটিরা এ ধরনের চিন্তা প্রচার করে যে, শত্রুপক্ষের প্রযুক্তি, টেকনোলজি ও গোয়েন্দা তৎপরতা এত বেশি ও শক্তিশালী যে, মুজাহিদীনের কার্যক্রম ও প্রস্তুতি তাদের চোখ এড়ানো খুবই কঠিন। শত্রুদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জনের জন্য মুজাহিদীনের পরিচালিত এ জাতীয় অপারেশন নিজেরাই চাচ্ছিল এবং তার সুবিধা নেয়ার কথা ভাবছিল। তাই মুজাহিদীন এই অপারেশন করতে পেরেছেন।
তারপর তারা ঘটনা বিশ্লেষণ এবং তাদের দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করার জন্য একটি ধারাবাহিক প্রোগ্রাম ও ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করতে শুরু করবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী নয়, কিন্তু খুবই জনপ্রিয় ও বিখ্যাত- এমন বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে তারা পরিচয় করিয়ে দিবে তাদের দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গি জোরালো করার জন্য। এদের মাঝে আবার অনেক সাংবাদিক থাকে, যারা দলান্ধ জায়নবাদী। এই অনুসারে তারা কিছু গবেষণা ও প্রকাশনা তৈরি করে। এগুলো স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, বড় কোম্পানি এবং এ জাতীয় মানব সমাবেশে পাঠানো হয়, যাতে একটি ভ্রষ্ট জনমত তৈরি করা যায়।
এই প্রক্রিয়ায় তৈরি ভ্রান্ত জনমত মোকাবেলার জন্য বিরাট কর্ম প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। ভ্রান্ত জনমত গঠনের চেয়েও কখনো কখনো সেই প্রচেষ্টা আরো জোরালো হতে হয়। কারণ মানুষের মধ্যে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাস করা ও সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা থাকে। যদিও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভুলভাল আচার উচ্চারণ এবং লড়াইয়ের ময়দানে কোনো সুষ্ঠু রণকৌশল তৈরির ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, তারা যেটা প্রচার করছে, তা সঠিক নয়। একটি সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার উপযুক্ত একটি প্রস্থান-স্ট্র্যাটেজি তৈরির ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা থেকেও আমরা সেটা বুঝতে পারি।
আল্লাহর কসম! মুসলিম উম্মাহর কিছু সাধারণ মানুষ, পশ্চিমা ভাইরাসে দূষিত হয়ে যাওয়া শিক্ষিত ও সুসভ্য দাবিদার অনেকের চেয়ে বেশি সচেতন ও পরিপক্ক। কথিত এই সুশীলরা তোতাপাখি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের সামনে যা বলা হয়, তা সামান্য যাচাই না করেই তারা প্রচার করে বেড়ায়।
ইসলামী সকল অঙ্গনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীবৃন্দ!
আমি যেকোনো ইসলামী আন্দোলনে শামিল আমার ভাইদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার কথা ভুলতে পারি না যে, এখনই সময় মতবিরোধ ছেড়ে ঐক্য গড়ার। গাজায় আমাদের ভাইদের সমর্থন ও সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। দেখা যাবে, কে কত বেশি, কতটা উত্তম পন্থায় আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে দাঁড়াতে পারে! এই দিনগুলো আল্লাহর কাছে আমাদের ব্যাপারে সাক্ষী হয়ে থাকবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে এক কাতারে শামিল দেখতে খুবই পছন্দ করেন। দীনের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য আমাদের চেষ্টা-প্রচেষ্টা যেন সমন্বিত হয়, আল্লাহ সেটাই দেখতে চান।
আমরা (মুসলিমরা) সবাই ইহুদীবাদী-ক্রুসেডারদের বোমা হামলার পরিস্থিতিতে বসবাস করছি। দীন ইসলাম, পবিত্রতা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, প্রথা এবং ঐতিহ্যকে ধ্বংস, মুসলিম পরিচয় ধ্বংস এবং নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যে শত্রুপক্ষের পরিচালিত বৈশ্বিক আগ্রাসন মোকাবেলায় আমাদের একে অপরের পরিপূরক হতে হবে। যদি আমরা এই বিষয়টি বুঝতে না পারি, একইসাথে শত্রুদের মোকাবেলায় উত্তমরূপে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে না পারি, তাহলে আমরা নিজেদের হাতে নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাব - নাউযুবিল্লাহ!
পেশাদার অপরাধী জায়নবাদী-ক্রুসেডার প্রোপাগান্ডা প্রচারকারীরা মানুষকে সত্য দেখতে দেবে—তা কেমন করে হতে পারে? তাই এরা সর্বদা সন্দেহ উত্থাপন করে এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীদের সম্বোধন করে। অতঃপর তাদের বিভ্রমকে সুড়সুড়ি দেয় এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ অবারিত করে দেয়। এভাবেই তারা কন্সপিরেসি থিওরি আরও অধিক প্রচার প্রসারের পথ প্রস্তুত করে। হে আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহর আপনি একমাত্র সহায়।
আমেরিকার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ফাঁস:
সংশয় ছড়াবার সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই আমেরিকানরা আজ গাজায় বোমা হামলায় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। আল্লাহর শোকর! ডাক্তাররা আমেরিকানদের জন্য বিব্রতকর তালিকা প্রকাশ করে, তাদেরকে বিব্রত করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমরা জানি যে, আমেরিকানদের মুখ মলিন হয়ে গিয়েছে; লজ্জায় এমন লাল হয়েছে, যা বলার মতো নয়। আমাদের কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ নয় যে, তারা এ কথা মেনে নিয়েছে কি নেয়নি। কিন্তু উম্মাহ তাদের সংশয় মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিল এটাই বড় কথা।
আমি আশা করি, আল্লাহ্ আমাদের বাকি সদস্যদের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজেদের দায়িত্ব পালনের জন্য এভাবেই প্রস্তুত থাকার তাওফীক দান করবেন। তাদের জন্য হৃদয় থেকে অভিবাদন, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা! জীবন উৎসর্গকারীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
উদ্ধার কাজে যে সমস্ত ব্যক্তি ও সংস্থা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে, নাগরিক প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা খাতে যারা শ্রম ব্যয় করছে— যাদের মধ্যে প্যারামেডিকস, ড্রাইভার, নার্স, রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, প্রশাসক, ডাক্তার এবং রক্তের ডোনার- আপনারা সবাই যুদ্ধাঙ্গনের প্রাণমূলে এক একটি শক্তিশালী দালানের মতো। আপনারা দুর্ভেদ্য এক প্রাচীর। আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করি, যেন তিনি আপনাদেরকে পুরোপুরি প্রতিদান দান করেন এবং বিনা হিসাব ও বিনা শাস্তিতে আপনাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান!
হরেক রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ব্যাপারে সচেতনতা কাম্য:
আগামী দিনে ইহুদীরা ঘটনার গতিপথ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলবে যে, মুজাহিদীন ৭ই অক্টোবরে যা করেছিলেন, সে সম্পর্কে তারা আগেই জানতো। তারা এ কাজ করার সুযোগ দিয়েছে যেন পরবর্তীতে ফিলিস্তিনিদেরকে নির্মূল করতে পারে। এটা কি অতীতে ১১ই সেপ্টেম্বরের পরে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে আচ্ছন্ন একদল মানুষের বিশ্লেষণ ও প্রচারণার পুনরাবৃত্তি নয়?
এবারও সেই শ্রেণির মানুষেরা নিজেদের বিশ্লেষণ দিয়ে বিশ্ববাসীকে বলতে চেষ্টা করবে, ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী সরকার হামাসকে নির্মূল করতে এবং ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করতে সক্ষম। কিন্তু তাদের সেটা করার ইচ্ছা নেই। তারা শুধু হামাস ও ফিলিস্তিনিদেরকে দুর্বল করে রাখতে চায়। কারণ হামাসের উপস্থিতি ইহুদী ব্যবস্থার ঐক্য নিশ্চিত করে(!) ঠিক যেমন বিশ্বের বাকি সংস্থা ও সরকারগুলো শত্রুর ব্যাপারে বিভ্রম তৈরি করে তাদের জনগণের বশ্যতা নিশ্চিত করে। এগুলোর মাধ্যমেই তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে। বাস্তবতা হল, শত্রুদের যদি আসলেই সব কিছু করার ক্ষমতা থাকতো, তবে তারা অনেক আগেই তা করে ফেলত। কিন্তু তারা বিভ্রম তৈরি করে তাদের ব্যর্থতা ঢেকে রাখে।
তারা উম্মাহর সংকল্পকে দুর্বল করার জন্য সন্দেহের বীজ বপনের কৌশল অবলম্বন করে। তারা বোঝাতে চায়, ইহুদীবাদী ও পশ্চিমারা সবসময় উম্মাহর চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। এক কথায়, তারা বিভ্রম তৈরি করে সেগুলো বাজারজাত করে। দুর্ভাগ্যবশত কিছু মুসলিম লেখক, বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীও তাদের পেছনে দৌঁড়ে হাঁপাতে থাকেন। সেই জায়গায় ইহুদীবাদী সদস্য ও এজেন্টদের অবস্থা কি হবে তা তো বলাই বাহুল্য।
এ জাতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু সেলিব্রেটিকে ব্যবহার করা হয়। সেলিব্রেটিরা এ ধরনের চিন্তা প্রচার করে যে, শত্রুপক্ষের প্রযুক্তি, টেকনোলজি ও গোয়েন্দা তৎপরতা এত বেশি ও শক্তিশালী যে, মুজাহিদীনের কার্যক্রম ও প্রস্তুতি তাদের চোখ এড়ানো খুবই কঠিন। শত্রুদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জনের জন্য মুজাহিদীনের পরিচালিত এ জাতীয় অপারেশন নিজেরাই চাচ্ছিল এবং তার সুবিধা নেয়ার কথা ভাবছিল। তাই মুজাহিদীন এই অপারেশন করতে পেরেছেন।
তারপর তারা ঘটনা বিশ্লেষণ এবং তাদের দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করার জন্য একটি ধারাবাহিক প্রোগ্রাম ও ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করতে শুরু করবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী নয়, কিন্তু খুবই জনপ্রিয় ও বিখ্যাত- এমন বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে তারা পরিচয় করিয়ে দিবে তাদের দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গি জোরালো করার জন্য। এদের মাঝে আবার অনেক সাংবাদিক থাকে, যারা দলান্ধ জায়নবাদী। এই অনুসারে তারা কিছু গবেষণা ও প্রকাশনা তৈরি করে। এগুলো স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, বড় কোম্পানি এবং এ জাতীয় মানব সমাবেশে পাঠানো হয়, যাতে একটি ভ্রষ্ট জনমত তৈরি করা যায়।
এই প্রক্রিয়ায় তৈরি ভ্রান্ত জনমত মোকাবেলার জন্য বিরাট কর্ম প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। ভ্রান্ত জনমত গঠনের চেয়েও কখনো কখনো সেই প্রচেষ্টা আরো জোরালো হতে হয়। কারণ মানুষের মধ্যে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাস করা ও সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা থাকে। যদিও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভুলভাল আচার উচ্চারণ এবং লড়াইয়ের ময়দানে কোনো সুষ্ঠু রণকৌশল তৈরির ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, তারা যেটা প্রচার করছে, তা সঠিক নয়। একটি সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার উপযুক্ত একটি প্রস্থান-স্ট্র্যাটেজি তৈরির ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা থেকেও আমরা সেটা বুঝতে পারি।
আল্লাহর কসম! মুসলিম উম্মাহর কিছু সাধারণ মানুষ, পশ্চিমা ভাইরাসে দূষিত হয়ে যাওয়া শিক্ষিত ও সুসভ্য দাবিদার অনেকের চেয়ে বেশি সচেতন ও পরিপক্ক। কথিত এই সুশীলরা তোতাপাখি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের সামনে যা বলা হয়, তা সামান্য যাচাই না করেই তারা প্রচার করে বেড়ায়।
ইসলামী সকল অঙ্গনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীবৃন্দ!
আমি যেকোনো ইসলামী আন্দোলনে শামিল আমার ভাইদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার কথা ভুলতে পারি না যে, এখনই সময় মতবিরোধ ছেড়ে ঐক্য গড়ার। গাজায় আমাদের ভাইদের সমর্থন ও সহযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। দেখা যাবে, কে কত বেশি, কতটা উত্তম পন্থায় আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে দাঁড়াতে পারে! এই দিনগুলো আল্লাহর কাছে আমাদের ব্যাপারে সাক্ষী হয়ে থাকবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে এক কাতারে শামিল দেখতে খুবই পছন্দ করেন। দীনের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য আমাদের চেষ্টা-প্রচেষ্টা যেন সমন্বিত হয়, আল্লাহ সেটাই দেখতে চান।
আমরা (মুসলিমরা) সবাই ইহুদীবাদী-ক্রুসেডারদের বোমা হামলার পরিস্থিতিতে বসবাস করছি। দীন ইসলাম, পবিত্রতা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, প্রথা এবং ঐতিহ্যকে ধ্বংস, মুসলিম পরিচয় ধ্বংস এবং নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যে শত্রুপক্ষের পরিচালিত বৈশ্বিক আগ্রাসন মোকাবেলায় আমাদের একে অপরের পরিপূরক হতে হবে। যদি আমরা এই বিষয়টি বুঝতে না পারি, একইসাথে শত্রুদের মোকাবেলায় উত্তমরূপে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে না পারি, তাহলে আমরা নিজেদের হাতে নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাব - নাউযুবিল্লাহ!
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ
[আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোনো শক্তি কারো নেই]
***
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
লিংক-১ : https://justpaste.it/ey_to_gaza-2
লিংক-২ : https://mediagram.me/1f089b772d526712
লিংক-৩ : https://noteshare.id/6BH6uyX
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20231212073052/https://justpaste.it/ey_to_gaza-2
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20231212073134/https://mediagram.me/1f089b772d526712
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20231212...are.id/6BH6uyX
লিংক-২ : https://mediagram.me/1f089b772d526712
লিংক-৩ : https://noteshare.id/6BH6uyX
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20231212073052/https://justpaste.it/ey_to_gaza-2
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20231212073134/https://mediagram.me/1f089b772d526712
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20231212...are.id/6BH6uyX
روابط بي دي اب
PDF (484 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৪৮৪ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.org/download/eito-ga...rt%20-%202.pdf
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...62f3c3f33a8687
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e7h9v4c6s6
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/3...23d304a3872e2b
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+Part+-+2.pdf
লিংক-৬ : https://jmp.sh/TSagtR4x
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rif-part-2.pdf
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/file/5m3jd...t+-+2.pdf/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/H943BAZC#9ErIze...-rLk_XBtRoYVLM
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2PDF
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...62f3c3f33a8687
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e7h9v4c6s6
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/3...23d304a3872e2b
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+Part+-+2.pdf
লিংক-৬ : https://jmp.sh/TSagtR4x
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rif-part-2.pdf
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/file/5m3jd...t+-+2.pdf/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/H943BAZC#9ErIze...-rLk_XBtRoYVLM
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2PDF
روابط ورد
Word (1.6 MB)
ওয়ার্ড [১.৬ মেগাবাইট]
Word (1.6 MB)
ওয়ার্ড [১.৬ মেগাবাইট]
লিংক-১ : https://archive.org/download/eito-ga...rt%20-%202.doc
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...99072e3b4f6ca5
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h0x6l5z3s9
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/c...0bc5b1c25d9aa3
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+Part+-+2.doc
লিংক-৬ : https://jmp.sh/L5nqKEGp
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rif-part-2.doc
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/file/d9mp2...t_-_2.doc/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/DpYQgBIL#hUbkqj...lhdeivLkTX110A
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Word
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...99072e3b4f6ca5
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h0x6l5z3s9
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/c...0bc5b1c25d9aa3
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+Part+-+2.doc
লিংক-৬ : https://jmp.sh/L5nqKEGp
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rif-part-2.doc
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/file/d9mp2...t_-_2.doc/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/DpYQgBIL#hUbkqj...lhdeivLkTX110A
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Word
روابط الغلاف- ١
book Banner [1.2 MB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [১.২ মেগাবাইট]
লিংক-১ : https://archive.org/download/eito-ga...%202-Cover.jpg
লিংক -২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...72fbc265985ea4
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=f1e8k3e6c6
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/c...32eda9d2e65cc7
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...+-+2-Cover.jpg
লিংক-৬ : https://jmp.sh/svF1DMBq
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rt-2-cover.jpg
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/view/1vfy6...Cover.jpg/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/DsBmmBwK#1vXjTA...30xhIlitl031Jg
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Cover
লিংক -২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...72fbc265985ea4
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=f1e8k3e6c6
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/c...32eda9d2e65cc7
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...+-+2-Cover.jpg
লিংক-৬ : https://jmp.sh/svF1DMBq
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...rt-2-cover.jpg
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/view/1vfy6...Cover.jpg/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/DsBmmBwK#1vXjTA...30xhIlitl031Jg
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Cover
روابط الغلاف- ٢
Banner [1.9 MB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [১.৯ মেগাবাইট]
লিংক-১ : https://archive.org/download/eito-ga...2%20Banner.jpg
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...fe32e71c8ef406
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h4k0y6y5o2
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/4...ba9f6138b1e12c
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+2+Banner.jpg
লিংক-৬ : https://jmp.sh/vYPCBaOv
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...t-2-banner.jpg
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/view/a5mis...anner.jpg/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/TtZGybQC#_JPJUf...MOZZTRuJslUbho
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Banner
লিংক-২ : https://workdrive.zohopublic.eu/file...fe32e71c8ef406
লিংক-৩ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h4k0y6y5o2
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/4...ba9f6138b1e12c
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/ei...-+2+Banner.jpg
লিংক-৬ : https://jmp.sh/vYPCBaOv
লিংক-৭ : https://eitogaza2.files.wordpress.co...t-2-banner.jpg
লিংক-৮ : https://www.mediafire.com/view/a5mis...anner.jpg/file
লিংক-৯ : https://mega.nz/file/TtZGybQC#_JPJUf...MOZZTRuJslUbho
লিংক-১০ : https://k00.fr/eitogaza2Banner
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent
Comment