বাংলাদেশে মুসলিম বোনদের উপর হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের কালো ছায়া: নববী মানহাজ অনুযায়ী উম্মাহর করণীয়

আল ফিরদাউস এর সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম:
বাংলাদেশের মাটি রক্তে ভিজছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এডভোকেট আলিফের মতো সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা। এখন তারা তাদের কলুষিত হাত বাড়িয়েছে আরেক নির্যাতিত মুসলিম বোনের পাশে দাঁড়ানো আলেমের দিকে—তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে তারা তাদের ঘৃণ্য অভিপ্রায় স্পষ্ট করেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ধর্ষণের খবর, আর্তনাদের কান্না, আর অসহায় বোনদের ক্রন্দন। এ যেন এক ঘোষিত যুদ্ধ—আমাদের মুসলিম বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনের নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে হিন্দুত্ববাদী নরপিশাচরা।
রাস্তা থেকে, ঘর থেকে তুলে নিয়ে আমাদের বোনদের দিনের পর দিন ধর্ষণ করছে এই হিংস্র হায়েনারা। তথাকথিত “ভাগওয়া লাভ ট্র্যাপ” নামক যৌন সন্ত্রাসী কার্যক্রম তাদের অপকর্মের আরেক কালো অধ্যায়। সময়ের সাথে সাথে এই ভূখণ্ড আমাদের মা-বোনদের জন্য জাহান্নামে পরিণত হচ্ছে। তারা যেন হিংস্র জানোয়ারের খাঁচায় বন্দী হয়ে পড়েছে। এদেশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে নির্যাতিত বোনের আর্তনাদে, কিন্তু মূলধারার মিডিয়া নীরব! এক অদৃশ্য শক্তি যেন এই নির্যাতনের খবর চাপা দিচ্ছে। ধর্ষকরা চিহ্নিত হলেও, তাদের পেছনে থাকা অপশক্তি তাদের নিরাপদ পথ করে দিচ্ছে, যা তাদের এই ঘৃণ্য কাজে আরও উৎসাহ যোগাচ্ছে। প্রশাসন নিশ্চুপ, বিচারের কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না।
এই মাটিতে মুহাম্মদ বিন কাসিমের বোনেরা আজ নরপিশাচদের খাবারে পরিণত হচ্ছে। অথচ মুহাম্মদ বিন কাসিম এক বোনের আর্তনাদের ডাকে এই হিন্দুস্তানে ছুটে এসেছিলেন। আব্বাসী খলিফা মু’তাসিম তাঁর এক বোনের ক্রন্দনরত ডাক (ওয়া মু’তাসিমা) শুনে রোমানদের হাত থেকে মুসলিম বোনকে উদ্ধারে ছুটে গিয়েছিলেন এবং পুরো আমুরিয়া নগরীটিই ধ্বংস করে ফেলেন!
১৯৯৪ সালের দিকে আফগানিস্তানে যখন কয়েকজন মুসলিম বোনের ইজ্জত হরণের উদ্দেশ্যে তাদের অপহরণ করা হয়, তখন তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মুহাম্মদ উমর রহিমাহুল্লাহ অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক অভিযান পরিচালনা করেন এবং তাদের প্রকাশ্যে শাস্তি কার্যকর করেন। পরবর্তীতে মোল্লা মুহাম্মদ উমর রহিমাহুল্লাহ তাঁর সাথীদের নিয়ে নারীদের ইজ্জত হেফাজতের জন্য শরিয়াহর আলোকে কার্যকর স্টেপ নেন- যাতে নারীরা নিরাপত্তা পেয়েছিলেন।
কিন্তু আজ আমাদের ঈমান? আমাদের দায়িত্ববোধ? আমাদের বোনদের ডাক কি আমাদের হৃদয়ে পৌঁছাচ্ছে না?
হে উম্মাহ! এই হিন্দুত্ববাদী শক্তির ছত্রছায়ায় পরিচালিত সেক্যুলার শাসনব্যবস্থা আমাদের বোনদের নিরাপত্তা দিবে না। এই ব্যবস্থায় আমাদের মা-বোন, আমাদের উত্তরসূরীদের জন্য কোনো নিরাপদ ভবিষ্যৎ নেই।
হিন্দু কর্তৃক ছাড়াও মুসলিম বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছে। এই সেক্যুলার শাসনব্যবস্থায় তাদের কোন নিরাপত্তা নেই, যেন তারা অবলা প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। তাদের উপর হওয়া নির্যাতনের সুবিচার পাচ্ছে না। যার ফলে এই নরপিশাচ ধর্ষকেরা এই অপকর্ম করতে উৎসাহ পাচ্ছ! ধর্ষক যেই হোক, একমাত্র শরিয়াহ’র আলোকে শাস্তি হলেই এই অপরাধ হ্রাস পাবে। শুধুমাত্র ইসলামী শরিয়াহর মধ্যেই নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, সকল মানুষ তাদের ন্যায্য বিচার পাবে। এই সেক্যুলার সিস্টেম নারীদের শুধুমাত্র ভোগের বস্তুতে পরিণত করেছে, অথচ ইসলামী শরিয়ায় নারীদের দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান-মর্যাদা ও নিরাপত্তা।
আমাদের নিজেদের হাতেই এই নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নিতে হবে। হে মুসলিম যুবক! জেগে উঠুন! প্রস্তুতি নিন! দাওয়াহ, ই’দাদ, আর জিহাদের পথে নিজেকে তৈরি করুন। প্রতিটি নির্যাতিত বোনের ইজ্জতের বদলা নেওয়ার শপথ নিন। নিজেকে সংশোধন করুন, তাওহিদের পতাকা তুলে ধরুন, আর নববী মানহাজে আল্লাহর যমিনে ন্যায় ও ইনসাফের সমাজ গড়ার জন্য কুরবানীর শপথ নিন।
এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে নীরব থাকা মানে আমাদের নিজেদের ঈমানের পরাজয়। আরেকটি দিন নীরব থাকা মানে আরেকটি বোনের ইজ্জত লুণ্ঠিত হওয়া। আমরা আর চুপ থাকব না। আমরা উঠে দাঁড়াব, লড়াই করব, আর আমাদের বোনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ। এই মাটি আমাদের, এই ভূখণ্ড ইসলামের—এখানে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসের কোনো স্থান হবে না। হিন্দুত্ববাদী ও ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদে তাওহিদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হোন। এ ভূখণ্ডে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শামিল হোন।
Comment