আমেরিকান স্কলার ডক্টর ইয়াসির কাযি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অতি সম্প্রতি তার একটি নতুন উপলব্ধির কথা লিখেছেন এবং অনেক আগের একটি আচরণের জন্য প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করেছেন। অনেক বছর আগে এক মাহফিলের প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন তার কাছে বিষণ্ণতার রোগের ব্যাপারে নসিহত চায়। শায়খ ইয়াসির কাযি উত্তর দেন যে, যার ঈমান মজবুত থাকে, সে কখনো বিষণ্ণতায় ভুগবে না। তারপর তিনি ঈমান মজবুত করার উপর নাতিদীর্ঘ বয়ান দেন। সম্প্রতি তিনি খেয়াল করেছেন যে, প্রশ্নকারী এখানে সাধারণ মন খারাপ টাইপের বিষণ্ণতার কথা বলছিল না। বরং ডিপ্রেশন বলে যে একটি মানসিক রোগ আছে, যার জন্য অন্যান্য রোগের মতই চিকিৎসা দরকার হয় – তার কথা বলা হচ্ছিল। বান্দাদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ্* সত্যিই এই রোগ সৃষ্টি করেছেন। ডায়রিয়া বা মাথাব্যথার মত রোগগুলোর জন্য যেমন ঔষধ বা চিকিৎসা আছে, ডিপ্রেশন ইত্যাদি মানসিক রোগের ব্যাপারেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো জরুরি। হ্যাঁ, সকল ক্ষেত্রেই পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল থাকবে আল্লাহ্* তা’আলার প্রতি। কিন্তু শারিরীক-মানসিক রোগগুলো কেবলই আধ্যাত্মিকতার সাথে সম্পর্কিত না। ঔষধ গ্রহণের সুন্নাহ এখানে প্রযোজ্য। এখান থেকে ডক্টর ইয়াসির কাযি উপসংহার টানেন যে, কেউ সুন্দর কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে বা ঈমান-আমলের উপর চমৎকার বয়ান দিতে পারে বলেই তার কাছে অসুখ-বিসুখ, বিবাহ-শাদী, ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করা ঠিক না। এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ লোকদের কাছেই জানতে চাওয়া উচিৎ। তবে কোন আলেম যদি বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা শেষে কাউন্সেলিং এর উপর আলাদা পড়াশোনা করে থাকেন, সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।
কথা হল, একই কথা কি তিনি জিহাদ-কিতালের ব্যাপারে খাটাতে পারতেন না? আমি কারো গোপন আমলের কথা জানি না। কিন্তু বাহ্যিক অবস্থা দেখে আমরা এটাই বুঝতে পারি যে, তিনি কখনো কোনো যুদ্ধের ময়দানে থাকেননি। উম্মাহর বিভিন্ন ভূখণ্ডে বিভিন্ন কিসিমের শত্রু, বিভিন্নরকম পরিস্থিতি, বিভিন্ন মেজাজের মানুষ, বিভিন্ন রকমের ভৌগলিক অবস্থা। এমতাবস্থায় ইনসাফের দাবি কি এটাই হত না যে, জিহাদের দিকে আহ্বানকারী মুসলিমদের ঢালাওভাবে খারেজি তকমা না দিয়ে রয়ে সয়ে মন্তব্য করা? অন্তত ডক্টর জাকির নায়েকের মতও যদি তিনি বলে দিতেন বিবিসি-সিএনএনের খবরের ভিত্তিতে কিছু বলতে পারবেন না, কোন নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তির ব্যাপারে মন্তব্য না করে কেবল মূলনীতি নিয়ে তাত্ত্বিক আলাপ সেরে ফেলতেন, তাহলেও তাগুতের কাছ থেকে পিঠ বাঁচান যেত। কিন্তু তিনি তা না করে অত্যন্ত ইখলাসের সাথে মুজাহিদ-খারেজি নির্বিশেষে সবাইকে খারেজি ট্যাগ দিয়েছেন। প্রতিটা অপারেশনের খবর আসার পর অত্যন্ত ইখলাসের সাথে প্রকাশ্যে কন্ডেম কন্ডেম খেলেছেন, যতদিন না তিনি ক্লান্ত হয়ে শেষমেশ বলেছেন যে, প্রতিটা হামলার পর এভাবে তিনি বারবার মাফ চাইতে পারবেন না। ইখলাসের সাথে মানে হল এসব কাজের জন্য তিনি আমেরিকান বা অন্য কোন তাগুতের কাছ থেকে টাকাপয়সা নেন না।
লিন্ডা সর্সুর নাম্নী একজন ‘মুসলিম’ এক্টিভিস্ট আছে, যে র*্যান্ডের সংজ্ঞানুযায়ী মডার্নিস্টদের কাতারে পড়বে। সমকামীদের অধিকার আদায়ে এই মহিলা এতই উচ্চকিত যে হালাল-হারামের কোন তোয়াক্কাই সে করে না। ডক্টর ইয়াসির কাযি কিন্তু এখানে লিন্ডার সাথে একমত নন। বেশ ক বছর আগে এই দুইজনকে মুখোমুখি বসিয়ে সাক্ষাৎকার নেয় আরেক মজার চিজ মেহেদি হাসান। লিন্ডা আর মেহেদি বলতে গেলে এখানে একই পক্ষে ছিল যারা দুজন মিলে ইয়াসির কাযিকে চেপে ধরে। এমন না যে ইয়াসির কাযি তখন সমকামিতাকে হালাল বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু এতটুকু মানতে বাধ্য হন যে, আমেরিকান সরকার সমকামীদের অধিকারে বাধা দেওয়ার কেউ না। এর কিছু পরে কোন একটা নির্বাচনী পদে লিন্ডা সর্সুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। মুসলিমদের প্রতিনিধি হিসেবে ইয়াসির কাযি তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। অতি মডারেটদের বাদ দিলে বিরাট সংখ্যক মুসলিমদের মধ্যেই এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা যায়। ইয়াসির কাযি সাহেব তখন খুব ইন্টারেস্টিং একটা উত্তর দেন। তিনি বলেন যে, আমাদের সামনে যে ‘সুগার-কোটেড’, ‘চাইল্ড-ফ্রেন্ডলি’ ইসলামের ইতিহাস শোনানো হয়, তা সত্য না। ইসলামের ইতিহাসে বেশিরভাগ মুসলিম শাসকই ছিল ভাল-মন্দের মিশ্রণ। কেউ ফেরেশতা ছিল না। কিন্তু বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে মুসলিমরা এসব শাসককে মেনে নিয়েছিল। এ যুক্তিতেই নাকি তিনি মন্দের ভাল হিসেবে লিন্ডাকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বেশ! কিন্তু মুজাহিদদের প্রসঙ্গ আসলে এনাদের মত মানুষরা আবার ফেরেশতাদের জামাত আশা করেন। যেন মুজাহিদদের কখনো ইজতিহাদি ভুল হতে পারে না, অথবা একাধিক জায়েযের মধ্যে যেকোন একটার উপর আমল করতে পারে না। ইজতিহাদি ভুল বাদ দিলাম। ধরলাম অকাট্য কোন বিষয়েই মুজাহিদদের ভুল হল। তাতেই বা বিশ্বব্যাপী জিহাদের ফরযিয়্যাতকে খারিজ করে দেওয়ার কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে? ‘সুগার-কোটেড’, ‘চাইল্ড-ফ্রেন্ডলি’ ইসলাম যে কারা প্রচার করে, তা তো আর বোঝার বাকি নেই।
আশার কথা হল, মডারেটদের প্রিয় এসকল আলেমরাও কিছু ব্যাপারে সত্য কথা উচ্চারণ করে মডারেট-মডার্নিস্ট আর কাফিরদের কাছে সহানুভূতি হারাচ্ছে। এই গোষ্ঠীগুলো কাফেরদেরকে জান্নাতে পাঠাতে খুবই উদগ্রীব। যত যাই হোক, কুরআন-হাদীসের সাথে এত বছর কাটানো ব্যক্তিরা যত মডারেটগিরিই দেখাক, এত জঘন্য মিথ্যা সামনে চলে আসলে কিছুটা নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। তো এ ব্যাপারে ডক্টর ইয়াসির কাযি সত্য কথাটাই বলে দেন। মুসলিমরা ছাড়া কেউ জান্নাতে যাবে না। তিনি এও বলে দেন যে, কারো ঈমান গোপন থাকলে, কারো কাছে ইসলামের দাওয়াত না পৌঁছলে তাদের কী হবে, তা আল্লাহ্*র এখতিয়ারে। কিন্তু ইসলামের একজন মুখপাত্র হিসেবে তার দায়িত্ব হলো মূলনীতিটা প্রচার করা। মডারেট-মডার্নিস্ট এবং কাফিরদের তাতে দেখার মত প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। “এই আপনার মত এক্সট্রিমিস্টদের ঘৃণা ছড়ানোর কারণেই আজকে আমরা কাফির প্রভুদের সাথে সুখেশান্তিতে বাস করতে পারি না।“
চোখ-কান খোলা রাখলে যেকোন মুখলিস মুসলিমেরই একসময় উপলব্ধি হতে বাধ্য যে, কাফির আর কাফিরপ্রেমীদের সাথে দ্বীন নিয়ে সদাই করে কোন লাভ নেই। যতদিন না তারা আমাদেরকে তাদের মত কাফির বানিয়ে ছাড়ছে, তার আগ পর্যন্ত তারা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে না। এবং নামাজ, রোজা, হজ, দাওয়ার মতই জিহাদ-কিতালকেও একটি ইসলামী বিধান হিসেবেই দেখতে হবে। অবাস্তব-অসম্ভব কোন শর্ত আরোপ করে এই ইবাদতকে থামিয়ে রাখতে চাইলে হবে না।
কথা হল, একই কথা কি তিনি জিহাদ-কিতালের ব্যাপারে খাটাতে পারতেন না? আমি কারো গোপন আমলের কথা জানি না। কিন্তু বাহ্যিক অবস্থা দেখে আমরা এটাই বুঝতে পারি যে, তিনি কখনো কোনো যুদ্ধের ময়দানে থাকেননি। উম্মাহর বিভিন্ন ভূখণ্ডে বিভিন্ন কিসিমের শত্রু, বিভিন্নরকম পরিস্থিতি, বিভিন্ন মেজাজের মানুষ, বিভিন্ন রকমের ভৌগলিক অবস্থা। এমতাবস্থায় ইনসাফের দাবি কি এটাই হত না যে, জিহাদের দিকে আহ্বানকারী মুসলিমদের ঢালাওভাবে খারেজি তকমা না দিয়ে রয়ে সয়ে মন্তব্য করা? অন্তত ডক্টর জাকির নায়েকের মতও যদি তিনি বলে দিতেন বিবিসি-সিএনএনের খবরের ভিত্তিতে কিছু বলতে পারবেন না, কোন নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তির ব্যাপারে মন্তব্য না করে কেবল মূলনীতি নিয়ে তাত্ত্বিক আলাপ সেরে ফেলতেন, তাহলেও তাগুতের কাছ থেকে পিঠ বাঁচান যেত। কিন্তু তিনি তা না করে অত্যন্ত ইখলাসের সাথে মুজাহিদ-খারেজি নির্বিশেষে সবাইকে খারেজি ট্যাগ দিয়েছেন। প্রতিটা অপারেশনের খবর আসার পর অত্যন্ত ইখলাসের সাথে প্রকাশ্যে কন্ডেম কন্ডেম খেলেছেন, যতদিন না তিনি ক্লান্ত হয়ে শেষমেশ বলেছেন যে, প্রতিটা হামলার পর এভাবে তিনি বারবার মাফ চাইতে পারবেন না। ইখলাসের সাথে মানে হল এসব কাজের জন্য তিনি আমেরিকান বা অন্য কোন তাগুতের কাছ থেকে টাকাপয়সা নেন না।
লিন্ডা সর্সুর নাম্নী একজন ‘মুসলিম’ এক্টিভিস্ট আছে, যে র*্যান্ডের সংজ্ঞানুযায়ী মডার্নিস্টদের কাতারে পড়বে। সমকামীদের অধিকার আদায়ে এই মহিলা এতই উচ্চকিত যে হালাল-হারামের কোন তোয়াক্কাই সে করে না। ডক্টর ইয়াসির কাযি কিন্তু এখানে লিন্ডার সাথে একমত নন। বেশ ক বছর আগে এই দুইজনকে মুখোমুখি বসিয়ে সাক্ষাৎকার নেয় আরেক মজার চিজ মেহেদি হাসান। লিন্ডা আর মেহেদি বলতে গেলে এখানে একই পক্ষে ছিল যারা দুজন মিলে ইয়াসির কাযিকে চেপে ধরে। এমন না যে ইয়াসির কাযি তখন সমকামিতাকে হালাল বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু এতটুকু মানতে বাধ্য হন যে, আমেরিকান সরকার সমকামীদের অধিকারে বাধা দেওয়ার কেউ না। এর কিছু পরে কোন একটা নির্বাচনী পদে লিন্ডা সর্সুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। মুসলিমদের প্রতিনিধি হিসেবে ইয়াসির কাযি তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। অতি মডারেটদের বাদ দিলে বিরাট সংখ্যক মুসলিমদের মধ্যেই এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা যায়। ইয়াসির কাযি সাহেব তখন খুব ইন্টারেস্টিং একটা উত্তর দেন। তিনি বলেন যে, আমাদের সামনে যে ‘সুগার-কোটেড’, ‘চাইল্ড-ফ্রেন্ডলি’ ইসলামের ইতিহাস শোনানো হয়, তা সত্য না। ইসলামের ইতিহাসে বেশিরভাগ মুসলিম শাসকই ছিল ভাল-মন্দের মিশ্রণ। কেউ ফেরেশতা ছিল না। কিন্তু বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে মুসলিমরা এসব শাসককে মেনে নিয়েছিল। এ যুক্তিতেই নাকি তিনি মন্দের ভাল হিসেবে লিন্ডাকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বেশ! কিন্তু মুজাহিদদের প্রসঙ্গ আসলে এনাদের মত মানুষরা আবার ফেরেশতাদের জামাত আশা করেন। যেন মুজাহিদদের কখনো ইজতিহাদি ভুল হতে পারে না, অথবা একাধিক জায়েযের মধ্যে যেকোন একটার উপর আমল করতে পারে না। ইজতিহাদি ভুল বাদ দিলাম। ধরলাম অকাট্য কোন বিষয়েই মুজাহিদদের ভুল হল। তাতেই বা বিশ্বব্যাপী জিহাদের ফরযিয়্যাতকে খারিজ করে দেওয়ার কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে? ‘সুগার-কোটেড’, ‘চাইল্ড-ফ্রেন্ডলি’ ইসলাম যে কারা প্রচার করে, তা তো আর বোঝার বাকি নেই।
আশার কথা হল, মডারেটদের প্রিয় এসকল আলেমরাও কিছু ব্যাপারে সত্য কথা উচ্চারণ করে মডারেট-মডার্নিস্ট আর কাফিরদের কাছে সহানুভূতি হারাচ্ছে। এই গোষ্ঠীগুলো কাফেরদেরকে জান্নাতে পাঠাতে খুবই উদগ্রীব। যত যাই হোক, কুরআন-হাদীসের সাথে এত বছর কাটানো ব্যক্তিরা যত মডারেটগিরিই দেখাক, এত জঘন্য মিথ্যা সামনে চলে আসলে কিছুটা নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। তো এ ব্যাপারে ডক্টর ইয়াসির কাযি সত্য কথাটাই বলে দেন। মুসলিমরা ছাড়া কেউ জান্নাতে যাবে না। তিনি এও বলে দেন যে, কারো ঈমান গোপন থাকলে, কারো কাছে ইসলামের দাওয়াত না পৌঁছলে তাদের কী হবে, তা আল্লাহ্*র এখতিয়ারে। কিন্তু ইসলামের একজন মুখপাত্র হিসেবে তার দায়িত্ব হলো মূলনীতিটা প্রচার করা। মডারেট-মডার্নিস্ট এবং কাফিরদের তাতে দেখার মত প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। “এই আপনার মত এক্সট্রিমিস্টদের ঘৃণা ছড়ানোর কারণেই আজকে আমরা কাফির প্রভুদের সাথে সুখেশান্তিতে বাস করতে পারি না।“
চোখ-কান খোলা রাখলে যেকোন মুখলিস মুসলিমেরই একসময় উপলব্ধি হতে বাধ্য যে, কাফির আর কাফিরপ্রেমীদের সাথে দ্বীন নিয়ে সদাই করে কোন লাভ নেই। যতদিন না তারা আমাদেরকে তাদের মত কাফির বানিয়ে ছাড়ছে, তার আগ পর্যন্ত তারা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে না। এবং নামাজ, রোজা, হজ, দাওয়ার মতই জিহাদ-কিতালকেও একটি ইসলামী বিধান হিসেবেই দেখতে হবে। অবাস্তব-অসম্ভব কোন শর্ত আরোপ করে এই ইবাদতকে থামিয়ে রাখতে চাইলে হবে না।
Comment