আসুন! একটু চেষ্টা করে দেখি পারি কিনা?
১। মাদ্রাসা, মাসজিদে, স্কুল, কলেজে কিংবা কোন কাজে রাস্তায় বের হয়েছি। রাস্তার দুপাশে হরেক রকমের খাবারের দোকান। মন তাড়া করছে কিছু খাওয়ার জন্য। অথচ এই তো আমি সকালে নাস্তা করেছি। আবার দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও আমার ঘরে আছে।
হে ভাই তখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবারটি গ্রহণ করার আগে আমরা একটু ভাবতে পারি কি আমাদের সেসকল ভাই বোনদের কথা , যারা আজ কুফফাদের হামলায় আহারহীন জীবনযাপন করছেন?
২। আমার প্রয়োজন পরিমাণ জামা-কাপড় আছে। আমার এতটুকু অভাব নেই যে, বস্ত্রহীন অবস্থায় আমাকে রাস্তায় বের হতে হয়। কিন্ত এরপরও আমার মনের বাসনা আরেকটি সুন্দর জামা তৈরী করা। আমি মনকে খুশি করার জন্য হয়তো তাই করে চলেছি।
কিন্ত হে ভাই! যখন আমাদের মন প্রয়োজনের অতিরিক্ত জামা চাচ্ছে, তখন কি আমরা স্মরণ করতে পারি আমাদের সেসকল মাজলুম ভাই-বোনদের কথা ,যারা আজ বস্ত্রহীনতাকেই বস্ত্ররুপে গ্রহণ করেছেন?
৩।বিকেলে কিংবা রাতে, হাটে কিংবা ঘাটে বন্ধু মহলের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই আমরা খরচ করে চলেছি কত অর্থ। কিন্ত হে ভাই! এভাবে অর্থ উড়ানোর সময় কি আমাদের এখনো আছে?
৪। যখন উম্মাহর বীর সেনানীরা আল্লাহর দীনকে সমুন্নত করতে ঘর ছেড়ে অবস্থান করছেন ময়দানে। হে ভাই রবের নামে শপথ করে বলুন! তখন কি আমাদের জন্য আরামের বিছানায় রাত্রিযাপন করা রবের কাছে পছন্দনীয় হবে?
৫। যখন উম্মাহর একাংশের মা-বোনেরা আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার জন্য নিজের স্বর্ণ-গহনা এমনকি কলিজার টুকরা সন্তানদেরকে পর্যন্ত কোরবান করে দিয়েছেন, তখন উম্মাহর আরেক অংশ কিভাবে তাদের মা-বোন, স্ত্রীদেরকে এখনো অলঙ্কারে সুসজ্জিত করে রাখে?
হে ভাই! যদি আমরা ভেবে থাকি অনাহারে, অর্ধাহারে কষ্টে জিবিনযাপন করতে থাকা আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের কথা, যদি আমরা ভেবে থাকি আমাদের বস্ত্রহীন মুসলিম ভাই-বোনদের কথা, যদি আমরা মনে করে থাকি এখন আর সময় নেই বন্ধু মহলের মন জয়ের নেশায় অর্থ খরচের, এখন আর সমচীন নয় আরামের বিছানায় ঘুমানোর ও মা-বোন, স্ত্রীকে অলংকারে সুসজ্জিত করা; তাহলে আসুন! যখন আমাদের নফস আমাদেরকে তাড়া করে অতিরিক্ত খাবের পেছনে; তখন অতিরিক্ত খাবারটি গ্রহণ না করে সে অর্থটি হেসেব করে জমা করে রাখি আলাদাভাবে। যাতে করে আমাদের এ-অর্থে অন্তত কিছুটা হলেও মাজলুমানের ক্ষুধা মেটে।
আসুন! যখন মন অতিরিক্ত জামার পেছনে আমাদেরকে ছুটতে বলে, তখন আমরা মনকে প্রবোধ দেই জান্নাতের রেশমি পোশাকের; আর টাকাটি হিসেব করে রেখে দেই আলাদাভাবে। যাতে এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে আমাদের সেসকল মাজলুম ভাই-বোনেরা , যারা আজ বস্ত্রহীনতাকে বস্ত্ররুপে গ্রহণ করে নিয়েছেন।
প্রিয় ভাই যদি আমরা ভেবে থাকি আমাদের বীর মুজাহিদীন ভাইদের কথা, তাহলে আসুন! এখন আর অর্থ খরচ বন্ধুর মন জয়, আরামের বিছানা আর স্ত্রির অলঙ্কারের জন্য নয়! বরং, এখন এই অর্থগুলোই আমরা খরচ করি মুজাহিদীনদের অস্ত্র কিংবা কয়েকটি বুলেট কেনার জন্য।
হে ভাই! আমরা কি চাইনা আমাদের অর্থে কেনা বুলেটগুলো আবু জেহেলদের বক্ষগুলো ছিদ্র করে রক্ত প্রবাহিত করুক? একটু আহারে আনন্দের হাসি ফুটুক নিষ্পাপ চাহনিগুলোতে? আর বস্ত্রহীনদের ভগ্ন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ কিছুটা হলেও স্থীর থাকুক?
তাহলে ভাই আর দেরী কেন? আসুন না! একটু চেষ্টা করে দেখি পারি কিনা?
Comment