ইসলামিক ইমারত অব আফগানিস্থান এর বিশ্বাসীদের আমির মুল্লাহ মুহাম্মাদ উমার (রহ)এর সাথে সাক্ষাৎকার।
প্রিয় সম্মানিত,
আপনার প্রশ্নের উত্তর বেশী গুরুত্ব নেই, কারন ব্যক্তির জন্য তার নিজের স্বার্থেই প্রশ্নকর্তার উত্তর দেওয়া স্বাভাবিক। সুতরাং যদি ইহা তার স্বার্থের দিকে থেকে নেতিবাচক হয় সে উত্তর দিতে অস্বীকার করে এবং যদি ইহা তার স্বার্থে ইতিবাচক হয় তাহলে সে উত্তর দেয়। তবে আমি যে কথা বলব তা থেকে আপনি আপনার কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবেন, তাতে অবশিষ্ঠ বিশ্বাসীদের জন্য ঈঙ্গিত ও উপদেশ থাকবে।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।
আমরা তার প্রশংসা করি, তার কাছেই সাহায্য এবং ক্ষমার জন্য প্রার্থনা করি এবং তার কাছেই আশ্রয় খুঁজি নিজেদের এবং নিজেদের কর্মের খারাপি হতে এবং আমি সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা এবং রসুল, অতপর:
সম্মানিত ভাইয়েরা, আমি আপনাদের কাছে সংক্ষেপে এবং পূঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আমার কিছু জীবনী এবং আমি যা করেছি তা ব্যাখ্যা করব যেন আপনারা ইত্তিয়াজ এবং শিক্ষা নিতে পারেন। যদিও সেই শিক্ষা এবং ইত্তিয়াজ মূলত কোরআন হতে, যারা ইহা পরীক্ষা এবং বিবেচনা করতে চায়... তাদের জন্য এর চাইতে উত্তম কোন ঈঙ্গিত নেই।
তৎসত্ত্বেও আমার ব্যাপারে কিছু আমি আপনাকে বলবঃ
শৈশব কাল এবং শিক্ষাঃছো
টবেলাতেই, আমার যখন তিন বছর বয়স তখন আমি অনাথ জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করি, তখন আমি আমার চাচার কাছে বড় হই। শৈশব কাল থেকে ১৮/১৯ বছর পযর্ন্ত আমি ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করি। কমিউনিস্টরা যখন আক্রমন করেছিল আমি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ গ্রহন করেছিলাম, তারা আফগানিস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি আমার ধর্মীয় শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আবার একটি মাদরাসায় ফিরে এসেছিলাম যা আমরা জিহাদ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম।
তালিবান আন্দোলনের উত্থানঃ
মুজাহিদীনের সরকার যা কমিউনিজমের পতনের পর দেশের শাষন ক্ষমতা হাতে নিয়েছিল, তা সারা বিশ্ব দেখেছে এবং জেনেছে তাতে শেষ হয়েছিল। জিহাদী সংগঠন সমুহের মধ্যে অভ্যন্তরীন যুদ্ধের করনে আফগানিস্তানে কোন সরকার বা শাষক ছিলনা। বিশ্রঙ্খলা লোকজনের জীবনে আঘাত এনেছিল এবং মুসলমানরা দুঃখ এবং মনঃকষ্ট ভোগ করছিল। দূর্নীতি, অবিচার দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল এবং লোকজন দুঃখকষ্ট ও মহাদূর্ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। আমি সঙ্গী খোঁজার জন্য চিন্তা ভাবনা করলাম, যারা কিনা তাদের ইবাদতে আল্লাহর প্রতি আন্তরিক এবং জিহাদের জন্য অত্যন্ত আগ্রহশীল এবং ইসলামের অবস্থানের জন্য মনঃকষ্টে থাকে। কারন এই ধরনের লোকেরাই দুঃখ কষ্টকে সহ্য করতে পারে এবং আল্লাহর জন্য জিহাদে অবিচল থাকে। সুতরাং আমি জ্ঞানী ছাত্রদের মধ্য থেকে তাদের কে খুঁজেছি এবং তাদের কে প্রস্তাব দিয়েছি মুসলমান দের উপর থেকে মন্দ পরিবর্তনের এবং অবিচার দূর করার কর্তব্য পালনের জন্য। সুতরাং তাদের কেউ আমার সাথে একমত হয়েছে এবং এই পথের সাথী হয়েছে।
আমরা শীঘ্রই কাজ শুরু করেছিলাম এবং আমরা আমাদের দূর্বলতা ওা সংখ্যার স্বল্পতা নিয়ে চিন্তা করিনি, এমন কি খাদ্যের ব্যাপারে যা আমাদের প্রয়োজন কারন আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ওয়াদা তাদের প্রতি যারা তার দ্বীনক সাহায্য করবে তিনি তাদেরকে তাঁর ক্ষমতা দিয়ে সাহায্য করবেন, সুতরাং আমরা আমাদের বিশ্বাস এবং নির্ভরশীলতা আল্লাহর উপর রেখেছি। আমরা কাজ শুরু করেছিলাম এবং ফলাফল ছিল ইতিবাচক, আর আমরা এই প্রান্তে পৌছেছি।
তালেবানদের পশ্চাতে কারা রয়েছে?ঃ
এখন সমগ্র বিশ্ব জানে আফগানিস্থানে কি ঘটছে এবং জানে পূর্বে কি অবস্থা ছিল এবং এখন কি অবস্থা। এই কথাগুলি কেবলমাত্র আকীদা সম্পন্ন মানুষেরাই বুঝতে পারবে, কিন্তু অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। তারা এমন ও বলে যে আমরা একটি রাজনৈতিকদল কেউ একজন আমাদের পেছনে আছে অথবা কিভাবে আমরা এই অল্প সময়ে সকল কাজ সম্পাদন করলাম এবং সামান্য সামর্থ্য দিয়ে সমগ্র দেশকে মন্দকাজ এবং ফিতনা থেকে রক্ষা করলাম এবং সাহসিকতা পূর্ন এই অভিযানে সাফল্য লাভ করলাম।
বিষয়টি সম্পর্কে আমি বলতে চাই যে, আল্লাহর সামর্থ্যের কাছে ইহা অপ্রতুল নয় বা কঠিন নয়। যেহেতু আল্লাহর সাহায্য এবং সহয়োগীতা তাদের জন্য যারা নিজেদেরকে আল্লাহর দ্বীনের জন্য উৎসর্গ করে এবং আমরা সকল কিছু করেছি আমাদের ধর্মীয় কর্তব্যবোধ থেকে।
নিষেধাজ্ঞায় তালেবানদের অবস্থানঃ
আমাদের উপর রাশিয়া এবং আমেরিকার নিষেধ আরোপ করা নতুন কোন বিষয় নয়, এই নিষেধাজ্ঞা আল্লাহর রসুলের (ﷺ) উপর করা হয়েছিল, একই কারনে এখন আমাদের উপর করা হয়েছে।
আমরা এই নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করব যেমন ভাবে আল্লাহর রসুল (সাঃ) করেছিলেন কোন কিছুই বেশী নয় এবং কোন কিছুই কম নয়। মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মের উপর ধৈর্য্য রাখতে হবে এবং তাদের কর্তব্য পালন করতে হবে যা আল্লাহ কর্তৃক তাদের উপর প্রদত্ত হয়েছে। ইসলাম মিথ্যার সাথে পরিবেশিত হয় না।
তালেবান এবং চরম পন্থাঃ
চরমপন্থী সম্পর্কে আমেরিকা এবং রাশিয়া যা বলছে আমরা সে রকম নই, বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি উভয়ই ইসলামে ঘৃনিত। বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ির বিষয় একজন মুসলিম দ্ধারা নির্ধারিত হয় যিনি ইসলাম সম্পর্কে জানেন, কিন্তু একজন কাফির কে যে সে ইসলামের বিষয় বাড়াবাড়ি এবং অবহেলা সম্পর্কে বিষয় বস্তু নির্ধারন করতে পারে! ইহা ন্যায় সংগত নয়। তারা যা বলছে তা শুধুই কথা।
যারা আমাদের কাজে সন্দেহ পোষন করে তারা আমাদের কাছে আসতে পারে এবং আমাদের কাজ নিবিড় পর্যবেক্ষন করতে পারে, অতপর আল্লাহর কিতাব এবং রসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সুন্নতে যা আছে তা উপস্থিত করবে, অতএব যদি আমরা ইসলামী শরীয়তের ঠিক পথে থাকি, তাহলে এটাই আমাদের পথ এবং আমরা ইহা হতে বিচ্চুৎ হব না। যদি ইহা ঘটে এবং বিচ্চুৎ হই তাহলে আমরা প্রকৃত মুসলিম হতে পারব না, আমরা কেবল নামে মুসলিম হব।
কিন্তু বর্তমান সময় হল মিডিয়ার সময়, যাদের অনেক মিডিয়া আউটলেট আছে তারা অনেক শ্রোতা পাবে এবং লোকজনের মধ্য থেকে তারা কাজের স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু আমাদের মিডিয়া আউটলেট স্বল্প এবং সীমিত এবং আমরা আমাদের জন্য আল্লাহর সাহায্যের উপর নির্ভরশীল এবং আমরা মিডিয়াতে অধিক হারে যাই না।
তালেবানদের শক্তির উৎসঃ
তালেবান আন্দোলন এবং পদ্ধতিতে আধ্যাত্মিক শক্তি এবং নৈতিক প্রভাব আছে। রাশিয়া এবং আমেরিকার দিকে তাকান, ইতিহাসে এটা কখনও ঘটেনি যে রাশিয়া এবং আমেরিকা আফগানিস্থানের মত কোন ছোট একটি দেশের যুদ্ধে একই পদতলে একত্রিত হয়েছে। তাদের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা আফগানিস্তান এবং তালিবান আন্দোলনের বিরুদ্ধে একই খাতে দাঁড়িয়েছে। উহা থেকে এটা প্রকাশ পায় যে তালিবানদের নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে যা আমেরিকা এবং রাশিয়াকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের সর্ম্পতে যা কিছু প্রচার করছে তা সবই খাঁটি মিথ্যা। বাস্তবে তারা ঐ নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষমতাকে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের আত্ম বিশ্বাস আল্লাহর উপর এবং আমাদের নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাস বড় এমন কি সারা বিশ্ব যদি আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় আমরা আমাদের নীতি ও বিশ্বাস থেকে সরে দাড়াব না এবং আমাদের পদক্ষেপ থেকে বিচ্যুৎ হব না ইনশাআল্লাহ কারন আমরা যা বিশ্বাস করি তাই ই আমাদের ধর্ম এবং ইহা ত্যাগ করব না, কারন আমাদের ধর্ম ত্যাগ একজন মুসলিমের মৃত্যুর সমান। একজন মুসলিমের প্রকৃত মৃত্যু হল তার ধর্মত্যাগ করা বা ধর্মকে অবজ্ঞা করা অথবা ইহার নিয়ম নীতির আমলকে পরিত্যাগ করা। যদি ধর্মীয় মৃত্যুর সাথে তুলনা করি তাহলে বাহ্যিক মৃত্যু কিছুইনা। যদি আমরা জীবন চাই তাহলে আমাদের ধর্মতে টিকে থাকাই জীবন এবং যদি কোন জীবন না থাকে তাহলে ইহার মৃত্যু হোক। মৃত্যু হল এমন একটি পেয়ালা যেখান থেকে সবাইকে পান করতে হবে।
সুতরাং প্রত্যেক মুসলমান কে নিজেকে নিজের পূনর্গঠন করতে হবে এবং তার রবের উপর বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে হবে। অতঃপর সে দুনিয়া ও পরকালে সাফল্য ও বিজয় লাভ করবে।
তালিবানদের ভবিষ্যৎঃ
আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন, শৈশবকাল ও অনাথ জীবন নিয়ে যা কিছু উল্লেখ করেছি এবং যেখানে আমাদের বিষয় বস্তু পৌঁছেছে, এগুলো হল সে সকল কথা যা আকীদা সম্পন্ন লোকদের উপকার করবে এবং তা থেকে সুবিধা গ্রহন করতে পারবে। যাদের যথার্থ মানসিকতা আছে তাদের অবশ্যই সর্তক হওয়া উচিৎ যে এই বিষয় সমুহ ঐশ্বরিক বিধান। আল্লাহ সামর্থ্যবান এবং কোন কিছুই তাকে অযোগ্য করতে পারে না এবং তিনি যা চান তাই করেন। আমরা যা বিশ্বাস করি তার উপর ভিত্তি করে আছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আল্লাহ যা আদেশ করেছেন এবং লিখেছেন তাই-ই আমাদের হবে। আমেরিকানরা এবং রাশিয়ানরা কোন কিছু করতে সমর্থ হবে না। এ সবই খোদাই বিধান যা আল্লাহর সামর্থ ও দৃষ্টির মধ্যে যেহেতু আমরা যা করছি অথবা যা আশা করছি তার সফলতা অথবা ব্যর্থতা আমাদের অথবা আমেরিকার কাজ নয়। এই কথাগুলি একজন কাফির অথবা যার ঈমানের আকীদা নেই সে বুঝতে পারবে না।
।মুসলিমদের তাদের রবের আদেশ সমন্ধে সতর্ক থাকা উচিত যা পবিত্র কিতাবে উল্লেখ আছে। এবং আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী তাদের একটা ফয়সালা খোঁজা উচিৎ। আমার কথা সবই আমার নিজের জন্য ও মুসলিমর জন্য ইংঙ্গিত ও শিক্ষা এবং আমি যা উল্লেখ করেছি তাছাড়া আমার আর বেশী কিছু নেই। আমি আপনাকে আল্লাহর তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দিচ্ছি।
আমীরুল মুমিনিন ইসলামিক ইমারত অব আফগানিস্থান,মুল্লাহ মুহাম্মদ উমার (মুজাহিদ)
প্রিয় সম্মানিত,
আপনার প্রশ্নের উত্তর বেশী গুরুত্ব নেই, কারন ব্যক্তির জন্য তার নিজের স্বার্থেই প্রশ্নকর্তার উত্তর দেওয়া স্বাভাবিক। সুতরাং যদি ইহা তার স্বার্থের দিকে থেকে নেতিবাচক হয় সে উত্তর দিতে অস্বীকার করে এবং যদি ইহা তার স্বার্থে ইতিবাচক হয় তাহলে সে উত্তর দেয়। তবে আমি যে কথা বলব তা থেকে আপনি আপনার কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবেন, তাতে অবশিষ্ঠ বিশ্বাসীদের জন্য ঈঙ্গিত ও উপদেশ থাকবে।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।
আমরা তার প্রশংসা করি, তার কাছেই সাহায্য এবং ক্ষমার জন্য প্রার্থনা করি এবং তার কাছেই আশ্রয় খুঁজি নিজেদের এবং নিজেদের কর্মের খারাপি হতে এবং আমি সাক্ষ্য দেই যে মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা এবং রসুল, অতপর:
সম্মানিত ভাইয়েরা, আমি আপনাদের কাছে সংক্ষেপে এবং পূঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আমার কিছু জীবনী এবং আমি যা করেছি তা ব্যাখ্যা করব যেন আপনারা ইত্তিয়াজ এবং শিক্ষা নিতে পারেন। যদিও সেই শিক্ষা এবং ইত্তিয়াজ মূলত কোরআন হতে, যারা ইহা পরীক্ষা এবং বিবেচনা করতে চায়... তাদের জন্য এর চাইতে উত্তম কোন ঈঙ্গিত নেই।
তৎসত্ত্বেও আমার ব্যাপারে কিছু আমি আপনাকে বলবঃ
শৈশব কাল এবং শিক্ষাঃছো
টবেলাতেই, আমার যখন তিন বছর বয়স তখন আমি অনাথ জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করি, তখন আমি আমার চাচার কাছে বড় হই। শৈশব কাল থেকে ১৮/১৯ বছর পযর্ন্ত আমি ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করি। কমিউনিস্টরা যখন আক্রমন করেছিল আমি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ গ্রহন করেছিলাম, তারা আফগানিস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি আমার ধর্মীয় শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আবার একটি মাদরাসায় ফিরে এসেছিলাম যা আমরা জিহাদ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম।
তালিবান আন্দোলনের উত্থানঃ
মুজাহিদীনের সরকার যা কমিউনিজমের পতনের পর দেশের শাষন ক্ষমতা হাতে নিয়েছিল, তা সারা বিশ্ব দেখেছে এবং জেনেছে তাতে শেষ হয়েছিল। জিহাদী সংগঠন সমুহের মধ্যে অভ্যন্তরীন যুদ্ধের করনে আফগানিস্তানে কোন সরকার বা শাষক ছিলনা। বিশ্রঙ্খলা লোকজনের জীবনে আঘাত এনেছিল এবং মুসলমানরা দুঃখ এবং মনঃকষ্ট ভোগ করছিল। দূর্নীতি, অবিচার দেশে ছড়িয়ে পড়ছিল এবং লোকজন দুঃখকষ্ট ও মহাদূর্ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। আমি সঙ্গী খোঁজার জন্য চিন্তা ভাবনা করলাম, যারা কিনা তাদের ইবাদতে আল্লাহর প্রতি আন্তরিক এবং জিহাদের জন্য অত্যন্ত আগ্রহশীল এবং ইসলামের অবস্থানের জন্য মনঃকষ্টে থাকে। কারন এই ধরনের লোকেরাই দুঃখ কষ্টকে সহ্য করতে পারে এবং আল্লাহর জন্য জিহাদে অবিচল থাকে। সুতরাং আমি জ্ঞানী ছাত্রদের মধ্য থেকে তাদের কে খুঁজেছি এবং তাদের কে প্রস্তাব দিয়েছি মুসলমান দের উপর থেকে মন্দ পরিবর্তনের এবং অবিচার দূর করার কর্তব্য পালনের জন্য। সুতরাং তাদের কেউ আমার সাথে একমত হয়েছে এবং এই পথের সাথী হয়েছে।
আমরা শীঘ্রই কাজ শুরু করেছিলাম এবং আমরা আমাদের দূর্বলতা ওা সংখ্যার স্বল্পতা নিয়ে চিন্তা করিনি, এমন কি খাদ্যের ব্যাপারে যা আমাদের প্রয়োজন কারন আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ওয়াদা তাদের প্রতি যারা তার দ্বীনক সাহায্য করবে তিনি তাদেরকে তাঁর ক্ষমতা দিয়ে সাহায্য করবেন, সুতরাং আমরা আমাদের বিশ্বাস এবং নির্ভরশীলতা আল্লাহর উপর রেখেছি। আমরা কাজ শুরু করেছিলাম এবং ফলাফল ছিল ইতিবাচক, আর আমরা এই প্রান্তে পৌছেছি।
তালেবানদের পশ্চাতে কারা রয়েছে?ঃ
এখন সমগ্র বিশ্ব জানে আফগানিস্থানে কি ঘটছে এবং জানে পূর্বে কি অবস্থা ছিল এবং এখন কি অবস্থা। এই কথাগুলি কেবলমাত্র আকীদা সম্পন্ন মানুষেরাই বুঝতে পারবে, কিন্তু অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। তারা এমন ও বলে যে আমরা একটি রাজনৈতিকদল কেউ একজন আমাদের পেছনে আছে অথবা কিভাবে আমরা এই অল্প সময়ে সকল কাজ সম্পাদন করলাম এবং সামান্য সামর্থ্য দিয়ে সমগ্র দেশকে মন্দকাজ এবং ফিতনা থেকে রক্ষা করলাম এবং সাহসিকতা পূর্ন এই অভিযানে সাফল্য লাভ করলাম।
বিষয়টি সম্পর্কে আমি বলতে চাই যে, আল্লাহর সামর্থ্যের কাছে ইহা অপ্রতুল নয় বা কঠিন নয়। যেহেতু আল্লাহর সাহায্য এবং সহয়োগীতা তাদের জন্য যারা নিজেদেরকে আল্লাহর দ্বীনের জন্য উৎসর্গ করে এবং আমরা সকল কিছু করেছি আমাদের ধর্মীয় কর্তব্যবোধ থেকে।
নিষেধাজ্ঞায় তালেবানদের অবস্থানঃ
আমাদের উপর রাশিয়া এবং আমেরিকার নিষেধ আরোপ করা নতুন কোন বিষয় নয়, এই নিষেধাজ্ঞা আল্লাহর রসুলের (ﷺ) উপর করা হয়েছিল, একই কারনে এখন আমাদের উপর করা হয়েছে।
আমরা এই নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করব যেমন ভাবে আল্লাহর রসুল (সাঃ) করেছিলেন কোন কিছুই বেশী নয় এবং কোন কিছুই কম নয়। মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মের উপর ধৈর্য্য রাখতে হবে এবং তাদের কর্তব্য পালন করতে হবে যা আল্লাহ কর্তৃক তাদের উপর প্রদত্ত হয়েছে। ইসলাম মিথ্যার সাথে পরিবেশিত হয় না।
তালেবান এবং চরম পন্থাঃ
চরমপন্থী সম্পর্কে আমেরিকা এবং রাশিয়া যা বলছে আমরা সে রকম নই, বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি উভয়ই ইসলামে ঘৃনিত। বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ির বিষয় একজন মুসলিম দ্ধারা নির্ধারিত হয় যিনি ইসলাম সম্পর্কে জানেন, কিন্তু একজন কাফির কে যে সে ইসলামের বিষয় বাড়াবাড়ি এবং অবহেলা সম্পর্কে বিষয় বস্তু নির্ধারন করতে পারে! ইহা ন্যায় সংগত নয়। তারা যা বলছে তা শুধুই কথা।
যারা আমাদের কাজে সন্দেহ পোষন করে তারা আমাদের কাছে আসতে পারে এবং আমাদের কাজ নিবিড় পর্যবেক্ষন করতে পারে, অতপর আল্লাহর কিতাব এবং রসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সুন্নতে যা আছে তা উপস্থিত করবে, অতএব যদি আমরা ইসলামী শরীয়তের ঠিক পথে থাকি, তাহলে এটাই আমাদের পথ এবং আমরা ইহা হতে বিচ্চুৎ হব না। যদি ইহা ঘটে এবং বিচ্চুৎ হই তাহলে আমরা প্রকৃত মুসলিম হতে পারব না, আমরা কেবল নামে মুসলিম হব।
কিন্তু বর্তমান সময় হল মিডিয়ার সময়, যাদের অনেক মিডিয়া আউটলেট আছে তারা অনেক শ্রোতা পাবে এবং লোকজনের মধ্য থেকে তারা কাজের স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু আমাদের মিডিয়া আউটলেট স্বল্প এবং সীমিত এবং আমরা আমাদের জন্য আল্লাহর সাহায্যের উপর নির্ভরশীল এবং আমরা মিডিয়াতে অধিক হারে যাই না।
তালেবানদের শক্তির উৎসঃ
তালেবান আন্দোলন এবং পদ্ধতিতে আধ্যাত্মিক শক্তি এবং নৈতিক প্রভাব আছে। রাশিয়া এবং আমেরিকার দিকে তাকান, ইতিহাসে এটা কখনও ঘটেনি যে রাশিয়া এবং আমেরিকা আফগানিস্থানের মত কোন ছোট একটি দেশের যুদ্ধে একই পদতলে একত্রিত হয়েছে। তাদের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা আফগানিস্তান এবং তালিবান আন্দোলনের বিরুদ্ধে একই খাতে দাঁড়িয়েছে। উহা থেকে এটা প্রকাশ পায় যে তালিবানদের নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে যা আমেরিকা এবং রাশিয়াকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের সর্ম্পতে যা কিছু প্রচার করছে তা সবই খাঁটি মিথ্যা। বাস্তবে তারা ঐ নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষমতাকে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের আত্ম বিশ্বাস আল্লাহর উপর এবং আমাদের নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাস বড় এমন কি সারা বিশ্ব যদি আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় আমরা আমাদের নীতি ও বিশ্বাস থেকে সরে দাড়াব না এবং আমাদের পদক্ষেপ থেকে বিচ্যুৎ হব না ইনশাআল্লাহ কারন আমরা যা বিশ্বাস করি তাই ই আমাদের ধর্ম এবং ইহা ত্যাগ করব না, কারন আমাদের ধর্ম ত্যাগ একজন মুসলিমের মৃত্যুর সমান। একজন মুসলিমের প্রকৃত মৃত্যু হল তার ধর্মত্যাগ করা বা ধর্মকে অবজ্ঞা করা অথবা ইহার নিয়ম নীতির আমলকে পরিত্যাগ করা। যদি ধর্মীয় মৃত্যুর সাথে তুলনা করি তাহলে বাহ্যিক মৃত্যু কিছুইনা। যদি আমরা জীবন চাই তাহলে আমাদের ধর্মতে টিকে থাকাই জীবন এবং যদি কোন জীবন না থাকে তাহলে ইহার মৃত্যু হোক। মৃত্যু হল এমন একটি পেয়ালা যেখান থেকে সবাইকে পান করতে হবে।
সুতরাং প্রত্যেক মুসলমান কে নিজেকে নিজের পূনর্গঠন করতে হবে এবং তার রবের উপর বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে হবে। অতঃপর সে দুনিয়া ও পরকালে সাফল্য ও বিজয় লাভ করবে।
তালিবানদের ভবিষ্যৎঃ
আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন, শৈশবকাল ও অনাথ জীবন নিয়ে যা কিছু উল্লেখ করেছি এবং যেখানে আমাদের বিষয় বস্তু পৌঁছেছে, এগুলো হল সে সকল কথা যা আকীদা সম্পন্ন লোকদের উপকার করবে এবং তা থেকে সুবিধা গ্রহন করতে পারবে। যাদের যথার্থ মানসিকতা আছে তাদের অবশ্যই সর্তক হওয়া উচিৎ যে এই বিষয় সমুহ ঐশ্বরিক বিধান। আল্লাহ সামর্থ্যবান এবং কোন কিছুই তাকে অযোগ্য করতে পারে না এবং তিনি যা চান তাই করেন। আমরা যা বিশ্বাস করি তার উপর ভিত্তি করে আছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আল্লাহ যা আদেশ করেছেন এবং লিখেছেন তাই-ই আমাদের হবে। আমেরিকানরা এবং রাশিয়ানরা কোন কিছু করতে সমর্থ হবে না। এ সবই খোদাই বিধান যা আল্লাহর সামর্থ ও দৃষ্টির মধ্যে যেহেতু আমরা যা করছি অথবা যা আশা করছি তার সফলতা অথবা ব্যর্থতা আমাদের অথবা আমেরিকার কাজ নয়। এই কথাগুলি একজন কাফির অথবা যার ঈমানের আকীদা নেই সে বুঝতে পারবে না।
।মুসলিমদের তাদের রবের আদেশ সমন্ধে সতর্ক থাকা উচিত যা পবিত্র কিতাবে উল্লেখ আছে। এবং আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী তাদের একটা ফয়সালা খোঁজা উচিৎ। আমার কথা সবই আমার নিজের জন্য ও মুসলিমর জন্য ইংঙ্গিত ও শিক্ষা এবং আমি যা উল্লেখ করেছি তাছাড়া আমার আর বেশী কিছু নেই। আমি আপনাকে আল্লাহর তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দিচ্ছি।
আমীরুল মুমিনিন ইসলামিক ইমারত অব আফগানিস্থান,মুল্লাহ মুহাম্মদ উমার (মুজাহিদ)
Comment