Announcement

Collapse
No announcement yet.

হিন্দুত্ববাদি অখন্ডভারত এবং এর আগ্রাসী নীতি- (পর্ব-১)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হিন্দুত্ববাদি অখন্ডভারত এবং এর আগ্রাসী নীতি- (পর্ব-১)

    আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
    প্রিয় উম্মাহ, আশা করি সবাই আছেন।
    এটি একটি গুরুত্বপুর্ন পোস্ট। সবাই যদি একটি ধৈর্যের সাথে মনোযোগ দিয়ে পড়তেন তাহলে হয়ত উপকার হত ইনশাআল্লাহ।

    মুল বিষয়ে যাওয়ার পুর্বে আপনাদেরকে কিছু উদাহরণ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই

    ইসরাইল- দুনিয়ার বুকে একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র, দুনিয়ার বুকে একটি ক্যন্সারের ন্যায় যার অবস্থান। এর সৃষ্টিলগ্ন থেকে এমন কোন হীন কাজ নেই যা এই রাস্ট্র করেনি তার স্বার্থের জন্য। গত প্রায় অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে অগণিত মুসলিমকে হত্যা,জুলুম- নির্যাতন, ধর্ষণ আর লুটপাট করে আসছে এই অবৈধ রাষ্ট্রটি। দুনিয়ার বুকে একটি জীবন্ত জলন্ত কারাগারের ন্যায় ধুকেধুকে প্রায় শেষ হওয়ার পথে পবিত্র আকসাকে বুকে ধারণ করা ফিলিস্তিন!
    এখন- যে ইহুদিরা ইসরাইল নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে জুলুম আর অন্যায়ের এক মহাত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে ফিলিস্তিন এলাকা বরাবর, এরা কিন্ত দুনিয়ার তাবৎ সম্পত্তির মালিক এবং অজস্র কোম্পানি,কলকারখানা, মিডিয়া ইত্যাদি সহ দুনিয়ার বড়বড় রাস্ট্রগুলির মাথা তথা প্রেসিডেন্ট,প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এদেরই নিয়ন্ত্রানাধীন। এরা যদি ইচ্ছা করতে তাহলে হয়ত দুনিয়ার যে কোন স্থানে বর্তমান ইসরাইল(যার আয়তন মাত্র ২০,৭৭০ বর্গকিলোমিটার, মানে বাংলাদেশ এই ইসরাইলের চাইতে প্রায় ৮ গুণ বড়!), এর চাইতে কয়েকগুণ বড় জায়গা নিয়ে রাষ্ট্র গঠন করতে পারত। এটা তাদের জন্য হয়ত কোন ঘটনাই ছিল না।
    এখন, আপনাদের নিকট আমার প্রশ্ন হল, সেটি না করে ইহুদিদের কেন ফিলিসস্তিন, জেরুজালেম কেন্দ্রিক জায়গারই দরকার হল? কেন দুনিয়ার এত জায়গা বাদ দিয়ে এখানেই তাদের রাস্ট্র গড়তে হবে যে কোন মুল্যে?
    প্রিয় ভাই এবং বোনেরা! এর উত্তর হল- তারা মনে করে এই জায়গাটি একান্তই তাদের, এই জায়গাটি মহান সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে বিশেষভাবে দিয়েছে, এখানে তারা ব্যতিত অন্যকেও থাকতে পারবে না। তারা আরো মনে করে যে, তারা হল আল্লাহ সৃষ্টিকর্তার সন্তান, নাতি পুতি (নাউযুবিল্লাহ), আর তারা ব্যতিত দুনিয়ার অন্যসবাই হল বহিরাগত, তাদের দাস, তাদের চাকর বাকর। তাদের অধিনস্ত থেকে তাদের সেবা করার জন্যই সবার জন্ম। তাদের মতে আল্লাহ তাদেরকে যে জায়গা বিশেষভাবে দান করেছেন তার সীমানা শুধু বর্তমান ইসরাইল বা ফিলিস্তিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সেটি জেরুজালেম সহ মিশরের নীল নদ থেকে ইরাকের ফোরাতনদী পর্যন্ত অঞ্চল পুরোটাই, আর এই অঞ্চল থেকে পুরো বিশ্বকে শাসন করবে তারা, যেমনটি করেছিল তাদের নবী ডেভিড ও সলোমন, যে দুইজনকে আমরা মুসলিমরা দাউদ ও সুলাইমান (আ) হিসেবে চিনি, আর এই দুই নবীর শাসনামল ছিল তাদের স্বর্ণযুগ। যদিও তাদের এসব চিন্তাভাবনার মধ্যে অজস্র ভুল আছে যেহেতু তারা ইচ্ছেমত আল্লাহর কিতাবকে পরিবর্তন করেছে, ইতিহাসকে বদলে দিয়েছে তথাপি তারা এখনো স্বপ্ন দেখে একটি বৃহত্তর ইসরাইল গঠনের, যার সীমা মিশরের নীল নদী থেকে ইরাকের ফোরাত নদী পর্যন্ত, যে সিমানার মধ্যে সিরিয়া, কুয়েত,জর্ডান,লেবানন এমনকি তুরস্কও আছে! আর এই অঞ্চল থেকে তারা পুরো বিশ্বকে শাসন করবে একজন "মাসিহ"র নেতৃত্বে, এবং তারা তাদের সেই স্বর্ণযুগকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য, সেই মাসিহকে তাদের মাঝে আগমনের জন্য এমন কোন হীন কাজ নেই যেটা তারা করছেনা!
    ঠিক এরকম চিন্তাভাবনা করে খ্রিস্টানরাও! তারা চিন্তা করে প্রাচীন সেই রোমান যুগকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। যে রোমান সাম্রাজ্যের অন্তরভুক্ত ছিল বর্তমান সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিশর, তুরস্ক। তারা চিন্তা করে একটা সময় তাদের জিজাস, অর্থাৎ যাকে আমরা ঈসা (আ) হিসেবে চিনি, তিনি আবার দুনিয়াতে এসে তাদের এই সাম্রাজ্যের হাল ধরবেন।
    -----------------(1)
    এরকম চিন্তা রুশরা যেমন করে ঠিক তেমন করে চায়না কিনবা মায়ানমারের বৌদ্ধরা!
    হে সম্মানিত উম্মাহ! আপনি জানেন কি ঠিক তেমনি একটা "স্বর্ণযুগ" হিন্দুদেরও ছিল ?
    খ্রিস্টপুর্ব ৩৭০ অব্দে তৎকালীন প্রাচীন ভারতে একজন চরম ধুর্ত লোকের জন্ম হয়। ইতিহাসে তাঁকে চাণক্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামে তার আরো ২টি নাম পাওয়া যায়। এই যে আমরা কুটিল বুদ্ধি কিনবা কুটনীতি শব্দগুলি ব্যবহার করি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা এই কৌটিল্য নাম থেকেই এসেছে।
    ইতিহাসে তাঁকে একজন প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা বলা হয়েছে। এবং আরো বলা হয়েছে- চাণক্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রাচীন ভারতের একজন দিকপাল ছিলেন এবং তাঁর তত্ত্বগুলি চিরায়ত অর্থনীতির বিকাশ লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাঁর পাণ্ডিত্যের জন্য চাণক্যকে ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয়।"
    এই চাণক্য বা কৌটিল্য ভারতের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপুর্ন ব্যক্তি হিসেবে পরিচত। কারণ তারই বুদ্ধি আর পরামর্শ অনুসরণ করে তৎকালীন রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এক সুবিশাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় আর এই সুবিশাল রাজ্যটি "মৌর্য সাম্রাজ্য" নামে অভিহিত। এই সাম্রাজ্যের অন্তরভুক্ত ছিল- গোটা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ,নেপাল,ভুটান এবং আফগানিস্তানের কিছু অংশ। এমনকি কেউকেউ মায়ানমারকেও এর অংশ বলেছেন। আল্লাহ তায়ালাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
    তাহলে বর্তমান ভারতের চাইতেও অনেক বড় একটি এলাকা ততকালিন মৌর্য রাজারা শাসন করে গেছেন বলে আমরা ইতিহাস থেকে দেখতে পাই।
    প্রিয় উম্মাহ- এটাই সেই অখন্ড ভারত, যার বিস্তৃতি সুদূর আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশ কিনবা মায়ানমার এর একটি অংশ পর্যন্ত ছিল, আর এই অখন্ড ভারতকেই নিজেদের মাতৃভূমি বলে দাবি করে বর্তমান অরাজকতা, ফিতনা আর নৈরাজ্যের ত্রাস সৃষ্টি করা নাপাক হিন্দু মুশরিকরা।
    আর সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার কি জানেন? সেই কৌটিল্য বা চাণক্যের নীতিগুলি আজো পরমযত্নে অনুসরণ করে বর্তমান হিন্দুত্ববাদী ভারতের সরকার আর তার গোয়েন্দা সংস্থা এবং প্রশাসন, যে নীতিগুলিতে একটি রাষ্ট্র কিভাবে কায়েম ও বিস্তার করতে হয় সেগুলি থেকে শুরু করে অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, সামরিক কৌশল, শাসকের ভূমিকা সম্বন্ধে বিশদে বর্ণনা করা হয়েছে।
    কিভাবে শত্রুকে ধোকা দিয়ে তাকে পরাজিত করতে হয়, কিভাবে শত্রুর মধ্যে ভয়াবহ ত্রাস সৃষ্টি করতে হয়, কিভাবে বড় একটি রাজ্য দখল করে তা শাসন করতে হয় তা সেই চাণক্যনীতিতে ভালভাবেই বলা হয়েছে। --------- (2)
    --------------- (চলবে............)
    রেফারেন্সঃ
    1.





    বই- পবিত্র কুরআনে জেরুজালেম, লেখক-ইমরান নজর হোসেন

    2.



    https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6...A7%8D%E0%A6%AF

  • #2
    যে জাতি তার ইতিহাসকে তার অন্তরে লালন করে না সেই জাতির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে এমন সম্ভাবনা মৃতপ্রায়। আমাদের জন্য এটি বেশ কষ্টের যে, আজ একমাত্র মুসলিমরা বাদে বাকি সকল অধার্মিকের পূজাধারিরা নিজেদের ইতিহাসকে যত সবযত্নে লালন করছে তার সিকি আনা যদি মুসলিমরা লালন করত আর সেই অনুযায়ী নিজেদের লক্ষ্যপানে ধাবিত হওয়ার চেষ্টা করত তাহলে ইনশা আল্লাহ আমাদের এই ভয়াবহ লাঞ্ছনার জিন্দেগী বরন করতে হত না।। আর আফসোসের জায়গা এখানেও যে আজ আমাদের যে সকল ভাইরা উম্মাহকে নিয়ে চিন্তা করেন তারাও হয়ত ২/৪ টা নাশিদ, গাজওয়ার ভিডিও এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকছি। আল্লাহু আ'আলাম এসব নাশিদ, ভিডিও এগুলো হয়ত সাময়িক মনের ক্ষিধা মিটাতে পারি। বাকি একজন ভাইকে দ্বীনের কাজে অটল থাকার জন্য হয়ত নিজের জাতিকে ভালভাবে জানাটা জরুরী। যদি এমন না হত তাহলে সমস্ত কুরআনের বেশিরভাগ সূরায় মুসলিমদের অতীত ইতিহাস জায়গা পেত না।। তাই হয়ত আমাদের উচিত বেশি বেশি আমাদের ইতিহাস জানা এবং বাকি উম্মাহ'র সকলকে এসব বিষয়ে অবগত করা। মিডিয়ার ভাইদের প্রতিও আহ্বান থাকবে আপনারা নিজেদের কাজগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি ফল নিয়ে আসতে পারে এমন উপকরণের ব্যবহার একটু বাড়িয়ে দেওয়া যায় কিনা সেটা নিয়ে ফিকির করুন। আলহামদুলিল্লাহ বিগত কিছুদিনে হিন্দ নিয়ে কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। তবে সামস্টিকভাবে চিন্তা করতে গেলে হয়ত এটুকু যথেষ্ট নয়। আল্লাহু আ'আলাম। আপনারা এই বিষয়ে অধিক চিন্তাশীল ইনশা আল্লাহ।। এই অধমের মন্তব্যের বাড়াবাড়ি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। জাযাকাল্লাহু খাইরান পোস্টধারি ভাইকে। আশা রাখি আপনার মত আরও কিছু ভাই এই সেক্টরে মনযোগী হলে পাঠকদের মধ্যেও এটার প্রভাব পরবে ইনশা আল্লাহ।।

    Comment


    • #3
      মা'শা আল্লাহ ভাই - চালিয়ে যান! অপেক্ষায় রইলাম -
      মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

      Comment


      • #4
        অখন্ড ভারত সম্পর্কে নতুন কিছু জানলাম। যাযাকাল্লাহু খায়ের ভাই।
        "আপনার প্রতিটি কাজে, আপনার জীবনের প্রতিটি ধাপে, প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহকেই আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বানিয়ে নিন। একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই আপনার লক্ষ্য বানান। সামনের কঠিন দিনগুলোতে কেবল তিনিই আপনার ভরসা।"

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট অন্য পর্ব গুলোর জন্য অপেক্ষাই থাকবো ইংশাআল্লাহ
          ( গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

          Comment

          Working...
          X