Announcement

Collapse
No announcement yet.

নারী: উম্মাহর হৃদয়!!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নারী: উম্মাহর হৃদয়!!

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
    নারী: উম্মাহর হৃদয়
    -শাইখ আবু কাতাদাহ আল ফিলিস্তিনি (হাফিজাহুল্লাহ্)

    'সুরা আল-কাসাসে বর্ণিত মুসা ও ফিরাউনের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বা বিরোধ কোনো আকস্মিক ঘটনাপ্রবাহ নয়। কুরআনের এই আয়াতে তাদের মধ্যকার সংঘাতের মূল বিষয়টি উঠে এসেছে,

    'এবং যাদেরকে জমিনে দুর্বল করে রাখা হয়েছিলো আমি চাইলাম তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে এবং তাদেরকে নেতা ও (জমিনের) উত্তরাধিকার বানাতে।' [আল-কাসাস, আয়াত ৫]
    .
    ক্ষমতার এই হস্তান্তর শুরু হয়েছিলো একজন নারীকে দিয়ে, যেমনটা আল্লাহ্ বলেছেন,

    "আর আমি মূসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, ‘তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে নদীতে ফেলে দিও। আর তুমি ভয় কিংবা দুঃখ করো না।'" [আল-কাসাস, আয়াত ৭]
    .
    কাজেই, বিরোধীদের সাথে আমাদের সংঘাতের মূল উপাদান হলো আমাদের নারীরা এবং তাদের দ্বারাই এর চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হবে, হয় বিজয় নয়তো হার। এগুলো কোনো অহেতুক কথা বা কবিতার বুলি না। বরং, এই বাস্তবতার ব্যাপারে আমাদের অবশ্যই মনোযোগী হতে হবে।
    আজ দেখুন, উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারীরা কোথায় – উম্মাহর পুরুষরা কোথায়? তারা হয় কারাগারে, কিংবা দেশ থেকে বিতাড়িত নয়তো সংগ্রামে জর্জরিত। সুতরাং, তাদের পরিবারকে কে রক্ষা করবে? কে তাদের সন্তানদের প্রতিপালন করবে ও দৈনন্দিন জীবনে তাদের দেখাশোনা করবে? কেবল নারীরাই তা পারে এবং আলহামদুলিল্লাহ্ তাদের নানা অন্যায়, সীমালঙ্ঘন ইত্যাদি সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এবং অপরাধের উৎসমূলে পরিণত হবার পরও তাদের সাথে যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ইসলামের দাওয়াহ্ই বিজয়ী হয়েছে।
    নারীদের সাথে দ্বন্দ্বের মূল হলো, আমাদের চারপাশের সমাজব্যবস্থা যেখানে শরীয়াহর সাথে সাংঘর্ষিক অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর ফলে উম্মাহর নারীরা পুরোপুরিভাবে ইসলামি আদর্শে বলীয়ান হতে পারেনি। উদাহরণ হিসেবে, নারীশিক্ষা অর্জনে বাধাদান, সম্পদের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা, তাকে অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখা এবং তার বিরুদ্ধে জাহিলি চর্চার বিস্তার- এসকল বাস্তবতা তাদেরকে আধুনিক উদারনৈতিক জাহিলিয়াহ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই জাহিলিয়াহর লক্ষ্য হচ্ছে, তাদের নোংরা শয়তানির সহায়তায় নারীদেরকে প্রদর্শনী পণ্যরূপে উপস্থাপন করা।
    .
    তাই আমাদের মধ্যে যারা দাওয়াহর কাজে জড়িত, আমাদেরকে এই দুই প্রকার জাহিলিয়াত থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে হবে – প্রথমত, মানুষের অন্যায় আচরণের জাহিলিয়াহ এবং দ্বিতীয়ত, উদারনৈতিকতার জাহিলিয়াহ। ইসলাম এব্যাপারে সঠিক পথনির্দেশ দিয়েছে যে, নারীদের সম্মান করতে হবে, তাকে মূল্যায়ন করতে হবে এবং শরীয়াহর গণ্ডির ভেতর থেকে তাদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের অধিকার, পাশাপাশি মালিকানা ও সম্পত্তির অধিকারও সুনিশ্চিত করতে হবে।
    আমাদের জোর দিতে হবে যেন শয়তানি প্রসারের পথ অর্থাৎ বিয়ের সময় চড়ামূল্যের মোহরানা আদায় বন্ধ হয় এবং সুন্দর একটি ইসলামি স্লোগানের প্রচলন ঘটে যে, 'মোহর যতো কম, বরকত ততো বেশি।'
    বিয়ের উপযুক্ত ছেলেমেয়েদের অবিবাহিত রাখার মধ্যে যে মারাত্মক অকল্যাণ নিহিত, তা নিমিষেই সমস্ত কল্যাণকে বরবাদ করে দিতে পারে৷ তাই, নিঃসন্দেহে কমমূল্যের মোহরানা ধার্যের মাধ্যমেই এই অকল্যাণের পরিসমাপ্তি ঘটানো সম্ভব। এছাড়াও, আমাদের বিভিন্ন ক্ষতিকর জাহিলিয়াতের শিকল ভেংগে ফেলতে হবে যেমন, পাত্রপাত্রীর সামাজিক মর্যাদায় সমতা রক্ষা করা৷ এটি একেবারেই ভিত্তিহীন একটি শর্ত কেননা, যায়নাব বিনতে জাহাশ – যিনি ছিলেন কুরাইশ বংশের – যায়িদ ইবনু হারিসাকে বিয়ে করেছিলেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন দাস। আমি এমন অনেককে দেখেছি, যারা তাদের কন্যাকে স্বগোত্রীয় কিংবা নিজ এলাকার নয় বলে মুসলিম পাত্রের সাথে বিবাহ রদ করেন। এর চেয়ে তারা তাদের মেয়ের অবিবাহিত থাকাকেই বরং বেশি পছন্দ করেন। শরিয়াহতে এধরণের অভিভাবকদের জালিম বলা হয়েছে এবং এহেন মূর্খতাপূর্ণ আচরণ ও অযৌক্তিক পদক্ষেপের কারণে তাদের অভিভাবকত্ব বাতিল করা হয়েছে।
    .
    নারীরা উম্মাহর হৃদয় এবং নিঃসন্দেহে তাদের পক্ষ থেকে আগত যেকোনো ধরণের সীমাবদ্ধতা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতির কারণ। তাই, আমাদেরকে তাদের প্রতি যত্নবান ও বিশেষ মনোযোগী হতে হবে।
    .
    আমরা এপথে আমাদের কিছু ভাইকে ঝরে পড়তে দেখেছি তবে এখনও পর্যন্ত, বোনদের ব্যাপারে এমনটা জানা যায়নি। বরং এপথে আমরা কেবল তাদের সবর, সংকল্প, ইমান ও অকৃত্রিম দৃঢ়তাই লক্ষ্য করেছি।
    ফিলিস্তিনে আমাদের মা ও বোনেরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত এবং তাদের কেউ কেউ সবর, সংকল্প ও সংগ্রামের দিক দিয়ে শত শত মুজাহিদের সমান যোগ্যতাসম্পন্ন। একইভাবে, গালফ দেশগুলোতেও আমরা দেখি যে, তাদের দেশের নারীরা পুরুষদের চেয়েও বেশি সজাগ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন এবং দ্বীনের সৈনিকদের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপনে তারা পুরুষদের অপেক্ষাও অধিক নিষ্ঠাবান। সুতরাং, সকল প্রশংসা সৃষ্টিজগতের মালিক আল্লাহর জন্য।
    পাশ্চাত্য দেশগুলোতে অবস্থানরত বিভিন্ন অনারব ভাইদের স্ত্রীরাও তাদের দ্বীনের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং তারা এমন ইমান ও ইসলামের অধিকারী যা সচরাচর ভাইদের মাঝেও খুঁজে পাওয়া যায় না। আরব মুহাজির স্ত্রীরাও আমভাবে তাদের মুহাজির স্বামীদের চাইতে ভালো ও পবিত্র।
    অথচ আমি মুসলিম নারীদের থেকে তাদের স্বামীদের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ শুনেছি যে, তারা দ্বীনের হুকুম আহকাম পালনে দুর্বল এবং তাদের এই আক্ষেপই প্রমাণ করে যে, দ্বীনপালনে তারা পুরুষদের চেয়ে উত্তম অবস্থানে আছেন বিইযনিল্লাহ।
    .
    শয়তান ও তার চেলারা বোনদের হিজাবের প্রতি যেভাবে মনোযোগ দিচ্ছে, তা এই দ্বন্দের গুরুত্ব স্পষ্ট করে।
    সুতরাং, এটা অস্বাভাবিক নয় যে, ফ্রান্স – তার নানাবিধ সমস্যা-জটিলতা সত্ত্বেও – হিজাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পূর্ণ মনোযোগ প্রদান করছে এবং একে বাতিল ঘোষণা করে আইন প্রণয়ন করেছে। এভাবে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকেও তারা তাদের এই শয়তানি পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছে। একইভাবে, আপনারা যদি বিভিন্ন কনফারেন্সগুলোতে খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন যে, তারা পরিবার কাঠামো ও নারীদের ধ্বংস করার জন্য কি পরিমাণ শ্রম ও মনোযোগ প্রদান করছে। এর ফলে সহজেই বোধগম্য হয় যে, নারী এমন এক দুর্গ যার গুরুত্ব অপরিসীম। সুতরাং, এটা এমন এক যুদ্ধ যা উপেক্ষা করার কোনো উপায় নেই।
    .
    আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের নারীদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। কেননা শিক্ষাই তাকে পরাজয়ের গ্লানি থেকে রক্ষা করবে। একজন মূর্খ নারী তার নিজের ও তার স্বামী, পরিবার এবং সমাজের শত্রু৷
    আমাদেরকে অবশ্যই তাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের দায়ি, আলিম ও ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কর্তব্য হচ্ছে, সত্য ইসলাম ও জাহিলি সামাজিক আচার-প্রথার মধ্যে পার্থক্য রেখা চিহ্নিত করা। কেননা আধুনিক জাহিলিয়াহ তাদের ভিত্তিহীন সামাজিক প্রথা সমূহকে নারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
    .
    আজ আমরা কেন এত মিসইয়ার বিয়ের কথা শুনছি?
    আমি এখানে কোনো বিধান সম্পর্কে আলোচনা করছি না। বরং, আমি একটি অসামাজিক, অনভ্যস্ত ধারার ব্যাপারে আলোচনা করছি কারণ এটাই স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত যে, প্রকাশ্যে বিয়ের ঘোষণা দেয়া হবে এবং সকলকে জানানো হবে। এর পেছনে কারণ হলো, আমাদের সামাজিক বিচ্যুতি, যার ফলে বিয়েতে চড়া মূল্যের মোহরানা নির্ধারিত হয় এবং বিয়েগুলোতে বর কনে উভয়পক্ষের ভিত্তিহীন প্রচলিত সামাজিক সমতা বিধানের শর্ত।
    এসব কারণেই যুবকরা বিয়ে করতে পারছে না এবং অবিবাহিত থেকে যাচ্ছে। এর স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে, সমাজে এরকম অসুস্থ ও ঝামেলাপূর্ণ বিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। এধরণের বিয়ে তখনই সম্ভব, যখন একজন নারী তার রবের প্রতি পূর্ণ ইয়াকিন রেখে অগ্রসর হন। যাইহোক, সে যদি অন্য নারীদের মতো হয় তাহলে নিঃসন্দেহে এর ফলে সে চরম অপমানের স্বীকার হবে...
    .
    পরিশেষে, আমাদের মুমিন মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি আমাদের নিগুঢ় ভালোবাসা, সম্মান ও আস্থা রয়েছে এবং আমাদের ধৈর্যশীলা স্ত্রীদের প্রতি রয়েছে ভালোবাসা, দুয়া ও কৃতজ্ঞতা৷ তারা যদি না থাকত, আমাদের কোনো মূল্যই থাকত না এবং আমাদের সন্তানদেরও ভবিষ্যৎ থাকত না...'
    |সোর্স: muwahhidmedia|
    ____
    {এই পোস্টের উদ্দেশ্য হলো, বোনদের উৎসাহ প্রদান ও তাদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেয়া যে উম্মাহর আলিম তথা নেতৃতস্থানীয়দের কাছে তারা কতোটা মর্যাদাসম্পন্ন। তাই তাদেরকে অবশ্যই এর সত্যতা প্রমাণে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কেননা নারী হিসেবে আমাদের প্রতি হাদিসে বর্ণিত সতর্কবাণী ও দুর্বল দিকগুলোকেও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আমরা যেন কখনোই এমন মনে না করি যে, আমরা প্রকৃতপক্ষেই ভালো অবস্থানে আছি ও পুরুষদের প্রতি আমাদের অপরিসীম ত্যাগ রয়েছে। আউযুবিল্লাহ্, বরং আমাদেরকে তো আমাদের নিজেদের স্বার্থেই আমল করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ্, তাঁর দ্বীন ও তাঁর বান্দারা কারো ত্যাগের মুখাপেক্ষী না এবং আমরা তাঁদের অধীনস্থ ও আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁদের দিকনির্দেশনার মুখাপেক্ষী। তাই সবসময় আত্মগর্ব, আত্মতুষ্টি ও উজব থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতে হবে এবং একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।}
    Last edited by Umm Khawla; 01-03-2020, 07:17 PM.

  • #2
    আমাদের জোর দিতে হবে যেন শয়তানি প্রসারের পথ অর্থাৎ বিয়ের সময় চড়ামূল্যের মোহরানা আদায় বন্ধ হয় এবং সুন্দর একটি ইসলামি স্লোগানের প্রচলন ঘটে যে, 'মোহর যতো কম, বরকত ততো বেশি।'
    বিয়ের উপযুক্ত ছেলেমেয়েদের অবিবাহিত রাখার মধ্যে যে মারাত্মক অকল্যাণ নিহিত, তা নিমিষেই সমস্ত কল্যাণকে বরবাদ করে দিতে পারে৷ তাই, নিঃসন্দেহে কমমূল্যের মোহরানা ধার্যের মাধ্যমেই এই অকল্যাণের পরিসমাপ্তি ঘটানো সম্ভব।
    হায়! উম্মাহর নারীদের ও তাদের অভিভাবকদের বোধদয় হবে কবে?!
    আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে সহীহ বুঝ দান করুন এবং আমল করার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আমাদের মা বোনদের দ্বীন বোঝার এবং মানার তৌফিক দান করেন,আমিন
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, খুবই উপকারী পোষ্ট।
        এই রকম পোষ্ট আরো চাই...!
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ,
          আল্লাহ আমাদের মা বোনদের দ্বীন মানার তৌফিক দান করেন,আমিন

          Comment

          Working...
          X