Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমরা "সুইপারকে" ঘৃণা করি,অথচ নিজেও একজন "সুইপার " তা আমি ফিকির করেছি কি?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমরা "সুইপারকে" ঘৃণা করি,অথচ নিজেও একজন "সুইপার " তা আমি ফিকির করেছি কি?

    আমরা "সুইপারকে "ঘৃণা করি, অথচ নিজেও একজন "সুইপার" তা আমি ফিকির করেছি কি?

    প্রশ্ন ঃ সুইপার কাকে বলে?

    উওর ঃ যে পায়খানার ট্যাংকি বা ড্রেনের ময়লা, আবর্জনা পরিস্কার করে তাকে সুইপার বলে।

    প্রশ্ন ঃ আমি, আপনি অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি , প্রধান বিচারপতি , শাইখুল হাদিস ,মুফতি , মুহাদ্দিছ, ইমাম ,খতীব ইত্যাদি হতে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সকলেই যে, সুইপার তা আপনি জানেন কি?

    উওর ঃ হ্যাঁ! তাহলে, শুনোন। প্রত্যাকেই কিন্তু পায়খানার পর নিজ নিজ পায়খানার স্হান ও আশপাশ নিজেরাই পরিস্কার করে।
    সুতরাং আমরা, আপনারা কিন্তু সকলেই সুইপার।

    প্রশ্ন ঃ সুইপার তো জমা ময়লা পরিস্কার করে এ জন্য সে সুইপার। কিন্তু আমরাতো আর... ।
    উওর ঃ আমরাও কিন্তু পায়খানার ট্যাংকি নিয়েই সর্বদা ঘুরাফিরা করি। কারন পেট কিন্তু ময়লারই ট্যাংকি।
    প্রশ্ন ঃ দুনিয়াতে শুধু এক শ্রেণীর লোককে সুইপার বলে , বাকিদের সুইপার বলে না কেন?
    উওর ঃ দুনিয়ার দৃষ্টিতে শুধু এক শ্রেণীর লোকই সুইপার । এজন্য তাকেই শুধু সুইপার বলে। কিন্তু আল্লাহর দরবারে সকলেই সুইপার।


    প্রশ্ন ঃ তাহলে বর্তমানে আমাদের করণীয় কি?
    উওর ঃ সুইপার যেমন তার কাজ শেষ করে দ্রুত পরিস্কার হয়ে যায়, তেমনিভাবে আমাদের জন্যও করণীয় হল দ্রুত পরিস্কার হয়ে যাওয়া।

    প্রশ্ন ঃ আমরা কিসের থেকে পরিস্কার হবো?
    উওর ঃ সে যেমন পায়খানার ময়লা ও অন্যান্য ময়লা আবর্জনা থেকে পরিস্কার হয়, আমরাও তেমনিভাবে পেশাব, পায়খানার ময়লা, আবর্জনা ও অন্যান্য ময়লা, অাবর্জনা হতে পবিত্র হতে হবে।
    প্রশ্ন ঃ পেশাব, পায়খানার ময়লা, আবর্জনা তো বুঝে আসে , কিন্তু অন্যান্য ময়লা আবর্জনা কি?
    উওর ঃ অন্যান্য ময়লা, আবর্জনা হল কুফর, শিরিক, রিয়া, কিনা, কিবির ইত্যাদি।
    যথা;
    (1) পেশাব সম্পর্কে রাসূল সাঃ বলেছেন
    استنزهوا عن البول فان عامة عذاب القبر منه
    তোমরা পেশাব থেকে বেচে থাকো, কেননা সাধারণত কবরের আজাব এর কারনেই হয়।

    (2) কুফর সম্পর্কে

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন

    قُلْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْكَٰفِرُونَ

    অর্থঃ বলুন, হে কাফেরকূল,


    সূরা কাফিরুন (الكافرون), আয়াত: ২

    لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ

    অর্থঃ আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।

    সূরা কাফিরুন (الكافرون), আয়াত: ৩

    وَلَآ أَنتُمْ عَٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ

    অর্থঃ এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি

    সূরা কাফিরুন (الكافرون), আয়াত: ৪

    وَلَآ أَنَا۠ عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ

    অর্থঃ এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।


    সূরা কাফিরুন (الكافرون), আয়াত: ৫

    وَلَآ أَنتُمْ عَٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ

    অর্থঃ তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।

    সূরা কাফিরুন (الكافرون), আয়াত: ৬

    لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِىَ دِينِ


    অর্থঃ তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

    ★কাফেরও মুনাফিকদের ঠিকানা জাহান্নাম★

    সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৬৮

    وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتِ وَٱلْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَا هِىَ حَسْبُهُمْ وَلَعَنَهُمُ ٱللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ

    অর্থঃ ওয়াদা করেছেন আল্লাহ, মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আযাব।


    (3) শিরিক সম্পর্কে

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা লোক্*মান (لقمان), আয়াত: ১৩

    وَإِذْ قَالَ لُقْمَٰنُ لِٱبْنِهِۦ وَهُوَ يَعِظُهُۥ يَٰبُنَىَّ لَا تُشْرِكْ بِٱللَّهِ إِنَّ ٱلشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ

    অর্থঃ যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়।

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ৪৮

    إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِۦ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُ وَمَن يُشْرِكْ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفْتَرَىٰٓ إِثْمًا عَظِيمًا

    অর্থঃ নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল।


    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১১৬

    إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِۦ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُ وَمَن يُشْرِكْ بِٱللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَٰلًۢا بَعِيدًا

    অর্থঃ নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়।

    ★মুশরিকদের ঠিকানা জাহান্নাম ★

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১২১

    أُو۟لَٰٓئِكَ مَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ وَلَا يَجِدُونَ عَنْهَا مَحِيصًا

    অর্থঃ তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। তারা সেখান থেকে কোথাও পালাবার জায়গা পাবে না।



    (4) রিয়া সম্পর্কে

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা মাউন (الماعون), আয়াত: ৪

    فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ

    অর্থঃ অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,


    সূরা মাউন (الماعون), আয়াত: ৫

    ٱلَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ

    অর্থঃ যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;


    সূরা মাউন (الماعون), আয়াত: ৬

    ٱلَّذِينَ هُمْ يُرَآءُون

    অর্থঃ যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে


    (5) কিবির সম্পর্কে
    الكبرياء ردائ

    এসব আখলাক নিজের মাঝে থাকলে দূর করা।
    আর যাদের মাঝে এসব খারাপ আখলাক আছে তাদের থেকে দূরে থাকা।

    হাদীস শরিফে বর্ণিত আছে
    من تشبه بقوم فهو منهم
    যে যাকে ভালবাসে সে তারই দলভুক্ত হবে।
    এরপর ও যদি তাকে ভালবাসেন।
    আপনি কিন্তু তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন তা ফিকির করেছেন কি?
    আল্লাহ তাআ'লা তাদেরকে চতুস্পদ জন্তুর সাথে তুলনা করেছেন আপনি তা জানেন কি?
    বরং একথার উপর সীমাবদ্ধ রাখেননি।
    এরও উদ্ধে বলেছেন।

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা আল ফুরকান (الفرقان), আয়াত: ৪৪

    أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ إِنْ هُمْ إِلَّا كَٱلْأَنْعَٰمِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا


    অর্থঃ আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত

    আল্লাহ তাআ'লা বলেন
    সূরা আল আরাফ (الأعراف), আয়াত: ১৭৯

    وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ ءَاذَانٌ لَّا يَسْمَعُونَ بِهَآ أُو۟لَٰٓئِكَ كَٱلْأَنْعَٰمِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْغَٰفِلُونَ


    অর্থঃ আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল, শৈথিল্যপরায়ণ।



    আল্লাহ তাআ'লার কথা স্পষ্ট ;

    অন্তর থাকার পরও তার দ্বারা বিবেচনা না করা।
    চোখ থাকার পরও তার দ্বারা না দেখা।

    আর কান থাকার পরও তার দ্বারা না শোনা।
    এসকল লোক পশুর মত।
    কারণ
    পশুর কাজ হল খাওয়া আর ঘুমানো।
    তাদের কাজও একই। পেটের চাহিদা মিটানো, ঘুমানো আর যৌন চাহিদা মিটানো।

    বরং চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্টতর।

    চতুষ্পদ জন্তর চেয়েও নিকৃষ্ট। এহিসেবে যে,এদের জন্য জান্নাত জাহান্নাম কিছুই নেই। কিন্তু মানুষ নামক চতুস্পদ জন্তর জন্য রয়েছে জাহান্নাম ।

    বিঃদ্রঃ - যদি আমাদের ঠিকানা জাহান্নাম হয়।
    তাহলে আমরা চতুস্পদ জন্তুর
    চেয়েও নিকৃষ্ট।
    যদি আমাদের ঠিকানা জাহান্নাম হয় তাহলে মেথরের ও চেয়ে নিকৃষ্ট।
    কারন দুনিয়ায় দৃষ্টিতে মেথর কিন্তু ঈমান নিয়ে গেলে তার ঠিকানা জান্নাত।
    হে উলামায়ে কেরাম!
    হে মুসলিম উম্মাহ! এখনো কি সময় হয়নি আল্লাহর দিকে ফিরে আসার।
    এখনো কি সময় হয়নি তাওবা করার।
    এখনো কি সময় হয়নি দ্বীনের দিকে অর্থাৎ জিহাদের দিকে ফিরে আসার।
    এখনো কি সময় হয়নি রাসূলের আদর্শের দিকে ফিরে আসার
    এখনো কি সময় হয়নি তাহরিফ থেকে ফিরে আসার।
    আল্লাহ তাআ'লা আমাদের সকলকে বুঝার ও আমলের তাওফিক দান করুন। আমিন।

    Mar 29, 2020 2:22:01 AM

  • #2
    জাযাকাল্লাহ। আলোচনাটা সুন্দর ও শিক্ষণীয়।

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ।
      অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
      আল্লাহ আপনার কাজে বারাকাহ দান করুন,আমিন।
      ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, অসাধারণ ফিকির। প্রসংশা না করে পারছি না, আবার কিভাবে প্রশংসা করবো সে ভাষাও খুজে পাচ্চি না? তবে এইটুকু বলতে পারি প্রিয় আল্লাহ আপনার এই অসাধারণ ফিকিরকে কবুল করুন।
        এবং আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফিক দিন।
        আমিন...
        "এখন কথা হবে তরবারির ভাষায়, যতক্ষণ না মিথ্যার অবসান হয়"

        Comment

        Working...
        X