এখনো কি তাওবা করে ফিরে আসার সময় হয়নি? (৩)
(৩) হযরত কা'ব রাঃ নিজেই নিজের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হল
তিনি বলেন, আমি পূর্বের তূলনায় অধিক সচ্ছল ও মালদার ছিলাম।
★ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভ্যাস ছিল যেদিকে যুদ্ধে যাওয়ার মনস্থ করতেন এর বিপরীত দিকের অবস্থা জিঙ্গাসা করতেন। কিন্তু এ যুদ্ধে প্রচন্ড গরম, সফরও বহু দূরের, এ ছাড়া শত্রুর সৈন্য সংখ্যাও অধিক। এ কারণে পূর্ণ প্রস্ততির জন্য আগেই জানিয়ে দিলেন।
★
যুদ্ধ শেষে ফেরত আসার পর অন্যন্যাদের ন্যয় আমি ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি এর সম্মুখে উপস্থিত হলাম। অতঃপর
আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট বললাম, আল্লাহর কসম আমার কোন ওজর ছিল না। অন্য সময়ের চেয়ে অধিক অবসর ও সচ্ছল ছিলাম। আমি আমার অবস্থা বিস্তারিত বললাম।
রাসূল সাঃ আমার কথাবার্তা শুনার পর বললেন, সে সত্য বলেছে। অতঃপর তিনি বললেন আচ্ছা যাও। তোমার ফায়সালা আল্লাহ তা‘আলা করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের তিনজনের সাথে সকল সাহাবাদের কথাবার্তা নিষিদ্ধ করে দিলেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিষেধের পর লোকেরা আমাদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দিল ও আমাদের থেকে দূরে সরে থাকতে লাগল। তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা এভাবে ব্যক্ত করেছেন যে, মনে হল, দুনিয়াটা পরিবর্তন হয়ে গেছে ,পৃথিবী এত প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও সংকীর্ণ মনে হত লাগল।
এমতাবস্থায় ৪০দিন অতিবাহিত হয়ে গেল।
৪০দিন পর রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ হতে এক দূত, এ হুকুম নিয়ে আসল যে, আপন স্ত্রীকেও ত্যাগ কর। আমি জিঙ্গাসা করলাম, তাকে তালাক দিয়ে দিব কি? উত্তরে বলল, না, বরং পৃথক থাক। অপর দুই সঙ্গীর নিকট ও একই নির্দেশ পৌঁছে। তিনি বলেন, স্ত্রীকে বললাম, আল্লাহর পক্ষ হতে কোন ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত পিত্রালয়ে থাক।
অতঃপর পঞ্চাশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহর পক্ষ হতে ক্ষমার ঘোষণা আসে।
আল্লাহ তাআ'লা তাদের অবস্থা এভাবে ব্যক্ত করেছেন
আল্লাহ তাআ'লা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ১১৮
وَعَلَى ٱلثَّلَٰثَةِ ٱلَّذِينَ خُلِّفُوا۟ حَتَّىٰٓ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ ٱلْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنفُسُهُمْ وَظَنُّوٓا۟ أَن لَّا مَلْجَأَ مِنَ ٱللَّهِ إِلَّآ إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوٓا۟ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
অর্থঃ এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পেছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্বেও তাদের জন্য সঙ্কুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠলো; আর তারা বুঝতে পারলো যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই-অতঃপর তিনি সদয় হলেন তাদের প্রতি যাতে তারা ফিরে আসে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দয়াময় করুণাশীল।
★মুনাফিকরাও তিনটি কাজে লিপ্ত হল★
আল্লাহ তা‘আলার বাণী শুনুন
আল্লাহ তা`আলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৮১
فَرِحَ ٱلْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَٰفَ رَسُولِ ٱللَّهِ وَكَرِهُوٓا۟ أَن يُجَٰهِدُوا۟ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَقَالُوا۟ لَا تَنفِرُوا۟ فِى ٱلْحَرِّ
(১) পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে;
(২) আর জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে
(৩) এবং বলেছে, এই গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না।
আল্লাহ তা‘আলা এদের উত্তরে বলেন
قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا لَّوْ كَانُوا۟ يَفْقَهُون
বলে দাও, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদের বিবেচনা শক্তি
থাকত।
বিঃদ্রঃ (১) নিজেরা যুদ্ধে না গিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছে।
(২) আর নিজেরা জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে।
(৩) অন্যদেরকে যুদ্ধে যেতে নিষেধ করেছে। এবং বলেছে এই প্রচন্ড গরমে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করোনা।
ফায়েদা : (১) ইহা ছিল সাহাবায়ে কেরামদের আনুগত্য, দ্বীনদারি ও আল্লাহ ভীরুতার নিদর্শন। তাহারা সারা জীবন জিহাদে শরীক হয়েছেন। একটিমাত্র জিহাদে অংশগ্রহণ না করার কারণে কত বড় কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হলেন এবং তা অবনত মস্তকে মানিয়া নেন।
তদুপরি যে সম্পত্তির কারণে এত বড় দুর্দশায় পতিত হন উহাকেও আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করিয়া দেন এবং কাফের বাদশাহের চিঠি পাইয়া উহাতে উত্তেজিত না হওয়া বরং উহাকে আল্লাহ ও রাসূল (রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর নারাজীর কারণ মনে করিয়া আরো বেশি কাতর হইয়া পড়েন।
(২) বিগত দিনে কোন জিহাদ কাযা না হওয়া সত্তেও শুধুমাত্র একটি জিহাদ কাযার দরুণ রাসূল (রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর জীবদ্দশায় সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এর যদি এমন কঠিন শাস্তি হতে পারে তাহলে আমরা যে জীবনে একটি জিহাদেও অংশগ্রহন করিনি বা নিজের পক্ষ হতে জিহাদে যাওয়ার জন্য কোন প্রস্তুতিও নেইনি তাহলে আমাদের অবস্থা কী হবে ?
বরং সুযোগে সুযোগে বিরোধিতা করছি।
অনেকে পরামর্শ করতে এসেছে, তাদেরকে বলেছি আগে লেখা পড়া শেষ কর। এরপর এগুলোর ব্যপারে দেখা যাবে।
বিঃদ্রঃ ঃ আমরা যে লেখা পড়া শেষ করার পরামর্শ দিচ্ছি, কিন্তু তারা যে এতটুকু হায়াত পাবে এর গ্যরান্টি দিতে পারবো কি?
আল্লাহ তা‘আলার উক্ত বাণী আমাদের স্মরণ আছে কি?
সূরা আল আরাফ (الأعراف), আয়াত: ৩৪
وَلِكُلِّ اُمَّةٍ اَجَلٌ*ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُهُمْ لَا يَسْتَاْخِرُوْنَ سَاعَةً* وَّلَا يَسْتَقْدِمُوْنَ
অর্থঃ প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে।
যদি পরামর্শ গ্রহীতা আল্লাহর দরবারে আপনার ব্যপারে নালিশ করে তাহলে কি বলবো, কোন উত্তর প্রস্তুত করেছি কি?
আল্লাহ! তুমি আমাদের সকল মুসলমান নর-নারীদেকে ক্ষমা করে দাও। সকলকে মৃত্যুর পূর্বে তাওবা করে গাযওয়ায়ে হিন্দের পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফিক দাও। সাহাবায়ে কেরামদের মত তাওবা করার তাওফিক দাও। আমিন।
অবশেষে আপনাদেরকে
আল্লাহর বাণী শুনিয়ে দিচ্ছি
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
সূরা আত-তাহরীম (التّحريم), আয়াত: ৮
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ تُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّـَٔاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ يَوْمَ لَا يُخْزِى ٱللَّهُ ٱلنَّبِىَّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ نُورُهُمْ يَسْعَىٰ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَٰنِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَٱغْفِرْ لَنَآ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِير
অর্থঃ মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।
পরবর্তী আয়াত
সূরা আত-তাহরীম (التّحريم), আয়াত: ৯
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ جَٰهِدِ ٱلْكُفَّارَ وَٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
অর্থঃ হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
চলবে ইনশাআল্লাহ....
(৩) হযরত কা'ব রাঃ নিজেই নিজের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হল
তিনি বলেন, আমি পূর্বের তূলনায় অধিক সচ্ছল ও মালদার ছিলাম।
★ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভ্যাস ছিল যেদিকে যুদ্ধে যাওয়ার মনস্থ করতেন এর বিপরীত দিকের অবস্থা জিঙ্গাসা করতেন। কিন্তু এ যুদ্ধে প্রচন্ড গরম, সফরও বহু দূরের, এ ছাড়া শত্রুর সৈন্য সংখ্যাও অধিক। এ কারণে পূর্ণ প্রস্ততির জন্য আগেই জানিয়ে দিলেন।
★
যুদ্ধ শেষে ফেরত আসার পর অন্যন্যাদের ন্যয় আমি ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি এর সম্মুখে উপস্থিত হলাম। অতঃপর
আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট বললাম, আল্লাহর কসম আমার কোন ওজর ছিল না। অন্য সময়ের চেয়ে অধিক অবসর ও সচ্ছল ছিলাম। আমি আমার অবস্থা বিস্তারিত বললাম।
রাসূল সাঃ আমার কথাবার্তা শুনার পর বললেন, সে সত্য বলেছে। অতঃপর তিনি বললেন আচ্ছা যাও। তোমার ফায়সালা আল্লাহ তা‘আলা করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের তিনজনের সাথে সকল সাহাবাদের কথাবার্তা নিষিদ্ধ করে দিলেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিষেধের পর লোকেরা আমাদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দিল ও আমাদের থেকে দূরে সরে থাকতে লাগল। তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা এভাবে ব্যক্ত করেছেন যে, মনে হল, দুনিয়াটা পরিবর্তন হয়ে গেছে ,পৃথিবী এত প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও সংকীর্ণ মনে হত লাগল।
এমতাবস্থায় ৪০দিন অতিবাহিত হয়ে গেল।
৪০দিন পর রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ হতে এক দূত, এ হুকুম নিয়ে আসল যে, আপন স্ত্রীকেও ত্যাগ কর। আমি জিঙ্গাসা করলাম, তাকে তালাক দিয়ে দিব কি? উত্তরে বলল, না, বরং পৃথক থাক। অপর দুই সঙ্গীর নিকট ও একই নির্দেশ পৌঁছে। তিনি বলেন, স্ত্রীকে বললাম, আল্লাহর পক্ষ হতে কোন ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত পিত্রালয়ে থাক।
অতঃপর পঞ্চাশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহর পক্ষ হতে ক্ষমার ঘোষণা আসে।
আল্লাহ তাআ'লা তাদের অবস্থা এভাবে ব্যক্ত করেছেন
আল্লাহ তাআ'লা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ১১৮
وَعَلَى ٱلثَّلَٰثَةِ ٱلَّذِينَ خُلِّفُوا۟ حَتَّىٰٓ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ ٱلْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنفُسُهُمْ وَظَنُّوٓا۟ أَن لَّا مَلْجَأَ مِنَ ٱللَّهِ إِلَّآ إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوٓا۟ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
অর্থঃ এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পেছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্বেও তাদের জন্য সঙ্কুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠলো; আর তারা বুঝতে পারলো যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই-অতঃপর তিনি সদয় হলেন তাদের প্রতি যাতে তারা ফিরে আসে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দয়াময় করুণাশীল।
★মুনাফিকরাও তিনটি কাজে লিপ্ত হল★
আল্লাহ তা‘আলার বাণী শুনুন
আল্লাহ তা`আলা বলেন
সূরা আত-তাওবাহ্* (التوبة), আয়াত: ৮১
فَرِحَ ٱلْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَٰفَ رَسُولِ ٱللَّهِ وَكَرِهُوٓا۟ أَن يُجَٰهِدُوا۟ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَقَالُوا۟ لَا تَنفِرُوا۟ فِى ٱلْحَرِّ
(১) পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে;
(২) আর জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে
(৩) এবং বলেছে, এই গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না।
আল্লাহ তা‘আলা এদের উত্তরে বলেন
قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا لَّوْ كَانُوا۟ يَفْقَهُون
বলে দাও, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদের বিবেচনা শক্তি
থাকত।
বিঃদ্রঃ (১) নিজেরা যুদ্ধে না গিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছে।
(২) আর নিজেরা জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে।
(৩) অন্যদেরকে যুদ্ধে যেতে নিষেধ করেছে। এবং বলেছে এই প্রচন্ড গরমে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করোনা।
ফায়েদা : (১) ইহা ছিল সাহাবায়ে কেরামদের আনুগত্য, দ্বীনদারি ও আল্লাহ ভীরুতার নিদর্শন। তাহারা সারা জীবন জিহাদে শরীক হয়েছেন। একটিমাত্র জিহাদে অংশগ্রহণ না করার কারণে কত বড় কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হলেন এবং তা অবনত মস্তকে মানিয়া নেন।
তদুপরি যে সম্পত্তির কারণে এত বড় দুর্দশায় পতিত হন উহাকেও আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করিয়া দেন এবং কাফের বাদশাহের চিঠি পাইয়া উহাতে উত্তেজিত না হওয়া বরং উহাকে আল্লাহ ও রাসূল (রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর নারাজীর কারণ মনে করিয়া আরো বেশি কাতর হইয়া পড়েন।
(২) বিগত দিনে কোন জিহাদ কাযা না হওয়া সত্তেও শুধুমাত্র একটি জিহাদ কাযার দরুণ রাসূল (রাসূলূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর জীবদ্দশায় সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এর যদি এমন কঠিন শাস্তি হতে পারে তাহলে আমরা যে জীবনে একটি জিহাদেও অংশগ্রহন করিনি বা নিজের পক্ষ হতে জিহাদে যাওয়ার জন্য কোন প্রস্তুতিও নেইনি তাহলে আমাদের অবস্থা কী হবে ?
বরং সুযোগে সুযোগে বিরোধিতা করছি।
অনেকে পরামর্শ করতে এসেছে, তাদেরকে বলেছি আগে লেখা পড়া শেষ কর। এরপর এগুলোর ব্যপারে দেখা যাবে।
বিঃদ্রঃ ঃ আমরা যে লেখা পড়া শেষ করার পরামর্শ দিচ্ছি, কিন্তু তারা যে এতটুকু হায়াত পাবে এর গ্যরান্টি দিতে পারবো কি?
আল্লাহ তা‘আলার উক্ত বাণী আমাদের স্মরণ আছে কি?
সূরা আল আরাফ (الأعراف), আয়াত: ৩৪
وَلِكُلِّ اُمَّةٍ اَجَلٌ*ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُهُمْ لَا يَسْتَاْخِرُوْنَ سَاعَةً* وَّلَا يَسْتَقْدِمُوْنَ
অর্থঃ প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে।
যদি পরামর্শ গ্রহীতা আল্লাহর দরবারে আপনার ব্যপারে নালিশ করে তাহলে কি বলবো, কোন উত্তর প্রস্তুত করেছি কি?
আল্লাহ! তুমি আমাদের সকল মুসলমান নর-নারীদেকে ক্ষমা করে দাও। সকলকে মৃত্যুর পূর্বে তাওবা করে গাযওয়ায়ে হিন্দের পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফিক দাও। সাহাবায়ে কেরামদের মত তাওবা করার তাওফিক দাও। আমিন।
অবশেষে আপনাদেরকে
আল্লাহর বাণী শুনিয়ে দিচ্ছি
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
সূরা আত-তাহরীম (التّحريم), আয়াত: ৮
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ تُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّـَٔاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ يَوْمَ لَا يُخْزِى ٱللَّهُ ٱلنَّبِىَّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ نُورُهُمْ يَسْعَىٰ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَٰنِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَٱغْفِرْ لَنَآ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِير
অর্থঃ মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।
পরবর্তী আয়াত
সূরা আত-তাহরীম (التّحريم), আয়াত: ৯
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ جَٰهِدِ ٱلْكُفَّارَ وَٱلْمُنَٰفِقِينَ وَٱغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَىٰهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
অর্থঃ হে নবী! কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জেহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।
চলবে ইনশাআল্লাহ....
Comment