Announcement

Collapse
No announcement yet.

অভিজিৎ রায়ঃ রক্তমাংসে ইসলামবিদ্বেষ মিশে যাওয়া এক কুখ্যাত শাতিম।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অভিজিৎ রায়ঃ রক্তমাংসে ইসলামবিদ্বেষ মিশে যাওয়া এক কুখ্যাত শাতিম।

    এলাকার এক ইঞ্জিনিয়ারিংপড়ুয়া বড় ভাইয়ের সাথে আসরের নামাজের পর রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। আমি হঠাৎ অভিজিৎ রায়ের প্রসঙ্গ তুললাম। তোলা মাত্রই তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনের নিন্দা জানালেন। কারণ এতদিন হল এত বছর গেল এখন পর্যন্ত অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা বা বিচার হলো না। "এই দেশে কোন বিচার নেই" বলে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি।

    আমি বললাম, ভাইয়া, এই লোক তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করত। বাংলাদেশে এথেইজমকে ছড়িয়ে দেয়ার পুরোধা এই ব্যক্তি। তিনি আর তেমন কিছু বললেন না এটা শুনে।

    আবরার ফাহাদ এর হত্যার সময় দেখে গিয়েছিলো একদল লোক অভিজিৎ আর আবরারকে এক পাল্লায় মাপতে। এদেশে বাক স্বাধীনতা নেই, কথা বলার অধিকার নেই। বললেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চাপাতির নিচে প্রাণ দিতে হয়।

    ক্লাস এইট নাইনে সর্বপ্রথম নোকিয়া ফোন দিয়ে ব্লগ জগতের সাথে পরিচিত হই। তখনই মুক্তমনা ব্লগে প্রবেশ করি। এই ব্লগে ঢুকে পড়ে দেখতাম নাস্তিকরা কিভাবে ইসলাম কে নিয়ে গালিগালাজ করতো। মালাউন অভিজিৎ রায় তখন বেঁচে নেই। ইসলামের বিভিন্ন বিধান খণ্ডনের নামে তারা অত্যন্ত ভালগার ওয়ার্ড ইউজ করতো।

    এই মুক্তমনা ব্লগ এর প্রতিষ্ঠাতা ছিল মালউন অভিজিৎ রায়। ২০০১ সালের দিকে সে এই সাইটটি প্রতিষ্ঠা করে। এটি হয়ে পড়ে নাস্তিকদের বিচরণক্ষেত্র। তারা টার্গেট করত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিজাত শ্রেণীকে। তারা সফলতাও অর্জন শুরু করে। দিনে দিনে নাস্তিকদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের একটা অংশ ঝুঁকে পরে নাস্তিক্যবাদের দিকে।

    আলেম-উলামারা তখন জানতে না এসব। আরেকদল মুসলিম ব্লগার মিলে সদালাপ নামের একটা ব্লগ তৈরি করেন ২০০৩ সালে। নিয়মিত নাস্তিকদের বিভিন্ন যুক্তির জবাবদেওয়া হত এই সাইট থেকে।

    নেট জগতে নাস্তিকদের একটা সুনির্দিষ্ট চেইন অব কমান্ড ছিল। এই এই চেইনের সেন্ট্রাল ফিগার ছিলো এই অভিজিত রায়। তাদের প্রচেষ্টার সাকসেস রেইট বাড়তে থাকে। কতটা বাড়ছিলো সেটা ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়ে যায়।


    কিলিং এর বছর দুয়েক আগে সে "ইসলাম উন্মোচন" নামক একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে। এটা কেউ জানত না, এমনকি নাস্তিকরাও না। এটা থেকে এসে ফ্রী-লি গালিগালাজ করতো ইসলামের বিভিন্ন টপিক ও হিস্ট্রি নিয়ে। এই বেনামী পেইজ তৈরির কারণ ছিল এই লোক তার নাস্তিক মুরিদদের দ্বারাও বিরক্ত হতো প্রচুর। যারা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াও সদ্য নাস্তিক হতো তাকে অনেক কোয়েশ্চন করতো, গড ভাবত নিজেদের।

    মজার ব্যাপার হলো এই অভিজিৎ রায় সদালাপের মুসলিম ব্লগারদের সর্বদা এড়িয়ে চলতো। কারণ বিতর্কে তাদের সাঠে সে পেরে উঠতো না। সম্প্রতি সদালাপ সাইটটি অফ করে দেয়া হয়েছে।

    সদালাপের একজন ব্লগার লিখেন, "আমি হঠাৎ করে এই "ইসলাম উন্মোচন" পেজটির সন্ধান পাই। যেহেতু আমি অভিজিৎ রায়ের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করে অভ্যস্ত তাই এটা বুঝা কঠিন ছিল না যেটা অভিজিৎ রায়ের। মজার ব্যাপার হলো এই পেজটিতে ২০১৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারির এর পরে আর কোন লেখা পাওয়া যায় না।
    আমি ২৬ ফেব্রুয়ারি আমি এই পেজটাতে একটা মেসেজ পাঠাই, "ভাবীজিত রায়! কেমন আছেন!" আজ পর্যন্ত এর কোন রিপ্লাই দেওয়া হয়নি এমনকি মেসেজ সিন করাও হয়নি।
    বাস্তবে ইসলামবিদ্বেষ এই লোকটার রক্তমাংসের মিশে গিয়েছিল।"

    অভিজিৎ রায় নিহত হয় ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে। ঢাকার অমর একুশে বইমেলায় বিচরণ করার সময় আনসার আল ইসলামের একদল দক্ষ মুজাহিদ অভিজিৎ রায়ের ওপর আক্রমণ করেন। চাপাতি দিয়ে তার গলা-মুখ চিড়বিড় করে দেন। তার বউ রাফিদা আহমেদ বন্যাও তার সাথে ছিল। কিন্তু কৌশলগত কারণে ওকে হত্যা করেননি। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে ফেলেছিলেন।

    মুখোশধারী মুজাহিদগণ চিতাবাঘের ন্যায় অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে অপারেশন শেষ করে হাওয়া হয়ে যান, মিশে যান সাধারণ মানুষের ভিড়ে। অথচ বইমেলার চতুর্দিকে পুলিশের বেষ্টনী ছিলো।

    সম্প্রতি আমেরিকা অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের মাথার মূল্য ৫০ লাখ ডলার ঘোষণা দিয়েছে।

Working...
X