আল্লাহর তাকদির ও ফায়াসালার উপর পূর্ণ আস্থা ও অটল বিশ্বাস নিয়ে আমি নিচের কথা গুলো লিখছি।
শুরু থেকেই আমার জীবনটা ছিল অন্যরকম। সবার থেকে কিছুটা ভিন্ন। আমার হাসি-আনন্দ ও দুঃখবেদনা, সবকিছুই ছিল অদ্ভুত। জীবনের চাকা ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে আজ আমি এখানে, আফগানিস্তানের রণাঙ্গনে।
হয়ত আপনি ভাবেন, এখানে আমার কি কাজ? তো এখানে আমার একমাত্র কাজ হল, আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার উপর ফরজ করা একটি মহা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা দির্ঘ যুগ পর্যন্ত আমি ভুলে ছিলাম। এখানে আবার নতুন করে সেটা ফিরে এসেছে। যেসকল মহান পুরুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করে তা ফিরিয়ে এনেছেন আল্লাহ তাদেরকে আপন শান মোতাবেক জাযা দান করুন।
মা, বিশ্বাস করুন, আপনার সঙ্গে রূঢ় আচরণ, দুর্ব্যবহার আর অবাধ্যতা করা আমার উদ্দেস্য নয়।আবার কারো দ্বারা প্রতারিত বা বিশেষ কোন ঘটনায় প্ররোচিত হয়ে আমি এখানে আসিনি। সত্যি তো এটাই যে, আমি ঘর থেকে এমন এক অবস্থায় বের হয়েছি যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের সম্পূর্ণ বাইরে চলে গিয়েছিল। ইসলাম ও মুসলমানরা চরম হুমকির মুখে পড়েছিল। ইসলামকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছিল। মা-বোনদের ইজ্জত-আবরু লুন্ঠিত হচ্ছিল। কিন্তু আফসোস! সবাই নীরব দর্শকের ভুমিকায় তামাশা দেখছিল, আরব বিশ্বের নামিদামি প্রচার-মাধ্যমগুলো যার জঘণ্য প্রমান।
সাধারণ-অসাধারণ সবাই নির্বিকার নিশ্চিন্ত মনে খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে আর ফুর্তি করছে। যার পরিনতি লাঞ্ছনার মৃত্যু ছাড়া আর কী হতে পারে।
বলুন মা, এমন পরিস্থিতিতেও কি ঘরে বসে থাকা আমাকে কি শোভা পেত?
তাই আমি এবং আমার সহযোদ্ধারা এখানে সমবেত হয়েছি, নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে, শেষ বিন্দুটুকু বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর কালিমাকে উচু করার জন্য।
খূব ভাল হত যদি এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আপনার এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতা না হোক অন্তত একটু সহমর্মিতা পেতাম।
যাই হোক, আমাদের তো অন্যদিকে তাকানোর সুজোগ নেই, আমরা শুধু সামনে এগিয়ে যাবো।
গুলি লাগবে আমাদের বুকে; পিঠে নয়। সুতরাং তোমরা আমাদের সমালোচনা না করে কামিয়াবি কামনা করো। কারণ পরিস্থিতি এমন বিভীষিকাময় যে, পাষান্ডের পাথর-হৃদয়ও গলে যাবে। আর যার বুকে হৃদয় আছে এবং সেখানে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি সামান্য বেদনা ও সমবেদনা আছে তার হৃদয় ফেটেই যাবে। কথা হয়ত অনেক লম্বা হয়ে গেল। বিদায়-বেলায় আরো কত কথা এসে যেতে চাই, তবে জীবনের শেষ আবদার হিসাবে তোমাদের কাছে আমার বিদায়ী আকুতি- যখনই তোমরা কোরআনের আয়াতে, হাদিসের আবহে, পরস্পর স্মৃতিচারনে শহীদদেরকে স্মরণ করবে তখন আমাকেও স্মরণ করো।আমাকে স্মরন করো দিনের আলোয়, চাঁদের জোৎসনায়, রাতের আঁধারে, আমাবস্যার অমানিশায়। স্মরণ করো... ভোরের ঊষায়, সন্ধ্যার লালিমায়। স্মরণ করো প্রতিটি ইসলামি আন্দোলনের তরঙ্গ জোয়ারের সময়; স্মরণ করো আর শিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করো।
এখন এমন একটি মুহূর্ত যখন ভিন্ন কোন চিন্তা মাথায় আসার সুযোগ পায় না। কথা বলতে চাইলে ভাষা তালাশ করে পাওয়া যায় না। আর এগুলোর প্রয়োজনই বা কি? ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছি, মানযিলে মাকসূদে রওয়ানা হয়েছি, এখন শুধু পৌঁছার অপেক্ষা। কোথায় পৌঁছব? যেখানে আমার আগে পৌঁছেছে আমার পূর্ববর্তী শহীদরা। যেখানে আমার জন্য ইন্তেযার করছে ইমামুল মুজাহিদীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন জনাব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেখানে আমি পাবো মহান রবের পরম সন্তষ্টি। আমার চিরস্থায়ী ঠিকানা জান্নাত।
ইতি
আব্দুল ওয়হহাব
যে মানুষের চোখে গাজি, আল্লাহর দরবারে শহীদ।
সংগৃহিত: কারা জান্নাতি কুমারীদের ভালবাসে।
শুরু থেকেই আমার জীবনটা ছিল অন্যরকম। সবার থেকে কিছুটা ভিন্ন। আমার হাসি-আনন্দ ও দুঃখবেদনা, সবকিছুই ছিল অদ্ভুত। জীবনের চাকা ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে আজ আমি এখানে, আফগানিস্তানের রণাঙ্গনে।
হয়ত আপনি ভাবেন, এখানে আমার কি কাজ? তো এখানে আমার একমাত্র কাজ হল, আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার উপর ফরজ করা একটি মহা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা দির্ঘ যুগ পর্যন্ত আমি ভুলে ছিলাম। এখানে আবার নতুন করে সেটা ফিরে এসেছে। যেসকল মহান পুরুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করে তা ফিরিয়ে এনেছেন আল্লাহ তাদেরকে আপন শান মোতাবেক জাযা দান করুন।
মা, বিশ্বাস করুন, আপনার সঙ্গে রূঢ় আচরণ, দুর্ব্যবহার আর অবাধ্যতা করা আমার উদ্দেস্য নয়।আবার কারো দ্বারা প্রতারিত বা বিশেষ কোন ঘটনায় প্ররোচিত হয়ে আমি এখানে আসিনি। সত্যি তো এটাই যে, আমি ঘর থেকে এমন এক অবস্থায় বের হয়েছি যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের সম্পূর্ণ বাইরে চলে গিয়েছিল। ইসলাম ও মুসলমানরা চরম হুমকির মুখে পড়েছিল। ইসলামকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছিল। মা-বোনদের ইজ্জত-আবরু লুন্ঠিত হচ্ছিল। কিন্তু আফসোস! সবাই নীরব দর্শকের ভুমিকায় তামাশা দেখছিল, আরব বিশ্বের নামিদামি প্রচার-মাধ্যমগুলো যার জঘণ্য প্রমান।
সাধারণ-অসাধারণ সবাই নির্বিকার নিশ্চিন্ত মনে খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে আর ফুর্তি করছে। যার পরিনতি লাঞ্ছনার মৃত্যু ছাড়া আর কী হতে পারে।
বলুন মা, এমন পরিস্থিতিতেও কি ঘরে বসে থাকা আমাকে কি শোভা পেত?
তাই আমি এবং আমার সহযোদ্ধারা এখানে সমবেত হয়েছি, নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে, শেষ বিন্দুটুকু বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর কালিমাকে উচু করার জন্য।
খূব ভাল হত যদি এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আপনার এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতা না হোক অন্তত একটু সহমর্মিতা পেতাম।
যাই হোক, আমাদের তো অন্যদিকে তাকানোর সুজোগ নেই, আমরা শুধু সামনে এগিয়ে যাবো।
গুলি লাগবে আমাদের বুকে; পিঠে নয়। সুতরাং তোমরা আমাদের সমালোচনা না করে কামিয়াবি কামনা করো। কারণ পরিস্থিতি এমন বিভীষিকাময় যে, পাষান্ডের পাথর-হৃদয়ও গলে যাবে। আর যার বুকে হৃদয় আছে এবং সেখানে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি সামান্য বেদনা ও সমবেদনা আছে তার হৃদয় ফেটেই যাবে। কথা হয়ত অনেক লম্বা হয়ে গেল। বিদায়-বেলায় আরো কত কথা এসে যেতে চাই, তবে জীবনের শেষ আবদার হিসাবে তোমাদের কাছে আমার বিদায়ী আকুতি- যখনই তোমরা কোরআনের আয়াতে, হাদিসের আবহে, পরস্পর স্মৃতিচারনে শহীদদেরকে স্মরণ করবে তখন আমাকেও স্মরণ করো।আমাকে স্মরন করো দিনের আলোয়, চাঁদের জোৎসনায়, রাতের আঁধারে, আমাবস্যার অমানিশায়। স্মরণ করো... ভোরের ঊষায়, সন্ধ্যার লালিমায়। স্মরণ করো প্রতিটি ইসলামি আন্দোলনের তরঙ্গ জোয়ারের সময়; স্মরণ করো আর শিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করো।
এখন এমন একটি মুহূর্ত যখন ভিন্ন কোন চিন্তা মাথায় আসার সুযোগ পায় না। কথা বলতে চাইলে ভাষা তালাশ করে পাওয়া যায় না। আর এগুলোর প্রয়োজনই বা কি? ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছি, মানযিলে মাকসূদে রওয়ানা হয়েছি, এখন শুধু পৌঁছার অপেক্ষা। কোথায় পৌঁছব? যেখানে আমার আগে পৌঁছেছে আমার পূর্ববর্তী শহীদরা। যেখানে আমার জন্য ইন্তেযার করছে ইমামুল মুজাহিদীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন জনাব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেখানে আমি পাবো মহান রবের পরম সন্তষ্টি। আমার চিরস্থায়ী ঠিকানা জান্নাত।
ইতি
আব্দুল ওয়হহাব
যে মানুষের চোখে গাজি, আল্লাহর দরবারে শহীদ।
সংগৃহিত: কারা জান্নাতি কুমারীদের ভালবাসে।