Announcement

Collapse
No announcement yet.

সাদা-কালো দৃষ্টি দিয়ে কি তালিবানের হিকমাহ বুঝা সম্ভব?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সাদা-কালো দৃষ্টি দিয়ে কি তালিবানের হিকমাহ বুঝা সম্ভব?

    আফগানিরা আসলে জাতিগতভাবে খুবই সাহসী এবং মাথা না নোয়ানোর জাতি। আর যাই হোক জোর করে তাদের ভিতরে কোন কিছু ইঞ্জেক্ট করে দিলে তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে চায় না। কারো দাসত্ব বা গোলামী তারা সহ্য করতে পারে না।

    আফগান বিজয়ের পর আমরা দেখেছি আফগান নাস্তিকরা তালেবানের শাসনের অধীনে থেকেও বিভিন্ন আইনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদ করেছে। তালে-বানকে তারা কেয়ারও করেনি।

    ২০ বছরের যুদ্ধেও দেখা গেছে আফগান সরকারের পুতুল অফিসাররা ন্যাটোর ও আমেরিকার অফিসারদের কেয়ার করেনি। এটা আফগানদের জাতিগত বৈশিষ্ট।

    এমনই একটা ছবিতে দেখলাম, কয়েকজন আফগানী সেকুলার মহিলা তালিবের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হুট করে হিজাব খুলে ফেললো। তালিব ভাইয়েরা দৃষ্টি সরিয়ে ফেললেন। বাট এই বিদঘুটে মেয়েগুলো তালিব ভাইদের গায়ে খোঁচানো শুরু করলো।

    মনে পড়লো ক্লাস নাইনের কথা যখন প্রাইভেটে স্যার না থাকায় বেঞ্চির পিছনে বসা কিছু বখাটে মেয়ে পিঠে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুকি করছিলো। তাদের সাথে কথা বলানোর চেষ্টা করছিলো। নামের সাথে অন্য কোনো মেয়ের নাম মিলিয়ে হাসি-ঠাট্টা করছিলো।

    জেনে রাখা ভালো আফগান সেক্যুলার-নাস্তিক আর বাঙাল সেক্যুলার-নাস্তিকরা একপর্যায়ের না। মনোভাবের দিক দিয়ে আফগান নাস্তিকরা অনেক সাহসী। বাঙাল নাস্তিকরা তো অল্প ক'জন আনসার আল ইসলামের মুজাহিদ ভাইদের চাপাতি খেয়ে যে যেদিকে পারে পালিয়ে গিয়েছিল।

    আর একজন মুজাহিদ বলেছেন, "আমরা এক আফগান কমিউনিস্টকে গ্রেফতার করলাম।
    (তখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানের যুদ্ধ চলছিল।)
    আফগান কমিউনিস্টকে আমরা কালেমা পড়তে বললাম।
    কিন্তু সে বলল, এই কালেমার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করছি! আমি কালেমা পড়তে পারবো না।

    এরপর আমরা থেকে টর্চার করার পরেও সে মুখ খুলল না।

    শেষ পর্যন্ত আমরা তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিলাম তবুও সে কালেমা পড়ে নি।"

    আরেহ, সেতো প্রাণ বাঁচানোর জন্য কালেমা পড়তে পারতো!

    এই জাতির সাইকোলজি তালিবান জানে, এই কারণেই শরিয়া আইনের ব্যাপারে তাদের উপর বড় রকমের জোর করছে না। জোরাজোরি করলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। কারণ এখনও তালিবান আফগান জাতিকে পুরোপুরি কন্ট্রোলে আনতে পারেনি। গ্রামীণ পর্যায়ে তালিবানের কন্ট্রোল এ থাকলেও শহুরে আফগানীদের কন্ট্রোলে আনতে সময় লাগবে।

    তারা অন্যান্য ভূখণ্ডের মুসলিমদের মতোই শহুরে আফগানরা শতাধিক বর্ষ ত্বাগুতের আন্ডারে কাটিয়েছে। মাঝখানে মাত্র ৫ বছর শরীয়াহ আইনের সংস্পর্শে এসেছিলো। এর পরে আরো ২০ বছর কাটিয়েছে পশ্চিমা সংস্কৃতির আন্ডারে। তাই তারা শরীয়াহ আইনের স্বাদ কমই পেয়েছে।

    তালিবানের পতনের পর আফগান নাস্তিক যুবকরা প্রকাশ্যে কাবুল সেলুনে লাইন ধরছিলো দাড়ি কামাতে। বন্দী মুজাহিদ ভাইদের সামনে এসে দেখিয়েছিলো...দাড়ি তো কামিয়ে ফেলেছি, এখন কি করবে?!!

    এই কারণে জিহাদ চলাকালীন ব্যাক্তিগত শরীয়াহ আইনগুলোর ব্যাপারে এখন মুজাহিদগণ ছাড় দিয়ে দেন।

    আল-কায়েদা ইন ইরাক এই ভুলটা করেছিল তারা যে প্রধান তিন ভুল করেছিলেন,

    ১. মহিলাদের পর্দার ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি করেছিলেন। যেমন, মুখ ঢাকা। অথচ ইরাকি নারীরা পর্দায় থেকে অভ্যস্ত ছিলো না।

    ২. যে সমস্ত গোত্রপতি আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল তাদেরকে হত্যা করে ফলে গোত্রগুলো তাদের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে।

    ৩. বেশিরভাগ সদস্য ছিলেন বাইরের রাষ্ট্রের। যার ফলে ইরাকীরা ভালো চোখে দেখেনি।
    আপাতদৃষ্টিতে এগুলো ছিলো বৈধ, বাট ৪র্থ প্রজন্মের যুদ্ধকৌশলের বেলায় এগুলো ভুল পদক্ষেপ।
    এছাড়াও ছিলো সাধারণ শিয়াদের হত্যা। আল-কায়েদা ইন ইরাকের এই কার্যক্রম আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় আল-কায়েদা তা মেনে নেয়নি। তাদেরকে এসব না করতে সতর্ক করে।

    কিন্তু আল-কায়েদা ইন ইরাক এসবের তোয়াক্কা করেনি। ফলে ইরাকবাসী আল-কায়েদার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার তথ্য দিতে সাহায্য শুরু করে। আল কায়েদা এক তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে ইরাকের ভূমিতে।

    এর থেকে আল কায়েদা শিক্ষা নেয় এবং অন্যান্য ভূখণ্ডে এর প্রয়োগ করে। সোমালিয়া, ইয়ামান, সিরিয়া, মালি ভূখণ্ডগুলোতে আল-কায়েদা ব্যক্তিগত শরয়ী বিধান যেমন, দাড়ি রাখা, মেয়েদের হিজাব নিকাব দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা ইত্যাদি কড়াকড়ি আরোপ করেনি। বহু কার্যক্রম জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করে।

    কোনো কোনো ফটো রিপোর্টে দেখা যায় আল শাবাবের মুজাহিদ কমান্ডারগণ কোনো এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। পরামর্শ নিচ্ছেন।
    ঈদের সময় দেখা যায় মুজাহিদগণ কুস্তি ও অন্যান্য খেলা দেখিয়ে জনগণকে আনন্দ দিচ্ছেন।

    একটা জাতিকে আমূল পরিবর্তন করতে হলে শাসন ক্ষমতায় যাওয়ার পরে জোরাজোরি না, বরং তার প্রতি অধিকতর নমনীয় হওয়ার মাধ্যমে নিজের আদর্শগুলো ধীরে ধীরে এর ভিতরে ইঞ্জেক্ট করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ নিয়ে নতুন প্রজন্মকে নিজের আদর্শ অনুসারে গড়ে তুলতে হবে। ফলে এক যুগ পরে ওই জাতি বলতে গেলে নিজের আদর্শের হয়ে যাবে।

    জেনে রাখতে হবে, মুসলিম জাতি দীর্ঘকাল যাবত শরিয়াহ শাসনের স্বাদ পায়নি, কাজেই এর প্রতি তাদের টান নেই। মুজাহিদদেরকে হিকমাহর সঙ্গে এই স্বাদ পাওয়াতে হবে। বিশেষ করে যখন শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত তখন তো কোনভাবেই কড়াকড়ি আরোপ করা যাবে না।

  • #2
    জাজাকাল্লহ্।

    Comment

    Working...
    X