শুরুর কথাটা বলে নিই। ঘরে এসে দেখলাম আম্মু বোরকা নেকাব, হাতমোজা, পা-মোজা পরে প্রস্তুত হচ্ছেন। পাড়ার মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। সাধারণত তিনি ভোট দিতে যান না, কারণ এতে পর্দার লঙ্ঘন হয়। কিন্তু সমস্যা হলো যিনি প্রার্থী তিনি আবার তার আত্মীয়! কাজেই ভোট না দিলে আত্মীয়ের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না।
আমি এসেই তাকে বোঝাতে চাইলাম যে ভোট দেয়া কুফরী। এটা কুফরী গণতন্ত্রের একটা স্বতন্ত্র জিনিস, যাতে বিধান দেয়ার মালিক আল্লাহকে সাব্যস্ত না করে জনগন ও পার্লামেন্টকে সাব্যস্ত করা হচ্ছে যা এক প্রকার শিরক। আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহর আইনকে রিজেক্ট করে মানবরচিত আইনকে প্রাধান্য দেয়া হবে। এই কারণে এটা কুফরে আকবর। .
যাই হোক তিনি বললেন, এসব কি বলছো তুমি? আলেমও না, নিজে নিজে ফতোয়া দিলে হবে? সারা দেশের লক্ষ লক্ষ আলেম ভোট দিচ্ছেন, তারা কি কোরআন-হাদীস পড়েননি? তাহলে তারা কি জেনে বুঝে শিরক করছেন?
আমি বললাম, গণতন্ত্রের কুফরীর ব্যাপারে অধিকাংশ আলেমই অবগত নন।
কিন্তু তিনি বুঝতে চাইলেন না, কারণ আমি আলেম না। বললেন, "দেইখো, ফেসবুকে এসব নিয়া লেইখো না, তাহলে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে।"
আমি মনে মনে ভাবলাম, হায়! গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে লিখলে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে, এটা আমার আম্মুও ভালো বুঝেন! গণতন্ত্র আমাদের সমাজে এতটাই শক্তিশালী হয়েছে! আমাদের শত্রু এতটাই শক্তিশালী!
যাই হোক, যেহেতু ভোটদান কুফরী, তাই আমার আম্মু কি কাফের হয়ে গেছেন? ১৪ বছর বয়সী এক জিহাদপ্রেমী পিচ্ছি ভাই তো তার বাবা মাকে কাফের মনে করে! আরেক ভাই অলরেডি ভোটদাতা সবাইকে কাফের মনে করে।
পরে মুজাহিদ শাইখ আবু হামযা আল মিশরী(আল্লাহ তাকে মুক্ত করুন) এর পুস্তক "Be Aware of Takfir" পুস্তিকাখানা পড়ার পরে বুঝতে পারলাম যে এখানে তাকফির করা বা কাফের হওয়াটা অনেক জটিল প্রসেস। বিশেষ করে ওই সমাজে যেখানে গণতন্ত্র সাধারন মুসলিমদের মধ্যে কালো পাথরের ওপর চলমান পিপড়ের মতো হয়ে গেছে।
উলামায়ে কেরাম এসব ক্ষেত্রে কাফের হওয়ার ব্যাপারে যে ৭টি শর্ত লিপিবদ্ধ করেছেন,
১. ওই কাজ যে কুফর তা নিয়ে সন্দেহ নাই
২. ওই ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য আছে ও তার বিচারের সক্ষমতা আছে।
৩. সে তার কৃতকর্মের ব্যাপারে অবগত।
৪. সে উদ্দেশ্যপ্রণীতভাবে কাজ করেছে, দুর্ঘটনা বশত না
৫. সে জাগ্রত অবস্থায় করেছে, ঘুমন্ত অবস্থায় না।
৬. উক্ত ব্যক্তিটি কোনো জোর জবরদস্তির শিকার হয়নি।
৭. তার কাছে কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নাই যে সে তা দিয়ে তার কাজকে ডিফেন্ড করবে। হয়তো সেটা কোনো আয়াত বা হাদীসের ভুল অর্থ নেয়ার মাধ্যমে।
এখন আসুন এই ৭টি মানদন্ডের আলোকে দেখে নেই,
১. গণতন্ত্র কুফর এতে সন্দেহ নাই।
২. আমার আম্মুর মানসিক ভারসাম্য আছে।
৩. তিনি জেনে বুঝেই ভোট দিয়েছেন।
৪. নাহ, উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবেই দিয়েছেন, তার আত্মীয়কে পাশ করাতে, দুর্ঘটনাবশত না।
৫. ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভোট দেননি, সজাগ অবস্থায় দিয়েছেন।
৬. তাকে কেউ জোর করেনি, বরং তিনি নিজেই রোদের মার খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে ভোট দিয়ে এসেছেন।
৭...........এখানেই সমস্যা! কারণ আমার আম্মুর কাছে তার কাজকে ডিফেন্ড করার মতো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা আছে! আর তিনি তা অলরেডি বলে দিয়েছেন,
"সারা দেশের লক্ষ লক্ষ আলেম ভোট দিচ্ছেন, তারা কি কোরআন-হাদীস পড়েননি? তাহলে তারা কি জেনে বুঝে শিরক করছেন?"
অবশ্যই তার এই ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য কারণ তিনি এদেশের উলামায়ে কেরামকে ফলো করেন। এবং বিশ্বাস করেন উলামায়ে কেরাম কোরআন-হাদিস ঘেঁটেই ভোটদানকে বৈধ বলেছেন।
মানে ভোটদানের মাধ্যমে এদেশের ৯৯% মুসলিম তাকফিরের ৭ টি শর্তের মধ্যে ৬ টিই পূরণ করে ফেলেছে, কিন্তু একটি মেজর শর্ত অপূরণ থাকায় তারা কাফের হওয়ার থেকে বেঁচে গেছে।
খারেজীরা যে কাজ করে, তারা ফুকাহায়ে কেরামের লিপিবদ্ধ করা এই শর্তগুলো হঠকারিতার বশে বাইপাস করে যায় এবং কাজের ওপর ভিত্তি করে ডাইরেক্টলি তাকফির করে।
আমি এসেই তাকে বোঝাতে চাইলাম যে ভোট দেয়া কুফরী। এটা কুফরী গণতন্ত্রের একটা স্বতন্ত্র জিনিস, যাতে বিধান দেয়ার মালিক আল্লাহকে সাব্যস্ত না করে জনগন ও পার্লামেন্টকে সাব্যস্ত করা হচ্ছে যা এক প্রকার শিরক। আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহর আইনকে রিজেক্ট করে মানবরচিত আইনকে প্রাধান্য দেয়া হবে। এই কারণে এটা কুফরে আকবর। .
যাই হোক তিনি বললেন, এসব কি বলছো তুমি? আলেমও না, নিজে নিজে ফতোয়া দিলে হবে? সারা দেশের লক্ষ লক্ষ আলেম ভোট দিচ্ছেন, তারা কি কোরআন-হাদীস পড়েননি? তাহলে তারা কি জেনে বুঝে শিরক করছেন?
আমি বললাম, গণতন্ত্রের কুফরীর ব্যাপারে অধিকাংশ আলেমই অবগত নন।
কিন্তু তিনি বুঝতে চাইলেন না, কারণ আমি আলেম না। বললেন, "দেইখো, ফেসবুকে এসব নিয়া লেইখো না, তাহলে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে।"
আমি মনে মনে ভাবলাম, হায়! গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে লিখলে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে, এটা আমার আম্মুও ভালো বুঝেন! গণতন্ত্র আমাদের সমাজে এতটাই শক্তিশালী হয়েছে! আমাদের শত্রু এতটাই শক্তিশালী!
যাই হোক, যেহেতু ভোটদান কুফরী, তাই আমার আম্মু কি কাফের হয়ে গেছেন? ১৪ বছর বয়সী এক জিহাদপ্রেমী পিচ্ছি ভাই তো তার বাবা মাকে কাফের মনে করে! আরেক ভাই অলরেডি ভোটদাতা সবাইকে কাফের মনে করে।
পরে মুজাহিদ শাইখ আবু হামযা আল মিশরী(আল্লাহ তাকে মুক্ত করুন) এর পুস্তক "Be Aware of Takfir" পুস্তিকাখানা পড়ার পরে বুঝতে পারলাম যে এখানে তাকফির করা বা কাফের হওয়াটা অনেক জটিল প্রসেস। বিশেষ করে ওই সমাজে যেখানে গণতন্ত্র সাধারন মুসলিমদের মধ্যে কালো পাথরের ওপর চলমান পিপড়ের মতো হয়ে গেছে।
উলামায়ে কেরাম এসব ক্ষেত্রে কাফের হওয়ার ব্যাপারে যে ৭টি শর্ত লিপিবদ্ধ করেছেন,
১. ওই কাজ যে কুফর তা নিয়ে সন্দেহ নাই
২. ওই ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য আছে ও তার বিচারের সক্ষমতা আছে।
৩. সে তার কৃতকর্মের ব্যাপারে অবগত।
৪. সে উদ্দেশ্যপ্রণীতভাবে কাজ করেছে, দুর্ঘটনা বশত না
৫. সে জাগ্রত অবস্থায় করেছে, ঘুমন্ত অবস্থায় না।
৬. উক্ত ব্যক্তিটি কোনো জোর জবরদস্তির শিকার হয়নি।
৭. তার কাছে কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নাই যে সে তা দিয়ে তার কাজকে ডিফেন্ড করবে। হয়তো সেটা কোনো আয়াত বা হাদীসের ভুল অর্থ নেয়ার মাধ্যমে।
এখন আসুন এই ৭টি মানদন্ডের আলোকে দেখে নেই,
১. গণতন্ত্র কুফর এতে সন্দেহ নাই।
২. আমার আম্মুর মানসিক ভারসাম্য আছে।
৩. তিনি জেনে বুঝেই ভোট দিয়েছেন।
৪. নাহ, উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবেই দিয়েছেন, তার আত্মীয়কে পাশ করাতে, দুর্ঘটনাবশত না।
৫. ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভোট দেননি, সজাগ অবস্থায় দিয়েছেন।
৬. তাকে কেউ জোর করেনি, বরং তিনি নিজেই রোদের মার খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে ভোট দিয়ে এসেছেন।
৭...........এখানেই সমস্যা! কারণ আমার আম্মুর কাছে তার কাজকে ডিফেন্ড করার মতো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা আছে! আর তিনি তা অলরেডি বলে দিয়েছেন,
"সারা দেশের লক্ষ লক্ষ আলেম ভোট দিচ্ছেন, তারা কি কোরআন-হাদীস পড়েননি? তাহলে তারা কি জেনে বুঝে শিরক করছেন?"
অবশ্যই তার এই ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য কারণ তিনি এদেশের উলামায়ে কেরামকে ফলো করেন। এবং বিশ্বাস করেন উলামায়ে কেরাম কোরআন-হাদিস ঘেঁটেই ভোটদানকে বৈধ বলেছেন।
মানে ভোটদানের মাধ্যমে এদেশের ৯৯% মুসলিম তাকফিরের ৭ টি শর্তের মধ্যে ৬ টিই পূরণ করে ফেলেছে, কিন্তু একটি মেজর শর্ত অপূরণ থাকায় তারা কাফের হওয়ার থেকে বেঁচে গেছে।
খারেজীরা যে কাজ করে, তারা ফুকাহায়ে কেরামের লিপিবদ্ধ করা এই শর্তগুলো হঠকারিতার বশে বাইপাস করে যায় এবং কাজের ওপর ভিত্তি করে ডাইরেক্টলি তাকফির করে।
Comment