Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইমাম আইমানঃ কে ও কেন!! আবু মুনযির শানক্বীতী

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইমাম আইমানঃ কে ও কেন!! আবু মুনযির শানক্বীতী

    ইমাম আইমানঃ কে ও কেন!!

    আমরা যে পরিস্থিতিতে বর্তমানে বসবাস করছি, শত্রুরা পাগলা কুকুরের ন্যায় আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ছে, ক্রমাগত আক্রমণ ও বহুমুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে উম্মাহর জন্য আবশ্যক হল তাদের শক্তিগুলােকে একত্র করা এবং তাদের প্রচেষ্টাগুলােকে ঐক্যবদ্ধ করা। উম্মাহ আজ তার প্রতিটি সৈন্যের প্রতি, প্রতিজন আলেমের প্রতি এবং সঠিক সিদ্ধান্তের অধিকারী প্রতিটি জ্ঞানীর প্রতি মুখাপেক্ষী।

    এই যখন উম্মাহর অবস্থা, তখন উম্মাহ তাদের মহান সেনাপতি ও সম্মানিত নেতৃবৃন্দের প্রতি কতটা মুখপেক্ষী?

    নিশ্চয়ই সফল জাতি তারাই, যারা তাদের বড়দের মর্যাদা বােঝে, তাদের হেফাজত করে ও তাদেরকে তাদের উপযুক্ত স্থানে আসন দান করে।

    রাসূল সা: বলেছেন,

    “যে আমাদের ছােটদেরকে স্নেহ করে না এবং আমাদের বড়দের মর্যাদা বােঝে না, সে আমাদের দলভূক্ত নয়।”

    (বর্ণনা করেছেন ইমাম আবু দাউদ ও তিরমিযী রহ

    আজ আমরা দেখি, বিভিন্ন জাতি স্মৃতিচিহ্ন স্থাপনের মাধ্যমে অথবা জাতির সন্তানদের মাঝে জীবন-চরিত স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের বড়দের সম্মান দেখানাের প্রতিযােগীতা করে... উম্মতের বড়দের মর্যাদার ব্যাপারে অজ্ঞতা এমন একটি ব্যধি, যা কখনাে আমাদেরকে এমনভাবে আক্রান্ত করে যে, তা আমাদেরকে জাগতে দেয় না, আমাদের চলার পথ রূদ্ধ করে দেয়।

    যেমন অনেক সময় মানুষের সামনে একটি মূল্যবান রত্নভান্ডার থাকে, সে তার মূল্য জানে না। সে তাকে অন্যান্য ভান্ডারের মত একটি মিশ্রিত ভান্ডার মনে করে। ফলে তাকে অনর্থক ভেবে ফেলে রাখে। তার থেকে উপকৃত হতে পারে না!

    কখনাে প্রাথমিক স্তরের তালিবুল ইলমের গ্রন্থভান্ডারে এমন অনেক মূল্যবান গ্রন্থাদী থাকে, যা তার বুঝের উর্ধ্বে। ফলে সে তার থেকে দূরে থাকে এবং মনে করে তাতে অস্পষ্টতা ও দূরবদ্ধতা রয়েছে.. তাই সে তা খুলেও দেখে না আর পড়েও না!

    ঠিক এমনিভাবে কখনাে জাতির মাঝে এমন ব্যক্তিত্ব থাকে, যারা জ্ঞান, মেধা ও প্রজ্ঞায় অতুলীয়। দুর্বল দৃষ্টির অধিকারীরা মনে করে, তার জ্ঞানে অপরিণামদর্শিতা রয়েছে, তার মেধায় ত্রুটি রয়েছে এবং তার প্রজ্ঞায় স্থূলতা রয়েছে!!

    তাই এ সকল লােকদের উচ্চ মর্যাদা ও সম্মানজনক অবস্থান বােঝা আবশ্যক এবং তাদের থেকে গ্রহণ করা ও উপকৃত হওয়ার ব্যাপারে সচেতন হওয়া আবশ্যক।

    উদীয়মান চিন্তা-ভাবনা কখনাে কাউকে এই প্ররােচনা দেয় যে, তার, অভিজ্ঞ নেতৃবৃন্দের থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকা, তাদেরকে অকার্যকর করে রাখা অথবা তাদের আসনে গিয়ে ভীড় জমানাের ক্ষমতা আছে!

    নিশ্চয়ই এটি একটি তারুণ্য এবং অজ্ঞতার পর কিছুটা জ্ঞানের স্বাদ অনুভব করার অবস্থা, যার ফলে নিজ সত্তাকে বিশাল মনে হয়! মূলত: এই অবস্থাটি একথারই ইঙ্গিত বহন করে যে, উপরােক্ত ব্যক্তি এখনাে জ্ঞান অন্বেষণের প্রাথমিক পর্যায়েই আছে, জ্ঞানের দরজার প্রথম ধাপ অতিক্রম করে নি! যদি সে এ পথে কিছুটাও পথ চলত, তাহলে সে যতটুকু অগ্রসর হত, ততটুকুই বিনয়ী হত এবং তার পূর্ববর্তীদের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করত। সর্বদাই যখন কম বয়সী লােকেরা সর্বোচ্চ পদের পিছনে পড়ে, তখনই উম্মাহর সাধারণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠে।

    নবী সা: তার নিম্নোক্ত বাণীতে এর থেকেই সতর্ক করেছেন:

    “আর নীচু শ্রেনীর লােকেরা জনগণের ভালাে-মন্দ নিয়ে কথা বলবে।”

    নিশ্চয়ই আপনি ঐ সমস্ত লােকদের সম্বন্ধে কিছু আলােচনা পড়ে থাকবেন, যারা এই আসনে এসে ভীড় জমানাের চেষ্টা করেছে। তাতে আপনি নিশ্চিতভাবেই বুঝেছেন যে, এই রােগটির কারণেই জিহাদী ময়দানসমূহের সাধারণ পরিস্থিতি আজ অস্থিতিশীল!

    আমরা জানি, মানুষের জ্ঞানগত ভারসাম্যতা যতই উন্নত হােক, নিজের বুঝ ও জ্ঞানের ক্রটি অস্বীকার করা মানুষের একটি স্বভাবজাত বিষয়...।

    তবে আমরা আমাদের বিরােধীদের থেকে এই ত্রুটির স্বীকারােক্তি কামনা করছি না, বরং আমরা তাদের থেকে কামনা করছি, তারা ঐ সকল লােকদের আসনে গিয়ে ভীড় জমানাে থেকে বিরত থাকুক, যারা এই ময়দানে তাদের থেকে উর্ধ্বে।

    বড় বড় নেতৃবৃন্দের রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ইতিহাস, তারুণ্যের প্রবণতা কখনাে যার সমপর্যায়ের হতে পারে না।

    “বনু তামিম ও বনু আমের গােত্রকে একথা জিজ্ঞাসা করে যে,

    অভিজ্ঞ ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির মত, যে কিছুই জানে না?”

    নিশ্চয়ই অভিজ্ঞতা একটি মূল্যবান খনি। জীবন ও জ্ঞানের কোনো স্তরেই তার থেকে অমুখাপেক্ষী থাকা যায় না...। যে অভিজ্ঞতাকে নষ্ট করে, সে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে নষ্ট করে দিল।

    অভিজ্ঞতা হচ্ছে, কালের আবর্তে সঞ্চিত জ্ঞান-ভান্ডারের একটি স্রোত!

    “জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের আলােচনা শুনবে,

    তাঁরা তােমাকে একদিনে এত পরিমাণ জ্ঞানের মাধ্যমে উপকৃত করবে, যা তাঁরা সারা জীবনে জেনেছেন।”

    অভিজ্ঞতার গুরুত্বের ব্যাপারে যা কথিত আছে:

    - অভিজ্ঞতাই হল বড় জ্ঞান।

    - সবচেয়ে ন্যায়পরায়ণ স্বাক্ষী হল অভিজ্ঞতা।

    - অভিজ্ঞতার ভাষাই অধিক সত্য।

    - অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান অর্জন হয়।

    - যে অভিজ্ঞতা বুঝে, সব পানঘাট তার জন্য সুপেয় হয়।।

    - অভিজ্ঞ লােকদের হাতে শেষ পরিণতি দেখার আয়না থাকে।

    আর যুদ্ধ-জিহাদে অভিজ্ঞতার গুরুত্ব বিষয়ে তাদের কতিপয় উক্তি হল:

    “এমন যুবকদেরকে নিয়েই যুদ্ধ করবে, যারা পূর্বে যুদ্ধ করেছে।”

    আবরােওয়াই তার পুত্র শিরােওয়াইহের উদ্দেশ্য যে সকল অসিয়ত করেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল:

    “তােমার সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব এমন অনভিজ্ঞ ও আনাড়ি যুবকের হাতে দিবে না, যার নিজের ব্যাপারে আত্মগর্ব অনেক বেশি, কিন্তু অন্যের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা স্বল্প।”

    হযরত আলী রা: বলেন:

    “আমার নিকট যুবকের যুদ্ধের থেকে বৃদ্ধের চিন্তাপ্রসূত পরামর্শ অধিক প্রিয়।”

    কারণ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বৃদ্ধ লােকটি তার চিন্তাপ্রসূত পরামর্শের মাধ্যমে শত্রক সেই পরিমাণ আঘাত করতে পারবে, যা যুবক তার বীরত্বের মাধ্যমে করতে পারবে না।

    তাই জ্ঞান-গবেষণা বীরত্বের উপর প্রণিধানযােগ্য।

    যেমন আবুত তাইয়িব বলেছেন,

    “বীরদের বীরত্বের পূর্বে হল বুদ্ধি।

    বুদ্ধি হল প্রথমে, আর বীরত্ব দ্বিতীয় স্থানে।”

    আর যখন কোন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির মাঝে উভয়টির সমন্বয় ঘটে, সে তাে মর্যাদার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যায়।

    অনেক সময় একজন যুবক আকলের জোরে তার সংগীদের ঘায়েল করে ফেলতে পারে, সংগীরা তাকে ঘায়েল করার পূর্বেই।

    “যদি জ্ঞান-বুদ্ধির বিচার না হত,

    তাহলে সামান্য একটি সিংহও মর্যাদায় মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে যেত।”

    আরেক কবি বলেন,

    “বিচক্ষণতার রয়েছে এমন ধার, যা তরবারীর নেই।

    যদি আকলের তীক্ষ্ণতা না থাকত, তাহলে কোনো তরবারীই চলত না।”

    অভিজ্ঞ জ্ঞানী লােকেরা সম্ভাবনাময় ঘটনাবলীর মাঝে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করেন। আর তাদের সম্ভাবনা কমই ভুল হয়। যেমন উওয়াইস ইবনে হাজার বলেছেন:

    “বিচক্ষণ ব্যক্তি এমন যে, তিনি তােমাকে অনুমান করে এমনভাবে কথা বলবেন, যেন তিনি তা দেখেছেন বা শুনেছেন।”

    একারণেই বলা হয়ে থাকে: “জ্ঞানী লােকের ধারণা অন্যদের নিশ্চিত কথার ন্যায়।”

    ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: বলেছেন, “তুমি যদি তার ধারণা থেকে উপকৃত না হও, তবে তার জ্ঞানের দ্বারা কোনো উপকারই অর্জন করতে পারবে না।”

    যে রােগগুলােতে উম্মত আক্রান্ত আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রজ্ঞাবান ও অভিজ্ঞ লােকদের কল্যাণকর পরামর্শে কান না দেওয়া, তাদের থেকে বিমুখ থাকা এবং ঐ সমস্ত লােকদের অতি আবেগে প্রতারিত হওয়া, যাদের অভিজ্ঞতার সূক্ষ্ম জ্ঞান অর্জন হয়নি।

    একারণে বলা হয়ে থাকে:

    “অভিজ্ঞ লােকদের অবাধ্যতা অনুতাপের পথ।”

    উওয়াইস বিন ছা’লাব বলেন,

    “আমার সম্প্রদায় আমার কথার অবাধ্যতা করেছে, অথচ সঠিক সেটাই, যেটার আদেশ আমি করেছি। আসলে যারা অভিজ্ঞ ও পরিক্ষীত ব্যক্তিদের কথা অমান্য করে, তারা অনুশােচিত হয়।

    তাই হে বনু বকর! তােমরা মুত্যুর উপর দৃঢ় থাক, কারণ আমি এমন প্রতিকূল অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, যা মৃত্যু ও রক্তের প্লাবন সৃষ্টি করবে।”

    এধরণের আরাে কয়েকটি বিষয় হল: দ্বীনের ব্যাপারে অগ্রগামী ও পূর্ববর্তী লােকদের মর্যাদা রক্ষা করা, তাদের জন্য দোওয়া করা এবং তাদের প্রতি সদয় হওয়া। যেমন আল্লাহ তাআলা মুমিনদের দুয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,

    “এবং যারা তাদের (মুহাজির ও আনসারদের) পরে এসেছে। তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক। ক্ষমা কর আমাদেরকে এবং আমাদের সেই ভাইদেরকেও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছে এবং আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের প্রতি কোন হিংসা-বিদ্বেষ রেখাে না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি অতি মমতাবান, পরম দয়ালু। (সূরা হাশর:১০)।

    অনুরূপ আব্দুর রহমান ইবনে কা'ব ইবনে মালিক রা: বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,

    "আমার পিতার যখন চক্ষু নষ্ট হয়ে গেল তখন আমি তাকে নিয়ে আসা যাওয়া করতাম। একদা আমি তাকে নিয়ে জুম্মার উদ্দেশ্যে বের হলাম। তিনি জুম্মার আযান শুনে তার উত্তরে আবু উসামা ইবনে যুরারাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।

    অত:পর তিনি কিছুক্ষণ এই অবস্থাতেই কাটান। আমি (মনে মনে) বললাম, এই লােকটি অন্ধ। আমি কি তাকে এ সম্বন্ধে জিজ্ঞাস করতে পারি না?

    এরপর পুনরায় আমি তাকে নিয়ে বের হলাম। তিনি যখন আযান শুনলেন, তখন আবু উসামার জন্য ইস্তেগফার করলেন। আমি তাকে বললাম, হে আমার পিতা! আপনি যখনই জুম্মার আযান শুনতে পান তখনই আসাদ ইবনে যুরারাহর জন্য ইস্তেগফার করেন, এটার কারণ কি?

    তিনি বললেন, হে বৎস! সা’দ রাসূল সা: এর আগমনের পূর্বে সর্বপ্রথম মদীনায় বনু বিয়াযার হারার উদ্ভিদময় নিম্নভূমিতে নাকীউল খামাত নামক খেজুর বাগানে আমাদেরকে নিয়ে জুম্মাহ কায়েম করেছিলেন। আমি তাকে বললাম, তখন আপনারা কয়জন ছিলেন? তিনি বললেন, চল্লিশজন পুরুষ।"

    (হাদীসটি বর্ণনা করেন ইমাম আবু দাউদ। আর ইমাম ইবনে হিব্বান ও হাকিম তাকে বিশুদ্ধ বলেছেন। ইমাম হাকিম বলেন, এটা ইমাম মুসলিমের শর্ত মােতাবেক।)

    দেখুন, হযরত কা'ব বিন মালেক রা: সা’দ ইবরে যুরারাহ রা: এর দ্বীনের অগ্রগামীতার মর্যাদা কতটা রক্ষা করেছেন। শুধু এই কারণে যে, তিনি তাদেরকে সর্বপ্রথম জুম্মার জন্য একত্রিত করেছেন।

    আর আল্লাহ তাআলাও দ্বীনের মধ্যে মুহাজির ও আনসারদের অগ্রগামীতার কারণে তাদের প্রশংসা করেছেন এবং তাদেরকে অন্যদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

    “মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথমে ঈমান এনেছে এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করেছে আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যানরাজী তৈরী করে রেখেছেন, যার তলদেশে নহর বহমান। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সাফল্য।”

    আয়াতে উল্লেখিত ‘পূর্ববতীগণ’ কথাটি সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন, তারা হচ্ছেন, বাইআতে রিদওয়ানে অংশগ্রহণকারীগণ। কেউ কেউ বলেন, তারা হচ্ছেন, যারা উভয় কিবলার দিকে ফিরে নামায আদায় করেছেন। আল্লামা সা’দী রহ: বলেছেন, পূর্ববর্তী দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা এই উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম ঈমান এনেছেন, হিজরত করেছেন, জিহাদ করেছেন এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠা করেছেন।

    একারণে দ্বীনের মধ্যে অগ্রগামীতা ইমামতের অগ্রগণ্যতার দাবি করে।

    যেমন রাসূল সা: বলেছেন,

    "কওমের ইমামতি করবে কওমের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারীগণ। যদি এক্ষেত্রে সবাই সমান হয় তাহলে তাদের মধ্যে সুন্নাহর ব্যাপারে সবচেয়ে বড় আলেম ইমামতি করবে।

    যদি এক্ষেত্রেও সবাই সমান হয় তাহলে তাদের মধ্যে সবার আগে হিজরতকারী ব্যক্তি ইমামতি করবে। যদি এক্ষেত্রেও সবাই সমান হয় তাহলে তাদের মধ্যে সবার আগে ইসলাম গ্রহণকারী ইমামতি করবে।" (বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম)

    হযরত ওমর রা: যখন ভাতা বন্টন করতে ইচ্ছা করলেন, তখন তিনি এর তালিকা বানিয়েছিলেন দ্বীনের ক্ষেত্রে অগ্রগামীতা ও মর্যাদার হিসাবে। তাই তিনি প্রথম স্তরে রাখলেন রাসূলুল্লাহর সা: এর স্ত্রীগণকে।

    তারপর রাখলেন যারা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদেরকে। তারপর যারা বদরের আগে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, কিন্তু বদরে অংশগ্রহণ করেননি তাদেরকে। তারপর মুহাজির ও আনসারদের সন্তানদেরকে। তারপর মক্কাবাসীদেরকে। তারপর সমস্ত পুরুষদেরকে। তারপর মুহাজির ও আনসারদের স্ত্রীগণকে।।

    এই কথাগুলাের কারণ হচ্ছে কতিপয় লােককে শয়তান অলীক কথাবার্তার মাধ্যমে প্রতারিত করেছে। তারা বাহাদুর ও বীরের মর্যাদায় ভাগ বসাতে চায়।

    তারা আমাদের শায়খ, আশ-শায়খ আল-ইমাম আইমান আয যাওয়াহিরির আসনে সমাসীন হতে চায়। আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন ও পুরুস্কৃত করুন৷ যিনি বিজ্ঞাপন, প্রচারণা বা সম্পদ কুক্ষিগত করার মাধ্যমে তার মর্যাদা লাভ করেননি। বরং ধারাবাহিক জিহাদ, কুরবানী ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই মর্যাদা অর্জন করেছেন।

    “যদি সাধনা না লাগত, তাহলে সব মানুষই নেতা হয়ে যেত।

    যে পথে বদান্যতা দরীদ্রতায় রূপ নেয় এবং প্রতিটি পদক্ষেপ ধ্বংসাত্মক হয়ে যায়।”

    যদি রব্বুল আলামীন চাইতেন, আর তিনি ইচ্ছা করতেন, তিনি একজন খ্যাতিমান লােক হবেন, একজন প্রভাবশালী লােক হবেন, তাহলে তিনি এধরণের অনেক কিছু হতে পারতেন।

    কিন্তু তিনি ইচ্ছা করেছেন, তিনি হবেন উম্মতের তরে উৎসর্গীত একজন ব্যক্তিত্ব। তাই তিনি এর জন্য সব কুরবানী করেছেন, কিছু সঞ্চয় করেননি। সব অন্যদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন, নিজে কিছু গ্রহণ করেননি।

    অথচ কিছু লােক বিবাদের শিষ্টাচারটিও রক্ষা করে না। আজকে একজন ব্যক্তির প্রশংসা করে, তার সর্বোচ্চ গুণগান করে, কিন্তু কোনো একটি মাসআলায় তাদের বিরােধিতা করলেই তার সকল গুণাবলী নাকচ করে দেয়, তার সকল উপাধিগুলাে মুছে ফেলে, যেন পূর্বে শুধু তাদের পক্ষালম্বন ও তাদেরকে সমর্থন করার কারণেই তাকে এসকল উপাধিগুলাে দিয়েছিল।

    হে আমাদের শায়খ। আমি আপনার নিকট ঐ সকল ব্যক্তিদের ব্যাপারে ক্ষমাপ্রার্থী, যারা নিজেদের দুশ্চরিত্র বা বক্রস্বভাবের কারণে আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করে...।

    আমি তাদের অবস্থাদৃষ্টে আশ্চর্য হই! কেন তারা নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করে না, তারা ঐ সময় কোথায় ছিল, যখন আপনি উম্মতের গুটিকয়েক বীর পুরুষদের মাঝে ছিলেন, শরয়ী জিহাদের প্রথম ইটটি স্থাপন করেছিলেন।

    “আপনিই তার জন্য সুনিপুন গাথুনীর ন্যায়, অন্য কেউ নয়।

    আপনি উঠে দাড়িয়েছেন, অথচ যুগের সন্তানরা সব বসেছিল।

    বনু বকরের সম্মানিত বস্তুর শপথ!

    যার ভিত্তিগুলাে আপনি স্থাপন করেছেন।

    অথচ তারা সম্মানিত বস্তুসমূহ নির্মাণ করা থেকে বসে ছিল।”

    কতিপয় লােক একারণে শায়খ আইমান আ যাওয়াহিরির সাথে বিদ্বেষ পােষণ করে যে, আল্লাহ তা'আলা তাকে হিকমত, ধীরতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানুষকে আকর্ষণের পন্থা এবং তাদেরকে শরয়ী জিহাদের তাবুর দিকে ধাবিত করার কৌশল শিক্ষা দিয়েছেন। তাই তার শ্রেষ্ঠত্বই তার অপরাধ হয়ে গেছে। যেমন লুতের সম্প্রদায় বলেছিলাে:

    “লুতের পরিবারবর্গকে তােমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। তারা বড় পবিত্রতা জাহির করছে|” (আন নামল:৫৬)

    “যেই কীর্তিগুলাের মাধ্যমে আমি বােঝাতে চেষ্টা করবাে,

    যখন তুমি সেগুলােকেই দোষ হিসাবে গণ্য করেছে,

    তখন আর কিভাবে আমি ওজর পেশ করবাে?”

    কতিপয় লােক এই মহান নেতার প্রজ্ঞা ও সূক্ষদর্শীতা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা শুধু ঐ ভাসা ভাসা বিষয়গুলােই বুঝতে পেরেছে, যা স্থূলদৃষ্টিসম্পন্ন একজন ব্যক্তির নিকট পরিচিত, যার কারণে তার জন্য প্রজ্ঞাবান নেতৃবৃন্দের সুউচ্চ আসনগুলােকে নিলাম করাও সম্ভব। আর এটা অস্বাভাবিক নয় যে, বড় বড় আলেমদের তুলনায় একজন মকতবের শিক্ষকই শিশুদের সাথে অধিক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে।

    কবি মুতানাব্বি সঠিকই বলেছেন, তিনি বলেছেন:

    “ছােট ছােট বিষয়ও ছােট লােকদের নিকট বড় মনে হয়,

    আর বড় লােকদের নিকট অনেক বড় বিষয়ও ছােট মনে হয়।”

    নি:সন্দেহে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের কথা অগ্রাহ্য করা এবং অসম্পূর্ণ স্থূলদৃষ্টি নিয়েই গাে মেরে বসে থাকা এমন একটি ব্যধি, যা মুসলমানদেরকে হুদায়বিয়ার দিন প্রথম দিকে আল্লাহর নবী সা: এর আদেশ মানতে বাঁধা দিয়েছিল...।

    আপনি এই ফিতনার গভীরতা চিন্তা করতে পারেন!? যার ফলে সাহাবায়ে কেরামও রাসূল সা: এর আদেশ মানতে দৌঁড়ে ঝাপিয়ে পড়েন নি!!

    “কখনাে চক্ষু প্রদাহের কারণে সূর্য্যেরে আলাে চোখের কাছে খারাপ লাগে।

    আর কখনাে জ্বরের কারণে পানি মুখের কাছে বিস্বাদ লাগে।”

    হে আমাদের বীর শায়খ! আমি আশ্চর্যান্বিত হই, যখন তারা আপনার মর্যাদা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে। অথচ আপনি বিপর্যয় ও দু:সময়ের বীর সন্তান, যুদ্ধে পরিক্ষীত, লড়াইয়ে অভিজ্ঞ, দু:সাহসী সৈনিক, কঠিনপ্রাণ, দৃঢ় হৃদয়, যার নেই কোন ভীরুতা, শক্ত মজবুত যােদ্ধা। কখনাে আপনার লাঠি ভেঙ্গে যায় না। কখনাে আপনার প্রস্তর চূর্ণ হয় না।

    সব উদ্যম থেমে গিয়েছে। সব মরুভূমি মাথা নুইয়েছে। (কিন্তু, আপনি টলে যান নি)।

    ধারাবাহিক সফর অতিক্রম করেছি। দীর্ঘ জনমানবশুণ্য পথ মারিয়েছি। আমার সওয়ারী জল-স্থল ভ্রমন করেছে। আমার অবস্থা ভালাে-মন্দ চিনতে পেরেছে। আমার জিহ্বা মিষ্টতা ও তিক্ততার স্বাদ আস্বাদন করেছে। এসব কিছুর পর আমি কবি আবু তামামের সেই কথার মত হয়েছি, তিনি বলেছেন:

    “আর পশ্চিমে সে পর্যন্ত গেলাম, যেখানে পূর্বের আর কোনো আলােচনাই পেলাম না,

    এবং পূর্বেও সে পর্যন্ত গেলাম, যেখানে পশ্চিমের কথা ভুলেই গেলাম।”

    আপনি যুগের ভালাে-মন্দের ব্যাপারে অবগত হয়েছেন, তার সর্বপ্রকার দুগ্ধ পান করেছেন। আপনি ইস্পাতদৃঢ়, রত্মশিল্পী, পৃথিবীর সৌন্দর্য, তিক্ত ও পরীক্ষিত, সকল বিষয়ে বিপ্লব সাধনকারী।

    আপনি গুরুগম্ভীর, প্রশান্ত বাতাস, দক্ষ কুশলী। আপনি তীব্র ধারালাে তরবারী। আপনি সকল বিস্ময়ের বিস্ময়, সকল বাহাদুরদের মধ্যে দু:সাহসী বাহাদুর।

    যদি আনসারদের ভালােবাসা একারণে ঈমানের নিদর্শন হয় যে, তাঁরা দ্বীনের সাহয্য করেছেন তাহলে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি হে আমাদের শায়খ।

    আপনাকে ভালােবাসাও ঈমানের নিদর্শন, কারণ আপনি দ্বীনের সাহায্য করেছেন।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি হে আমাদের শায়খ আইমান...! কারণ, আমি আল্লাহর শরীয়তের সাহায্যকারীদেরকে ভালােবাসি।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, কারণ আমি ঐ সকল লােকদেরকে ভালােবাসি, যারা আল্লাহর সম্মানিত বিষয়গুলােকে রক্ষা করে।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, কারণ আমি ঐ সকল লােকদেরকে ভালােবাসি, যারা আল্লাহর শত্রুদেরকে ক্রোধান্বিত করে।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, কারণ আমি তাদেরকে ভালােবাসি, যারা মুসলমানদের সীমান্ত রক্ষা করে এবং আল্লাহর বান্দাদের কষ্ট দূর করে..।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, কারণ আমি আপনার সৌরভময় জীনব-চরিতকে ভালােবাসি, আপনার পবিত্র জিহাদ ও মহান অবদানকে ভালােবাসি।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, কারণ আমি আপনার প্রজ্ঞাময় রাজনীতি, সূক্ষদৃষ্টি ও সঠিক দ্বীনী বুঝকে ভালােবাসি।

    আমি আপনাকে এমন ভালােবাসি (এবং তা সর্বদাই থাকবে), যাকে শুধু ভালােবাসার সম্বন্ধ বলে ব্যক্ত করা যাবে না! আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনি আপনার জীবনের যে পরিমাণ আল্লাহর আনুগত্যে কাটিয়েছেন...।

    আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনি আল্লাহর দ্বীনের জন্য নিজের ও পরিবারের যে পরিমাণ কুরবানী দিয়েছেন।

    আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনার ডান হাত আল্লাহর রাস্তায় যে পরিমাণ আঘাত করেছে।

    আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনি আল্লাহর দ্বীনের পাহারাদারী করতে গিয়ে যে পরিমাণ রাত্রি জাগরণ করেছেন।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, আপনি আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করে যে পরিমাণ দেশ অতিক্রম করেছেন।

    আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনার চক্ষুদ্বয় আপনার দ্বীনী ভাইদের জন্য যে পরিমাণ কেঁদেছে।

    আমি আপনাকে সে পরিমণ ভালােবাসি, আপনি আল্লাহর শত্রুদেরকে যে পরিমাণ গভীর ক্ষত করেছেন।

    আমি আপনাকে সে পরিমাণ ভালােবাসি, আপনি, আল্লাহর সকাশে যা রয়েছে তার আগ্রহে যে পরিমাণ দুনিয়া বিমুখতা অবলম্বন করেছেন এবং দুনিয়ার ভােগসম্ভার ত্যাগ করেছেন।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, আপনার ভালােবাসার দ্বারা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টিই কামনা করি।

    আমি আপনাকে ভালােবাসি, যে ভালােবাসা আমার পরিবারবর্গ বা ঘনিষ্ঠজনদের কাউকেও বাসি না। আমি আপনাকে ভালােবাসি, যে ভালােবাসার কথা আমার যবান বলে।

    যে ভালােবাসায় আমার শরীর ও অন্তর ভরে যায়।

    যে ভালােবাসায় আমার আত্মা ও অনুভূতি রােমাঞ্চিত হয়।

    আমি আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালােবাসি।

    আমি আপনাকে আল্লাহর আনুগত্য হিসাবে ভালােবাসি।

    আমি দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি, আপনি ইনশাআল্লাহ জিহাদের পথেই অবিরত চলতে থাকবেন।

    কোন কটুক্তিকারীর কটুক্তি আপনাকে ক্ষতি করতে পারবে না। প্রশংসাকারীর প্রশংসা আপনাকে প্রতারিত করবে না।

    বরং আপনি হলেন ঐরূপ, যেমন জনৈক বক্তা বলেছেন:

    “তিনি ভ্রুক্ষেপ করেন না, তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন না ভৎসর্ণা।”

    হে আল্লাহ! আমেরিকার ত্রাস, ক্রুসেডারদেরকে পরাজিতকারী আমাদের শায়খ আইমান আয যাওয়াহিরিকে হেফাজত করুন।

    তার জিহাদ ও আমলগুলােকে কবুল করে নিন।

    তার কল্যাণময় সমাপ্তি দান করুন।

    তাকে আপনার নেককার বান্দাদের মাঝে সুউচ্চ মর্যাদা করুন।

    তার মাধ্যমে দ্বীনী ইলমকে প্রতিষ্ঠিত করুন।

    কাফেরদের মাঝে তার আঘাত গভীরতর করুন।

    তাকে ও তার তাওহীদবাদী ভাইদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করুন।

    হে আল্লাহ! শান্তি ও বরকত নাযিল করুন আমাদের সরদার মুহাম্মদের উপর এবং তার পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবায়ে কেরামের উপর।

    (লিখেছেন- আশ শায়খ আবু মুনযির আশ শানকিতি)

  • #2
    জাজাকাল্লাহ খাইরান হে প্রিয় শায়েখ

    Comment


    • #3

      [10] وَما لَكُم أَلّا تُنفِقوا فى سَبيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ ميرٰثُ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ ۚ لا يَستَوى مِنكُم مَن أَنفَقَ مِن قَبلِ الفَتحِ وَقٰتَلَ ۚ أُولٰئِكَ أَعظَمُ دَرَجَةً مِنَ الَّذينَ أَنفَقوا مِن بَعدُ وَقٰتَلوا ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الحُسنىٰ ۚ وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ خَبيرٌ
      [10] তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়, যখন আল্লাহই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উত্তরাধিকারী? তোমাদের মধ্যে যে মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যদা বড় তাদের অপেক্ষা, যার পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে। তবে আল্লাহ উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِي فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ ‏"‏ ‏.‏ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার সাহাবীদের গালি দিও না। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউ যদি উহূদ পাহাড় পরিমাণ সোনাও দান-খয়রাত করে তবে তা তাদের কারো এক মুদ্দ বা অর্ধ মুদ্দ দান-খয়রাত করার সমান মর্যাদাসম্পন্নও হবে না।خَرَجْنَا مع رَسولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ عَامَ حُنَيْنٍ، فَلَمَّا التَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ، فَرَأَيْتُ رَجُلًا مِنَ المُشْرِكِينَ عَلَا رَجُلًا مِنَ المُسْلِمِينَ، فَاسْتَدَرْتُ حتَّى أَتَيْتُهُ مِن ورَائِهِ حتَّى ضَرَبْتُهُ بالسَّيْفِ علَى حَبْلِ عَاتِقِهِ، فأقْبَلَ عَلَيَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً وجَدْتُ منها رِيحَ المَوْتِ، ثُمَّ أَدْرَكَهُ المَوْتُ، فأرْسَلَنِي، فَلَحِقْتُ عُمَرَ بنَ الخَطَّابِ فَقُلتُ: ما بَالُ النَّاسِ؟ قالَ: أَمْرُ اللَّهِ، ثُمَّ إنَّ النَّاسَ رَجَعُوا، وجَلَسَ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ فَقالَ: مَن قَتَلَ قَتِيلًا له عليه بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ، فَقُمْتُ فَقُلتُ: مَن يَشْهَدُ لِي، ثُمَّ جَلَسْتُ، ثُمَّ قالَ: مَن قَتَلَ قَتِيلًا له عليه بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ، فَقُمْتُ فَقُلتُ: مَن يَشْهَدُ لِي، ثُمَّ جَلَسْتُ، ثُمَّ قالَ الثَّالِثَةَ مِثْلَهُ، فَقُمْتُ، فَقالَ رَسولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ: ما لكَ يا أَبَا قَتَادَةَ؟، فَاقْتَصَصْتُ عليه القِصَّةَ، فَقالَ رَجُلٌ: صَدَقَ يا رَسولَ اللَّهِ، وسَلَبُهُ عِندِي فأرْضِهِ عَنِّي، فَقالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ رَضِيَ اللَّهُ عنْه: لَاهَا اللَّهِ، إذًا لا يَعْمِدُ إلى أَسَدٍ مِن أُسْدِ اللَّهِ، يُقَاتِلُ عَنِ اللَّهِ ورَسولِهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ، يُعْطِيكَ سَلَبَهُ، فَقالَ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ: صَدَقَ، فأعْطَاهُ، فَبِعْتُ الدِّرْعَ، فَابْتَعْتُ به مَخْرَفًا في بَنِي سَلِمَةَ، فإنَّه لَأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ في الإسْلَامِ.. আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনাইনের বছর আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বের হলাম। আমরা যখন শত্রুর সম্মুখীন হলাম, তখন মুসলিম দলের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি শুরু হল। এমন সময় আমি মুশরিকদের এক ব্যক্তিকে দেখলাম, সে একজন মুসলিমের উপর চেপে বসেছে। আমি ঘুরে তার পেছনের দিক দিয়ে এসে তরবারী দ্বারা তার ঘাড়ের রগে আঘাত করলাম। তখন সে আমার দিকে এগিয়ে এল এবং আমাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরল যে, আমি তাতে মৃত্যুর আশংকা করলাম। মৃত্যু তাকেই ধরল এবং আমাকে ছেড়ে দিল। অতঃপর আমি ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, লোকদের কী হয়েছে? ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর হুকুম। অতঃপর লোকজন ফিরে এলো এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসলেন, তখন তিনি বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে নিহত করেছে এবং তার নিকট এর সাক্ষ্য রয়েছে, তার নিকট হতে প্রাপ্ত মাল-সামান তারই প্রাপ্য। তখন আমি দাঁড়িয়ে বললাম, কে আছ যে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে? অতঃপর আমি বসে পড়লাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করেছে এবং তার নিকট এর সাক্ষ্য রয়েছে, তার নিকট হতে প্রাপ্ত মাল-সামান তারই প্রাপ্য। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, কে আছ যে, আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে? অতঃপর আমি বসে পড়লাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয়বার ঐরূপ বললেন, আমি আবার দাঁড়ালাম, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ ক্বাতাদাহ! তোমার কী হয়েছে? আমি তখন পুরো ঘটনা বললাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহর রাসূল! আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) ঠিক বলেছে। সে ব্যক্তি হতে প্রাপ্ত মাল-সামান আমার নিকট আছে। আপনি আমার পক্ষ হতে একে সম্মত করিয়ে দিন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেন, কক্ষনো না, আল্লাহর কসম! আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এমন করবেন না যে, আল্লাহর সিংহদের মধ্যে হতে কোন সিংহ আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষে যুদ্ধ করবে আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিহত ব্যক্তির মাল-সামান তোমাকে দিবেন! তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবূ বকর (রাঃ) ঠিকই বলেছে। ফলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা আমাকে দিলেন। আমি তা হতে একটি বর্ম বিক্রয় করে বানূ সালমায় একটি বাগান কিনি। এটাই ইসলামে প্রবেশের পর আমার প্রথম সম্পত্তি, যা আমি পেয়েছিলাম। (মেধা এবং শক্তি উভয়টির প্রয়োজন রয়েছে শক্তি ছাড়া মেধা অকেজ এবং মেধাছাড়াও শক্তি অকেজ । কারণ শক্তি প্রয়োগ করতে হলে আগে মেধা ব্যবহার করতে হয় আর শক্তি ছাড়া মেধা হল অসার বস্তু । এবং শায়খ আমাদের সাথে ঈমানের বন্ধনে আবদ্ধ তাই আমরা তাকে নিজেদেরই একজন হিসেবে দেখি)
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment

      Working...
      X