Announcement

Collapse
No announcement yet.

একজন দৃঢ়চেতা মোল্লা উমর (রহঃ)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • একজন দৃঢ়চেতা মোল্লা উমর (রহঃ)

    ৯/১১ -এ পেন্টাগন-টুইন টাওয়ারের বরকতময় হামলার পর আমেরিকা ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগ করে যে, তারা যেনো শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহ) কে আমেরিকার হাতে তুলে দেন। এছাড়াও তারা ইমারাতের উপর বেশ কিছু শর্ত আরোপ করে। তখন মুসলিম বিশ্বের অনেক প্রখ্যাত স্কলাররাও মোল্লা উমর (রহ) কে প্রস্তাব ও পরামর্শ দেন, তিনি যেনো রাষ্ট্র ও জনগণের সুরক্ষার জন্যে একজন ব্যক্তিকে আমেরিকার হাতে তুলে দেন। কিন্তু ঈমানের উপর অটল-অবিচল, দ্বীন ও জাতির সম্মানে আত্মমর্যাদাশীল, অত্যন্ত দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্ব আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর (রহ সব ধরনের চাপ, প্রস্তাব ও পরামর্শ কঠিনভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। এবং বলেন, 'আমার দ্বারা সম্ভব হবে না একজন আশ্রিত ব্যক্তিকে সমর্পন করা, একজন মুসলিম কখনো তার আশ্রয়ে এবং সুরক্ষায় থাকা ব্যক্তিকে অর্পণ করতে পারে না, যদিও সে কাফির হয়। এমনকি তোমার নিকট যদি তোমার শত্রুও আশ্রয় নেয়, তোমার উচিৎ তাকে সুরক্ষা দেওয়া।' ঠিক তখুনি সৌদী ইন্টেলিজেন্সির একটি প্রতিনিধি দল প্রিন্স তুর্কী বিন ফয়সালের নেতৃত্বে মোল্লা উমর রাহ:'র দরবারে উপস্থিত হয়। সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সৌদী প্রিন্স মোল্লা উমর রাহ:কে উদ্দেশ্য করে বলে, - আমি এসেছি উসামা বিন লাদেনকে আপনার নিকট থেকে সমর্পণ করার জন্যে, সে একজন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী, তাছাড়া সে আপনাদের নিকট থাকা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে কাবুল থেকে পেশাওয়ার যাওয়ার পথে হামলার পরিকল্পনা করে, তখন আপনি আমার প্রতি প্রথম সাক্ষাতে ওয়াদা করেছিলেন, যে, তাকে আমার নিকট অর্পণ করবেন। . তখন মোল্লা উমর মাথা সামান্য টেক লাগিয়ে দেয়ালের দিকে ঝুঁকে ছিলেন, তিনি বলেন, প্রথমতঃ আমি আপনাকে তাঁকে সমর্পণ করার ব্যাপারে কোনো ওয়াদা করি নি, বরং আপনাকে বলেছি, যে, আমি আপনার নিকট থেকে ঘটনা সম্পর্কিত সুস্পষ্ট প্রমাণ চাই, যাতে আমি কাজী(বিচারক) ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের নিকট উপস্থাপন করতে পারি, যদি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে আমরা করণীয় পদক্ষেপ নিব, যদি এর ভিন্ন হয়, যেমন আমরা জেনেছি ঘটনা সঠিক নয়। . মোল্লা উমর কথা শেষ করার আগেই তুর্কী কথা কেটে বলে, আপনি আমাকে এই সন্ত্রাসীকে অর্পণ করার ব্যাপারে ওয়াদা দিয়েছিলেন, একজন মুসলিম তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে না। . তখনো মোল্লা উমর নিজের অভ্যাস অনুযায়ী শান্ত গলায় কথা বলছিলেন, আমি বললাম, আমি আপনাকে এ ব্যাপারে কোনো ওয়াদা দেই নি, এই ব্যক্তি আমাদের নিকট একজন আশ্রিত ব্যক্তি, সে একজন মুসলিম ব্যক্তি যার রক্ত বৈধ নয়, আমাদের জন্যে কখনো বৈধ হবে না সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া আমাদের নিকট আশ্রিত ব্যক্তিকে অর্পণ করা, যার দ্বারা আল্লাহর সামনে এবং নিজেদের বিবেকের সামনে দায়মুক্ত হতে পারবো না। . তুর্কি ফয়সাল তখন কথা কেটে উত্তেজিত গলায় বললো, আপনি আমার নিকট তাকে অর্পণ করার ওয়াদা দিয়েছিলেন, আপনার উচিৎ ওয়াদা পূর্ণ করা, কোথায় গেলো প্রতিশ্রুতি পূরণ করা? . তখন মোল্লা উমর সোজা হয়ে বসলেন, নিজের দৃষ্টি তুর্কি ফয়সালের দুনো চক্ষুর দিকে তীক্ষ্ণ করলেন, তখন তিনি বলিষ্ঠ কন্ঠে রাগান্বিত স্বরে বললেন, তখন তাঁর গোঁফে সামান্য কম্পন হচ্ছিল, এটা রাগের নিদর্শন, পরিচিত জন ছাড়া কেউ লক্ষ্য করে না। এরপর বলেন, আমি আপনাকে বললাম, আমি তাঁকে আপনার নিকট অর্পণ করার ব্যাপারে কোনো ওয়াদা করি নি, আমি একজন মুসলিম, ওয়াদা পূরণ করি, প্রতিশ্রুতি কাকে বলে তাও জানি। আপনি যে ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী বলতেছেন, আফগানরা তাঁকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিনে না। আফগানরা তাঁকে এমন ব্যক্তি হিসেবে চিনে, যিনি তাদের সাথে জান-মাল দিয়ে তখন জিহাদ করেছেন যখন সোভিয়েত আগ্রাসীরা এ ভূমিতে এসেছিলো, যদি আমি এই ব্যক্তিকে সমর্পণ করি তাহলে আফগানরা আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপে যাবে এবং বলবে, আপনি কীভাবে এমন ব্যক্তিকে আমেরিকার হাতে হত্যার জন্যে তুলে দিলেন যে আমাদের সাথে জিহাদ করেছে, রক্ত-অর্থ দিয়ে শরীক হয়েছে? এরপর মোল্লা সাহেব সামান্য নিঃশ্বাস নিলেন, আবার কথা বলা শুরু করলেন, অতঃপর আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, তোমার কি লজ্জা করে না, তোমার দেশের এমন একজন নাগরিককে অর্পণ করার প্রচেষ্টা করতেছো, যে হচ্ছে বিতাড়িত, আশ্রিত, যাতে করে তাঁকে ভিনদেশের হাতে তুলে দাও? তুমি একজন আরব, সাহাবা কেরাম হচ্ছেন আরব, যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইসলাম পৌঁছে দিয়েছেন, অথচ তাঁরা ছিলেন নিজেদের অশ্বসমূহের উপর নগ্ন ও পদাতিক। এখন তুমি তোমার দেশ থেকে এসেছো একজন মুসলিমকে সমর্পণ করে কাফিরদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে! তুমি ওই সব বীর অশ্বারোহী সাহসী আরবদের উত্তরাধিকার হওয়ার উপযুক্ত নও, কীভাবে আমার বিবেক অনুমতি দেয় যে, আমি উসামা, তাঁর স্ত্রীদের এবং শিশুদের হাতগুলো বেঁধে তোমার হাতে সমর্পণ করি? এটা এমন বিষয় যা আমার দ্বীন, আমার ঈমান, আমার বিবেক এবং আমাদের রীতিনীতি অনুমতি দেয় না, তোমরা আমেরিকা ভয়ে কাঁপতেছো, তোমাদের আত্মমর্যাদা বোধ নেই, তোমরা কোনোভাবেই সাহাবীদের বংশধর নও! . মোল্লা উমর যখন সর্বশেষ কথা বলেন, তখন তুর্কী দাঁড়িয়ে গেলো, এরপর বলল, আপনি আমাকে অপমান করেছেন, আমার বংশকে তুচ্ছ করেছেন এবং আমার পরিবারকে অপমান করেছেন! . অতঃপর বিদায়ের জন্যে হাত উঠালো এবং চলে গেলো। . (সূত্র- আস-সুমুদ ম্যাগাজিন, সংখ্যা-১৯৫, এপ্রিল-২০২২/পৃ:৩৫-৩৬)

  • #2
    মোল্লাহ ওমর মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ, একজন একনিষ্ঠ মুসলিম শাসক। আল্লাহ তার কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন।

    যুগে যুগে, ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, এই আরবরা,, আরবরা সাহাবী যুগের মতো আরব নেই আছে অল্পসংখ্যক।
    বর্তমানে আরবের বেশীরভাগ হকপন্হি আলেম সিজিনে রয়েছে,। উসমানীয় খিলাফতের সঙ্গে ও গাদ্দারি করেছিল, এই আরবরা।।
    সর্বোত্তম আমল হলো
    আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং মহান মহীয়ান
    আল্লাহর পথে জিহাদ করা।নাসায়ী,শরীফ

    Comment

    Working...
    X