ইলম অর্জন ও শারীরিক প্রস্তুতি শুরুর বাধা সমূহের প্রতিকারঃ
বর্তমান এই ফিতনাময় জামানায় আমরা গুনাহর সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। অধিকাংশ মানুষ গুনাহর সাগরে ডুবে যাচ্ছে। কিছু মানুষ ডুবতে ডুবতে, কিছু মানুষ খড়কুটো আখড়ে ধরে, কিছু মানুষ ভেলায় চড়ে, কিছু মানুষ নৌকায় চড়ে নিরাপদ দ্বীপ খুঁজছে। এই দ্বীপ গুলো কি বা কারা জানেন? এই দ্বীপগুলো হলো জিহাদি তানজীমের সাথে যুক্ত ভাইগুলো। তারা তাদের ইলম, আমল এবং আখলাক দ্বারা এক একজন উত্তাল সমুদ্রের মাঝে নিরাপদ মনোমুগ্ধকর সজীব দ্বীপ হয়ে উঠেছে। আমরা যারা তাদের পেয়ে গিয়েছি তারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার প্রতি এক বিশেষ নিয়ামত। সুতরাং প্রতিনিয়ত শুকরিয়া আদায় করুন। প্রতিনিয়ত শুকরিয়া আদায় হবে কিভাবে জানেন? তাদের আদেশ, নিষেধ এবং দিকনির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে অর্থাৎ আনুগত্য করার মাধ্যমে।
আর যারা এখনও তাদের দেখা পাই নি, তাদের বলছি আপনারা হতাশ হবেন না। শুধু গুনাহর সাগরে ডুবে যাবেন না, ভেসে থাকুন। ইনশাআল্লাহ, কোনো এক সকালে দূরদিগন্তে মনোমুগ্ধকর সজীব দ্বীপ ভেসে উঠবে। এভাবে অধীর আগ্রহে দ্বীপগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষ গুলো কোনো একদিন দেখতে পাবে যুদ্ধের সাজে সজ্জিত রণতরী ডাকছে হাইয়্যা আলাল জিহাদ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো ফিতনার এই জামানায় পাপের উত্তাল সাগরে কিভাবে ভেসে থাকবো! আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বাস্তব কিছু কার্যকারী পদক্ষেপ আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। (ইনশাআল্লাহ)
১. গুনাহর চিকিৎসাঃ গুনাহ করতে করতে আমাদের হৃদয় রোগাক্রান্ত এবং নফস নফসে আম্মারাহতে (প্রতারক আত্মা ) পরিণত হয়েছে। যে নফস মানুষকে কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনার দিকে আকৃষ্ট করে। সব সময় অনৈতিক চাহিদা পূরণার্থে ব্যস্ত রাখে। সব সময় খারাপ কাজে উৎসাহিত করে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রানের প্রথম উপায় হলো বেশি বেশি ইস্তিগফার করা। আমার নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ইস্তিগফার কুপ্রবৃত্তি এবং জৈবিক কামনা দমন করে। পাশাপাশি রিজিকের দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা এবং রোগের অত্যাশ্চর্য মহৌষধ। বেশি বেশি ইস্তিগফার করলে আল্লাহ তা’আলা বিয়ে সহজ করে দেন।
[ বিস্তারিত জানতে “গুনাহর অপকারিতা ও চিকিৎসা” বইটি পড়ুন। লিখেছেন মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ। সময় না পেলে অন্তত বইটির ‘গুনাহর চিকিৎসা’ অংশটুকু পড়ুন। সকলের বইটি পড়া উচিৎ। বইটির pdf অনলাইনে পেয়ে যাবেন ]
২. সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখাঃ আমরা যারা আল্লাহর সৈনিক হওয়ার সপ্ন দেখি এই দুইটি দিন অবশ্যই আমাদের রোজা রাখা এবং সেহেরিতে অল্প পরিমান খাবার খাওয়া উচিৎ। যেমনঃ খেজুর, শোলা, কলা ইত্যাদি। এতে আমাদের রোজা থাকাও হবে এবং দীর্ঘ একটা সময় অল্প পরিমান খাবার খেয়ে থাকার অভ্যাসও হবে। পাশাপাশি এই দুইদিন সকল প্রকার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।
৩. গুনাহের আসবাব (উপকরণ) থেকে দূরে থাকাঃ আমরা মনে করি একবার যদি কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনা দমন করতে পারি তাহলেই তো সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে যাবো। কিন্তু কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনা দমন আর হয় না। কারণ আমরা সঠিক প্রক্রিয়া ফলো করি না। আমাদের ইস্তিগফারের পাশাপাশি গুনাহের আসবাব (উপকরণ) থেকে দূরে থাকতে হবে।
[ শাইখুল হাদীস মুফতি আবু ইমরান (হাফিঃ) এর “গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য গুনাহর উপকরণ থেকে বাঁচা জরুরি” আলোচনাটি আমাদের সকলে শোনা উচিৎ। ইউটেউবে খুঁজলেই আশা করি পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ ]
৪. সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুনঃ আমি মনে করি অবশ্যই আমাদের ফেসবুক থেকে দূরে থাকা উচিৎ। আর মেটা ভার্সন আসার পর এর থেকে বেঁচে থাকা সময়ের দাবি। যারা একবার ফেসবুক থেকে ফিরে এসেছে তারা জানে অন্তরের প্রশান্তি কাকে বলে। ফেসবুক আমাদের শুধু হতাশা বৃদ্ধি করে। ফেসবুক ছাড়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করুণ। আপনার আগামী রমজান হোক ফেসবুক মুক্ত জীবন
আর ইউটিউব অ্যাপের পরিবর্তে Newpipe অ্যাপ ব্যবহার করুন। এর বেশ কিছু উপকারী দিক আছে। নাটকের বা মুভির শর্ট ক্লিপ সার্চ না করা পর্যন্ত আসে না। যা সার্চ করেছেন ঐ রিলেটেড ভিডিও ছাড়া অন্য ভিডিও আসে না এবং খুব সহজে ভিডিও ডাউনলোড করা যায়। অ্যাপটি Play Store এ পাবেন না। গুগল ক্রমে সার্চ করে ডাউনলোড করে নিবেন।
[ আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে মাফ করুন এবং আমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। আমার লেখায় যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে তা আমার পক্ষ থেকে আর তাতে কল্যাণকর কিছু থাকলে তা একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে ]
Comment