Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আমার খোলা চিঠি।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আমার খোলা চিঠি।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আমার খোলা চিঠি।


    আসসালামু আলাইকুম, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আমি আপনার দুনিয়া থেকে বিদায়ের বহু বছর পর জন্মগ্রহণ করা দূর্বল উম্মত। আজ ১৯ ই রমাদান, আপনি এই দিনে বদরের যুদ্ধ শেষে বদর প্রান্তরে অবস্থান করছিলেন। ভাবনার জগতে কতবার চিন্তা করেছি আমি যদি আপনার সাহাবী হতাম, আমি যদি বদর প্রান্তরে আপনার সাথে অবস্থান করতাম। অশ্রুসিক্ত হয়ে কতবার ভেবেছি আমি কি সব সময় আপনার কাছাকাছি থাকতাম, নাকি আপনার প্রিয় সাহাবীদের ভিড়ে আমি হারিয়ে যেতাম। আপনি কি আমাকে চিনতেন? আপনি কি আমার নাম ধরে ডাকতেন? কখনও কি আপনার সুমধুর কণ্ঠে আমাকে কোনো কাজের আদেশ করতেন?

    আবার কখনও কখনও নিজেকে আপনার সঙ্গে ওহুদ প্রান্তরে চিন্তা করেছি। ওহুদ প্রান্তরের ঘটনা প্রথম যেদিন পড়েছিলাম ও চিন্তা করছিলাম সেদিন নিজেকে ধরে রাখতে পারি নি শিশুর মতো কেঁদেছি। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনি যখন উহুদ প্রান্তরে ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন, মুশরিকরা যখন আপনাকে আক্রমণ করলো, রুবাঈ দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিলো, শিরস্ত্রাণের দুটি কড়া আপনার চেহারার মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলো তখন আপনি বলেছিলেন এমন কেউ কি আছো, যে এদেরকে আমার নিকট হতে দূর করে দিতে পারো? সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে। এভাবে আপনি সাতবার বলেছিলেন এবং পালাক্রমে আপনার সাতজন আনসারী সাহাবী শহীদ হয়ে যান। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি যদি আপনার পাশে থাকতাম যতবার ডাকতেন ততবার আমি সাড়া দিতাম। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনি কি বলতেন আমার বাবা-মা তোমার উপর উৎসর্গ হোন?

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, সেই ঘটনা আমার বার বার মনে পড়ে। আপনার চোখে অশ্রু দেখে আপনার সাহাবীরা জিজ্ঞেস করেছিলো ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি কাঁদছেন কেন? আপনি বলেছিলেন, আমার ভাইদের দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। আপনার সাহাবীরা বলেছিলো আমরা কি আপনার ভাই নয়? আপনি উত্তর দিয়েছিলেন, না তোমরা আমার সাহাবী। আমার ভাই হলো তারা, যারা আমার পরে আসবে এবং আমাকে কখনও না দেখেও বিশ্বাস করবে। ইয়া রাসূলুল্লাহ, বর্তমান যামানায় আমরা যারা জীবিত, আপনি কি আমাদের জন্যও কেঁদেছিলেন? আমাদেরকেও কি ভাই বলে সম্বোধন করেছিলেন? আমরা তো এতই দূর্বল হয়ে পড়েছি আমাদের সামনে কোনো ফিতনা উপস্থিত হলে আমরা সহজেই তার মধ্যে পতিত হয়ে যাই। আমাদের ইমানী শক্তি এতটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে যে আমাদের দৃষ্টিকে ফিতনা থেকে ঘুরিয়ে নিতে পারি না। ইয়া রাসূলুল্লাহ, বর্তমান যামানায় দুনিয়াটা ফিতনায় ঘুটঘুটে গভীর অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি ঘরে ঘরে ফিতনা প্রবেশ করেছে। আমরা যারা আপনার রঙ্গে রঙ্গিন হতে আপনাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করছি তারাও সকাল-বিকাল ফিতনায় পতিত হচ্ছি। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমরা আমাদের কৃত পাপের কারণে নীল হয়ে পড়েছি।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনার বিদায়ের পর দুনিয়াতে আপনার কিছু ওয়ারিশ (আলেম) এসেছিল। যাদের ইলমের প্রদীভ মৃত্যুর পরও এখনও জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। ফিতনার ঘুটঘুটে গভীর অন্ধকারে দিকভ্রান্ত আমরা তাদের থেকে ইলমের আলো ধার নিয়ে পথ চলছি। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আজ আমরা দিকভ্রান্ত, ফিতনায় জর্জরিত। আপনার উম্মত বহু দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মতের একটু পার্থক্য হলে আপনার সুন্নতকে আঁখড়ে ধরে একত্রিত না হয়ে কিছু সংখ্যক অনুসারী নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আপনার ও আপনার সাহাবাদের মানহাজ ছেড়ে দিয়েছে। আজ মুসলিম উম্মাহর দেহ থেকে প্রতিদিন রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনার কিছু ওয়ারিশগণ নিজেদের খায়েশাত পূরণ করতে দুনিয়াদার হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ তো নিজেকে রবের আসনে বসিয়েছে। হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বলে ফতূয়া দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত কোরআন ও হাদীসের বিভ্রান্তিমূলক ব্যাখ্যা দিয়ে মুসলিম উম্মাহকে বিভ্রান্ত করছে। কাফির, মুশরিক, মুরতাদ ও মুনাফিকদের কথা ও কাজে সমর্থন দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ আল্লাহর সৈনিকদের কাফের-মুশরিকদের সমর্থনে তৈরি বলছে।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, তবুও আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। আপনার কিছু ওয়ারিশগণ উম্মাহর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছে। ব্যবসা, ঘর-বাড়ি, স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মার ভালোবাসা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদেরও ইলমের প্রদীভগুলো জ্বলজ্বল করছে। দূরদূরান্তে জ্বলজ্বল করা ইলমের জীবন্ত প্রদীভ গুলোকে আমরা অনুসরণ করছি। তারা আমাদের আবেগ ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছে। কারণ তারা আপনাকে ভালোবাসে এবং দিকভ্রান্ত আমাদেরকে শিখিয়েছে কিভাবে আপনাকে ভালোবাসতে হয়, কিভাবে আপনাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হয়। আজ আমাদের মনগুলো পড়ে থাকে বদর, উহুদ, খাইবার, মুতাহ, হুনাইন, ত্বায়িফ, তাবুক, মদিনা ও মক্কার প্রান্তরে।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমরা যারা আপনাকে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ ও অনুকরণ করার চেষ্টা করছি তাদের জন্য জমিন সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। আমরা যারা নিজেদের ইমান ধরে রাখতে পাগল হয়ে উঠেছি, তারাও প্রতি কদমে কদমে হোঁচট খাচ্ছি। আমাদের জন্য অন্ধকার আরো গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। তবে আমরা হতাশ হই নি। কষ্টে আমরা শ্বেত পাথর হয়ে যাই নি। আমরা আমাদের রবের প্রতি ভরসা রাখছি। নিশ্চয় আমাদের রব আমাদেরকে রহমতের নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে রাখবেন।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, ফিতনার এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে দাজ্জালের ফিতনা শুরু হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর নারীরা ঘর থেকে বের হয়ে এসেছে। তারা দাবী করছে মুসলিম উম্মাহর পুরুষরা তাদেরকে ঘরে বন্দি করে রেখেছে। তারা স্বাধীনতা চায়, পুরুষেদের কাঁধে কাঁধ রেখে উপার্জন করতে চায়। ইয়া রাসূলুল্লাহ, মুসলিম উম্মাহর নারীরা আজ মাতৃত্বের অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছে, চক্ষু শীতলকারিনী স্ত্রীর অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছে। দেখিয়ে দিচ্ছে অদেখা তাদের।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, আজ কাফির, মুশরিক, মুরতাদ ও মুনাফিকরা একে অপরকে ডেকে ডেকে আহ্বান করছে আমাদের হত্যা করতে। আরবরা মুসলিম উম্মাহকে ত্যাগ করেছে। মুসলিম উম্মাহর নেতারা কাফির-মুশরিকদের তন্ত্রমন্ত্র গ্রহণ করে, আপনার মানহাজ ত্যাগ করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কাফির-মুশরিকদের সিস্টেমে প্রবেশ করে, কাফির-মুশরিকদের অনুমোদিত পদ্ধতিতে, কাফির-মুশরিকদের চাপিয়ে দেওয়া নির্ধারিত দিনে কোন দ্বীন প্রতিষ্ঠা করছে তা মুসলিম উম্মাহ জানে না। মুসলিম উম্মাহর একটা অংশকে তারা বুঝাতে সক্ষম হয়েছে এটাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, এটাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার লড়াই, এটাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার জিহাদ। তাদের ভ্রান্ত মত ও পথকে সঠিক প্রমাণ করতে নতুন করে সুর তুলেছে আপনার সাহাবী রাদিআল্লাহু আনহুমগণ হকের মানদণ্ড নয়।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, মুসলিম উম্মাহর এতো দুঃখ ও দূর্দাশার মাঝে খুশি ও আশার সংবাদ হলো আপনার ও আপনার সাহাবীদের অনুসরণ ও অনুকরণ প্রিয় যুবকগণ জেগে উঠেছে। তারা শপথ নিয়েছে আল্লাহর সৈনিক হবার। তারা ঝেড়ে ফেলছে পাপ পঙ্কিলতা ও অলসতা। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দূর করছে হৃদয়ের রোগাক্রান্ততা। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে আল্লাহর সৈনিক ও সিংহ হিসেবে। ইনশা-আল্লাহ, আমরা সবাই মিলে হিন্দুস্থান থেকে এমন একটি দল প্রস্তুত করবো, যারা ‍দিল্লির মসনদ ভেঙ্গে দিয়ে কালিমার ঝাণ্ডা হিন্দুস্থানের জমিনে উড়াবে। তারপর আমাদের শেষ দলটি বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে ইমাম মাহাদী ও ইসা (আঃ) সাথে একত্রিত হবে, ইনশা-আল্লাহ।

    ইয়া রাসূলুল্লাহ, কিয়ামতের ময়দানে আপনার উম্মাতগণ যখন আপনার হাতে হাউজে কাউসার থেকে পানি খাবার জন্য উপস্থিত হবে তখন এতো উম্মাতের মাঝে আমাকে কি চিনতে পারবেন? আপনার সামনে দাঁড়ানোর হিম্মত কি আমার হবে? আপনাকে যেভাবে ভালোবাসতে হয় সেভাবে ‍কি ভালোবাসতে পারছি? ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনার এতো উম্মাতের মাঝে হাউজে কাউসারে আমার নামটি ধরে ডেকে কি আমাকে চমকে দিবেন?

    প্রেরকঃ- আপনার দুনিয়া থেকে ‍বিদায়ের বহু বছর পর জন্ম নেওয়া আপনার ভাই, আপনার উম্মত।


    [আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে মাফ করুন এবং আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। আমার লেখায় যদি কোনো ‍ভুল হয়ে থাকে তাহলে তা আমার পক্ষ থেকে আর তাতে কল্যাণকর কিছু থাকলে তা একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে]

  • #2
    ইয়া রাসূলুল্লাহ, মুসলিম উম্মাহর এতো দুঃখ ও দূর্দাশার মাঝে খুশি ও আশার সংবাদ হলো আপনার ও আপনার সাহাবীদের অনুসরণ ও অনুকরণ প্রিয় যুবকগণ জেগে উঠেছে। তারা শপথ নিয়েছে আল্লাহর সৈনিক হবার। তারা ঝেড়ে ফেলছে পাপ পঙ্কিলতা ও অলসতা। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দূর করছে হৃদয়ের রোগাক্রান্ততা। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে আল্লাহর সৈনিক ও সিংহ হিসেবে। ইনশা-আল্লাহ, আমরা সবাই মিলে হিন্দুস্থান থেকে এমন একটি দল প্রস্তুত করবো, যারা ‍দিল্লির মসনদ ভেঙ্গে দিয়ে কালিমার ঝাণ্ডা হিন্দুস্থানের জমিনে উড়াবে। তারপর আমাদের শেষ দলটি বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে ইমাম মাহাদী ও ইসা (আঃ) সাথে একত্রিত হবে, ইনশা-আল্লাহ।
    আল্লাহ্‌ পাক আমাদের সেই বরকতময় কাফেলায় শামিল করুন

    Comment


    • #3
      حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ فَقَالَ رَجُلٌ لَوْ أَدْرَكْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاتَلْتُ مَعَهُ وَأَبْلَيْتُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَنْتَ كُنْتَ تَفْعَلُ ذَلِكَ لَقَدْ رَأَيْتُنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الأَحْزَابِ وَأَخَذَتْنَا رِيحٌ شَدِيدَةٌ وَقُرٌّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ فَقَالَ ‏"‏ قُمْ يَا حُذَيْفَةُ فَأْتِنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمْ أَجِدْ بُدًّا إِذْ دَعَانِي بِاسْمِي أَنْ أَقُومَ قَالَ ‏"‏ اذْهَبْ فَأْتِنِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا وَلَّيْتُ مِنْ عِنْدِهِ جَعَلْتُ كَأَنَّمَا أَمْشِي فِي حَمَّامٍ حَتَّى أَتَيْتُهُمْ فَرَأَيْتُ أَبَا سُفْيَانَ يَصْلِي ظَهْرَهُ بِالنَّارِ فَوَضَعْتُ سَهْمًا فِي كَبِدِ الْقَوْسِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْمِيَهُ فَذَكَرْتُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ‏"‏ ‏.‏ وَلَوْ رَمَيْتُهُ لأَصَبْتُهُ فَرَجَعْتُ وَأَنَا أَمْشِي فِي مِثْلِ الْحَمَّامِ فَلَمَّا أَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَفَرَغْتُ قُرِرْتُ فَأَلْبَسَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فَضْلِ عَبَاءَةٍ كَانَتْ عَلَيْهِ يُصَلِّي فِيهَا فَلَمْ أَزَلْ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحْتُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ قَالَ ‏"‏ قُمْ يَا نَوْمَانُ ‏"‏ ‏.‏ ৪৪৮৯। যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, ইবরাহীম তায়মীর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমরা হুযায়ফা (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠলো, হায়, আমি যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেতাম, তবে তাঁর সঙ্গে মিলে একত্রে যুদ্ধ করতাম এবং তাতে যথাসাধ্য করতাম (কোনরূপ পিছপা হতাম না)। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, তুমি তাই করতে? কিন্তু আমি তো আহযাবের রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। (সে রাতে) প্রচন্ড বায়ু ও তীব্র শীত আমাদের কাবু করে ফেলেছিল। এমনি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোযণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি, যে আমাকে শত্রুর খবর এনে দেবে; আল্লাহর তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে রাখবেন?

      আমরা তখন চুপ করে রইলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তার সে আহবানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার বললেন, “ওহে! এমন কোন ব্যক্তি আছে কি” যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে রাখবেন” এবারও আমরা চুপ রইলাম আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর আহবানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার ঘোষণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি যে আমাকে শত্রু পক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে কিয়ামতের দিন তাকে আমার সঙ্গে রাখবেন, এবারও আমরা চুপ করে রইলাম এবং আমাদের কেউ তাঁর আহবানে সাড়া দেয়নি।

      এবার তিনি বললেনঃ হে হুযায়ফা ওঠো এবং তুমি শত্রু পক্ষের খবর আমাদের এনে দাও। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এবার আমার নাম ধরেই ডাক দিলেন, তাই উঠা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলনা। এবার তিনি বললেনঃ শত্রুপক্ষের খবর আমাকে এনে দাও, কিন্তু সাবধান তাদের আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করোনা।

      তারপর আমি যখন তাঁর নিকট থেকে প্রস্থান করলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন হাম্মামের (উষ্ণ আবহাওয়ার) মধ্য দিয়ে চলেছি। এভাবে আমি তাদের (শত্রুপক্ষের) নিকটে পৌছে গেলাম। তখন আমি লক্ষ্য করলাম আবূ সুফিয়ান আগুনের দ্বারা তাঁর পিঠে ছেক দিচ্ছেন। আমি তখন একটি তীর ভুলে ধনুকে সংযোজন করলাম এবং তা নিক্ষেপ করতে মনস্থ করলাম এমন সময় আমার মনে পড়ে গেল যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে দিয়েছেন, "তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে-তুলোনা।" আমি যদি তখন তীর নিক্ষেপ করতাম তবে তীর নির্ঘাৎ লক্ষ্যভেদ করতো।

      অগত্যা আমি ফিরে আসলাম এবং ফিরে আসার সময়ও উষ্ণ হাম্মামের মধ্য দিয়ে অতিক্রমের মতো উষ্ণতা অনুভব করলাম। তারপর যখন ফিরে এলাম, তখন প্রতিপক্ষের খবর তাঁকে প্রদান করলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার খোলা অতিরিক্ত জুব্বার অংশ দিয়ে আমাকে আবৃত করে দিলেন, যা তিনি সালাত আদায়ের সময় গায়ে দিতেন। তারপর আমি ভোর পর্যন্ত একটানা নিদ্রায় আচ্ছন্ন রইলাম। যখন ভোর হল তখন তিনি বললেনঃ হে ঘুমকাতুরে! এখন উঠে পড়ো। মুসলিম শরীফ।
      حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ، - وَاللَّفْظُ لأَبِي عَامِرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ وَنَحْنُ سِتَّةُ نَفَرٍ بَيْنَنَا بَعِيرٌ نَعْتَقِبُهُ - قَالَ - فَنَقِبَتْ أَقْدَامُنَا فَنَقِبَتْ قَدَمَاىَ وَسَقَطَتْ أَظْفَارِي فَكُنَّا نَلُفُّ عَلَى أَرْجُلِنَا الْخِرَقَ فَسُمِّيَتْ غَزْوَةَ ذَاتِ الرِّقَاعِ لِمَا كُنَّا نُعَصِّبُ عَلَى أَرْجُلِنَا مِنَ الْخِرَقِ ‏.‏ قَالَ أَبُو بُرْدَةَ فَحَدَّثَ أَبُو مُوسَى بِهَذَا الْحَدِيثِ ثُمَّ كَرِهَ ذَلِكَ ‏.‏ قَالَ كَأَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يَكُونَ شَيْئًا مِنْ عَمَلِهِ أَفْشَاهُ ‏.‏ قَالَ أَبُو أُسَامَةَ وَزَادَنِي غَيْرُ بُرَيْدٍ وَاللَّهُ يَجْزِي بِهِ ‏.‏৪৫৪৮। আবূ আমির আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আশআরী ও মুহাম্মাদ ইবনু আ’লা হামদানী (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একটি যুদ্ধ অভিযানে বের হলাম। আমাদের প্রতি ছয়জনের মধ্যে ছিল একটি উট, যার উপর আমরা পালাক্রমে সাওয়ার হতাম। তিনি বলেন, এতে আমাদের পা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। আমার দুপা এতই বিক্ষত হয়েছে যে, আমার পায়ের নখগুলো উপড়ে পড়ে যায়। তাই আমরা আমাদের পায়ে পট্টী বেধেছিলাম। এ কারণে এ অভিযান যাতুর-রিকা (رقعة কাপড়ের টুকরা, এর বহুবচন رقاع) নামে অভিহিত হই। যেহেতু আমরা আমাদের পা কাপড়ের টুকরা দিয়ে পেঁচিয়েছিলাম।

      আবূ বুরদাহ (রাঃ) বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) এ হাদীসটি একবার বর্ণনা করার পর পুনরায় বর্ণনা করা পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এ দ্বারা তার আমলের প্রকাশ পায় বলে তিনি তা উল্লেখ করা পছন্দ করেননি। আবূ উসামা বলেন, বুরায়দ ছাড়া এ হাদীসের অন্য রাবী একথা বলেছেন, “আল্লাহ তার প্রতিদান দিবেন”।
      বিশেষ দ্রষ্টব্য: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদেরকে পাঠাতেন। এবং আমাদেরকে তার সাহাবী বানাতেন। তাহলে আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ যথাযত পালন করতে পারতাম না। কারণ আমরা তো বর্তমান সময়ের বালা মসীবত সহ্য করতে পারি না। এখানেই বিভিন্ন ফেতনা ফ্যাসাদের সম্মুখীন হই । বার বার পরীক্ষায় ফেল করি। তাই সে সময়ে আমরা থাকলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ক্রোধের পাত্র হয়ে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম। তাই আল্লাহ আমাদেরকে এত পরে পাঠিয়ে তিনি আমাদের উপর দয়া করেছেন। আমাদেরকে আমাদের উপযুক্ত সময়ে পাঠিয়েছেন। তাই এত আবেগী হওয়া ভালো নয়।
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment


      • #4
        Originally posted by mahmud123 View Post
        বিশেষ দ্রষ্টব্য: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদেরকে পাঠাতেন। এবং আমাদেরকে তার সাহাবী বানাতেন। তাহলে আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ যথাযত পালন করতে পারতাম না। কারণ আমরা তো বর্তমান সময়ের বালা মসীবত সহ্য করতে পারি না। এখানেই বিভিন্ন ফেতনা ফ্যাসাদের সম্মুখীন হই । বার বার পরীক্ষায় ফেল করি। তাই সে সময়ে আমরা থাকলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ক্রোধের পাত্র হয়ে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম। তাই আল্লাহ আমাদেরকে এত পরে পাঠিয়ে তিনি আমাদের উপর দয়া করেছেন। আমাদেরকে আমাদের উপযুক্ত সময়ে পাঠিয়েছেন। তাই এত আবেগী হওয়া ভালো নয়।


        জাযাকাল্লাহ খাইরান, ভাই। আবেগের পাশাপাশি বাস্তবতাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদেরকে আবেগের পাশাপাশি বাস্তবতাকে বুঝার তৌফিক দান করুন।

        Comment


        • #5
          আল্লাহ্‌ তাআলা লিখক ভাইকে দুনিয়াতেই স্বপ্নযোগে আমাদের প্রিয় রসুলুল্লাহ'র (সঃ) মুবারক দর্শন লাভে ধন্য করুন, আমীন

          Comment


          • #6
            Originally posted by Sabbir Ahmed View Post
            আল্লাহ্‌ তাআলা লিখক ভাইকে দুনিয়াতেই স্বপ্নযোগে আমাদের প্রিয় রসুলুল্লাহ'র (সঃ) মুবারক দর্শন লাভে ধন্য করুন, আমীন
            আমিন। ইয়া রব, আমার ভাইকেও রাসূল (সাঃ) এর সাথে দুনিয়াতেই মুবারক দর্শন লাভে ধন্য করুন। আমাদেরকে তোমার সাহায্যপ্রাপ্ত দলের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমাদের পরস্পরের মধ্যে আপনার জন্য ভালোবাসা বৃদ্ধি করুন। আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমিন।

            Comment


            • #7
              সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
              প্রিয় ভাই, লেখাটি পড়ে অশ্রুসিক্ত হয়েছি।
              আল্লাহ যেন আমাদেরকে রাসূলের খাঁটি আশেক হওয়ার তাওফিক দেন। আমীন
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment


              • #8
                সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
                প্রিয় ভাই, লেখাটি পড়ে অশ্রুসিক্ত হয়েছি।
                আল্লাহ যেন আমাদেরকে রাসূলের খাঁটি আশেক হওয়ার তাওফিক দেন। আমীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম💝💝

                Comment

                Working...
                X