দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামের সুগন্ধি চারিদিকে ছড়িয়ে দিই।
বর্তমানে বৈশ্বিক জিহাদের নতুন যে জাগরণ চলছে তারই ধারাবাহিকতায় বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের জন্য মুজাহিদ ভাইয়েরা এনেছে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম। আলহামদুলিল্লাহ, দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামে মুক্তভাবে প্রশ্ন করতে পারা এবং নিরাপত্তা প্রশ্নে আমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক জিহাদ এবং আল-কায়দার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আমাদের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে। উম্মাহর মাঝে বিভ্রান্তি নিরসনের ফলে বাংলার আকাশে-বাতাসে জিহাদ প্রেমীদের এক নতুন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশে জিহাদে সাফল্য পেতে হলে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামের সুগন্ধি চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। দাওয়াহ ইলাল্লাহ উন্মুক্ত সেই ময়দান যা মুজাহিদ তৈরির পাইপ লাইন। অর্থাৎ মুজাহিদ তৈরির নিজস্ব প্রাথমিক মাধ্যম। সুতরাং আমরা যদি এই ফোরামের সঠিক ব্যবহার না করতে পারি, তবে আমরা মুসলিম উম্মাহর হতভাগ্য অংশ হিসেবে গণ্য হবো এবং আমি মনে করি এর জবাবদিহি মহান আল্লাহর কাছে আমাদের দিতে হবে। তাই আমি ফোরামের সম্মানিত মডারেটর ভাই, ফোরামের লেখক ও পাঠকগণকে আহ্বান করছি আপনারা সকলে ফোরামের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করুন। আল্লাহর পক্ষ থেকে মুজাহিদ ভাইদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দোয়ার বদৌলতে পাওয়া এই বিশেষ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুন। আসুন আমরা সকলে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামকে আবাদ করি।
ফিতনার এ জামানায় বিশেষ করে যুবকরা দিকভ্রান্ত হয়ে ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার এক নর্দমা থেকে অন্য নর্দমায় বিচরণ করছে। এসব সোশ্যাল মিডিয়ায় সামান্য কিছু ইমান বর্ধনশীল লেকচার ও মানসম্মত লেখনী পেলেও বিভ্রান্তি মূলক কথাবার্তা ও অশ্লীলতার পরিমানটাই বেশি। এতে মুসলিম উম্মাহর লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমানটাই বেশি হচ্ছে। তাই আমি সকল লেখক ভাইদের আহ্বান করছি আপনারা প্রথমে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামে লেখা প্রকাশিত করুন। তারপর অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিন। আমরা যদি দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি তবে লেখক ও পাঠকগণ ফোরামের প্রতি অন্যান্য মাধ্যম থেকে বেশি আকৃষ্ঠ হবে। মুসলিম উম্মাহর খবর জানতে, চলমান ঘটনা প্রবাহের বিশ্লেষণধর্মী লেখনী পড়তে, বিভ্রান্তি নিরসনে, মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস জানতে এবং ইমানকে তাজা করতে দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম হয়ে উঠবে এক অনবদ্য বিশ্বস্ত মাধ্যম, ইনশা-আল্লাহ। দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামকে আবাদ করতে প্রথমত সম্মানিত মডারেটর ও লেখক ভাইদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
সম্মানিত লেখক ভাইদের প্রতি আমার আহ্বান
উম্মাহর দূর্দশাময় ক্লান্তিলগ্নে চলমান এই বৈশ্বিক জিহাদে আসুন আপনারা দলে দলে শরীক হন। কলমের এক ফোঁটা কালি দিয়ে হলেও এ জিহাদে অবদান রাখুন এবং মুমিনদেরকে কিতালে উদ্বুদ্ধ করুন। আপনার রব আপনাকে লিখতে পারার গুণ দিয়েছে। এই গুণকে জিহাদের দাওয়াতি অঙ্গনে বিনিয়োগ করুন। আর আপনারা যারা অলরেডি ফোরামে লিখছেন তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন। আপনার রব আপনাকে চলমান এই জিহাদের দাওয়াতি অঙ্গনে কবুল করেছে। একটু চিন্তা করুন ভাই আপনার রব আপনাকে কোথায় কবুল করেছে। আপনি এমন ব্যক্তিদের জন্য লিখছেন যারা এক সময় ঝাণু মুজাহিদ হয়ে গড়ে উঠবে, ইনশা-আল্লাহ।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَ مَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ
অর্থঃ আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’? (হা-মীম সিজদাহ: ৩৩)
আল্লাহ তা’আলা সূরা আল ইমরানে বলেন,
وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ
অর্থঃ আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম। (সূরা আল ইমরান: ১০৪)
রাসূল (সাঃ) বলেন,
عَن أبي مَسْعُود الْأَنْصَارِيِّ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ إِنِّي أُبْدِعَ بِي فَاحْمِلْنِي فَقَالَ مَا عِنْدِي فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَا أَدُلُّهُ عَلَى مَنْ يَحْمِلُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مثل أجر فَاعله» . رَوَاهُ مُسلم
অর্থঃ আবূ মাস্’ঊদ আল আনসারী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমার সওয়ারী চলতে পারছে না, আপনি আমাকে একটি সওয়ারীর ব্যবস্থা করে দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ সময় তো আমার নিকট তোমাকে দেবার মতো কোন সওয়ারী নেই। এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহর রসূল! আমি তাকে এমন এক লোকের সন্ধান দিতে পারি, যে তাকে সওয়ারীর ব্যবস্থা করে দিতে পারে। এটা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি কাউকে কোন কল্যাণের দিকে পথপ্রদর্শন করে, সে উক্ত কার্য সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে। মিশকাতুল মাসাবিহ: ২০৯
তাহলে লেখক ভাইদের কাজটা কি? প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি কোন ব্যক্তিদের জন্য লিখছেন। আপনি মুসলিম উম্মাহর এমন ব্যক্তিদের জন্য লিখছেন যারা কম-বেশি দ্বীন পালন করে, তবে চলমান জিহাদ সম্পর্কে বেখেয়াল অথবা জিহাদে বের হওয়ার জজবা ও আবেগ আছে কিন্তু সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করে না। না তারা শারীরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, না তারা মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, না তারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ইমানকে তাজা করছে।
আপনি এমন ব্যক্তিদের জন্য লিখছেন না, যারা দ্বীন থেকে দূরে। আবার এমন ব্যক্তিদের জন্যও লিখছেন না যারা মুজাহিদ হিসেবে বায়াত গ্রহণ করেছে। মুসলিম উম্মাহর এমন ভাইদের যদি বলেন, ধরুন ভাই এই বইটি পড়ুন। যতই চমৎকার বই হোক না কেন তারা পড়বে না। মুসলিম উম্মাহর এসব ভাইদের জন্য প্রয়োজন ৫০০-১০০০ শব্দের আর্টিকেল। মুসলিম উম্মাহকে ঘুম থেকে জাগাতে ও কিতালে উদ্বুদ্ধ করতে এই কৌশলটি বেশ কাজে দিবে। মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে ৫০০-১০০০ শব্দের আর্টিকেল পৌঁছানো সম্ভব কিন্তু বই অসম্ভব এবং অল্প ভাষায় আর্টিকেল লেখার জন্য পাঠকদের মনও আকর্ষণ করবে।
তাহলে ফোরামের সুগন্ধি ছড়িয়ে দিতে লেখক ভাইদের কিভাবে এগিয়ে যাওয়া উচিত? লেখক ভাইদের নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত সে কোন বিষয়ে লিখতে পারদর্শী এবং তার কোন বিষয়ে জ্ঞান সবচেয়ে বেশি। সেসব বিষয়ে আরো পড়াশোনা করে জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করা, তবেই আর্টিকেল গুলো মানসম্মত হবে এবং পাঠক ভাইদের আকর্ষিত করবে।
তালেবুল ইলম ভাইদের প্রতি আমার আহ্বান। ভাই ফোরামে আপনাদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি কাম্য। আসুন আপনারা ইলমী আলোচনার মাধ্যমে পাঠকদের আত্মশুদ্ধিতে ভূমিকা রাখুন। মুসলিম উম্মাহর অন্তরের রোগ দূর করতে আপনাদের মত ভূমিকা আর কেউ পালন করতে পারবে না। আপনারা যদি একাজ সঠিক ভাবে পালন করেন তবে আলেম ভাইয়েরা আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোনিবেশ করতে পারবে।
জেনারেল ও আলিয়ার ভাইদের প্রতি আমার আহ্বান। আপনাদের উপস্থিতি ছাড়া জিহাদের এই বৈশ্বিক অঙ্গন অপূর্ণ থেকে যাবে। বর্তমানে আপনাদের মধ্যে থেকে উঠে আসা ভাইয়েরা দ্বীনি অঙ্গনে মুসলিম উম্মাহর মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। আসুন আপনারা হাতে কলম ও অস্ত্র তুলে নেন। কাফির, মুশরিক, মুরতাদ ও মুনাফিকদের দেনা অনেক হয়েছে, এবার তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। আসুন জিহাদের এই বৈশ্বিক অঙ্গনে আপনাদের মেধা ও শক্তি বিনিয়োগ করুন। কলম ধরে ঘুমন্ত উম্মাহকে জাগ্রত করুন।
ফোরামে যেসব বিষয়ে বেশি বেশি লেখা উচিত
> মুসলিম উম্মাহ ও মুজাহিদদের ইতিহাস।
> মুসলিম উম্মাহর জন্য আলেম ও মুজাহিদদের ত্যাগ।
> আলেম ও মুজাহিদদের সাথে ঘটে যাওয়া কারামত।
> ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশে ঘটনা প্রবাহের বিশ্লেষণ।
> বৈশ্বিক ঘটনা প্রবাহের বিশ্লেষণ।
> আফগান-রাশিয়া জিহাদ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ঘটে যাওয়া জিহাদী অঙ্গনে ফিতনা এবং শিক্ষণীয় ঘটনা।
> বিভ্রান্তি নিরসন (গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সেকুলারিজম, ফেমিনিজম, মানবাধিকার, সুদী অর্থনীতি ইত্যাদি)
> শরীয়া শাসনের অধীনে মুসলিম সমাজ।
সম্মানিত মডারেটর ভাইদের প্রতি আমার আহ্বান
আল্লাহ আপনাদের প্রতি রহম করুন এবং উত্তম প্রতিদান দান করুন। ফোরামের সুগন্ধি ছড়িয়ে দিতে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। আপনারা এ বিষয়ে এগিয়ে না আসলে শুধুমাত্র ফোরামের মেম্বারদের দ্বারা আশারূপ ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয়। যদিও আপনাদের আহ্বান করার মতো যোগ্যতা আমার নেই এবং আপনাদের কর্মপরিকল্পনাও আমার জানা নেই। তবুও মুসলিম উম্মাহর করুন অবস্থা দেখে আপনাদের প্রতি আহ্বান করার সাহস করছি। ফোরামকে আবাদ করতে হলে লেখকদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন । তাদের প্রতি দৃষ্টি রেখে পারদর্শিতা অনুযায়ী লেখার আহ্বান করলে তা লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করবে। আরও একটি বিষয় হলো লেখকগণ যেসব বিষয়ে লিখবে, সেসব বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। সুতরাং সেসব বিষয়ে পড়াশোনার বিকল্প নেই। তাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে কি কি বই পড়া অবশ্যক তার একটি তালিকা করে প্রকাশ করা উচিত। তবেই আমরা ফোরাম থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আশা করতে পারি। পরিশেষে আল্লাহ তা’আলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেনো আপনাদের ও আমাদের নিরাপত্তার চাদরে আবৃত রাখেন। (আমিন)
বিঃদ্রিঃ দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামের সম্ভবত ছয়টি টিউটোরিয়াল ভিডিও আছে। কি করে আইডি খুলবেন, কি করে ফোরামে লিখবেন তা A to Z ভিডিওতে দেখানো আছে।
Comment