Announcement

Collapse
No announcement yet.

ঘনিয়ে আসছে আমেরিকার পতন; কে হচ্ছে আগামী বিশ্বের সুপার পাওয়ার?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ঘনিয়ে আসছে আমেরিকার পতন; কে হচ্ছে আগামী বিশ্বের সুপার পাওয়ার?

    ক্রমবর্ধমান ঘটনা প্রবাহ এবং পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি এ কথারই জানান দিচ্ছে বারবার— যুগের ‘হুবাল’ খ্যাত সন্ত্রাসী আমেরিকার মোড়লগিরির দিন ঘনিয়ে আসছে। বেজে উঠছে পতনের ঘণ্টাধ্বনি। তাগুত আমেরিকা খুব শিঘ্রই তার সমস্ত দম্ভ অহংকার চূর্ণ করে কালের গর্বে নিক্ষিপ্ত হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কারা আসছে বিশ্বের নেতৃত্বে?

    মহান ঐতিহাসিক ইবনে খালদুন সাম্রাজ্যের উত্তান-পতন নিয়ে বিশ্লেষণ করে বলেন, একটি সাম্রাজ্যের যখন পতন ঘনিয়ে আসে তখন তার অধিবাসীরা পার্থিব ভোগ-বিলাসিতায় মত্ত হয়ে পড়ে। সামাজিক মূল্যবোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধ হ্রাস পেয়ে সেখানে জন্ম নেয় স্বার্থসিদ্ধি ও আমোদ-প্রমোদ প্রবণ মনোভাব। তারা সংযম ও আত্বশুদ্ধির পথ থেকে ছিটকে পড়ে। অবাধ যৌনাচার, বেহায়াপনা ও নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে তারা তাদের স্বভাবজাত শৌর্য-বীর্য হারিয়ে কাপুরুষে পরিণত হয়। যেই অদম্য সাহস, বীরত্ব আর সংযম দিয়ে তারা এক সময় বিজয়ী হয়েছিল তা বিলীন হয়ে যায়। অতঃপর ভিন্ন আরেকটি জাতির আগমণ ঘটে। জয় করে নেয় তাদের সাম্রাজ্য। সেই বিজয়ী জাতির গুণাবলি হলো— সাধারণ মানুষদের কাছে তারা হতে পারে উগ্র, পশ্চাৎপদ কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাদামাটা। কিন্তু তারা হয় খুবই সংযমী, আত্বমর্যাদাশীল এবং যৌনতার ব্যাপারে কট্টর। লড়াকু, সাহসী এবং যুদ্ধাংদেহী।

    সুবহানাল্লাহ! ইবনে খালদুন কত চমৎকারভাবে সাম্রাজ্যের উত্তান-পতনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। আমরাও ইতিহাস অধ্যয়ন করলে এই অভিন্ন চিত্র প্রত্যক্ষ করব।

    তাহলে আসুন বর্তমান পরিস্থিতির সাথে এই বিশ্লেষণকে একটু মিলিয়ে দেখি।

    বর্তমানে পশিমা দুনিয়া সবচেয়ে বেশি যেই সংকটের মোকাবিলা করছে তা হচ্ছে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়। অবাধ যৌনতা ও ধর্মহীনতার ফলে ভেঙ্গে পড়েছে তাদের সামাজিক কাঠামো। গণতন্ত্র, সেকুলারিজম আর ধর্মনিরপেক্ষতা ব্যর্থ হয়েছে একটি জাতিকে শান্ত ও সমৃদ্ধশালী জীবন উপহার দিতে। গুম, খুন, ধর্ষণ কিংবা সুইসাইডের মতো প্রানঘাতি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা বৃহত্তম সংখ্যা।

    অপারেশন নাইন ইলেভেনের পর আমেরিকার অর্থনীতির যে অধঃগতি শুরু হয়েছে সেই আলোচনা না হয় আজ বাদই দিলাম।

    সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিশ্বের তাবৎ রাজনীতি ও সমরনীতিবিদ, ভূ-তাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক সবাই এ ব্যাপারে একমত যে— আমেরিকা নামক সাম্রাজ্যটির মেয়াদ আর মাত্র অল্প কয়েক বছর। এরপরই তা ধ্বসে পড়বে। তার জায়গা অন্য কেউ দখল করবে। নেতৃত্ব দিবে পুরো বিশ্বকে। এ পর্যন্ত সবার ধারণা ঠিকই আছে। কিন্তু সম্ভাব্য সেই বিশ্ব-নেতাদেরক চিনতে অধিকাংশ লোকই ভুল করছে।

    বাহ্যিকভাবে চীন এবং রাশিয়াকে আগামীর সুপার পাওয়ার হিসেবে অনেকেই ধারণা করছেন। এই দুই দেশের সামরিক এবং প্রযুক্তিগত অভাবনীয় উন্নতি সবার চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক কৌশল এবং ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বিশ্বকে নেতৃত্ব দানের সমূহ সম্ভাবনা তাদের পদচুম্বন করছে। তাই তাদের ভবিষ্যত সুপার পাওয়ার হওয়ার লজিকটি অমূলক না। কিন্তু আপনি যদি ইবনে খালদুনের ঐ বিশ্লেষণটি আরেকবার লক্ষ্য করেন তাহলে এই বাহ্যিক যুক্তির আড়ালে ভিন্ন কিছু আবিষ্কার করবেন। কী সেটি?

    একটি সাম্রাজ্যের পতন-মুহূর্তে যেসব সংকেত পাওয়া যায় তা কি এখন শুধু আমেরিকাতেই পাওয়া যাচ্ছে? রাশিয়া-চীন কি এর থেকে মুক্ত আছে? পশ্চিমা বিশ্বের যৌন বিপ্লব কি এই দুই দেশেও সমানভাবে মহামারী ছড়াচ্ছে না? নৈতিকতা বিবর্জন এবং ধর্মহীনতার বিষবাষ্প কি তাদেরকেও আক্রান্ত করছে না? আসলে গণতন্ত্র এবং কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী কোনো ভূখণ্ডই আজ শান্তিতে নেই। সর্বত্রই শুধু হাহাকার। মিথ্যে সুখের পিছনে পড়ে সবাই নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে। ধর্মকে পায়ের তলায় পিষ্ট করে অধর্ম নিয়ে পশুর মতো দিনাতিপাত করছে। এই অবস্থায় কীভাবে কেউ সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে!

    তাহলে কে হচ্ছে সুপার পাওয়ার? এর উত্তর জানতে আবারো আমাদেরকে ইবনে খালদুনের সেই ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে ফিরে যেতে হবে। তিনি বিজয়ী জাতির কী কী গুণ উল্ল্যেখ করেছিলেন?

    সাধারণ মানুষদের কাছে তারা হতে পারে উগ্র, পশ্চাৎপদ কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাদামাটা। কিন্তু তারা হয় খুবই সংযমী, আত্বমর্যাদাশীল এবং যৌনতার ব্যাপারে কট্টর। লড়াকু, সাহসী এবং যুদ্ধাংদেহী।

    কিছু কি বুঝতে পারলেন? কাদেরকে এই যুগে পশ্চাৎপদ, উগ্র এবং মৌলবাদী বলা হয়? কারা তাগুতদের চক্ষুশূল? কাদের মস্তকের বিনিময়ে আমেরিকা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করে?

    আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন এতে কিছুই যায় আসে না। শুধু জেনে রাখুন, আগামীর বৈশ্বিক নেতৃত্ব এমন কিছু মানুষের জন্য অপেক্ষা করছে যারা কুফফারদের দৃষ্টিতে জঙ্গি, চরমপন্থী কিংবা পিছিয়ে পড়া। ওল্লাহি, আগামীর দুনিয়া তাদেরই। এই জুলুমতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে তারাই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। শয়তানি আধিপত্য চূর্ণ করে তারা রহমানি বিধান কায়েম করবে ইনশাআল্লাহ।

    ইতোমধ্যে এই বাহিনী অসংখ্য উদাহরণ তৈরি করে ফেলেছে আলহামদুলিল্লাহ। আফগান ভূমিকে তারা সাম্রাজ্যবাদীদের কবরস্থান বানিয়ে মহান আল্লাহর শরিয়াহ বাস্তবায়ন করেছে। আফ্রিকার হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার এখন তাদের করায়ত্তে। সমগ্র পৃথিবীতে খিলাফাহ কায়েমের আগ পর্যন্ত এই বিজয় ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

    এখন সিদ্ধান্ত আপনার। আপনি চাইলে ধ্বংস হতে থাকা সাম্রাজ্যের পিছু পিছু হেঁটে তাদের সাথে ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হতে পারেন। অথবা চাইলে আল্লাহর বাহিনীতে যোগ দিয়ে নিজেকে উভয় জগতে সফলতার শীর্ষ শিখড়ে পৌঁছাতে পারেন।

    মনে রাখবেন, ইসলাম বিজয়ী হবেই। আপনাকে নিয়ে অথবা আপনাকে ছাড়া। তাই আপনি যদি বিজয়ের মিছিলে শামিল হওয়ার সুযোগ পান সেটা আপনারই সৌভাগ্য।




    ১০ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হি.
    ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ইংরেজি



  • #2
    সেই বিজয়ী জাতির গুণাবলি হলো— সাধারণ মানুষদের কাছে তারা হতে পারে উগ্র, পশ্চাৎপদ কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সাদামাটা। কিন্তু তারা হয় খুবই সংযমী, আত্বমর্যাদাশীল এবং যৌনতার ব্যাপারে কট্টর। লড়াকু, সাহসী এবং যুদ্ধাংদেহী।
    সারা দুনিয়ার মুসলিম মুজাহিদরা এই বর্ণনায়। এখনকার সময়ে হামাস (সিরিয়া) এবং ইয়েমেন ভূখণ্ডের মুজাহিদরা এই বর্ণনার সাথে মিলে যায়।
    দাওয়াত ও জিহাদের সফরে কলব যখন ইনসাফ থেকে সরে যায় তখন বিনয় অহংকারে, ভাষার শালীনতা অশালীনতায় রূপান্তরিত হয় এবং অন্তরের নম্রতা কাঠিন্যের রূপ ধারণ করে। তারপর সে ব্যক্তি নিজেও গোমরাহির পথে চলে এবং অন্যকেও গোমরাহির পথ প্রদর্শন করে।

    Comment


    • #3
      শুধুমাত্র অভ্যন্তরীন গোলযোগের কারণে তার পতন হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাহির ঠিক থাকলে ভেতরের সমস্যা তারা দীর্ঘমেয়াদে সামাল দিতে পারবে।
      আমেরিকার ন্যাভাল পাওয়ার এখনো অনেক শক্তিশালী এবং একে যদিও কাউন্টার করার জন্য চীন তার নৌশক্তি বৃদ্ধি করছে তারপরেও গোটা পৃথিবীর সবগুলো মহাসাগরে আমেরিকান নেভির একাধিপত্য রয়েছে।

      দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরে জার্মান-ইতালীয় ন্যাভাল ফোর্স এবং ইন্ডিয়ান ও প্যাসিফিক মহাসাগরে তৎকালীন উদীয়মান পরাশক্তি জাপানের ইমপেরিয়াল জাপানিজ নেভিকে পরাজিত করে আমেরিকান নেভি গোটা বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্ধী নৌশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

      মহাসাগরগুলোকে বলা হয় পৃথিবীর রগ। এই রগরেশা তার দখলে এখনো।

      বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব হ্রাস পেতে থাকলেও গ্লোবাল পাওয়ার হিসেবে আমেরিকার পতন বড় আকারের যুদ্ধ ছাড়া হয়তো সম্ভব না। আল্লাহু আ'লামু।

      Comment


      • #4
        Originally posted by Omayer Binyameen View Post
        শুধুমাত্র অভ্যন্তরীন গোলযোগের কারণে তার পতন হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাহির ঠিক থাকলে ভেতরের সমস্যা তারা দীর্ঘমেয়াদে সামাল দিতে পারবে।
        আমেরিকার ন্যাভাল পাওয়ার এখনো অনেক শক্তিশালী এবং একে যদিও কাউন্টার করার জন্য চীন তার নৌশক্তি বৃদ্ধি করছে তারপরেও গোটা পৃথিবীর সবগুলো মহাসাগরে আমেরিকান নেভির একাধিপত্য রয়েছে।

        দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরে জার্মান-ইতালীয় ন্যাভাল ফোর্স এবং ইন্ডিয়ান ও প্যাসিফিক মহাসাগরে তৎকালীন উদীয়মান পরাশক্তি জাপানের ইমপেরিয়াল জাপানিজ নেভিকে পরাজিত করে আমেরিকান নেভি গোটা বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্ধী নৌশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

        মহাসাগরগুলোকে বলা হয় পৃথিবীর রগ। এই রগরেশা তার দখলে এখনো।

        বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব হ্রাস পেতে থাকলেও গ্লোবাল পাওয়ার হিসেবে আমেরিকার পতন বড় আকারের যুদ্ধ ছাড়া হয়তো সম্ভব না। আল্লাহু আ'লামু।



        জি মুহতারাম ভাই, আপনি সঠিক বলেছেন। আজ পর্যন্ত কোনো পরাশক্তিকেই বড় কোনো যুদ্ধ ছাড়া পতন ঘটানো যায় নি। সালতানাতে উসমানিয়া থেকে আব্বাসিয়া, এমনকি মঙ্গোল সাম্রাজ্যেরও পতন ঘটেছিল বড় বড় কয়েকটি যুদ্ধের পরে। আমি আমার উপরোক্ত আর্টিকেলে কিছু বিষয় উল্লেখ করে বলেছি এগুলো আমেরিকার পতন ঘনিয়ে আসার "সংকেত"। তবে আমি এটা বুঝাইনি যে, এগুলোই পতনের "কারণ"। আশাকরি বুঝাতে পেরেছি ভাই।

        Comment

        Working...
        X