- যুগে যুগে ইসলাম মানুষকে শুধু কথায় নয় কাজে প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে, ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা ব্যক্তিগত জীবন থেকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় জীবনে পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পূর্ণরূপে সক্ষম।
কিন্তু আফসোস! শত আফসোস! আজ সেক্যুলার গনতন্ত্রের ময়দানে তীহে ঘুরে ফেরার অভ্যাস যখন একদল লোকের পেশা ও নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন ইসলামী রাজনীতি নাম দিয়ে আমরা কত কিছুই না করে যাচ্ছি।
- আচ্ছা, আমরা যারা আকাবির বা আকাবির দেওবন্দের কথা বলি তাঁরা কি সেই আকাবিরে দেওবন্দদের মত ও পথ ঠিক ভাবে জেনে বলি? নাকি মাওলানা যুবায়ের সাহেব হাফিজাহুল্লাহ এর উক্তির বাস্তবতা কায়েম করতে "লক্ষ আকাবিরের কোন একজন আকাবিরের লক্ষ মূহুর্তের কোন এক মূহুর্তের দ্বারা আমার স্বার্থ হাসিল করাই আমার মূল লক্ষ্য বানিয়ে নিয়েছি?"
আমরা যে রাজনীতির কথা বলি তার নূন্যতম কতটুকু আমাদের সেই আকাবিরে উম্মাহর সাথে মেলে? মিললে কোন কোন দিক হতে কীভাবে মিলে সেটা সেসব তীহের ময়দানে ঘুরে ফেরা দ্বীনের পথের পথিক ভাইয়েরা যদি একটু বিস্তারিত পেশ করতেন! যুক্তির মারপ্যাঁচে নয় জাতীর মুক্তির আশায় তা দলিলের আলোকে যদি পেশ করতেন তাহলে বড়ই উপকৃত হতে পারতাম।
- প্রিয় ময়দানে তীহে ঘুরে ফেরা গনতন্ত্রের ধূসর পথের পথিক ভাইয়েরা যখন ইতিপূর্বে এসব "স্টেজ হুংকার" দেখতাম বা কোন হুংকার শুনতাম বা কোন কর্মসূচি ঘোষণা করা শুনতাম তখন মনে অনেক আশার সঞ্চার হতো।আগ বাড়িয়ে একথা বললে হয়তো ভুল হবে না যে এমন ঘোষণার আশায় থাকতাম। কিন্তু যখন আপনাদের পরশে থেকে অতি সামান্য কিছু লেখা পড়ার সুযোগ হলো। আপনাদের কাছ থেকেই শিখলাম কীভাবে দ্বীনের পথে চলতে হয়। কোনটি হক আর কোনটি বাতিল। কীভাবে হক্ব বাতিল আলাদা করতে হয়। সেই আপনাদের দেখানো পথে চলতে শিখে যখন আপনাদের বলা আকাবিরদের ব্যাপারে জানার ও তাদের শরয়ী লেখনী শরীয়তের প্রতি আপোষহীন আনুগত্য দেখেছি।আর ধীরে ধীরে যত সামনে বেড়েছি ততই কেন যেন মনে হয়েছে যাদের থেকে পথ চলা শেখা তাদের তো এই ভাবে আকাবিরেদের ব্যাপারে বলতে শুনিনি।বা এই কাজ গুলো সম্পর্কে বলতে শুনিনি। কোন কোন সময় দ্বিধায় ভুগেছি যে,আসলেই কি উনারা এসব আকাবিরে দেওবন্দদের কথাই বলেন বা বলেছেন?
এমন তো অনেক হয়েছে যে, আমাদের উস্তাদগন হয়তো ঠিক বলেছেন এখানে লেখক একটু অন্যরকম উপস্থাপন করেছেন বা লেখক নিজের মেজাজ মোতাবেক লিখেছেন। কিন্তু না! যেই লেখক লিখেছেন তারাও ইলমী ঘরানার সমাদৃত। নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত সূত্রে উপস্থাপন করা তথ্য।তখন তা আর গ্রহণ না করে কোন উপায় থাকেনি। কিন্তু হ্যাঁ! অবচেতনেই মুখ থেকে বের হয়ে গেছে হায়! যদি আকাবিরদের উপস্থাপন এমন ভাবে করা হতে পারে তাহলে দ্বীনের ব্যাপারে তাদের প্রতি আস্থা কীভাবে রাখবো! চিন্তার সাগরে হারিয়ে গেছি এসব ভাবতে ভাবতে।
- দেখতে দেখতে যখন দেড় দশক পাড়ি দেওয়া হয়ে গেল এইলমি সফরের,তখন শুধু অসহায় হয়ে চিন্তা করেছি যে, প্রায় ক্ষেত্রেই তো এখনো শুধু অজানাই নয়! বরং অনেক অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে রয়ে গেছে অপরিচিতই।এমন বিষয়ের সংখ্যাটাও যে বেশ লম্বা। অথচ সেগুলো জানা ছিল সময়ের অপরিহার্য দাবি।
হয়তো বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করা ভাইদের কাছে এই কথা গুলো অতটা গুরুত্বের দাবি রাখে না।কারণ অনেক ক্ষেত্রে এগুলো জানা তাদের জন্য অনেকটাই সহজ।তবে তুলনামূলকভাবে ছোট প্রতিষ্ঠানে এসব জানা হয়তো এমন লোকদের জন্য সহজ যারা ভালো ছাত্র বা যারা স্বেচ্ছায় জানার চেষ্টা করে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এসব ক্ষেত্রে জানা প্রায় অসম্ভব পর্যায়ের।
- আজ বাতিল ফেরকার এতো এতো আস্ফালনের ভিড়ে আমরা অধিকাংশ জনই জানিনা যে, কোন কোন দলিলের আলোকে আমাদের সংবিধান কু্রআন সুন্নাহর কতটুকু অনুযায়ী আর কতটুকু দূরবর্তী।
- আমরা জানিনা গনতন্ত্রের এপথে আমাদের এসব গনতন্ত্রের ধারার ভাইগন কোন কোন দলিলের আলোকে কোন পথে অগ্রসরমান, এবং কোন কোন দলিলের আলোকে সংবিধানের মৌলিক চারনীতি গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতবাদের রাজনীতি করে যাচ্ছেন।
এসব জানতে গিয়ে কাউকে বলে শুনতে হয়েছে "বেশি বুঝি", কেউবা বলেছেন ইলমি যোগ্যতা বাড়াতে,কারো কথা ছিল বড়দের মান্য করার মধ্যে আছে বরকত দলিল হিসেবে হাদিস পেশ করতেও দেখেছি।
- কিন্তু আমাদের কাজ কি ? সামনে অগ্রসর হওয়ার পন্থা কি? আগামী সময়ের ব্যাপার প্লান কি? এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে শরীয়াহ ভিত্তিক উত্তরের পরিবর্তে অনেকেই শুধু নিজের শায়খের মতামত বা আদর্শ বা নিজেদের দলীয় মতাদর্শ তুলে ধরতে চেষ্টা করতেই পেয়েছি।
- তবে যখন এসব অজানা বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে আকাবির নামক মহারথীদের বিভিন্ন রেসালা খুঁজে খুঁজে পেয়ে পড়তে লাগলাম তখন থেকে প্রতিনিয়ত শুধু অবাক হয়ে যাচ্ছি। তাহলে এতদিন কি জানলাম?! কোন আকাবিরদের ব্যাপার জানলাম?!
- তাই পরিশেষে সকল ভাইদের প্রতি একটিই আবেগঘন আবেদন: আক্বীদার মজবুতি, আদর্শের অটলতা,যোগ্যতা থাকলে সঠিকটি তাহকীক করে বের করে জাতির জন্য নিঃস্বার্থ খেদমত করা,আর এমন যোগ্যতা না থাকলে নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত সূত্রে দ্বীনি বিষয়ে জেনে যথাযথভাবে হক পথে হক মতে (অনুযায়ী) কাজ করা আর ফেতনা থেকে বাঁচতে রব্বে কারীমের কাছে বেশি বেশি দোয়া করা।
শেষ কথা: এতকিছুর পরেও কিছু কিছু ব্যক্তি পেয়েছি যারা গোপন হয়ে দ্বীনের জন্য নিঃস্বার্থ খেদমত করে যেতেই ভালোবাসেন।আর হক্বের পথে তারা কাসেম নানুতবীর শুধু যোগ্যই নয় বরং মনে হয়েছে এদের মতো ব্যক্তিরাই হচ্ছে নানুতবীর জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাদের জন্য বিশেষ ভাবে দোয়া করা।
আলোচনার আলোকে বলবো: শরয়ী সিয়াসত/ইসলামী রাজনীতি,আক্বীদার পরিশুদ্ধতা এবং পাশাপাশি যেসব সমস্যা এখানে যৎসামান্য উঠে এসেছে তা সমাধানের উত্তম উপায় নিয়ে চিন্তা করার এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত এবং ফলপ্রসূ স্ববিশেষ ফিকিরের বিনীত অনুরোধ রেখে শেষ করছি। ومن يتوكل على الله فهو حسبه