Announcement

Collapse
No announcement yet.

প্রীতি শূণ্যতা ও লভ্যতা; দোস্ত-দুশমনির মূল

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • প্রীতি শূণ্যতা ও লভ্যতা; দোস্ত-দুশমনির মূল

    প্রীতি শূণ্যতা ও লভ্যতা; দোস্ত-দুশমনির মূল

    ভালবাসা বলা হয়: المحبّة: ميل النّفس إلى شيءٍ.
    অন্তর কোনো বস্তু বা ব্যক্তির দিকে ঝুঁকে যাওয়া। চাই তা যে কারণেই হোক।
    ‘ভালবাসা’ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ নেয়ামত। কারো প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি হয়ে যাওয়া এটা আল্লাহ প্রদত্ত বিষয়। যা নিজের শক্তি দ্বারা অর্জন করা সম্ভব নয়।

    প্রতিটি প্রাণী একে অপরকে প্রকাশ্যে বা গোপনে ভালবেসে থাকে। এমনকি জড় বস্তুর মাঝেও পারস্পরিক ভালবাসার এ বন্ধন রয়েছে, যা আমরা বুঝতে সক্ষম নই। অনেক ক্ষেত্রে এমন হয়, কেন তাকে ভালবাসি ত তার কারণ অজানা।
    এতে বুঝা যায়, এটি আমাদের আয়ত্বের বাহিরে। অনেকেই নিজের সবকিছু খরচ করেও কারো অন্তরে জায়গা করে নিতে পারেন না, অথবা কাউকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে পারেন না। কিন্তু অনেককে দেখা যায়, তার সামান্য মুসকি হাসি কারো মনে জায়গা পেয়ে বসে বা কেউ তার প্রতি অনুরাগী হয়ে যায়।
    তবে সম্পদের মাধ্যমে কারো মাঝে যে খুশি দৃশ্যমান হয়, তা বেশিরভাগই বানোয়াটি অথবা ক্ষনিকের হয়ে থাকে।
    আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কালামে এরশাদ করেছেন,
    لَوْ أَنْفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مَا أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ إِنَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ.
    (হে রাসুল) আপনি যদি পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদও ব্যয় করতেন, তবে তাদের হৃদয়ে সম্প্রীতি সৃষ্টি করতে পারতেন না। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা-ই তাদের অন্তরসমূহে প্রীতি স্থাপন করেছেন। [আনফাল- ৬৩]

    ভালবাসার গুরুত্ব:

    ভালবাসা
    ঈমান পূর্ণতার শর্ত: রাসূলুল্লাহ -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- পৃথিবীর বুকে দ্বীন কায়েমের জন্য, মানবজাতির মাঝে শান্তি-শৃঙ্খলা ও মানবতা প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে, সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছেন। ক্ষত-বিক্ষত হয়েছেন। রক্ত ঝরিয়েছেন। বিনিময়ে কারো থেকে কিছু দাবী করনেনি।
    বরং বলেছেন:
    قُلْ مَا سَأَلْتُكُمْ مِنْ أَجْرٍ فَهُوَ لَكُمْ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى اللَّهِ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ
    ‘বল, আমি এ কাজের বিনিমিয়ে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাইলে তা তোমাদেরই থাকুক। আমার পারিশ্রমিক তো কেবল আল্লাহরই কাছে। তিনি সমস্ত কিছুর দ্রষ্টা। [সাবা-৪৭]

    তবে একটি বিষয় শুধু দাবি নয় বরং ঈমানের জন্য শর্ত আরোপ করে দিয়েছেন যে, আমি যেন সবার কাছে "সবচেয়ে বেশী ভালোবাসার পাত্র হই। হাদীস শরীফে এসেছে
    لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
    তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান ও অন্য সকল মানুষের চেয়ে বেশী প্রিয় হই। [বুখারী- ১৫]
    “যতক্ষণ না আমি প্রিয় হই” অর্থাৎ এখানে ভালবাসাকে ঈমান পূর্ণতার জন্য শর্ত হিসেবে জুড়ে দিয়েছেন যে, কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে তার পিতা-মাতা সন্তানাদি এবং সকল মানুষ থেকে আমি প্রিয় না হই। (সুবহানাল্লাহ)

    কেন ভালবাসার এত গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে?

    নিশ্চয়ই ভালবাসার মধ্যে এমন অসীম কল্যাণ নিহিত রয়েছে, যা অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না।
    আমরা এর বাস্তব কিছু চিত্র দেখতে পাই। কারো ক্ষেত্রে কোনো ক্ষুদ্রতম অপরাধ, বৃহৎ আকারে দেখা হচ্ছে। আবার কারো ক্ষেত্রে পাহাড় সমান অপরাধগুলো, বালির কণার মত উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
    যেমন: কারো মোবাইল থেকে তার অগোচরে কেউ এক মিনিট কথা বলল, যার খরচ পঞ্চাশ পয়সা মাত্র। যখন সে বিষয়টি জানতে পারল, তখন তার প্রতি ক্ষোভের ভঙ্গি ও ব্যবহার এমন বিরক্তিকর ও অসাধুজনক ছিল, না জানি পঞ্চাশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। বা জানিয়েও যদি কথা বলা হয়, তখনও মনে মনে অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করে। কেন এতক্ষণ কথা বলছে, ব্যালেন্স মনে ফুরিয়ে গেল।
    পক্ষান্তরে আরেকজন তার বন্ধুর দুই হাজার টাকা দামের একটি ঘড়ি সখের বসে হাতে দিয়ে ঘুরতে বের হল। দুর্ঘটনা বসত তা নষ্ট হয়ে গেল। যখন বন্ধুটি জানতে পারল, তখন রাগ হওয়া তো দূরের কথা! তার পিঠে দুষ্টু থাপ্পড় মেরে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, “আরে এমন ঘড়ি কত আসবে যাবে, টেনশন কর না”।
    এ দুটি দৃষ্টান্তের মাঝে যদি আমরা হিসাব কষি, তাহলে দু’ধরনের আচরণের মাপকাঠি হিসেবে নিশ্চিত বলতে পারি: প্রীতি শূণ্যতা ও প্রীতি লভ্যতা।
    প্রথম দৃষ্টান্তের মাঝে প্রীতি শূণ্যতার কারণে, তাদের ছোট অপরাধ-ই কেমন যেন মহা পাপে পরিণত হয়েছে।
    পরেরটিতে প্রেম-ভালবাসা ও প্রীতি থাকার কারণে, বড় অপরাধ অপরাধ-ই মনে হয়নি।

    বলা যায়, ঈমানের পূর্ণতা-দুর্বলতা, আমল পছন্দনীয় হওয়া-না হওয়া, এবং ব্যাক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সবকিছুর জয়-পরাজয়, সফলতা-ব্যার্থতা এ ভালবাসাকে কেন্দ্র করে-ই অনুমেয় হয়।

    আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম উম্মাহর মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভালবাসার বন্ধন গাঢ় করুন। আমাদের সকল ইবাদাত, মু‘আমালাত ও মু‘আশারাত ভালবাসায় জড়িত রাখুন। আমীন।

    "সিদ্ধান্ত গ্রহণে একবার কাপুরুষতা ময়দানে পঞ্চাশবার কাপুরুষতার চেয়েও মারাত্মক" (মাকদিসী)

  • #2
    আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম উম্মাহর মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভালবাসার বন্ধন গাঢ় করুন। আমাদের সকল ইবাদাত, মু‘আমালাত ও মু‘আশারাত ভালবাসায় জড়িত রাখুন। আমীন।

    আমীন ইয়া রব্বাল আলামিন

    Comment


    • #3
      বিষয়টি খুবই চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন মাশাআল্লহ।
      জাযাকুমুল্লহু খইরন আহসান জাযা।

      ফন্ট সাইজ নুন্যতম ১৬ রাখলে পড়তে ভালো সুবিধা হয় মুহতারাম।


      আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম উম্মাহর মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভালবাসার বন্ধন গাঢ় করুন। আমাদের সকল ইবাদাত, মু‘আমালাত ও মু‘আশারাত ভালবাসায় জড়িত রাখুন। আমীন।
      হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

      Comment

      Working...
      X