Announcement

Collapse
No announcement yet.

মডারেটদের রদ করার ক্ষেত্রে একটি ভুল পদ্ধতি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মডারেটদের রদ করার ক্ষেত্রে একটি ভুল পদ্ধতি

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

    নিজ নিজ মানহাজের প্রচারনা সকলেই করে থাকে। নিজেদের অবস্থানের পক্ষে দলিল আদিল্লা যুক্তি তর্ক প্রমান উপস্থাপন করা যেমন এর অংশ। তেমনি বিপরীত পক্ষের মতবাদ খন্ডন করাও এর অংশ। আলহামদুলিল্লাহ, জিহাদের সাথে জড়িত বা এই মানহাজের সমর্থক অনেক ভাইবোন এই কাজে যথেষ্ট অগ্রগামি। দলিল প্রমানের ব্যাপারে তাঁদের জ্ঞান এবং কাজকর্মে ইখলাস দেখে অন্তরে হালাল ঈর্ষা বোধ করি। কিন্তু একটি ব্যাপার নিয়ে আমি তাঁদেরকে কিছু নসিহত করার দুঃসাহস দেখাতে চাচ্ছি। বে-আদবী মাফ করার আর্জি জানাই। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা অন্তরের খোঁজ রাখেন।

    মনে করি একজন মডারেট মনস্ক লেখক কোন বিষয়ে একটি বই লিখলেন। হতে পারে নবিয়ে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনি অথবা অন্য যেকোন বিষয়। কথার ফাঁকে ফাঁকে তিনি নিজস্ব ভুল মানহাজের বিষ তাতে আস্তে আস্তে প্রবেশ করাতে লাগলেন। কথা সত্য মতলব খারাপের উদাহরন হয়ে কোথাও বললেন ইসলাম মানে শুধুই শান্তি, কোথাও বললেন নবি পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাত্র ৯০ দিন যুদ্ধ করেছেন, কোথাও বললেন ইহুদি-নাসারারা আমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধু হলেও সমস্যা নেই ইত্যাদি।

    দলিল প্রমান সম্পর্কে জ্ঞান আছে এমন ভাইবোনেরা আল্লাহর রহমতে এর বিরুদ্ধে কলম-কিবোর্ড চালান। আল্লাহর পবিত্র কালাম কুরআন মাজিদ থেকে আয়াত এবং রাসূলুল্লাহর হাদিস থেকে উদ্ধৃতির পর উদ্ধৃতি দিয়ে দেখান যে ইসলাম মানে শুধুই শান্তি না। নব্বই দিন যুদ্ধের বাইরেও রাষ্ট্রনায়ক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম কখনো অন্য সাহাবিদের অভিযানে পাঠিয়েছেন। মোটকথা মাদানি যুগের প্রায় পুরোটাই ছিল যুদ্ধময় অভিযানময়। ইহুদি-নাসারাদের সাথে শত্রুতা পোষনের আদেশ দিয়েও বহু আয়াত রয়েছে।

    আলহামদুলিল্লাহ, এগুলো সাধারন মানুষের অন্তর থেকে মডারেটিজমের বিষবাষ্প বের করতে যথেষ্ট কার্যকর। আমার চোখের সামনেই কিছু ভাইকে পিউর মডারেট থেকে আস্তে আস্তে নববি মানহাজের দিকে ধাবিত হতে দেখেছি। এর পেছনে ছিল উক্ত ভাইবোনদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও লেখালেখি।

    কিন্তু আরেকটা বড় অংশের কাছে এসব লেখালেখি কোন মানেই বহন করে না। দলিল প্রমান দেখেও তারা মডারেট ভাবধারায় অটল থাকে। দয়া করে এমন মনে না করি যে তাদের অন্তর তালাবদ্ধ বা তারা অন্ধ বধির। নাউযুবিল্লাহ। এগুলো তো কাফেরদের ব্যাপারে নাযিলকৃত আয়াত। বরং এই মুসলিম ভাইবোনদের দিল একটি বিশেষ মতের প্রতি ঝুঁকে আছে। দিলের ঝোঁক সাধারনত দলিল দিয়ে টলান যায় না।

    আবারো অনুরোধ করছি ভুল বুঝবেন না। আল্লাহ পাকের কালাম অবশ্যই সত্য। কিন্তু ওই মডারেট বইয়ের লেখক কি আপনার আমার চেয়ে আয়াত হাদিস কম জানে? না। দীনদার কিন্তু মডারেট এমন ভাইবোনরা কি ওইসব আয়াত আর হাদিস জানে না? জানে। অনেকে হয়তবা আমার চেয়ে বেশিই জানে। কিন্তু সেগুলোর একটা বিশেষ ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করে। তাই আয়াতের পর আয়াত, হাদিসের পর হাদিস উদ্ধৃত করাটাই শেষ কথা না। আপনি মডারেট লেখককে রদ করে কত কষ্ট করে আরবি ইবারত সহ হাদিস লিখেছেন। রেফারেন্স দিয়েছেন। তারা পড়ার সময় স্রেফ স্ক্রল করে বা পাতা উলটে চলে যাবে। তারা কি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে? একদমি না। নিঃসন্দেহে তারা এসব আয়াতে বিশ্বাসি। কিন্তু ভিন্ন ব্যাখ্যা সহকারে। আয়াতের উদ্ধৃতি তাই তাদের দিলে কোন ক্রিয়া করে না।

    তাই যুদ্ধ, মৃত্যু, শত্রুতা, বিদ্বেষ, হত্যা, রক্তপাত, বুলেট, তলোয়ার ইত্যাদি বিষয়ে তাদের মনে যে অতিসরল ধারনা রয়েছে সেটা পালটাতে হবে। তারা মনে করে এই বিষয়গুলো আপনা থেকেই মন্দ। আপনা থেকেই খারাপ। তাই ভালকে মন্দ দিয়ে প্রতিহত কর- এই আয়াত পড়লেই তারা চিন্তা করে যুদ্ধের জবাবে সংলাপ করতে হবে, বুলেটের জবাবে কলম চালাতে হবে, সেনা অভিযানের জবাবে গনতান্ত্রিক ইলেকশন করতে হবে ইত্যাদি। সাহাবিদের করা যুদ্ধবিগ্রহকে ওইসময়কার পরিস্থিতি, আগের যুগ, হেন-তেন ইত্যাদি দিয়ে ব্যাখ্যা করে পাশ কাটিয়ে যেতে চায়।

    আমাদের উচিত তাদের এই ধারনাটার মূলে কুঠারাঘাত করা। যুদ্ধ হত্যা রক্তপাত এগুলো আপনাতেই খারাপ বা মন্দ নয়- এই বিষয়টি ক্লিয়ার করতে হবে। এগুলো আল্লাহর দুনিয়ার অপরিহায বাস্তবতা। সব মানুষ ভাল হয়ে গেলে একদিন কোন যুদ্ধ হানাহানি থাকবে না এরকম কল্পনা করা স্রেফ বোকামি। এরকম কোনদিন হবে না। যুদ্ধ আজীবন চলবে। রক্তপাত চিরকাল থাকবে। ভালর পক্ষে ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করা বরং প্রশংসনীয়। আর ইসলামের বাইরে কোন ভাল বা ন্যায় নেই। ইসলামই ভাল। ইসলামই ন্যায়। তাই ইসলামের পক্ষেও চিরকাল যুদ্ধ করে যেতে হবে। আবার বাতিলের পক্ষ থেকে আগে আঘাত আসলে তবেই যুদ্ধে নামতে হবে এটাও ভুল ধারনা। ধংস হয়ে যাওয়াটাই বাতিলের প্রাপ্য। তাই ইসলাম আগ বাড়িয়ে বাতিলকে আঘাত করে ধংস করে দিবে। নিজে আগে আক্রান্ত হওয়ার অপেক্ষা করবেনা।

    এই ব্যাপারগুলো দিলে গেঁথে গেলেই খোলাসা হয়ে যাবে যে কেন কেয়ামত পর্যন্ত জিহাদ চলবে। তখন আর তারা এটাকে মনের জিহাদ, কলমের জিহাদ, ব্যালটের জিহাদ, এই জিহাদ, ওই জিহাদ বলে বক্র ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবে না। দিল যদি পরিস্কার হয়ে যায় দলিল তখন সহজেই বুঝে আসবে। আর দিলে নাপাকি থাকলে তা দলিলকেও নাপাক করে ছাড়বে। তাই তো কুরআন দিয়ে কেউ হেদায়েত পায় আবার সেই একই কুরআন দিয়ে কেউ পথভ্রস্ট হয়। আশা করি জিহাদি মানহাজের পক্ষের লেখক বক্তাবৃন্দ এই জিনিসটি জেহেনে রাখবেন। আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লা এই লেখার ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন। আমীন।
    Last edited by tahsin muhammad; 03-21-2021, 08:41 PM.

  • #2
    মা শা আল্লাহ, জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা, মুহতারাম ভাই! অনেক সুন্দর লিখেছেন।

    Comment


    • #3
      ভাইজান,, আপনাকে ধন্যবাদ। মডারেট হলো কুফরি শাসনব্যবস্থার ফলাফল। কাফেররাও চাই মুসলিমরা তাওহীদ বাদী না হয়ে মডারেট মুসলিম হয়ে যাক। মডারেট মুসলিম!!! গভীর দৃষ্টিতে থাকালে দেখা যাবে মুসলিমই নয়। যেমনঃ তুর্কির প্রশাসন। তুর্কি আফগানেও ন্যাটোর সাথে থাকার কারণে মুজাহিদ ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সেনাবাহিনী পাঠিয়ে ছিলো। এখন সোমালিয়াতেও সেনা পাঠিয়েছে। সিরিয়াতে মুসলিমদের হত্যা করে যাচ্ছে। আমাদের অঞ্চলে ইদানীং যে, মডারেট যোগ চলছে তা কিছু কাল চলবে, যখন জিহাদের জন্য ময়দান খুলে যাবে তখন দেখা যাবে হয়ত মুজাহিদ ভাইদের সাথে মিলে যাচ্ছে না হয় কাফেরদের সাথে। আর যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে মডারেটরা মুজাহিদ ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যেমনঃ পাকিস্তানের প্রশাসন। মিশরের প্রশাসন।
      ভাইজান,, আপনার পোস্টটি আমার কাছে অস্পষ্ট মনে হয়েছে, কারণ এখানে মডারেট বলতে কাদের কাদের বুঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট করা হইনি।
      ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, বারাকাল্লাহ
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment

        Working...
        X